শ্রাবণের শেষ সন্ধ্যা পর্ব-০১

0
1457

#শ্রাবণের_শেষ_সন্ধ্যা
#সূচনা_পর্ব
মুশফিকা রহমান মৈথি

চলমান বাসে বিশ্রী আপত্তিকর স্পর্শ পেতেই ভেতরটা নড়ে উঠে নবনীতার। সারা শরীরে হাজারো তেলাপোকা যেনো হেটে গেলো। এক অসহ্য শিরশির অনুভূতি, লোমগুলো দাঁড়িয়ে গেলো তার। বাস চলছে আপন গতিতে, গন্তব্য আজমপুর। সিট না পাওয়ায় দাঁড়িয়েই যেতে হবে নবনীতাকে। বাসে চড়াটা রোজের কাজ তার। তবে এই প্রথম এমন অস্বস্তিকর কিছু ঘটলো। মনের ভেতরে একটা ভয় খুত খুত করছে। কিন্ত মস্তিষ্ক যুক্তি দাঁড় করালো,
“আজ বাসে ভিড় বেশী, অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে আছে তার পেছনে। কেউ একজন নড়ে চড়ে উঠায় স্পর্শ লেগে গেছে। এটা খুব স্বাভাবিক একটা ঘটনা। ভয় পাবার মতো কিছুই হয় নি।“

তবুও মন তো মন, যুক্তিতর্কের ধাঁর ধারে না। তাই ভীরু চোখে পেছনে ফিরলো নবনীতা। তার চোখে সন্দেহের রেখা। নাহ! সব যাত্রী সঠিক ভাবেই দাঁড়িয়ে আছে। তবে তার ঠিক পেছনের নীল শার্ট পড়া শ্যাম বর্ণের ছেলেটাকে দেখেই মনটা একরাশ অস্বস্তিতে ভরে উঠলো। উচ্চতায় নবনীতা তার কাঁধে পড়ে আছে, গড়ণ মোটামোটি কাতারের, খুব সাধারণ; মুখ ভর্তি কালো দাঁড়ি। ছেলেটার হাবভাব বেশ স্বাভাবিক, তবুও এক অস্বাভাবিকতা রয়েছে চোখে মুখে। এক সুপ্ত ছটপটানি রয়েছে তার মাঝে। বারবার রুমাল দিয়ে ঠোঁটের উপর জমে থাকা ঘাম মুছছে আর চোরের ন্যায় আশেপাশে তাকাচ্ছে। ব্যাটার চোখ মুখ যেনো বলেই দিচ্ছে যে চোর। নবনীতার ইচ্ছে হলো তাকে চার্জ করবে। কিন্তু বুকে সাহসের সঞ্চার করতে পারলো না। সন্ধ্যা সাতটা হচ্ছে সবচেয়ে ব্যাস্ত সময়। সবার তাড়া থাকে নিজস্ব গন্তব্যে পৌছানোর। সারাদিনের সকল ব্যস্তুতার ইতি টেনে তারা ফেরে নিজের গৃহে। কারোর বাজার করতে হয়, কারোর কিনতে হয় বেলীফুলের একসুতো মালা। আবার কারোর তাড়া বাড়ি গিয়ে অন্নের যোগান দেওয়া। কেউ আবার তার মতো টিউশনে যাবে, কাউকে বিদ্যা দিয়ে দু টাকা কামাই করবে। সবার আপন ছোট্ট পৃথিবীর নিজস্ব কর্ম, দায়িত্ব, জ্বালা আছে। তাই একটা সিন ক্রিয়েট করে সবার মনের বারোটা বাজাতে ইচ্ছে হলো না তার। সত্যি বলতে তার কাছে প্রমাণ ও নেই, এই ছেলেটাই তাকে ছুয়েছে।

নবনীতা সামনে ফিরলো। কপালে জমা ঘামটা ওড়নার ত্রিকোন দিয়ে মুছে নিলো। গাদাগাদি হবার কারণে গরমটাও আজ বেশ লাগছে। কে বলবে এখন শ্রাবণ চলে? ভ্যাপসা গরমে পরাণ যায় জ্বলিয়া। বাস চলছে। হঠাৎ সামনে স্টপ এসে পড়ায় বাসচালক সজোরে ব্রেক কষলো। স্থিতি জড়তার কারণে দুকদম সামনে ঝুকলো নবনীতা। শক্ত হাতে রডটা ধরে নিজেকে সামলে নিলেও সামলালো না পেছনের নীল শার্ট পরিহিত পুরুষটি। হুমড়িয়ে তার গায়ের উপর পড়লো। লোকটি নিজেকে স্থির রাখতে আকড়ে ধরলো নবনীতাকে। ফলে তার হাত স্পর্শ করলো নবনীতার স্পর্শকাতর স্থান। সাথে সাথে রক্ত টগবগিয়ে উঠলো নবনীতার। সারাটা শরীর রাগে কাঁপুনি দিলো। লোকটির এরুপ ব্যাক্কলপনা একেবারেই সহ্য হলো না তার। রোষচক্ষু দিয়ে তাকালো যুবকের দিকে। নাক ফুলিয়ে তীব্র কন্ঠে ঝাঁঝিয়ে উঠলো সে,
“কি অসভ্যতামি হচ্ছে? মেয়ে মানুষ দেখলেই ছুকছুকানি; তাই না?”

নবনীতার এমন প্রশ্নে পুরুষটি কিঞ্চিত লজ্জিতবোধ করলো। আমতা আমতা করে বললো,
“বিশ্বাস করুন, আমার দোষ নেই। ইচ্ছাকৃত এমন কিছু আমি করবো না, আমার মানসিকতা এতো নিচ না। আসলে বাসে চড়ার অভ্যেসটা আমার নেই। তাই ব্রেক সামলাতে পারি নি। ক্ষমা করবেন। আই এম এক্সট্রিমলি সরি।“

লোকটির কাঁচুমাচু মুখ দেখে কপাল কুঞ্চিত করে চোখ খিঁচিয়ে তাকালো নবনীতা। আশেপাশের সকলের দৃষ্টি তাদের দিকে। নবনীতা দমলো না। হিনহিনে কন্ঠে বললো,
“সব হ্যারাসারদের কমন ডায়ালগ এটা। তারা তক্কে তক্কে থাকে কখন কোন মেয়ের উপর ঢলে বাসচালকের ব্রেকের উপর দোষ চাঁপাবে।“
“আমি সত্যি বলছি কিন্তু, সরিও তো বলছি। খামোখা সিন করবেন না।“

বাসের কন্টাকটর সাহেব ছুটে এলেন। উগ্রীব কন্ঠে বললো,
“কি হইছে ম্যাডাম? কোনো পরোবলেম?”
“উনি আমাকে হ্যারাস করছেন”

কোনো জড়তা ছাড়াই কথাটা বলে নবনীতা। বাসের কন্টাকটর হা করে পুরুষটির দিকে তাকায়। পুরুষটির মুখটি পাংশু বর্ণ ধারণ করলো। নমনীয় গলায় বললো,
“মিথ্যে কথা, বাস ব্রেক করাতে আমি ব্যালেন্স হারিয়ে উনার উপর পড়ে গেছি। উনি তিলকে তাল করছেন।“

বাস থেমে আছে, চালক চালাতে সাহস পাচ্ছে না। এক নারী তার সাথে হয়ে যাওয়া আপত্তিকর ঘটনার প্রতিবাদ করছে। বাসে উপস্থিত পুরুষ সমাজ প্রশ্নের দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। তারা কিঞ্চিত দ্বিধায় আছেন তারা ঝাঁপিয়ে পড়বে কি না। বাঙ্গালীদের এমনেই একটু বেশি উৎসাহ থাকে অন্যের ব্যাপারে উপযাজক হওয়ার। তবে আজ খানিকটা ভিন্ন ঘটনা ঘটলো। সবাই হয়তো নিজেদের ব্যাক্তিগত টানাপোড়েনে এবং ঝাঁঝালো গরমের নিষ্ঠুরতায় তাদের অন্যের ব্যাপারে আগানোর আগ্রহটা শুষে নিয়েছে। এর মাঝেই এক বৃদ্ধ চাচা পুরুষ সমাজের হয়ে বললেন,
“মা, চলন্ত বাস। একটু ধাক্কা লাগতেই পারে। পোলাডার দোষ নাই, ওয় সত্যি তাল হারায় ফেলছে। তুমি আর কথা বাড়াইয়ো না। এই পোলা তুমিও সঠিক ভাবে দাঁড়াও। কন্টাকটর, তুমি বাস ছাড়তে কও। গরম লাগতেছে। জ্যামে পড়লে মুসিবত হইবো। চালাইতে কও বাস।“

বৃদ্ধের আবেদন ফেলাতে পারলো না নবনীতা। মস্তিষ্ক তার যুক্তি মেনে নিলো। সকলেই ক্লান্ত, যে যার বাড়ি ফিরবে। এখন বাস থামিয়ে ঝামেলা করাটা ঠিক হবে না। সত্যি বলতে সেও ক্লান্ত, তার এখনো একটা টিউশনি বাকি, সেটা করে বাড়ি ফিরবে। আগামীকাল ভার্সিটির ক্লাস টেস্ট ও রয়েছে। তাই একটু তাড়াতাড়ি টিউশনী শেষ করতে হবে। নবনীতা ঘড়ির দিকে একবার দৃষ্টিপাত করলো, আটটা বাজতে দশ মিনিট বাকি, বাস প্রায় এয়ারপোর্ট চলে এসেছে। তাই এটুকু পথ একটু দমে থাকলেই নিস্তার। মাথানত যুবকের দিকে রুদ্র দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো নবনীতা। তারপর কিঞ্চিত এগিয়ে আসলো যুবকটি থেকে। কন্টাকটরকে বললো,
“বাস ছাড়তে বলুন”

কন্টাকটর সাহেব যেনো হাফ ছাড়লো। বাস পুনরায় চলতে থাকলো। নবনীতা মিনিট পনেরোর জন্য স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও তা স্থায়ী হলো না। আবারো পিঠে পূর্বের ন্যায় আপত্তিকর স্পর্শ অনুভূত হলো তার। হাত ক্রমেই মুষ্টিবদ্ধ হয়ে এলো, শরীরের উষ্ণ রক্ত ছলকে উঠলো। কিছুক্ষণ স্থির রইলো সে। কিন্তু স্পর্শটা ক্রমেই নিম্মগামী হচ্ছে। এখন বিরোধ না করলে সত্যি ই দেরি হয়ে যাবে। তড়াক পেছনে ফিরে সজোরে চড় বসিয়ে দিলো সে সেই নীল শার্ট পরিহিত যুবকের গালে। আকর্ষিক থাপ্পড়ে যুবক সহ বাসে উপস্থিত যাত্রীদের সবাই হতবাক হয়ে গেলো। সহস্র প্রশ্ন তাদের মনে। নবনীতা তীক্ষ্ণ কন্ঠে বললো,
“অসভ্য কোথাকার! এই মামা, বাস থামাও আমি নামবো।“

বাস থামতেই হনহন করে থেমে গেলো নবনীতা। একবার পেছনে তাকানোর প্রয়োজনীয়তা বোধ করলো না সে। তাকালে হয়তো যুবকের ভ্যাবাছ্যাকা খাওয়া মুখটি দেখতে পেতো। ছেলেটি এখনো বুঝতে পারছে না নবনীতা তাকে চপেটাঘাত করলো কেনো? সে তো নিজের মনে মোবাইলের মেইল চেক করছিলো।

রাস্তায় নামতেই বিশালাকার সংকটের মুখোমুখি হতে হলো নবনীতাকে। রিক্সা না পাওয়ার সংকট, একেই মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে আছে খরচার কথা ভেবে। যেখানে তার মোট যাতায়াত খরচ হতো মাত্র ত্রিশ টাকা সেখানে তাকে রিক্সা ভাড়াই পঞ্চাশ টাকা বেশি হচ্ছে। টাকার ব্যপারে নবনীতা বরাবরি বড্ড বেশি কৃপন। মেপে মেপে এক এক টাকা খরচ করে সে। বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকে তবুও বারো টাকার ভাড়া পনেরো টাকায় যাবে না। তার বিশ্বাস এক এক টাকা জমিয়ে মাস শেষে ত্রিশ টাকা তো জমবে। তার কৃপনতার কারনে মাস শেষে সংসারের টানের সময় মায়ের পাশে দাঁড়াতে পারে সে। মধ্যবিত্ত পরিবারের এ যেনো রোজকার ব্যাপার। গোনা টাকায় সংসার চালালে একটা একটা টান পড়েই। এক মাসে ভাই এর ভালো মন্দ খাবার ইচ্ছে জাগলেই বাধে গরমিল। টাকার কথায় মনে পড়লো একটা ছাতা কেনা প্রয়োজন। বিনা নোটিসে যখন তখন বর্ষা হয়। পাঁচ বছরের পুরোনো ছাতাটা গত সপ্তাহে ইন্তেকাল করেছে। দেড়শ টাকার ছাতাই তো কতোদিন সার্ভিস দিবে? আজ যেভাবেই হোক ছাত্রীর বেতনটা নিবেই সে। মাস পড়েছে এক সপ্তাহ হয়ে গিয়েছে কিন্তু ছাত্রীর মা টাকা দেন নি। এতো বড়লোক তবুও পাঁচ হাজার দেবার বেলায় নকটামি। নবনীতা চাইতেও পারে না। এক অস্বস্তি ভেতরটাকে কামড়ে ধরে। ছাত্রীর বয়স ও কম তাই তার কাছেও বলতে পারে না সে। মাঝে মাঝে নবনীতার মনে হয় পরিবারের বড় সন্তানদের হয়তো ভাগ্যটাই এমন হয়। এসব ছাইপাশ ভাবতে ভাবতেই হাটতে লাগে নবনীতা। আকাশের পশ্চিমকোনে মেঘ জমেছে। শ্রাবণের সন্ধ্যায় নিঝুম আধারে সোডিয়ামের লাইটের স্পর্শে হাটতে খুব একটা মন্দ লাগছে না। বাসের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো মন থেকে আবছা হতে লাগলো। মনের ব্যালকনিতে উদয়মান সূর্যের উপরের মেঘমালা সরতে লাগলো।

পড়ার টেবিলে পা ঝুলিয়ে বসে আছে স্নেহা। অপেক্ষা করছে তার নতুন ম্যাডাম আপুর। প্রতিদিন আটটা বাজলেই তিনি হাজির হন স্নেহার বাসায়। টানা আড়াই ঘন্টা পড়ান। সপ্তাহে পাঁচ দিন আসেন, বন্ধ শুধু শুক্র আর মঙ্গলবার। স্নেহা এই ম্যাডামকে মোটেই ভালো লাগে না। আগের স্যার খুব ভালো ছিলো, সপ্তাহে একদিন পড়ালে তিনদিন ছুটি। সেই আনন্দে আত্নহারা থাকতো স্নেহা। কিন্তু এই ম্যাডাম একেবারে পাঞ্চুয়াল। মা,বাবা খুশি হলেও স্নেহার মোটেই এই ম্যাডামকে ভালো লাগে না। আজ স্নেহার মন বেশ ভালো। তার ধারণা আজ ম্যাডাম আসবেন না। তাই সে মুখ টিপে হাসছে আর পা দুলাচ্ছে। হঠাৎ কলিংবেলের শব্দে তার হাসি মিয়ে গেলো। মুখে বিষন্নতার ছাপ পড়লো। ফর্সা মুখটা আষাঢ়ের কালো মেঘের ন্যায় করে দরজা খুললো সে। দরজা খুলতেই হনহন করে ভেতরে ঢুকলো নবনীতা। তার সারা শরীর কাক ভেজা হয়ে রয়েছে তার। তীক্ষ্ণ কন্ঠে বললো,
“একটা গামছা দাও তো স্নেহা, আর ফ্যানের স্পিড বাড়িয়ে দাও। ফুল স্পিড দিবে।“

স্নেহা মাথা কাত নবনীতার কথা মতো কাজ করলো। সারা শরীর মুছে কিছুক্ষণ ফ্যানের নিচে বসলো সে। এই বিনা নোটিসের বর্ষণ বেশ ঝামেলায় ফেলে দিয়েছে নবনীতাকে। বিরক্ত মুখে স্নেহাকে বললো,
“হোমওয়ার্কের খাতাটা দাও। দেখি কি করেছো?”
“ম্যাডাম, আমি কিছু বুঝতে পারি নি। তাই হোমওয়ার্কটা করা হয় নি।“

স্নেহার এমনধারা কথায় মেজাজ আরোও বিরক্ত হয়ে গেলো নবনীতা। একেই বাসের ঘটনার পর মেজাজটা তিরিক্ষি হয়ে আছে, উপরে বৃষ্টির বিনা নোটিস স্নান। এখন ছাত্রী ও তাকে রাগানোর সর্বোচ্চ ধান্দায় আছে। এই স্নেহা নামক ছাত্রীটিকে নিয়ে প্রচুর যন্ত্রনায় আসে নবনীতা। এই মেয়েটি ক্লাস ফাইভ এ পড়ে, সামনে তার পিএসসি। কিন্তু সে সরল পারে না। তাকে বারবার করে নবনীতা বুঝায় প্রথমে ভাগ, তারপর গুন, তারপর যোগ সবশেষে বিয়োগ। মেয়েটি অতি বিজ্ঞ ভাব নিয়ে মাথা ঝুলাবে। নবনীতা তৃতীয় বারের মতো বলবে,
“বুঝেছো?”

মেয়েটি বলবে,
“জ্বী”

আর তার পর দিন করতে দিলে বলবে,
“ম্যাডাম কিছু বুঝি নি।“

টানা তিনমাস এই যন্ত্রণা ভুগতে হচ্ছে নবনীতার। সে কিছুই বুঝে না, ইংলিশ প্যারাগ্রাফ পারে না, বাংলা চিঠি লিখতে তার ভালো লাগে না। রচনার দু পেজ লিখে হাতে ব্যাথা হয়, বিজ্ঞানের সংজ্ঞা মনে থাকে না। এই মেয়ে পাস কিভাবে করবে এটাই সন্দেহ। আজ আর চুপ করে থাকতে পারলো না নবনীতা। কড়া স্বরে বললো,
“আপুকে ডাকো।“
“কেনো?”
“কেনো মানে? তোমার রোজ রোজের বাহানা, হোমওয়ার্ক এক দিন দিলে পরদিন তোমার বাহানা। যখন বুঝাই তখন তো খুব মাথা নাড়ো। করতে দিলে তো তোমার অযুহাতের ফুলঝুড়ি। আজ একটা বিহীত চাই। ডাকো তোমার আম্মুকে।“

নবনীতার ঝাঁড়িতে স্নেহা আরো গুটিয়ে যায়। নিচু স্বরে বলে,
“আম্মু নাই বাসায়”
“তাহলে কে আছে?”
“ছোট চাচু”

“ছোট চাচু” নামক কেউ আছে স্নেহার এটা নবনীতার জানা ছিলো না। এই তিন মাসে কখনো এই ব্যাক্তিটির মুখোমুখি হয় নি সে, তবুও আজ যেভাবেই হোক না কেনো বিচার তো দিতেই হবে। তাই সে বললো,
“ডাকো তাকে। তাকেই বিচার দিবো।“

স্নেহা পুনরায় ঘাড় কাত করে ছোটে ভেতরে। মিনিট দশেক বাদে তার ছোট চাচা শান্তকে নিয়ে হাজির হয় সে। নবনীতা স্নেহার নালিশ করতেই যাবে অমনি তার চোখ খিঁচিয়ে আসে। রাগে শরীর জ্বলতে থাকে। হিনহিনে স্বরে বলে,
“আপনি?………………

চলবে।