হে_সখা_মম_হৃদয়ে_রহো পর্ব-০২

0
228

#হে_সখা_মম_হৃদয়ে_রহো
#মুগ্ধতা_রাহমান_মেধা
#পর্ব ০২

এসএসসি পরীক্ষার পর প্রতিজ্ঞা যখন কলেজে ভর্তি হয় তখন সাবিহার সাথে তার পরিচয়।ধীরে ধীরে সেই পরিচয় বেস্ট ফ্রেন্ডশিপে পরিণত হয়।একজন আরেকজনের বন্ধু কম, বোন বেশি।সেই কলেজ থেকে দুইজন একসাথে,যা করে একসাথে করে,যেখানে যায় একসাথে যায়।দু’জনের বাড়িতে দু’জনেরই রোজকার আসা-যাওয়া।যখন কোনো মানুষ প্রশ্ন করে,”তোমরা কি আপন বোন?”তখন দুইজন হেঁসে জবাব দেয়,”উই আর সিস্টার ফ্রম এনাদার প্যারেন্টস।”

প্রতিজ্ঞা যখন দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়তো,তখন সংকল্প দুই সপ্তাহের জন্য দেশে এসেছিলো। প্রতিজ্ঞা জানতো সাবিহার একটা ভাই আছে,সে বিদেশে পড়াশুনা করে।কিন্তু কখনো তার প্রতি আগ্রহ জাগে নি প্রতিজ্ঞার।সে সবসময়ই পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতো,পড়াশুনায় আত্মোউৎসর্গ করতো,স্বপ্ন মেডিকেল।এসব প্রেম-ভালোবাসা তার কাছে মোহ মনে হতো।একটা সময় পরে মোহ কেটে যাবে।সে মনে করতো ভালোবাসা বলতে কিছু নেই,ভালোবাসা মাত্রই উপন্যাসের অলংকার।গল্পতেই ভালোবাসা শব্দের উৎপত্তি, গল্পতেই ভালোবাসা শব্দের বিনাশ।গল্পেই ভালোবাসা সুন্দর।
কিন্তু তার ভুল ভেঙ্গে যায় সংকল্প যখন দু’সপ্তাহের ছুটি শেষে আবার কানাডায় ফিরে যায়।

একদিন বিকেলবেলায় কলেজ বন্ধ থাকায় প্রতিজ্ঞা ঘুমোচ্ছিলো।ফোনের রিংটোনের ছন্দে তার ঘুম ভাঙ্গে।দেখতে পায় সাবিহা কল করেছে।সে ঘুমের মধ্যেই কল রিসিভ করে কানে ফোন ধরে চোখ বুঝে থাকে।ঐভাবেই খেটখেট করে বলে,
“ফকিন্নি তোর কি আমি ঘুমালেই ঘেউ ঘেউ করা লাগে?”
“তুই সারাদিন মরার মতো পরে ঘুমাস কেন?এই ওয়েট ওয়েট তুই কি বললি?আমি ঘেউ ঘেউ করি?আমি কু ত্তা?তুই এটা বলতে পারলি আমাকে?”
চোয়াল ঝুলিয়ে বলে সাবিহা।

সাবিহার অভিমানী কন্ঠ শ্রবণ হতেই প্রতিজ্ঞার অধর প্রসারিত হলো। সে দুষ্টুমি করে বললো,
“যা সত্যি তাই বলেছি।”

সাবিহাও কম যায় না।সে বাঁকা হেসে বলে,
“রতনে রতন চিনে।এক কু ত্তা আরেক কু ত্তা রে চিনে।”

প্রতিজ্ঞা শব্দ করে হেসে ফেলে।ভণিতা করে বলে,
“বেয়াদব,সম্মান দিয়ে কথা বল।”
“অ্যাহ!আসছে আমার প্রাইম মিনিস্টার, তাকে সম্মান দিবো।”

প্রতিজ্ঞা উঠে বসে।গাল ফুলিয়ে শ্বাস ফেলে।সে জানে সাবিহা বহুত কথা বলে।এখন শুরু করলে বিকাল পেরিয়ে সন্ধ্যা গড়াবে,সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত শেষ হয়ে যাবে।তবুও তার মুখ বন্ধ হবে না।সে সাবিহাকে জিজ্ঞাসা করে,
“ঘেউ ঘেউ করা বাদ দিয়ে কেনো ফোন দিছিস সেটা বল।”
“তুই তো শুরু করলি।আমাকে সুযোগ দিছিস কিছু বলতে?”
“আচ্ছা বাবা,আমার সাব্বু বেইব,রাগ করে না।,কারণ বল।”
“মা বলেছে তোকে এখনই বাড়িতে আসতে।”
“এখন?কেনো?”
“জানি না।”
ভাব নিয়ে বলে ফোন কেটে দেয় সাবিহা।প্রতিজ্ঞা আবার কল দিলেও সে রিসিভ করে না।তাকে পরোক্ষভাবে কু ত্তা বলায় এটা প্রতিজ্ঞার শাস্তি।

অগত্যা প্রতিজ্ঞা নিজের স্বাদের ঘুম ছেড়ে ফ্রেশ হয়ে সাবিহাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হয়।যাওয়ার সময় তার ভাবিকে বলে যায়।

সাবিহাদের বাড়ির বাহিরে বিশাল বাগান করা,ঐখানে বসার জায়গা করা আছে।প্রতিজ্ঞা বাড়িতে প্রবেশ করতেই বাগানের ঐ দিকটায় রাহিব-সাহিবকে দেখতে পায়।একজন উঠবস করছে,আরেকজন হেঁসে লুটোপুটি খাচ্ছে। দু’জন জমজ হওয়ায় প্রতিজ্ঞা বুঝতে পারে না কে কোনটা!
প্রতিজ্ঞা ওদের কাছে গিয়ে ভ্রু-কুটি করে জিজ্ঞাসা করে,
“কিরে তোদের এই অবস্থা কেন?আর তোরা কে কোনটা?”

রাহিব কান ধরে উঠবস করছিলো।আর সাহিব হেঁসে লুটোপুটি খাচ্ছিলো।প্রতিজ্ঞার সামনে নিজের মানসম্মান ধূলিসাৎ হওয়ার ভয়ে রাহিব পট করে বলে উঠলো,
“আমি সাহিব,ও রাহিব”

তখন সাহিব রাহিবের দিকে কটমট করে তাকিয়ে বলে,
“প্রতিজ্ঞা আপু ওর কথা বিশ্বাস করো না,আমি সাহিব।ও পাশের বাড়ির মিলিকে লাভ লেটার দেওয়ায় মিলি এসে মায়ের কাছে ওর নামে নালিশ করেছে,চিঠিটা দেখিয়েছে।তাই মা ওকে শাস্তি হিসেবে এক হাজার বার উঠবস করতে বলেছে।এতোক্ষণে মাত্র চারশত ছিয়াশি বার উঠবস করেছে।”

কথাটা শুনতেই প্রতিজ্ঞা অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো।সে জানে এই দুইজন ব*দের হাড্ডি।শয়*তানও এদের কাছে হার মানতে বাধ্য।দুইজন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র,পড়াশোনার নামে অষ্টরম্ভা।শিক্ষকরা এদের শ*য়তানিতে বিরক্ত।প্রায় প্রতিদিনই ওদের নামে নালিশ আসে।শয়*তানি বুদ্ধিতে মাথা ভর্তি।

প্রতিজ্ঞাকে সাহিব সব বলে দেওয়ায় রাহিব সাহিবের দিকে কটমট দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।দাঁত কিড়মিড়িয়ে বললো,

“অনেক মজা পাচ্ছিস, তাই না?এখান থেকে শুধু বের হই।তারপর আমিও মা কে বলে দিবো তুই আজকে বাংলা ম্যামের ব্যাগে প্লাস্টিকের সাপ রেখে পুরো ক্লাসের সামনে ভয় দেখিয়েছিস।”

সাহিবের চেহারা মুহুর্তেই পরিবর্তন হয়ে গেলো।চেহারায় আঁধার ঘনিয়ে এলো যেনো।রাহিব হাসছে।সাহিব করুণ কন্ঠে বললো,
“ভাই না ভালো,তোর আর উঠবস করা লাগবেনা।মা কে আমি বলবো তুই পুরো এক হাজার বারই উঠবস করেছিস।তাও মা কে বলিস না।মা জানলে আমার একটা হাড্ডিও জায়গায় থাকবে না।”
“পথে আসো বাছাধন।”
রাহিব বাঁকা হেসে সাহিবকে এই কথা বলে নাচতে নাচতে বাড়ির ভেতরে চলে যায়।সাহিব চোয়াল ঝুলিয়ে রাহিবের যাওয়ার পানে চেয়ে আছে।মনে মনে ভাবছে,এর উশুল আমি নিবোই।

প্রতিজ্ঞা এতোক্ষণ দুই ভাইয়ের কান্ড হা করে দেখছিলো।এই দুই ভাইয়ের কান্ডকারখানা সম্পর্কে সে অবহিত।তাই বলে ম্যামের ব্যাগে সাপ!

সে এসব বাদ দিয়ে বাড়ির ভেতর চলে যায়।রান্না ঘরে যেতেই জাহানারা বেগম আর মাধুরি বেগমের দেখা পায়।দু’জন খুবই ব্যস্ত।প্রতিজ্ঞা বুঝলো বাড়িতে হয়তো কিছু আছে,নাহয় এই বিকেল বেলাতেও রান্নাঘরে এতো আয়োজন।কিন্তু সে এটা নিয়ে মাথা ঘামায় না।দুই জা-ই প্রতিজ্ঞাকে দেখে বিপরীতে হাসে।
জাহানারা বেগম বললেন,
“তুই এতোক্ষণে এসেছিস?সেই কখন আসতে বললাম।”

প্রতিজ্ঞা বললো,
“এসেছি অনেক্ষণ।বাহিরে বিচ্ছু দুটোর সাথে দেখা,সময় হাওয়া।কেনো আসতে বলেছো?”

জাহানারা বেগম বললেন,
“পায়েস রান্না করেছি।তোর তো আমার হাতের পায়েস পছন্দ।”
পায়েসের কথা শুনতেই প্রতিজ্ঞা আনন্দিত হয়ে যায়।

বিচ্ছু দুটোর কথা শুনেই মাধুরী বেগম চিন্তিত হয়ে বললেন,

“বিচ্ছু দুটোর বড্ড বাড় বেড়েছে।জানো কি করেছে?পাশের বাড়ির মিলিকে চিঠি দিয়েছে।এই বয়সে প্রেমপত্র?বুঝতে পারছো?কয়েকদিন আগে বাংলা পড়া পারে নি বলে ম্যাম নাকি মেরেছিলো।এরজন্য গত পরশুদিন বাংলা ক্লাসে পঁচা ডিম ফাটিয়েছে।ম্যাম ফোন দিয়ে কতগুলো কথা শুনিয়েছে।এদের নিয়ে আমি আর পারি না।”

প্রতিজ্ঞা এতোক্ষণে হিসাব মিলাতে পারলো।বাংলা ম্যামের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই নকল সাপ রেখেছে।এদের মাথায় কুটিল বুদ্ধি আসে কোথা থেকে বুঝতে পারলো না প্রতিজ্ঞা।

এর মধ্যেই জাহানারা বেগম মাধুরীকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
“আহা মাধুরি,ওরা ছেলেমানুষ।বড় হলে ঠিক হয়ে যাবে।চিন্তা করিস না তো।”

“ভাবী তুমি ওদের মাথায় তুলছো।দিন দিন বাঁদরামি বেড়েই যাচ্ছে।কোনো একদিন দেখবে মাথায় উঠে বাঁদর নাচ নাচছে।”

মাধুরী বেগমের কথা শুনেই প্রতিজ্ঞা হেসে উঠলো।
জাহানারা বেগমও হাসলেন।প্রতিজ্ঞাকে বললেন,
“সাব্বুর রুমে গিয়ে বস।আমি পায়েস পাঠাচ্ছি।”

প্রতিজ্ঞা মাথা নেড়ে সাবিহার রুমের দিকে যায়।সাবিহার রুম দ্বিতীয় তালায়।সিড়ি বেয়ে সাবিহার রুমে প্রবেশ করতে নিলেই কোণার রুম থেকে পুরুষালি কন্ঠে গানের সুর ভেসে আসে।সুরটা মোহনীয়,প্রতিজ্ঞা সুরের উৎস খুঁজতে গিয়ে আবিষ্কার করে একজন পঁচিশ-ছাব্বিশ বয়সী যুবক গিটার হাতে গান গাইছে……..

Chaahe kuch na kehna
Bhale chup tu rehna
Mujhe hai pata, tere pyar ka
Khamosh chehra, ankhon pe pehra
Khud hai gawaah, tere pyar ka

Teri jhuki nazar, teri har ada
Mujhe keh rahi hai ye dastaan
Koi shaqs hai jo ki in dinon
Tere zehan-o-dil pe hai chha gaya
Teri jhuki nazar, teri har ada
Mujhe keh rahi hai ye dastaan……..

প্রতিজ্ঞা ঘরের বাহির থেকেই এক ধ্যানে পুরোটা গান শুনলো।কখন যে গান শেষ হলো সে টেরও পেলো না।দরজা খোলা থাকায় সংকল্প গান শেষে উঠে দাঁড়াতেই দেখতে পায় কেউ একজন ঘরের বাহিরে দাঁড়ানো পিঠ পিছ দিয়ে।কৌতুহলবশত সে দরজার দিকে এগিয়ে যায়।দেখতে কায় একটা অপরিচিত মেয়ে দাঁড়ানো। মেয়েটাও এতোক্ষণে তাকে দেখে ফেলেছে।প্রতিজ্ঞা কি বলবে বুঝতে পেলো না।এভাবে অপরিচিত কারোর ঘরের বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকা শোভা পায় না।সে যথেষ্ট ভালো ব্যক্তিত্বের অধিকারী একটা মেয়ে হয়ে এই কাজটা কিভাবে করতে পারলো,নিজেই বুঝে উঠতে পারলো না।নিজের কাজে নিজেই লজ্জিত সে।

সংকল্প কপাল সংকুচিত করে প্রশ্নার্ত দৃষ্টিতে চেয়ে আছে।গম্ভীর কন্ঠে জিজ্ঞাসা করলো,
“কে তুমি?এখানে কি করছো?”
প্রতিজ্ঞা আমতা আমতা করে বলে,
“আমি প্রতিজ্ঞা….
প্রতিজ্ঞাকে বাক্য শেষ করতে না দিয়েই সংকল্প ধমকে উঠলো। বললো,
” কে তুমি জিজ্ঞাসা করেছি।তোমাকে কিছু প্রতিজ্ঞা করতে বলিনি,রাবিশ!”

প্রতিজ্ঞা চোয়াল ঝুলিয়ে অসহায় দৃষ্টিতে সংকল্পের চোখে চোখ রেখে বললো,
“আমার নাম-ই প্রতিজ্ঞা।”

সংকল্প ভ্রুযুগল প্রসারিত করলো।দৃষ্টি এখনো প্রশ্নার্ত রেখেই বললো,
“ওহ!আমার ঘরের সামনে কি?এই বাড়িতেই বা কেনো?”
“স্যরি।আমি সাবিহার ফ্রেন্ড।এই বাড়ির সবাই আমাকে চেনে।আমি আসলে গানের সুর শুনতে পেয়ে চলে এসেছি।এই বাড়িতে কেউ এতো ভালো গান করে আমি জানতাম না।আপনাকেও আমি চিনি না।আমার ম্যানারলেসের মতো কাজের জন্য আমি আবারো স্যরি।কিছু মনে করবেন না।”

শালীনতার সাথে সাবলীলভাবে ভদ্র কন্ঠে বলে প্রতিজ্ঞা চলে যায় সাবিহার রুমে।সংকল্প অবাক হয়,এই যুগেও এমন শালীন,ভদ্র মেয়ের অস্তিত্ব আছে।দ্বিধাহীনভাবে দুঃখিত বলে চলে গেলো।

প্রতিজ্ঞা সাবিহার রুমে গিয়ে ধপাশ করে বিছানায় বসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। সাবিহা তখন মোবাইলে ব্যস্ত।স্ক্রিণে চোখ রেখেই সাবিহা বললো,
“কি রে তোর এতোক্ষণ লাগলো আসতে?”

সাবিহার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে প্রতিজ্ঞা প্রশ্ন করলো,
“কর্ণারের রুমের ঐ ছেলেটা কে?গান করছিলো যে!”
“আমার বড় ভাই।তুই দেখে ফেলেছিস?” মোবাইল রেখে তড়িৎ গতিতে উঠে বসে প্রতিজ্ঞার কাছে এসে বলে।

“তোর ভাই এসেছে বলিস নি যে?” স্বাভাবিকভাবেই বললো প্রতিজ্ঞা।
“কাল রাতে এসেছে।ভেবেছিলাম তোকে সারপ্রাইজ দিবো।ধ্যাৎ!” ঠোঁট উল্টিয়ে বলে সাবিহা।
“তোর ভাইয়ের সাথে আমার সারপ্রাইজড হওয়ার কি সম্পর্ক?” প্রশ্নার্ত দৃষ্টি প্রতিজ্ঞার।

সাবিহা চমৎকার হেসে বলল,
“তোকে বলেছিলাম না তোকে আমার ভাইয়ের বউ করবো!”

প্রতিজ্ঞা চকিতে তাকায় সাবিহার দিকে।সাবিহা হাসে।প্রতিজ্ঞা বিরক্তি নিয়ে বলে,
“তুই আসলেই একটা পা*গল।”

সংকল্প যতদিন দেশে ছিলো ততদিন কোনো না কোনোভাবে ওদের দেখা হয়েছিলো।সংকল্প আসায় বাড়িয়ে পার্টির আয়োজন রাখা হয়েছিলো,বাড়ির সবাই পিকনিকে গিয়েছিলো,কয়েকদিন সংকল্প বাড়ির বাচ্চাদের নিয়ে লং ড্রাইভে গিয়েছিলো।সবখানেই সাবিহা জোর করে প্রতিজ্ঞাকে নিয়ে যায়।সংকল্পের সাথে স্বাভাবিক কথা হয় তার।ধীরে ধীরে প্রতিজ্ঞা নিজের মধ্যে পরিবর্তন দেখতে পায়।কারণে-অকারণে সংকল্পের কথা মনে পড়ে।সংকল্পকে নিয়ে শুধুশুধুই ভাবতে বসে।তার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে।তার কল্পনাতেও সংকল্প আসে।পড়াশোনায়ও মনোযোগ দিতে পারে না।এমন তার কখনো হয় নি।প্রথমে সে পাত্তা দেয় নি।অনেক বুঝদার হওয়ায়,সে ভেবে নেয় এটা উঠতি বয়সের দোষ।এই বয়সে এমন হতেই পারে।কিন্তু অনেকদিন যাওয়ার পরেও যখন দেখে কিছুই ঠিক হচ্ছিলো না তখন সে সাবিহার কাছে সব বলে।ততদিনে সংকল্প কানাডায় চলে গেছে।

সাবিহা এসব শোনার পর তো খুশীতে আত্মহারা হয়ে বলে,
“তোকে একটা খারাপ ভাইরাস আক্রান্ত করেছে রে,ভালোবাসা নামক ভাইরাস।এর থেকে তোর রেহাই নেই।যে একবার এই ভাইরাসের ফাঁদে পড়েছে,তার বিনাশ নিশ্চিত।এই ভাইরাসের জীবাণুর নাম আফনান আহমেদ সংকল্প।আহা!প্রিতুরেএএএ তুই আমার ভাবী হবি রেেেেেেে।”

প্রতিজ্ঞা অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।সে নিজেও বুঝেছে সে কঠিন প্রেমরোগে আক্রান্ত।তার ভুল ভাঙ্গে,ভালোবাসা শুধু গল্পেই সীমাবদ্ধ নয়,আকাশে-বাতাসে সবখানে ভালোবাসারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।শুধু কুড়িয়ে নেওয়ার অপেক্ষা!তখন থেকেই শুরু হয় প্রতিজ্ঞার এক পাক্ষিক গোপন ভালোবাসার যাত্রা।

#চলবে..