সবটা অন্যরকম পর্ব-১২

0
3867

সবটা অন্যরকম♥
#পর্ব_১২
Writer-Afnan Lara
.
আহনাফ বাইকে বসে বারবার দিবার ক্লাসরুমের দিকে তাকাচ্ছে
দিবা আজ আসতে এত দেরি কেন করছে সেটাই বুঝলাম না,তখন ঝগড়া করায় আবার ভাব দেখাচ্ছে নাকি অন্যকিছু?
এখন আমি ওরে খুঁজতে গেলে নির্ঘাত ঐ মিশকার সামনে পড়বো তাহলে আর আজ বাসায় ফেরা হবে না,নতুন চাকরি কি আর সহজে পাওয়া যায়??এটার বেতন এত ভালো যে এটা আমার ছাড়তে গেলেই কলিজায় লাগবে,এটার মতন বেতনের চাকরি আমি বিসিএস দিয়েও পাবো কিনা সন্দেহ
বিসিএস দিতে দিতে ততদিন তো হাত খরচের জন্য এই চাকরিটা ধরে রাখতে হবে
বাংলাদেশের কিছু কিছু স্টুডেন্টদের প্রথম চাকরি শুরু হয় দশ হাজার দিয়ে,ঐ দশ হাজার তো বাবার অসুখের পেছনেই চলে যাবে,এসব মাথায় ঘুরপাক খায় সারাক্ষণ
কিন্তু কি করবো? এদিক দিয়ে এই মেয়েটার পিছু ছাড়াতে পারছি না
আর ওদিক দিয়ে বার টাও ছেড়ে দিতে পারছি না আমি
আমি যার কপালে আছি সে যদি এখন আমার লাইফে এসে যেতো তখনই ওরে বিয়ে করে মিশকাকে দেখিয়ে দিতাম,সব ভেজাল যেতো
ডিয়ার বউ!!কই তুমি?
.
ঐ মেয়েটার প্রশ্নের চাপে দিবা পালিয়ে আসতে গিয়ে গেটের সামনের বটগাছটার শেকড়ের সাথে হোচট খেয়ে দুম করে আহনাফের গায়ের উপর গিয়ে পড়লো
আহনাফ তো রেগে আগুন,দিবাকে সরিয়ে সে বললো”তোমার কি হোচট খাওয়া আর ধাক্কা খাওয়াতে ডিগ্রি করা আছে??সবসময় এমন কেন করো?আর এত দেরি কেন করলে?”
.
সরি,ঐ আসলে এই গাছটার শেকড়ে লেগে পড়ে যাচ্ছিলাম,,
.
উঠো জলদি,বাসায় গিয়ে ভাত খেয়ে ঘুম দিয়ে আবার ডিউটিতে যেতে হবে আমায়,এখন কথা বলে সময় নষ্ট করার সময় আমার হাতে নেই,,
.
দিবা আহনাফের পাশে বসে কাঁধে হাত রেখে বললো”কাল তো পহেলা বৈশাখ তাই না?”
.
হু
.
তাহলে তো কাল আপনার ছুটি
.
আহনাফ হেলমেট পরে বাইক স্টার্ট দিয়ে বললো”আমি সরকারি চাকরি করি না”
.
চাকরি তো করেন,বেসরকারি চাকরিতেও তো ছুটি থাকে
.
না থাকে না,চাকরি সম্পর্কে কি জানো তুমি?বরং কাল ব্যস্ততা বেশি থাকবে,,কাল কাস্টমার বেশি আসবে
.
আপনি দোকানে চাকরি করেন?
.
তুমি এত কথা কেন বলোতো?আমি কি চাকরি করি সেটা জেনে তোমার কি হবে?তোমার খরচ কিন্তু আমি চালাই দ্যাটস্ মিন আই এম ইউর কর্তা,,আমাকে আসতে যাইতে সালাম করবা
আমার ময়লা জামাকাপড় ধুয়ে ইস্ত্রি করে রাখবা,আমার যা যা কাজ আছে সব করে দিবা,তোমার নামই তো দিবা
সারাজীবন শুধু দিয়েই যাবা
যাই হোক তুমি আর তোমার ঐ আজাইরা বিড়াল সারাদিন আজাইরা থাকো,এখন থেকে কাজ করবা
ঐ বিড়ালরে দিয়েও কাজ করাবা
.
মিনি আবার কিসের কাজ করবে?
.
ভিডিওতে দেখেছিলাম একটা বিড়াল তার শোয়ার জায়গাটা মুখে করে টেনে টেনে নিয়ে আরেক রুমে রাখতেছে
তুমি আমার জামাকাপড় ঐ বিড়ালরে দিয়ে বাথরুম অবদি নেওয়াইবা তারপর সেখানে বসে বসে সেগুলো কাঁচবা,ঠিক আছে?তাহলে তোমার বিড়ালের জন্য আমি ভালো ব্র্যান্ডের ক্যাটফুড আনাবো
.
আমি ওসব খাওয়াই না মিনিকে
.
এই জন্যই ওর পশম খালি ঝরতেই থাকে,,বিড়াল পাললে তার সব কিছুর খেয়াল রাখা লাগে,,দেখবা কদিনেই নাদুসনুদুস হয়ে গেছে,তখন ওরে মিনি নয় বরং চিনি ডাকতে মন চাইবে তোমার
.
দিবা বাইক থেকে নেমে চললো বাসার দিকে,,সত্যি কি সে যদি আহনাফের জিনিসে হাত দেয় পরিষ্কার করার জন্য তাহলে আহনাফ রাগ করবে না?
.
এসব ভেবে দিবা রুমে এসে ব্যাগটা রেখে মিনিকে একবার দেখে আসলো
মিনি বারান্দার গ্রিলের সাথে ঝুলে ঘুমাচ্ছে
দিবা নিজের গায়ের জামাটা পাল্টে ধুয়ে নিলো,সেটা বারান্দায় ঝুলিয়ে,,তারপর গেলো আহনাফের জামাকাপড় ধুতে
আহনাফ বিছানায় চিটপটাং হয়ে শুয়ে আছে
দিবা ফ্লোরের উপরে ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে পড়ে থাকা টিশার্ট গুলো হাতে নিচ্ছে এক এক করে
আহনাফ চোখ খুলতেই দেখলো দিবাকে,পরনে সাদামাটা সেলোয়ার কামিজ,ওড়না কোমড়ে পেঁচানো,এক এক করে তার জামা নিচ্ছে দেখে আহনাফ উঠে বসে বললো”তোমার মাথা কি গেছে?”
.
দিবা আহনাফের দিকে তাকিয়ে বললো”কেন?কি করলাম?”
.
আমি তোমায় এমনি এমনি মজা করে বললাম এসব করতে,,এসব হালিমা আন্টি করবে,,মা যদি জানে এগুলো তোমাকে দিয়ে আমি করাচ্ছি তো আমাকে সাত তলা থেকে নিচে ফালাই দেবে
.
দিবা হাতের জামাগুলো মুঠো করে ধরে বললো”আপনি আবার মজাও পারেন?”
.
কি বললে?আমি মজা পারবো না কেন,আমি কি মানুষ না?
.
মানুষ তবে আপনার ‘সবটা অন্যরকম’,,আমি তো ভেবেই নিয়েছিলাম আপনার মাঝে নিমপাতার টেস্ট ছাড়া আর কিছুই নাই
.
আহনাফ আবারও শুয়ে পড়ে বললো”আপন মানুষ ছাড়া আমি মিষ্টিভাব দেখাই না”

আহনাফ আজ লাঞ্চ না করেই ঘুমিয়ে পড়েছিলো,,চোখ খুললো সাড়ে তিনটার দিকে,,চোখের সামনে একটি মেয়ে বারান্দায়,, মাথায় খোঁপা করে হাত বাড়িয়ে বাড়িয়ে দড়িতে ওর সব জামাগুলো টাঙাচ্ছে
আহনাফ চোখ ডলে ঠিক হয়ে বসলো
দিবা সব জামা ধুয়ে দিয়েছিলো আহনাফের,সেগুলো টাঙিয়ে বালতিটা নিয়ে বেরিয়ে আসলো বারান্দা থেকে
তার সারামুখে পানি
আহনাফ ইয়া বড় এক খান হা করে অটোমেটিকালি তাকিয়ে ছিলো এতক্ষণ
দিবা বালতিটা নিয়ে ওর পাশ দিয়ে চলে গেলো
এভাবে অবাক হয়ে যাওয়ার কারণটা হলো আহনাফ মনে মনে যে মেয়েটার কল্পনা করেছিলো তার দুটো দিক আজ দিবার সাথে মিলে গেলো,তারপর নিজের কপালে জোরে একটা কিল বসিয়ে এক গাদা গালি দিলো আহনাফ নিজেকে
স্বপ্নেও এই মেয়েটার সাথে এসব ভাবা যাবে না,ও আমার যোগ্যই না
.
দিবা হাত মুছে আসলো ডাইনিংয়ে,তার ও খাওয়া হয়নি
আহনাফ মুখ ধুয়ে সেও এসে গেছে,টেবিলের এপার ওপার করে দুজনে বসলো ভাত খাওয়ার জন্য
আরিফ নাকি আজ মিনিকে নিয়ে খাবার খেয়েছে,খালামণি বললো
মিনি নাকি আরিফের খুব প্রিয় হয়ে উঠেছে,সে এখন আরিফের রুমে,,আরিফ ফোনে ভিডিও দেখছে মিনি তার পাশে শুয়ে সেই ভিডিওটা দেখছে মনেযোগ দিয়ে
এই গানের ভিডিওগুলো মিনির অপরিচিত না,,দিবাদের বাসায় ইতি সারাদিন গানবাজনা নিয়ে থাকতো,মিনির অভ্যাস আছে এসবে,,তাছাড়া আরিফের এলার্জিও নেই মিনির পশমে
তাই এখন ওদের দেখে মনে হয়”ভাই ভাই কনফেকশনারী”
.
আহনাফ ফোন দেখতে দেখতে খাবার খেয়ে যাচ্ছে,,দিবা আহনাফকে দেখছে আর খাচ্ছে
আহনাফ হুট করে মুখটা ফোন থেকে সরিয়ে দিবার দিকে কাত করে বললো”আমাকে জীবনে দেখো নাই?
.
দিবা ভয়ে প্লেটের দিকে মুখ করে নিলো,,টেবিলের নিচে নিজের পা টা গুছিয়ে নিতে গিয়ে আহনাফের পায়ের সাথে লাগিয়ে দিলো ভুলে
আহনাফের তো গলায় গেলো খাবার আটকে,কোনোমতে পানি খেয়ে নিয়ে বললো”এত আনকম্ফর্টেবল হচ্ছো ক্যান,আমি কি তোমায় খাই ফেলবো?”
.
দিবা আস্তে করে বললো মিনিকে ছাড়া দুপুরের খাবার খাওয়া তার অভ্যাস না
.
তো ওর কাছে গিয়ে খাও,,আমি কি ধরে রাখছি নাকি?
.
ও তো খেয়েছে,,আরিফ ভাইয়ার রুমে এখন
.
তাহলে আমাকে খাও
.
কিরে আহনাফ?দিবাকে এমন ধমকাই কথা বলছিস কেন??
.
ওকে দেখে মনে হয় ম্যাচিউর আসলে কিন্তু তা না,,সব কিছু শিখায় পড়াই নিতে হয়,
তুমি জানো ওর উপর চিল্লাইতে চিল্লাইতে আমার প্রেশার বেড়ে গেছে
.
খালামণি মুচকি হেসে দিবার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন”যতই হোক,বয়সে তোদের কত ছোট হয় মেয়েটা,,তোরা শিখাবি না তো কে শেখাবে?আর এখন থেকে ও তো আমাদের পরিবারেরই সদস্য”
.
দিবা এত এত ভালো কথা শুনে ভুলে দাঁত কেলাতে গিয়ে দেখলো আহনাফ ওর দিকে তাকানো অবস্থায় হাড্ডি চিবাচ্ছে
.
দিবা ঢোক গিলে বললো”আমার খাওয়া শেষ”

মিনি আরিফের রুম থেকে বেরিয়ে দিবার রুমে যাওয়ার সময় দেখলো আহনাফ জুতোর ফিতা লাগাচ্ছে সোফায় বসে বসে,,
মিনি এক দৌড়ে সেখানে এসে হাজির,তবে সামনে দিয়ে যায়নি,টেবিলের নিচ দিয়ে লুকিয়ে গেছে,আহনাফ টেরই পায়নি
আহনাফ জুতো পরে যেইনা উঠে দাঁড়ালো দেখলো মিনি সোফার কিনারায় বসে আছে ওর দিকে চেয়ে
.
ডোন্ট টেল মি!!! তুমি আমার সাথে এখন আমার ডিউটিতে যাবা?
.
মিনি কিছুই বুঝলো না তাও বললো”মিঁয়াও”
.
মন চাচ্ছে বারে নিয়ে ছেড়ে দিই,কিন্তু নাহ!
মিঃনাফি কন্ট্রোল!!এই আজাইরা বিড়ালকে আমার বারে নিয়ে গেলে কুরুক্ষেত্র বানিয়ে দেবে
.
এসব ভেবে আহনাফ দরজাটা একটু ফাঁক করে যেই না এক পা বাহিরে রাখলো অমনি দেখলো সেই ফাঁক দিয়ে মিনি ও বেরিয়ে গেছে
মানে মিনি চাইছে তার সাথে যেতে
আহনাফ মিনির দিকে আঙ্গুল তুলে বললো”শুনো আজাইরা বিড়াল,বার তোমার জন্য সেফ না,তুমি তোমার বইনের কাছে থাকো কেমন??তুমি না ভালো ছেলে বেড়াল??”
.
মিনি আহনাফের কথা কানে না ঢুকিয়ে একটু একটু করে আহনাফের কাছে ঘেঁষছে
আহনাফের দেরি হয়ে যাচ্ছে আর এদিকে মিনি কিনা তৈরি হয়ে আছে যাওয়ার জন্য
.
এই দিবা!!
.
দিবা মরার মতন ঘুমাচ্ছে,,কয়েকবার ডাকার পরেও উঠছে না দেখে আহনাফ এবার আরিফকে ডাক দিলো
আরিফ হেডফোন লাগিয়েছে
কারোর কোনো সাড়া না পেয়ে আহনাফ চোখ মুখ খিঁচিয়ে মিনিকে মুঠো করে ধরে তুললো নিচ থেকে
তারপর বললো”তোমাকে বারে নিয়ে গেলে আমার চাকরি এমনিতেই যাবে,সো তোমাকে যার কাছে মানায় তার কাছেই রেখে আসবো,হাইচ্ছু!!
এটার জন্য আমাকে যদি তোমায় আজ টাচ করতে হয় তো করলাম,হাইচ্ছু!!”
.
আহনাফ নাক ঘাড়ে ঘষতে ঘষতে দিবার রুমের দিকে যাচ্ছে
মিনি এক দৃষ্টিতে আহনাফের দিকে তাকিয়ে আছে
আহনাফ দিবার রুমে এসে মিনিকে দিবার গায়ের উপর ছেড়ে দিয়ে দেয়ালের সাথে লেগে দাঁড়ালো,,কয়েকটা হাঁচি দিয়ে চেঁচিয়ে দিবাকে জাগালো এবার
দিবা উঠে বসে মিনিকে নিজের কেলে দেখে চমকালো প্রথমে তারপর দেখলো আহনাফ দূরে দাঁড়িয়ে নাক ডলছে
.
কি হলো?
.
তোমার মিনিরে জিগাও!আমার সাথে অফিসে যাবে বলে রেডি হয়ে পিছু নিছিলো,, হাইচ্চু!!
তারপর আমাকে ছাড়ছিলোই না,মানে কি বোঝাতে চায় ও??ও আমার সাথে অফিসে গিয়ে কি করবে?হাইচ্ছু!
.
মুখ ধুয়ে নেন,,আপনার জ্যাকেটে পশম লেগে আছে
.
আহনাফ চোখ কপালে তুলে গায়ের জ্যাকেট খুলে ছুঁড়ে মারলো
তারপর গেলো আরেকটা আনতে
.
দিবা জ্যাকেটটা ফ্লোর থেকে নিয়ে এক ঝাড়া দিলো তারপর ভাবলো ধুবে,,ঝাড়া দিতেই ভেতর থেকে একটা আইডি কার্ড গড়িয়ে নিচে পড়লো
দিবা আগ্রহ নিয়ে আইডি কার্ডটা নিচ থেকে তুললো দেখবে বলে,কিন্তু ও দেখার আগেই আহনাফ সেটা টান দিয়ে নিয়ে নিলো, দিবা আজ এই আইডি কার্ড দেখলে সব জেনে যেতো
আইডি কার্ডে বারের সদস্যপদ,নাম,ছবি সব লিখা ছিলো আহনাফের
.
আমার পার্সোনাল কিছু দেখবা না একদম
.
নিচে পড়ে গেছে বলেই তুললাম
.
ওপিঠ করে তুলবা এরকম সিচুয়েশন হলে,,দেখার কোনো দরকার নাই
.
দিবা হাত ভাঁজ করে দাঁড়ালো,,কি ব্যাপার,লোকটা তার চাকরি এত হাইড কেন করে?আমি জানলে তার কি হবে?
আসলেই তো!
উনি কিসের চাকরি করেন?
খালামণি!!!
.
দিবা এসে হাজির খালামণির কাছে,,খালামণি মাথায় তেল দিচ্ছিলেন তখন
দিবা তার হাত থেকে তেলের বোতলটা নিয়ে নিজেই লাগিয়ে দিতে দিতে বললো”আচ্ছা উনি কিসের চাকরি করেন?”
.
কে?
.
ঐ যে আহনাফ ভাইয়া
.
আহনাফ মনে হয় একটা এজেন্ট ব্যাংকে জব করে,,ঠিক জানি না,কখনও গিয়ে দেখা হয়নি,আর আহনাফ তো সোজাসুজি ওর চাকরি নিয়ে আলোচনা ও করে না
আমরাও জিজ্ঞেস করি না,,একবার ওর বাবাকে নিয়ে গিয়েছিলো অফিস দেখাতে,,
.
কেমন দেখলো খালু?
.
বললো তো বেশ ভালো অফিস,,আহনাফ স্টুডেন্ট হয়েও ব্যাংকে জব পেয়েছে সেটা উনার বিশ্বাসই হচ্ছিলো না তাই তো আহনাফ উনাকে দেখিয়ে আসলেন
.
ওহ আচ্ছা
.
হঠাৎ এসব জিজ্ঞেস করছিস?
.
না এমনিই,,জানার ইচ্ছা ছিল
চলবে♥