#শেষ_পাতায়_তুমি(Revenge Story)
#ফাবিহা_নওশীন
|পর্ব-৩২|
“আমার সকল অভিযোগে তুমি
তোমার মিষ্টি হাসি টা কি আমি?
আমার না বলা কথার ভাঁজে
তোমার গানের কত সুর ভাসে।
তোমায় নিয়ে আমার লেখা গানে
অযথা কত স্বপ্ন বুনা আছে।
আমার হাতের আঙুলের ভাঁজে
তোমায় নিয়ে কত কাব্য রটে।
ভুলি নি তো আমি
তোমার মুখের হাসি
আমার গাওয়া গানে তোমাকে ভালোবাসি।”
ফায়াজ গাড়ি চালানোর ফাঁকে ফাঁকে মেহেরকে দেখছে আর ওর গান শুনছে। আর স্নিগ্ধ হাসছে। গানের মাধ্যমে মেহের তার সকল অভিযোগ, অনুরাগ, অভিমান, ভালোবাসা এক সাথেই গানের সুরে প্রকাশ করছে।
ফায়াজ গাড়ি থামাল ভার্সিটির গেটের সামনে।
তারপর মেহেরকে টেনে এনে থুতনিতে শক্ত করে চুমু খেল।
মেহের পেছনে থেকে হটপট বক্স নিতেই ফায়াজ কিছু একটা ভাবল। ওদিনের ঘটনা। সাগর নামের ছেলেটি মেহেরকে বাজে কথা বলেছে।
বলেছিল “মেহের রোজ ফায়াজের গাড়ি থেকে বের হয়। গাড়ি থামার প্রায় ১০-১৫মিনিট পরে গাড়ি থেকে নামে। ফায়াজের সাথে রাত রাটিয়ে সকালে ফায়াজের গাড়িতেই আসে। সারারাত থেকে মন ভরে না তাই ভার্সিটিতে এসেও সার্ভিস দেয়৷”এইসব আজেবাজে কথা বলছিল বন্ধুদের সাথে।
ফায়াজ নিজের নামে সমস্ত বাজে কথা মানতে পারলেও মেহেরের দিকে কেউ আঙ্গুল তুলবে সেটা মানতে নারাজ।
ফায়াজ বক্স গুছিয়ে বলল,
“চলো, আমরা ক্যান্টিনে বসে খাব।”
মেহের বুঝতে পারছে না আজ ফায়াজ কেন ক্যান্টিনে খেতে যাচ্ছে। কিন্তু ফায়াজকে কোন প্রশ্ন করল না। ফায়াজের পেছনে পেছনে চলে গেল।
.
ফায়াজ অডিটোরিয়াম থেকে মাইক্রোফোন এনে ক্যাম্পাসের মেইন চত্বরে হাজির বন্ধুদের নিয়ে। সব ব্যবস্থা শেষ এখন মেহেরকে ফোন করা বাকি। ফায়াজকে দেখে তুষার মুচকি মুচকি হাসছে।
ফায়াজ তুষারের হাসি দেখে বলল,
“তোর হাসি অনেকক্ষণ ধরে সহ্য করছি।”
তুষার পালটা জবাব দিল,
“আমরাও অনেকক্ষণ ধরে তোর পাগলামি সহ্য করছি। ভাই তুই কি কাবির শিং এর নিউ ভার্সন হবি?”
ফায়াজ পকেটে হাত দিয়ে বলল,
“উহু, কাউকে ফলো করা আমার কাজ নয়। আমি ফায়াজ নওয়াজ খান আছি আর থাকব।”
ফায়াজ পকেট থেকে ফোন বের করে মেহেরকে ফোন করে ওর লোকেশন জানাল আর ৫ মিনিটের মধ্যে হাজির থাকার কথা বলল।
মেহের ৪ মিনিটের মাথায় হাজির। কিন্তু এখনো কি হচ্ছে কিছুই বোধগম্য হচ্ছে না। ফায়াজের দিকে জিজ্ঞাসুক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে।
ফায়াজ মেহেরের দৃষ্টিকে পাত্তা না দিয়ে মাইক হাতে তুলে নিল।
“এটেনশন প্লিজ। আমি কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে চাই।”
ওখানে অবস্থানরত সবার দৃষ্টি ওর দিকে। যারা দূরে ছিল তারাও কাছে এসে দাঁড়াল। ফায়াজ কি করছে মেহের বুঝতে পারছে না। যাই করুক মেহেরকে কেন ডেকেছে আর এখানে দাঁড় করিয়ে রেখেছে কেন?
মুটামুটি অনেক মানুষ ভীড় জমিয়েছে। সবাই কৌতূহলী দৃষ্টি নিয়ে চেয়ে আছে। এতগুলো ছেলের সাথে ফায়াজের পাশে মেহেরকে দেখে ওদের কৌতূহল তরতর করে আরো বেড়ে গেল।
ফায়াজ মেহেরের হাত ধরে নিজের সাথে দাঁড় করিয়ে বলল,
“সি ইজ মাই ওয়াইফ মেহের নওয়াজ খান। আমাদের বিয়ে হয়েছে ১বছর ৫ মাস+ কিন্তু সবাই সেটা জানে না। শুধুমাত্র কাছের কয়েকজন জানে। অনেকেই আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারে না জেনে উল্টো পালটা কথা বলছে। দুজন মানুষের মধ্যে রত সম্পর্কের ধরণ না জেনে আজেবাজে কথা বলা অনুচিত। সাগড় নামের ছেলেটি মেহেরকে বাজে কমেন্ট করায় হসপিটালে আছে। আশা করি সবাই কেয়ারফুল থাকবেন। মেহেরকে টিচ করে কথা বলা কিংবা বাজে নজরে যে দেখবে আমি তার চোখ তুলে নিব। আমি আমার জিনিসের ভাগ কাউকে দেই না। যা আমার শুধুই আমার। জাস্ট এটুকুই বলার ছিল। এখন আপনারা যে যার কাজে মন দিন।”
ফায়াজ মেহেরকে ইশারা করে ক্লাসে যেতে বলল। মেহের চুপচাপ চলে গেল।
কয়েকদিন পরের কথা। সাগড় ছেলেটি হসপিটাল থেকে রিলিজ পেয়েছে। ফায়াজ নিউজটা পেয়ে হাত দিয়ে চুল ব্রাশ করতে করতে বলল,
“ওকে আবারও হসপিটালে পাঠাব।”
ফায়াজের কথা শুনে ফায়াজের বন্ধুরা চমকে গেল। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস পাচ্ছে না। সবাই তুষারকে ইশারা করল। কারণ তুষার ফায়াজের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। রকমাত্র তুষারই ফায়াজকে তোয়াক্কা না করে নির্ভয়ে কথা বলতে পারে।
“ফায়াজ, তোর মাথায় আবার কি চলছে?”
ফায়াজ চুলে ব্রাশ করা থামিয়ে দিয়ে বলল,
“ওকে মেরে হসপিটালে পাঠিয়েছি বলে রবিন মেহেরের দিকে হাত বাড়িয়েছে না, ওর জন্য শুধু ওর জন্য রবিন মেহেরকে টাচ করার সাহস পেয়েছে। তাই ওকে পার্মানেন্টলি হসপিটালে পাঠানোর ব্যবস্থা করব।”
“ফায়াজ তুই পাগল হয়েছিস? যা হয়েছে হয়ে গেছে। সব ভুলে যা। ও ওর কৃতকর্মের শাস্তি পেয়েছে। নতুন করে আর কিছু করিস না। এছাড়া মেহের যদি জানতে পারে তুই আবার মারামারি করেছিস তবে রাগ করবে।”
ফায়াজ চোখ গরম করে বলল,” সো? আমার এখন মেহেরকে ভয় করে চলতে হবে?”
তুষার উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
“ফায়াজ তুই কিন্তু বাড়াবাড়ি করছিস। এটাকে কি বলে জানিস? পাগলামি। তুই পাগলামি করছিস। ভালোবাসিস ঠিক আছে কিন্তু এত পাগলামি করবি?”
ফায়াজ আলতো হেসে বলল,
“তোদের মনে হচ্ছে আমি পাগলামি করছি? ওকে ফাইন। আমি পাগলামি করছি। পাগল হয়ে গেছি। দিওয়ানা হয়ে গেছি। যে ভালোবাসায় পাগলামি নেই সেটা ভালোবাসা হতে পারে না। যে প্রেমিক তার প্রেমিকাকে পাওয়ার জন্য, প্রেমিকার জন্য পাগলামি করে নি, আকুল হয় নি সে প্রেমিকই না। তার প্রেমিক হওয়ার যোগ্যতাই নেই। আর তোরাই তো একদিন আমাকে বলেছিলি পাগলামি না থাকলে সেটা নাকি ভালোবাসাই না। তাহলে আজ? আজ কেন পাগলামির বিরুদ্ধে যাচ্ছিস? আমি পাগলামি করব, যতদিন বেঁচে থাকব মেহেরের জন্য পাগলামি করব।”
“ওকে ভাই করিস। কিন্তু তুই তো চাস মেহেরও তোকে ভালোবাসুক। কিন্তু তুই একের পর এক ঘটনা ঘটালে ও তোর থেকে ক্রমাগত দূরে চলে যাবে।”
“কিন্তু আমি ওই ছেলেকে আমার চোখের সামনে ঘুরে বেড়াতে দেখতে পারব না।”
“ওকে ফাইন। সে ব্যবস্থা আমি করছি। ওকে ভার্সিটি থেকে বরখাস্ত করার ব্যবস্থা করছি। এছাড়া আমার মনে হয় না ও আর তোর সামনে আসার সাহস করবে। ভয় পেয়েছে খুব।”
“সামনে যেন না আসে। ওকে আমি সামনে পেলে শেষ করে ফেলব।”
।
আরো কয়েকদিন পরের কথা। মেহের হোস্টেল থেকে বের হয়ে তুষারকে দেখতে পেল। তুষারের চোখমুখ ফুলে আছে। কেমন এলোমেলো লাগছে।
মেহের আনমনে ভাবছে,
তুষার এখন এখানে কি করছে? আর ফায়াজ কোথায়? ফায়াজকে তো দেখতে পাচ্ছি না।
তুষার মেহেরের দিকে এগিয়ে এসে বলল,
“ফায়াজ একটা কাজে গেছে। ও আসতে পারবে না। তাই আমাকে বলেছে তোমাকে যেন ভার্সিটি নিয়ে যাই। তোমার খেয়াল রাখি।”
মেহেরের কাছে কথাটা বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। ফায়াজের সাথে গতকাল রাতেও কথা হয়েছে। তখন তো কিছু বলে নি। এছাড়া সকালেও একটা ফোন করে নি। হুট করে বন্ধুকে পাঠিয়ে দিয়েছে? এছাড়া তুষারকেও কেমন লাগছে। আহত মনে হচ্ছে। মেহের ফোন বের করে ফায়াজের নাম্বারে ডায়েল করল। কিন্তু ফোন অফ।
মেহের তুষারের দিকে তাকিয়ে বলল,
“হুট করে কোথায় গেছেন উনি? আর ফোন অফ কেন?”
“হটাৎ করেই গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ পড়ে গেছে। তাই আমাকে সকালে বলেছে। ফোন অফ কেন সেটা আমি বলতে পারব না।”। তুষার বিষন্ন মনে বলল।
মেহের অভিমানী কন্ঠে বলল,
” আপনাকে বলতে পারল আর আমাকে একটা ফোন করে জানাতে পারল না? ঠিক আছে আজ আমি সামিরার সাথে চলে যাব। আপনি চলে যান।”
তুষার জোর করে বলছে,
“তোমার একা যেতে হবে না। ফায়াজ তোমার দায়িত্ব আমাকে দিয়েছে আমিই নিয়ে যাব। প্রয়োজন হলে সামিরাজে ডাকো। দুজনকে এক সাথে ভার্সিটিতে ছেড়ে আসব।”
মেহের সামিরাকে ফোন করল। তারপর দুজন এক সাথেই তুষারের গাড়িতে ভার্সিটিতে গেল। তুষার মুখ ভার করে রেখেছে যে কি না সব সময় হাসিখুশি থাকে। মেহেরের সন্দেহ হচ্ছে।
মেহের আর সামিরা গাড়ি থেকে নামতেই তুষার আবারো গাড়ি স্টার্স্ট দিল। মেহের গাড়ির গ্লাসে টুকা দিল। তুষার গ্লাস খুলে বলল,
“কি হয়েছে মেহের?”
মেহের কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল,
“আপনি গাড়ি থামান। আমার কেমন যেন অস্থির অস্থির লাগছে। ভালো লাগছে না। ফায়াজ কোথায় আছে? উনাকে আসতে বলুন। নয়তো আমাকে উনার কাছে নিয়ে যান।”
“কি বলছো মেহের? আমি তোমাকে কোথায় নিয়ে যাব? ফায়াজ কোথায় আমি জানি না।”
“আপনি জানেন তুষার ভাইয়া। আপনি সব জানেন। আপনি এখন কোথায় যাচ্ছেন? নিশ্চয়ই ফায়াজের কাছে।” মেহেরের কান্না পাচ্ছে খুব। গলা ভারি হয়ে আসছে। তুষার কি করবে বুঝতে পারছে না। ফায়াজকে বারবার বুঝানোর চেষ্টা করছে কিন্তু মেহের বুঝতে নারাজ।
তুষার বাধ্য হয়ে মেহেরকে গাড়িতে ওঠতে বলল সাথে সামিরাকেও আসতে বলল।
ফায়াজ গাড়ি চালাতে চালাতে ভাবছে ফায়াজকে কি উত্তর দেবে?
গাড়ি হসপিটালের সামনে থামতেই মেহের বাইরে তাকাল। হসপিটালের সামনে গাড়ি থামাতে দেখে ওর পিলে চমকে উঠল।
কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
“হসপিটালে কেন? ফায়াজ ঠিক আছে তো?”
তুষার ভনিতা না করেই বলল,
“ফায়াজ হসপিটালে ভর্তি। গতকাল রাতে আড্ডা শেষে যখন বাড়িতে ফিরছিল তখন গভীর রাত। রাস্তায় কয়েকজন ওর গাড়ির সামনে দাঁড়ায়। ফায়াজ গাড়ি থামায় ব্যাপারটা বুঝার জন্য। আর ওরা এসে ফায়াজকে সুযোগ না দিয়েই আচমকা ওর গাড়ি ভাঙচুর করে। ফায়াজ ভেতরে থাকায় ভাঙা গ্লাসে ওর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতের সৃষ্টি হয়। ওরা শুধু ওর গাড়িতেই আঘাত করে। এর মানে কেউ ইনটেনশনালি এসব করেছে।”
মেহের সামিরাকে ধরে ফুপিয়ে কেঁদে উঠে। তারপর দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে বলল,
“ফায়াজের কাছে নিয়ে চলুন দ্রুত। আমি ওর কাছে যাব।”
তুষার ওদের নিয়ে যেতে যেতে ভাবছে ফায়াজ সকালে কি বলেছিল।
সারারাত ওর বন্ধুরা ফায়াজের সাথেই ছিল। ফায়াজ আহত অবস্থায় ওদের ফোন করলে ওরাই উদ্ধার করে ওকে। তারপর হসপিটালে নিয়ে আসে। সকালে ফায়াজের জ্ঞান ফিরতেই তুষারকে বলে,
“মেহের যেন বিন্দুমাত্র কিছু জানতে না পারে। মেহের মুখে যত যাই বলুক না কেন? মেহের ওকে কতটা ভালোবাসে, মেহেরের মনে কতটা জুড়ে আছে সেটা একমাত্র ওই জানে। জানতে পারলে কেঁদে কেটে ভাসাবে। আর ও যেন মেহেরকে সাবধানে ভার্সিটিতে নিয়ে যায় আর নিয়ে আসে।”
কিন্তু এখন বাধ্য হয়েই নিয়ে আসতে হয়।
মেহের অস্থির হয়ে আছে। কেঁদেই যাচ্ছে। ফায়াজের এমন কিছু হবে কল্পনাও করতে পারে নি। ফায়াজক কেমন আছে, ফায়াজকে না দেখা পর্যন্ত ওর শান্তি নেই।
ফায়াজের কেবিনের সামনে যেতেই কেবিন মানুষে ভরপুর দেখতে পায়। ফায়াজ বন্ধুদের সাথে টুকটাক কথা বলছে। মেহের ভেতরে যেতেই সবাই অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। ফায়াজ মেহেরকে দেখে স্তব্ধ হয়ে যায়। ওকে এখানে একদমই আশা করে নি। তারপর তুষারের দিকে তাকায়।
তুষার বলল,
“ভাই আমার দোষ নেই। আগে বউ সামলা। সবটা পরে বলছি।”
তুষার একে একে সবাইকে নিয়ে বের হয়ে যায়।
মেহের গাল মুছতে মুছতে ফায়াজের দিকে যায়। ফায়াজ জোরপূর্বক আলতো হাসল। মেহের ফায়াজের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ব্যান্ডেজ দেখে আবারও কাঁদতে শুরু করল।
ফায়াজ হাত বাড়িয়ে মেহেরের হাত ধরে বলল,
“আরে আমার কিছুই হয় নি। এই একটু কেটেছে। এই শালার বন্ধুদের জন্য বেডে শুয়ে আছি।”
মেহের ফায়াজের হাত চেপে ধরে কান্নামিশ্রিত সুরে নাক ফুলিয়ে বলল,
“দাঁড়ান, আপনাকে এখানে এক মাস রাখার ব্যবস্থা করছি৷ তবে যদি একটু শান্তি থাকেন।”
চলবে….!
#শেষ_পাতায়_তুমি(Revenge story)
#ফাবিহা_নওশীন
|পর্ব-৩৩|
“আমি তারায় তারায় রটিয়ে দেব
তুমি আমার”
মেহের ফায়াজের পাশে একটা টুলে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আর ব্যান্ডেজগুলো আঁড়চোখে দেখছে। রক্ত, কাটাস্থান দেখলে ওর মাথা ঘুরে। তাই সোজাভাবে দেখতে পাচ্ছে না। মেহের ফায়াজের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। ডাক্তার ওষুধ দেওয়ার পর থেকে ঘুমাচ্ছে। ফায়াজ অনেক কথা বলছিল আর ওর বন্ধুরাও বেশ ভীড় করছিল। ডাক্তার মেহেরকে রেখে সবাইকে বের করে দিয়েছে। ফায়াজের তেমন সমস্যা নেই। কাচে শরীরের বিভিন্ন জায়গা কেটে গেছে। এখন শুধু ঘা শুকানোর অপেক্ষা।
মেহের ফায়াজের মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবছে সেই দিনের কথা। ভার্সিটির প্রোগ্রামের দিন মেহের গান গাইছিল “ভালোবেসে সখি নিভৃতে যতনে আমার নামটি লিখো তোমার হৃদয়ও মন্দিরে” হটাৎ করে মাইক্রোফোন নষ্ট হয়ে যায়। কি লজ্জায় না পড়েছিল। তখন একটা কন্ঠস্বর ভেসে আসে। মেহের চোখ তুলে সেদিকে তাকায়। ফর্সা করে মাঝারি গড়নের একটা ছেলে। মুখে খোচাখোচা দাড়ি, কপালের উপর সিল্কি চুল। সেদিনই ফায়াজকে প্রথম দেখেছিল। সেই প্রথম অনুভূতি। ভালোলাগার অনুভূতি। পরবর্তীতে ফায়াজ সম্পর্কে সবটা জানার পর ভয় কাজ করেছিল, ফায়াজের বিহেভিয়ারে ওর প্রতি নেগেটিভ ধারণা জন্মেছিল কিন্তু সেই প্রথম অনুভূতি ম্লান হয় নি। হয়তো হবেও না। আজীবন মনের মনিকোঠায় আবদ্ধ থাকবে। আর আজ সেই ছেলেটিকে কতটা ভালোবেসে ফেলেছে। আসলে মেহের সেই অনুভূতিতে এতটাই আসক্ত হয়েছিল যে তার মাদকতা কোনদিন কাটে নি।
ফায়াজের ঘুম ভাঙতেই মেহেরকে দেখে কেবিনের জানালার পর্দা সরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
ফায়াজ মৃদুস্বরে বলল,
“মেহের!”
মেহের ফায়াজের কন্ঠস্বর শুনে দ্রুত ফায়াজের দিকে তাকাল। ফায়াজকে জেগে থাকতে দেখে মেহের মৃদু হেসে ফায়াজের কাছে গেল। ফায়াজ উঠে বসার চেষ্টা করছে। মেহের ওকে ধরার চেষ্টা করল। ফায়াজ একাই উঠে গেল। তারপর আলতো হেসে বলল,
“তোমার ক্ষমতা আছে আমাকে ধরে তোলার? পুটিমাছ! শরীরে তো এক বিন্দুও শক্তি নেই। দেখো দিন দিন কেমন শুকিয়ে যাচ্ছো। চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে। তুমি কি আমার জন্য টেনশন করছো?”
মেহের শুকনো হেসে বলল, “হ্যা কিছুটা।”
তারপর ফায়াজের দিকে তাকিয়ে বলল,
“কোন পথ বেছে নিয়েছেন আপনি? আপনার কিসের অভাব? কেন আপনি এমন লাইফ লিড করবেন? আজ আপনার দল ওদের মারবে কাল ওরা মারবে তারপর আবার আপনারা মারবেন এভাবে চলতেই থাকবে? এ-সব বাদ দিন না। সুস্থ জীবন-যাপন করুন। আমি জানি আপনার বন্ধুরা কি ছক কষছে। ওদের কিভাবে শায়েস্তা করা যায় তার প্লান করছে। আপনিও যোগ দিবেন।”
ফায়াজ আঙুল দিয়ে নিজের গাল, হাত আর শরীরের বিভিন্ন জায়গার ব্যান্ডেজ দেখিয়ে বলল,
“তুমি বলতে চাইছো ওরা আমার এমন অবস্থা করার পরেও আমি চুপ করে থাকব। তাই তো? আমার গায়ে কেউ কখনো টাচ করার সাহস পায় নি আর এই অবস্থা করেছে। আমি ছেড়ে দিলেও আমার বন্ধুরা ওদের ছাড়বে? তোমার কি তাই মনে হয়?”
মেহের ফায়াজের কথা শুনে হাল ছেড়ে দিলেন না। উদ্যমী হয়ে বলল,
“আপনি চাইলেই পারবেন। আপনি চাইলেই এই রোজ রোজ হানাহানি, রক্তপাত বন্ধ করতে পারবেন। আপনার এসবে থাকার কি দরকার? আপনার গ্রাজুয়েশন শেষ। আপনি বাবার বিজনেসে জয়েন দিন। এমবিএ টা শুধু পরীক্ষা দিবেন। আপনি এমনিতেও ভার্সিটিতে ক্লাস করতে আসেন না। আপনি ভার্সিটি ছেড়ে দিন। প্লিজ। প্লিজ ফায়াজ আপনি আমার এই কথাটা রাখুন।” (অনুনয়ের সুরে)
ফায়াজ মেহেরের কথাটা অগ্রাহ্য করতে পারছে না। তাই এড়ানোর জন্য বলল,
“এ নিয়ে আমরা পরে কথা বলব। এ-সব এখন থাক মেহের।”
মেহের ফায়াজের দিকে করুণভাবে চেয়ে বলল,
“আমার কিংবা আমার কথার কোনো দাম নেই আপনার কাছে?”
ফায়াজ ডানে-বামে তাকিয়ে বলল,
“মেহের তুমি এভাবে বলছো কেন? তোমার কথার দাম থাকবে না কেন?”
“আপনাকে আমি এতক্ষণ কি বললাম? আর আপনি আমার কথার দামই দিলেন না।”
ফায়াজ মেহেরের গালে আলতো করে হাত রেখে দরদমাখা কন্ঠে বলল,
“আমার কাছে আমার মেহেরজানের চেয়ে দামী আর কিছু নেই।”
মেহের অভিমান নিয়ে নিজের গাল থেকে হাতটা সরিয়ে দিতে চাইলে ফায়াজ আরো শক্ত করে ধরে। মেহের শক্তি প্রয়োগ করেও ফায়াজের হাত সরাতে পারল না।
তারপর মনে মনে বলল,”আমি আসলেই পুটিমাছ।”
মেহের ফায়াজের দিকে তাকাল। ফায়াজ কেমন মাদকতা নিয়ে ওর দিকে চেয়ে আছে। তারপর নেশাক্ত কন্ঠে বলল,
“তুমি ফিরে এসো তাহলে আমি সব ছেড়ে দেব।”
মেহের ফায়াজের কথা শুনে শকড। ঘনঘন চোখের পলক ফেলে কিছু ভাবছে। তারপর ফায়াজের দিকে চোখ তুলে তাকাল। ফায়াজ উত্তরের আশায় মেহেরের দিকে তখনও চেয়ে আছে।
মেহের ফায়াজের দিকে তাকিয়ে স্মিত হেসে বলল,
“আপনি সব ছেড়ে দিন আমি চলে আসব। আপনি প্রমাণ করুন আপনার কাছে আমি কতটা মূল্যবান। কথা দিলাম সব ছেড়ে দেব,পুরো পৃথিবী ছেড়ে দেব। কাউকে পরোয়া করব না। আপনি বললে আমিও ভার্সিটি, পড়াশোনা সব ছেড়ে দেব। চুটিয়ে আপনার সাথে সংসার করব। কথা দিলাম।”
ফায়াজ মেহেরের কাছ থেকে এমন প্রতিক্রিয়া আশা করে নি। ফায়াজ অবাক হয়ে মেহেরের দিকে তাকিয়ে আছে। এত সহজে মেহের রাজি হবে ভাবে নি।
“ভাই, এইবার আমাদেরও তো সুযোগ দেওয়া উচিত।”
মেহের কারো কন্ঠ শুনে ফায়াজের থেকে সরে গেল। ফায়াজ মেহেরের গাল থেকে হাত সরিয়ে দরজার দিকে তাকাল। ফায়াজের বন্ধুরা সব জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ফায়াজ ওদের দিকে ভ্রু কুচকে তাকাল। মেহের উঠে দূরে গিয়ে দাঁড়াল। ওরা সবাই হুড়মুড় করে ভেতরে ঢুকল। ফায়াজ তখনও মেহেরকে দেখছে। ওর কানে শুধু মেহেরের কথাগুলো বাজছে।
।
মেহের কেবিনের সাথে এটাচ করা ওয়াশরুমে ভেসিনের সামনে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে। দু-হাত শক্ত করে মুঠো করে রেখেছে। ঠোঁট কামড়ে রেখেছে। চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে। ফায়াজের ডাকে চোখ মেলল। ফায়াজ বাইরে থেকে ডাকছে। মেহের দ্রুত চোখের পানি মুছে নিল। চোখে-মুখে পানি দিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বের হয়ে গেল।
ফায়াজের সামনে গিয়ে দাঁড়াল। ফায়াজ ওকে পর্যবেক্ষণ করে বলল,
“কি হয়েছে? তোমার চোখ-মুখ এমন লাগছে কেন? শরীর খারাপ লাগছে? তোমার না মেহের এখানে থাকতে হবে না। আজই ফিরে যাবে হোস্টেলে। এখানে তুমি অসুস্থ হয়ে পড়ছো। দাঁড়াও তুষারকে ডাকি। ও তোমাকে ডাক্তার দেখিয়ে দেবে। তারপর গিয়ে রেস্ট নিবে।”
মেহের ফায়াজকে বিচলিত হতে দেখে বলল,
“আরে আপনি ব্যস্ত হবেন না। আমি ঠিক আছি। আসলে ঠিকঠাক খাওয়া-দাওয়া হয়নি তাই একটু দূর্বল লাগছে।”
ফায়াজ আরো বিচলিত হয়ে বলল,
“খাওয়া-দাওয়া? তুমি খাও নি? কি আশ্চর্য! আমি অসুস্থ বলে ওরা কেউ তোমার খোঁজ রাখে নি? তুমি খেয়েছো কি না খোঁজ নিবে না? আমি দেখাচ্ছি ওদের।”
“আপনি আবারও ব্যস্ত হচ্ছেন? উনারা আমার খোঁজ খবর রাখছে। খাবারও দিয়ে গেছে। খেতে ইচ্ছে করছে না। তাই খাই নি। এতে তো আর উনাদের দোষ নেই।”
ফায়াজ কটাক্ষ দেখিয়ে বলল,
“তা খাও নি কেন? মেহের এমন করলে হবে? নিজের দিকে একটু নজর দেও৷ দিন দিন কেমন হয়ে যাচ্ছো৷ এখুনি খেয়ে নেও।”
মেহেরের মুখে খাবার রুচছে না। খেতেও ইচ্ছে করছে না। কিন্তু ফায়াজের রাগের চুটে খেতে হলো।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। ঝিরঝির করে বাতাস বইছে। খাওয়া শেষ হতেই ফায়াজ মেহেরকে ডাকল। মেহের ফায়াজের বেডের কাছে যেতেই ফায়াজ হাত দিয়ে ইশারা করল উঠতে। মেহের বোকার মতো দাঁড়িয়ে আছে। ফায়াজ বলল,
“এখানে এসো।”
মেহের ফায়াজের কথা মতো বেডে উঠল। ফায়াজ মাথা সরিয়ে জায়গা দিল শোয়ার জন্য। মেহের ফায়াজের পাশে শুয়ে পড়ল। ফায়াজ মেহেরের কোমড় জড়িয়ে ধরে বলল,
“চোখ বন্ধ করো। একটু ঘুমানোর চেষ্টা করো। সারাদিন অনেক ধকল গেছে তোমার।”
মেহের চোখ বন্ধ করতেই ঘুমে তলিয়ে গেল। ফায়াজ ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতাল থেকে রিলিজ চায়। বাড়িতে ফিরতে হবে, সবকিছু ঠিক করতে হবে। মাথায় হাজারো টেনশন।
🥀🥀
কিছুদিন হসপিটালে থাকার পর ফায়াজ সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছে। আজ ওর জন্মদিন। সে উপলক্ষে বাড়িতে ছোট-খাটো প্রোগ্রাম রেখেছে। ফায়াজ কখনো নিজের জন্মদিন নিয়ে মাতামাতি করে নি। ফায়াজ ব্যাক করায় ওর বন্ধুরা একটা পার্টি চাচ্ছে। আর ফায়াজ জন্মদিনটাকে উপলক্ষ করে পার্টি রেখেছে।
মেহের বিছানার সাথে লেপ্টে আছে। পেটের যন্ত্রণায় ছটফট করছে। কি অসহ্য যন্ত্রণা। ওর ফোন বেজেই চলেছে কিন্তু রিসিভ করার নামই নেই। সামিরাও নেই।
মেহের অনেক কষ্টে উঠে বসে হাত বাড়িয়ে ফোনটা নিয়ে ফায়াজের নাম্বার দেখে। মেহের জোরে শ্বাস নিয়ে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছে। তারপর ঘনঘন শ্বাস ফেলল। ফোনটা রিসিভ করে কানে দিল।
ফায়াজ রাগান্বিত হয়ে বলল,
“তোমার ব্যাপার কি বলো তো। ফোন রিসিভ করছো না কেন? কখন থেকে ফোন করে যাচ্ছি।”
মেহের চুপ করে আছে। ফায়াজ বিরক্তবোধ করছে। তারপর বিরক্ত নিয়ে বলল,
“গাড়ি পাঠিয়েছি। ড্রাইভার কখন থেকে বসে আছে। তুমি আসছো না কেন?”
মেহের মৃদুস্বরে বলল,
“ফায়াজ, আমি আসতে পারব না। আমার ভালো লাগছে না।”
ফায়াজ দ্বিগুণ রাগ নিয়ে বলল,
“তুমি কি চাইছো আমি আসি?”
মেহের দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,
“আমি আসছি।”
মেহের উঠে মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিল।
।
মেহের ফায়াজের বাড়িতে ঢুকে আরো অসুস্থ বোধ করছে। এই হৈ-হুল্লোড় ওর সহ্য হচ্ছে না।
ফায়াজ মেহেরকে দেখে বন্ধুদের ভীড় থেকে উঠে আসে। মেহেরকে নিজের রুমে নিয়ে যায়। মেহের মুখ ভার করে আছে।
ফায়াজ ওর মুখ দেখে বলল,
“তুমি আমার জন্মদিনে মুখ ভার করে থাকবে?”
মেহেরের মনে হচ্ছে ফায়াজের সুন্দর দিনটা নষ্ট করার কোন অধিকার ওর নেই। ফায়াজের এই আনন্দ ওর অসুস্থতা নষ্ট করতে পারে না। মেহের মিষ্টি হাসল। ফায়াজ আলমারি থেকে একটা ড্রেস বের করে মেহেরকে দিল।
“মেহের আজ তুমি এটা পড়বে। আর সুন্দর করে সাজবে।”
মেহের ফায়াজের হাত থেকে ড্রেসটা নিয়ে ওয়াশরুমে গেল। মেহেরের শরীরটা এখন একটু ভালো লাগছে। মেহের খুশি মনে চেঞ্জ করে এলো। ফায়াজ সোফায় বসে অপেক্ষা করছিল। ওয়াশরুমের দরজার দিকে তাকিয়ে আছে। মেহেরকে দেখে উঠে দাড়াল। এই নীল ড্রেসে মেহেরকে মোহনীয় লাগছে। ফায়াজ মুগ্ধ চোখে দেখছে ওকে। মেহের ফায়াজের দৃষ্টি দেখে লজ্জা পেয়ে গেল। ফায়াজ ধীরে ধীরে মেহেরের দিকে এগুচ্ছে। মেহের অস্বস্তিতে পড়ে গেল। কথা ঘুরানোর জন্য বলল,
“আপনার বাবা কই?”
ফায়াজ থমকে গিয়ে বলল,
“আর বাবা! আমি এক্সিডেন্ট করেছি দূর থেকে খোঁজ নিয়েছে। আর জন্মদিনে দামী গাড়ি, উপহারসামগ্রী পাঠিয়েছে।”
মেহের কোন প্রতিউত্তর না দিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আচঁড়ে খোপা করতে নিলে ফায়াজ বাঁধা দিয়ে বলল,
“থাক! বাধঁতে হবে না। ওদের সামনে খারাপ লাগলে মাথায় ঘুমটা দিও।”
মেহের আর বাঁধল না। চুলটা ছেড়ে দিল। ফায়াজ মেহেরকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিল। মেহেরকে অপলক দেখছে। ওর চুলগুলো আঙুল দিয়ে নাড়ছে। মেহেরের শরীর জুড়ে কেমন শিহরণ বয়ে যাচ্ছে। ঢোক গিলছে। ফায়াজ মেহেরের গালে নিজের গাল ঘেঁষিয়ে বলল,
“কোন উপহার দিলে না?”
মেহের কিছু বলতে চেয়েও পারছে না। গলা আঁটকে আসছে। ফায়াজ মেহেরের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে দিল। মেহেরের চোখ বড়বড় হয়ে গেল। ও যেন ফ্রিজড হয়ে গেল।
ফায়াজ মেহেরকে ছাড়তেই মেহের জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে।
ফায়াজের চোখে চোখ পড়তেই দৌড়ে পালাল। মেহের রুমের বাইরে যেতেই হটাৎ করে পেটের ব্যথাটা বেড়ে গেল। মেহের পেটে হাত দিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বসে পড়ল। চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।
ব্যথায় ছটফট করছে। চিতকার করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু পারছে না। মেহেরের চোখ বন্ধ হয়ে আসছে৷ জোর করেও চোখ মেলে রাখতে পারছে না। ধপ করে মেঝেতে পড়ে গেল। সেন্স হারিয়ে ফেলেছে। ফায়াজ রুমের বাইরে আসতেই মেহেরকে দেখে চিতকার করে বলল, “মেহের!!!!”
চলবে…