শ্যামাকন্যাতে আসক্ত পর্ব-০১

0
1071

#শ্যামাকন্যাতে_আসক্ত
সুচনা পর্ব
#লেখনীতেঃহৃদিতা_ইসলাম_কথা

ভালোবাসার মানুষটি যখন নিজের হাতে পৃথাকে একটা জানোয়ারের হাতে তুলে দেয়।তখন পৃথা স্তব্ধ হয়ে গেছিল।তার আশেপাশে সবকিছু চলমান থাকলেও থমকে গেছে শুধু তার জীবন। সে এখনও মানতে পারছে না যে যাকে সে নিজের জীবনের থেকেও বেশি ভালোবাসে সে একদিন এভাবে মাঝপথে তার হাত ছেড়ে দিবে।যেখানে বিপদের সময় সে তাকে বুকে আগলে রাখবে সেখানে সে তার হাত ছেড়ে চলে যাচ্ছে।মানতে পারছে না সে।অঝোরে জল ঝড়ছে পৃথার আখি সমুদ্র হতে।নিঃশব্দে কাঁদছে সে।বুকের ভিতরের পুড়ছে খুব করে।রক্তক্ষরণ হচ্ছে খুব।কেনো করলো সে এমন? কি এমন কারন ছিল? যার জন্য চার বছরের ভালোবাসাকে এভাবে একটা কুকুরের হাতে তুলে দিতে তার হাত কাপলো না।

আমরা আমাদের কাছের মানুষটিকে সবথেকে বেশি ভরসা করি।কারন আমরা জানি আমাদের জীবনে ভালো খারাপ সবসময় তারা আমাদের পাশে থাকবে।আর কেউ না থাকলেও পরিবার আর ভালোবাসার মানুষটি কখনো হাত ছাড়বে না।কিন্তু যখন সবচেয়ে ভরসার হাতটাই ছেড়ে চলে যায়।তখন মানুষের জীবন থমকে যায়।যেমনটা থমকে গেছে পৃথার জীবন।এই মানুষ নামক জানোয়ারের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসতে চেয়েছিল সে। কিন্তু নিজের কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌছানোর পর যখন তার গন্তব্যই তাকে ছেড়ে দুরে সরে যাচ্ছে তখন তার হৃৎস্পন্দন থমকে গেছে।হৃদস্পন্দন থমকে গেলে মানুষটি বেঁচে থাকে না।পৃথারও একই অবস্থা।কখনো কখনো জীবত থেকেও মানুষ লাশ হয়ে যায়।আজ পৃথাও সে অবস্থায় বিরাজ করছে।পৃথার হৃদস্পন্দন ও তো শুধু সেই মানুষটির জন্য স্পন্দিত হতো।তার প্রতিটি নিশ্বাসে তার বিচরন।প্রতিটি মুহুর্ত তার ভাবনায় ডুবে থাকত।শত দুঃখ কষ্টের মধ্যেও তার কথা মনে পড়লে তার ঠোটের কোনে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠত।সে যেখানেই যেত তাকেই সামনে পেত।নিশ্বাসের থেকেও বেশি তার নাম নিত।আর আজ সেই মানুষটাই এত বড় ধোকা দিল তাকে। বিশ্বাসঘাতকতা করলো তার সাথে।বাবাকে দেয়া কথার খেলাপ করলো।

আচ্ছা সে তো বাবাকে তার মৃত্যু শয্যায় কথা দিয়েছিল সারাজীবন আমার খেয়াল রাখবে,আমায় ভালোবাসবে,আমায় আগলে রাখবে সব বিপদ আপদ থেকে।আর আজ সেই আমাকে বিপদের মুখে ঠেলে দিল।আর ভাবতে পারছে না পৃথা। ভাবতেও চাইছে না কিন্তু তবুও ভাবনা গুলো এসে পড়ছে। ওই বিশ্বাসঘাতককে মনে করতে চায় না সে অথচ সে বারবার তার মস্তিষ্কে এসে ধরা দিচ্ছে।তাকে কিছুতেই মন আর মস্তিষ্ক থেকে বের করতে পারছে না সে।আচ্ছা সে কি এখনো তার মনের মাঝে বিরাজ করছে।নাহ করছে না তার মত ঘৃনিত পশুকে কেনো সে নিজের মনের মাঝে জায়গা দিবে। দিবে না তার জন্য আজ থেকে শুধুই ঘৃনাই বরাদ্দ। শুধু ঘৃনা করা যায় তাকে।

ঘরের এক কোনে গুটিসুটি মেরে বসে লাল বেনারসি পরিহিতা সুন্দর রমনীটি যার কাজল লেপ্টে আছে, চুলের অবস্থা ভিষন খারাপ,লিপস্টিক লেপ্টে এবড়ো থেবড়ো হয়ে আছে,হাতে কাচের লাল রঙা চুরি আর গা ভর্তি গহনা এলোমেলো হয়ে আছে।তবুও তাকে অদ্ভুত সুন্দর লাগছে।এই শ্যামা কন্যার মায়াবি চোখ যে কারো নজর কাড়তে বাধ্য।ঘন কালো ভ্রুযুগল,চোখের ঘন পাপড়ি আর টোল পড়া গালের হাসিতে যে কেউ প্রথম বারেই মুগ্ধ হতে বাধ্য।তার মায়াবি নিলাভ চোখের মনি তার সৌন্দর্যকে যেন আরো কয়েক শ গুন বাড়িয়ে দেয়।ঠোঁটের নিচে কালো কুচকুচে তিল তার রুপের মাধুর্যতাকে আরো বৃদ্ধি করে দেয়।এত সুন্দর অপরুপা নারী এই মুহুর্তে তার স্বামীর ঘরের এক কোনে বসে নিরবে নিজের অশ্রু বিসর্জনে ব্যস্ত।তার মনে কারও জন্য জায়গা নেই কারো জন্য না।আজকের পর আর কেউ এ মনের দখলদার হবে না।সবাই প্রতারক বিশ্বাসঘাতক।কাউকে বিশ্বাস করবে না সে।সবাই বিশ্বাসের অযোগ্য ক্ষমার অযোগ্য।

–সেই কয়েক ঘন্টা ধরে একই ভাবে বসে কান্না করছে সে।শুধু অশ্রু ঝড়ছে।কোন শব্দ নেই।ব্যথিত গলায় কথাটি বলেই চলে গেলেন মিসেস খান।

সামনেই তার ছেলে অর্নিল খান অর্ন।চোখেমুখে এক বিশাল পাহাড় সমান কষ্ট ধরা দিচ্ছে। কিন্তু সে নিরুপায় কিচ্ছু করতে পারবে না।যেটা হওয়ার সেটা হতেই হবে।সত্যিটা মানতে হবে।এর বেশি সে আর কিচ্ছু করতে পারবে না।চুপচাপ মায়ের কথা শুনে ঠায় দাড়িয়ে রইলো সে।প্রতিক্রিয়া করলো না আর না উত্তর দিলো।মিসেস খান চলে গেলেন।তিনিই বা কি করবেন।সবটাই নিয়তির খেলা।নিয়তি যেমন চায় তেমনটাই হয়।তাই তো না চাওয়া সত্বেও আজ এমন একটা ঘটনার সম্মুখীন তারা।সবটা স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে।তাই তাদেরকে সময় দিতে হবে।পৃথা যেন একটা জড়বস্তুুতে পরিনত হয়েছে। যার ভিতরে প্রান নেই।

চুপচাপ কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে চলে গেল অর্ন।কোথায় যাচ্ছে কেনো যাচ্ছে জানে না। শুধু জানে সে পারবে না।পারছে না এইসবকিছু মেনে নিতে।

🌼চলুন জেনে আসি কি এমন হলো এই অপরুপা রমনীর জীবনে। যা তার জীবনকে থমকে দিছে।🌼

” অতীত ”

আজ সকালেই ভার্সিটির জন্য বেরোতে যাচ্ছিলো পৃথা। বাইরে বের হওয়ার জন্য দরজা খুলতেই তৎক্ষনাৎ সামনের মানুষটিকে দেখে পা থমকে যায় তার।এই মানুষটি বিগত ২ টা মাস ধরেই তার জীবন বিষাক্ত করে তুলেছে।তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছে সে হাজার বার ফিরিয়ে দেওয়ার পরও।তার বাড়ির লোক পর্যন্ত এবাড়িতে এসেছিল বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে পৃথা মানা করে দেয়।সে তখন থেকেই তার পিছনে পড়ে আছে।সবসময় ছায়ার মত তার পিছনে লেগে আছে।বাড়িতে ছাড়া কোথাও শান্তিতে থাকতে পারে না সে।তার কাছে যারা আছে তাদেরকে আঘাত করে।কোন ছেলে তাই ভুল করেই তারদিকে তাকায় না।সে তাকে অনেক অপমান করলেও তাতে যেনো তার ভ্রুক্ষেপ নাই।কিন্তু পৃথা ভয় পায় না তাকে।হোক সে কোন এমপি মন্ত্রীর ছেলে।আমি আমার ইচ্ছেতে বাঁচবো।

একদিন খুব বেশি বিরক্ত হয়ে সে মাঝ রাস্তায় দাড়িয়ে তাকে চড়ও মারে।কিন্তু তাতেও কিছু হয় না।সবার সাথে মিশতে না পারলেও সে তার ভালোবাসার মানুষটিকে কখনো কাধছাড়া করেনি। সে প্রায়শই তাকে দেখিয়ে দেখিয়ে তার ভালোবাসার মানুষ তনয়কে নিয়ে তার সামনে দিয়ে চলতো।একদিন রাগে তয়নকে আঘাত করতে গেলে সেদিনই তাকে চড় মারে পৃথা।তারপর আর সে তয়নকে আঘাত করেনি।কারন তয়নকে আঘাত করায় পৃথা নিজের হাত কেটে ফেলেছিল।তা দেখে ছেলেটি অদ্ভুতভাবে বিচলিত হয়ে পড়ে।পাগলের মত আচরন করে।তখন থেকে ছায়ার মত তার পাশে থাকে সে।কিন্তু কিছু বলে না।আর কাউকে আঘাতও করে না।পৃথা বিরক্ত হলেও কিছু করার ছিল না।এত বড় মন্ত্রীর ছেলে হওয়ায় তার অনেক ক্ষমতা। সে কিচ্ছু করতে পারবে না।তার বাবার থেকেও তার ক্ষমতা যেন বেশি।লন্ডন থেকে পড়াশোনা শেষ করে দুবছর আগে দেশে ফিরেই সে তাদের ক্ষমতা দেখাতে শুরু করে।তবে শোনা যায় সে শুধু অন্যায়কারীদের শাস্তি দেন।সাধারন মানুষের ক্ষতি করে না।তবে প্রচন্ড রাগী আর বদমেজাজি। একবার রেগে গেলে আর কেউ তাকে সামলাতে পারেনা।হলুদ ফর্সা গায়ের রং তার।দেখতে মাশাল্লাহ। অনেক মেয়ে তার এটিটিউট আর পারসোনালিটিতে পাগল প্রায়। কিন্তু তার রাগের জন্য তার ধারে কাছে ঘেষার সাহস পায় না কেউ। সবাই জমের ভয় পায় তাকে।যেন স্বয়ং মুত্যু অর্ন খান।

এমন একজন মানুষ কেনো এভাবে পড়ে আছে তার পিছনে।সেটাই বুঝে পায় না পৃথা। সে তো অতটা সুন্দরী নয়।শ্যাম বর্ন গায়ের রং, খুবই সাধারন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে সে।বাবা গতবছর সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত থাকাকালীন মৃত্যুবরন করেন।প্রায় দুবছর পর পরিবারের কাছে ফিরে আসার পথে তার এক্সিডেন্ট হয়।কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।তখন তার একমাত্র আদরের রাজকুমারীকে তার বন্ধুর ছেলে তনয়ের হাতে তুলে দেয়।তনয়ের পরিবারও মধ্যবিত্তই তবে পৃথারা তাদের থেকে ভালো অবস্থানেই ছিল।

মুহুর্তেই তার মনে বিরক্তির সঞ্চার হয়। এই আপদ এখানে কি করে? এসব ভাবনার মাঝেই সানগ্লাসটি চোখ থেকে সরিয়ে অর্ন গহীন চোখে কিছুক্ষণ পৃথাকে দেখর ভেতরে ঢুকে গেল।সাথে আরো কিছু লোকজন যাদের হাতে বড় বড় ডালা সেগুলো হলুদ কাপড়ে আচ্ছাদিত।ভিতরে পৃথার মা আর তার ছোট ভাই সাথে দাদি বসে ব্রেকফাস্ট করছিল।

অর্ন ভেতরে ঢুকেই আরাম করে পায়ের উপর পা তুলে বসে পড়ে সোফায় । পৃথা ভ্রু কুচকায় আবার কোন নাটক শুরু করলো এ।
বিরক্ত নিয়ে কর্কশ গলায় বলায়,

–এসব কি? কেনো এসেছেন এখানে? আপনাকে আপনার জবাব দেয়া হয়েছে তাও কেন এখানে এসেছেন।কারো বাড়িতে অনুমতি না নিয়ে হুট করেই ঢুকে পড়া কোন ধরনের ভদ্রতা।

— তুমি একটু বেশিই কথা বলো।

একদম শান্ত আর ধীর আওয়াজে বললো অর্ন।লোকগুলো মাথা নিচু করেই ডালা হাতেই দাড়িয়ে আছে।পৃথার মা দাদি আর ছোট ভাইটি ড্রয়িং রুমে এলেন।অর্ন এবার উঠে গিয়ে পৃথার মা।ফাহমিদা বেগমকে সালাম করে বললো,

— শাশু মা আমি আমার বউকে নিয়ে যেতে এসেছি।সসম্মানে আমার হাতে তুলে দিবেন নাকি উঠিয়ে নিয়ে যাবো।

অর্নর এমন ঠান্ডা গলার কথা শুনে হাতে ডালা নিয়ে দাড়ানোর সবার বুক ধুকপুক করছে।তারা জানে অর্ন যা চায় তা সে ছাড়া আর কেউ পায় না।অর্নর রাগ সম্পর্কে সবার ধারনা থাকলেও আর্মির পরিবার অর্নকে ভয় পায় না।বাবা সেনাবাহিনীর অফিসার হওয়ায় পরিবারের সবার মধ্যে সাহস একটু বেশিই।তারা কোন কিছু নিয়ে কম্প্রোমাইজ করে না।অধিকার ইজ অধিকার।তারা নিজেদের অধিকার থেকে কেনো বঞ্চিত হবে।তাদের মধ্যে পৃথার সাহস একটু বেশিই।

–মুখ সামলে কথা বলো।হতে পারো তুমি কোন মন্ত্রীর ছেলে বা তোমার অনেক পাওয়ার থাকতে পারে কিন্তু সেটা এখানে দেখাতে এসো না।আমার মেয়েকে আমি কখনোই তোমার হাতে তুলে দিব না।আর না তুমি ওকে তুলে নিয়ে যেতে পারবে।ফিরে যাও বলছি আমাদেরএভাবে বিরক্ত করার কোন মানেই হয় না।

— যাবো তো শাশু মা যাবো।তবে আমার কাজ হাসিল করেই যাবো। আমি তো আমার বউকে নিয়েই যাবো।সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুল বাঁকাতে হয় জানেন তো আমি তাই করবো।

বলেই বাঁকা হাসলো অর্ন।তারপর পৃথার দিকে তাকিয়ে তাকে চোখ মারলো।পৃথার যেন রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে।

— থ্রেট দিচ্ছো আমাদের। ভয় পাই না আমরা তোমাকে

–সব টেবিলে রেখে বেরিয়ে যাও।

সবাই তাই করলো।

— তো বলুন শাশু মা মেয়েকে আমার হাতে আপনি তুলে দিবেন নাকি আমি নিজ দায়িত্বে তাকে নিয়ে যাবো।

বলেই ঠোঁট কামড়ে হাসলো সে।

— আমি বলেছি বেরিয়ে যাও আমার বাড়ি থেকে।

অনেকটা চেচিয়ে বলে উঠলেন ফাহমিদা বেগম।কিন্তু অর্নর হেলদোল নেই।সে তার মত আরাম করেই বসে আছে।

— আপনি ভালো কথা শুনবেন না দেখছি।আমাকেই কিছু করতে হবে।
বলেই আমার হাত টেনে আমাকে আমার রুমে নিয়ে দরজা আটকে দিলেন।সবটা অনেকটাই তাড়াতাড়ি হলো।আমি স্তব্ধ। বাধা দেওয়ার সুযোগ পাই নি আমি।শুধু রাগে জ্বলছি পুড়ছি।কত বড় সাহস এই ছেলের আমাকে ছুঁয়েছে।রাগে গা থরথর করে কাঁপছে পৃথার শরীর।

ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে স্লাইড করতে করতে ঠোঁট কামড়ে ধরে এগিয়ে আসলো অর্ন।

— একদম ছোবেন না আমাকে।

তীক্ষ্ণ গলায় বললো পৃথা।

সে না থেমে এগিয়েই যাচ্ছে। খানিকটা কাছে এসে দাড়াতেই পৃথা তার চোখ বন্ধ করে নিল।অর্ন তার কাছে এসে বললো,

–চোখ খোলো।চোখ বন্ধ করে ফেলেছো কেন? তুমি তো ভয় পাও না আমাকে।আমার চোখে চোখ রাখো।চোখের দিকে তাকাও।

— আমি আপনার কথা মানতে বাধ্য নই।চলে যান বলছি।

রাগে পৃথার শরীর থরথর করে কাঁপছে। তার সাথে গোলাপি ঠোঁট যুগলও।সেদিকে নজর পড়তেই যেন ঘোরের মধ্যে চলে যাচ্ছে অর্ন।খুব কষ্টে নিজেকে সামলে নিল সে।পৃথা খানিক পড়ে চোখ খুলতেই অর্নর গহীন বাদামি রঙের চোখে চোখ পড়লো তার।কিছু তো ছিল ওই চোখে সে তাকিয়ে থাকতে পারলো না তাই চোখ নামিয়ে নিল।হুট করেই আচমকা অর্ন পৃথার কোমর চেপে কাছে টেনে এনে পৃথার গলায় মুখে গুজে দেয়।পৃথা ছটপট করছে ছাড়া পাওয়ার জন্য একপর্যায়ে সমস্ত শক্তি দিয়ে ধাক্কা দেয় সে অর্নকে তাও ছাড়াতে পারে না নিজেকে।তখনই অর্ন বলে ওঠে।

— তোমার এই পুটি মাছের শরীর নিয়ে আমার সাথে পারবেনা তুমি।তাই বৃথা চেষ্টা করো না।

গলায় নাক ঘষতে ঘষতে নেশাক্ত কন্ঠে বলে ওঠে অর্ন।আর পৃথা ছটপট করেই যাচ্ছে। প্রানপন চেষ্টন করে চলেছে।দরজায় তার মা আর বাকিরা দরজা ধাক্কাচ্ছে যতই হোক মেয়েটার সাথে যা কিছু করতে পারে এই ছেলে।

— তুমি যদি তোমার পরিবারকে অক্ষত দেখতে চাও তো রাজি হয়ে যাও।আমি যা কিছু করতে পারি তুমি খুব ভালো করেই জানো আর তাই এমন কিছু করো না যাতে তোমায় সবাইকে হারাতে হয়।মাইন্ড ইট!

বলেই পৃথাকে ছেড়ে চলে গেল অর্ন।আর পৃথা চুপচাপ ঠায় দাঁড়িয়ে আছে।তাহলে কি ওর জন্য ওর পরিবারের ক্ষতি করে দিবে এ।না না তা কিছুতেই হতে দিবে না পৃথা।ওকে ওর পরিবারকে বাঁচাতে হবে আর নিজেকেও।পৃথা লেখাপড়া জানা বুদ্ধিমতি মেয়ে সবটা সামলাতে জানে কাউকে ভয় পায় না সে।তাই সে রাজি হলো অর্নর কথায়।অর্ন এবাড়িতে বিয়ে করতে চাইলে সে বাধা দিল যে এবাড়িতে বিয়ে হবে না আর ওর পরিবারের কেউ এ বিয়েতে উপস্থিত থাকবে না।অর্ন মেনে নিল সবটা। পৃথার মত করেই সব করবে সে।

পৃথা অর্নর বাড়ির উদ্দেশ্য বেরোনোর আগে মাকে সবটা বুঝিয়ে দিল কিভাবে কি করবে।তারপর সে অর্নর সাথে চলে গেল অর্নর বাড়িতে।পৃথার এভাবে রাজি হওয়াতে রহস্যময়ী এক হাসি দিল অর্ন।যা পৃথার চক্ষুর অগোচরেই রয়ে গেল।

#চলবে কি…..