#সাইকো লাভার❤
#লেখিকাঃ নাবিলা আহমেদ রোজ
#পর্ব- ১৭
শুভ্র ওখান থেকে আবার সেই বাড়িতে গেলো। যেখানে আবির হয়ে এতদিন থেকেছে। ওখানে গিয়ে সোফায় বসলো। এরপর সবটা ভাবতে লাগলো। কিভাবে ও শান্ত আর আবির দুটো ক্যারেক্টার একসাথে সামলেছে। আর এসব কিছু পসিবল হয়েছে একজনের জন্য। শুভ্র সেদিন ব্রিজ থেকে পড়ার পর।”
____অতীত____
শুভ্র ব্রিজ থেকে যেখানে পড়ে। সেখানে পড়লে হয়তো বেঁচে থাকার কথা না। কারন নিচেই গভীর কুপ ছিলো। কিন্তুু সেদিন নদীতে অনেক স্রোত ছিলো। আর শুভ্র ভাসতে, ভাসতে গ্রামে চলে যায়। শুভ্র গিয়ে পড়েছিলো একটা মরা কাঠের উপর। কাঠটা অনেকটা মোটা হওয়াতে শুভ্র ওটাতেই থেকে যায়। আর স্রোত বেশী হওয়ায় ভাসিয়ে নিয়ে যায়। আর শহর থেকে এই গ্রামটাও বেশী দুরে না। গ্রামের মানুষ তখন ক্ষেতে কাজ করছিলো। আর নদীটাও ক্ষেতের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে। হঠাৎ একজনের চোখ পড়ে ভেসে যাওয়া শুভ্রর দিকে। লোকটা চেঁচিয়ে বলে ওঠে,
—-” আরে ওই দেহো দবির মিয়া। একটা পোলা ভাইসা যাইতাছে!”
লোকটার কথায় সবাই তাকায়। দেখে সত্যিই একজন ভেসে যাচ্ছে। দবির মিয়াও এটা দেখে বললো,
—-” আরে পোলাডারে বাঁচানো দরকার।”
কয়েকজন নদীতে ঝাপ দিয়ে শুভ্রকে তুলে আনে। শুভ্রর শ্বাস খুব আস্তে চলছিলো। দবির মিয়া শুভ্রকে দেখে বলে,
—-” পোলাডারে তো বড়লোক মনে হইতাছে। আর কি সুন্দার চান্দের লাহান চেহারা দেখছোস তোরা?”
সবাই হ্যা বললো এটা শুনে। দবির মিয়া বসে দেখতে লাগলো শ্বাস আছে কি না। তাই উনি শুভ্রর বুকে কান পাতলো। আর নাকে হাত দিয়ে দেখলো শ্বাস চলছে তবে আস্তে। এবার উনি খেয়াল করলো শুভ্রর বুকে দাগ আর রক্ত। উনি চট করে শুভ্রর শার্টের বোতাম খুলে ফেললো। এবার সবাই চমকে গেলো। শুভ্রর পেটে ছুড়ির গভীর আঘাত। আর বুকেও গুলি লেগে গোল দাগ হয়ে আছে। দবির মিয়া চেঁচিয়ে বলে উঠলো!”
—-” তোরা খাড়াইয়া কি দেখোস? জলদি ডাক্টার ডাক পোলাডারে বাঁচানো লাগবো,
কয়েকজন গিয়ে গ্রামের ছোট হসপিটালের ডক্টর নিয়ে আসে। ডক্টর এসে গুলিটা বের করে দেয়। আর সাথে ক্ষত জায়গায় ব্যান্ডেজ করে দেয়। একটা ক্রিম দিয়ে যায় ক্ষত জায়গায় লাগানোর জন্য। দবির মিয়া শুভ্রর সেন্স না আসায় বলে।”
—-” পোলাডার হুশ আসেনা ক্যা ডাক্টার?”
ডক্টর একটু চুপ থেকে বলে!”
—-” ওনার আঘাতটা অনেক গভীর। শহরে ট্রিটমেন্ট করলে না হয় বোঝা যেতো। আর সঠিক ট্রিটমেন্ট মানে চিকিৎসায় ঠিকও হতো। কিন্তুু গ্রামে এসব সম্ভব না। তাই ওনার সেন্স কবে আসবে জানিনা,
বলে ডক্টর চলে যায়। সবাই হতাশ হয় এভাবে শুভ্রকে দেখে। দবির মিয়ার বউ শুভ্রর যথেষ্ট খেয়াল রাখে। তবে ওনারা চিকিৎসা করাতে পারে না। এভাবে ১বছর ৪মাস চলে যায়। শুভ্রর চেহারার নকসা ততদিনে পাল্টে গিয়েছে। ১দিন এই গ্রামের মোড়লের ছেলে আসে গ্রাম দেখতে। উনি এলে আগে দবির মিয়ার বাড়ি যায়। দবির মিয়ার বাড়িতে শুভ্রকে দেখে অবাক হয়ে বলে।”
—-” ছেলেটা কে দবির?”
দবির মিয়া ওনাকে সব বলে সব শুনে উনি বলে,
—-” ওর চিকিৎসা আমি করবো। আমি ওকে শহরে নিয়ে যাবো। প্রয়োজনে আমি ওকে বিদেশে নিয়ে যাবো!”
দবির মিয়া শুভ্রর মাঝে অন্যকিছু দেখছিলো। সবাইকে বলে উনি শুভ্রকে ডিরেক্ট লন্ডনে নিয়ে যায়। শুভ্রর নাম ওখানে বলে আবির রায়জাদা। কারন ওনার ছেলের নামও আবির ছিলো। আবির বিয়ে করে বউ নিয়ে আমেরিকা চলে গিয়েছে। আর বলে গিয়েছে কোনদিন ফিরবে না। লন্ডনে সঠিক চিকিৎসা পেয়ে ২মাস পরই শুভ্রর সেন্স আসে। সেন্স আসার পর ও অবাক হয়ে চারদিক তাকিয়ে বলে,
—-” এটাতো লন্ডন মনে হচ্ছে। আমি এখানে কি করে এলাম?”
তখনি ডক্টররা আর রাজন রায়জাদা কেবিনে আসে। রাজন রায়জাদা গিয়ে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে বলো।”
—-” আবির আমার আবির,
শুভ্র ওনাকে সরিয়ে বলে!”
—-” কে আবির?”
উনি শুভ্রকে সবকিছু বলে। সব শুনে শুভ্র কিছু বলতে গিয়েও থেমে যায়। কয়েকদিন পর শুভ্রকে উনি বাড়ি নিয়ে যায়। আয়নায় নিজেকে দেখে অবাক হয় শুভ্র। চেহারার হাল নেই কোনো, মুখ ভর্তি দাড়ি। শুভ্র এটাও জানে যে ১বছর ৬মাস পর ওর সেন্স এসেছে। শুভ্র সেই রাতের কথা ভাবতে থাকে। আর এখানে বসেই শুভ্র গেম প্লান সাজিয়ে ফেলে। বাংলাদেশে ফিরে আগে সেই গ্রামে যায়। গ্রামের মানুষদের নানানভাবে বুঝিয়ে ওকে শান্ত হতে রাজী করায়। আর গ্রামের ভাষা শিখে নেয়। তবে শুভ্রকে এসব শেখাতে দবির মিয়ার বউয়ের নাকানিচুবানি খেতে হয়েছে। এখানে ১৫দিন থেকে এই ভাষা শেখে। আর গ্রামের লোকের কাছে হয়ে যায় শান্ত মাহমুদ। কিছুদিন পর কোথা থেকে বিজলি আসে। তবে শুভ্র রাজন রায়জাদাকে কিছু বলে না। ওনার কাছে আবির হয়ে থাকে। আর মাঝে, মাঝে গ্রামে আসে এটা প্রমান করতে যে ও গ্রামের। এইফাকে ও সব ডিটেইলসও জেনে নেয়। গত ১বছর ৬মাসে কি, কি হয়েছে। রোজ কিভাবে পাল্টে গিয়েছে সব। আর প্রথম শান্ত হয়ে রোজের সামনে যায়। পরে রকস্টার আবির রায়জাদা হয়ে।”
___________________
____বর্তমান____
শুভ্র সোফায় এভাবে থাকতে, থাকতে ওখানেই ঘুমিয়ে পড়ে। আবিরের বাবা রাজন রায়জাদা এসে শুভ্রকে এভাবে দেখে হেসে বলে,
—-” দেখো ছেলের কান্ড এভাবেই ঘুমিয়ে পড়েছে!”
উনি গিয়ে শুভ্রকে ডাকতে থাকে। শুভ্র আলসেমি ঝেড়ে উঠে বসে বলে।”
—-” গুড মর্নিং ড্যাডি,
আবিরের বাবা হেসে বলে!”
—-” গুড মর্নিং মাই সন,
শুভ্র মুচকি হাসে ওনার কথায়। শুভ্র নেক্সট প্লান করে রেখেছে। আর তাই এখনো আবির হয়ে আছে। শুভ্র রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে নিচে। এরপর দুজন একসাথে ব্রেকফাস্ট করে। ব্রেকফাস্ট করতে, করতে শুভ্র বলে।”
—-” ড্যাড আমি লন্ডন যেতে চাই,
আবিরের বাবা ভ্রু কুঁচকে বলে!”
—-” হঠাৎ যেতে চাইছো?”
শুভ্র গাল ফুলিয়ে বলে,
—-” ইয়েস ড্যাড ইটস আর্জেন্ট ফর মি।”
আবিরের বাবা হেসে বলো,
—-” ওকে ২দিন ওয়েট করো!”
শুভ্র খুশি হয়ে বলে,
—-” থ্যাংক ইউ সো মাচ ড্যাড।”
এরপর ব্রেকফাস্ট শেষ করে রুমে গিয়ে বলে,
—-” হা, হা, হা খেলার গুটি পাল্টে গিয়েছে। এবার শুভ্র চৌধুরী তার আসল চালটা দেবে!”
রোজ মাএ ঘুম থেকে উঠলো। ঘুম থেকে উঠেই সিগারেট ধরালো। তামান্না এসেছিলো রোজকে ডাকতে। রোজের এরকম অবস্থা দেখে বললো,
—-” এসব কি রোজ?”
রোজ তামান্নার দিকে তাকিয়ে বললো।”
—-” কোন সব?”
তামান্না রোজের সামনে এসে বললো,
—-” ঘুম থেকে উঠেই সিগারেট খেতে হবে?”
রোজ হেসে বললো!”
—-” আরে তুই জানিস না?”
তামান্না ভ্রু কুঁচকে বললো,
—-” কি জানবো?”
রোজ তাচ্ছিল্য হেসে বললো।”
—-” আমার দিনই তো শুরু হয় সিগারেট দিয়ে,
বলে হু, হা করে হেসে দিলো। যেই হাসির মাঝে লুকিয়ে আছে। বুকফাটা চিৎকার আর কান্না। রোজ সিগারেট শেষ করে বললো!”
—-” কেন এসেছিস বল?”
তামান্না মুচকি হেসে বললো,
—-” তোর খুব কষ্ট হয় না?”
রোজ অবাক হয়ে বললো।”
—-” কিসের কষ্ট?”
তামান্না রোজের পাশে বসে বললো,
—-” লুকাতে চাইছিস?”
রোজ আমতা, আমতা করে বললো!”
—-” আজব কি লুকাবো?”
তামান্না আবারও হেসে বললো,
—-” আমি জানি তোর কষ্ট হয়। তোর অনেক বেশী কষ্ট হা। যা তুই প্রকাশ করিস না। কাউকে দেখাতে চাস না। কিন্তুু কেন রোজ? আমরা তো তোর পর না তাই না? তুই কেন এভাবে নিজেকে শেষ করে দিচ্ছিস? দাভাইর জন্য কি তোর কষ্ট হয় না? হয়তো জানি তাহলে কাঁদিস না কেন?”
রোজ উল্টোদিক ঘুরে আছে। ওর চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। ঠোটগুলো অসম্ভব কাঁপছে যেন কিছু বলতে চাইছে। তবুও নিজেকে স্ট্রং রেখে বললো।”
—-” বেশী জানিস তুই বুঝলি? আমার কোন কষ্ট নেই। আমার আবার কিসের কষ্ট থাকবে? আমি আমার লাইফে বিন্দাস আছি,
বলে ওয়াসরুমে চলে গেলো। তামান্নাও বড় একটা শ্বাস ছেড়ে চলে গেলো। একটা টি শার্ট আর থ্রি কোয়াটার প্যান্ট পড়ে নিচে এলো। হাতে বাইকের চাবি আজকে। কাউকে কিছু না বলে চলে গেলো বাইক নিয়ে। মাথায় হেলমেট নেই আজকে। রাস্তার জ্যামে দাড়াতে হলো। পাশেই শুভ্র গাড়ি নিয়ে দাড়ানো। ওর চোখ গেলো রোজের দিকে। গাড়ির গ্লাস কালো হওয়ায় ভেতর থেকে সব দেখা গেলেও। বাইরে থেকে ভেতরে কিছু দেখা যাবে না। রোজকে এভাবে দেখে শুভ্রর রাগে শরীর জ্বলছে। শুভ্র গাড়ির কাচে ঘুষি দিয়ে বললো!”
—-” এর শাস্তি তুমি পাবে মিসেস চৌধুরী,
জ্যাম ছাড়তে রোজ বাইক নিয়ে চলে গেলো। রোজের পিছনে শুভ্রও গেলো। আসলে রোজকে ফলো করছে শুভ্র। তবে রোজ বাইক নিয়ে শপিং মলে এলো। তাই শুভ্র সেখান থেকে চলে গেলো। রোজ কয়েকটা প্যান্ট আর শার্ট কিনলো। হঠাৎ একটা গাউনে ওর চোখ আটকে গেলো। সেদিকে মুচকি হেসে যেতে গিয়েও থেমে গেলো। একবার নিজের দিকে তাকিয়ে মুখ কালো করে বললো।”
—-” আমিতো এসব পড়ি না,
পেছন থেকে কেউ একজন বললো!”
—-” তো এখন থেকে পড়ো,
রোজ পিছনে তাকিয়ে বললো।”
—-” এখানেও তুমি?”
নিরব হেসে বললো,
—-” ইয়েস বেবি আগেও বলেছি!”
রোজ রেগে বললো,
—-” সাট আপ শুনতে চাইনি।”
নিরব দাত কেলিয়ে বললো,
—-” ওকে বেবি!”
রোজ রেগে গজগজ করতে, করতে চলে গেলো। নিরব গিয়ে ওই গাউনটা কিনে নিলো আর বললো,
—-” এটা তোমার পড়তেই হবে।”
গাউনটা নিয়ে নিরবও চলে গেলো,
_____________________
রোজ শপিং মল থেকে বাড়ি চলে আসে। রাতে ওখান থেকে একটা নীল শার্ট আর কালো প্যান্ট পড়ে। এরপর ক্লাবের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যায়। ক্লাবে গিয়ে আগে ড্রিংক করে। আজকে নিরব এখনো আসেনি। শুভ্র আগে থেকে সব ঠিক করে রেখেছে। শুভ্র চোখ দিয়ে ইশারা করতেই। একজন ওয়েটার রোজের ড্রিংকে হালকা ড্রাগস মিলিয়ে দিলো। রোজ সেটা না দেখেই ড্রিংক নিয়ে ডান্স ফ্লোরে চলে গেলো। শুভ্র মুখে মাস্ক লাগিয়ে ডান্স ফ্লোরে এলো। এদিকে রোজ পুরো ড্রিংক শেষ করে ফেলেছে। একটুপরই রোজের কেমন অদ্ভুত লাগতে শুরু করলো। মাথাটা কেমন যেন ঘুরছে। আর সবকিছু কেমন ঝাপসা দেখছে। আস্তে, আস্তে সেটা তীব্র হতে লাগলো। তখনি শুভ্র গিয়ে রোজকে কোলে তুলে নিলো। রোজকে নিয়ে ক্লাবের একটা রুমে চলে এলো। রুমে এসে রোজকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে। নিজের মুখ থেকে মাস্ক খুলে ফেললো। রোজ ঝাপসা চোখে সেদিকে তাকালো। আর তাকিয়েই চমকে গেলো। কারন ওর সামনে শুভ্র দাড়িয়ে আছে। রোজ চোখ ডলে আবার তাকালো। না ও ঠিকই দেখছে রোজ হেলে দুলে গিয়ে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে বললো!”
—-” শুভ্র তুমি বেঁচে আছো?”
শুভ্র রোজকে টেনে সরিয়ে বললো,
—-” আমাকে দেখে খুশি হওনি?”
রোজ ঢলতে, ঢলতে বললো।”
—-” তুমি শুভ্রর ভুত নও তো?”
শুভ্র রোজের ঘাড়ে কামড় দিলো। রোজ ভ্যা, ভ্যা করে কেঁদে বললো,
—-” তুমি একটুও ভালবাসো না আমাকে!”
শুভ্র মুচকি হেসে বললো,
—-” কে বললো? অনেক ভালবাসি।”
রোজ শুভ্রকে আবার জড়িয়ে ধরে বললো,
—-” তাহলে আমাকে আদর করো!”
শুভ্র বাঁকা হেসে বললো,
—-” পারবো না।”
রোজ নিজেই শুভ্রর ঠোটে ঠোট ছুইয়ে দিলো। শুভ্র এতক্ষণ এটারই অপেক্ষা করছিলো। শুভ্র রোজকে নিয়ে বিছানায় গেলো। আরো একবার হারিয়ে গেলো দুজন দুজনের মাঝে। সকালে রোজের ঘুম ভাঙতে রোজ নিজেকে রুমে পেলো। রোজ মাথা ধরে উঠে বসলো। চারদিকে তাকিয়ে দেখলো এটা ওর রুম। কিন্তুুু রোজের মনে আছে ও ক্লাবে ছিলো তাই বললো,
—-” আমি এখানে কি করে এলাম?”
তখন তামান্না এসে বললো!”
—-” আরে তুই বেশী ড্রিংক করে ফেলেছিলি নাকি? তাই ওই নিরব না কি যেন নাম? সেই ভাইয়াটা তোকে দিয়ে গিয়েছে,
রোজ ভাবতে লাগলো। কাল ও তো বেশী ড্রিংক করেনি তাহলে? কেমন ঝাপসা, ঝাপসা কি যেন মনে পড়ছে। বাট সবটা মনে করতে পারছে না। রোজ আর বেশী চাপ নিলো না। ওয়াসরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলো। এভাবে দিন কাটতে লাগলো। সেই রাতের পর শুভ্রও লন্ডন চলে গিয়েছে।”
২মাস পর, ইদানিং রোজ কিছু খেতে পারছে না। সবকিছুতে কেমন গন্ধ, গন্ধ লাগে ওর কাছে। আর কিছু খেলেই বমি করে দেয়। শরীরটাও খুব উইক লাগে। রোজ ভেবেছে হয়তো এত ড্রিংক করে তাই। গাড়ির চাবি নিয়ে রুম থেকে বের হতেই মাথাটা চক্কর দিলো। রোজ সেখানেই সেন্সলেস হয়ে পড়ে গেলো। রোদ এসেছিলো রোজকে ডাকতে। আর এসে রোজকে এভাবে পড়ে থাকতে দেখে ভয় পেয়ে গেলো। রোদ সবাইকে ডেকে রোজকে কোলে নিয়ে। রুমে এসে বিছানায় শুইয়ে ডক্টরকে কল করলো। ততক্ষণ নিজেরা রোজের সেন্স আনার চেষ্টা করলো। কিন্তুু রোজের সেন্স আসছে না। ডক্টর এসে রোজকে চেকআপ করে বললো,
—-” এই সময় এরকম হয়ে থাকে!”
রোদ ভ্রু কুঁচকে বললো,
—-” এই সময় মানে?”
ডক্টর হেসে বললো।”
—-” আরে উনি ২মাসের প্রেগন্যান্ট,
সবার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। রোজের সেন্স আসায় রোজও শুনলো। রোজ লাফ দিয়ে উঠে বসে বললো!”
—-” এসব আপনি কি বলছেন?”
রোদ দাতে দাত চেপে বললো,
—-” থ্যাংক ইউ ডক্টর এবার আপনি আসুন।”
ডক্টরের ফিস দিয়ে ডক্টরকে পাঠিয়ে। রোদ রোজকে বিছানা থেকে নামিয়ে বললো,
—-” এই সন্তান কার রোজ?”
রোজের নিজের এখনো কিছু মনে পড়েনি ও আর কি বলবে? আর এসবটাই শুভ্র সিসি ক্যামেরায় দেখছে আর হাসছে। শুভ্র বাঁকা হাসি দিয়ে বললো!”
—-” মনে পড়ে যাবে রেড রোজ। এবার তুমি আমাকে খুজবে। খুজতে তোমাকে হবেই নিজের সন্তানের জন্য,
বলে পাগলের মতো হাসতে লাগলো শুভ্র।”
#চলবে…