#সাইকো লাভার❤
#লেখিকাঃ নাবিলা আহমেদ রোজ
#পর্ব- ১৯
শুভ্র ওখান থেকে বেরিয়ে চলে গেলো। রোজ সেখানেই ঠায় দাড়িয়ে আছে। ওর কানে শুভ্রর বলা কথাটা বাজছে। তুমি কোনদিন আমাকে বোঝোনি আর বুঝবেও না। রোজ হঠাৎ নিচে বসে পড়লো। তামান্না রোজের পাশে গিয়ে বললো।”
—-” দাভাই তোকে অনেক ভালবাসে রোজ। এরকম একজনকে জীবনে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তুু তুই পেয়েছিস তাকে আগলে রাখ। আর ভুলে যাস না তোর সন্তানের বাবা কিন্তুু দাভাই,
রোজ হাউ মাউ করে কেঁদে দিলো। তামান্নাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে, কাঁদতে বললো!”
—-” আমিও তো শুভ্রকে ভালবাসি। এই ২বছরে এমন একটা দিন নেই। যেদিন শুভ্রর কথা ভেবে আমি কাঁদিনি,
রোদ অবাক হয়ে বললো।”
—-” কি বলছিস রোজ?”
রোজ কাঁদতে, কাঁদতেই বললো,
—-” জানিস ভাইয়া? আমি নেশা করতাম শুধুমাএ কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে। কিন্তুু তবুও আমি পারিনি ভুলতে। তোদের কাউকে আমি বুঝতে দিতাম না। আর তোরাও কখনো আমাকে বুঝিসনি। সবার চোখে আমার এভাবে বদলে যাওয়াটা পড়তো। কিন্তুু বদলে যাওয়ার কারন কেউ খোজেনি। হ্যা আমার ভার্সিটির ফ্রেন্ডরা আমাকে এসব করতে বলেছে। কিন্তুু ওরা তো আমাকে মারপিটও শিখিয়েছে। আর গান চালানোও শিখিয়েছে। এগুলো তো ভালোই হয়েছে আমার জন্য। জানিস তো রাতের আধারের বুকফাটা চিৎকার কারো কানে পৌছায় না। তাই আমার কান্না তোরা কেউ দেখিসনি। তামান্না তুই বলতি না? তোর দাভাই মরে যাওয়ার কথা শুনে আমি কাঁদিনি। আরে তুই তো জানিস ও না। বরং ওইদিনের মতো আমি জীবনে কোনদিন কাঁদিনি। আমিও তো ভালবাসি শুভ্রকে!”
সবার চোখ দিয়েই পানি পড়ছে। নিরব অবাক হয়ে মনে মনে বললো,
—-” এটা ভাইয়াকে বলতে হবে।”
রোজ চোখ মুছে উঠে বসলো। বাড়ি যাওয়ার আগে নিরবকে বললো,
—-” তুমি যদি শুভ্রর চাচাতো ভাই হও। তাহলে তো তোমার নাম নিরব চৌধুরী তাই না? তো তুমি কেন বলতে যে তোমার নাম নিরব খাঁন!”
নিরব মিনমিন করে বললো,
—-” আসলে আমি রেগে বলতাম। আর এই ৬মাস প্লান মাফিক ভাইয়ার কথায় বলেছি।”
রোজ আর কিছু বললো না। সবাই নিরবকে বলে চলে এলো। নিরব সোফায় বসে বললো,
—-” এবার মেইন শএুকে খুজতে হবে। কে বা কারা ভাইয়াকে মারতে চায়? আর তারা রোজকেই বা কেন ফাঁসালো?”
এরমাঝে কেউ নিরবকে ডাকতে, ডাকতে ভেতরে এলো। সেদিকে তাকিয়ে নিরবের চোখ মনে হচ্ছে বেরিয়ে আসবে। নিরব হা করে তাকিয়ে থেকে বললো!”
—-” তুমি এখন এখানে?”
মেয়েটা নিরবের সামনে এসে বললো,
—-” ইয়াপ বেবি।”
নিরব আমতা, আমতা করে বললো,
—-” তুমি এখানে কি করছো রাহি?”
রাহি হচ্ছে মেয়েটার নাম। রাহি নিরবের গলা জড়িয়ে ধরে বললো!”
—-” তোমাকে খুব মিস করছিলাম বেবি,
নিরব গলা ছাড়িয়ে বললো।”
—-” সাট আপ এন্ড ডোন্ট কল মি বেবি। তোমার আমাকে দেখে বেবি লাগে?”
রাহি ভেংচি কেটে বললো,
—-” তাহলে কি রোজ বেবি?”
নিরব গোল, গোল চোখ করে বললো!”
—-” তুমি এই রাতে এখানে কেন এসেছো?”
রাহি নাকি কান্না কেঁদে বললো,
—-” ড্যাডির সাথে রাগ করে এসেছি। ড্যাডি আমাকে একটুও ভালবাসে না।”
বলে নিরবকে জড়িয়ে ধরলো। নিরব মুচড়ামুচড়ি করে বললো,
—-” আরে আরে কি করছো? আমাকে জড়িয়ে ধরলে কেন? রাহি ছাড়ো আমাকে প্লিজ!”
রাহি নিরবের বুকে মুখ লুকিয়ে বললো,
—-” না ছাড়বো না তোমাকে। আমি আজকে এখানেই থাকবো।”
নিরব চোখ বড়, বড় করে বললো,
—-” এসব কি বলছো হ্যা?”
রাহি মুখ কালো করে বললো!”
—-” তুমিও আমাকে ভালবাসো না?”
নিরব মিনমিন করে বললো,
—-” আরে সেটা না।”
রাহি এবার একগাল হেসে বললো,
—-” তাহলে ভালবাসো?”
বলে নিরবকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। নিরব মিটিমিটি হাসছে রাহিকে দেখে!”
শুভ্র নিজের বাড়ি বসে আছে। এতদিন ড্যানি জানতো শুভ্র বেঁচে আছে। তবুও কিছুদিন আগে জেনেছে। শুভ্র ভাবছে কাল আবিরের বাবার কাছে যাবে। আর তাকে গিয়ে আগে সবটা জানাতে হবে। এরপর আসল শএুদের ব্যবস্থা নেবে। সবাই শুভ্রকে দেখে খুশি হয়েছে। শুভ্র রাগী হলেও বিনা কারনে কাউকে কিছু বলেনি কখনো। ড্যানি এসে বললো,
—-” স্যার আমি খোজ নিয়েছি।”
শুভ্র ওভাবে থেকেই বললো,
—-” কোথায় আছে ও?”
ড্যানি শুভ্রর সামনে এসে বললো!”
—-” আপনার ধারনা ঠিক ছিলো। ও বাংলাদেশেই আছে এখন। তবে শুনেছি ৪দিন পর আমেরিকা যাবে,
___________________
শুভ্র বাঁকা হেসে বললো।”
—-” এবার ও সেখানেই যাবে যেখানে আমি পাঠাবো,
ড্যানি চলে গেলো। শুভ্র এক কাপ কফি নিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়লো। ল্যাপটপে দেখছে রোজ কি করছে!”
রোজ বিষন্ন মন নিয়ে বসে আছে। মনের আকাশে এতদিন যে মেঘ জমে ছিলো। সেই মেঘ থেকে আজকে যেন বৃষ্টি হচ্ছে। কেন হচ্ছে রোজের জানা নেই। চোখগুলো বারবার ভরে আসছে। আর রোজ চোখ মুছতে ব্যস্ত হচ্ছে বারবার। পেটে হাত দিয়ে বসে আছে,
শুভ্র এসব ল্যাপটপে দেখলো। এরপর বেরিয়ে গেলো গাড়ি নিয়ে। রোজ এখনো একিভাবে বসে আছে। এরমাঝে রুমে তামান্না এলো কোলে মেঘ। তামান্না এসে রোজকে ডেকে বললো।”
—-” রজনীগন্ধা খাবি না সোনা?”
রোজ চোখ মুছে বললো,
—-” আমার এখন ক্ষিদে নেই রে!”
তামান্না মেঘকে বিছানায় বসিয়ে বললো,
—-” নিজের বেবির জন্যতো খেতে হবে।”
রোজ ফুপিয়ে কেঁদে বললো,
—-” আমার কিছু ভাল লাগছে না তামুনি!”
তখনি কর্কশ গলায় কেউ বলে উঠলো,
—-” এই মেয়ে।”
এত জোড়ে বললো মেঘ ভ্যা, ভ্যা করে কেঁদে দিলো। রোজ আর তামান্না কেঁপে উঠলো। তামান্না তাড়াতাড়ি মেঘকে কোলে নিলো। এরপর তাকিয়ে দেখলো শুভ্র দাড়িয়ে আছে। আসলে শুভ্র মেঘকে দেখেনি। রোজ শুভ্রকে দেখে বললো,
—-” তুমি?”
শুভ্র রুমে এসে মেঘকে আগে কোলে নিলো। মেঘ শুভ্রর দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। শুভ্র মুচকি হেসে বললো!”
—-” কি রে ব্যাটা আমাকে চিনতে পারছো না? অবশ্য চিনবে কি করে বলো? তোমার চুরেল পিপি কখনো কি আমার ছবি দেখিয়েছে?”
রোজ রেগে বললো,
—-” এই তুমি কাকে চুরেল বলছো?
শুভ্র ভাবুকভাবে বললো।”
—-” তোমার আরেকটা বোন আছে?”
রোজ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বললো,
—-” মানে? আমার আরেকটা বোন কোথাথেকে আসবে?”
শুভ্র এবার ঠোট চেপে হেসে বললো!”
—-” তাহলে তো তোমাকেই বলেছি,
রোজ রেগে ফোস ফোস করছে। মেঘ একবার রোজ আরেকবার শুভ্রর দিকে তাকাচ্ছে। শুভ্র মেঘকে অনেকক্ষণ আদর করে বললো।”
—-” রোজ রেডি হও যাও,
রোজ ভ্রু কুঁচকে বললো!”
—-” রেডি হবো মানে?”
শুভ্র হেসে বললো,
—-” তোমাকে নিতে এসেছি।”
তামান্না মেঘকে নিয়ে বললো,
—-” এই রাতে?”
শুভ্র খানিকটা হেসে বললো!”
—-” হ্যা রে এখনি যাবো,
তামান্না গাল ফুলিয়ে বললো।”
—-” আজকে থেকে কাল যাবে। এখন রাতে কোথাও যাওয়া হচ্ছে না,
এরপর সবার জোড়াজুড়িতে থেকে গেলো শুভ্র। তবে রোজের সাথে কথা বলেনি। সারারাত ফোনে কি যেন করেছে। আর রোজ চোরের মতো শুভ্রকে দেখেছে। সকাল হতেই শুভ্র বললো!”
—-” ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নাও,
রোজ ফ্রেশ হয়ে এসে বললো।”
—-” চলো,
শুভ্র রোজকে দেখে বললো!”
—-” এসব কি?”
রোজ না বুঝে বললো,
—-” কি?”
শুভ্র রেগে বললো।”
—-” এই শার্ট, প্যান্ট পাল্টে এসো,
রোজ আমতা, আমতা করে বললো!”
—-” আমার তো আর কিছু নেই। আমি এসবই পড়ি সবসময়,
শুভ্র একটা প্যাকেট দিয়ে বললো।”
—-” রাতে দেখেছিলাম তোমার কাছে। কি আছে এটার মধ্যে?”
শুভ্র বিছানায় বসে বললো,
—-” খুলে দেখো আর এটাই পড়ে এসো!”
রোজ প্যাকেটটা খুলে অবাক হয়ে গেলো। কারন এটার মধ্যে শপিং মলে দেখা সেই গাউনটা। রোজ অবাক চোখে বললো,
—-” এটা?”
শুভ্র কিছু না বলে নিচে গেলো। রোজ মুচকি হেসে গাউনটা পড়ে নিলো। আয়নায় নিজেকে দেখে রোজের চোখে পানি চলে এলো।”
—-” কতদিন পর এইসব ড্রেস পড়লাম। শুভ্রই আমার জীবনের সব। আর তাইতো আমার জীবন আগের মতো হয়ে যাচ্ছে,
রোজ একটু সেজে নিচে এলো। সবাই অবাক হয়ে রোজকে দেখছে। ২বছর পর আজ এমন ড্রেস পড়েছে রোজ। রোজের আম্মুতো কেঁদেই দিয়েছে। শুভ্রর হাত ধরে বললো!”
—-” এই ২বছর মেয়েটা অনেক কষ্ট পেয়েছে। ওকে তুমি আর কষ্ট পেতে দিওনা বাবা,
শুভ্র রোজের দিকে তাকিয়ে বললো।”
—-” ও যাতে কষ্ট না পায় তাইতে ওকে নিতে এসেছি,
সবাইকে বলে ওরা চলে গেলো। ব্রেকফাস্ট করতে বলেছিলো শুভ্র বলেছে ওর কাজ আছে। শুভ্র রোজকে নিয়ে রাজন রায়জাদার বাড়ি এলো। রোজ চিনতে না পেরে বললো!”
—-” এটা কোথায় নিয়ে এলে?”
শুভ্র সিট বেল্ট খুলে বললো,
—-” নামো বলছি সব।”
রোজও সিট বেল্ট খুলে নেমে এলো। শুভ্র রোজের হাত ধরে ভিতরে নিয়ে গেলো। রাজন রায়জাদা নিউজপেপার পড়ছিলো। শুভ্রকে দেখে অবাক হয়ে বললো,
—-” আবির তুই?”
রোজ কিছু না বুঝেই বললো!”
—-” কে আবির?”
শুভ্র গিয়ে ওনাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
—-” ড্যাড তুমি কেমন আছো?”
আবিরের বাবা হেসে বললো।”
—-” তোকে পেয়ে ভাল হয়ে গিয়েছি,
এবার রোজকে খেয়াল করে বললো!”
—-” ও কে?”
শুভ্র কিছু বলার আগেই বললো,
—-” আমার বৌমা নাকি? তা নাম কি? ঠিকানা দে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়ে দেবো।”
শুভ্র একটু চুপ থেকে বললো,
—-” ও আমার ওয়াইফ মিসেস রোজ চৌধুরী!”
উনি অবাক হয়ে বললো,
—-” তোর বউ মানে? আর তোর বউ হলে চৌধুরী কেন হবে?”
শুভ্র এবার সবটা বললো ওনাকে। সব শুনে উনি ছলছল চোখে বললো।”
—-” তুই কি আমাকে ভুলে যাবি আবিরের মতো?”
শুভ্র ওনাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
—-” কখনো না আর আমি সব জানি। আবির তোমাকে ছেড়ে বউ নিয়ে আমেরিকা আছে। ওকে আমি তোমার কাছে ফিরিয়ে আনবো ড্যাড!”
_____________________
এরপর ওরা আরো কিছুক্ষণ থেকে চলে গেলো। শুভ্র রোজকে রুমে রেখে বললো,
—-” লিসেন ঠিক টাইমে খেয়ে নিও। আমার আসতে একটু দেরী হতে পারে।”
বলে যেতে গেলেই রোজ ডাক দিলো। শুভ্র পিছনে তাকিয়ে বললো,
—-” কিছু বলবে?”
রোজ কাঁদো, কাঁদো ফেস করে বললো!”
—-” তুমি আমার উপর রেগে নেই তো?”
শুভ্র মুচকি হেসে বললো,
—-” এই একটা জায়গাতেই তো আমি উইক। আর সেটা হচ্ছে তুমি যাই করো না কেন? আমি তোমার উপর রেগে থাকতে পারিনা।”
বলে শুভ্র চলে গেলো। রোজ আজকে শান্তির নিঃশ্বাস ছাড়ছে। শুভ্র একটা রেস্টুরেন্টে গেলো সাথে নিরবও আছে,
—-” ভাইয়া এবার কি করবে?”
নিরবের কথা শুনে শুভ্র বললো!”
—-” ওকে জিন্দা দাফন করে দেবো আমি,
এরমাঝে চোখ গেলো একটু দুরের টেবিলে। শুভ্র সেদিকে তাকিয়ে শকড হয়ে গেলো। কারন সেখানেই ওর শএুর সাথে সাফিয়া বসে আছে। শুভ্র এতক্ষণে সবটা বুঝতে পারছে। ওর কাছে এবার সবটা ক্লিয়ার হয়ে গিয়েছে। শুভ্র নিজের গার্ডদের ফোন করলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই গার্ডরা চলে এলো। শুভ্র রেস্টুরেন্টের সবার সামনে সামির আর সাফিয়াকে নিয়ে গেলো। শুভ্রর আরহান চাচ্চুর ছেলে সামির। মানে শুভ্রর আরেক চাচাতো ভাই। শুভ্র ওদের আটকে রেখে বাড়ি এলো। বাড়ি এসে গলা ফাটিয়ে রোজকে ডাকতে লাগলো। শুভ্রর এমন রোজ ভয় পেয়ে নিচে এসে বললো।”
—-” কি হয়েছে শুভ্র?”
শুভ্র দাতে দাত চেপে বললো,
—-” আমি জেনে গিয়েছি ওরা কারা?”
রোজ অবাক হয়ে বললো!”
—-” কারা?”
শুভ্র একটু চুপ থেকে বললো,
—-” আমার কাজিন সামির আর তোমার কাজিন সাফিয়া।”
রোজ অবাক হয়ে বললো,
—-” এসব কি বলছো তুমি?”
শুভ্র কিছু না বলে রোজকে গোডাউনে নিয়ে এলো। এখানে এসে রোজ একটু ভয় পেয়ে গেলো। রোজকে নিয়ে শুভ্র সাফিয়ার সামনে গিয়ে বললো!”
—-” সো মিস সাফিয়া সত্যিটা কি এমনি বলবেন? নাকি আমাকে দায়িত্ব নিতে হবে?”
সাফিয়া তুতলিয়ে বললো,
—-” কোন সসসত্যি?”
শুভ্র বাঁকা হেসে বললো।”
—-” ওকে কোন ব্যাপার না ড্যানি,
সাথে, সাথে ড্যানি লোহার শিক নিয়ে এলো। যেটা পুড়িয়ে লাল করা হয়েছে। লোহার শিকটা দেখেই সাফিয়া বললো!”
—-” বলছি সব বলছি,
রোজ অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।”
—-” সেদিন রোজ না ওটা আমি ছিলাম রোজের রুপে। আসলে রোজের মুখোশ পড়া আমি ছিলাম। আমার জিদতো সেদিনই চেপেছিলো। যেদিন রোজ আমাকে তোমার থেকে দুরে থাকতে বললো। আর তুমি মলে সবার সামনে আমাকে ইনসাল্ট করলে। আমি তখনি ঠিক করে নিয়েছিলাম। যে এর প্রতিশোধ আমি নেবোই। ধীরে, ধীরে এই ভাবনাটা তীব্র হলো। আর হঠাৎ সামিরের সাথে দেখা হলো। ও বললো তোমরা ওর বাবাকে মেরে ফেলেছো। তাই ও তোমাদের শাস্তি দিতে চায়। সামির আগে থেকেই শুভ্রকে কিভাবে কাবু করবে ভাবছিলো। আর রোদ ভাইয়াকেও সামিরই গুলি করেছিলো শুভ্র সেজে। আর গুলি করে গিয়ে দেখে ওর বাবাকে তোমরা মারছো। ও ভয়তে তোমাদের সামনে যায়নি। আমাকে নিয়ে প্লান করে শুভ্রকে সরানোর। আর জেদে পড়ে আমিও রাজি হয়ে যাই। তোমাদের দোষ নেই সব আমরা করেছি। প্লিজ এবার আমাকে ছেড়ে দাও। আমি আর কখনো এমন করবো না,
সামির চেঁচিয়ে বললো!”
—-” শুভ্র আমাকে ছাড় বলছি,
রোজ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো।”
—-” শুভ্র আমাকে কুমির এনে দিতে পারবে?”
শুভ্র অবাক হয়ে বললো,
—-” হোয়াট? কেন?”
রোজ শক্ত হয়ে বললো!”
—-” পারবে কি না?”
শুভ্র মিনমিন করে বললো,
—-” পারবো না কেন? কালই পেয়ে যাবে।”
রোজ উল্টো ঘুরে বললো,
—-” ড্যানি এরা যেন পালাতে না পারে। কাল ফোন করার পর ওদের বাড়ি নিয়ে আসবে। শুভ্র, নিরব এখন বাড়ি চলো!”
ওরা ভদ্র ছেলেদের মতো চলে গেলো। পরেরদিন বিশাল বড় একটা কুমির নিয়ে এলো দক্ষরা। রোজের কথামত ওটা শুভ্রর সুইমিংপুলে ছাড়লো। নিরব আর শুভ্র কিছুই বুঝতে পারছে না। রোজ দক্ষদের বললো,
—-” ১ঘন্টা পর এসে আবার নিয়ে যাবেন।”
ওরা ওকে ম্যাম বলে চলে গেলো। এগুলো বিদেশ থেকে আনা। আবার বিদেশেই ফেরত পাঠানো হবে। রোজের কথামত সামির আর সাফিয়াকে নিয়ে এলো। কুমিরটার নাম ডার্ক রাখা। ডার্ককে দেখে সামির আর সাফিয়া দুজনেই ভয় পেয়ে গেলো। রোজ ওদের সামনে দাড়িয়ে ঠাটিয়ে কয়েকটা থাপ্পর মেরে বললো,
—-” ড্যানি ওদের এই পুলে ফেলে দাও। আর হ্যা অবশ্যই হাত, পা বেধে!”
শুভ্র আর নিরব শকড হয়ে একসাথে বললো,
—-” হোয়াট? এসব কি বলছো?”
রোজ অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো। রোজের চোখ থেকে যেন আগুন ঝড়ছে। দুই মাফিয়াই ঢোক গিললো। ড্যানি রোজের কথামত ওদের হাত, পা বেধে ফেলে দিলো। ওরা পাগলের মতো চিৎকার করছে। মুহূর্তেই সুইমিংপুলের পানি লাল রং ধারন করলো। কতক্ষণ পর ওরাও চুপ হয়ে গেলো। এই দৃশ্য থেকে সবাই ভয়ে কাঁপছে। শুভ্র আমতা, আমতা করে বললো।”
—-” ওদের আমি মারতে চেয়েছিলাম,
রোজ কিছু না বলে হনহন করে ভেতরে চলে গেলো। শুভ্র ড্যানিকে বললো ওদের সরিয়ে পানি চেঞ্জ করতে। বলে শুভ্র ভিতরে চলে গেলো। রোজ বিছানায় বসে কাঁদছে। হাজারহোক সাফিয়া ওর কাজিন ছিলো। কিন্তুু সাফিয়া যেটা করেছে তার কোন ক্ষমা নেই। শুভ্র এসে রোজকে জড়িয়ে ধরলো। রোজ শুভ্রকে ধরে ফুপিয়ে কাঁদছে। নিরব সব ঝামেলা মিটিয়ে এসে বললো।”
—-” এইযে রোমিও, জুলিয়েট,
শুভ্র রোজকে ছেড়ে বললো!”
—-” তুই?”
নিরব হা করে বললো,
—-” ভুলে গেলি তোর ভাই আমি।”
কতক্ষণ পর শুনতে পেলো,
—-” নিরব এই নিরবের বাচ্চা!”
রোজ আর শুভ্র অবাক হলেও নিরব মিনমিন করছে। নিচে গিয়ে শুভ্র অবাক হয়ে বললো,
—-” রাহি তুই?”
রাহি ডোন্ট কেয়ার ভাবে বললো।”
—-” ইয়েস তোর ভাইয়ের হবু বউ,
শুভ্র নিরবের দিকে তাকালো। নিরব বাইন মাছের মতো মুচড়া মুচড়ি করছে!”
#চলবে…