#শ্রাবন_মেঘের_বর্ষন🍁
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম
#পর্ব:১৮
—–“আমি এই বিয়ে কিছুতেই করতে পারবো না আম্মু…
“একপ্রকার রেগে কথাটা বললো মিতু তার মাকে’!!আর মিতুর মা মিতুর কথা শুনে হতাশ হয়ে বললেনঃ
—–“এমন করিস না তোর বাবা ওনাদের কথা দিয়েছেন আর ওনারা তো বিয়ে করাতে আসছে না তোকে দেখেই চলে যাবে…
—–“সে যাই হোক আমি এই বিয়ে কিছুতেই করতে পারবো না….
—–“এমন করিস না তোর বাবা কিন্তু খুব রেগে যাবে,তাই জেদ না করে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে আয় নিচে….
“বলেই চলে যায় উনি’!!আর মিতু একরাশ রাগ নিয়ে বসে পরলো বিছানায়’!!কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না সে’!!
“কিছু একটা ভেবে ফোনটা হাতে নিলো মিতু’!!তারপর ডায়াল করলো নাফিয়ার নাম্বারে’!!
!!
“রিকশা করে বাড়ি ফিরছিল নাফিয়া হর্ঠাৎই ফোনটা বেজে উঠতেই ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করে নিলো সে’!উপরে মিতুর নাম দেখে চটজলদি ফোনটা তুলে নিয়ে বললো সেঃ
—–“হুম বল….
—–“দোস্ত আমারে বাঁচা….
“মিতুর মুখে এমন কথা শুনে অবাক হয় নাফিয়া’!!কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে বললো সেঃ
—–“কি হইছে তোর….
—–“দোস্ত বাবা আমার বিয়ে ঠিক করছে আজকে ছেলেপক্ষ দেখতে আসবে কিন্তু আমি এই বিয়ে কিছুতেই করতে পারবো না কারন আমি রিককে ভালোবাসি,প্লিজ বোইন কিছু একটা কর….
“মিতুর কথা শুনে নাফিয়ার চোখ বড় বড় হয়ে যায়’!!
—–“কি তুই রিককে ভালোবাসিস,কেমনে কি হলো….
—–“হুম দোস্ত সেদিন প্রথম দেখায় রিককে ভালো লাগে আমার,আর সেই ভালো লাগাই ভালোবাসায় রূপ নিয়েছে প্লিজ তুই কিছু কর,না হলে যে ভালোবাসি বলার আগেই ব্রেকআপ হয়ে যাবে…(কান্না ভেজা কন্ঠে)
“মিতুর কথা শুনে বললো নাফিয়াঃ
—–“শান্ত হ তুই আমি রিকের সাথে কথা বলে দেখছি আর আপাতত তুই ছেলেগুঁজে পাএ পক্ষের সামনে বস তারপর দেখছি….
—–“ঠিক আছে দোস্ত….
“বলেই ফোনটা কেটে দেয় মিতু’!!
“নাফিয়ার কথা শুনে মিতুও শান্ত হয় তারপর নিজেকে ঠিক করে সেজেগুজে চলে যায় নিচে!’ব্লাক রঙের একটা শাড়ি পড়েছে সে,চুলগুলো বেনুনি করে হাল্কা মেকাপ দিয়েই তৈরি মিতু…..
!!
“হতভম্ব হয়ে রুমের ভিতর ঢুকে চেঁচিয়ে ডাকে নাফিয়া রিককে’!!নাফিয়ার চিৎকার শুনে নাফিয়ার আম্মু দৌড়ে এসে বললোঃ
—–“কি হয়েছে তুই চেচাচ্ছিস কেন?
—–“আম্মু রিক কই…
—–“কেন ও তো তোকে আনতে ভার্সিটি গেছে কেন কি হইছে…
—–“না কিছু হয় নি…
“এমন সময় নাফিয়াকে ডাক দেয় রিকের বাবা-মা’!!অর্থাৎ নাফিয়ার খালা খালু,ওনাদের দেখে নাফিয়া অবাক হয়ে বললোঃ
—–“তোমরা হোয়াট এ সারপ্রাইজ…
“বলেই খুশি মনে জড়িয়ে ধরে নাফিয়া তার খালামনিকে’!!নাফিয়ার কাজে খুশি হয়ে বললো রিকের আম্মুঃ
—–“ওই একটু কাজ ছিল তাই আরকি আচ্ছা শোন আমরা এক জায়গায় যাচ্ছি যাবি তুই আমাদের সাথে….
—–“না খালামনি আমার একটু জরুরি কাজ আছে তোমাদের সাথে পড়ে কথা হবে…
“খালামনিকে ছেড়ে দিয়ে বেরিয়ে যায় নাফিয়া’!!যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে রিকের সাথে কথা বলতেই হবে…
“এদিকে নাফিয়ার যাওয়ার পানে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বলে উঠলেন খালামনিঃ
—–“পাগলী একটা….
“হাসলো সবাই….
—–“ভাবছি ওর আর রিকের বিয়েটা এক সাথেই দিয়ে দিবো’!!কি বলস তুই…?
—–“ঠিক আছে বুবু….
—–“আচ্ছা আমরা যাচ্ছি তুই কি যাবি আমাদের সাথে…
—–“আমি গিয়ে আর কি করবো তোমরা দুজনই যাও….
—–“হুম ঠিক আছে…
—–“কিন্তু রিককি যাবে না আমাদের সাথে…
—–“তা তো জানি না….
—–“আচ্ছা রাস্তায় আমি ফোন করে দেখবো নে…
—–“ঠিক আছে বুবু…
“তারপর বেরিয়ে যায় রিকের বাবা মা….
_____________________
“লাগাতার রিককে ফোন করে চলছে নাফিয়া কিন্তু রিকের খবর নেই সে কিছুতেই ফোনটা তুলছে না’!!আরো কয়েকবার কল করার পর ফোনটা তুললো রিক’!!রিক ফোন তুললেই চেঁচিয়ে বলে উঠল নাফিয়াঃ
—–“কতক্ষণ যাবৎ ফোন করছি তোকে ধরছিস না কেন?
——“আসলে সাইলেন্ট ছিল তাই বুঝতে পারি নি…
—–“কোথায় আছিস তুই….
—–“এই তো তোর ভার্সিটির থেকে কিছুটা দূরে….
—–“আচ্ছা তুই ভার্সিটির গেটের সামনে থাকিস আমি এক্ষুনি আসছি তোর সাথে আমার জরুরি কিছু কথা আছে….
—–“ঠিক আছে….
—–“হুম…
“বলেই ফোনটা কেটে দেয় নাফিয়া তারপর রিকশা করে বেরিয়ে পড়ে ভার্সিটির যাওয়ার উদ্দেশ্যে….
.
.
.
“নাফিয়ার ভার্সিটির সামনে বাইকের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে রিক’!!অপেক্ষা কখন নাফিয়া ভার্সিটির ভিতর থেকে বাহিরে আসবে’!!হর্ঠাৎই রিকশা করে উল্টোদিক দিয়ে নাফিয়াকে আসতে দেখে অবাক হয় রিক’!!
“এদিকে নাফিয়া রিককে দেখে রিকশা থামিয়ে রিকশাওয়ালার ভাড়া মিটিয়ে দৌড়ে চলে যায় রিকের সামনে’!!তারপর হতভম্ব হয়ে বললো সেঃ
—–“তোর সাথে আমার জরুরি কিছু কথা আছে…
—–“হুম বল কিন্তু তার আগে এটা বল তুই ভার্সিটির ভিতর থেকে না বেরিয়ে এদিক দিয়ে রিকশা করে কোথা থেকে আসছিস…
—–“আমি তো বাসায় গিয়েছিলাম তারপর তোকে সেখানে না পেয়ে আবার বেক করলাম…
—–“কি এমন কথা বলবি যে এতটা কষ্ট করলি তুই…
—–“সবই বলবো তোকে কিন্তু এখানে নয়….
—–“কোথায় যাবি এখন…
—–“একটা নীরব জায়গায় যাওয়া যাক…
——“আচ্ছা,তাড়াতাড়ি বাইকে উঠ…
—–“হুম…
“তারপর হেলমেট পরে নাফিয়া আর রিক চললো এক সুনসান নীরবতা ঘেরা জায়গায়….
||
“পাএ পক্ষের সামনে মাথা নিচু করে বসে আছে মিতু’!!বিরক্ত লাগছে তার সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো শুধু পাএের বাবা মা এসেছে ছেলে আসে নি’!!হর্ঠাৎ পাএের মা বলে উঠলঃ
—–“দেখি মা তোমার মুখটা….
“সাথে সাথে মিতুর মা মিতুর মুখটা তার হাত দিয়ে একটু উচু করলেন’!!পাএের মা মিতুকে দেখে বলে উঠলঃ
—–“মাশাআল্লাহ, মেয়ে তো আপনাদের ভাড়ি মিষ্টি দেখতে….
“এদিকে মিতু মহিলাটির কথা শুনে বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠলো’!!পাএের মা মিতুর দিকে তাকিয়ে বললোঃ
—–“দেখি মা তোমার হাত টা….
“মহিলাটির এবারের কথা শুনে মিতু আরো ঘাবড়ে যায়’!!মিতু হাত না দেওয়াতে মিতুর মা মিতুকে বললোঃ
—–“কি হলো তুমি হাত দিচ্ছো বা কেন?
“মিতু কাঁপা কাঁপা ভাবে হাতটা এগিয়ে দিল পাএের মায়ের দিকে’!!পাএের মা মিতুর আঙুলে একটা আন্টি পরিয়ে দিয়ে বললোঃ
—–“মেয়ে আমাদের খুব পছন্দ হয়েছে তাই আন্টি পরিয়ে দিয়ে গেলাম…
“পাএের মায়ের কথা শুনে মিতুর মা হাল্কা হেঁসে বললেনঃ
—–“আপনাদের ছেলে আসবে না….
—–“আসলে ও একটু ব্যস্ত আছে তাই আজকে আসতে পারে নি কিন্তু কোনো ব্যাপার না ওদের দুজনকে আলাদা ভাবে কোথাও মিট করার ব্যবস্থা করে দিবো, আমি শিউর আমাদের যখন পছন্দ হয়েছে তখন আমার ছেলের ও পছন্দ হবে….
“মুচকি হাসলো সবাই’!!হর্ঠাৎই মিতুর মা বলে উঠলেনঃ
—-“আপনার ছেলের নাম যেন কি বলেছিলেন…
“পাএের মা যেই না ছেলের নাম বলতে যাবে সাথে সাথে মিতু দাঁড়িয়ে পরলো তারপর হন হন করে চলে গেল উপরে….
“মিতু উঠে যেতেই মিতুর মা বললোঃ
—–“ওহ কিছু না হয়তো একটু লজ্জা পেয়েছে…
—–“ওহ…..(পাএের মা)
—–“হুম…
“তারপর সবাই মিলে একসাথে মিষ্টিমুখ করলো!’
“এদিকে মিতু তার রুমে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দিয়ে বসে পরলো রুমে’!!যা ভেবেছিল তাই হলো’!!রাগে দুঃখে মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে তার….
__________________________________________
______________________
“ভার্সিটির ভিতর ঢুকেই দৌড়ে চলে যায় তিহান তাদের ডিপার্টমেন্টে’!!সবাইকে অর্থাৎ তার বন্ধুদের একসাথে বসে থাকতে দেখে তিহান খুশি মনে বলে উঠলঃ
—–“আজকে তোদের সবাইকে ট্রিট দিবো বল তোরা কি খাবি….
—–“হর্ঠাৎই কোন খুশিতে ট্রিট দিবি তুই…(সিফাত)
—–“দোস্তরা আজকে আমি খুব খুশি নাফিয়া আমায় ভুল বুঝে নি উল্টো আরো খুশি হয়েছে….
—–“ওহ এই জন্য এতো খুশি….
“মাথা নাড়ায় তিহান’!!তিহানের দিকে তাকিয়ে আছে রিয়া আজকে তিহানকে খুব খুশি মন হচ্ছে তার’!!আর এই কয়দিন নাফিয়ার শোকে কেমন পাগল পাগল লাগছিল তিহানকে’!!রিয়ার এই মুহুর্তে রিয়েলাইজ হচ্ছে “সে যেটা করেছিল সেটা ভুল ছিল”!!জোর করে কখনো ভালোবাসা পাওয়া যায় না’!!রিয়া মুচকি হেঁসে বলে উঠলঃ
—–“এটা তো খুব ভালো কথা আমি কিন্তু চাইনিজ কিছু খাবো…
—–“হুম তোদের যা খুশি তাই খাওয়াবো চল আমার সাথে…
“তারপর ওরা সবাই মিলে একসাথে চললো একটা বড় চাইনিজ রেস্টুরেন্টে….’!!এতদিনের সব কষ্ট চিন্তা সব শেষ হয়ে গেল তিহানের’!!খুশিতে আত্মহারা সে’!!
!!
“একটা সুনসান নীরবতায় ঘেরা গাছতলায় বসে আছে নাফিয়া আর রিক’!!রিক তো নাফিয়ার মুখে সব শুনে অবাকের চরম সীমানায় পৌঁছে গেছে’!!সে ভাবতেই পারে নি এমন কিছু একটা হতে পারে’!!রিক কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বলে উঠলঃ
—-“এখন কি করবো আমরা……
—–“কিছু তো একটা করতেই হবে আর যাইহোক তোর আর মিতুর জন্য হলেও কিছু করতে হবে….
—–“প্লিজ একটু তাড়াতাড়ি করিস আমিও যে মিতুকে ভালোবাসি….
—-“মিতুকে ভালোবাসিস আমায় বলিস নি কেন অবশ্য প্রথমদিনই তোর চাহনি দেখে কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছিলাম আমি….
“মাথা চুলকায় রিক’!!তারপর আরো কিছুক্ষন কথা বলে ওঁরা চলে যায় বাসার উদ্দেশ্যে….
“বাড়ির ভিতর ঢুকতেই রিকের মা বলে উঠলেনঃ
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে………..
[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ’!!গল্প কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে]
#TanjiL_Mim♥️