#সাইকো_নীড়
part : 18
writer : Mohona
.
নীড়ের গাড়িও ১টা গাছের সাথে বারি খেলো। কপালে খানিকটা ব্যাথা পেলো। গাড়ি থেকে ছিটকে কিছুটা দূরে ছিটকে পরে গেলো । জ্ঞান হারিয়ে ফেলল। বৃষ্টিতে
কিন্তু কবির-কনিকা … কবির-কনিকা মারা গেলো। সাথে driverও…
নাবিলের একটু ভুলের জন্য আজকে অনেক কিছুই শেষ । বৃষ্টি কিছুটা থামার পর নীড় চাঙ্গুমাঙ্গুরা এসে নীড়কে বাসায় দিয়ে গিয়েছে।
.
পরদিন…
নীড়ের ঘুম ভাঙলো। উঠে বসলো । নিজেকে রুমেই পেলো । অবাক হলো। ভীষন মাথা ব্যাথা করছে।
নীড় : oh god…. মাথা এতো ব্যাথা করছে কেন? আমি এখানে কেন? আমি তো নাবিলকে আর মিস্টার & মিসেস খান কে মারতে যাচ্ছিলাম!!! কি করে এলাম এখানে? আগে fresh হয়ে আসি।
নীড় অতিরিক্ত drinks করায় পরের ঘটনাগুলো ওর মনেই নেই ।
নীড় fresh হয়ে বের হলো।
নীড় : না না ওদেরকে আমি মেরেই ফেলবে এখনই…. ১মিনিট নীড়। মেরিন… ওর সাথে যা করেছি…. ও যা মেয়ে … কাল রাতের জন্য যদি suicide করে…? damn it… ়আগে কেন এসব ভাবলাম না…
নীড় ১মিনিটও দেরি না করে গাড়ির চাবি নিয়ে বেরিয়ে গেলো ।
.
নীড় খান বাড়িতে পৌছালো। দেখলো অনেক মানুষের সমাগম। নীড়ের বুকটা মোচর দিলো। ও মনে করলো মেরিনের কিছু হয়েছে । ও নিজের কিছু করে ফেলেছে।
নীড় : মেরিন …
দৌড়ে ভেতরে ঢুকলো। দেখলো ২টা লাশ রাখা। নীড় খেয়ালই করলো না ।
নীড় : নির্ঝর তততোর ভাবি…
নির্ঝর : দাদাভাইয়া… ভাবি…
নীড় : ককককি হয়েছে তোর ভাবির? কককোথায় ও….?
নির্ঝর : ওই তো….
নীড় মহিলাদের ভিরে তাকালো। দেখলো নীলিমা, নিপা আর মেরিনের কাকি আর মামির মাঝে মেরিন বসে আছে । হাই নেক আর ফুল হাতার পোশাক পরা। মুখটা মলিন হয়ে আছে । হেলান দিয়ে বসে আছে । ১ ধ্যানে তাকিয়ে আছে সামনের দিকে। ওর মামি কান্না কারতে করতে ওকে
বলছে : মারে… কান্না কর… কান্না কর…. তুই যে দম আটকে মারা যাবি…
নীড় কিছুই বুঝতে পারছে না। তখন নিহাল ওর কাধে হাত রাখলো। নীড় ঘুরলো।
নীড় : ড্যাড….
তখন নীড়ের চোখ গেলো নিহালের কিছুটা পিছে । সেখানে রায়হানরাও আছে। আর অর্নবও। কিছুটা রাগ উঠলো। তবুও নিজেকে শান্ত রাখলো।
নীড় : ড্যাড কি হয়েছে?
নিহাল নীড়কে কবির-কনিকার মৃতদেহের সামনে নিয়ে গেলো। নীড় দেখে অবাক হলো।
নীড় : কিভাবে কি হলো?
নিহাল : কিভাবে কি হলো …. তা জানতে পারবে…. আগে মেরিনকে সামলাও। ও যে পাথর হয়ে গিয়েছে । কোনো react ই করছেনা।
নীড় মনে মনে : মুখ নিয়ে যাবো মেরিনের কাছে? আর আমি কি যেতে পারবো? ও যে এখন রায়হানের স্ত্রী … কেন পারবোনা কেন? ও আমার মেরিন…. আমার snow white … হক আছে আমার।
নিহাল : কি ভাবছো? যাও… দেখো তুমি ছারা ওর কেউ নেই….
নীড় মেরিনের সামনে গেলো। বাকীরা একটু সরে দারালো।
নীড় : sn…. মেরিন… দেখো যে চলে যাওয়ার তাকে কেউ চাইলেও ধরে রাখতে পারেনা। এটাই নিয়ম। তাই বলেকি নিজের মা-বাবাকে শেষ বিদায়টা দিবে না… আসো… accept the truth …
মেরিন : …
নীড় : মেরিন… নিজের ভাবটাকে প্রকাশ করো… মেরিন… এই মেরিন…
তখন ওখানে পুলিশ এলো।
পুলিশ : its an accident case…. তো আপনারা কি case করতে চান?
জাফর : দেখেন আমার ভাতিজী যা বলবে তাই হবে…
অফিসার মেরিনের কাছে গেলো।
অফিসার : মিস… আমি জানি… যে আপনি এখন কিছু বলার পরিস্থিতিতে নেই। তবুও আমাদের কিছু দায়িত্ব আছে। তাই একটু কষ্ট হলেও যদি আমাদের help করতেন…
নীড় : hey… officer … are you blind? or brainless bimbo… দেখতে পারছেন না… মেয়ের অবস্থা? পুলিশগিরি করতে আসছেন? out…. পুলিশ কে ডেকেছে এখানে….
অর্নব : কেন ডাকবেনা কেন? আমার ফুপ্পি-ফুপ্পার accident কিভাবে হলো তা জানতে হবেনা?
জাফর মনে মনে : যতো দেরি হবে… সম্পত্তি ভোগ করতে ততোই দেরী হবে… এই পুলিশকে ভাগাতে হবে…
জাফর : আচ্ছা আমরা কেউ কিছু না বলে মেরিনের ওপর দায়িত্বটা দেই…?
নীড় : are you stupid … আ..
নিহাল নীড়ের কাধে হাত রাখলো।
নিহাল : এটা ওদের family matter ….
নীড় : আরে…. আজব তো। যাই হোক i don’t care…. মেরিনই কেবল matter করে আমার লাইফে…
নাবিল : সবকিছু তোমার নিয়মে চলেনা নীড়…
নীড় : y…
নিহাল : নীড়… প্লিজ…
জাফর মেরিনের কাছে গেলো।
জাফর : মামনি…. তুমি কি রিপোর্ট করতে চাও?
মেরিন : …
জাফর : দেখো মা যদি তুমি রিপোর্ট করো তবে… ভাইয়া ভাবির লাশ যে কষ্ট পাবে। কতোদিন মর্গে থাকবে । post mortem করবে… শরীর কাটাকাটি।।। কতো কাহিনি… তুমি কি এগুলো চাও মামনি?
নীড় : আরে এরা তো দেখি মেয়েটার স্ট্রোক করাবে…
নীড় ছুটে মেরিনের কাছে গেলো। মেরিনের মাথায় হাত রাখলো।
নীড় : মেরিন তোমাকে কোনো decision নিতে হবেনা…. তুম…
মেরিন আস্তে করে নীড়ের হাতটা সরিয়ে উঠে দারালো। পরে যেতে নিলে নীড় ধরে ফেলল। মেরিন অফিসারের দিকে গেলো।
মেরিন : অফিসার… case করে কি হবে? গাড়িটা কিভাবে খাদে পরেছে সেটাই তো জানবেন? কিন্তু আমি তো already জানি যে আমার আম্মু-বাবার মৃত্যু কককিভাবে হয়েছে? কে তাদের খুন করেছে?
অফিসার : কে?
মেরিন : আমি… হামম হামম আমি… আমার ১টা ভুল সিদ্ধান্তের জন্যেই আমি আমার মা-বাবাকে হারিয়েছি। সেদিন যদি বাবার সিদ্ধান্তের ওপর কথা না বলতাম তবে… না তো বাবা যেতো… না তো আমি ওদের হারাতাম… যা শাস্তি দেয়ার আমাকে দিন… দয়া করে আমার মা-বাবার দেহ কে কষ্ট দিবেন না… please …
বলেই মেরিন ২জনের লাশের মাঝে বসলো।
মেরিন : i am sorry বাবা… আমি তোমার লক্ষি মেয়ে নই… ভালো মেয়ে নই… বেয়াদব মেয়ে… খারাপ মেয়ে.. তুমি আমার সুখের জন্য সব করতে… সব কথা রাখতে আমার… অথচ আমি তোমার ১টা কথা রাখতে পারলাম না…. i am sorry … বাবা তুমি যা আমি তাই শুনবো বাবা… ফিরে এসো প্লিজ… আম্মু… চলে এসোনা… আমি তোমার লক্ষি মেয়ে হবো…. তুমি যেভাবে চলতে বলবে সেভাবে চলবো…. আমি তোমাদের ছারা থাকতে পারবোনা…. যেওনা আমাকে ছেরে….
মেরিন হাউমাউ করে কাদতে লাগলো। অর্নব আর নীড় ছুটে এলো। ২জন ২দিক থেকে ধরলো।
নীড় : leaves her…
অর্নব সরে গেলো… নীড় মেরিনের মাথাটা ওর বুকে রাখলো । মেরিন নীড়ের বুকে মাথা রেখে কান্না করতে লাগলো।
নীড় মনে মনে : তোমাকে এখন থামাবো না মেরিন… এই চোখের পানির সাথে তোমার কষ্টটাও কমবে … তবে তোমার কসম…. যদি এটা স্বাভাবিক মৃত্যু হয় তবে তো ভালোই… কিন্তু যদি অস্বাভাবিক হয় যার জন্য তোমার চোখে যদি আজকে কারো জন্যে পানি ঝরে থাকে তবে আমি তাকে চরম শাস্তি দিবো… তোমার কসম খেয়ে বলছি… কোনো পুলিশ লাগবেনা… অপরাধী কে আমি নিজে শাস্তি দিবো …
কাদতে কাদতে মেরিন বেহুশ হয়ে গেলো।
৩-৪ঘন্টাপর কবির-কনিকার দাফন কাফন সম্পূর্ন হলো… মেরিনের সে কি কান্না…
.
কিছুক্ষনপর…
সবাই মেরিনকে বুঝিয়ে সুজিয়ে চলে যাচ্ছে। তবে নীড় অবাক হলো তখন যখন নাবিলরা চলে যেতে নিলো ….
নীড় মনে মনে : আজব তো এই নাবিল রায়হান… এতোক্ষন ধরে তো মেরিনকে সামলাতে গিয়ে noticeই করিনি। ১টা বার মেরিনের কাছে এলো না… আবার এখন চলেও যাচ্ছে… তাও কেবল আমার ভয়ে? আজব স্বামী তো…
নাবিল কেবল গাড়িতে উঠবে তখন নীড় ডাকলো।
নীড় : মিস্টার নাবিল রায়হান…
নাবিল ঘুরলো। অবাক হলো যে নীড় ওকে এভাবে ডাক দিলো।
নাবিল : yes…
নীড় নাবিলের কাছে গেলো।
নীড় : i am shocked… এই সাহস নিয়ে নীড়ের ভালোবাসাকে বিয়ে করেছো?
নাবিল ভীষন অবাক হলো।
নাবিল : sorry …?
নীড় : এমন ড্রামা করার দরকার নেই। আমি জানি তোমার সাথে মেরিনের বিয়ে হয়েছে। আর আমাকে এই বিষয় থেকে দূরে রাখার মাস্টার প্ল্যানটাও তোমার। তাই বলে আমাকে এতো ভয়…যে নিজের স্ত্রীকে এভাবে একা ছেরে চলে যাচ্ছো? এমন একটা সময়ে… কেমন স্বামী তুমি ? ছিঃ …. তোমার জন্য মেরিন আমার ভালোবাসাকে অগ্রাহ্য করলো….
নাবিল : wait wait wait…তুমি পাগল জানতাম। but বদ্ধ উন্মাদ জানতামনা…
নীড় : দেখো তোমার জন্য ভীষন রেগে আছি। তাই প্লিজ আর রাগিও না । জানে মেরে দিবো। যেটা আমি চাইনা। মেরিন needs you…
নাবিল : not at all… কারন আমি মেরিনের স্বামী নই..
নীড় : এখনো মিথ্যা বলবে…. এতো ভীতু তুমি?
নাবিল : excuse me…. যদি মেরিন আমার বউ হতো তবে তোমাকে কেন … তোমার মতো ১০০জনকেও ভয় পেতাম না…. কিন্তু আফসোস…. ও আমার বউ নয়। বিয়েটা হয়নি…
নীড় : what?
নাবিল : হামম। মেরিন আর uncle না করে দিয়েছিলো….
নীড়ের মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো।
নাবিল : anyway .. প্লিজ মেয়েটা পারল সামলিও… কষ্ট দিওনা…
বলেই নাবিল চলে গেলো। নীড় হাটু গেরে বসে পরলো। কতো বড় অপরাধ করেছে ও …
⛈️⛈️⛈️
]
.
বর্তমান…
নীড়কে আবার asylum এ পাঠানো হলো ।
আর এদিকে মেরিন নীড়ের background সম্পর্কে জেনে নিলো।
মেরিন : মিস্টার নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন …. চরিত্রহীন … তুমি আমার মা-বাবাকে মেরেছো…. ছারবোনা… কোনোভাবেই ছারবোনা তোমাকে…. তবে পাবো কোথায় তোমায়…. তোমাকে যে আমার যে খুজে বের করতেই হবে। i hate you the most….
তখন জাফর এলো।
জাফর: ভালো আছো মা?
মেরিন : হামম।
জাফর : মামনি হসপিটালের কাজের জন্য কিছু জায়গায় তোমার sig…
মেরিন : সব কিছু পরে… তুমি আমাকে বলো যে নীড়কে কোথায় পাবো?
জাফর : ১বছর ধরে ওরে কোনো খোজ খবর নেই । কেউ ওকে দেখেনি..
মেরিন : আমি দেখেছি….
জাফর : কোথায় ?
মেরিন : flight এ…
জাফর : মানে?
মেরিন : মানে হলো এই যে usa থেকে ঢাকা আসার সময় আমি নীড়কে দেখেছি। উনার খোজ আমাকে দাও কাকা…
জাফর : আমি চেষ্টা করবো।
৩দিনপর…
জাফর ফিরে এলো । কিন্তু নীড়ের খোজ দিতে পারলোনা।
মেরিন : তুমি চেষ্টা করেছো তাইই অনেক কাকা…
জাফর : মামনি তুমি রেডি হয়ে কোথায় যাচ্ছো?
মেরিন : চৌধুরী বাড়ি….
মেরিন চৌধুরী বাড়িতে গেলো। নিহাল মেরিনকে দেখে অবাক হলো।
নিহাল : মামনি… তুমি?
মেরিন : হামমম আমি…. নীড় কোথায়?
নিহাল : নীড়…? মামনি তোমার সব মনে পরেছে?
মেরিন মনে মনে : কি মনে করার কথা বলছে? যার কথাই বলুক… আমি কেবল তাল মিলাই ….
মেরিন : হামম। সব মনে পরেছে…
নিহাল মেরিনের মাথায় হাত রাখলো….
নিহাল : আমার বাড়ি লক্ষি ফিরে এসেছে … ১টা বার বাবা বলে ডাক…
মেরিন মনে মনে : বলে কি লোকটা…
নিহাল : ডাকোনা মামনি…. বাবা বলে…
মেরিন : বাবা….
.
অতীত…
[
⛈️⛈️⛈️
নীড় : কি করে ফেলেছি… মেরিন…কোনোদিনও আমায় ক্ষমা করবেনা… পশুর মতো আচরন করেছি… shame on me… নীড় নীড় নীড়…আফসোস করার সময় এটা না। মেরিনকে সামলাতে হবে।
নীড় ওপরে গেলো। দেখলো মেরিনের মামি মেরিনকে খাওয়ানোর চেষ্টা করছে । মেরিন না করছে । তবুও মেরিনের মামী জোর করে খাইয়ে দিলো । ২-৩বার মুখে দিয়ে মেরিন আর খেলোনা।
.
একটুপর…
সবাই মেরিনকে এটা ওটা বলে শ্বান্তনা দিতে লাগলো। মেরিন সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। কে কি বলছে ওর কানেই যাচ্ছেনা।
নীড় : এই মহিলা মানুষগুলো তো মেয়েটাকে আরো emotional করে দিবে…. না এদেরকে ভাগাতে হবে….
নীড় ভেতরে ঢুকলো।
নীড় : দেখি আপনারা একটু বাহিরে জান তো…
নীড়ের কথা অমান্য করবে কার সাধ্য? সবাই বেরিয়ে গেলো। নীড় গিয়ে মেরিনের পাশে বসলো।
নীড় : আর কান্না করেনা। মাথা ব্যাথা করবে যে। তোমার কান্না কি শশুড়ড্যাড আর শাশুড়িমম সহ্য করতে পারে? তাদের আত্মা কষ্ট পাবেনা? কান্না থামাও…. শুয়ে পরো আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি….
মেরিনের just নীড়কে সহ্য হচ্ছে না….
.
চলবে….