#আরশি
#Part_21
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat
কেবিনের সামনে থাকা চেয়ারে বসে আছি। ভিতরেই গভীর নিদ্রায় তলিয়ে আছে মামা। মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো। কপালে নেই কোন চিন্তার ছাপ। আমি ঘোলাটে চোখে তাকিয়ে আছি শূন্যে। মন আমার বিষন্নতায় ঘেরা। একটু আগেই ডাক্তাররা মামাকে চেকাপ করে গিয়েছেন। তাদের ধারণা মামা বোধ হয় মাইনর স্টোক করেছেন। কিন্তু তাও তারা সিউরলি কিছু বলতে পারছেন না। ‘সিটিস্ক্যান’ আর ‘এম আর আই’ করার পর বুঝা যাবে আসলেই তাদের ধারণা ঠিক কি না। একটু পর হয়তো নার্সরা এসে মামাকে পরীক্ষা করার জন্য নিয়ে যাবে। আমার অভিভাবক বলতে এখন মামাই আছেন। তার কিছু হলে আমি সইতে পারবো না। মাত্রই তো নিজেকে গুছিয়ে নিতে শুরু করেছিলাম আর এখনই এমন এক ধাক্কা খেতে হবে বলে আশা করি নি। হঠাৎ নয়ন দুইটির বাঁধ ভেঙ্গে যায়। গাল বেয়ে চুয়ে পড়তে থাকে তপ্ত পানির দল। এমন সময় কাধে কারো স্পর্শ অনুভব করি। আমি মুখ তুলে উপরে তাকাই। দেখি সাদ। ওর কোলে অহনা। সাদ কাধ থেকে হাত সরিয়ে আমার পাশে এসে বসে। অহনাকে তার পাশের চেয়ারে বসায়। তারপর আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে,
— তুমি এইভাবে ভেঙে পড়লে কিভাবে হবে? বি স্ট্রোং। মামার কিছু হবে না।
আমি কিছু না বলে নিচে দিকে তাকাই৷ বা পা দিয়ে মেঝেতে ঘর্ষণ চালাতে থাকি। গলার স্বর ভারী হয়ে আসছে। কথাগুলো দলা পাকিয়ে আসছে। কোন কথাই যে বের হচ্ছে না। কিভাবে বুঝাই মামা আমার জন্য কি? মামার অবদান আমার জীবনে ঠিক কি রকম? মাথা ভার লাগছে। এমন সময় একজন নার্স এসে বলে,
— এক্সকিউজ মি ম্যাম!
আমি চকিতে তাকাই সেই নার্সটির দিকে। নার্সটি হালকা গলা ঝেড়ে বলে,
— ম্যাম আপনি দুইশ চার নাম্বার রুমের পেশেন্টের সাথে এসেছেন?
আমি মুখ দিয়ে কিছু বলতে পারলাম না। শুধু মাথা দোলালাম। যার অর্থ হ্যাঁ। নার্সটি তা বুঝতে পেরে বলে,
— তাহলে এই ফর্মটা ফিলাপ করে দিন আর কাউন্টারে এই পরিমাণ ক্যাশ জমা করে দিন। ক্যাশ জমা দেওয়ার পরই পেশেন্টকে এক্সামিন করা হবে।
কথাটা শুনে টনক নাড়ে, “আমি তো কোন টাকা আনি নি। আর পরীক্ষা করতে যত টাকা চাচ্ছে তা আমার কাছে হবেও না। মামা থেকে যে নিব তারও উপায় নেই। কেন না মামার ব্যাংক একাউন্টের নাম্বার বা তার বিকাশের পিন কোড আমি কিছুই জানি না। এখন পে করবো কিভাবে? এ কেমন বিপাকে পড়লাম আমি?”
হঠাৎ নার্সের ডাক কর্ণপাত হতেই আমি চকিতে তাকাই।
— ম্যাম ফর্মটা।
আমি কিছু না বলে ফর্মটা হাতে নেই। নার্স চলে যায়। আমি কিছুক্ষণ স্তম্ভিত হয়ে বসে রই। বুঝে উঠতে পারি না আমার কি করা উচিৎ। টাকা কিভাবে মেনেজ করবো আমি? ভাইয়াকে একবার ফোন দিয়ে দেখবো? ভাবনাটা মস্তিষ্কের মাঝে আসতেই আমি দ্রুত হাতে থাকা মুঠোফোনটি তুলে ধরি। ভাইয়ার নাম্বারে ডায়াল করি। তখন মোবাইলের ওইপাশ থেকে জানান দেয় ভাইয়ার ফোনটি অফ। আমি এইবার বিচলিত হয়ে পড়ি। কি করবো বুঝে উঠতে পারলাম না। এমন সময় সাদের কন্ঠে কানের কাছে ভেসে আসে।
— নিশ্চয়ই বাসা থেকে কোন ক্যাশ আনো নি। এক কাপড়েই তো বাসা থেকে বেরিয়ে এসেছ। তা এইটাকা গুলা নাও। এই টাকায় হওয়ার কথা। আর যদি না হয় আমার ক্রেডিট কার্ডটা নাও।
এই বলে সাদ কিছু ক্যাশ আর ওর ক্রেডিট কার্ডটা এগিয়ে দেয়। আমি সাদের কথা শুনে চমকে যাই। বিস্ময়কর চোখে তাকাই ওর দিকে। মুহূর্তেই এক রাশ অস্বস্তি এসে ঝেঁকে ধরে আমায়। দ্বিধাগ্রস্ত বোধ করি। বুঝে উঠতে পারি না আমার কি করা উচিৎ৷ টাকাটা নিব কি না? একে তো ওকে সকাল সকাল ওকে এমন এক ঝামেলায় ফাঁসিয়ে দিলাম। তার উপর এখন আবার টাকা নেওয়ার বিষয়টা। এইটা একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না? কি ভাববে ও আমার ব্যাপারে? সাদ হয়তো আমার অস্বস্তি ধরতে পেরে বলে,
— আমি বুঝতে পারছি তোমার পরিস্থিতি৷ বাট বি প্রেক্টিক্যাল। এখন তোমার টাকা জমা দেওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টাকা জমা না দেওয়া আগ পর্যন্ত তারা কোন কার্যক্রমই শুরু করবে না। আপাতত মামাকে সুস্থ করে তোলাই মূল উদ্দেশ্য। তাই এত না ভেবে টাকাগুলো নাও। আই ইন্সিস্ট!
আমি এইবার সাদের দিকে কৃতজ্ঞ নয়নে তাকাই। অতঃপর অস্ফুটস্বরে বলি,
— পরে আমি টাকাগুলো দিয়ে দিব।
সাদ কিছু না বলে মিষ্টি হাসি দিয়ে মাথা দোলায়। এর মধ্যেই সাদ আবার বলে উঠে,
— অফিসে ফোন দিয়ে আমি তোমার আর আমার ছুটি নিয়ে নিয়েছি। যতটুকু বুঝেছি তুমি একাই। তার উপর তোমার মেয়েও আছে। একা তুমি সবদিক সামলাতে পারবে না বলে আমি এইখানে থাকছি। আশা করি তোমার কোন সমস্যা হবে না।
— না হবে না।
— গুড! তা আমি অহনাকে নিয়ে সামনের পার্কে যাচ্ছি। হসপিটালের পরিবেশ ওর জন্য ভালো নয়। মাথায় প্রেশার পরতে পারে। তো একটু না হয় ঘুরে আসুক। আর শুনো ফোনটা সাথে রেখ। দরকার হলে আমাকে ফোন দিও।
আমি মাথা দোলায় আর ওর দিকে কৃতজ্ঞচোখে তাকিয়ে রই। আর আনমনে ভাবি, ও যদি তখন আমার এক বাক্যে সাহায্যের জন্য এগিয়ে না আসতো না আর মামাকে হসপিটালে নিয়ে না আসতো তাহলে আমি যে কিভাবে কি করতাম তা আমার জানা নেই। ভেবেই বুক চিরে বেড়িয়ে আসলো দীর্ঘ নিঃশ্বাস।
________________________
হসপিটালের সামনেই অবস্থিত এক পার্কে সাদ আর অহনা বসে আছে। অহনার হাতে হাওয়াই মিঠাই। কিন্তু তা সে খাচ্ছে না। বরং হাতে নিয়ে বসে আছে। সাদ বিষয়টা লক্ষ্য করে মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে,
— কি হয়েছে অহুপরী? কোন সমস্যা?
অহনা সাদের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়ায়। যার অর্থ না। সাদ তা দেখে জিজ্ঞেস করে,
— তাহলে খাচ্ছ না কেন?
— আম্মিকে ছাড়া আমি কিভাবে খাই?
সাদ অহনার কথা শুনে হেসে দেয়। তারপর অহনার গাল টেনে বলে,
— তুমি বুঝি আম্মিকে সব জিনিস দিয়ে খাও?
— হুম!
— আচ্ছা আপাতত তুমি এইটা খাও। যাওয়ার সময় আমরা তোমার আম্মির জন্যও এইটা নিয়ে যাব নে কেমন?
— আচ্ছা।
এই বলে অহনা হাওয়াই মিঠাই এর প্যাকেট খুলার চেষ্টা করে। কিন্তু পারে না। অহনা এইবার সাদ এর দিকে কাদো কাদো হয়ে তাকিয়ে বলে,
— চকলেট আঙ্কেল! খুলে না।
কথাটা বলেই অহনা ঠোঁট উল্টিয়ে নেয়। সাদ অহনার এমন রিয়েকশন দেখে কিঞ্চিৎ হাসে। তারপর হাওয়াই মিঠাইটা নিয়ে প্যাকেটটা খুলে অহনার দিকে এগিয়ে দেয়৷ স্বাভাবিক কন্ঠে বলে,
— তা তোমার মনে আছে আমি তোমার চকলেট আঙ্কেল?
— মনে থাকবে না কেন? আমি কি ভুলাক্কার নাকি? আমি সহজে কোন কিছু ভুলি না।
— তাই বুঝি?
অহনা গর্বের সাথে বলে,
— হুম! তা তুমি কি আম্মিকে চিনো?
— হ্যাঁ চিনি! আগে তোমার আম্মি আমার সাথেই পড়ালেখা করতো। আর এখন আমি যেখানে চাকরি করি সেখানে তোমার আম্মিও চাকরি করে।
হাওয়াই মিঠাই মুখে পুড়তে পুড়তে অহনা বলে,
— অহ আচ্ছা।
সাদ আর কিছু না বলে অপলক দৃষ্টিতে অহনার দিকে তাকিয়ে রয়। অহনার বা পাশটায় হাওয়াই মিঠাই লেগে আছে। যা দেখে সাদ আনমনে হেসে ফেলে কিন্তু পরক্ষণেই চোখ দুইটি ছলছল করে উঠে। চোখের সামনে কিছু স্মৃতি ভেসে উঠে। যা মুহূর্তেই দীর্ঘ নিঃশ্বাসে পরিনত হয়। সে আলতো হাতে অহনার গাল স্পর্শ করে সেই হাওয়াই মিঠাইটা সরিয়ে দেয়। অহনা সাদের দিকে তাকিয়ে বলে,
— চকলেট আঙ্কেল তুমি কি কাঁদছো? তোমার কি কোথাও কষ্ট হচ্ছে?
কথাটা শুনার সাথে সাথে সাদ চমকে উঠে। কিন্তু পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,
— আরেহ না! আমি কাঁদছি না। চোখে কি জানি গিয়েছে। তাই পানি এসেছে শুধু।
কথা বলে পকেট থেকে রুমাল বের করে চোখ কচলাতে থাকে। অহনা রুমাল দেখে বলে,
— অহহ! তোমার সেই রুমাল তো আমার কাছেই রয়ে গিয়েছ।
সাদ অহনার গাল টেনে বলে,
— থাকুক ওটা তোমার কাছে। আমার লাগবে না।
— আচ্ছা।
______________________
— এতক্ষণ কোথায় ছিলে?
— মানে?
— একদম না জানার ভান করবে না। এই রাত ৮ টা বাজে কোথা থেকে আসছো তুমি? তুমি জানো না এই অবস্থায় বেশি চলা ফেরা করতে নেই। বেবির উপর ইফেক্ট পড়বে।
কথাটা শুনে জুঁই নিজের মুখ চোখ কালো করে বলে,
— বলেছিলামই তো তোমায় আমি শপিংয়ে যাচ্ছি।
— শপিং করতে বুঝি এত সময় লাগে? বেড়িয়েছিলে দুপুর ২ টায় আর আসছ এখন।
— তুমি কি আমায় সন্দেহ করছ?
জুঁইয়ের কথা শুনে ফাহাদ বিস্ময়কর দৃষ্টিতে তাকায়। অস্ফুটস্বরে বলে,
— আর ইউ লোস্ট ইউর মাইন্ড? সন্দেহের কথা আসছে কোথ থেকে। আমি জাস্ট সিম্পল একটা প্রশ্ন করছি যে, “কোথায় ছিলে তুমি?” তুমি সেটার উত্তর না দিয়ে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বলছো। এখন তো সন্দেহ করতেই হচ্ছে।
জুঁই নাক মুখ কুঁচকে বলে,
— বললাম তো শপিংয়ে গিয়েছিলাম।
— তা এত সময় লাগার কারণ?
— তুমি কিন্তু আমায় জেরা করছো। আমি তোমার সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য নই।
— তুমি আমার ওয়াইফ। তোমার সম্পর্কে জানার আমার পূর্ণ অধিকার আছে। তাই তুমি আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য।
— না নই। এইটা আমার পার্সোনাল ব্যাপার। আর আমি এতে যা ইচ্ছা করতে পারি। আর আমি আরশি নই যে তুমি যা ইচ্ছা তা জিজ্ঞেস করবে আর আমি তার ঢ্যাং ঢ্যাং করে তার সকল উত্তর দিয়ে দিব। আই হ্যাভ মাই ওউন পার্সোনাল স্পেস।
ফাহাদ এইবার রেগে গিয়ে বলে,
— আরশিকে মাঝে আনছো কেন?
জুঁই মুখ ব্যঙ্গ করে বলে,
— কেন গায়ে লাগলো বুঝি? এক্সের জন্য কি দরস উতলিয়ে পড়ছে?
ফাহাদ এইবার হুংকার দিয়ে বলে,
— জাস্ট শার্ট আপ! কোথাকার কথা কোথায় নিচ্ছ তুমি? এইটা তুমি ভালো করেই জানো, আরশির প্রতি যদি আমার মনে বিন্দু মাত্র মায়া বা অনুভূতি থাকতো তাহলে আমি কখনোই ওকে ছেড়ে তোমায় দ্বিতীয় বারের মত আপন করতাম না।
— খোটা দিচ্ছ?
— যদি তাই মনে হয় তাহলে ঠিক তাই।
বলেই ফাহাদ রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এইদিকে জুঁই চেঁচাতে থাকে,
— ভুল হয়েছে আমার যে আমি তোমার কাছে এসেছিলাম। না এসে গলায় ফাঁস দিয়ে মরলেই ভালো হতো।
জুঁই এর কথা ফাহাদ শুনলো না। এর আগেই ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল। এইদিকে ফাহাদের কোন সারা না পেয়ে জুঁই বুঝতে পারলো যে ফাহাদ চলে গিয়েছে। জুঁই অতঃপর বিরবির করতে থাকে,
— ধুরর! বারাবারি করে ফেললাম। বিষয়টা এখন হাত থেকে গড়িয়ে যাচ্ছে। কিছু একটা করতে হবে।
________________________
ডাক্তারের কেবিনে একটি চেয়ারে আমি ও আরেকটি চেয়ারে সাদ বসে আছে। ডাক্তার সাহেব গভীর মনোযোগ দিয়ে রিপোর্টগুলো দেখছেন। রিপোর্ট দেখা শেষে তিনি চোখ তুলে আমার দিকে তাকান। গলাটা ঝেড়ে বলেন,
— যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই। তিনি মাইনর স্টোক করেছেন। রিপোর্ট দেখে যা বুঝতে পারছি, বিগত দুইদিনে তার প্রেশার আর কলোস্ট্রোলের মাত্রা খুব বেশি ছিল সাথেই তিনি কোন কিছু নিয়ে হয়তো বা স্ট্রেস আউট ছিলেন। যার ফলে তার ব্রেনে প্রেশার ক্রিয়েট হয় আর তিনি স্টোক করে।
কথাটা শুনে আমি জিজ্ঞেস করে উঠি,
— তিনি এখন কেমন আছে?
— মাচ ব্যাটার। আপাতত অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। আজ রাতটা তাকে সেখানেই রাখা হবে।
আমি ইতস্তত সুরে বলি,
— ডিসচার্জ কবে দেওয়া হবে?
— এখনো বলতে পারছি না। তার কালকে সকালে জ্ঞান ফিরলে বাকিটা বুঝা যাবে। কিন্তু আপনাদের তার স্পেশাল কেয়ার নিতে হবে। যেহেতু এইটাই তার ফাস্ট স্টোক তাই তিনি হয়তো কিছুদিনের জন্য একদম নেতিয়ে পড়বেন। হয়তো রিকোভার করার জন্য দুই-এক মাস বেড রেস্টে থাকতে হবে। আর তার যেহেতু আগে থেকেই হাই প্রেশার আর হাই কলোস্ট্রোল এর সমস্যা আছে সেহেতু এইটা আগে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনতে হবে। আর মোস্ট অফ অল তাকে কোন ভাবেই টেনশন করতে দেওয়া যাবে না। এতে কিন্তু সেকেন্ড টাইম স্টোক করার চান্স আছে।
আমি নিচু স্বরেই বলি,
— জ্বি আচ্ছা ডাক্তার।
আরও কিছুক্ষণ ডাক্তারের সাথে কথা বলে আমি আর সাদ কেবিন থেকে বেরিয়ে আসি। সাদ আমার দিকে তাকিয়ে বলে,
— আল্লাহ এর উপর ভরসা রাখো তিনি সব ঠিক করে দিবেন।
— হুম।
— তা এখন কি করবে? হসপিটালে থাকবে?
— হসপিটালে থাকার মত জায়গায় নেই। বাসায় যেতে হবে। তা অহনা তোমার বাসায় না?
— হ্যাঁ! মায়ের কাছে রেখে এসেছিলাম।
আমি একবার সাদের দিকে তাকালাম। অতঃপর দুপুরের কথা ভাবলাম। হসপিটালের পরিবেশ অহনার জন্য ভালো না বিধায় সাদ ওকে নিজের বাসায় নিয়ে যায়। তার উপর এই দৌড়াদৌড়ির মাঝে যদি ও কোথাও হারিয়ে যায়। ওকে তো হসপিটালে সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখা সম্ভব নয়। কখন কি হয় বলা যায় না। তো যখন সাদ অহনাকে নিজের বাসায় নিয়ে যেতে চাইলো আমিও আর বাঁধা দিলাম না৷ কথাগুলো ভেবেই দীর্ঘ নিঃশ্বাস নেই। অতঃপর ছোট করে বলি,
— হুম!
— তা এখন তো রাত ১১ টার বেশি বাজে। বাসায় তো মনে হয় না কিছু রান্না করা হয়েছে। কি খাবে? তার উপর অহনাও তো আমার বাসায়। এখন?
— বাসায় গিয়ে কিছু বানিয়ে নিব নে। ব্যাপার না। আর অহনাকে যাওয়ার সময় নিয়ে যাব নে।
— আচ্ছা তাহলে চলো।
— হুম!
#চলবে