সুখপাখির৷ উড়াল পর্ব-০৩ এবং শেষ পর্ব

0
325

#সুখপাখির_উড়াল
#ইরিন_নাজ
#পর্ব_৩ (অন্তিম)

সকাল সকাল মায়ের ডা*কাডা*কিতে ঘুম ভা*ঙ*লো তিথির। চুল টা*ন*তে টা*ন*তে উঠে বসলো সে। মাথায় প্রচন্ড য*ন্ত্র*না হচ্ছে তার। চোখজোড়াও ব্য*থা করছে। অ*তিরিক্ত কা*ন্না*র ফলাফল ভেবে দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করলো তিথি। রাতে একা এভাবে চলে আসায় তার মা তামান্না বেগম অনেক প্রশ্নই করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তানিম হয়তো কিছু বুঝতে পেরেছিলো তাই মা কে থামিয়ে দিয়েছে। রাফিদের কথা মনে হতেই বুকে মো*চ*ড় দিলো তিথির। কালকে হয়তো একটু বেশিই বা*ড়া*বা*ড়ি করে ফেলেছে সে। সব দো*ষ সীমা বেগমের ছিলো আর সে রা*গে রাফিদ কে একগা*দা কথা শুনিয়ে এসেছে। রাফিদ তো কখনো সামান্য একটা কথা বলেও আ*ঘা*ত দেয়নি তাকে। যা অ*শান্তি সব সীমা বেগম করতেন। আর রাফিদ নিজের মা কে পা*গ*লে*র মতো ভালোবাসে তাইতো রা*গে তাকে থা*প্প*ড় মা*র*লো। যাই হোক তিথি ঠিক করলো যতক্ষণ না রাফিদ তাকে নিতে আসবে ততক্ষন সে যাবে না।

মায়ের অ*স্থি*র ডা*কাডা*কিতে দ্রুত বিছানা থেকে নামলো তিথি। চুল হাতখো*পা করে দরজা খুলতেই দেখলো তামান্না মুখে আঁচল চে*পে কাঁ*দ*ছে*ন। তিথিকে দরজা খুলতে দেখে অ*স্থি*র হয়ে ওর হাত চে*পে ধরলেন। মায়ের কা*ন্না দেখে অ*স্থি*র হলো তিথিও। মাকে ঝা*কি*য়ে জিজ্ঞাসা করলো,

— কি হয়েছে আম্মু? তুমি এভাবে কাঁ*দ*ছো কেনো? বলো?

তিথির আম্মু কা*ন্না*য় জ*ড়া*নো কণ্ঠে বলতে লাগলেন,

— মারে স*র্ব*না*শ হয়ে গেছে। তোর কপাল পু*ড়ে*ছে রে মা।
রাফিদ,, রাফিদ….

তামান্না বেগম কথা শেষ করতে পারলেন না। তানিম এসে মা কে থামিয়ে দিলো। বোনকে বুঁকের মাঝে আ*গ*লে নিয়ে বললো,

— আপা চল। দেরি করা যাবে না। নাহলে হয়তো শেষ দেখাটাও দেখতে পারবিনা।

অজানা আ*শং*কা*য় বুক কেঁ*পে উঠলো তিথির। ভাই কে ঝা*কি*য়ে বললো,

— কি হয়েছে তানিম? বল না ভাই? আম্মু কাঁ*দ*ছে কেন? কোথায় নিয়ে যেতে চাচ্ছিস আমায়? আর রাফিদ, রাফিদের কি হয়েছে?

তানিম বোন কে আরও শ*ক্ত করে জড়িয়ে ধরে জ*ড়া*নো কণ্ঠে বললো,

— প্রশ্ন করিস না আপা। আমি উত্তর দিতে পারবোনা। আমি পারবোনা। তুই চল। আম্মু তুমিও চলো। দেরি করো না।

তানিম ওই অবস্থাতেই বোন আর মাকে নিয়ে বের হয়ে গেলো। বুক ধ*ড়*ফ*ড় করছে তিথির। অনেক রকমের খা*রা*প চিন্তা মস্তিস্কে উঁকি দিচ্ছে কিন্তু খা*রা*প কিছু হয়নি এমন একটা বুঝ দিচ্ছে তিথি নিজেকে। সিএনজি যতো আগাচ্ছে ততোই বুঁকের কা*প*ন বেড়ে যাচ্ছে তিথির। কারণ রাস্তাটা যে তার ভীষণ পরিচিত। এ যে রাফিদের বাড়ির রাস্তা।

বাড়ির সামনে গাড়ি থামলে স্থির চোখে সেদিকে তাকিয়ে রইলো তিথি। অনেক মানুষজন দেখা যাচ্ছে। ভ*য়ে তার দেহটা যেনো জ*মে যাচ্ছে। তিথিকে নামতে না দেখে তানিম যত্ন সহকারে বোন কে ধরে নামালো। বাইরের দরজা পার করে বাড়ির গেটের সামনে আসতেই আ*গ*ড়*বা*তি*র তীব্র গ*ন্ধ নাকে লাগলো তিথির। তানিম তিথিকে টে*নে ভিতরে প্রবেশ করলো। ভেতরে ঢুকতেই তিথির চোখ আ*ট*কে গেলো ফ্লোরের দিকে। সেখানে রাফিদের নি*থ*র দেহটা পরে আছে। সম্পূর্ণ দেহটা সাদা কাপড়ে মু*ড়া*নো। শুধু মুখটা দেখা যাচ্ছে। পাশেই সীমা বেগম কিসব বিড়বিড় করে কাঁ*দ*ছে*ন। রাফিদের বোন সিনথি ভাইয়ের লা*শ জড়িয়ে ধরে হা*উ*মা*উ করে কাঁ*দ*ছে।

তিথি আর ন*ড়*চ*ড় করতে পারলোনা। সেখানেই হাঁ*টু ভে*ঙে বসে পড়লো। সবার কা*ন্না*র শব্দ, আ*গ*ড়*বা*তি*র গ*ন্ধে পরিবেশটা ভা*রী হয়ে উঠেছে। সেখানে বসেই রাফিদের মুখটার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো তিথি। আশেপাশের কিছু মহিলার কথা কানে আসলো তার। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আ*ফ*সো*স করে বলছে,

— মেয়েটার কপাল পু*ড়*লো। তিনটা মাস ও সংসার করতে পারলো না। আহারে।

আবার কেউ কেউ বে*ঙ্গ করে বলছে,

— মা আর বউয়ের কারণেই তো ম*র*লো বে*চা*রা ছেলেটা। কি আর বয়স হয়েছিল? এই বয়সে কেউ ব্রে*ন স্ট্রো*ক করে নাকি? শুনেছি ডাক্তার বলেছে অতিরিক্ত মানসিক চা*পে*র কারণে ছেলেটা ব্রে*ন স্ট্রো*ক করেছে। আর যখন স্ট্রো*ক করেছিল তখন হাসপাতালে নিলে নাকি বাঁ*চা*নো যেতো। কিন্তু মা আর বউ কেউই খেয়াল করেনি। অ*কা*লে প্রাণ গেলো ছেলেটার। ইশশ! আমার এতো খা*রা*প লাগছে বলে বুঝাতে পারবোনা। ওর মতো ভালো ছেলে আমাদের এই এলাকায় আর একটাও দেখি নি। কতো সম্মান করতো বড়দের। কোনো খা*রা*প অভ্যাস আজ পর্যন্ত দেখিনি। আর এই ছেলেটার সাথেই এমন হলো।

এবার আর চোঁখের পানি বা*ধ মানলো না তিথির। হা*উ*মা*উ করে কাঁ*দ*তে লাগলো। কাঁ*দ*তে কাঁ*দ*তে ওভাবে বসা অবস্থাতেই হা*প*র পেরে রাফিদের কাছে পৌছালো তিথি। রাফিদের বুকে আ*ছ*ড়ে পরে চি*ৎ*কা*র করে কাঁ*দ*তে লাগলো। বারবার তাকে ফিরে আসতে বলতে লাগলো। কিন্তু যে একবার প*র*পা*রে চলে যায় সে কি আর ফিরে আসে?

তিথিকে দেখামাত্র আ*গু*ন জ্ব*লে উঠলো সীমা বেগমের মাথায়। হুইলচেয়ার চালিয়ে এক প্রকার ছু*টে আসলেন তিথির কাছে। চুলের মু*ঠি চে*পে ধরে নিজের ছেলের কাছ থেকে সরিয়ে অন্যদিকে ধা*ক্কা দিলেন তিথিকে। চি*ৎ*কা*র করে বললেন,

— ছু*বি না আমার ছেলেকে ফ*কি*ন্নি*র বাচ্চা। কা*ল*না*গি*নী একটা। তোর কারণেই আমার ছেলে কে ম*র*তে হলো। সব ন*ষ্টে*র গো*ড়া তুই। না তুই আমার ছেলের জীবনে আসতি আর না এমন কিছু হতো। বের হয়ে যা এই বাড়ি থেকে। আমার ছেলের মুখ ও আমি তোকে দেখতে দিবো না।

এবার আর চুপ করে থাকতে পারলোনা সিনথি। তিথির পাশে বসে তাকে জড়িয়ে ধরে মায়ের উদ্দেশ্যে চি*ৎ*কা*র করে বললো,

— বাস্ মা বাস্! আর কতো? আমার ভাইটার মৃ*ত্যু তিথির কারণে না বরং তোমার কারণে হয়েছে। হ্যা তিথির ও দো*ষ আছে কিন্তু তোমার দো*ষ শতভাগ। তোমার অ*ত্যা*চা*রে আমার ভাই টা ম*রে গেলো। তাও তোমার অ*হং*কা*র গেলো না। আমার ভাই তোমাকে আর তিথিকে অতিরিক্ত ভালোবাসতো যা তার জীবনে কাল হয়েছে। সে বে*ছে নিতে পারেনি তোমাদের দুজনের মাঝ থেকে একজনকে। মাঝখান থেকে সে নিজেই চলে গেলো।

কথাগুলো বলে আবার কাঁ*দ*তে লাগলো সিনথি। কাঁ*দ*তে কাঁ*দ*তে বললো,

— জানো দুইদিন আগে আমার ভাইটা আমাকে ফোন দিয়ে বাচ্চাদের মতো কা*ন্না করছিলো। যেই ছেলে বাবা চলে যাওয়ার পরও এক ফোঁ*টা চোঁখের পানি ফেলেনি, শ*ক্ত হয়ে আমাদের সামলেছিলো সেই ছেলে কাঁ*দ*ছি*লো। কাঁ*দ*তে কাঁ*দ*তে বলছিলো আপা আমি মনে হয় আর বাঁচবো না। কেউ আমাকে বোঝে না রে আপা। মা বলে তিথিকে ছেড়ে দিতে আর তিথি বলে মা কে ছেড়ে দিতে। আমি যে দুইটার একটাও করতে পারবোনা। আমি দুইজনকেই ভালোবাসি, মা*রা*ত্ম*ক ভালোবাসি। কিভাবে তাদের মধ্যে থেকে একজনকে বে*ছে নিবো বলো? আমি আর পারছিনা এসব স*হ্য করতে। কাউকে বোঝাতে পারি না। যাকেই বোঝাতে যাই সেই ভুল বুঝে। আমি হাঁ*পি*য়ে গিয়েছি আপা। এরচেয়ে ম*র*লে হয়তো শান্তি পাবো আর তারাও শান্তি পাবে।

কাঁ*দ*তে কাঁ*দ*তে হঠাৎ হাসা শুরু করলো সিনথি। চোখে পানি নিয়ে হাসতে হাসতে বললো,

— জানো মা তুমি তোমার ছেলের ভালোবাসার ফা*য়*দা তুলতে চেয়েছিলে। তোমার ছেলে যে তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসে তা তুমি ভালো করেই জানতে। আর সেই ভালোবাসার অ*প*ব্যবহার করেছো তুমি। ফলস্বরূপ কি পেলে? ছেলের লা*শ। হাহাহা।

সিনথির কথাগুলো শুনে থ*ম মে*রে বসে আছেন সীমা বেগম। চোখ দিয়ে ট*প*ট*প করে পানি পড়ছে তার কিন্তু মুখ দিয়ে কোনো শব্দ হচ্ছে না। সিনথি হাসি থামিয়ে আবার হা*উ*মা*উ করে কাঁ*দ*তে কাঁ*দ*তে বললো,

— কি হলো মা? তোমার ছেলের জন্য পাত্রী খুজবে না? পাত্রী তো যোগ্য, রূপবতী, পয়সাওয়ালা হওয়া চাই তাইনা? যেই ছেলে কে নিয়ে এতো গ*র্ব করতে এখন কিভাবে গ*র্ব করবে মা? বলো? কি হতো মা যদি ছেলের খুশির জন্য তার পছন্দের মেয়েটাকে মেনে নিতে বলো? তোমার ছেলেটা তো বেঁচে থাকতো। কিন্তু না তুমি নিজের স্বা*র্থ দেখেছো। বড়োলোক বাড়ির কন্যা চাই তাইনা? এবার আনো বড়োলোকের মেয়েকে। তিথি গরীব ঘরের মেয়ে বলে তুমি তাকে উঠতে বসতে ফ*কি*ন্নি*র বাচ্চা বলেছো। তোমার মেয়ের সাথে যদি তার শ্বশুর বাড়ির লোক এমন করতো মেনে নিতে পারতে? আমার বাবা এতো বড় বড় ছেলে মেয়ে রেখে অন্য মহিলার হাত ধরে চলে গেছে এটা নিয়ে চাইলেই কিন্তু তারা আমাকে খো*টা দিতে পারতো। কিন্তু তারা দেয়নি। তাদের ধন সম্পদ আমাদের তুলনায় অনেক বেশি। কই কখনো তো এই নিয়েও তারা আমাকে খো*টা দেয়নি। কিন্তু তুমি,,, ছিঃ। তোমার অতিরিক্ত লো*ভে*র কারণে আজ আমার ভাইটা নেই।

সিনথি এবার তিথির দুই হাত ধরে নরম কণ্ঠে বললো,

— কেনো আমার ভাইটাকে বুঝলে না তিথি? তোমাদের তো অনেক বছরের সম্পর্ক ছিলো তাও কেনো আমার ভাইটাকে বুঝলে না? একবার যদি আমার ভাই কে বুঝতে তাহলে হয়তো এই দিন আসতো না। তুমি কি পারতেনা একটু ধৈ*র্য্য ধরতে, একটু স*হ্য করতে? নিজের ভালোবাসার মানুষটার জন্যই নাহয় একটু স*হ্য করতে। হ্যা তোমার শাশুড়ি খা*রা*প ছিলো কিন্তু তোমার স্বামী তো খা*রা*প ছিলো না। একটু ধৈ*র্য্য ধরে কি সুদিনের অপেক্ষা করতে পারতেনা? আমার ভাইটা তোমাকে কতোটা ভালোবাসতো তা তো তোমার অজানা ছিলো না। সে চাইলেই কিন্তু পারতো মায়ের কথায় তা*ল দিতে। অন্য ভালো মেয়েকে বিয়ে করতে। তবে সে তা করেনি। যখন থেকে তোমার সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে তখন থেকে তুমিই তার সব। আর কোনো মেয়ের প্রতি কখনো ইন্টারেস্ট দেখায় নি। কিন্তু এই ভালোবাসার প্র*তি*দা*ন কি পেলো আমার ভাই? মৃ*ত্যু?

সিনথির বলা একেকটা কথা কা*টা*র মতো হৃদয়ে চু*বে*ছে সীমা বেগম আর তিথির। দুজনেরই নিজেকে আজ অ*প*রা*ধী মনে হচ্ছে। কিন্তু এখন যে আর কিছুই করার নেই। এতো চা*প আর নিতে পারলোনা তিথি। জ্ঞা*ন হা*রি*য়ে ফ্লোরে লু*টি*য়ে পড়লো। চোখ বন্ধ হওয়ার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত তাকিয়ে রইলো রাফিদের নিষ্পাপ মুখের দিকে। হয়তো এই দেখাই শেষ দেখা। আর কখনো দেখতে পারবেনা নিজের ভালোবাসা, নিজের স্বামীকে।

———

৫ বছর পর,
নিজের ৪ বছরের মেয়ে রাফিয়া কে নিয়ে বাসা থেকে বের হলো তিথি। আজ স্কুলে তার প্রথম দিন। সিএনজি তে বসে নিজের এ*লো*মে*লো হয়ে যাওয়া জীবনের কথা ভাবতে লাগলো সে। যদিও জীবনটা এখন আর আগের মতো এলোমেলো নেই। শ*ক্ত হাতে সামলে নিয়েছে সে। তবে একজনের ক*ম*তি, কিছু আ*ফ*সো*স তাকে সারাজীবন তা*ড়া করে বেড়াবে তা সে জানে। সেভাবেই নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে।

রাফিদ মা*রা যাওয়ার এক মাসের মাথায় তিথি জানতে পারে সে প্রেগনেন্ট। সেই সময়টা অনেক ক*ঠি*ন কে*টে*ছে তার। আশেপাশের মানুষগুলো এমনকি নিজের মাও অ্যা*ব*র*শ*ন করানোর জন্য তাকে চা*প দিচ্ছিলো। তাদের কথা বাচ্চা রাখলে মেয়েকে আর ভালো জায়গায় বিয়ে দেয়া যাবে না। সেই সময়টায় নিজেকে শ*ক্ত করেছে তিথি। নিজের বাচ্চা কে রাখার জন্য ল*ড়ে*ছে। প্রতিবেশী মহিলারা তামান্না বেগমের মাথায় এসব বিষয় এমনভাবে ঢুকিয়েছিল যে তিনি কিছুতেই এই বাচ্চা রাখতে দিতে চাচ্ছিলেন না। কিন্তু তিথির এক কথা সে অ্যা*ব*র*শ*ন ও করাবে না আর না দ্বিতীয় বিয়ে করবে। তার জীবন থেকে তো সুখপাখি চলেই গিয়েছিলো রাফিদের মৃ*ত্যু*র সাথে সাথে কিন্তু তা হয়তো আবার ফিরে আসতে চলেছে তার সন্তানের মাধ্যমে। তানিমের প্রতি কৃতজ্ঞ তিথি কারণ সে সেই সময় বোনের পাশে ছিলো। বোনের দায়িত্ব নিয়েছে আর আজও পালন করে চলেছে।

রাফিয়া হওয়ার দুই বছর পর থেকে চাকরির জন্য চেষ্টা করতে থাকে তিথি। আর ভা*গ্য*জো*রে ভালো একটা চাকরিও পেয়েছে সে। এখন সে সফল একজন নারী। কারোর উপর নির্ভর করতে হয়না। তানিম, মা, মেয়েকে নিয়েই এখন তার সংসার।

সীমা বেগম এখন মেয়ের সাথে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। সিনথির শ্বশুর বাড়ির লোকেরা অসম্ভব ভালো। সীমা বেগম কে নিয়ে তাদের কোনো অ*ভি*যো*গ নেই। তবে তিথি সেদিনের পর আর কখনো সীমা বেগমের সামনে যায়নি। মেয়েকে মাঝে মাঝে বাইরে থেকেই ফুফির বাড়িতে দিয়ে আসে। রাফিয়া ফুফি, ফুফা আর দাদি বলতে পা*গ*ল। বোঝাই যায় তারা প্রচন্ড আদর করে তাকে।

স্কুলের সামনে নেমে মেয়েকে নিয়ে স্কুলে প্রবেশ করে তিথি। আজ থেকে হয়তো মেয়েটা নিজের বাবাকে প্রতিনিয়ত কাছে পেতে চাইবে। অন্য বাচ্চারা যখন বাবার হাত ধরে স্কুলে আসবে তখন সেও নিজের বাবা কে খুজবে। কথাটা ভেবে চোখে জল চলে আসলো তিথির। একটা ভুলের মা*শু*ল যে তাকে সারাজীবন ধরে দিতে হবে।

~সমাপ্ত~