স্বপ্নময় ভালোবাসা পর্ব-১৫

0
6203

স্বপ্নময় ভালোবাসা
রোকসানা আক্তার
||পর্ব-১৫||

যখন বাসায় ফিরলাম তখন বুঝতে পারলাম আকাশের সাথে আমি একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করে ফেলেছি যেটা করা আমার একদম উচিত হয়নি।বিষয়টিকে সহজভাবেও নিতে পারতাম,জানি না হঠাৎ কি থেকে কি হয়ে গেল!

ওর শাড়ি পড়ে চুল ছেড়ে আসার আবদার করা,আবার তারউপর হাতধরা কেনজানি আমি এ বিষয়গুলো মেনে নিতে পারিনি।তাছাড়া,রহমত চাচার থেকে আমার বিয়ে ভাঙ্গার কারণটা জেনে একেবারেই নাজেহাল অবস্থা।মাথাটা শূন্য শূন্য অনুভূতি ।মনের ক্রোধানলে ওর সেম্পেথিটা মুহূর্তের জন্যে মনে হলো “পৃথিবীর সব এক!খালামণিও একসময় এমন সেম্পেথি দেখিয়েছিলেন।আর এখন?এখন ত উল্টো বামহাত দেখাচ্ছেন।”

মনের সাথে মনের সংঘর্ষের রূপটা আকাশের উপর ছুঁড়ে দেওয়া আমার একদম ঠিক হয়নি !তাও ওতগুলো মানুষের সামনে!ওর নিজেরও একটা সম্মান আছে!তাছাড়া,আকাশ ত ওরকম নয়।ও অন্য সবের থেকে আলাদা।এতটা বছর ওকে ভালোভাবে চেনেও কেনো কেনো এরকম করলাম,কেন!
উফস!!
ভাবতে পারছি না আর!কিছুতেই ভাবতে পারছি না!আকাশ নিশ্চয়ই আর আমার সাথে আগের মতো কথা বলবে না।কল করলেও রিসিভ করবে না।খুব খুব কষ্ট পেয়েছে হয়ত ও!

“সেই হাসপাতাল থেকে আসার পর থেকেই মুখ গোমড়া করে আছিস।ভেতরেও আসছিস না।আমার সাথে দু একটি কথাও বলছিস না!কি হলো তোর?”

মার কথায় ভাবনার গোচর কাঁটে আমার। পেছন ফিরে মার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকাই।মা তার কথার জবাব পেতে আমার দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছেন বেলকনির দরজা বরাবর ।আমি উদাসীন মুখ করে একটা তপ্ত নিঃশ্বাস ছেড়ে বারান্দার রেলিং ছেড়ে মার কাছে যাই।কিছু না বলেই হঠাৎ মাকে জোরে জড়িয়ে ধরি!ঘটনার আকস্মিকতায় মা হতবিহ্বল।
মাকে এভাবে কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে চোখবুঁজে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করি।তারপর আস্তে একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে মাকে আবার ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম,

“মা আমরা এখান থেকে চলে যাই,প্লিজ?আমার আর এখানে ভালো লাগছে না।”
“কেন কি হয়েছে?কেউ তোকে কিছু বলেছে?”

দু’পাশে মাথা নাড়ি।
“তাহলে?”
“জানি না,মা।আমার কিছুই ভাল্লাগতেছে না।খুব খারাপ লাগতেছে মা!”
“নতুন জায়গায় এসেছিস ত তাই খারাপ লাগছে।”

খানিক থেমে মাথায় হাত বুলিয়ে তারপর আবার বলেন,
“সব ঠিক হয়ে যাবে।তাছাড়া,আমরা ত আর এখানে বেশিদিন থাকছি না।কাল রিপোর্ট ভালোয় ভালোয় হাতে আসুক তারপর ওষুধপাতি কিনে আমাদের আবাস্থল।ঠিক আছে?”

আমি উপরে-নিচে মাথা ঝাঁকাই।আর আমার ছলছল চোখজোড়ায় লেপ্টে থাকে মাকে না বলা অনেকগুলো কথা।

ডিনার শেষ হলে আমি ফোনটা একটু হাতে নিই। আকাশকে কল করবো ভাবছি। মনকে আর মানাতে পারছি না।দেখি রিসিভ করে কিনা। আর রিসিভ না করলে কাল সোঁজা ওর চেম্বারে গিয়ে হাজির হব এবং স্যরি বলবো!কিছুক্ষণ এসব ভেবেটেবে আকাশের নাম্বারে ডায়াল করে পলকহীন চোখে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকি। রিং হয় ওপাশ থেকে রিসিভ হয়নি।তারপর আবার দিই।তারপরও রিসিভ হয়নি।উপায়ন্তর না পেয়ে নাম্বারে মেসেজ করি-আকাশ প্লিজ,কলটা একটু রিসিভ কর।জরুরী কথা আছে তোর সাথে আমার।”

নাহ তাতেও কোনো রেসপন্স এলো না।আমি ক্ষান্ত মন নিয়ে বিছানার উপর বসে পড়ি।চোখের কার্ণিশ ঘেঁষে গাঢ় পানি জমা হয়,যেন এক্ষুনি টুপটুপ করে বেয়ে পড়বে। মা অবশ্য এখন রুমে নেই।রুমে থাকলে সব দেখে ফেলতেন।

এরইমাঝে কেউ দরজা ঠেলে মাথা বের করে বললো,
“আপামণি,আপনাকে ম্যাডাম ডাকছে।”

আমি তড়িঘড়ি চোখের আঁবছা পানিটা হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে মুছে নিয়ে মাথা তুলে তাকাই। এ বাড়ির কাজের লোক।বললাম,
“জ্বী,আসছি।”

কাজের মহিলা চলে যায়।আমি মিনিট তিনেক সময় নিয়ে নিজেকে যথেষ্ট স্বাভাবিক করি।তারপর দৃঢ় পা ফেলে বাইরের দিকে এগিয়ে যায়।ডাইনিং বরাবর যেতেই সর্বপ্রথম খালামণিকে চোখে পড়ে।উনি সিঙ্গেল সোফায় পায়ের উপর পা চেপে বসে আছেন। ঠোঁটের কোণায় কথার পোটলা ঝুঁলছে।যদিও সিউর বলতে পারছি না তবে উনার চোখমুখের ভাব তাই বলছে।
তার অপোজিট পাশে মা!মার থেকে চোখ সরিয়ে বামপাশে তাকাতেই দেখি তুরাব ভাইয়া।উনার চোখমুখে কেমন একটা কৌতূহলী কৌতূহলী ভাব।

সবার এমন আঁটি পেতে বসায় কারণ বুঝলাম না ঠিক।কোনো ফয়সালা করবে নাকি??

ভাবতে ভাবতেই খালামণির কাছে চলে আসি।খালামণি আমাকে দেখে বলেন,
“আসছো তুমি?ওখানে গিয়ে বসো।কথা আছে!”

আমার ভেতরটা হঠাৎ মুচড়ে উঠে কোনো এক আশঙ্কায়!ওখানে বসি।বললেন,
“সানা?তুরাব নাকি তোমাদের বাসায় গিয়েছে?”

আমি কিছু বলার আগেই মা বলে উঠলেন,
“হুমম,শাহিদা গিয়েছে ত!কতবার বলবো তোকে!”
“বুবু,আমি তোমার সাথে কথা বলছি না।আমি সানার সাথে কথা বলছি।উত্তর ও দিবে।”
বলেই খালামণি আমার দিকে তাকান
বলেন,
“বলো,সানা।”

আমি ইতস্ততা বোধ করে তুরাব ভাইয়ার দিকে তাকাই।তুরাব ভাইয়ার মাথা নিচের দিকে সমান্তরাল।হঠাৎ খালামণি আমাকে এ’কথা জিজ্ঞেস করছেন কেন?আর জিজ্ঞেস করারই বা কী এমন কারণ থাকতে পারে !এটা ত উনার অজানার কিছু নয়!এতদিনের কথা উনার ছেলে উনাকে না বলে থাকবে বলে ত মনে হয়না।এমন ভাব করছেন যেন কিছুই জানেন না!
“কী সানা,বলছিস না কেন?”

আমি এবার সোঁজা উত্তর করি,
“তা ত তুরাব ভাইয়া জানে,খালামণি।”
“নাহ,তুরাব কিছুই জানে না।ও গেলেই ত জানবে!”
“মানে?উনি আমাদের বাসায় আসে নি?ভাইয়া আপনি আমাদের বাসায় যান নি?”

“তুরাব কী বলবে!আমি বলছি তা শুনতেছ না!?”
“দেখেন খালামণি আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে!”
“আমার কোনো ভুল নয়,সানা!আমার ছেলে কখনো মিথ্যে বলেনা আমি আমার ছেলেকে চিনি।তুমি হয়তো চাইছো সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখতে।দেখো তোমাকে ত আমি আগেই একবার বললাম তুরাবের কারো সাথে সম্পর্ক আছে!একটা উদাহরণ দিই শুনো–ধরো তোমাদের ডিভোর্স হয়নি।তোমরা সংসার শুরু করেছ।সংসার শুরুর পরই যদি দুজনের মাঝে আন্ডার্সটেন্ডিং ব্যাপারটা না থাকে- তুরাব তার রিলেশনটাকে ভুলতে না পারে।ওই মেয়ের সাথে কথা বলতে চায়।সে তোমাকে সময় দেয় না।তখন?তখন কী করবে?হবে ঝামেলা?হবে!পরে আমরা চাইলেও এর বিহেভ করতে পারবো না সানা!তোমার ভালোর জন্যেই বলছি এবং স্বয়ং তা তুরাবের সামনেই। এমন সম্পর্ক রাখার কোনো দরকার নেই।এতে তুমিও ভালো থাকবে না,এবং তুরাবও না।বুঝাতে পেরেছি,সানা?”

মা চুপ থাকতে পারেনি।ব্যথিত গলায় তুরাব ভাইয়াকে বলে উঠলো,
“তুরাব বাবা, তোমার মা এসব কী বলছে?আমরা ত কিছুই বুঝতেছি না!”

আমি বললাম,
“প্লিজ মা থামো।আমি বলছি!!”
বলেই খালামণির দিকে মুভ করি,

“তা আপনি চাচ্ছেন আমি আজ বা কালই ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দিই?”
“আমার কথা বুঝতে ত তোমার অসুবিধে হয়নি তাই না?”
“ওকে!”
বলেই তুরাব নামের ওই লোকটির দিকে বজ্র চোখে তাকাই।তুরাব নামের ওই লোকটি এক ফোঁড়ও আর কথা বলেননি।বা বলার প্রয়োজনও বোধ করেননি।মানুষ এত ছলচাতুরী হয়!এতটা অভিনয় করতে ওারে?
হায় রে এই মানুষটিকে আর ইনার মাকে না দেখলে জানাই হত না।

তারপর নিজেকে খানিক্ষন ধাতস্থ করে মাকে নিয়ে হন্তদন্ত রুমে চলে এসে দরজা লাগিয়ে দিই।এখন যা শুনলেন আর তুরাব ভাইয়ার ভাবভঙ্গি যা দেখলেন মা এসবে চরম বিস্ময় এবং অবাক!এটা কী কোনো স্বপ্ন ছিল নাকি হ্যালুসিনেশন মা নিজেও এর কারণ বুঝতে পারছে না।ব্যথিত আর ভারাক্রান্ত মন বলেন,
“এটা কী হলো রে,মা?তুরাব না আমাদের বাসায় গেল?আজ মিথ্যে বললো কীভাবে!?”

আমি স্তব্ধ দাড়িয়ে থেকে মার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি।কিছু না বলে বিছানার দিকে দু’কদম এগিয়ে এক সপাটে ফোনটা হাতে নিয়ে তুরাব নামের ওই অমানুষটার নাম্বারে কল করি।রিং হওয়ার সাথে সাথেই রিসিভ হয়।বললাম,
“আপনি এখন এই মুহূর্তে আমার সাথে দেখা করবেন।অনেক কথা আছে!ছাদে আসেন।আমি আসছি!”
বলেই কলটা কেঁটে দিই।ফোনহাতে নিয়ে দরজার দিলে ঘুরে যেতে নিলেই মা বলেন,

“ওর সাথে আর কি বলবি মা?ও একটা বেঈমান।ও একটা লম্পট! ওধরনের লম্পটের সাথে আমার মনে হয়না তোর আর কোনো ওর কথা বলা দরকার!আমরা কালই চলে যাবো এখান থেকে!”

“আমার হিসেব এখনো অনেক বাকি, মা!আগে কড়ি গন্ডা হিসেব নিই তারপর ওকে ছাড়বো।এর আগে নয়!”

ছাদে আসার খানিকক্ষণ পর তুরাব ভাইয়া আসে।স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় দাড়িয়ে দু’হাত ভাজ করে বলেন,
“তা কেনো ডাকলে?”

“এসবের মানে কী?”
“কোন সবের?” ভ্রু কুঁচকে।
“ভাঁজা মাছটা আমিও উল্টে খেতে পারি!এমন রংঢং না করে সোজাসাপ্টা কথা বলুন!”

উনি উদাস মনে উপরের দিকে তাকিয়ে মুখে একটা তাচ্ছিল্য ভরা হাসি দিয়ে বলেন,
“ভাঁজা মাছটা যদি আমি উল্টে খেতে পারতাম তাহলে এতদিনে পেছনে মেয়েদের লাইন লেগে থাকতো!রুমডেট ও হত!”

“মানে!!!!কী বলতে চাচ্ছেন আপনি?”
উনি প্রসঙ্গ পাল্টান,
“তা প্রেম করছো কয়টা?আর এখনো লাইনে রাখছো কয়টাকে?”

“মুখে লাগাম দিয়ে কথা বলুন বলছি!এটা নয় যে কারো উপর যা তা বলে যাবেন আর সে শুনে যাবে! আর সোঁজা লাইন চিনেন ত?সোঁজা দড়ির মতো সোঁজা কথা বলুন।আপনার পেচানো ক্যাঁচাল শুনতে এখানে কেউ আসে নি।”

“ভালো কথা জানো তুমি!তা তুমি একটা জিনিস জানো?আমার স্বপ্নে ছিল একটা ভার্জিন মেয়ে! আমার যাকে দিয়ে তৃপ্তি মিটবে!যাকে দিয়ে আয়েশ পাবো।আর যেদিন তোমাকে অফিসে দেখলাম তোমার চালচলনে বুঝলাম নির্ঘাত তুমি ভার্জিন হবে তারউপর তুমি ছিলে সুন্দরী !সেই ভেবেই মাকে আর না জানিয়ে তোমাদের বাসায় ছুটে যাই।অবশ্য মাকে আবার এ’কথাটা জানাই নি যে তোমাকে মেনে নিতে তোমাদের বাসায় যাচ্ছি। এতে মা মোটেও খুশি হতেন না।বরঞ্চ বারণ করতেন!মার ত জেনিকে পছন্দ!আর আজ পর্যন্ত শুনেনি আমার মুখ থেকে শোনেনি সেদিন যে তোমাদের বাসায় গেলাম,যদিও তোমাদের থেকে শুনেছে!বিনিময়ে মিথ্যে-বানোয়াট কথা বলে সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখার উপাধি পেয়েছ!হা হা হা!তা আসল কথা বলি,
তাই সেদিন তোমাদের বাসা কথাগুলো তোমার সামনে এমন সুন্দরভাবে উপস্থাপন করলাম তুমি ত দ্বিধায় পড়ে গেলে আমায় আসলেই ডিভোর্স দিবে নাকি রিজেক্ট করবল?আমি ত মনে মনে সেই খুশি হলাম!

যাইহোক,এবার দ্বিতীয় টপিকস বলছি-তুমি যেদিন আমাদের বাড়ি আসলে সেদিন থেকে তোমার পেছনে গোয়েন্দা লাগিয়ে দিই!যাকে বিয়ে করবো তার ব্যাপারে অন্তত ত আমাকে একটু আধটু জানতেই হবে।তুমি আজ হাসপাতালে তোমার মার রিপোর্ট আনতে গিয়েছিলে!আচ্ছা, তোমার একটু বিবেকে বাঁধে নি আপন লোককে রেখে পরপুরুষের মাধ্যমে মাকে ডাক্তার দেখাতে?আবার আমাদের থেকেও এ’কথা লুঁকিয়ে রাখলে!ওহ হ্যাঁ হ্যাঁ আমি ত ভুলেই গেলাম ওই ডাক্তারের সাথে ত তোমার আবার পিরীত আছে!তা আমাদের আবার জানাতে যাবে কেন!আমরা ত আবার রিয়াকশন নিব!তা
রেস্টুরেন্টেও নাকি ডাক্তারের সাথে ঝগড়াঝাঁটি হয়েছে?তা কেন হলো?ডাক্তার তোমার হাত ধরে নি বলে?আচ্ছা কত রাত কাঁটিয়েছ তার সাথে?ভার্জিনিটি ত মোটেও নাই!একদম পঁচা হয়ে গেছ!গন্ধ..ওয়াক ওয়াক..!!!”

সহ্য করতে পারি নি উনারর শেষ কথাটা।সম্পূর্ণ কথা শেষ করতে না দিয়ে শরীরের সর্ব শক্তি দিয়ে উনার গালে সজোরে একটা চড় মারি!
“ইউ লম্পট? আপনার সাথে আমার সম্পর্ক থাকার কোনো ইচ্ছেই এখন আমার নাই!!!আমি আপনাকে আজই এবং এখনই ওমন স্বীকৃতিহীন সম্পর্ক থেকে সরিয়ে দিচ্ছি! আল্লাহ খুব জোড় বাঁচিয়েছে এমন একটা খারাপ লোকের থেকে!”

বলেই এক মুহূর্তে আর না দাঁড়িয়ে দ্রুতপদে ছাদ থেকে চলে আসি।টাস করে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে ব্যাগের মধ্যে পড়ে থাকা ডিভোর্স পেপারটা বের করি।মা বিস্ময় মাখা চোখে তাকিয়ে আছেন।কী করছি বা কী করবো মা কিছুই বুঝতে পারছেন না!

ডিভোর্স পেপারটার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ভাবতে থাকি,
“জীবনে কত ছলনময়ী মানুষ দেখেছি!কত বিশ্বাস ভাঙ্গার মানুষ দেখেছি!কত স্বপ্ন দেখিয়ে স্বপ্ন ভাঙ্গার মানুষ দেখেছি!এদের আমি ঘৃণা করি!চরম ঘৃণা করি!আগে কত্ত ভাবতাম জীবনে মেয়েদের বিয়ে একটা!আর একই কাপড়ে তার জীবন!আর আজ! আজ হলো কী!হে আল্লাহ ইচ্ছেটা গুঁড়িয়ে বালু করে দিলে!!!”

অর্ধচোখে পাতায় টলটল পানি বেয়ে পড়ছে বৃষ্টির ফোঁটার মতো!!
কলম হাতে নিয়ে স্বাক্ষর করা স্থানে খঁচ খঁচ কলমের কালিতে একটা নিকষ,অবিশ্বাস,স্বীকৃতিহীন,অন্ধ-ভালোবাসার বন্ধনের সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নতা ঘটে!!!

অচল চাকার মতো থেমে গেল তুরাব আর সানার বন্ধনটা!এই বন্ধনটার এখানেই সমাপ্তি!!!!

চলবে….