ভালোবেসে ফেলেছি পর্ব-২২+২৩

0
2362

#ভালোবেসে_ফেলেছি
part : 22
writer : Mohona

.

দহন : আমরা কি আমাদের লাইফ অন্যসব স্বাভাবিক কাপলের মতো করে সাজাতে পারিনা…
বহ্নি বেশ অবাক হলো।
দহন : কি হলো কিছু বলছো না যে…
বহ্নির কেন যেন মনে হচ্ছে যে দহন মন থেকে কথাগুলো বলছেনা। কেবলমাত্র ওকে হ্যাপী রাখার জন্য কথাগুলো বলছে। বহ্নি ঠিকই ধরেছে। দহনের মনে এখনও অনেক সংশয় আছে। তবে রবির কথাটা ভেবে ও ঠিক করেছে যে বহ্নির সাথে সম্পর্কটা স্বাভাবিক করবে। কারন বহ্নির সাথে ও অন্যায় করছে। ও এখনও প্রস্তুত নয় বহ্নিকে ভালোবাসতে। কিন্তু বহ্নির কথা ভেবে ও কথাটা বলল। বহ্নির মন খারাপ দেখলে ওর খুব কষ্ট হয়….

দহন : চুপ করে আছো যে? তুমি কি বলো…
দহন এভাবে থাকায় বহ্নির নিঃশ্বাস নিতেই কষ্ট হচ্ছে বলবে কি? দহন বহ্নির কাধে ১টা কিস করে
বলল : বলো… তুমি কি চাও…
বহ্নি একদমে বলে
দিলো : তুমি একটু সরে দারাও…
দহন : হুয়াট?
বহ্নি মাথা নেরে হ্যা বলল। দহন অবাক হলো।
দহন : যদি না ছারি?? 😜।
বহ্নি : 😶।
দহন হাসতে হাসতে বহ্নির থেকে ১হাত দূরে গিয়ে দারালো।
দহন : হয়েছে না আরো দূরে যাবো… ? 😂।
দহনের রাগ আর মজার কোনো সময় নেই। কখন কি করে ওটা কেবল ওইই জানে।
বহ্নি : সবকিছুতে রাগ না হয় মজা… 😒…
দহন : কি করবো আমার বউতো আনরোমান্টিক… আমি দূরে দূরে থাকি সে আরো দূরে থাকে… বাই চান্স আমি কাছে এলে দূরে যেতে বলে। তাই তো হয় রাগ করি না হয় মজা… 😁…
বহ্নি : 😒।
দহন : 😂। কাকনকে বিয়ে না করে তোমাকে বিয়ে করে সবথেকে বেশি লাভ কি হয়েছে জানো? দিনের মধ্যে ৮০বার রাগ ভাঙাতে হয়না। আর কথায় কথায় ঠোট উল্টানো কান্নাও দেখতে হয়না… 😂😂😂…
হাসতে হাসতে দহন থেমে গেলো। পরে আবারও হাসি দিলো। বহ্নিও বুঝতে পারলো যে পরের হাসিটা কষ্ট লুকানোর হাসি ছিলো ।

বহ্নি : আচ্ছা দহন আমরা আমাদের সম্পর্কটা এখনই কিভাবে নরমাল করি বলো তো?
দহন : …
বহ্নি : এখন তো সেটা সম্ভব না।
দহন মনে করলো যে বহ্নি রাগ কথাগুলো বলছে।
দহন : বহ্নি… আম রেজি টু এক্সেপ্ট ইউ…
বহ্নি : আমি তো নই না… আমি তো এখনো ভীতুর ডিম… আর তোমার যে সাহস। হুটহাট করে কি না কি ভয়ংকর কাজ শুরু করো। বলি ভয়ের চোটে আমি হার্ট অ্যাটাক করলে…
দহন : হ্যা এটাও ঠিক… তুমি এতো ভয় পাও কিভাবে আমি সেটাই বুঝিনা।
বহ্নি : আমিওনা। সাহসী না হলে পুলিশে জয়েন কিভাবে করবো!!! 😞। তবে সাহসী হবো কি করে?
দহন : আগের থেকে কিছুটা হয়েছো। এন্ড থ্যাংকস টু মি… 😎।
বহ্নি : ইশ… থ্যাংকস টু মি… 😒… পারলে আমাকে সাহসী বানিয়ে দেখাও।
দহন : ব্যাপারই না কোনো।
বহ্নি : ইশ।
দহন : কালকে নো নো আজকে থেকেই তোমার ট্রেনিং শুরু করবো। কি দিয়ে কি দিয়ে? তেলাপোকা। হামম।
বহ্নি : তততেলাপোকা… এই না না । শুরুতেই এতো ভয়ংকর? একটু কম ভয়ংকর কিছু প্লিজ।
দহন : তোমার কাছে তো সবই ভয়ংকর । এই রাত করে কি করি… আইডিয়া… তুমি ড্রাইভ করতে পারো?
বহ্নি : না। মানুষ কিভাবে যে ড্রাইভ করে?
দহন : গ্রেট। চলেন ড্রাইভিং দিয়েই শুরু করি। আজকে ড্রাইভিং এর প্রথম ক্লাস।
বহ্নি : এই না না…
দহন : শাট আপ…

.

দহন টেনে বহ্নিকে নিচে নিয়ে গেলো। ড্রাইভিং সিটে বসালো নিজে পাশে বসলো।
বহ্নি : না না দহন। আমার ভয় করছে…
দহন : আমি আছিতো পাশে… লুক স্টিয়ারিং , লুকিং মিরর সহ এগুলোর নাম জানো তো?
বহ্নি : হামম।
দহন : এই মিররটা হলো পেছনের গাড়ি টারি দেখার জন্য … আচ্ছা ১কাজ করো গাড়ি স্টার্ট দাও।

দহন বহ্নিকে গাড়ি চালানো শিখাতে লাগলো। বহ্নিও কিছুটা শিখে নিলো।
বহ্নি : ব্যাস ব্যাস আজকে আর না…
দহন : ওকে । ইটস ইনাফ ফর টুডে। আচ্ছা বহ্নি… গাড়ি নিয়ে যখন বেরিয়েই পরলাম তখন চলো লং ড্রাইভে যাওয়া যাক?
বহ্নি : লং ড্রাইভে?
দহন : হামম।
বহ্নি : যদি পুলিশ আটকায় !!!
দহন : আল্লাহ… ওরে বহ্নিরে… আমি তো রুলস ব্রেক করবোনা। আর নিজের বউকে নিয়ে লং ড্রাইভে যাচ্ছি … অন্যের বউকে নিয়ে না… কাকনকে নিয়ে কতো গিয়েছি… তখনই কোনো প্রবলেম হয়নি আর এখন তো তোমাকে নিয়ে। ধ্যাত যাবোই না।
বহ্নি : সরি সরি চলো চলো।
দহন : না যাবোনা।
বহ্নি : সরি বললাম তো।
দহন : কানে ধরে সরি বলো।
বহ্নি : কানে ধরে সরি বলবো? আমি কি ছোটমানুষ?
দহন : হামম ধরো।
বহ্নি কানে ধরে সরি বলল।
দহন : হামমম।

২জন লং ড্রাইভে বের হলো। দহন ড্রাইভ করতে লাগলো। এসি টা অফ করে গ্লাস নামিয়ে দিয়ে গান ছারলো। লাইটটা অফ করে দিলো। এই বিষয়টা দহনের খুব প্রিয়। বহ্নি বুঝতে পারলো যে দহনের মনটা ভালো হয়েছে। তবে বহ্নির চুল গুলো দহনকে বড্ড জালাচ্ছে। তাই বহ্নি চুল গুলো হাতখোপা করতে নিলে দহন বাধা দিলো।
দহন : আহা বাধতে হবেনা … ওদেরকে এভাবেই উরতে দাও।
বহ্নি : তোমার যে সম…
দহন : 😒।
বহ্নি : ওকে বাধবোনা… 😅..
কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে তাই বাতাসটা বেশ ঠান্ডা। বহ্নি কখনোই রাতের ঢাকা দেখেনি। তাই ওর খুব ভালো লাগছে। ঠোটের কোনে মিষ্টি হাসি লেগে আছে ।

আজকে অনেকদিন পর দহন লং ড্রাইভে বের হলো। যার সাথে বের হতো তাকে সে আর চায় না । কাকনের সাথে বের হয়েও দহনের ভালো লাগতো। তবে বহ্নির সাথে বের হয়ে বেশি ভালো লাগছে । এর কারন হলো বহ্নির লম্বা লম্বা চুল । দহন বেশ বুঝতে পারছে যে বহ্নি তখন ভীতু থেকে সাহসী হওয়ার কথা বলেছে শুধুমাত্র ওর মনটা ভালো করার জন্য ।
বাহিরে দেখতে দেখতে বহ্নির হাত দহনের হাতের ওপর পরলে বহ্নির হাত সরাতে নিলে দহন হাত ধরে রাখলো।
দহন : ফিলিং বেটার…থ্যাংক ইউ…
জবাবে বহ্নি মিষ্টি ১টা হাসি দিলো। তখন আইসক্রীমের মিনি স্টল দেখে দহন গাড়ি থামালো।
দহন : হেই আইসক্রীম … গ্রেট..
বহ্নি : এতো রাতে আইসক্রীম খেলে তো ২জনেরই ঠা…
দহনের চাহনী দেখে বহ্নি চুপ করে রইলো।
দহন : নামো। 😒।
২জন নামলো।
দহন : তুমি দারাও আমি নিয়ে আসছি।

২জন আইসক্রীম খেলো। এরপর আর কিছুক্ষন ঘুরে বাসায় চলে গেলো। গাড়ি থেকে নেমে বহ্নি ভেতরে যাচ্ছে তখন দহন পেছন থেকে ডাক দিলো।
দহন : বহ্নি…
বহ্নি পিছে ঘুরলো।
বহ্নি : হামমম?
দহন বহ্নির দিকে এগিয়ে এসে ওকে জরিয়ে ধরলো।
দহন : থ্যাংক ইউ…
বহ্নি : ফর হুয়াট?
দহন : আমার লাইফে আসার জন্য ।

.

৫দিনপর…
মনি : ও ভাবি শোনো না।
বহ্নি : হামম বলো।
মনি : তুমি কালকে আমার সাথে আমার স্কুলে যাবে?
বহ্নি : তোমার স্কুলে?
মনি : হামমম আমার স্কুলে । আমার সব ফ্রেন্ডসরা তোমার সাথে দেখা করতে চায়। আর আমিও তো সবাইকে দেখাবো আমার ভাবি কতো সুন্দর আর ভালো…
বহ্নি : আচ্ছা তোমার ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করে নেই ।

দহন : কি জিজ্ঞেস করবে?
মনি : ভাইয়া… আমার ফ্রেন্ডসরা ভাবির সাথে দেখা করতে চায়। কালকে ভাবিকে নিয়ে আমার স্কুলে যাই? প্লিজ প্লিজ প্লিজ…
দহন : ওকে।
মনি : থ্যাংক ইউ ভাইয়া । লাভ ইউ ভাইয়া।
দহন : লাভ ইউ টু নয়নমনি। বহ্নি ১কাপ কফি প্লিজ। আমি স্টাডিতে আছি ।
বহ্নি : হামমম।
দহন চলে গেলো।
মনি : ভাবি তুমি কিন্তু কালকে পিংক কালার শাড়ি পরে যাবে।
বহ্নি : আচ্ছা । কিন্ত কেন?
মনি : কারন পিংক আমার প্রিয় রং।
বহ্নি : ওকককে নয়নমনি। এখন তোমার ভাইয়ার জন্য কফি নিয়ে যাই। না হলে ডাকাত ক্ষেপবে…
দহন : আমি ডাকাত?
বহ্নি : ওহ নো…
দহন : কি ডাকাতি করলাম আমি শুনি?
মনি : ভাবির মন… 🙈🙊🙉…
কথাটা শুনে দহন-বহ্নি মনির দিকে তাকালো। বহ্নি মনির কান মলে দিলো।
বহ্নি : খুব পাকুন্নি তাইনা?
মনি : 😁…

.

পরদিন…
১টা জরুরী কাজ থাকায় দহন আর দীপন ভোরের দিকেই বেরিয়ে গিয়েছে । মনির স্কুলে যাবে মনির আবদারে মনির পছন্দের শাড়িই বহ্নি পরলো। হালকা গোলাপী রঙের শাড়িতে আসলেই বহ্নিকে সুন্দর লাগছে ।
বহ্নি : মামনি আমরা আসি।
নিশা : দারা দারা…
বলেই নিশা কয়েকটা লালমরিচ এনে বহ্নির চারদিকে ঘুরিয়ে পুরিয়ে দিলো।
নিশা : আমার ছেলের বউটাকে এতো সুন্দর লাগছে । যদি কারো নজর লেগে যায়? তাই মরিচ পুরিয়ে দিলাম।
বহ্নি : তুমিও না মামনি… আসছি…
নিশা : বাই…
মনি আর বহ্নি চলে গেলো। গাড়িতে বসতেই মনির বকবক শুরু হলো । গাড়ি জ্যামে পরলো। তখন ১জন বেলুনবিক্রেতা বেলুন বিক্রি করার জন্য ওদের গাড়ির কাচে টোকা দিলো। মনি কেনার জন্য বায়না করলে বহ্নি কিনে দিলো। ওদের গাড়ির পাশেই ১টা বাইক ছিলো । বাইকওয়ালা বহ্নিকে দেখে তো পুরো ফিদা। সে মনিকে খেয়ালই করেনি। বহ্নিকে দেখতেই ব্যাস্ত ছিলো । ছেলেটার নাম রনক। রনকও দহনের খুব ভালো বন্ধু । ফ্রান্স থাকে। দহনের বিয়ে হুট করে হওয়াতে আসতে পারেনি। রবির বিয়ের জন্য এসেছে । আজই এসেছে। দহনের অফিসের দিকেই যাচ্ছে। দহনের রাগ ভাঙাতে।
যাইহোক বহ্নিদের গাড়ি ছেরে দিলো। রনক ওদের পিছু পিছু গেলো। মনিদের হাফ ডে ছিলো। তাই ক্লাস করে মনি আর ওর বন্ধুরা সাথে বহ্নি রেস্টুরেন্টে গেলো। রনকও পিছু পিছু গেলো। আড়াল থেকে বহ্নির ছবিও তুলল অনেকগুলো। ও মনি কেন আশেপাশের কিছুই লক্ষ করেনি। বহ্নিকে দেখতেই ব্যাস্ত ছিলো। বহ্নিরা রেস্টুরেন্ট থেকে বের হবার পর আবার ও বহ্নিদের পিছু নিলো। বাট হারিয়ে ফেলল।

.

দহন ফ্যাক্টরি সাইড থেকে কেবল অফিসে এলো। ভেতরে ঢুকছে তখন দেখলো রনক ওর অফিসে ঢুকছে। মূর্তির মতো হাটতে হাটতে।
দহন : হেই রনক…
দহনের ডাকে রনক পিছে ঘুরলো। তবে রনকের মুখের হাভ ভাব দেখে দহন একটু অবাক হলো। ওর দিকে এগিয়ে গিয়ে ওর মাথায় থাপ্পর মারলো।
দহন : কিরে… তোর খোমার এই ডিজাইন কেন রে? কেউ হিপনোটাইজড করলো নাকি রে?
রনক : হামমম। 😍।
দহন : গ্রেট। চল ভেতরে চল…

২জন দহনের কেবিনে গেলাে। বসলো। ঢোকার সময় দহন ওর পিএ কে কফি দিতে বলল।
দহন : শালা ভেবেছিলাম দেখা হলেই তোকে ধোলাবো। বাট তোর খোমার কাহিনি দেখে ইচ্ছাটা পূরন করতে পারলাম না। কে সে বদনসিব যাকে দেখে তোর এই অবস্থা?
রনক : পরি… 😍…
দহন : পরি… কোথাকার পরি সে ?
রনক : জানিনা.. 😍…
দহন : জানিস না?
রনক : না… 😍…
দহন : তো পরির নাম টা কি পরিই না কি কোনো নাম আছে?
রনক : গোলাপী পরি… 😍
দহন : গোলাপী? নামটা অড না…?
রনক : হোক। তাতে কি…. ওকে দেখে তো এই নামটাই মাথায় এলো… 😍
দহন : ওহ তারমানে আপনি তার নাম জানেন না? 😒।
রনক : না। 😍।
দহন : হায়রে…
রনক : এই দহন বলনা ওকে তুই খুজে এনে দিবি… বলনা…
দহন : আব্বে ছাগল আমি কিভাবে খুজে দিবো? আমি কি দেখেছি নাকি?
রনক : আমার কাছে ছবি আছে তো? আমি তো ছবি তুলেছি। 😍।
দহন : ওকে দেখা দেখি তোর পরিকে…
রনক ছবি বের করে দিলো। প্রথম ছবি দেখেই দহনের চোখ কপালে। দহন দারিয়ে গেলো।
রনক : কিরে তুইও পাগল হলি নাকি?
দহন ১টার পর ১টা ছবি দেখতে লাগলো। আর ওর রাগের পরিমান বারতে লাগলো। ৮০+ … শেষে ১টা ছবি দেখে দহনের রাগ আউট অফ কন্ট্রোল হয়ে গেলো। কারন ছবিটাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে বহ্নির পেটের দিক থেকে শাড়ি অল্প একটু সরে গিয়েছে । একটু খানিই বের হয়েছে। আসলে রনক ছবিটা ইচ্ছা করে তুলেনি। ছবি তুলতে তুলতে এটাও তোলা হয়ে গিয়েছে। ছবি তোলার পর ও ছবিগুলো দেখেওনি…

কিন্তু দহনের তো রাগ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌছে গেলো। শরীরের সব শক্তি দিয়ে মোবাইল আছার মেরে বেরিয়ে গেলো। রনকও কেপে উঠলো। দহন হনহন করে বেরিয়ে গেলো। রনকও দহনকে ডাকতে ডাকতে কেবিন থেকে বের হলো। কিন্তু ততোক্ষনে দহন বেরিয়ে গিয়েছে।

রবিও দহনের অফিসে এসেছে। ৩জন আড্ডা দিবে বলে। রবি অবাক হলো দহনকে যেতে দেখে। দহনকে ওভাবে বেরিয়ে যেতে দেখে সবাই আতকে উঠলো ।
রবি : আরে রনক তুইও দেখি আছিস। কি হয়েছেরে? দহন ওভাবে বেরিয়ে গেলো? ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম।

রনক সবটা বলল।

রবি : ছবি দেখে এমন রিয়্যাক্ট? তুই কার ছবি… এই তুই ভাবির ছবিই তুলিস নিতো?
রনক : ভাবি? আমি তো ভাবিকে চিনিই না।
রবি : দারা দেখাচ্ছি।
রবি ছবি বের করে দেখালো।
রনক : ওহ শীট। ছিঃ ছিঃ ছিঃ। কি বাজে কাজ করে ফেলেছি। শেম অন মি। দনকে যে কিভাবে ফেইস করবো? ধ্যাত…

.

দহন রেগে আগুন হয়ে ভেতরে ঢুকলো। আর বহ্নিকে ডাকতে লাগলো।
দহন : বহ্নি… এই বহ্নি… বহ্নি… 📢…
ছেলের কন্ঠ শুনেই নিশা মোটামোটি বুঝতে পারলো যে ছেলে ঠিক কতোটা রেগে আছে। ছুটে এলো।
নিশা : ককি হয়েছে?
দহন: বহ্নি কোথায়?
নিশা : বববহ্নি? বববহ্নি তো…
দহন : বহ্নি কোথায়?
নিশা : তততোকে না বলেছিলো যে মনির স্কুলে যাবে…
দহন : ফেরেনি? 👿।
নিশা : না…

দহন বের হতে নিলো ওদের আনতে। তখন দেখে বহ্নি আর মনি ভেতরে ঢুকছে …

.

চলবে…

#ভালোবেসে_ফেলেছি
part : 23
writer : Mohona

.

বহ্নি আর মনি ঢুকছে । দহন বহ্নির পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখলো । ছবির থেকে বাস্তবে আরো বেশি সুন্দর লাগছে। রনকের মতো মানুষই তো বহ্নিকে দেখেছে । যেহেতু রনক ছবি তুলেছে সেহেতু অন্যান্যরাও তুলতে পারে। রনক যখন এতোগুলো ছবি তুলেছে বহ্নি খেয়াল করেনি তখন অন্যদের ক্ষেত্রেও তাই। আর যখন পেটের দিক থেকে শাড়ি সরে গিয়েছিলো তখন কতোজন দেখেছে। বহ্নিকে দেখে এসব ভাবনা দহনের মাথায় চেপে বসলো। দহনকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বহ্নির হাসি বন্ধ হয়ে গেলো। প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেলো । কিন্তু দহন এতো রেগে আছে কেন কিছুতেই বুঝতে পারলোনা।
দহন বহ্নির কাছে গিয়ে ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো। বহ্নি নিচে পরে গেলো।
দহন দাতে দাত চেপে
বলল : এখন থেকে শাড়ি পরা বন্ধ। বাহিরে বের হওয়া বন্ধ .. ভার্সিটি যাওয়া বন্ধ। জাস্ট এক্সামের সময় যেয়ে এক্সাম দিবা। তাও আমার সাথে যাবে আমার সাথেই আসবে । বাসা থেকে বের হলেই বোরকা পরে মুখ ঢেকে বের হবা। এমনকি হাত মোজা পা মোজা পরে বের হবা.. গট। এর অন্যথায় হলে কি করবো নিজেও জানিনা । নিজের রূপ নিজের শরীর অন্য কাউকে দেখানোর প্রয়োজন নেই…
বলেই দহন হনহন করে বেরিয়ে গেলো। এই নিয়ে ২টা থাপ্পর খেলো। তবে ১ম থাপ্পরের থেকেও এই থাপ্পরে বহ্নি হাজারগুন বেশি কষ্ট পেয়েছে। সেই সাথে অনেক অপমানবোধ করেছে দহনের বলা কথাগুলোর জন্য । নিশা মনি সার্ভেন্টস … খুব লজ্জা পেয়েছে বহ্নি। দহনের সবকিছু মেনে নিলেও এটা মেনে নেয়া সম্ভবনা। ছুটে রুমে গেলো।
দহনের রাগের সামনে নিশা কিছু বলতে সাহস পায়নি ঠিকই কিন্তু ও খুব ক্ষেপে গিয়েছে ছেলের ওপর। তাই আর দেরি না করে দীপনকে ফোন করলো। দীপনও ক্ষেপে গেলো।

.

একটুপর…
দীপন সব কাজ টাজ ফেলে বাসায় চলে এলো।
দীপন : কোথায় বেয়াদবটা কোথায়? আজকে চাপকে ওর পিঠের ছাল তুলে নিবো… কাপুরুষ কোথাকার বউয়ের গায়ে হাত তোলে… অসভ্য কোথাকার। কোথায় ও ?
নিশা : বেরিয়ে গিয়েছে।
দীপন : বেরিয়ে গিয়েছে? বলি বের হতে দিলে কেন শুনি? আর তুমি… কেমন মা তুমি? ছেলে স্ত্রীকে থাপ্পর মারলো আর তুমি দারিয়ে দারিয়ে দেখলা? ২গালে ২টা লাগাবেনা টাসটাস করে… মেয়েটার মুখোমুখি কি করে হবো আমি? ছিঃ? কাকনের ভূত কি মাথা থেকে নামেনি?
নিশা : ঠিক ধরেছো… কাকনই কিছু করেছে….
দীপন : তোমার ছেলে কি ফিডার খায়? বিশ্বাস করবে কেন কাকনের কথা?
নিশা : আরে আমা ছেলের দোষ আছেইরে ভাই । বাট গন্ডগোল ওই কাকনই করেছে। ও কোনোদিনই দহন-বহ্নিকে শান্তিতে থাকতে দিবেনা। একে তো আমি…
বলেই নিশা গিয়ে ঝাড়ু নিয়ে এলো।
দীপন : একি ঝাড়ু আনলে কেন?
নিশা : ওই কাকনকে ঝাড়বো বলে…
দীপন : হুয়াট? নিশা তুমি কি পাগল হয়েছো? রাখো ঝাড়ু।
নিশা : না।
দীপন : রাখো ঝাড়ু।
নিশা ঝাড়ু রেখে দিলো ।
নিশা : তোমার মতো তোমার ছেলে এমন অসভ্য বর্বর হয়েছে।
দীপন : শাট আপ। আমি এখনই কাকনদের বাসায় যাবো। কেন এমন শুরু করেছে? একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। গেলে চলো।
নিশা : হ্যা চলো।

২জন কাকনদের বাসায় গিয়ে কাকনের ২৫গুষ্ঠিকে ঝারতে লাগলো

.

দহন বাসায় ফিরলো। এতোগুলো শপিং ব্যাগ নিয়ে। সবগুলোতে বোরকা-নেকাব ইত্যাদি। কোনো কিছু নিয়ে বসে বসে কান্না করার স্বভাব বহ্নির নেই। কিন্তু আজকে দহনের আচরনে খুবই কষ্ট পেয়েছে। তাই বারান্দায় দারিয়ে চোখের পানি ফেলছে। দহন ব্যাগ গুলো বেডে ফেলল।
দহন : বহ্নি… বহ্নি…
বহ্নি কোনো জবাব দিলোনা।
দহন : এই বহ্নি…
বহ্নি এবারও কিছু বললনা। তবে চোখের পানি মুছে নিলো । দহন হনহন করে বারান্দায় গেলো। দহন বারান্দায় যেতেই বহ্নি রুমে চলে এলো। পিছে পিছে দহনও এলো।
দহন : এগুলোতে বোরকাসহ যাবতীয় যা যা লাগে সব আছে ।
বহ্নি দহনের কথা কানে না নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে দহন হাত ধরে ফেলল। বহ্নি হাত ছারিয়ে নিতে চাইলে দহন শক্ত করে হাত ধরলো।
বহ্নির জেদও কম যায়না। শরীরের সব শক্তি দিয়ে হাত ছারিয়ে নিলো। দহন আরো রেগে গেলো। দহন বহ্নির হাত ওর পেছনে মুচরে ধরে টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। বহ্নি হাতে ব্যাথা পাচ্ছে।

দহন : আগেও বলেছি এখনও বলছি… একদম আমাকে জেদ দেখাবানা। তুমি যা জানো আমি তার থেকেও ভয়ংকর। আর শাড়ি পাল্টে থ্রিপীছ পরোনি কেন? বলেছিনা শাড়ি পরবানা। এই মুহুর্তে ওয়াশরুমে গিয়ে পাল্টে আসো। যাও।
বলেই দহন বহ্নিকে ছেরে দিয়ে কাবার্ড থেকে ১টা থ্রিপীছ বের করে বহ্নির হাতে দিলো।
দহন : যাও পাল্টে আসো।
বহ্নি ড্রেসটা ছুরে ফেলে দিলো।
দহন : ড্রেসটা তুলো দেন গিয়ে পরে আসো।
বহ্নি : …
দহন : কিছু বলেছিতো।
বহ্নি : …
দহন : তুমি চেঞ্জ করবা না আমি করাবো?
বহ্নি : …
দহন : আমিই করাচ্ছি…
বলেই দহন বহ্নির কাধে হাত দিতে নিলে বহ্নি দহনের হাত ধরে ফেলল। দহনের চোখে চোখ রাখলো। আজকো দহনের আগুনের গোলার মতো চোখ দেখে বহ্নি ভয় পেলোনা ।
বহ্নি : না আমি এখন এই শাড়িটা চেঞ্জ করবো আর না তোমার আনা বোরকা গুলো পরবো। হ্যা পরতাম বোরকা। দরকার হলে রুমের মধ্যেও বোরকা পরে বসে থাকতাম তোমার কথায়। বাট … এখন তো আমি পরবোনা। আমারও আত্মসম্মানবোধ আছে দহন।
দহন : এখানে আত্মসম্মানবোধের কথা কেন আসবে? আমি বলেছি যেটা সেটা করো।
বহ্নি : আমি তোমার হাতের পুতুল নই ।
দহন : বহ্নি আমার ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিওনা। ধৈর্য্যের বাধ ভেঙে গেলে সমস্যাটা তোমারই হবে।
বহ্নি : আর আমার ধৈর্য্যের বাধ অলরেডি ভেঙে গিয়েছে। তুমি শাড়ি চেঞ্জ করতে বলেছো না…? করবো। তবে এরসাথে আরো কিছুও করবো।
দহন : কি?
বহ্নি : দেখতেই পাবে।
বলেই বহ্নি কাবার্ড খুলে অন্য ১টা থ্রিপীছ বের করলো। বিয়ের সময় বাবারবাসা থেকে যেই ড্রেসগুলো নিয়ে এসেছিলো এটা সেগুলোর মধ্যে ১টা। বহ্নি ড্রেসটা নিয়ে ওয়াশরুমে গেলো। চেঞ্জ করে এলো।
বহ্নি : হ্যাপী?
দহন : …
বহ্নি : এখন আমি তোমাকে আরো হ্যাপী করবো। গুড নিউজ দিয়ে।
দহন : গুড নিউজ?
বহ্নি : হামম গুড নিউজ। আর গুড নিউজটা হলো এই যে আমি তোমার জীবন থেকে এখন এই মুহুর্তে চলে যাচ্ছি…
দহন : বহ্নি…
বহ্নি : ডোন্ট শাউট। তোমার সাথে আসলেই আমার যায়না। তুমি থাকো তোমার রাগ নিয়ে। আমি চলে যাচ্ছি।
বলেই বহ্নি দরজা খুলতে নিলে দহন ওর পেছন থেকেই ধপাশ করে দরজা লাগিয়ে দিয়ে দরজার সাথে চেপে ধরলো।
দহন : চুপচাপ বসে থাকো। এই ঘর থেকে ১পা বের হলে কি করবো আমি নিজেও জানিনা।
বহ্নি : তুমি আমাকে আটকে রাখতে পারবে?
দহন : হ্যা পারবো।
বহ্নি : দেখো বাপীর ১টা সম্মান আছে। তাই তোমাকে আদালতে দার করালে বাপীর সম্মানে লাগবে। আর আমি তোমার মতো নই যে কেবল নিজের কথা ভাববো…
দহন : কি বললা? আমি কেবল নিজের কথা ভাবি?
বহ্নি : হ্যা। তুমি কেবল নিজের কথাই ভাবো। আর নিজেকেই ভালোবাসো । আসলেই তোমার জন্য কাকনই ঠিক ছিলো। তোমরা ২জনই এক।
কথাটা শুনে দহন কষ্ট পেলো। ওর হাতের বাধন হালকা হলো।
তখন বহ্নি ওকে সরিয়ে দরজাটা খুলে নিচে নেমে এলো।

নিচে দরজার কাছে যেতেই দীপন-নিশা ভেতরে ঢুকলো।
দীপন : মামনি…
নিশা : কিরে কোথায় যাচ্ছিস?
বহ্নি মাথাটা নিচু করে
বলল : আমি চলে যাচ্ছি…
তখন মনি ছুটে এলো।
মনি : মামনি মামনি ভাইয়া না এসে আবারও রাগারাগি করেছে।
দীপন : কি? এতো সাহস ওর… দহন দহন… দহন…

দহন নিচে নেমে এলো।

বহ্নি : বাপী… আমি যেতে চাই প্লিজ।
নিশা : তুই কোথ…
দীপন হাত দিয়ে থামিয়ে দিলো।
দীপন : আই রেসপেক্ট ইউর ডিসিশন । দহন তোমার কিছু বলার আছে?
দহন : …
দীপন : বেশ মামনি। আমি ড্রাইভারকে বলছি যেন তোমাকে পৌছে দেয়।
বহ্নি : বাপী লাগবেনা…
দীপন : আমি তোমার কথা রেখেছি । ইটস ইউর টার্ন।
বহ্নি আর না করলোনা। বহ্নি চলে গেলো।

.

দীপন : অনেক বড় মুখ করে মেয়েটাকে বাড়ির বউ করে এনেছিলাম। তুমি আমার বড় মুখটাকে ছোট করে দিয়েছো। আসলেই বহ্নির মতো মেয়ে তোমার সাথে যায়না। শী ডিজার্ভস সামওয়ান বেটার। এন্ড… কাকন ইজ পারফেক্ট ফর ইউ। চেষ্টা করবো খুব শীঘ্রই তোমার আর বহ্নির ডিভোর্স করিয়ে কাকনকে তোমার বউ করে আনতে। যেটা তোমার অাসল ইচ্ছা….

দহন কিছু না বলে রুমে চলে গেলো।
নিশা : এই তুমি কি পাগল হলে? কি করলে বলো তো? বহ্নিকে কেন যেতে দিলে…?
দীপন : আমি যা করেছি ঠিক করেছি। এখন বহ্নির চলে যাওয়াই বেটার। তবেই তোমার ছেলে বুঝবে বহ্নির গুরুত্ব।
নিশা : বহ্নিকে হারিয়ে বহ্নির গুরুত্ব বুঝে কি লাভ?
দীপন : বহ্নিকে হারিয়ে মানে?
নিশা : তুমিই না বললে ডিভোর্সের কথা।
দীপন : আহ নিশা অবুঝের মতো কথা বলোনা তো। ওটা জাস্ট এমনিতেই বলেছি। এখন তুমি আমার মাথা নষ্ট কোরোনা।

বহ্নি বাসায় গিয়ে দিনা সবটা বললনা। দিনা মনে করে এমনিতেই গিয়েছে।
আর দহন রুমের মধ্যে মাথা চেপে ধরে বসে আছে ।

.

পরদিন….
বহ্নি রিকশা করে ভার্সিটি যাচ্ছে। আর দহন গাড়ি নিয়ে অফিস। দূর থেকে বহ্নিকে দেখে দহন গাড়ি মাঝ দিয়ে চালাতে লাগলো। গাড়ি আর রিকশা মুখোমুখি হলো… দহন এমনভাবে গাড়ি রেখেছে যে রিকশাওয়ালা ডানদিক দিয়েও যেতে পারছেনা। আর বামদিক দিয়েও যেতে পারছেনা। বহ্নিতো কোন ধ্যানে আছে নিজেই জানেনা। ও তো দহনকে দেখেইনি ।
দহন মাথাটা বের করে
বলল : মামা পিছে যান….
দহনের কন্ঠ শুনে বহ্নির ধ্যান ভাঙলো। তাকিয়ে দেখে দহনের গাড়ি।
নীল রঙের ব্লেজার চোখে সানগ্লাস।
রিকশাওয়ালা : আপনি একটু সাইড করলেই তো হয় ।
দহন : নো মামা। আপনি ব্যাকে যান।
রিকশাওয়ালা : না আ…
বহ্নি : মামা আপনি রিকশা ঘুরিয়ে নিন… অন্যদিক দিয়ে চলুন । আমি ভারা বারিয়ে দিবো।
রিকশাওয়ালা রিকশা ঘুরিয়ে নিলো। অন্য রাস্তা দিয়ে যেতে লাগলো। তবে দহন রিকশার পাশে পাশে চলছে। মানি গাড়ি চালাচ্ছে । আর রেগে রেগে বহ্নিকে দেখছে।
রিকশওয়ালা : আফা ওই গাড়ি ওয়ালা ভাইয়ের মতলব মনে হয় ভালোনা। সামনেই দেখেন মানুষের ভীর । ওদিকে সাহায্য চাই?
বহ্নি : না তার আর দরকার নেই। ও অমন না।
বলেই হুড তুলে দিলো। বহ্নি ভার্সিটিতে পা রাখার পর দহন চলে গেলো।

.

দহন ক্ষেপে ক্ষুপে অফিস গেলো। একে সারারাত ঘুম হয়নি। বারবার কেবল বহ্নির কথাই মনে পরেছে। ড্রিংকস করতে গিয়েও করেনি।
পিএ সহ সবার সাথে রাগারাগি করলো। কপালে হাত দিয়ে বসে আছে । তখন রবি ভেতরে ঢুকলো। রনকও এসেছে। কিন্তু ভেতরে ঢুকতো সাহস পেলোনা। আবার লজ্জাও পেয়েছে। তাই বাহিরেই দারিয়ে রইলো ।

রবি : আসবো…
দহন : আয়…
রবি ঢুকলো।
দহন : বস।
রবি : না মানে আসলে…
দহন : রনকও এসেছে… তাইতো?
রবি : হামমম।
দহন : ভেতরে আসতে বল।
রবি রনকনে নিয়ে এলো । ভয়ে ভয়ে এসে বসলো রনক।
রনক : সরি আসলে আমি জানতাম না যে ওইটা ভাবি… জানলে…
দহন : জানলে হুয়াট?
রনক : ছবি তুলতাম না…
দহন : ছবি তুলতাম না বলছিস? তুই কি কোনো টিনেজার যে মেয়ে ভালো লাগলো আর ছবি তুলবি? সব মেয়েই তো কারো বউ বা কারো বোন বা কারো মেয়ে… তুই কারো ছবি তুলবি কেন?
রনক : ক্ষমা করে দে… আমি কোনোদিন আমার বউর ছবিও তুলবোনা… 😓…
কথাটা শুনে রবি হেসে উঠলো। দহন আর রনক রেগে রবির দিকে তাকালো।
রবি : সরি গাইস। বাট দহন ১টা কথা বলতো রনক বা অন্য যে কেউ বহ্নির ছবি তুলুক তাতে তোর কি?
দহন : আমার কি মানে? ও আমার বউ।
রবি : তো?
দহন : তো মানে কি হ্যা তো মানে কি? আমার বউর ছবি তুললে আমার খারাপ লাগবেনা?
রবি : মোটেও না। ও জাস্ট তোর বউই তো…
দহন : জাস্ট বউই তো মানে? কি পাগলের মতো কথা বলছিস…
রবি : আমি ভালো কথাই বলছি… জাস্ট বউয়ের ছবি তোলার মধ্যে তো রাগের কারন দেখিনা। হ্যা যদি কাকন হতো তবে ঠিক হতো। কারন কাকন তোর ভালোবাসা …
দহন : ছিলো । ভালোবাসা ছিলো। এখন নেই।
রবি : হ্যা যাই হোক ছিলো। ভালোবাসার ছবি তুললে রাগ ওঠা স্বাভাবিক । বাট বহ্নি ভাবির ছবি তুললে তোর রাগ ওঠা না জায়েজ। তুই তো আর আজও ভাবিকে ভালোবাসিস নি…
দহন : #ভালোবেসে_ফেলেছি …
রবি : ইয়েহ…
কথাটা শুনে রবির আনন্দের সীমা নেই। রনক তো কিছুই বুঝতে পারলোনা। দহন বুঝতে পারলো যে ও কি বলে ফেলেছে। রেগেরুগে দামদুম করে চলে গেলো।
রনক : কাহিনি কি?
রবি : দহনদের বাসায় যেতে যেতে বলছি।
রনক : দহনদের বাসায় কেন?
রবি : আমি সিউর যে কালকে দহনের রাগ গিয়ে পরেছে ভাবির ওপর। সো চল গিয়ে সরি বলি।
রনক : ছিঃ ছিঃ ভাবিকে কিভাবে ফেইস করবো?
রবি : ভাবি খুব ভালো চল ।

২জন দহনদের বাসায় গেলো । সবটা জানতে পারলো। রনক খুব আফসোস করলো।

.

পরদিন…
বহ্নি ভার্সিটি থেকে বের হচ্ছে। তখন রবি আর রনক কে দেখলো। রবিকে চেনে কেবল। ওরা ২জন এগিয়ে এলো। বহ্নি সালাম দিলো।
বহ্নি : ভাইয়া ভালো আছেন?
রবি : হ্যা। তুমি ভালো আছো?
বহ্নি : জী ভাইয়া ।
রবি : ভাবি ও রনক আমার আর দহনের বেস্টফ্রেন্ড ।
রনক : সরি ভাবি।
বহ্নি একটু অবাক হলো। হ্যালো হাই না বলে সোজা সরি…
বহ্নি : সরি? কেন কি হয়েছে ভাইয়া?
রবি সবটা বলল।
রনক : আমি অনেক অনেক দুঃখিত। সেই সাথে লজ্জিত। আমার জন্য দহন আপনার সাথে এমনটা করলো। আম রিয়েলি ভেরি সরি।
বহ্নি : ডোন্ট বি ভাইয়া। আর দহনের কাছে তো এই রাগারাগিই আশা করা যায়। ও তো ১টা ডাকাত। ওর নাম দহন না দানব হওয়া উচিত ছিলো…
রবি : ভাবি পিছে দহন…
বহ্নি : এ্যা…
রনক-রবি : হ্যা ….

.

চলবে….