আমার শুধু তোমাকেই চাই পর্ব-১৬

0
2900

#আমার_শুধু_তোমাকেই_চাই🍁🍁
#লেখিকা;সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
#পর্ব;১৬

৪৯,,,,
আপনি??(মাহি)

হ্যাঁ তোর স্যার জয়,, অনেক ভালো একজন মানুষ আর তোকে অনেক পছন্দ ও করে(মেঘ)

কিহ??( স্যার আমায় পছন্দ করে,, কই আমায় তো কখনো বলেনি,, তাহলে কি স্যার কালকে এই সারপ্রাইজ এর কথাই আমায় বলেছিলো মনে মনে)

কি হলো মাহি দাড়িয়ে আছো কেনো বসো (জয়)

হ,,হ্যাঁ (তারপর আস্তে করে গিয়ে ভাইয়ার পাশে বসলাম)

স্যার আর ভাইয়া অনেক কথা বলল আমি ওখানে শুধু শুধুই বসে ছিলাম তাই ভাইয়া কে বলে ওখান থেকে নিজের রুমে চলে আসলাম, এসে দেখলাম ফোনটা বাজছে হাতে নিয়ে দেখি মেহরাব ফোন দিয়েছে।

হ্যালো কোথায় ছিলে তুমি কতবার ফোন দেয়েছি,, কি হলো কথা বলছো না কেনো(মেহরাব)

আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে আজ ভার্সিটীতে গিয়ে বলল এখন রাখি(অনেক কষ্টে কান্না আটকে রেখে)

কি হয়েছে মাহি তোমার গলা এমন লাগছে কেনো কিছু কি হয়েছে?? বলো আমায় কি হয়েছে (অস্থির হয়ে বলল মেহরাব)

ন,,,না তেমন কিছু না আমি একটু পর আসছি (এই বলে ফোনটা কেটে দিলাম)

হ্যালো হ্যালো মাহি৷,, যা কেটে দিলো নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে কিন্তু কি হয়েছে আমায় জানতে হবে,,,,

কেনো আমার সাথে এমন হচ্ছে আমি কাকে বেঁচে নেবো একদিকে আমার ভাই তো অন্য দিকে আমার ভালোবাসা,, আমি যে ভাইয়াকে কিছু বলবো ভাইয়া তো মেহরাব এর সম্পর্কে কিছু শুনতেই চাই না,, কি করবো আমি (এভাবে একা বসে কাদতেছিলাম তখনি ভাইয়া রুমে আসলো আমি তারাতারি করে নিজেকে ঠিক করে নিলাম)

জানিস মাহি জয় তোকে পছন্দ করেছে,, তাই আমিও ওকে কথা দিয়ে ফেলেছি সামনে ৮ তারিখ এনগেজমেন্ট এর কথা বলে দিয়েছি বল আমি ঠিক করেনি(মেঘ)

ভাইয়ার চোখে মুখে অনেক খুশি দেখতে পেলাম। যে ভাইয়া এতো কষ্ট করে আমায় ছোট থেকে এত বড় করল নিজে কষ্টে থেকে আমায় ভালো রাখল তার খুশির জন্য আমি এটুকু করতে পারবো না?? হ্যাঁ পারবো অবশ্যই পারবো ভাইয়ার জন্য তো নিজের জীবন টাও দিতে রাজি আমি,, তারপর দীর্ঘ একটা শ্বাস নিয়ে বললাম।

হ্যাঁ ভাইয়া তুমি একদম ঠিক করেছো আমি রাজি (মাহি)

আমি জানতাম আমার বোন আমার সিদ্ধান্তে দ্বিমত পোষণ করবে না। আচ্ছা তুই তাহলে রেডি হয়ে ভার্সিটীতে যা,,, এখন তো আমার অনেক কাজ (এই বলে মেঘ চলে গেলো)

মাহি নিজের মুখ চেপে ধরে নিঃশব্দে কাঁদতে লাগল,,,, কিছুক্ষন পর মেঘলা আসলো রুমে।

কিরে ঘুম কুমারি উঠেছিস নাকি (বলতে বলতে রুমে ঢুকল তখনি দেখল মাহি বিছানায় বসে কাদতেছে)

মাহি?? কি হয়েছে এভাবে কাঁদছিস কেনো(মেঘলা মাহির কাছে বসে বলল)

মাহি মেঘলা কে জরিয়ে ধরলো তারপর সব কিছু বলল।

৫০,,,
কিহ এতো কিছু হয়ে গেছে আর তুই এখন আমায় বলছিস?? এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যাই না তুই ভাবতে পারছিস মেহরাব ভাই এসব শোনার পর ওর কি হবে,, না আমি মেঘকে সব বলবো,, আমি জানি ওনাকে বুঝায়ে বললে ওনি বুঝবে(মেঘলা)

না মেঘলা তুই ভাইয়াকে কিছু বলিস না (মাহি)

না আমি তোর কোনো কথাই শুনবো না (এই বলে মেঘলা মেঘের রুমের দিকে চলে গেলো)

আসতে পারি??(মেঘলা)

মেঘ বিছানায় বসে কিছু একটা করছিলো তখনি কারো গলার আওয়াজ শুনে দরজার দিকে তাকালো দেখলো মেঘলা দাঁড়িয়ে আছে।

আরে তুমি এটা তো তুমার ঘরই আসার জন্য অনুমতি নিতে হবে না আসো (মেঘ উঠে গিয়ে মেঘলার কাছে গেলো)

আপনাকে আমার কিছু বলার আছে (মেঘলা)

হ্যাঁ বলো,, জানো তো আমি আজকে অনেক খুশি আমার সেই ছোট্ট মাহির বিয়ে আমি তো ভাবতেই পারছিনা দেখতে দেখতে আমার ছোট্ট বোনটি কত বড় হয়ে গেলো আর কয়দিন পর তার বিয়েও আমি নিশ্চিত যে একটা ভালো ছেলের হাতে ওকে তুলে দিতে পারছি। ওই দেখো তুৃমি কি যেনো বলবে বলছিলে বলো (মেঘ)

বলছি যে (তার আগেই মাহি এসে মেঘলাকে ডাক দিলো)

কিরে যাবি না দেরি হয়ে যাবে তো (মাহি)

কিন্তু আমি (মেঘলা)

কোনো কিন্তু নয় চলতো (মাহি)

আরে মাহি ও আমায় কিছু বলতে চাইছিলো ওকে বলতে দে (মেঘ)

না ভাইয়া ও কিছু না তুই চল তো। এই বলে মাহি মেঘলাকে টেনে ওখান থেকে নিয়ে আসলো।

তুই এটা মোটেও ঠিক করলি না মাহি আমায় বলতে দিলি না কেনো (রেগে বলল মেঘলা)

রাগ করিস না প্লিজ,,, তুই মেহরাব এর কথা বললে ভাইয়া অনেক কষ্ট পেতো এই বিয়েতে ভাইয়া অনেক খুশি আর ভাইয়ার খুশির জন্য আমি সব করতে পারবো (মাহি)

হ্যাঁ তাই বলে নিজের ভালোবাসা কে কুরবানি করবি,,, না নিজে বলছিস না আমায় বলতে দিচ্ছিস কেনো এমন করছিস একটু বোঝার চেষ্টা কর আমরা সকলে মিলে বোঝালে মেঘ বুঝবে (মেঘলা)

ভার্সিটী এসে পড়েছে তুই যা আমার মেহরাব এর সাথে কথা আছে(মাহি)

তুই এটা ঠিক করছিস না মাহি তুই নিজের ভাইয়ের ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে আমার ভাইকে কষ্ট দিতে পারিস না (মেঘলা)

কি বলতে চাইছিস তুই তারমানে এখন আমি তোর ভাইকে কষ্ট দিচ্ছি বলে তুইও আমার ভাইকে কষ্ট দিবি??(মাহি)

মাহি?? এসব কি বলছিস তুই পাগল হয়ে গিছিস?? আমি মেঘকে ভালোবাসি আমি কেনো ওকে কষ্ট দেবো (মেঘলা)

আমি তোর ভাইকে কষ্ট দিচ্ছি বলে তাই (মাহি)

শোন না মাহি একটু বোঝার চেষ্টা কর ঠান্ডা মাথায় একটু ভাব তুই যা করছিস এসব ঠিক না,,, আচ্ছা মেঘকে বলতে হবে না আমারা তো জয় স্যারকে বলতে পারি ওনি নিশ্চয়ই আমাদের সাহায্য করবে ওনি তো জানে না যে তুই মেহরাবকে ভালোবাসিস (মেঘলা)

ও তারমানে আমি এখন তোর কাছ থেকে ঠিক ভুল শিখবো??(মাহি)

মাহি কি হয়েছে তোর এমন করছিস কেনো বল আমায়(মেঘলা)

কিছুই হয়নি আমার তুই যা,,।।

যা ইচ্ছে কর তুই আর কিচ্ছু বলতে আসবো না আমি (এই বলে মেঘলা চলে গেলো)

সরিরে আমি জানি আমি যা করছি ঠিক করছি না তুই আমায় ভুল বুঝিস না আমি কি করবো বল আমারও তো কিছুই করার নাই। চোখের পানি মুছে নিয়ে মেহরাব এর কাছে চলে গেলো মাহি।

৫১,,,,,
মাহি তুমি কি পাগল হয়ে গেছো?? এসব কি বলছো,, অসম্ভব আমি তোমাকে ছাড়তে পারবো না,,, দেখো আমরা সবাই মিলে ভাবলে কিছু না কিছু অবশ্যই করতে পারবো বলো প্লিজ তুমি এভাবে বলো না (মেহরাব মাহির হাত ধরে বলল)

আমি ঠিকি বলছি মেহরাব এখন আর কিছুই করার নেই আগামি ৮ তারিখ আমার এনগেজমেন্ট জয় স্যারের সাথে (মাহি)

তুৃমি বললেই হলো আমি এটা কিছুতেই হতে দেবো না৷ তুমি এটা করতে পারো না মাহি আমি তোমাকে ভালোবাসি কেনো বুঝতে চাইছো না তুমি (মেহরাব)

আপনি কেনো বুঝতে চাইছেন না মেহরাব,,, ভাইয়া আপনাকে মানবে না আর আমিও ভাইয়াকে কষ্ট দিতে পারবো না তাই (মাহি)

তাই তোমার ভাইয়ার কথায় বিয়ে করে নেবে তাইতো?? তাহলে আমার কি হবে বলো আমি কি তোমায় ভালোবেসে ভুল করেছি?? বলো (মেহরাব)

কেউ কিছুই করেনি মেহরাব আমাদের ভাগ্যে এটাই লেখা ছিলো হয়ত উপর আলা এটাই চাইছে(মাহি)

না কেউই এটা চাইছে না চাইছো তো তুৃমি।। ওকে ওকে ঠিক আছে তুমি চাইছো তো ওই জয় কে বিয়ে করতে ঠিক আছে করো আর তারপর যেটা হবে তার জন্য আফসোস করো না যেনো (মেহরাব চোখ মুছে বলল)

ক,,,কি করবেন আপনি দ,,দেখুন আপনি কিছুই করবেন না কিন্ত (মাহি কেঁদে বলল)

কেনো কেনো কিছু করবো না,, আর আমি করলেও বা তোমার কি তোমার তো কিছু না।তুমি যাও বিয়ে করো,, আর আমিও নিজে দাড়িয়ে তোমার বিয়ে দেখবো আমিও দেখতে চাই তুৃমি আমার সামনে কীভাবে অন্য একটা ছেলেকে আংটি পরাও (মেহরাব)

মেহরাব(করুন গলায় বললো মাহি)

আসি ৮তারিখে দেখা হবে এই বলে মেহরাব চলে গেলো।

আর মাহি ওখানেই হাঁটু গেরে বসে কাঁদতে লাগল।

হয়েছে শান্তি এখন?? আরে কাদছিস কেনো তোরতো খুশি হওয়ার কথা। চল শপিং করবি না আর কয়দিন পর তোর বিয়ে কত কিছু করা বাদ এখোনো (মেঘলা)

মেঘলা প্লিজ এভাবে বলিস না আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে (কাদতে কাদতে বললো মাহি)

বাড়িতে,,,,,
মেঘ এসেছিলো আমাদের ইনভাইট করে গেছে মাহির এনগেজমেন্ট এর। (মহসীন)

আমি জানি(মেহরাব)

তুমি যাবে না,, আমরাও যাবো না (মহসীন)

না বাবা তুমি যাবে আর আমিও আমরা সবাই যাবো আর এটাই ফাইনাল (এই বলে মেহরাব রুমে চলে গেলো)

কতটা কষ্ট পেয়েছে আমার ছেলেটা এমন হতে থাকলে ছেলেটা মরে যাবে প্লিজ কিছু করো (রুপালি)

আমার কিছুই করার নাই,,, এবার যা করার মেঘই করবে(মহসীন)

এনগেজমেন্ট এর দিন,,,,

চলবে,,,,,,