শুক্লপক্ষের পরিশেষে পর্ব-০৯

0
194

#শুক্লপক্ষের_পরিশেষে
#লেখনীতে_নবনীতা_শেখ
|৯|

দূরত্ব ভালোবাসা বাড়ায়? নাকি ভুলগুলো ধরিয়ে দেয়, নিজেকে বুঝতে শেখায়? শ্রেয়ান তার লাইফে কী ছিল, প্রিয়র জানা নেই। তবে ভালোবাসা অবশ্যই ছিল না। এই একমাসে প্রিয় তা না বুঝলেও, বুঝেছে অনেক কিছু। সে বুঝেছে, সে একটা পাগলাটে সম্পর্কে জড়িয়েছে। এমন এক সম্পর্ক… পাশাপাশি অস্বস্তি আর দূরত্বে হাঁসফাঁস। শ্রেয়ান তাকে নিয়ে খেলছে বলা যায়। যেখানে মেয়েটার কোনো আবেগ থাকা যাবে না, কোনো রাগ থাকা যাবে না, ছেলেটাকে ছাড়া দ্বিতীয় কোনো মানুষ লাইফে থাকা যাবে না, নিজের ইচ্ছা থাকা যাবে না—সেটাকে আমি অন্তত সুস্থ সম্পর্ক বলে মনে করি না। এদিকে প্রিয়র তো নিজেকে ভালোবাসারও অনুমতি নেই, শ্রেয়ান দেয়নি। এক সন্ধ্যায় প্রিয়র কোলে মাথা রেখে আকাশ দেখতে দেখতে শ্রেয়ান জিজ্ঞেস করেছিল,
-“আকাশ ভালোবাসো, প্রিয়শ্রী?”

প্রিয় জানায়, ভালোবাসে আকাশ। শ্রেয়ান তখন অবুঝ হয়ে বায়না ধরেছিল,
-“আর বাসবে না। তোমার সব ভালোবাসা আমার একার।”

প্রিয় হেসে দেয়,
-“বাহ রে! সব তোমায় দেবো? নিজেকেও ভালোবাসব না?”

শ্রেয়ানের নির্নিমেষ জবাব,
-“তুমি আমার, তোমার সব আমার।”

প্রিয় কেঁপে উঠেছিল সেই কথায়। গা শিরশির করে উঠেছিল। শখের পুরুষের মুখে এমন কথা শুনে প্রায় সব নারীই বোধহয় আপ্লুত হয়, সেখানে প্রিয়র ক্ষেত্রে বেশিই হয়েছিল। কী যে ভালো লেগেছিল তার!

প্রিয়র সেসব ভাবতেই কান্না পায়। এই সব সে সয়ে নিত, যদি শ্রেয়ানের সাথে তার সম্পর্কের একটা বৈধ নাম হতো। তা নেই, সংশয়ে সর্বদা নুয়ে থাকে প্রিয়। ভিত্তিহীন সম্পর্ক! যদি কিছু হয়ে যায়? ও তো বাঁচবে না। সেজন্য বার বার শ্রেয়ানকে বিয়ে করতে বলত। এতবার বলা সত্ত্বেও বিয়ে করছে না ছেলেটা। অজুহাতটাও স্ট্রং নয়। বলছে, এই বয়সেই বিয়ে করে সংসারী হওয়ার প্ল্যান নেই তার। কিছুটা সময় যাক, নিজেকে আরও শক্ত করুক, তারপর ঘরে আনবে।

প্রিয় বিশ্বাস করে শ্রেয়ান সত্যিই বলছে। কিন্তু এই সত্য যে কোনোদিন মিথ্যায় পরিণত হবে না, তার গ্যারান্টি কেউ দিতে পারে না। গাছের পাতারা ঝরে যায়, সেই গাছেই নতুন পাতার জন্ম হয়। হয় না?

প্রিয় ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করে না। অতিরিক্ত দূর্বলতায় শরীরে অসুখেরা হানা দিচ্ছে। গত সপ্তাহে ৫ দিন হসপিটালে এডমিট ছিল। স্যালাইন হাতে শ্রেয়ানকে অসংখ্য কল-ম্যাসেজ করেছে। একটা ম্যাসেজ-কলও ডেলিভার্ড হয়নি। শ্রেয়ান দেশের বাইরে, তার কনট্যাক্ট নাম্বারটাও নেই। মেইলও করেছে। তাতেও কাজে দেয়নি।

প্রিয়র অসহনীয় কষ্ট হয়েছিল। তারপর অভিমান করে দুদিন কল-ম্যাসেজ দেয়নি। ভেবেছিল—এই তো শ্রেয়ান কল দেবে, কল দিয়ে বলবে, ‘প্রিয়শ্রী, অভিযোগগুলো ফটাফট বলে ফেলো তো!’

প্রিয় তখন রাগ ঝাড়বে। তবে এরকমটা কখনও হয় না। প্রিয়র প্রতিজ্ঞাও ভঙ্গ হয়ে গেল পরশুর পরদিন। ৩ দিনের মাথায় সে আবার কল-ম্যাসেজে ডুবল। এরকমই হচ্ছে। যখন অসহ্য হয়ে ওঠে সব, তখন দুই-চারটা ঘুমের বড়ি খেয়ে শুয়ে পড়ে। সুইসাইড করতে গিয়েছে বহুবার। কিন্তু মরার সাহসটা আর হয়ে ওঠে না।

আজ সব একটু বেশিই অসহ্য লাগছে। অক্সিজেন স্বল্পতা অনুভব করছে। পুরোনো কনভারসেশনও ঘেটেছে অনেকক্ষণ। কী মিষ্টি কথোপকথন! কী আদুরে আহ্লাদী আবদারগুলো! প্রথমে পড়তে গিয়ে প্রিয় মুচকি মুচকি হাসল। পরমুহূর্তেই বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করল। প্রচণ্ড শীতেও কেমন ঘামতে লাগল। অসহ্য অসহ্য অসহ্য! সব অসহ্য! শ্রেয়ানকে প্রয়োজন এখন। খুব প্রয়োজন। প্রিয়র চিৎকার করতে ইচ্ছে করছে। সে কল দিলো শ্রেয়ানকে। সে পিক করল না। কত ম্যাসেজ করল, গেল না সেসব।

এই দমবন্ধকর কষ্ট থেকে নিজেকে সামান্য ঠিক করতে প্রিয় ওয়াশরুমে চলে গেল। দীর্ঘ আড়াই ঘন্টা শাওয়ারের নিচে বসে ছিল। উঠে চেঞ্জ করে এদিক-ওদিক না তাকিয়ে তারপর সোজা প্রহরের রুমের দিকে চলে গেল। খেয়াল করল না, এখন ঘড়িতে বাজে দেড়টা প্রায়।

প্রহরের সেমিস্টার ফাইনাল চলছে। সে আয়াতের সাথে ভিডিয়ো কলে থেকে পড়া বিষয়ক আলোচনা করছিল। আয়াত এখনও আগের মতোই দুষ্টুমি করে, কিন্তু যখন প্রহর পড়ে তখন সে-ও কো-অপারেট করে তাকে।
আয়াত ডাকল,
-“এই, শোন!”
-“হু?”
-“এদিকে তাকা!”

প্রহর তাকাতেই সে ঠোঁট উঁচিয়ে চুমুর ভঙ্গি করল। প্রহর আলগোছে চোখ সরিয়ে নিয়ে বলল,
-“এক্সাম কাল। পড়ায় মন দেওয়া উচিত।”

আয়াত দুষ্টুমি করে বলল,
-“ছোটোখাটো একটাই মন আমার। কীভাবে এত জায়গায় দিই?”
-“হু?”
-“আইলাবিউ, হ্যান্ডসাম। ইউ আর লুকিং সো ডিলিশিয়াস, ম্যান। আই ওয়ানা টেস্ট…”
-“কল কাটব?”
-“বিরক্ত হচ্ছিস, বেবি? হোস না। তুই বই পড়তে থাক..”

প্রহর বইয়ে মন দিলো৷ মুচকি হেসে আয়াত ল্যাপটপটার সামনে টেবিলের ওপর দুইহাত রেখে তাতে ডান কাত হয়ে মাথা রাখল৷ দৃষ্টি স্ক্রিনেই। বিরবির করে বলল,
-“স্যার বই পড়ুন, ম্যাডাম তার স্যারকে পড়বে।”

এরই মাঝে হঠাৎ দরজায় করাঘাতে প্রহর খানিকটা চমকে উঠল। আয়াত জিজ্ঞেস করল,
-“কী?”
-“পরে কথা বলছি।”

কল কেটে দিলো ত্বরিতে। দরজা খুলে দেখল প্রিয় দাঁড়িয়ে আছে। চোখ দুটো ভীষণ লাল। অনেকদিন পর প্রিয় ওর রুমে এলো। প্রহর প্রিয়র হাত ধরতে গিয়েও ধরল না। নরম স্বরে শুধাল,
-“কোনো সমস্যা, আপু?”

প্রিয় অসহায় চোখে তাকাল। সেই চাহনিতে ছিল একরাশ মলিনতা। হঠাৎ খুব কান্না পেল ওর। ফুঁপিয়ে উঠল তৎক্ষনাৎ। আওয়াজ পেয়ে বাবা-মা চলে আসতে পারে। প্রহর প্রিয়র হাত ধরে তৎক্ষনাৎ রুমের ভেতর নিয়ে এলো। দরজাটা চাপিয়ে দিয়ে প্রিয়র সামনে দাঁড়াল। প্রিয় তখন বেডে পা ঝুলিয়ে বসে আছে। মুখে দুই হাত চেপে ডুকরে কাঁদছে৷

প্রহর বুকে হাত গুঁজে টানটান হয়ে দাঁড়াল। অনেকটা সময় যাওয়ার পরও যখন প্রিয়র কান্না থামল না, তখন সে বলে উঠল,
-“দীর্ঘশ্বাস সুন্দর নয়। আই থিংক, শেয়ারিং ইজ দ্যা বেটার অপশন..”

প্রিয় দু’হাতে মুখ মুছল। বেশ ক’বার শ্বাস টেনে বলল,
-“কাল্পনিক জগৎ ছিল আমার। সেই ছোট্টটি থাকতে উপন্যাসের বই পড়তে পড়তে প্রেম-ভালোবাসার প্রতি ছিল তুমুল ঝোঁক। আমি জানতাম, প্রতিটি মানুষের জন্য একটা করে মানুষ বানানো হয়েছে। আমি তার অপেক্ষা করতে লাগলাম। আশ্চর্য বিষয়, আমি পেয়েও গেলাম!”

প্রিয় থেমে থেমে আবার বলল,
-“আমি পেয়েছি, তবে যাকে খুঁজেছি তাকে নয়। যাকে পেয়েছি, তাকে পাওয়ার পর বুঝলাম—আমি যার খোঁজে মরিয়া ছিলাম, এ সে নয়।

আশফিক রহমান শ্রেয়ান! প্রেমে পড়েছিলাম। জানিস? শুরুর একটা বছর আমার কেটেছে একটা কল্পরাজ্যে, বাস্তবের হাওয়া গায়ে লাগাইনি। আমার ভাবনার এক ও একমাত্র বিষয়টি ছিল সে। আমার খেয়ালের শুরুটা তাকে ভেবে হতো, আমার ভাবনার শেষে গিয়েও সে থাকত। আমি তাকে ছাড়া কিচ্ছু দেখতে পেতাম না। ধীরে ধীরে কী যে হলো.. আমার পরিবর্তন আমি ছাড়া সবাই দেখল। তুই দেখলি, আব্বু আম্মু দেখল, আমার বন্ধুরা দেখল! আমি বাদে সবাই..

জানিস? আমি পাগল হয়ে গেছি। বছর কয়েক আগে সে বলেছিল, ‘আমি তো আছি। তোমার সবকিছুর একচ্ছত্র আধিপত্য কেবল আমার।’
তা শুনে আমার ভেতরে সুখ প্রজাপতি উড়েছিল। ছোটোবেলায় তোকে একটা খেলনা কিনে দিয়েছিলাম না? চাবিওয়ালা বানরের?
নিজেকে আমার ওমন লাগছে। সে যতবার চাবি ঘুরিয়েছে, আমি ততটুকু মনোরঞ্জন করেছি তার। তার সব কথা শুনতাম। ধীরে ধীরে সে আমাকে পাগল বানিয়ে ফেলল। সে তো নিষ্ঠুর! সে সব পারে। আমিই পারি না। আমি তাকে ছাড়া একদণ্ড থাকতেও পারি না। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। তার পছন্দমতো নিজেকে তৈরি করলাম, তার কথামতো পৃথিবীর সব মানুষ থেকে দূরত্ব তৈরি করলাম। আর তারপর সে আমাকে একা করে দিলো। আমি খেতে পারি না, ঘুমোতে পারি না।

জানিসই তো, আমি আগে রাত জাগতে পারতাম না। খুব ঘুম কাতুরে ছিলাম৷ এই নিয়ে ওর কত রাগ! ওর সাথে জাগতে হবে আমার। ও কলের ওপাশে বকবক করত, এদিকে আমি হুঁ/হ্যাঁ করতে করতে ঘুমিয়ে যেতাম। ভোরের দিকে যখন ঘুম ভাঙত, কী যে খারাপ লাগত! শুলে তো ঘুমিয়ে পড়ি, এরপর থেকে আমি লাইট অন করে বসে থাকতাম। আধঘন্টা পর পর মুখ ধুয়ে আসতাম। রাতে কী বিশ্রী তেতো কফি খেতাম! তবুও ঘুম আমার পিছু ছাড়ত না।
আজ ও নেই। কী আশ্চর্য! আমার চোখে ঘুমও নেই।

এত বছর বাদে আমি টের পেলাম, আমি ওর প্রেমে পড়িনি, আমি ওর পাগলামোতে অভ্যস্ত ছিলাম। প্রেম তো মুছেই যায়, অভ্যেস ভয়ংকর—তা মেরে দেয়।”

প্রিয়র ভেজা আওয়াজ। মনের ভেতরের এত কথার একাংশ সে বলতে পেরেছে। বাকিগুলোও বলতে চায়, কিন্তু ভালো লাগছে না তার। কান্না পেয়ে যাচ্ছে। সিক্ত চোখদুটো মুছে নিল ভালো করে। মুছতে গিয়ে খেয়াল করল, ওর আবার কান্না পাচ্ছে। শ্বাসে টান উঠছে। হাঁপাচ্ছে।

প্রহর এক কদম এগিয়ে গিয়ে বোনের মাথায় হাত রাখল। আহ্লাদ পেয়ে প্রিয় ডুকরে কেঁদে উঠল। প্রহর তাকে কাঁদতে দিলো। মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে কোমল স্বরে বলল,
-“অ্যান্ড আই প্রমিস, এটা তোর শেষ কান্না হবে।”

প্রিয়র কান্না থামল আধ ঘন্টা পর। সে ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলল,
-“আমি কী করতে পারি এখন? কোনো সলিউশন দিবি, ভাই?”

প্রহর চুপ থাকল কিছুটা। তারপর হাঁটু ভাঁজ করে প্রিয়র সামনে বসে পড়ল। ভারিক্কি আওয়াজ তার,
-“শুনবি আমার কথা?”
-“শুনব।”
-“সব?”
-“হুঁ, সব।”
-“না, সব শোনা উচিত না। যদি ভুল কিছু বলি?”
-“বিশ্বাস আছে তোর ওপর।”

প্রহরের ভেতরটায় প্রশান্তির স্পন্দন বয়ে গেল। চোখে চোখ রেখে বলল,
-“ওর সাথে আর কনট্যাক্ট রাখবি না।”

প্রিয় আৎকে উঠল,
-“আমি পারব না। আমার দমবন্ধ হয়ে আসে। আমি মরে যাব।”
-“কেউ কাউকে ছাড়া মরে না, আপু।”

প্রিয় অশ্রুসিক্ত নেত্রে তাকিয়ে রয়। এই কথাটা সে-ই অনেক আগে বলেছিল। কথাটা ভুল নয়। বরঞ্চ পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো সত্য এটা—কেউ কাউকে ছাড়া মরে না। সবাই বেঁচে থাকে। কিন্তু আমরা সত্য মেনে নিতে পারি না। সত্য তেতো হয়। আমরা পছন্দ করি মধুর মিথ্যে। শুরুতে যখন শ্রেয়ান প্রিয়কে বলত, ‘প্রিয়শ্রী, তোমাকে না পেলে মরে যাব ট্রাস্ট মি।’

প্রিয়র গা কেঁপে উঠত অসহ্য ভালোবাসায়। এমনি এমনি? না। প্রিয় জানে, এর চেয়ে বড়ো মিথ্যা হয় না। তবুও তার ভালো লাগত। ক্ষণিকের ভালোলাগায় ডুবে প্রিয় এক অসুস্থ ভালোবাসায় জড়িয়ে গেল।

ভাবতে ভাবতে কেমন অদ্ভুত লাগছে। প্রিয় তাকাল প্রহরের দিকে। কান্নারত আওয়াজে বলল,
-“আমি চেষ্টা করেছি খুব, পারি না।”

প্রহর ওর হাত ধরল মুঠো করে। ভরসা জুগিয়ে বলল,
-“আমি হেল্প করব এবার। আমার আপু সব পারবে।”
-“আমার ওকে লাগবে।”
-“হুশশ.. এখনও?”
-“এখনও।”

-“যেই পুরুষটা প্রেয়সীর মান-অভিমানের খোঁজ রাখে না, আমি তাকে কোনো জাতেরই প্রেমিক পুরুষ বলব না। বড়োজোর সে হতে পারে টক্সিক লাইফ পার্টনার।”

-“আমি পারি না ওকে ছাড়া কিছু ভাবতে। ও ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করব! অসম্ভব! গা ঘিনঘিন করে ওঠে।”
-“বিয়েই সলিউশন না। নিজেকে দেখ, নিজের মধ্যে বেঁচে থাক।”

সেই কথার মর্মার্থ প্রিয় ধরতে পেরেছিল তৎক্ষনাৎ। আশার আলো পেয়ে মুখটা উজ্জ্বল হয়। প্রহর এর মধ্যে একবারও হাসেনি। এবার অন্তত সামান্য মুচকি হাসা উচিত ছিল! সে তার ধারের কাছেও গেল না, উঠে দাঁড়িয়ে ফোন বের করতে করতে বলল,
-“একজন সাইকিয়াট্রিস্টের এপোয়েন্টমেন্ট নিচ্ছি। পরশু রেডি থাকিস।”

প্রিয় তাকে জানাল,
-“আম্মু-আব্বুকে বলিস না!”
-“প্রয়োজন নেই জানানোর। আমি আমার বোনের জন্য এনাফ।”

_____
আরও একুশ দিন পর শ্রেয়ানের ম্যাসেজ এলো। প্রিয় ম্যাসেজগুলো সিন অবধি করল না। ওপাশ থেকেও আবার ম্যাসেজ এলো না। ফেলে রেখে দিলো একদিন, দুইদিন, তিনদিন…
চতুর্থদিন আর না পেরে সিন করল।

প্রথম ম্যাসেজ,
-“ভালো আছ, প্রিয়? শরীর ঠিকঠাক?”

দ্বিতীয় ম্যাসেজ,
-“সব ব্যস্ততা কাটিয়ে এবার বড়োসরো ছুটি রেখেছি। চলো, দূরে কোথায় ঘুরতে যাই।”

তৃতীয় ম্যাসেজ,
-“তোমাকে ছাড়া আর থাকতে পারি না। চলো তো কোথায় একটা.. তুমি খুব সুন্দর, প্রিয়। অনেক ভালোবাসি।”

শেষের ইঙ্গিতগুলো বুঝতে পেরে প্রিয়র অসহ্য রাগ লাগল। রিপ্লাই করল না ওটারও। বিকেলে আবার ম্যাসেজ এলো,
-“ঠিক আছ?”

প্রিয় লিখল,
-“হুঁ, ভুল থাকার কথা?”

ত্যাড়া ছেলেটা এরকম ত্যাড়া কথা শুনতে ভীষণ অনভ্যস্ত। সে কল লাগাল তৎক্ষনাৎ। প্রিয় কল কেটে দিয়ে বলল,
-“ম্যাসেজ করুন।”
-“আপনি-আজ্ঞে করছ! কল রিসিভ করো।”
-“না।”
-“খারাপ হয়ে যাবে, প্রিয়।”
-“খারাপ হতে আর বাকি রেখেছেন কিছু?”
-“ফর গড সেক, কল রিসিভ করো। নয়তো সব শেষ করে দেবো..”

চলবে…