#Three_Gangsters_Love.
#Sumaiya_Moni.
#Part_24.
-“স্যার,কাজ কেমন চলছে?”
-“যেমনটা চলার কথা ছিল,ঠিক তেমনি।”
-“প্লান সাকসেস করবেন কবে?”
-“খুব তাড়াতারি! তুমি ঐ দিকটা নজর রাখো।”
-“ঠিক আছি,রাখছি!
-“হুমম।”
দু’জনার লাইন কেঁটে দিল। বিপলপ তালুকদারের মুখে শয়তানি হাসি ফুটে ওঠে। এতদিন যেটা করতে পারেনি।তা এখন ধীরে ধীরে করতে সক্ষম হচ্ছে।খুব তাড়াতারি চৌধুরী পরিবারের সবাইকে লাশে পরিনত করবে। এবং থ্রি গ্যাংস্টারের নাম ও নিশানা মুছে দিবে।
থ্রি গ্যাংস্টার হাউস…..
রিমি,সিমি,নিধি,ইশা,ফারিন ও নিধির মামি জরিনা বেগম ড্রইংরুমে বসে কথা বলছিল। সাব্বির, ফাহিম রুদ্রদের সাথে অফিসে গিয়েছে। আলতাফ চৌধুরী তার রুমে।আলি হোসেন তার দোকানে ছিল। মেয়েরা কয়জন জরিনা বেগমের বানানো আঁচাড় খাচ্ছে। যেটা নিধির জন্য নিয়ে এসেছিল জরিনা বেগম। জরিনা বেগম বসে ছিল। তার আঁচাড় খাওয়ার প্রতি কোনো রুচি নেই। সবার চেয়ে ইশা বেশি খাচ্ছে। ইশার খাওয়াটা স্বাভাবিক। গল্প করতে,করতে দুপুর ঢলে পড়ে। রুদ্রদের আসার সময় হয়ে গেছে । রিমি,সিমি,নিধি তাড়াতারি করে রুমে এসে আগেই শাওয়ার সেরে নেয়।ওরা এসে যদি দেখে এখনো ওরা শাওয়ার করেনি।তাহলে ঝাঁড়ি এক গাদা খেতে হবে । শাওয়ার সেরে তিন জনেই নামাজ পড়ে নেয়। এর মধ্যে রুদ্র রা বাসায় এসে পড়ে। খাওয়া,দাওয়ার পর্ব শেষ করার পর ফাহিম ছাদে যায় কিছুক্ষণ একা বসার জন্য। কালকের পর থেকে ফারিনের সাথে যতবার দেখা হয়েছে ততবার ফারিন চোখ বড় বড় করে ওর দিকে তাকিয়েছে। যেটা দেখে ফাহিমের রূহ কেঁপে ওঠে। ফাহিম তো ভেবেই নিয়েছে ফারিনের মধ্যে ভূত আছে। তাই ওর কাছ থেকে এক হাত দূরে থাকতে চায়। কিন্তু ছাদে এসে দেখে ফারিন চেয়ারে বসে একটি থ্রিলার বই পড়ছে। ফারিনের নজর ছিল তখন বইয়ের উপর। ফাহিম সামনের দিকে ঘুরে পা টিপে টিপে হেঁটে ছাদ থেকে চলে যেতে নিলে তখনি ওর ফোনে ম্যাসেজ এর টোন বেজে ওঠে। ফাহিম শক্ত হয়ে যায়। শব্দ হওয়াতে ফারিন চোখ তুলে সামনে তাকায় । ফাহিমকে দেখেই ফারিন বই রেখে চেয়ার ছেড়ে ওঠে দাঁড়িয়ে কিছুটা ধমকের স্বরে বলে,
-“ঐখানেই দাঁড়িয়ে যান।”
ফাহিম তো আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিল।ফারিনের কথায় আরেকটু অপ্রস্তুত হয়ে যায়। ভাবছিল এটাই বলবে। আর সেটাই হলো। দৌঁড় দিবে? নাকি দাঁড়িয়ে থাকবে জানে না ফাহিম। ফারিন বই রেখে ফাহিমের কাছে পিছনে এসে দু হাত বগলদাবা করে দাঁড়ায়।বলে,
-“আমার কাছ থেকে দূরে থাকতে বলেছিলাম ? কথাটা মনে নেই নাকি?”
-“চলেই তো যাচ্ছিলাম। পিছন থেকা ডাইকা কুফা দিলেন ক্যা?”
-“কি? আমি কুফা দিয়েছি। আমার মনে হয় আপনার প্রানের প্রতি কোনো মায়া নেই!”
-“না,না আছে।”
-“কী আছে?”
-“মায়া আছে।”
-“তাহলে?” ভ্রু উঁচু করে বলে ফারিন।
-“তাহলে মুই যাই।” বলেই বো দৌঁড় ফাহিম।
ফারিন আগের ন্যায় চেয়ারে গিয়ে বসে। ফাহিম নিচে এসে জোরে দম নেয়।এবারও ধরেই নিলো ফারিনের মধ্যে সত্যিই ভূত আছে। বুকে হাত দিয়েই রুমে চলে আসে।
.
.
ইশা বিছানায় শুয়ে ছিল। সাব্বির এক গাদা ফল নিয়ে রুমে প্রবেশ করে। যেটা দেখে ইশার রাগ বিরক্তি দুটোই হচ্ছে ।
-“শুধু,শুধু এগুলা এনেছো। আমি খাব না।” ইশা বিছানায় ওঠে বসতে বসতে বলে।
-“না শব্দটা শুনতেই চাই না। খেতে হবেই।”
ইশা অভিমানি কন্ঠে বলে,
-“সাব্বির প্লিজ।”
-“উঁহু! কথা হবে না। জাস্ট খাওয়া হবে।” ছুঁড়ি দিয়ে আপেল কাঁটতে কাঁটতে বলে সাব্বির ।
ইশা নিরুপায়। সাব্বির আপেল কেঁটে ইশাকে এক পিস এক পিস করে খাইয়ে দিচ্ছে। ইশাও চুপ চাপ খেয়ে নিচ্ছে।
প্রতিদিন দুপুরের পর অফিসে না গেলেও। আজ রুদ্র,শুভ্র,অভ্র অফিসে গিয়েছে। সাথে আলতাফ চৌধুরী গেছে। কোনো একটা কারণে তিনিও ওদের সাথে অফিসে গিয়েছে।
রাত নয়টার দিকে সবাই বাড়িতে ফিরে। এক সাথে ডিনার করছিল সবাই। সার্ভেন্ট রা খাবার এগিয়ে দিচ্ছে। খাওয়ার এক পর্যায় রুদ্র সালাদ আনার কথা বলে সার্ভেন্ট কে। সার্ভেন্ট সালাদ এনে বাটিটা রুদ্রের সামনে দিতে নিলেই অভ্র তখন চেয়ার ছেড়ে ওঠতে যাচ্ছিল আর তখনি সার্ভেন্ট এর হাতে অভ্রের কাঁধে ধাক্কা লেগে বাটিটা ফ্লোরে পড়ে যায়। বাটিটা ফ্লোরে পড়ে ভেঙ্গে যায়। অভ্র রেগে যায়। কারণ ওর হাতেও কিছুটা সালাদ পড়েছে।
-“ননসেন্স কোথাকার। চোখে দেখো না নাকি?” অভ্র ঝাঁড়ি দিয়ে বলে সার্ভেন্ট কে।
সার্ভেন্ট মাথা নত করে বলে,
-“আই এম স্যরি স্যার। স্যরি।”
-“স্টুপিড!” রাগ কন্ট্রোল করে বলেই চলে আসে রুমে।
সবাই এতক্ষণ খাওয়া ছেড়ে ওদের দু জনার দিকে তাকিয়ে ছিল। রুদ্র গম্ভীরস্বরে সার্ভেন্ট কে বলে,
-“ফ্লোর পরিষ্কার কর।” বলেই ওঠে যায় টেবিল ছেড়ে ।
বাকিরাও খাওয়া শেষ করে ওঠে যায় টেবিল ছেড়ে । নিধি একা একা বক বক করতে করতে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে লাগলো।
-“সামান্য হাতেই তো সালাদ পড়েছে। তার জন্য এভাবে বকা লাগে। সে কী ইচ্ছে করে করেছে নাকি। এই জন্যই ভালো লাগে না তাকে। আচরণ গুলো মারাত্মক খারাপ । বদ লোক কোথাকার।”
লাস্টের কথাটা বলেই রুমে প্রবেশ করে দেখে অভ্র টাওয়াল পড়া অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। নিধি হা করে তাকিয়েই সামনের দিকে ঘুরে হাত দিয়ে মুখ ডেকে ফেলে। অভ্র ভ্রু কিঞ্চিৎ বাজ করে বলে,
-“হোয়াট!”
নিধি সামনের দিকে ফিরেই বলে,
-“এভাবে অর্ধেক টাওয়াল পেঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? জানেন না এই রুমে একজন মেয়ে থাকে। লজ্জা করে না আপনার?”
কথাটা শুনে অভ্র হাসবে নাকি নিধিকে কিছু বলবে,বুঝতে পারছে না। কেমন নাদান বাচ্চাদের মতো কথা বলে। মনে হচ্ছে কিছুই বুঝে না।
অভ্র পাত্তা না দিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে দাঁড়ায়। নিধি অভ্রের কথার আওয়াজ না শুনতে পেয়ে চোখ ডেকেই পিছনে ফিরে তাকায়। আঙুলের ফাঁক দিয়ে অভ্রের দাঁড়ান স্থানটা দেখে। অভ্র সেখানে নেই। আচমকা হাতে টান অনুভব হয়। চোখের উপর থেকে হাত সরে যায় নিধির। নিধি এসে দাঁড়ায় ড্রেসিং টেবিলের সামনে। ওর ঠিক পিছনেই অভ্র নিধির এক হাত ধরে পিছনের দিক পিঠের সাথে মিশিয়ে নিয়ে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। ধুক ধুক করছে নিধির বুকের মাঝে। এক তো আচমকা টান দিয়ে ওর কাছে নিয়ে এসেছে। আর এখন অভ্রের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। অভ্র নিধির কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলে,
-“আমি তোমার কে হই?”
নিধি বুঝতে পারে এই প্রশ্নের মানে কী? কি বলবে বুঝতে পারছে না।
-“টেল মি নিধি?”
কাঁপা কাঁপা কন্ঠে নিধি উত্তর দেয়,
-“হা..হাসবেন্ড।”
-“সো! আমার সামনে এত লজ্জা কিসের?”
নিধি মাথা নিচু করে ফেলে। অভ্র নিধির হাত ছেড়ে দেয়। আস্তে করে নিধির পেটের উপর হাত রেখে চট করে ওর দিকে ঘুরায়। নিধি তখনো মাথা নিচু করেই রেখেছিল। অভ্র ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নিধির দিকে। ডান হাতের আঙুলের উল্টো পিঠে নিধির গালে স্লাইড করছে। ধীরে ধীরে নিধির গলার কাছে এসে থামে। স্লাইড করার কারণে নিধি শরীর শিউরে উঠে। চোখ জোড়া কোনো রকম খোলা রাখে।অভ্র নিধির চেহারার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে। টেডি হাসি দিয়ে নিধির পিঠে হাত রেখে দু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে। নিধি চোখ জোড়া বন্ধ করে অভ্রের বুকে মাথা রাখে।
.
এদিকে সিমি আর শুভ্র ঝগড়া করছে একে অপরের সাথে। তাও আবার একটি গেঞ্জি নিয়ে। শুভ্র নিচ থেকে এসে আলমারি থেকে ওর প্রিয় সাদা রঙের গেঞ্জিটা বের করে পড়তে নিলে দেখে গেঞ্জির মাঝখান দিয়ে বড় আঁকারের ছেঁড়া। শুভ্রের রাগ ওঠে যায়। সিমিকে ডাক দেয়। প্রথমে তো ছেঁড়া গেঞ্জিটা শুভ্রের গায়ে দেখে সিমি মুখ চেপে হাসে। তারপর শুভ্র গেঞ্জি ছেঁড়ার কথা বলতেই সিমি বলে শুভ্রের গেঞ্জি নাকি ও ধরেইনি। এখন প্রশ্ন হলো গেঞ্জি কিভাবে ছিঁড়লো?
-“ভূতে ছিঁড়ে রেখে গেছে গেঞ্জি।” অন্য দিকে ফিরে বলে সিমি ।
-“হোয়াট! ভূত? তুমিই ছিঁড়েছো গেঞ্জি।” শুভ্র গেঞ্জি খুলে আঙুল তুলে বলে।
-“ঠেকা পড়ে নাই আপনার লোহা লক্কর মার্কা গেঞ্জি ধরার।”
-“লোহা পক্কর?” কপাল কুঁচকে বলে।
-“লোহা পক্কর না লক্কর।”
-“মানে কী?”
-“মানে এটাই,গেঞ্জিটা পড়লে আপনাকে,আপনাকে জয় বাংলার মতো দেখায় ।”
-“কী?”
-“মানে ধরুন লম্বা বাঁশের উপরে যেমন লাল,সবুজ পতাকা ঝুঁলে না। ঠিক সেই রকমি লাগে আপনাকে ঐ গেঞ্জিটা পড়লে।”
-“তার জন্য তুমি গেঞ্জিটা ছিঁড়ে ফেলেছো?”এক ভ্রু উঁচু করে বলে।
সিমি দ্রুত উত্তর দেয়,
-“হুম। না,না! আমি ছিঁড়ি নি।”
-“সত্যিই কথা তো বলেই দিলে এখন।” মুখে ডেবিল মার্কা হাসি জুলিয়ে সিমির দিকে এক পা এগিয়ে বলে।
সিমি ভয়তে কাচুমাচু হয়ে এক পা পিছে এগিয়ে বলে,
-“না,সত্যিই আমি গেঞ্জি ছিঁড়ি নি। জানি না কিভাবে ছিঁড়েছে এটা।”
-“সত্যি কথা বলবে নাকি আমি আমার ঘোড়াটা বের করব।”
-“ঘো..ঘোড়া?”
-“আমার পিস্তল ।”
সিমি এবার ভয় জড়িত কন্ঠে বলে,
-“না,না তার দরকার নেই,আমি বলছি।”
-“বলো।”থেমে গিয়ে বলে শুভ্র।
-“আসলে আমি আপনার গেঞ্জিটা স্ত্রি মেশিন দিতে স্ত্রি করতে গিয়েছিলাম। মেশিন বেশি গরম হবার ফলে গেঞ্জির উপর রাখতেই সামনে দিয়ে গেঞ্জিটা পুঁড়ে যায়। আমি এটা দেখে বাকি পুঁড়া অংশ টুকু কেচি দিয়ে কেঁটে দেই। যাতে আপনি বুঝতে না পারেন এটা পুঁড়ে গেছে।” মিন মিন করে কথা গুলো বলে সিমি।
-“তাহলে এতক্ষন মিথ্যে কথা বললে কেন?”
-“ভুল হয়েছে!” বলেই দৌঁড় দিতে নিলে শুভ্র পিছন থেকে সিমির ওড়না টেনে ধরে। বলে,
-“পালাচ্ছো কোথায়?”
-“ছাড়ুন বলছি আমার ওড়না। আমি কিন্তু দাদুর কাছে বিচার দেবো?”
শুভ্র হাসে সিমির কথা শুনে। হেসে হেসে বলে,
-“কী বলবে দাদুকে? আমি তোমার ওড়না ধরেছি এটা? নাকি এখন আমি তোমার সাথে যা করব এটা?”
-“কী…কী করবেন?”
শুভ্র সিমির ওড়না টান দিয়ে ওর কাছে নিয়ে আসে। দু’হাত দিয়ে পিছন থেকে সিমিকে জড়িয়ে ধরে বাঁকা হেসে বলে,
-“এবার কোথায় পালাবে।”
সিমি মনে সাহস নিয়ে বলে,
-“দেখবেন পালাব কোথায়?”
-“হ্যাঁ! দেখতে চাই।”
-“তাহলে আমাকে ছাড়ুন।”
-“পালানোর ধান্ধা বেবি?”
-“না,মতলব।”
-“তাই তো ছাড়ব না।” বলেই সিমিকে নিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে। সিমিকে নিচে ফেলে গায়ের উপর চেপে বসে শুভ্র।সিমি নাক,মুখ কুঁচকে শুভ্রের দিকে তাকায় । শুভ্র ভ্রু উঁচু করে। এর মানে ‘কী’।
সিমি ভালো করেই বুঝতে পেরেছে এবার ফেসে গেছে। স্যাড মুড করে ফেলে সিমি।
.
.
আঁধা ঘন্টা ধরে রিমি বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করছে। কিছুতেই ঘুম আসছে না। রুদ্র সোফায় বসে একটি ফাইল হাতে নিয়ে মনযোগ সহকারে পড়ছে। একে তো ঘুম আসছে না। দ্বিতীয় রুমের লাইট জ্বালানো। তৃতীয় রুদ্র এখনো ঘুমাতে আসছে না। এই তিনটি কারণে রিমির ঘুম আসছে না। রিমির অভ্যেস হয়ে গেছে রুদ্রের বুকে মাথা রেখে ঘুমানোর। যান কারণে এমন ছটফট করছে। মুখে বলতেও পারছে না রুদ্রকে। রুদ্র বিষয়টা ভালো করেই লক্ষ্য করেছে। কিন্তু তারপরও রিমিকে আরেকটু জ্বালানোর জন্যই ফাইল দেখার বাহানায় সোফায় বসে আড়চোখে রিমিকে দেখছে। রিমির এখন আর সহ্য হচ্ছে না। বিছানা থেকে ওঠে দরজা খুলতে নিলে রুদ্র জিজ্ঞেস করে,
-“কোথায় যাচ্ছো? ”
-“ঘুমাতে?”
-“কোথায়?”
-“ফারিনের রুমে।”
-“কেন? ”
উত্তর না দিয়ে দরজা খুলতে নিলেই রুদ্র এসে পেছন থেকে রিমির হাত ধরে ফেলে। রিমি চোখ ছোট ছোট করে তাকায় রুদ্রের দিকে। রুদ্র এক ভ্রু উঁচু করে,ঘাড় হালকা কাত করে বলে,
-“আমাকে ছাড়া তোমার ঘুম আসছে না সেটা বললেই হতো।”
-“আমি বলিনি এটা।” আস্তে করে বলে রিমি ।
হাত ধরে ওর সাথে মিশিয়ে মৃদু হেসে বলে,
-“আই নো! বলার দরকার নেই।”
রিমি রুদ্রের বুকে হাত রেখে সারাতে নিলে রুদ্র আরেকটু কাছে নিয়ে এসে গলায় হাত রেখে আলত করে রিমির ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়। ঠোঁটে মৃদু মুচকি হাসি রেখে বলে,
-“তুমি আমাতে আসক্ত হয়ে পরেছো জানু।”
রিমির কাছে এই কথার কোন উত্তর নেই। চোখ পিট পিট করে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে। রুদ্র রিমিকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়। লাইট অফ করে রিমিকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে চোখ জোড়া বন্ধ করে নেয়। রিমি রুদ্রের বুকে মাথা রেখে মৃদ হাসে। ঠোঁটে হাসি ফুটান অবস্থায় চোখ বন্ধ করে নেয় রিমি। এখন ওর প্রশান্তি মিলে।
পরের দিন….
সাব্বির ইশার কথা রাখতে সবাইকে নিয়ে দোহার মৈনর ঘাট ঘুরতে আসে। সেখানের আরেকটি নাম আছে “মিনি কক্সবাজার”। ইশা এটার সম্পর্কে জানতে পারে নেটের মাধ্যমে । তাই যাওয়ার ইচ্ছে জাগতেই সবার আগে সাব্বিরকে রাজি করায়। রুদ্র,শুভ্র,অভ্র রা রাজি ছিল না। কিন্তু সাব্বির সবার সিকুরিটি নিজের কাঁধে নেয়। যার কারণে সাব্বিরের কথায় রাজি হয় ওরা। রুদ্র,অভ্র,শুভ্র ও ফারিনের মা-বাবা বাদে বাকিরা সবাই যায়। পাঁচটি গাড়িতে ওরা কয়জন বসে আর বাকি চারটে গাড়িতে বডিগার্ড রা বসে। মোট পাঁচটি গাড়ি নিয়ে বের হয়। এখানে এসেই সবার চেয়ে বেশি খুশি হয় ইশা। পদ্মা নদীর স্বচ্ছ পানি দেখে ইশা বেশ খুশি। রিমি,সিমি,নিধিও খুশি। ফারিনকে তেমন একটা খুশি হতে দেখা যায়নি। আর ফাহিম ফারিনের কাছ থেকে একটু দূরেই থাকে। এতে বেশ স্বস্থি পাচ্ছে ফারিন। দু একবার চোখা চোখি পড়তেই ফারিন চোখ রাঙ্গিয়ে তাকায় ওর দিকে। যেটা দেখে ফাহিম ফারিনের দিকে তাকায় না।
ইশা পানি ধরে খেলা করছিল। আলতাফ চৌধুরী স্লিপিং চেয়ারে বসে পদ্মা নদীর মজা নিচ্ছিল।
রিমি,সিমি,নিধি আলতাফ চৌধুরীর কাছ থেকে কিছুটা দূরেই স্লিপিং চেয়ারে বসেছিল। সাব্বির ইশার পাসেই দাঁড়িয়ে আছে।
বডিগার্ড রা চার দিক নজর রাখছে। কিছুক্ষণ পর পর সাব্বিরও বডিগার্ডদের মতো চারদিক চোখ বুলাচ্ছে। সাব্বির সাথে করে তিনটি পিস্তল নিয়ে এসেছে। ফাহিমের কাছেও একটি পিস্তল আছে। সাব্বির এই কয়দিনে ফাহিমকে গুলি চালান শিখিয়ে দিয়েছিল। তাই এখন ফাহিমও গুলি চালাতে পারে। সাব্বির আগে গুলি চালাতে ভয় পেলেও এখন গুলি চালান বাঁ হাতের কাজ মনে করে। ফাহিম নিধিকে চেয়ার থেকে ওঠিয়ে নিয়ে একটু দূরে আসে।
-“কী হলো? কিছু বলবে নাকি?”
-“হ ভাবি কিছু কইতাম।”
-“বলো।”
-“আচ্ছা ভাবি,আপনার বোইন ফারিন এমন ব্যবহার করে ক্যা? দেখলে মনে হয় তার মধ্যে ভূত আছে।”
নিধি খিলখিল করে হাসতে লাগলো ফাহিমের কথা শুনে। ফাহিম বোকার মতো তাকিয়ে আছে।বলে,
-“আমি কী হাসির কথা কইছি নাকি? হাসের ক্যা?”
নিধি হাসিটা কোনো রকম থামিয়ে বলে,
-“আরে ফাহিম! কানে কানে একটি কথা শোনো।”
-“কন।” নিধির মুখের কাছে কান নিয়ে বলে।
নিধি ফাহিমের কানে কানে যা বললো। সেটা শুনে কিঞ্চিৎ পরিমান রাগ ফুটে উঠল ওর চেহারায়।মুখ বাকিয়ে বলে,
-“আপনার বোইনের খবর আছে।”
-“শোনো,যা করার আস্তে ধীরে করবে। ফারিনের কথার জালে ফারিনকে জব্দ করে তারপর যা করার করবে।”
-“আইচ্ছা ভাবি।”
-“হু,এবার চলো ।”
-“আহেন।”
.
.
.
.
.
.
.
Continue To…….