#হঠাৎ_তুমি_এলে
#পর্ব_১৮
#Sorna_Talukder(বৃন্দা)
উৎসর মুখ থেকে সব শুনে সামু মাত্রাতিরিক্ত অবাক হয়। সামু কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলতে থাকে,
— “তা..তারমানে আমি ভুল ভেবেছিলাম!”
উৎস মুচকি হাসলো। কিছু একটা ভেবে বলতে থাকে,
— “বাই দ্যা ওয়ে তুমি জেলাস ফিল করছো নাকি?”
সামু ভ্রু কুঁচকে উৎসর দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,
— “হোয়াট!বাট কেন জেলাস হবো শুনি?”
উৎস নিজের হাঁসি চেপে রেখে বলতে থাকে,
— “আমার আর মিথিলার ব্যাপারটা নিয়ে।”
সামু এবার আমতা আমতা করে বলতে থাকে,
— “এটাতে জেলাস হওয়ার কি আছে শুনি?আমার খেয়ে কাজ নেই তো যে আপনাদের পেছনে পরতে যাবো।এখন আসি বাই!”
সামু চলে যাচ্ছিল তখনি উৎস পিছন থেকে সামুকে বলে ওঠে,
— “শোনো!”
সামু পিছনে ফিরে উৎসকে বলে উঠে,
— “বলুন কি বলবেন?”
উৎস ঘড়িতে টাইম চেক করে তারপর সামুকে বলতে লাগে,
— “যাও গিয়ে পড়তে বসো। কালকে থেকে আমার সঙ্গে ভার্সিটিতে যাবে।নাও গো!”
সামু আর কিছু না বলে শুধু মাথা নাড়িয়ে “হরতাল”বোঝায়। তারপর আড়চোখে একবার উৎসর দিকে তাকিয়ে চলে যায়।উৎস ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকে।
__________________________
— “উফ জাস্ট দারুন হবে দেখেই বোঝা যাচ্ছে।”
ইশুর কথায় মুচকি হাসে সামু।ইশুর নুডুলস খেতে ইচ্ছে করছিল।তাই সামু আর দেরি না করে নুডুলস রান্না করে।সামু দাঁত কেলিয়ে ইশুকে বলে,
— “নে টেস্ট কর।”
ইশু কিছু একটা ভেবে বলে,
— “ভাইয়া কোথায়? ওকে না দিয়ে খেলে তারপর আবার বলবে যে আমরা একা একা খেয়ে নিয়েছি।”
— “হয়তো নিজের রুমে আছে।”
অনেক ভেবে কথাটি বলে সামু।ইশু দাঁত কেলানো হাসি দিয়ে বলতে থাকে,
— “তুই একটু ভাইয়াকে ডেকে নিয়ে আসবি প্লিজ।আমার অনেক খিদে পেয়েছে,খাওয়া শুরু করে দেবো।”
ইশু সৌজন্যতার হাঁসি দেয়।সামু সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে সোজা উৎসর রুমের সামনে দাঁড়ালো।সাহস সঞ্চয় করে দরজায় টোকা দিয়ে বলে উঠে,
— “আসবো?”
বিপরীতে ভেতর থেকে কোনো শব্দ এলো না।সামু মুখে বিরক্তিকর ভাব ফুটিয়ে তুলে পুনরায় দরজায় টোকা দিয়ে বললো,
— “আসবো?”
কিছুক্ষণ পর ভেতর থেকে চাপা হাসির শব্দ শোনা গেল।ভেসে আসলো কথাটি,
— “এসো।”
সামু ভেতরে ঢুকে দেখলো উৎস চেয়ারে বসে হাসছে।সামু ভ্রু কুঁচকে উৎসকে জিজ্ঞাসা করলো,
— “হাসছেন কেন?”
উৎস মুখে কিঞ্চিত হাসি ফুটিয়ে তোলে বলতে লাগে,
— “এই যে তোমাকে এতসময় দাঁড় করিয়ে রাখলাম বাইরে, বিরক্ত হওনি বুঝি?”
— “ওহ তারমানে আপনি এসব ইচ্ছে করেই করেছেন।হু আমি কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছিলামো।এসব আপনার দ্বারাই সম্ভব।”
নাক ছিটকিয়ে বলে উঠে সামু।উৎস নিজের ভেতরে পুষে রাখা হাসিটা চাপা দিয়ে গম্ভীর কন্ঠে সামুকে বলে উঠে,
— “তা ম্যাডাম কি উদ্দেশ্যে এখানে এসেছেন বলে ফেলুন।”
সামু রাগান্বিত কন্ঠে বলতে থাকে,
— “আমার কোনো উদ্দেশ্য নেই।আমি জাস্ট আপনার ঘাড় মটকাতে এসেছি।নাও হ্যাপি?”
উৎস দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বলে উঠে,
— “কী বলার জন্য এসেছো বলে ফেলো।”
সামু এবার সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলতে লাগলো,
— “নুডুলস রান্না করেছি আমি।নিচে আসুন!এসে খেয়ে যান।”
উৎস ভ্রু কুঁচকে সামুকে প্রশ্ন করে উঠে,
— “তুমি রান্না করতে পারো?”
সামু আমতা আমতা করে বলে,
— “হ্যা..হ্যা পারি তো।না পারার কি আছে?”
উৎস সন্দিহান চোখে সামুর দিকে তাকিয়ে বলতে থাকো,
— “আমার তো মনে হয়না পারো বলে।আর তোমার রান্না করা নুডুলস ও নিশ্চয়ই খেতে অনেক বাজে হবে!১০০% শিউর।”
সামু কথাটি শুনে ফুঁসে ওঠে।রেগে উৎসকে বলতে থাকে,
— “আপনি আগে না খেয়েই বলে দিচ্ছেন বাজে হবে।আগে খেয়ে দেখুন তারপর বলবেন বাজে হয়েছে নাকি।আসুন!”
উৎস মুচকি হাসলো।
____________________________
— ধুর ভাল্লাগে না। কোথায় ভাবলাম চোর ধরবো তা নয়। উল্টো তাকে চিনতেই পারলাম না।”
মিহুকে একা একা বিরবির করতে দেখে এগিয়ে এলো মিতু।মিতু ভ্রু কুঁচকে মিহুকে প্রশ্ন করলো,
— “কিরে একা একা বিরবির করছিস কেন?”
মিহু আমতা আমতা করে বললো,
— “কই না তো।তুই ভুল দেখেছিস।”
মিতু মিহুর পাশে বসে বলে উঠে,
— “ওহ আচ্ছা। বাই দ্যা ওয়ে একটা কথা জিজ্ঞেস করি?”
মিহু আনমনে বলে উঠে,
— “হু কর!”
মিতু মুচকি হেসে মিহুকে বলে,
— “প্রেমে পড়েছিস?”
মিহু অবাক চোখে মিতুর দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,
— “মানে? হঠাৎ করে এরকম কথা বলছিস কেন?”
প্রতিউত্তরে মিতু বলে,
— “না মানে আজকাল তোকে দেখে এরকমই মনে হয়। আচ্ছা আমি এখন পড়তে বসি।”
মিতু পড়তে চলে যাওয়ার পর মিহু গালে হাত দিয়ে ভাবতে থাকে,
— “আমি তাকে পাইনি তো কি হয়েছে?আমার কেন জানিনা মনে হচ্ছিল সে আমার আশেপাশেই ছিল। কিন্তু কে? আমাকেই বা কেন শাড়ি আর অর্নামেন্টস পাঠালো।কে সে?তাকে তো খুঁজে বের করতেই হবে।যে করেই হোক!”
_____________________
— “ভাইয়া খেয়ে বল তো কেমন হয়েছে?”
দাঁত কেলিয়ে উৎসকে বলে উঠে ইশু।উৎস নুডুলস খাওয়া শুরু করলো।সামু ভ্রু কুঁচকে উৎসকে জিজ্ঞেস করে,
— “এখন বলুন। কেমন হয়েছে?”
উৎস খেতে খেতে বলে,
— “একটুও ভালো হয়নি।”
ইশু ঠিক করে হেসে দেয়।উৎসর ঐ কথা শুনে সামু রেগে বলতে থাকে,
— “এতটাই বাজে যখন হচ্ছে তাহলে খাচ্ছেন কেন?”
উৎস খাওয়া ছেড়ে দিয়ে কাশতে লাগলো।পানি খেয়ে তারপর আমতা আমতা করে বলতে লাগলো,
— “এতো কষ্ট করে রান্না করলে তাই একটু দয়া করলাম আরকি।”
সামু রেগে ভেংচি কাটলো।ইশু নিজের চশমাটা ঠিক করে বলতে লাগলো,
— “তোর যে খাবারটা মন্দ লাগেনি বরং ভালো লেগেছে সেটা বললেই তো পারিস। ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বলার কি আছে?”
চলবে……