#Three_Gangsters_Love.
#Sumaiya_Moni.
#Part_19.
সকালে…..
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মনোরম দৃশ্য দেখার জন্য সবাই এখানে আসে। এখানে আসার জন্য ইশা বেশি জোর করেছিল। তাই বাধ্য হয়ে এখানে আসতে হয় তাদের। কাপ্তাই বাঁধের স্পিলওয়ে দেখে সবাই মুগ্ধ। বাঁধের উপর ১৬টি কপার যুক্ত এবং সাতশো পঁয়তাল্লিশ ফুঁট দীর্ঘ পানি নির্গমপথ রয়েছে। চার দিক থেকে পানি পড়া বিকট শব্দ হচ্ছে । ব্রীজের রেলিং ধরে নিচের দিকে তাকিয়ে পানির পড়ার দৃশ্য দেখছে সবাই। সাব্বির ভিডিও করছে। এটা ভিডিও করা নিষেধ। কিন্তু ওদের কিছু বলছে না সেখান কার আর্মি রা।
প্রায় অনেকক্ষন সময় কাটায় সেখানে থেকে। পানি দেখতে দেখতে হঠাৎ ইশার ফোন বেজে ওঠে। শব্দের কারণে ইশা ব্রীজ থেকে নেমে রাস্তার পাশে আসে। ইশার আম্মু কল দিয়েছে। ইশা ফোন রিসিভ করে কথা বলে। অনেক্ষণ কথা বলার পর ফোন কেটে পিছনে ঘুরতেই সাব্বিরকে ওর সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে চমকে ওঠে। সাব্বির ঠোঁটে চওড়া হাসি ফুটিয়ে বলে,
-“তা! শ্বাশুডির সাথে কথা কইলা নাকি?”
ইশা কথাটা শুনা মাত্রই প্রচণ্ড রেগে যায়। রাগে গা যেনো জ্বলে যাচ্ছে। দাঁত,মুখ খিঁচে চিবিয়ে চিবিয়ে বলে,
-“নিজের সীমার মধ্যে থাকুল। লিমিট ক্রস করার চেষ্টা করবেন না।”
-“লিমিট ক্রস কই করলাম। আমি তো সত্য কথাই কইছি।”
-“কী সত্য কথা বলেছেন আপনি? কেন আমার পিছে পড়ে আছেন? দুনিয়াতে কী আর কোনো মেয়ে নেই! নাকি ঐ মেয়েরা আপনাকে পাত্তা দেয় না? সেই দিন রাত থেকে আজ পর্যন্ত আপনি আমাকে কম টর্চার করেন নি। অনেক টর্চার করেছেন আমাকে। আপনি বুঝতে পারছেন না আপনার প্রতি আমরা রুচি নেই। তারপরও কেন আমার পিছনে পড়ে আছেন আপনি? সমস্যা কী আপনার? ছেলে দেখেছি। বাট আপনার মতো বেহায়া,অসভ্য ছেলে দেখিনি। কয়দিনের জন্য এ বাড়িতে বেড়াতে এসেছি আমি। কিন্তু আমি যদি জানতাম আপনার মতো বেহায়া লোক এ বাড়িতে আছে। তাহলে আমি কখনোই এখানে বেড়াতে আসতাম না।” এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো বলে থেমে গিয়ে নিঃশ্বাস নিচ্ছে ইশা। গা তখনো রাগে থরথর করে কাপছিল।
সাব্বির মাথা নত করে ইশার বলা কথা গুলো শুনছিল। কারণ ইশার চোখের দিকে তাকাতে জড়তা কাজ করছে ওর। হয়তো ইশা দেখে ফেলবে সাব্বিরের লুকানো চোখের জল গুলো।
ইশা আবার দম দিনে বলে,
-“যদি আমাকে ভালোবাসার কথা মাথাতেও এনে থাকেন। তাহলে ভুলে যান। আপনার মতো বংশ পরিচয়হীন,অশিক্ষিত লোক কে আমি কখনোই ভালোবাসা তো দূর জীবন সঙ্গী হিসাবে ভাবি না। দয়া করে আপনি আমার সামনে আর আসবেন না।”
সাব্বির লাস্টের কথাটা শুনে মাথা নিচু রেখেই সেখান থেকে চলে যায়। তবে রুদ্রদের কাছে নয়। গাড়ি নিয়ে অন্য কোথাও চলে যায়। ইশা আশেপাশে তাকিয়ে নিজের রাগকে কন্ট্রোল করে।এত দিন যা বলতে চেয়েছিল তা আজ বলে দিয়েছে । এখন মন অনেক টাই হালকা লাগছে। চলে আসে রিমিদের কাছে। ইশা চলে যাওয়ার পর আড়াল থেকে ফাহিম বের হয়। এতক্ষণ ফাহিম আড়াল থেকে ইশার সব কথা শুনতে পেয়েছে ।
রিমিদের সাথে যখন ছবি তুলছিল তখনি ফাহিমের নজর পড়ে ইশা ও সাব্বিরের দিকে। সাব্বির উল্ট দিক মুখ করা ছিল। আর ইশার চেহারা বুঝা যাচ্ছিল। ইশা কোনো কারণে রেগে রেগে সাব্বিরের সাথে কথা বলছে। ফাহিমের মনে সন্দেহ জাগে। কী হয়েছে শুনার জন্য ফাহিম ওদের পাশের একটি বড় গাছের পিছনে লুকিয়ে পড়ে। তারপর সবটা শুনে। ফাহিমের রাগ হয় ।
চাইলেই ফাহিম সব উত্তর এখনি দিতে পারত। কিন্তু ফাহিম তা করেনি।
সন্ধ্যা হতে চললো। এর মধ্যে রুদ্র,অভ্র,শুভ্র আর ফাহিম অনেক বার সাব্বিরের ফোনে কল দিয়েছে। কিন্তু ফোন বন্ধ পেয়েছে। শেষে ওরা সন্ধ্যার দিকে বাসায় চলে আসে। বাসায় এসেও তারা সাব্বিরকে পায় না। রুদ্র রা টেনশনে পড়ে যায়। সবারি টেনশন হচ্ছে । কিন্তু ইশা স্বাভাবিক ছিল। ওর কোনো মাথা ব্যথা নেই বললেই চলে। ফাহিম আড়চোখে ইশার দিকে রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করছিল। এরি মধ্যে বডিগার্ড রা চারদিক খুঁজতে বের হয়ে গেছে সাব্বিরকে। দশটা নাগাত সাব্বির বাসায় ফিরে। সাব্বিরকে দেখে সবার জান ফিরে আসে। কোথায় গিয়েছিল সবাই এটা,ওটা প্রশ্ন করলে সাব্বির কোনো উত্তর না দিয়ে রুমে চলে আসে। আলতাফ চৌধুরী সাব্বিরকে ডিস্টার্ব করতে নিষেধ করে। যা বলার সকালে বলতে বলে। সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। গভীর ঘুমে সবাই আছন্ন। শুধু একজন ব্যক্তির চোখে ঘুম নেই। আর সে হচ্ছে সাব্বির । সাব্বির কখনোই ড্রিঙ্ক করেনি। আজ সাব্বির ড্রিঙ্ক করছে। বোতল অর্ধেক করে ফেলেছে। কিন্তু তারপরও চোখে ঘুম নেই । চোখ দুটি লাল হয়ে আছে। রাত গভীর হতে শুরু করে। গভীরতা শেষ হয়ে ফজরের আজন ভেসে আসে দূরের মসজিদ থেকে। কিছুক্ষণ পর চার দিকে ভোরের আলো ফুটতে শুরু করে। সাব্বির বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ে।
লুকিয়ে ইশার রুমে আসে সাব্বির। ডুবলিকেট চাবি দিতে দরজা খুলে শব্দহীন পায়ে ওর রুমে প্রবেশ করে। রুম পুরা অন্ধকার । ডিম লাইটের আলোই ইশার ঘুমন্ত মুখটা সাব্বির স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিল। আস্তে করে সাব্বির আগে ইশার পা বাঁধে। তারপর হাত,শেষে মুখে একটি রুমার বেঁধে দেয়। বাঁধার পর্ব শেষ হলে সাব্বির লাইট অন করে।
সাব্বির ইশার গালে হাত রেখে আস্তে আস্তে ইশাকে ডাক দেয়। ইশা পিটপিট করে চোখ খুলে সাব্বিরকে ওর রুমে দেখতে পেয়ে জোরে চিৎকার করতে শুরু করে। কিন্তু চিৎকার তো দূর হাত পাও নাড়াচাড়া করতে পারে না। চোখ দুটো বড় বড় করে সাব্বিরের দিকে তাকিয়ে আছে । সাব্বির রাগী দৃষ্টি ভঙ্গিতে তাকিয়ে আছে ইশার দিকে। মুখ দিয়ে গোঙ্গাতে শুরু করে ইশা। হয়তো বলতে চাইছে এভাবে কেন বেঁধে রেখেছেন? কী করতে চাইছেন? কিন্তু প্রশ্ন গুলো মুখের ভেতরে রয়ে যায়।
সাব্বির এক পা বিছানার উপরে উঠিয়ে হাঁটুর উপর এক হাত রেখে রাগী কন্ঠে বলে,
-“আমি যা বলবো তাই তোমাকে শুনতে হবে।”
ইশা চট করেই মাথা দুলিয়ে না,না বলে। এটা দেখে সাব্বিরের রাগ হয়। সাব্বির ইশার গাল চেপে ধরে বলে,
-“শুনবি না?”
ইশা এবারও না বলে।
-“লাস্ট বার বলছি। শুনবি কী না?”
ইশার এবারও একি উত্তর ‘না’।
সাব্বির এবার ইশার গাল ছেড়ে দেয়। ইশার শরীরের দিনে চোখ বুলায়। এটা দেখে ইশার বুক ধুক করে ওঠে। ইশা শার্ট ও জিন্স পড়া ছিল । সাব্বির ইশার শার্টের বোতাম একটি একটি করে খুলতে লাগলো। ইশা মাথা দুলিয়ে বার বার না,না বলছে। পেটের উপর থেকে আরেকটু উপরের বোতাম গুলো খুলতে নিলেই ইশা মাথা দুলিয়ে হ্যাঁ, হ্যাঁ বলতে শুরু করে। এক চিৎকার দিকে বিছানায় ওঠে বসে ইশা।
রুমের চার দিক তাকিয়ে সাব্বিরকে খুঁজতে শুরু করে। ঘেমে একা কার! টেবিল লাইট জ্বালিয়ে ঢকঢক করে টেবিল থেকে জগ হাতে নিয়েই পানি খেতে লাগলো। জগ রেখে নিজেকে স্বাভাবিক করছে ইশা। এতক্ষন যে ভয়ংকর সপ্ন দেখছিল ইশা। দোয়া পড়ে আবারও ঘুমিয়ে পড়ে।
সকালে যথারিতি সবাই টেবিলে নাস্তা করছে। কিন্তু সাব্বির সেখানে নেই।সাব্বির তখনো ঘুমিয়েছিল ওর রুমে। ফাহিম অনেক বার ডাকতে গিয়েও ফিরে আসে । কারণ ভেতর থেকে কোনো সাড়া শব্দই পাচ্ছিল না সাব্বিরের। সবাই সাব্বিরকে একা ছেড়ে দেয়। আজ ওরা কোথাও বের হবে না। বাসায় সময় কাঁটাবে। রিমি,সিমি,নিধি,ইশা বাগানে বসে গল্প করছে। রুদ্র, অভ্র,শুভ্র রা ল্যাপটপে অফিসের কাজ করছিল। আলাতাফ চৌধুরী তার রুমে শুয়েছিল।ফাহিম রিমি দের থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে দাঁত দিকে নখ কাঁটছিল। সাব্বিরের কথা ভাবছে। ইশাকে মনে মনে গালি দিতে মিস হচ্ছে না ফাহিমের। কিছুক্ষণ পর সাব্বির বাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়ি নিয়ে বাহিরে বেড়িয়ে যায়। ফাহিম পিছু ডাকলেও সাব্বির ওর ডাক কানে তুলে না চলে যায়।
দুপুর তিনটে বাজে। সাব্বির বাসায় আসেনি। সবাই তখন খেতে বসেছে। কাল থেকে সাব্বিরের চাল-চলন,স্বভাব সবার কাছে অন্য রকম লাগছে।আলতাফ চৌধুরী বুঝতে পারে কিছু একটা হয়েছে সাব্বিরের। খাওয়ার এক পর্যায় সাব্বির বাসায় ফিরে। ড্রইংরুম থেকে নিজের রুমে যেতে নিলে সবার নজর পড়ে সাব্বিরের দিকে। সরাই রিতিমত অবাক! ইশা খাচ্ছিল। খাওয়া ছেড়ে সবাইকে সামনের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ইশাও সামনের দিকে তাকায়। সাব্বিরকে দেখে ইশাও সকড! সাব্বির ঐ খানে দাঁড়িয়ে সার্ভেন্ট দের উদ্দেশ্যে বলে,
-“আমার খাবার রুমে দিয়ে যাও।”বলেই রুমে চলে আসে সাব্বির।
আলতাফ চৌধুরী অবাক কন্ঠে বলে,
-“এ তো দেখছি চমৎকার হয়ে গেল! যে ছেলে এতদিন ঘেও,ক্ষ্যাতের মতো চলতো। আজ সে কি না মর্ডান,স্মার্ট হয়ে গেছে।”
শুভ্র বিরক্তি ভঙ্গিতে বলে,
-“হয়েছে কী সাব্বিরের বুঝলাম না!”
-“হুম,সেটাই।” অভ্র বলে।
-“ও’কে ওর অবস্থায় ছেড়ে দেও।সাব্বির এখন ম্যাচিউরিটি শিখেছে। ও ওর খেয়াল খুশি মতো চলুক।” রুদ্র বলে।
সবার খাওয়া শেষ।রিমি,সিমি,নিধি রুমে আসে। রুদ্র রা ড্রইংরুমে বসে আছে। ফাহিম সাব্বিরের রুমে আসে। সাব্বির তখন পিস্তলে গুলি লোড করছিল। ফাহিম হেসে হেসে সাব্বিরকে প্রশ্ন করে,
-“ভাই,আপনে এমন ডাসিং,মার্ট,হিমসাম হইলেন কেমনে? তবে আপনেরে এখন অনেক হেবি লাগতাছে। যে কোনো মেয়েরাই আপনার উপর ক্রাশ খাইবো।”
-“তো?” পিস্তলের দিকে তাকিয়ে ।
-“তো কী ভাই। প্রপাজ করলে বিয়া করে নিবেন।”
-“তারপর? ”
-“ভাই মোর ইংলিশ কইডা ঠিক কইরা দিলেন না যে? কী হইছে আপনার?”
সাব্বির এবার ফাহিমের দিকে তাকায়। তখনি নজর পড়ে দরজার দিকে। ইশা আগে থেকে দরজার সামনে দু হাত বগলদাবা করে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ওর ঠোঁটে ছিল মুচকি হাসি। সাব্বির চোখ সরিয়ে নিয়ে ফাহিমের উদ্দেশ্যে বলে,
-“চল শিকার করতে যাই!”
ফাহিম হা করার আগেই ইশা পিছন থেকে বলে ওঠে,
-“আমিও যাব।”
কথাটা শুনে ফাহিম ইশার দিকে ঘুরে তাকায়। সাব্বিরের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই ইশার কথায়। সাব্বির বাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়িতে ওঠে বসে। ওর সাথে ফাহিমও গাড়িতে বসে। ইশার গাড়ির পিছনের সিটে বসে পড়ে। সাব্বির থম মেরে বসে আছে। গাড়িও চালাচ্ছেও না আর গাড়ি থেকেও নামছেও না। ইশা বুঝতে পারে। সাব্বিরের উদ্দেশ্যে বলে,
-“I Want to talk To You Sabbir?”
সাব্বির গম্ভীর কন্ঠে বলে,
-“নো নিড!”
-“কিন্তু আমার প্রয়োজন আছে। গাড়ি চালাও।”
সাব্বির চুপ করে বসে আছে ।
-“গাড়ি চালাও বলছি।”রাগী কন্ঠে বলে ইশা।
ফাহিম গাড়ি থেকে নেমে যায়। সাব্বিরও গাড়ি থেকে নামতে নিলে ইশা একটি পিস্তল বের করে ওর মাথায় ঠেকিয়ে বলে,
-“গাড়ি থেকে নামলে নিজেকে শেষ করে দিবো।” নামতে গিতেও থেমে যায় সাব্বির। একটু হলেও এখনো ইশার প্রতি ওর ভালোবাসা আছে। গাড়ি স্টার্ট দেয়।
বিকেলের দিকে বৃষ্টি পড়তে শুরু করে। কিছুক্ষণ আগে ঝুপ ঝুপ করে নেমে,এখন গুটিগুটি বৃষ্টি পড়ছে। সাথে হালকা বাতাস তো আছেই।
সিমি থাইগ্লাসের উপর দু’হাত রেখে বাহিরের বৃষ্টি পড়ার দৃশ্য দেখছিল। কিছুক্ষণ কাজল কালো আঁখির ন্যায় ঐ আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়।
শুভ্র তখন মাত্রই ল্যাপটপ নিয়ে রুমে প্রবেশ করে। সিমির দিকে চোখ পড়তেই ল্যাপটপ রেখে ধীরে পায়ে সিমির পিছনে এসে দাঁড়ায়। দু’হাত সিমির বাহুর উপর রেখে আস্তে আস্তে বাহু থেকে হাত নামিয়ে সিমির হাত ওর হাতের বাজে নিয়ে নেয়। শুভ্রর ছোঁয়া পেয়েই সিমি কেঁপে ওঠে চোখ জোড়া বন্ধ করে নেয়। থাইগ্লাসের উপর আঁপছা আঁপছা সিমির মুখ দেখা যাচ্ছিল। শুভ্র দেখে সিমির চোখের পাতা বন্ধ। ঘাড়ে মুখ ডুবাতেই সিমি হাত মুঠো বদ্ধ করে ফেলে। শুভ্র সিমির ঘাড়ে ঠোঁট বুলাচ্ছে। সিমি হাত জোড়া আরেকটু শক্ত করে মুঠ করে নেয়। সিমি সহ্য করতে পারছে না। শুভ্রের হাত ওর হাতের বাজ থেকে সরিয়ে হালকা ধাক্কা দিয়ে শুভ্রকে সরিয়ে দেয়। শুভ্রের হুঁশ ফিরে আসে। কিছুক্ষণের জন্য সিমিতে বিভোর হয়ে ওঠেছিল। সরে আসে ওর কাছ থেকে । বিছানায় বসে ফোন ঘাটতে শুরু করে । সিমি আগের নেয় এক হাত থাইগ্লাসের উপর রেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ আগের শুভ্রের স্পর্শ গুলো ফিল করছে সিমি। চোখ জোড়া বন্ধ করে নেয়। মুমেন্ট টা ফিল করতে লাগলো।
অভ্র রুমে এসে দেখে নিধি গিটার হাতে নিয়ে পিক দিকে সুর ওঠানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু সুর তো দূর গিটার কিভাবে ধরতে হয় সেটাও বুঝতে পারছে না নিধি। অভ্র হাসে। ল্যাপটপ বিছানার উপর রেখে নিধির সামনে এসে হাত ধরে টেনে সোফায় বসে ওর কোলের উপরে নিধিকে বসায়। গিটার নিধির কোলের উপর রেখে নিধির এক হাত ধরে নিচের দিকে দিয়ে গিটার বাজাতে লাগলো। গিটারের মাথায় হাত ছিল অভ্রর। প্রথম বার সুর ওঠাতে গিয়েও থেমে থেমে যাচ্ছে নিধি। তারপর অভ্র দেখিয়ে দিচ্ছে। আস্তে আস্তে গিটারে সুর উঠতে শুরু করল। নিধির ঠোঁটে হাসি ফুটে। গিটার বাজাতে থাকে নিধি আর তখনি শুভ্র গান ধরে,
-“তুমি বুঝনি,আমি বলিনি।
তুমি স্বপ্নতে কেন আসনি?
আমার অভিমান তোমাকে নিয়ে,সব পেয়েছি।
গানে গানে সুরে সুরে কত কথা,
বলেছি তোমাকে….
তুমি বুঝনি,বুঝনি…….।”
এই টুকু বলে থেমে যায় অভ্র। নিধিও গিটার বাজানো অফ করে দেয়। অভ্র নিধির চুল কান থেকে আলতো করে সরিয়ে কানের লতিতে চুমু খায়। হাত থেকে গিটারের পিক ফেলে রক গুলো চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে নেয় নিধি। অভ্র ঘাড় থেকে চুল সরিয়ে ঘাড়ে চুমু খেতে খেতে নিচের দিকে নামতে থাকে। তখনি নিধি কন্ট্রোল লেস হয়ে যায়। এবং ওর হাত থেকে গিটার টা ফ্লোরে পড়ে যায়। ধ্যান ভেঙ্গে যায় অভ্রর। অভ্র থেমে যায়। নিধিও চোখ মেলে তালায়। গিটার হাতে উঠিয়ে অভ্রের কোল থেকে ওঠে পড়ে সিমি। অভ্র চোখ বন্ধ করে নিজের উপর নিয়ন্ত্রন আনে। বিছানায় এসে বসে। ফোন অনলক করে গেম খেলতে শুরু করে। আর নিধি গিটার নিয়ে চেয়ারে বসে থাকে ।
এদিকে রুদ্র একা ড্রইংরুমে বসে ল্যাপটপে অফিসিয়াল কাজ করছিল। কিছুক্ষণ আগেই শুভ্র,অভ্র ওদের রুমে চলে গিয়েছে। হঠাৎ একটি কাজের জন্য রুদ্র ল্যাপটপ নিয়ে শুভ্রের রুমের কাছে এসে শুভ্রকে ডাক দিতেই দেখে শুভ্র রোমাঞ্চ করতে ব্যস্ত। বের হয়ে আসে রুম থেকে। মৃদ হাসে রুদ্র। অভ্রের রুমে এসে এই একি দৃশ্য দেখে। রুদ্র এই রুমের সামনে থেকে সরে আসে। এবার ল্যাপটপ বন্ধ করে ওর রুমে চলে আসে। রিমি তখন থাইগ্লাস খুলে বাহিরের বৃষ্টির পানি হাত দিয়ে ধরছিল। রুদ্র ল্যাপটপ বিছানার উপর রেখে রিমির এক হাত ধরে টেনে থাইগ্লাসের সাথে মিশিয়ে ধরে। রিমি থমথম খেয়ে যায় রুদ্রের কাণ্ডে। হঠাৎ করে কী হলো তার? ভাবভার বিষয় রিমির। রুদ্র ঘোর লাগা দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে রিমির দিকে। তারপরই মুখ ডুবিয়ে দেয় রিমির ঘাড়ে। রিমি এক হাত দিয়ে ওর ওড়না চেপে ধরে চোখের পাতা আলতো করে বন্ধ করে নেয়। রুদ্র গলায়,ঘাড়ে ওর ঠোঁট বুলিয়ে যাচ্ছে। রিমি শেষে সহ্য করতে না পেরে রুদ্রকে ধাক্কা মারে। রুদ্র দু পা পিছিয়ে যায়। রাগী ভঙ্গিতে তাকিয়ে আছে রুদ্র। রিমি রুদ্রের রাগী চোখ জোড়া থেকে মাথা নিচু করে নরম স্বরে বলে,
-“এটা কী করছেন আপনি?”
রুদ্র আর এক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে থাকে না,ল্যাপটপ নিয়ে বাহিরে চলে যায়। রিমির মনটা খারাপ হয়ে যায়। এভাবে ধাক্কা দেওয়া ওর ঠিক হয়নি সেটা বুঝতে পারে। যতই হোক রুদ্র ওর হাসবেন্ড। পুরো হক আছে ওর উপর। ঘুরে তাকায় আকাশের দিকে। মনটা আকাশের মতো কালো মেঘের রূপ ধারন করেছে ।
.
.
.
.
.
.
.
.
Continue To……..