হে_সখা_মম_হৃদয়ে_রহো পর্ব-৩৫

0
132

#হে_সখা_মম_হৃদয়ে_রহো
#মুগ্ধতা_রাহমান_মেধা
#পর্ব ৩৫

আকাশের গাঢ় নীল রঙটা আজ সকাল থেকেই ছাই রঙা হয়ে আছে।আকাশ মেঘলা।একটু পরপর গুড়ুম গুড়ুম শব্দ হচ্ছে।আকাশ যেনো কাউকে চুপিসারে ডাকছে।মৃদু স্বরে ডেকে যাচ্ছে সকাল থেকেই।তবে বৃষ্টির নাম নেই।সে হয়তো অভিমান করে বসে আছে।তবে ঠান্ডা বাতাসে মুগ্ধ ধরণীতল।শীতল স্নিগ্ধ বাতাস একটু পরপর ছুঁয়ে দিচ্ছে গা।শিউরে উঠছে দেহ।আজ একটা বিশেষ দিন।সেই সুবাধে শাহআলম সাহেব পার্টির আয়োজন করেছেন।অনেক আত্মীয়স্বজন,চেনাপরিজন মানুষকে নিমন্ত্রণ করেছেন।শাহআলম সাহেব ছাড়া কেউ জানে না আজ এই ছোট অনুষ্ঠান রাখার কারণ কি!তাকে জিজ্ঞাসা করলেই গম্ভীর স্বরে জবাব দেন,
“আমার ইচ্ছে হয়েছে,তাই!”

শেষ! কেউ তার মুখের উপর কথা বলতে পারে না।তার কথামত সব আয়োজন হতে থাকে।

অন্যদিকে,আজ সংকল্প ও প্রতিজ্ঞার জীবনের খুব বিশেষ একটা দিন।তবে কেউ কাউকে প্রকাশ করে নি।দু’জনই নিজ নিজ দিক দিয়ে চুপ করে আছে।দু’জনই আলাদা আলাদা সারপ্রাইজের পরিকল্পনা করেছে।তবে কেউ কারোরটা জানে না।ধরা দেয় নি।নিজেরা নিজেদের মতো করে পরিকল্পনা করছে।

ঘড়ির কাঁটায় রাত সাতটা!আহমেদ মেনশনের ড্রয়িংরুম বিভিন্ন রঙের আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে।সকল মেহমান উপস্থিত।প্রতিজ্ঞার পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত এখানে।মৃদু আওয়াজে মিউজিক বাজছে।পার্টিতে ড্রেসকোড ছিলো।ছেলেরা স্যূট,মেয়েরা শাড়ী ব্যতীত অন্য কিছু পরতে পারবে না।সবাই নিয়ম মেনেই এসেছে।

প্রতিজ্ঞা আজ কালো রঙের জরজেটের শাড়ী পরেছে।ফর্সা গায়ে রঙটা যেনো মানিয়েছে।চুল স্বভাবতই ছেড়ে রাখা।সংকল্প তো প্রথম দেখেই বুকের বা পাশে হাত দিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়েছিলো।অজ্ঞান হওয়ার অভিনয় করছিলো।

“বউ চলো আজকে আবার বিয়ে করে নিই।”

সংকল্পের ভণিতায় প্রতিজ্ঞা চোখ গরম করে তাকালে সে আবার বলে,
“আহ বউ,ওভাবে তাকিয়ো না।বুকে এসে লাগে তো।
আসো বউ আদর করে দিই তোমাকে।”

প্রতিজ্ঞা কপট রাগ দেখায়।
“বাড়িভর্তি মানুষ আপনি আসছেন আদর করতে!অ সভ্য পুরুষমানুষ।”

সংকল্প ঠোঁট উল্টায়।
“যার জন্য অ সভ্যতামো করি,সেই বলে অ সভ্য।
হুহ!এখন থেকে ভালো হয়ে যাবো।”

সংকল্পের গাল ফোলানো দেখে চমৎকার হাসে প্রতিজ্ঞা।বরের সামনে দাঁড়িয়ে তার গলা জড়িয়ে ধরে।আহ্লাদে বলে,
“ওলে বাবা,বাচ্চাটা রাগ করেছে?”

সংকল্প বউয়ের কোমড় বাহুবন্ধনীতে আবদ্ধ করে।মাথা উপর নিচ করে।প্রতিজ্ঞা ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে বলে,
“আহারে বাচ্চাটা।আসো আসো কিসি দিয়ে দেই।রাগ চলে যাবে।”

বলে সংকল্পের ঠোঁটে টুপ করে আলতো পরশ দেয়।তারপর হেসে বলে,
“রাগ কমেছে কি?”
সংকল্প ডানে বায়ে মাথা ঘোরায়।মানে “না!”
বাচ্চাদের মতো করে বলে,
“আরো চাই।”

প্রতিজ্ঞা ধাক্কা দিয়ে দূরে সরে যেতে নিলেই সংকল্প আঁটকে দেয়।বাঁধন দৃঢ় করে।নে শা ক্ত চোখে তাকিয়ে মা তা ল করা ভারী কন্ঠে বলে,
“এসেছো নিজ ইচ্ছায়,যাবে আমার ইচ্ছায়!”

———–
পার্টিতে সকলে উপস্থিত।শাহআলম সাহেব কিছু ঘোষণা দিবেন বলে জানিয়েছেন।সবাই অধীর আগ্রহে বসে আছে আজকে পার্টি রাখার কারণ কি!

শাহআলম সাহেব প্রথমে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন।তারপর বলতে শুরু করলেন,
“লেডিস এন্ড জেন্টলম্যান,আজকে আমার বাড়িতে আপনাদের সবার উপস্থিতির জন্য আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।আশা করি,সবসময় এমনভাবেই আমার পাশে থাকবেন।আমার অন্তঃস্থল থেকে আপনাদের জন্য ভালোবাসা কামনা করছি।

সবাই জিজ্ঞাসা করেছেন আজকে পার্টি রাখার কোনো বিশেষ কারণ আছে কিনা!এটা কি কোম্পানি রিলেটেড?আসলে না এটা কোম্পানি রিলেটেড না।
এই পার্টিটা আমার তরফ থেকে আমার ছেলে ও আমার বউমাকে তাদের বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া সারপ্রাইজ।”

শেষ বাক্যে সবাই হাততালি দিতে শুরু করলো।বাড়ির সবাই থ হয়ে আছে।প্রতিজ্ঞা-সংকল্প তো বিস্ময় কাটাতেই পারছে না।শাহআলম সাহেব তারিখ মনে রেখেছেন,তাদের জন্য পার্টি রেখেছেন।বিশ্বাসই হচ্ছে না।দু’জনই দু’জনের দিকে বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে।

সংকল্প অসহায় চোখে তাকিয়ে বললো,
“আমার আগে বাবা সারপ্রাইজ দিয়ে দিলো?বাবা এতো ফার্স্ট কেনো?”

প্রতিজ্ঞা হয়তো শুনতে পায় নি।সে তো হতবিহ্বল হয়ে আছে শ্বশুরের কান্ডে।শ্বশুরমশাই মনে রেখেছেন বিশ্বাসঃ হচ্ছে না।কেমন জানি অদ্ভুত শান্তি কাজ করছে।সবাই তাকে ভালোবাসে,এমন অনুভব হচ্ছে।প্রতিজ্ঞার নিজেকে ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে,যার স্বামী,শ্বশুর,শাশুড়ী সবাই তাকে ভালোবাসে।সত্যিই কপাল করে জন্মেছে সে।

সবার হাততালি শেষ হলে শাহআলম সাহেব আবার বলতে শুরু করেন,
“আজকে আমার ছেলে আফনান আহমেদ সংকল্প এবং বউমা প্রতিজ্ঞা আহমেদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী।আপনারা সবাই ওদেরকে মন থেকে আশির্বাদ করবেন,যেনো সারাজীবন ওরা সুখে থাকতে পারে।
আজ থেকে প্রায় দুই বছর আগে আমার একটা হঠকারিতায় আমার পরিবারে বিষাদ ছড়িয়ে পড়েছিলো।আমি আজও তার জন্য সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী,আমি আজও অনুতপ্ত।একটা হঠকারিতায় অনেক বড় ঝড় এসেছিলো।তবে এখন আলহামদুলিল্লাহ ঝড় শেষ হয়ে গেছে।আজকের এই ছোট্ট আয়োজন আমার হঠকারিতার ছোট্ট একটা প্রায়শ্চিত্তমাত্র।

যাইহোক,সবাই ওদের জন্য দোয়া করবেন।ধন্যবাদ।”

আবারো হাততালির শব্দে মুখরিত হলো আহমেদ মেনশন।
সবাই আবার নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায়।শাহআলম সাহেব একপাশে চলে গেলে সংকল্প প্রতিজ্ঞা তার কাছে যায়।শাহআলম সাহেব তাদের দিকে দৃষ্টি ফেললে প্রতিজ্ঞা উনার এক হাত জড়িয়ে বললো,
“থ্যাংক ইয়্যু আব্বু মনে রাখার জন্য।”

শাহআলম সাহেব হাসি দিয়ে প্রতিজ্ঞার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
“ওয়ালকাম মা।”
“আমরা তোমার উপর মোটেও রেগে নেই আব্বু। তুমি ভুল বুঝো না।অনুতপ্ত হয়ো না।”

প্রতিজ্ঞার কথার বিপরীতে শাহআলম সাহেব সংকল্পের দিকে তাকান।সংকল্প এতোক্ষণ তার দিকেই তাকিয়ে ছিলো।চোখাচোখি হয়ে যায় দু’জনের।সব ঠিক থাকলেও বাবা-ছেলের এই দূরত্বটা রয়ে গেছে।প্রতিজ্ঞা কিছু একটা ইশারা করলে সংকল্প বাবা ছেলের দূরত্ব ঘুচিয়ে দেয়।জড়িয়ে ধরে বাবাকে।শাহআলম সাহেবও পরম স্নেহে আগলে নেন ছেলেকে।মৌনতা পালন করে দু’জনেই।মৌনতা ভাঙ্গে সংকল্প।
“এখনো অনুতপ্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই।ভাগ্যে যা আছে তাই হবে।আমরা কেউ ভাগ্যের বাহিরে নই।পুরনো সব ভুলে যাও।
আর আমি তোমাকে থ্যাংক ইউ বলবো না,কারণ তুমি আমার সব প্ল্যান ভেস্তে দিয়েছো।”

সংকল্পের ঠোঁট উল্টিয়ে বলা শেষ কথায় প্রতিজ্ঞা, শাহআলম সাহেব দু’জনেই হেসে ফেলেন।

——
রাতের আঁধারে পিচঢালা রাস্তার উপর দিয়ে সাই সাই করে গাড়ি ছুটে চলেছে।সুযোগ বুঝে সংকল্প প্রতিজ্ঞাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছে।পালিয়ে এসেছে বলা চলে।ঘড়ির কাঁটা দশটার ঘরে।প্রতিজ্ঞা অনেকবার জিজ্ঞাসা করেছে ” কোথায় যাচ্ছি” তবে বিপরীত পাশ থেকে কোনো উত্তর পায় নি।একপর্যায়ে হাল ছেড়ে দিয়েছে সে।জানালার বাহিরে মুখ করে তাকিয়ে রাতের ব্যস্ত শহর অনুভবে ব্যস্ত সে।

গাড়ি এসে থামে সুউচ্চ ভবনের সামনে।প্রতিজ্ঞা জায়গাটা চেনে।আগেও এসেছে এখানে।ভ্রু কুঁচকায় সে।গাড়ি থেকে না নেমেই বলে,
“এখানে কেনো এসেছি?”
“ঘুমাতে!”

গাড়ি থেকে নামতে নামতে বলে সংকল্প।তার ত্যাড়া উত্তরে ভ্রু প্রসারিত করে তাকায় প্রতিজ্ঞা।বিরক্তির সহিত সেও গাড়ি থেকে নামে।সংকল্প ভবনের ভেতরের দিকে হাঁটা শুরু করলে প্রতিজ্ঞাও পা বাড়ায়।
“বাড়িতে কি ঘুমানোর জায়গা কম ছিলো যে আপনাকে ফ্ল্যাটে আসতে হলো?”

সংকল্প দাঁড়িয়ে যায়। পেছনে ফিরে বউয়ের দিকে তাকায়।সম্মুখীন হয় কৌতুহলী এক জোড়া চোখের।রাগী চোখে তাকিয়ে বলে,
“মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দিবো,চুপ।”

প্রতিজ্ঞা গাল ফোলায়,ঠোঁট উল্টায়।সংকল্প আবার হাঁটা শুরু করে।হাঁটতে হাঁটতে কাউকে কল দেয়।কি যেনো কথা বলে প্রতিজ্ঞা শুনতে পায় না।

ফ্ল্যাটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে সংকল্প-প্রতিজ্ঞা।সংকল্প বেল বাজালে প্রতিজ্ঞা ফটফট কাঁদো কাঁদো স্বরে বলে,
“বেল বাজালেন কেনো?ভেতরে কে আছে?আপনি কি আরেকটা বিয়ে করলেন?আপনার আরেকটা বউ আছে?আমাকে ঠকালেন?এই আপনার ভালোবাসা, ছিহ সংকল্প ছিহ।আমার বিবাহ বার্ষিকীতে আপনি আমার সতীনের সাথে দেখা করাতে এনেছেন?দিস্ ইজ নট ফেয়ার সংকল্প।”

প্রতিজ্ঞার ভণিতা করে বলা কথা সংকল্প মুখ কুঁচকে তাকিয়ে আছে প্রতিজ্ঞার দিকে।মুখ খিঁচিয়ে বলে,
“ওভার এক্টিং বেশি হয়ে যাচ্ছে না?”
“বেশি হয়ে গেছে বুঝি?”
“অনেকটাই।”
“নেক্সট টাইম খেয়াল রাখবো।”

ঠোঁট উল্টিয়ে বলে প্রতিজ্ঞা।তখনই ফ্ল্যাটের দরজা খুলে যায়।ওপাশে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিতে দেখে প্রতিজ্ঞা চমকায়।বিস্মিত হয়ে বলে,
“ফ্রাঞ্চিস ভাইয়া আপনি এখানে?”

ফ্রাঞ্চিস হাসিমুখে বলে,
“Happy Anniversary Protigga.”

প্রতিজ্ঞা বিস্ময় নিয়ে বলে,
“আপনি জানলেন কি করে?”
প্রতিজ্ঞার প্রশ্নের বিপরীতে মিষ্টি হাসে ফ্রাঞ্চিস।

সংকল্প বলে,
“তোমার এতোক্ষণ লাগলো কেনো দরজা খুলতে?”
“বাথরুমে ছিলাম।”

বোকা হেসে বললো ফ্রাঞ্চিস।সংকল্প ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বললো,
“আর এদিকে একজন তোমাকে তার সতীন বানিয়ে ফেলছিলো।”

প্রতিজ্ঞা চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে রইলো।কত সুন্দর ফ্রাঞ্চিসের সামনে তাকে লজ্জা দিলো।মনে মনে সংকল্পের গোষ্ঠীর পিন্ডি চটকালো।ঠিক করে নিলো পরে এর উশুল ঠিকই নিবে।

ফ্রাঞ্চিস সংকল্পকে হাগ করে বেরিয়ে গেলো।যাওয়ার সময় ফিসফিসিয়ে বলে গেলো,

“হ্যাভ অ্যা সুইট নাইট।মেক্ দ্য নাইট মেমোরেবল।”

সংকল্প স্মিত হাসলো।ফ্রাঞ্চিস চলে গেলে সংকল্প দরজা লাগিয়ে দেয়।প্রতিজ্ঞা আগ্রহের সাথে জিজ্ঞাসা করলো,
“ভাইয়া আপনাকে কানে কানে কি বলে গেলো?”
“কিছু না।”
“বলুন না!”
“আজকের রাতটা স্মরণীয় করতে বলে গেছে।”

সংকল্পের কথার বিপরীতে প্রতিজ্ঞা ঠোঁট উল্টিয়ে বলে,
“কিন্তু আমাদের তো প্রতিটা রাত-ই স্মরণীয়।”

সংকল্প হেঁচকা টানে প্রতিজ্ঞাকে নিজের কাছে নিয়ে আসলো।প্রতিজ্ঞা তার দু’হাত রাখলো সংকল্পের বুকে।সংকল্প ঝুঁকে বললো,
“লেটস্ মেইক দ্য নাইট মোর বিউটিফুল।”

তারপর প্রতিজ্ঞার দু’চোখ নিজের হাতের মাধ্যমে ঢেকে বেডরুমের দিকে নিয়ে গেলো।

বেডরুমে সাদা আলো নেভানো।লাল-নীল,বিভিন্ন রঙ্গের আলো দিয়ে ঘরটা সাজানো।ঘরটা বিভিন্ন ধরনের মোম, ফুল,বেলুন দিয়ে সাজানো।ফুলের গন্ধে মো মো করছে ঘরটা।সংকল্প ধীরে ধীরে প্রতিজ্ঞার চোখ থেকে হাত সরায়।
ফিসফিসিয়ে বলে,
“শুভ বিবাহ বার্ষিকী বউ।”

প্রতিজ্ঞা বিস্মিত হয়।সামনের দিকে ঘরের মেঝেতে প্রদীপ দিয়ে লেখা,
“HAPPY ANNIVERSARY PROTIGGA”

অন্য পাশে একটা ট্রি টেবিলে একটা ছোট্ট হার্ট শেপের কেক্ রাখা।তাতে ছোট ছোট অক্ষরে লেখা,
“Happy anniversary,my beautiful wife.”

প্রতিজ্ঞার চোখে খুশির অশ্রু।সে বুঝতে পেরেছিলো সারপ্রাইজ আছে।কিন্তু সারপ্রাইজটা এতো সুন্দর হবে তা ভাবতে পারে নি।আনন্দে আত্মহারা সে।প্রতিক্রিয়া করতে ভুলে গেলো সে।সত্যিই ভালোবাসা নামক বিশ্রী শব্দটা খুব সুন্দর।

সংকল্পের সাড়াশব্দ না পেয়ে পেছনে ঘুরতেই দেখতে পেলো সংকল্প হাঁটু গেড়ে মেঝেতে বসে আছে।হাতে এক তোড়া গোলাপ আর একটা ডায়মন্ডের রিং।প্রতিজ্ঞা ডান হাত দিয়ে তার বিস্ময় ঢেকে ফেলে।সে ফিরতেই সংকল্প বলে উঠে,

“Will you allow me to reign in your heart?
তোমার হৃদয়ে রাজত্ব করতে দেবো আমাকে?”

“ইয়াহ,আই উইল।”

বলে ডান হাতটা বাড়িয়ে দেয় প্রতিজ্ঞা।অনামিকায় রিং পড়িয়ে হাসি দিয়ে উঠে দাঁড়ায় সংকল্প।

প্রতিজ্ঞা আহ্লাদী হয়ে বলে,

“সেই প্রথমদিন থেকেই তো আমার হৃদয়ে রাজত্ব করছেন।আমার হৃদয়টা নিজের দখলে নিয়ে গেছেন।এখন আসছেন পারমিশন নিতে।আপনি একটা চোর,হৃদয় চোর।”

প্রতিজ্ঞার আহ্লাদে শব্দ করে হেসে ফেলে সংকল্প।জড়িয়ে ধরে নিজ প্রেয়সীকে।প্রতিজ্ঞাও আবেশে চোখ বুজে।প্রলম্বিত শ্বাস নিয়ে নিজ প্রাণপুরুষের ঘ্রাণ নিতে থাকে।

#চলবে….