you are only my queen part-25+26

0
3807

#you_are_only_my_queen
Faria Siddique
Part 25

আমি যথেষ্ট সম্ভব নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করলাম আর মন ফিয়ে উপস্থাপনা করতে লাগলাম।আমি নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলাম কিন্তু ওই লোকটা কে দেখলেই আমার পায়ের রক্ত মাথায় উঠে যাচ্ছে।ভাইয়াদেরও তাই।আমি কোনরকম অর্ধেক উপস্থাপনা করে আমি একটা ফাকা রুমে চলে আসলাম।আমার পিছনে পিছনে বড়ভাইয়াও আসলো। এসেই আমি রাগে হাতের কাছে যা পেলাম ছুড়ে মারলাম।এর মধ্যেই বড়ভাইয়া এসে আমাকে একটা চেয়ারে বসিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরল।
আমি বড় বড় শ্বাস নিতে লাগলাম।
বড়ভাইয়াঃশান্ত হ টুকু শান্ত হ।
আমিঃভা ভা ভাই ভাইয়া।
বড়ভাইয়াঃচুপ কোন কথা বলবি না।চুপ করে থাক।
আমি আর কোন কথা না বলে চোখ বন্ধ করে ভাইয়ার কাধে মাথা রাখলাম।

প্রায় ১০ মিনিট পর আমি চোখ খুললাম।
খুলে দেখি জনি ভাইয়া আর ছোট ভাইয়া আমাদের সামনে বসে আছে।
আমি উঠে আমার সাজ ঠিক করতে লাগলাম।
সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি বুঝতে পেরে বললাম
আমিঃতোমরা জানো যে আমার আবেগ বেশিক্ষন থাকে না।ওই লোকটা কে দেখে আমি আমার রাগ কন্ট্রোল করতে পারি নাই।কিন্তু এখন আমি ঠিকাছি।
কেউ আর কিছু বলল না।
আমিঃওই দিকের কি খবর।অনুষ্ঠান কেমন চলছে।কেউ সন্দেহ করবে আমাদের এভাবে দেখলে।আর শুনো আমার মনে হচ্ছে না মনে হচ্ছে না আমি শিওর যে ওই লোকটাই নারী পাচারের মাস্টার মাইন্ড।
বড়ভাইয়াঃআমারও তাই মনে হচ্ছে।
জনিভাইয়াঃকিন্তু কোন প্রমান নাই যে।
আমিঃ প্রমান তো একটু পরেই আমি যোগাড় করে ফেলব।
বড়ভাইয়াঃতুই একা কিচ্ছু করবি না টুকু।
আমিঃভাইয়া আমি একজন অর্ধ ভ্যাম্পায়ার ওই লোক চাইলেও আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।আর হা জনি ভাইয়া ওই লোকটার নামে কোন কেইস ফাইল করার দরকার নাই।যা করার আমিই করবো।
জনি ভাইয়াঃফারিয়া তুই একা কিছুই করবি না।তুই আর ফারহান যাবি লোকটার পিছনে আর আমি আর ফারদিন যাবো আজকে যেই মেয়েগুলাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে তাদের পিছনে।
আমিঃহুম তাই ঠিক হবে।
বিশাল আর ভাবিনঃআর আমরা।??
দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি বিশাল আর ভাবিন দাঁড়িয়ে আছে।
বড়ভাইয়াঃতোরা দুইজন এদিকটা সামলা।
বিশালঃ ওকে।
আমরা কথা বলার মাঝখান দিয়েই জনি ভাইয়ার কল আসলো।
জনি ভাইয়া কল ধরলো।
জনি ভাইয়াঃ কি বলছো!!!আচ্ছা তোমরা ওদের পিছনে যাও আর আমাদের লোকেশান পাঠাও।
এই বলেই ভাইয়া কল কেটে দিল।
জনিভাইয়াঃওরা নাকি অনেক গুলা মেয়েকে ধরে নিয়ে গেছে। ফারদিন তারাতারি চল আমাদের হাতে সময় নাই।
এই বলেই বড়ভাইয়া আর জনি ভাইয়া চলে গেলো।
আমিঃ বিশাল আর ভাবিন তোরাও যা।
তারাও চলে গেলো।
আমিঃছোটভাইয়া তুমি বস আমি চেঞ্জ করে আসছি।
এই বলে আমি চেঞ্জ করতে চলে গেলাম কারন শাড়ী পরে ফাইট করা সম্ভব না তাই আমি একটা সাদা কালারের শার্ট আর কালো কালারের প্যান্ট পরে প্পল্মন্যক।
চুলগুলাকে জুটি করে নিলাম তারপর বাসা থেকে আনা দুইটা রিভলবার নিয়ে ভাইয়ার কাছে গেলাম তারপর ভাইয়াকে একটা রিভলবার দিলাম আর আমি একটা নিয়ে বের হয়ে পরলাম।

আমরা বের হয়ে দেখি বিশেষ অতিথি যাওয়ার জন্য বের হচ্ছে কারন আমাদের অনুষ্ঠান শেষের পথে।উনি বের হয়ে সবার থেকে বিদায় নিয়ে যেই গাড়িতে উঠবে আমাদের লোকেরা তাকে অজ্ঞান করে ফেলল।তারপর আমি আর ভাইয়া ওনাকে নিয়ে আসলাম আমাদের পুরান বাড়ীতে।

অন্য দিকে

জনি ভাইয়া আর বড়ভাইয়া মেয়েগুলাকে যেখানে নেওয়া হয়েছে সেখানে পৌঁছে গেছে।
জনি ভাইয়াঃতোমরা সবাই পিছন দিক দিয়ে যাও আমি আর ফারদিন সামনে দিয়ে ডুকছি।
তারপর তারা সামনে দিয়ে ডুকে সব মেয়েদের ছাড়িয়ে নিল আর সব লোককে গ্রেফতার করে নিয়ে গেলো।
বড়ভাইয়াঃচল এবার আমরা টুকুদের কাছে যাই।
জনিভাইয়াঃ কিন্তু ওরা কোথায় আছে কি করে জানবো?
বড়ভাইয়াঃওরা কোথায় আছে আমি জানি। চল।
এই বলে ভাইয়ারা মেয়েগুলোকে থানায় দিয়ে এসে আমাদের কাছে চলে আসল।

রুদ্র সারা ক্যম্পাস খুজেও আমাকে না পেয়ে রাগে বোম হয়ে বাড়ীতে চলে আসে।
তারপর কাউকে কিছু না বলে নিজের রুমে চলে গেলো গিয়ে দরজা বন্ধ করে ভাংচুর শুরু করে দিল।
রুদ্রঃআহহহহহহহহহহহহহহহহহ(রেগে চিল্লিয়ে)
রুদ্রর চিল্লানি শুনে সবাই চলে আসলো।
নিহালঃরুদ্র কি হয়েছে??
কথাঃবাবা কি হয়েছে??দরজা খুল আমাদের বল কি হয়েছে?
আরমানঃআমার মনে হয় ফারিয়া ছাড়া রুদ্রকে কেউ শান্ত করতে পারবে না।
কথা তুমি ফারিয়াকে কল দাও।
কথা তারাতারি আমাকে কল করলো।
রুদ্রঃতুমি কেন আমাকে বুঝ না পাখি।তুমি কেন আমার কাছ থেকে না বলে চলে গেলে.(রাগে লাল হয়ে বলল)।আমার কিচ্ছু ভালো লাগছে না।তুমি কই পাখি?তুমি কই।

অন্যদিকে

কথা খান আমাকে কল করে আমাকে সব বলল। আমি এবার চিন্তায় পরে গেলাম।আমি ভাইয়াদের সব কিছু বললে তারা আমাকে রুদ্রের কাছে যেতে বলল।আমি দেরি না করে তারাতারি খান ভিলাতে চলে আসলাম।
আমি এসে রুদ্রের রুমের দিকে গেলাম।
আমাকে দেখে সবাই দৌড়ে এলো।
নিহালঃফারিয়া মা দেখ না আমার ছেলেটা কিছুতেই দরজা খুলছে না।
আরমানঃতুমিই কিছু করতে পারবে।
কথাঃআমার ছেলেটাকে প্লিজ বাচাও।
আমি এবার দরজার কাছে গেলাম।
গিয়ে একটা ধাক্কা দিয়ে বললাম
আমিঃরাজা মশাই আপনি কি দরজা খুলবেন??
আমি এই কথা বলার সাথে সাথে রুদ্র দরজা খুলে একটান দিয়ে আমাকে রুমে ডুকিয়ে দরজা আবার বন্ধ করে দিল।
এই অবস্থা দেখে কথা দরজা ধাক্কাতে গেলেই রুদ্রের দাদুভাই মানা করে।
আরমানঃতুমি যেও না।
কথাঃকিন্তু বাবা ফারিয়ার যদি কোন ক্ষতি করে দেয়?
আরমানঃনা ও ফারিয়ার কোন ক্ষতি করবে না।আর ফারিয়ার কাছে গেলেই ও শান্ত হবে।
নিহালঃ আমার এই পাগল রাগি ছেলেটাও শেষে প্রেমে পরে গেলই।
বলেই মুচকি হাসলো।

চলবে……

#you_are_only_my_queen
Faria Siddique
Part 26

আমিঃআহহহহহহহ।এভাবে কেউ টান দেয়…..
রুদ্রঃকই ছিলি তুই?তুই জানিস না আমি তোকে না দেখে থাকতে পারি না?(রেগে চিল্লিয়ে)
আমিঃআরে বাবা আমি একটা কাজে গিয়েছিলাম।আর এসব পাগলামির মানে কি?
রুদ্রঃআমি পাগল তো তোমার জন্যই হয়েছি।
আমিঃশুধু পাগল না।শয়তান পাগল।
রুদ্রঃদেখ এখন যেহেতু তুম চলেই এসেছ তাহলে তোমাকে তো শাস্তি পেতেই হবে। (বাকা হেসে)
আমার এবার ভয় লাগতে লাগলো। না জানি কি করে বসে।
রুদ্রঃযা ইচ্ছা ভাবো।আজকে আর তোমাকে ছাড়ছি না।
আমিঃদেখ রুদ্র আমাকে না যেতে হবে।
আমার এই কথা বলার সাথে সাথে রুদ্র রেগে আমাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো। তারপর আমার গলায় তার সরু দাতগুলা বসিয়ে দিল।
আমি সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে গেলাম।
রুদ্রঃসরি ময়নাপাখি তোমাকে আমার কাছে রাখার জন্যই এরকম করলাম।যদি এরকম না করতাম তাহলে তুমি আমার কাছে থাকতেই চাইতে না।
এই বলে আমাকে শুইয়ে দিয়ে রুদ্রও আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরল।

প্রায় ২ ঘন্টা পর আমার জ্ঞান ফিরল। তাকিয়ে দেখি রুদ্র আমার পাশে আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে। আমার প্রচুর রাগ হল।
আমিঃআমাকে ব্যাথা দিয়ে খুব আরামে ঘুমানো হচ্ছে তাই না। দাড়াও মজা দেখাচ্ছি।
এই বলেই আমি রুদ্রের গালে একটা জোরে কামড় দিলাম।
রুদ্রঃআহহহহহহহহ।
আমি হাসতে হাসতে শেষ।
আমিঃকি কেমন দিলাম? আমাকে তো আরও জোরে কামড় দিয়েছিলে। এবার বুঝ মজা।
রুদ্র কিছু না বলে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমিঃএই যে রাজা মশাই কি হল বোবা হয়ে গেলে নাকি?
রুদ্র তাও কোন কথা বলল না।
আমি আবার বললাম
আমিঃকি হল…………
আর কিছু বলার আগেই আমার ঠোঁট নিজের ঠোঁটের আয়ত্তে নিয়ে নিল।
আমি হাত পা ছুড়াছুড়ি করতে লাগলাম,ধাক্কাও দিতে লাগলাম কিন্তু কোন কাজ হল না।
প্রায় ১০ মিনিট পর আমি ছাড়া পেলাম।
আমি জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলাম।
তারপর আমি শুয়া থেকে উঠে এক দৌড় দিয়ে বাইরে চলে আসলাম।
বাইরে এসে দেখি কেউ নেই। সবাই দবার রুমে।
আমিঃযাক বাবা বেচে গেলাম।
এই বলে আমি এক দৌড় দিয়ে বাইরে চলে আসলাম।তারপর গাড়ি নিয়ে ভাইয়াদের কাছে যাওয়ার জন্য বের হলাম।

আর এদিকে
রুদ্রঃনা ময়নাপাখি আমার পক্ষে আর তোমার কাছ থেকে দূরে থাকা সম্ভব নয়।কালকেই তোমার বাড়ীতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবো।একবার বিয়েটা হয়ে যাক তারপর দেখি তুমি কি করে পালাও।(মুচকি হেসে)
বলেই রুদ্র ঘুমিয়ে পরল।
আর আমি চলে আসলাম ভাইয়াদের কাছে।
এসে দেখি লোকটার এখনও জ্ঞান ফিরেনি।
আমাকে দেখে সবাই আমার দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে।
আমিঃকি হল এভাবে তাকিয়ে আছ কেন?
বড়ভাইয়াঃনা কিছু না।
ছোটভাইয়াঃযা হবার বাসায় গিয়ে হবে
আমিঃকি হবে বাসায় গিয়ে।?
জনি ভাইয়াঃ সেটা বাসায় গেলেই বুঝতে পারবি
আমিঃও আচ্ছা।
আমাদের কথার মাঝেই লোকটার জ্ঞান ফিরল।
লোকটা চোখ খুলে আমাদের দিকে তাকালো।
অজানাঃকে তোমরা? (রাগিভাবে)
আমিঃআ আ একদম না।আমার সামনে আমার ভাইয়াদের সাথে কেউ রেগে তো দূরে থাক কেউ চোখ তুলে পর্যন্ত কথা বলে না।তাই আওয়াজ নিচে।
অজানাঃকে তোমরা? আর আমাকে এভাবে ধরে নিয়ে আসলে কেন?
বড়ভাইয়াঃআমাদের এতো তারাতারি ভুলে গেলেন চাচ্চু।
চাচ্চু শব্দটা শুনার পর অজানার চোখগুলা বড় হয়ে গেলো।
অজানাঃফারদিন!!ফারহান!!আর ফারিয়া!!(অবাক হয়ে)
ছোটভাইয়াঃযাক তাহলে চিনতে পেরেছেন তাহলে।
আমিঃআমি তো ভাবছিলাম আমাদের মনেই পরবে না আপনার।
জনি ভাইয়াঃযাক আমাদের আর কস্ট করতে হল না।

আসুন এবার অজানা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
(সাইফুল সিদ্দিকী। আমার একমাত্র চাচা।আমাদের তিনভাইবোনের ধারণা তিনিই আমার বাবা মাকে মেরেছেন এবং আমাদেরকেও মারার চেস্টা করেছেন।কিন্তু আমরা তিন ভাইবোন ভাগ্য ক্রমে বেচে যাই।
কিন্তু তিনি মনে করেছেন আমরা মারা গেছি।তিনি আমাদের খুব ছোটবেলায় দেখেছিলেন তাই আমাদের এখন দেখও চিনতে পারেন নি।)
এবার গল্পে যাওয়া যাক।

সাইফুল সিদ্দিকীঃতোরা তিনজন বেচে আছিস?(রেগে)
বড়ভাইয়াঃতোকে মারার জন্য তো আমাদের বেচে রাখিয়েছে আল্লাহ।
ছোটভাইয়াঃশুধু আমাদের না তুই আরও হাজার হাজার মানুষের জীবন নস্ট করে দিয়েছিস।
আমিঃশুধুমাত্র টাকার জন্য।
সাইফুলঃতোদের মা বাবাকেও আমি টাকার জন্যই মেরেছিলাম।আর তোদের ও মারব।
আমরা সবাই একসাথে হেসে উঠলাম।
আমিঃআগে তো নিজে বাচ!!তারপর আমাদের মারিস।
সাইফুলঃতার মানে আমার এতদিনের অজানা শত্রু তোরাই ছিলি!!!!
আমিঃকোন সন্দেহ আছে নাকি।
বড়ভাইয়াঃনা অনেক কথা হয়ে গেছে।এবার তোর মরার সময়।
সাইফুল সিদ্দিকী আর কিছু বলার আগেই বড়ভাইয়া ওর মাথা বরাবর একটা গুলি করলো।
আমি সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেললাম।
বড়ভাইয়াঃজনি তুই কি জানিস তোকে এখন কি করতে হবে?
জনি ভাইয়াঃ হুম।খুনটাকে এক্সিডেন্ট বলে কেসটা ধাপাচাপা দিতে হবে।
বড়ভাইয়াঃগুড।
আমিঃভাইয়া চল এখান থেকে।
তারপর আমরা সবাই বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় আসতে আসতে আমাদের গভীর রাত হয়ে গেলো।
আমরা এসে ফ্রেশ হয়ে নিচে সবাই খেতে গেলাম।
সবাই খাবার টেবিলে বসে আছে।
বিশালঃতা যা হয়েছে ভালই হয়েছে।
ভাবিনঃহুম।
বড়ভাইয়াঃএসব বিষয়ে আর কোন কথা হবে না।
আমিঃহুম।
বড়ভাইয়াঃটুকু আমার একটা জরুরি কথা বলার আছে।
আমিঃহুম বল।
বড়ভাইয়াঃআমি না ছোটু বলবে।
আমিঃবল।(আমি খেতে খেতে বললাম)
ছোটভাইয়াঃকালকে তোকে দেখতে আসবে..
আমি এই কথা শুনেই বিষম খেলাম। আর সবাই মিটিমিটি হাসতে লাগলো।

চলবে………..