হৈমন্তীকা পর্ব-২৬+২৭

0
561

হৈমন্তীকা

২৬.
তুষার হাতের বাঁধন ঢিলে করছে না। আবার শক্ত করেও ধরে নি। আলতো করে, নিবিড় ভাবে ধরে রেখেছে হাতটা। শরীর ক্ষীণ ঝুঁকিয়ে নত হয়ে বসে আছে। হৈমন্তী স্থির নয়নে চেয়ে চেয়ে দেখছে তুষারকে। মাঝে একবার ক্লিনসেভ করেছিল সে। মসৃণ গালে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি গজিয়েছে। খাঁড়া নাকটা গোলাপি হয়ে আছে। চোখ বুজে রাখা। প্রকৃতির অকৃত্রিম বাতাসে থেকে থেকে উড়তে থাকা চুলগুলো একবার ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করলো হৈমন্তীর। সে হাত বাড়ালো। পরক্ষণেই কি ভেবে আবারও জড়তা সমেত হাত নামিয়ে নিলো। পুরো করিডোরে চোখ বুলিয়ে হাত ছাড়াবার ক্ষীণ চেষ্টা করে বললো, “আর কতক্ষণ ধরে রাখবেন তুষার? আমার হাত ব্যথা করছে। ছাড়ুন!”

তুষার জবাবে নিশ্চুপ। হাতের বাঁধন বোধহয় আরও নিবিড় হলো। ছোট্ট নিশ্বাস ফেলে হৈমন্তী আবারও কিছু বলবে, তার আগে আগেই পারুর রোষপূর্ণ গলা শুনতে পেল সে, “রাস্তায় কি জ্যাম হিমু! লিফটেও ভিড়ের জন্য উঠতে পারি নাই। তোর জন্য কত কষ্ট করে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে হলো দেখেছিস?”

পারু ফোনে কি যেন করছিল। মাথা তুলে তুষারকে দেখতেই থমকে গেল। অত্যাধিক বিমূঢ়তা নিয়ে তাকালো হৈমন্তীর মুখপানে। হৈমন্তী ততক্ষণে জোড় পূর্বক হাত ছাড়িতে নিয়েছে। অপ্রস্তুত ভাব চোখে মুখে বিরাজমান। অথচ তুষার একদম স্বাভাবিক। শান্ত দৃষ্টি ফেলে হৈমন্তীকে একপলক দেখে ধীর পায়ে চলে গেল করিডোর ছেড়ে। সঙ্গে সঙ্গে হৈমন্তীর পাশে ধপ করে বসে পরল পারু। উত্তেজিত গলায় প্রশ্ন করলো,
— “হৈমন্তী, তুষার এখানে যে? আঙ্কেল জানে?”
হৈমন্তী মৃদু স্বরে জবাব দিলো, “জানে।”
— “তোকে কিছু বলে নাই?”

হৈমন্তী তখন দীর্ঘশ্বাস ফেলল। কিছু বললো না। উত্তর না পেয়ে পারু আবারও বললো,
— “তুই কি তুষারকে মেনে নিয়েছিস? তখন দেখলাম তুষার তোর হাত ধরে রেখেছে। তুইও কিছু বলছিলি না…”
পারুর কথা শেষ হওয়ার আগেই হৈমন্তী হঠাৎ বলে উঠলো,
— “আমার আর তুষারের বিয়ে হয়ে গেছে পারু।”

হৈমন্তীর এই একটি বাক্যই যথেষ্ট ছিল পারুকে চমকে দেওয়ার জন্য। চোখ বড় বড় করে কিছু সময় হা হয়েই তাকিয়ে রইলো সে। সম্বিৎ ফিরতেই মৃদু গলায় চেঁচিয়ে উঠলো,
— “মানে কি? কি বলছিস এগুলো? মাথা ঠিক আছে তোর? প্রেংক করছিস আমার সঙ্গে?”
হৈমন্তী নতজানু হয়ে বললো,
— “আমি— আমি প্রেংক করছি না।”

হতবিহ্বল পারু কিছুক্ষণ কথাই বলতে পারল না যেন। মনে মনে হিসাব মিলাতে চাইলো। ব্যর্থ হয়ে আবারও ব্যগ্র স্বরে প্রশ্ন করলো,
— “তাই বলে এত তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেললি? তোদের সম্পর্ক তো এখনো শুরুই হয়নি। আঙ্কেলকে বলেছিস বিয়ের ব্যাপারটা?”
— “না।”
বলে একটু থামলো সে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ধীর গলায় বলতে লাগলো,
— “আমি ইচ্ছে করে বিয়ে করতে চাইনি। হঠাৎ করে— কিভাবে যেন হয়ে গেছে। এখন আমি বিয়েটা অস্বীকার করতে পারছি না।”

কপালে গুটিকয়েক ভাঁজ পরলো পারুর। বাহ্যিক উত্তেজনা কমিয়ে মস্তিষ্ক শান্ত রাখার চেষ্টা করে জিজ্ঞেস করলো, “তুই কি তুষারকে ভালোবাসিস হিমু?”
উত্তর দিতে বেশ সময় লাগালো হৈমন্তী। খুব আস্তে করে জবাব দিলো,
— “মনে হয়।”
— “মনে হয় দিয়ে তুই তোর সারা জীবন পার করবি? ছেলেটাকে একবার ভালোবাসার চেষ্টা তো কর! তুষার তোকে সত্যিই ভালোবাসে, বুঝে।”

হৈমন্তীর দৃষ্টি আরও নত হলো। কাঁপা স্বরে দ্বিধান্বিত হয়ে বললো,
— “আমি জানি না আমি তুষারকে ভালোবাসি কি-না। তবে তুষার পাশে থাকলে আমি ভরসা পাই। ওর কষ্টে আমারও কষ্ট হয়। ওর পাগলামি দেখে আমার যেমন ভয় হয়, বিরক্ত লাগে, তেমনি ভালোও লাগে। ওর যত্ন গুলোও ভালো লাগে। এসব ভরসা, ভালো লাগা এগুলোকে কি ভালোবাসা বলে পারু?”

_____

পরদিন সকালে আসরাফ সাহেবকে ডিসচার্জ দেওয়া হয়। এক গাড়িতে আসলেও মেয়ের সঙ্গে একটু কথা তো দূর তাকানও নি তিনি। হৈমন্তীও দূরে, দূরে ছিল। পাছে যদি তিনি আবার চেঁচামেচি করেন? অসুস্থ হয়ে পরবেন না তখন? বিল্ডিংয়ের সামনে গাড়ি থামতেই হেমন্ত আর রাবেয়া মিলে আসরাফ সাহেবকে নিয়ে চলে যান ওপরে। হৈমন্তী আসার সময় খেয়াল করে, রাস্তার ওপারে সেদিন রাতের মতোই এখনো কয়েকটা ছেলে বাইক নিয়ে বসে আছে। দৃষ্টি তাদের হৈমন্তীর দিকেই। হৈমন্তী কপাল কুঁচকালো। সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে উঠতে ক্ষীণ ভাবনায় পরে গেল। এ ছেলেগুলো কারা হতে পারে? তাকে এমন চোখে চোখে রাখছে কেন? হঠাৎ-ই তার মস্তিষ্কে হানা দিলো, ছেলেগুলোকে সে হাসপাতালেও একবার দেখেছে। বিশেষ করে সর্বক্ষণ মেরুন রঙের টি-শার্ট পড়া ছেলেটিকে।

রাত বারোটা বারো তখন।
হৈমন্তী ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ঘুমানোর আগে একবার ফোন চেক করে নিলো সে। কাল রাত থেকে তুষারের দেখা নেই। যদিও মেসেজ করে একবার নিজের ব্যস্ততার কথা জানিয়েছে সে। তবুও আরেকটা কল কিংবা মেসেজের অপেক্ষা করছিল হৈমন্তী। না পেয়ে হতাশ মনে ফোন রেখে দিলো টেবিলে। লাইট বন্ধ করে ঘুমাতে যাবে তখনই শব্দ করে বেজে উঠলো ফোনটা। স্ক্রীনে গোটাগোটা অক্ষরে তুষারের নাম ভেসে উঠছে। তুষার তৈমুর। হৈমন্তী কল রিসিভ করলো। তবে কোনোরুপ কথা বললো না। ওপাশ থেকে তুষারও নিশ্চুপ। হঠাৎ নরম সুরে বলে উঠল, “নিচে আসুন হৈমন্তীকা। অপেক্ষা করছি।”

এরপরই কেটে গেল কল। হৈমন্তী অবাক মনে বারান্দায় একবার উঁকি দিলো। তুষারকে দেখে নিশ্চিত হতেই গায়ে ওরনা জড়িয়ে বেরিয়ে পরলো রুম থেকে।
নিচে গিয়ে আরেক দফা অবাক হলো সে। রাস্তার ওপাশে বসে থাকা ছেলেদের মধ্যে মেরুন রঙের টি-শার্ট পরা ছেলেটির সঙ্গে কি যেন কথা বলছিল তুষার। ছেলেটির কথা বলার ভঙ্গিমা ছিল অত্যন্ত বিনয়ী। হৈমন্তী বিস্ময়ের রেশ অল্প কমিয়ে তুষারকে ডাকল, “তুষার।”

তুষার ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো। হৈমন্তীকে দেখে কি যেন ইশারা করলো ছেলেটিকে। সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য ছেলে গুলোকে নিয়ে সেখান থেকে চলে গেল মেরুন রঙের টি-শার্ট পরা ছেলেটি। তুষার এগিয়ে এলো। কাছাকাছি আসতেই সুচালো গলায় প্রশ্ন করলো হৈমন্তী,
— “ওই ছেলেগুলো কে? কি বলছিলেন ওদের সঙ্গে?”
ওপাশ থেকে তার সহজ উত্তর, “আমার বন্ধু।”

হৈমন্তী ভ্রু কুঁচালো,
— “আপনার বন্ধু? এরা? আপনি জানেন ইদানিং এই ছেলেগুলো আমার পিছু নিচ্ছে? গভীর রাতেও আমার রুমের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে কিসব আলোচনা করে এরা।”
তুষার তখন ঠোঁট বাকিয়ে হাসলো। বললো,
— “আমার কথাতেই ওরা আপনার পিছু নিয়েছে।”
হৈমন্তী বিস্ফোরিত নয়নে চাইলো। উঁচু গলায় জিজ্ঞেস করলো,
— “মানে? কেন?”

তুষার দূর্বোধ্য হেসে উত্তর দিলো, “একটা মাত্র বউ আমার। যদি কেউ চুরি করে নিয়ে যায়?”

___________________

চলবে~

হৈমন্তীকা

২৭.
বৃষ্টির তেজ বাড়ছে। ঝড়ো হাওয়ার তান্ডব চলছে চারপাশে। হৈমন্তী হাত বাড়িয়ে দিলো বৃষ্টির সম্মুখে। শীতল পানিগুলো হাতে স্পর্শ হতেই কিঞ্চিত হাসলো। আনমনেই প্রশ্ন করলো, “আপনার বৃষ্টি কেমন লাগে তুষার?”

বলতে বলতে তুষারের মুখপানে তাকালো সে। তুষার নিরুত্তর। দু’হাতের তালুতে মুখ ভর করে নিজের বেসামাল চাহনি দিয়ে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে হৈমন্তীকে। পলক ফেলছে না। আঁখিজোড়ায় কি ভীষণ গভীরতা, মাদকতা! আড়ষ্টতা জেঁকে বসল হৈমন্তীর মাঝে। কান, গাল ভয়াবহ উষ্ণতায় ভারি হতে শুরু করলো। এলোমেলো দৃষ্টি ফেলে সে বললো, “অন্যদিকে তাকান তুষার।”

তুষার শুনলো না। আগের চেয়েও আরেকটু গভীর হলো যেন তার চাহনি। দমকা হাওয়ায় মাথার ঘোমটা-টি পরে যেতেই এগিয়ে আসলো সে। স্বস্নেহে ঘোমটা-টি আবারো তুলে দিলো। কপাল স্পর্শ করে ছোট ছোট চুলগুলো কানের পেছনে ঠেলে দিলো। নিজের সীমা আরেকটু লঙ্ঘন করলো তুষার। নেত্রের পাঁপড়ি গুচ্ছে একবার আঙুল ছোঁয়ালো। হৈমন্তীর চোখ বুজে গেল সঙ্গে সঙ্গে। পরক্ষণেই নিজের ললাটে রুক্ষ অধরের শীতল স্পর্শ পেল সে। কপালে কপাল ঠেকিয়ে তুষার গম্ভীর স্বরে প্রশ্ন ছুড়লো,
— “আপনি এত সুন্দর কেন হৈমন্তীকা?”

হৈমন্তী থমকালো। বক্ষস্থলে দারুণ কাঁপন অনুভব করলো সে। হঠাৎ স্তব্ধ পরিবেশটায় শব্দ দূষণ সৃষ্টি করে সশব্দে বেজে উঠলো তুষারের ফোন। তুষার সরে এলো। ভ্রু বাঁকিয়ে প্রচন্ড বিরক্তির সঙ্গে পকেট হাতড়ে ফোন বের করলো। কিছু সময় স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে থেকে রিসিভ করলো কল। স্বাভাবিক গলায় বললো,
— “বলো মা।”

ওপাশ থেকে হেনার দৃঢ় ধমক শোনা গেল,
— “কোথায় তুই তুষার? কি শুরু করেছিস আজকাল? বাসায় আসছিস না কেন?”
তুষারের ছোট্ট উত্তর, “আসবো।”
— “কখন আসবি? আমাকে টেনসনে টেনসনে অসুস্থ বানাতে চাচ্ছিস তুই? কালকেও বাসায় আসিস নি, আজকেও আসার নাম নেই। আসলে কি চাচ্ছিসটা কি তুই?”
— “আমার বিয়ে করিয়ে দাও হৈমন্তীকার সঙ্গে।”

সহজ স্বীকারোক্তি। হেনা যেন একটু ভড়কালেন। কয়েক সেকেন্ড কিছুই বলতে পারলেন না। একটু ধাতস্থ হতেই বললেন,
— “এটা হয় না তুষার। তোর বাবা কখনো মানবেন না।”
তুষার তপ্ত নিশ্বাস ফেললো। কান থেকে ফোন সরাতে সরাতে বললো, “রাখছি।”

পরপরই কেটে দিলো ফোন। আবছা আবছা তুষারের ফোনালাপ ক্ষীণ শুনতে পেয়েছে হৈমন্তী। অনেকটা জড়তার সঙ্গে সে বললো, “আপনি বাসায় যাচ্ছেন না কেন তুষার?”
তুষার জবাব দিলো না। হৈমন্তী আবারও বললো,
— “কথা বলছেন না কেন? রাতে কিছু খেয়েছেন? নাকি না খেয়েই আছেন?”

এবারও জবাবে কিছুই বললো না সে। নিজের হাতের ভাঁজে হৈমন্তীর হাতকে শক্ত বাঁধনে আবদ্ধ করে নিলো। দৃষ্টি সামনের অদূর আঁধারে ফেলে কেমন অদ্ভুদ গলায় বললো,
— “আমি আপনার আগে জন্ম নিলাম না কেন হৈমন্তীকা? এ আফসোস আমার কখনোই মিটবে না।”

_____

খাবার টেবিলে পিনপতন নীরবতা চলছে। হৈমন্তী নতজানু হয়ে পরোটার ছোট্ট টুকরো মুখে দিতেই আসরাফ সাহেব থমথমে গলায় রাবেয়াকে বললেন,
— “রাবেয়া, তোমার মেয়েকে জিজ্ঞেস করো। ওই ছেলের সঙ্গে সে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে কি-না।”

উত্তরের আশায় রাবেয়া সঙ্গে সঙ্গে হৈমন্তীর দিকে তাকালেন। গলায় খাবার আটকে গেল যেন তার। জবাবে কি বলবে সেটা ভাবতে ভাবতেই বেশ সময় কেটে গেল। আসরাফ সাহেব বিরক্ত হলেন মেয়ের জবাবহীন আচরণে। রেগে গিয়ে বড় বড় পা ফেলে চলে গেলেন নিজ রুমে। হৈমন্তীকা চুপচাপ বসে রইলো চেয়ারে। জীবনের এই জটিলতা আর ভালো লাগছে না তার।

ভার্সিটির পাঠ চুকিয়ে অপরাহ্নে বাসার উদ্দেশ্যে বের হচ্ছিল হৈমন্তী। রাস্তার ধারে নাওয়াজকে দেখে কপাল কুঁচকে গেল তার। নাওয়াজ হাসি মুখে এগিয়ে এলো। প্রফুল্ল স্বরে বললো,
— “কেমন আছো হৈমন্তী?”
হৈমন্তী কানে নিলো না সে কথা। প্রশ্ন করলো,
— “আপনি এখানে, এ সময়ে?”
— “এমনি! এ রাস্তা দিয়েই যাচ্ছিলাম। তাই ভাবলাম তোমাকে তোমার বাসায় পৌঁছে দেই।”

হৈমন্তী এদিক-ওদিক তাকালো। বললো, “লাগবে না। আমি একা একাই যেতে পারবো।”
নাওয়াজ ম্লান হাসলো, “তুমি কি এখনো আমার ওপর রেগে আছো হৈমন্তী?”
— “না।”
— “তাহলে আমার সাথে যেতে সমস্যা কোথায়? চলো, তোমাকে পৌঁছে দেই।”

এ পর্যায়ে ভীষণ বিরক্ত হলো হৈমন্তী। সে তো বলেছে যাবে না। তাহলে এত জোড়াজোড়ি করছে কেন? নাকচ করবে তার আগেই হঠাৎ পেছন থেকে কারো ঠাট্টা সমেত কণ্ঠ ভেসে আসলো,
— “কোনো সমস্যা মিস্টার নাওয়াজ? আমার বউকে এভাবে টানাটানি করছেন কেন? বউ আমার বড্ড নাজুক। ছিঁড়ে যাবে তো!”

শুনে ভ্রু কুঁচকালো নাওয়াজ। পাশ ফিরে তুষারকে দেখে চোখ আরও ছোট ছোট করে তাকালো, “কি বললে? বউ? কে? হৈমন্তী?”
প্রশ্নের উত্তর দিলো না তুষার। কৃত্রিম হাসোজ্জল মুখশ্রীর চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। কি ভেবে উঁচু গলায় হেসে উঠলো নাওয়াজ। বললো,
— “মজা করছো আমার সঙ্গে? আঙ্কেল তোমার মতো ছেলের সঙ্গে কখনোই হৈমন্তীর বিয়ে দেবে না। আর বয়স কত তোমার? হৈমন্তীর চেয়ে তিন বছরের ছোট না তুমি? বিশ বছর বয়সে বিয়ে করে ফেললে? পুলিশ ধরলো না?”

জবাবে ঠোঁট ক্ষীণ বাঁকালো তুষার। এক গালে হাসলো। তাচ্ছিল্য সমেত বললো, “হৈমন্তীকা থেকে তিন বছর না, দুই বছর পাঁচ মাসের ছোট আমি। বিয়ের অনেক আগেই আমার বয়স একুশ হয়ে গেছে। আর কিছু?”

____________

চলবে~
ঈশানুর তাসমিয়া মীরা