#শুভ্র_রঙের_প্রেম
পর্বঃ৩৯
লেখিকাঃ#রুবাইদা_হৃদি
কালো মেঘে ঢেকে আছে নীলাভ আকাশ ৷ বাতাসের সাথে উড়ে যাওয়া মেঘের ফাঁক গলে চাঁদের ঝলকানিতে অনবদ্য সুন্দর কালো মেঘের রাশি গুলোকে মেঘকন্যা নামে আখ্যায়িত করা’ই যায় ৷ চাঁদ ঢেকে যেতেই সরু বিদ্যুৎ-এর ঝলকানি চারদিকে শুভ্র আলো ছড়িয়ে সেকেন্ডের মাঝেই নিরুদ্দেশ হয়ে আবার তীব্র আওয়াজে গম গম করে করছে উঠছে ৷ ঠান্ডা বাতাসে শরীরে কাঁপুনি ধরতেই হাঁচি শুরু হতেই স্নিগ্ধ একহাতে টেনে নিয়ে শাসনের শুরু বললেন,
–‘ তোমার আবদার গুলো এতো দায়সারা কেন? এই বৃষ্টিভেজা পরিবেশে না বের হলে কি এমন ক্ষতি হতো,বলো তো? ‘
–‘ আ..আপ.. ‘ বলতেই নাক মুখ কুঁচকে আবারো হাঁচির অস্তিত্ব জানান দিলো ৷ উনি ভ্রু কুঁচকে বললেন,
–‘ প্রিন্সেসের মাম্মি বড্ড জেদী ৷ তাই না বলো প্রিন্সেস! ‘
আমি পেটে হাত দিয়ে অবাক সুরে বললাম,
–‘ এই..এই.. দেখুন ও আপনার কথায় রেসপন্স করছে ৷ বাবাই,তুমি তো প্রিন্স ৷ প্রিন্সেস বললে রেসপন্স করো কেন? ‘
আমি উনার এক হাত পেটের উপর রেখে বললাম৷ উনি হাসলেন! আমার মাথা টেনে কঁপালে গভীর চুমু দিয়ে বললেন,
–‘ সবেমাত্র সাড়ে তিনমাস! প্রিন্সেস শুধু তার মাম্মী আর বাবাইকে ফিল করতে পারে৷ বুঝলে? ‘
–‘ বাবাই জোড়ে কিক করে বুঝিয়ে দেউ তো তুমি সব বুঝতে পারো ৷ ‘
আমার কথার কোনো রেসপন্স আসলো না ৷ আমি কাচুমাচু মুখ করে বললাম,
–‘ চোখের পলকে সময় চলে কেন যায় না? আমি ওর ছোট নরম তুলতুলে শরীরে হাত বুলিয়ে দিবো৷ পিচ্চি পিচ্চি আঙুল গুলোতে নিজের আঙুল দিয়ে খেলা করবো ৷ ‘
–‘ সব হবে বাবুর আম্মু! এইবার গাড়িতে উঠো৷ ঠান্ডা লেগে যাবে৷ ‘
আমি নাকচ করলাম৷ আমাকে গাড়ির উপর বসিয়ে দিয়ে উনি আমাকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন ৷ একপ্রকার জোর করেই কোলে তুলে নিয়ে গম্ভীর সুরে বললেন,
–‘ ঠান্ডা পরিবেশে তোমাকে নিয়ে রাতে বের হয়েছি এর শাস্তি হিসেবে আম্মু আর ফুঁপ্পি সর্বপ্রথম প্রিন্সেসকে কোলে নিতে দিবে না বলেছে! এই মহা অন্যায়ের ভার তুমি নিবে? একটাবার প্রিন্সেসকে আসতে দেউ তোমাকে হারে হারে বুঝাবো স্নিগ্ধ কে৷’
–‘ স্নিগ্ধ কে মানে? আমি চিনি না ভেবেছেন? স্নিগ্ধ হচ্ছে, আমার বাবাইয়ের বাবা ৷ ‘ আমি উনার গলা জড়িয়ে ধরে বলতেই রাগ পড়ে গেলো উনার ৷ উবু হয়ে আলতো পরশে ভরিয়ে দিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিলেন ৷ সযত্নে সিট বেল্ট বেধে দিয়ে মুচকি হাসলেন ৷ তার হাসিতেই খুন হয়েছি আমি ৷ সেই প্রথম আর শেষ পর্যন্ত ৷ বিদ্যুৎ-এর আলোতে একজন দায়িত্ববান সুপুরুষকে দেখে আবারো মনে হচ্ছে,
আমি প্রেমে পরেছি! বারবার,হাজারবার আমার একান্ত ব্যক্তিগত শুভ্র প্রেমিকের উপর ৷
_______________________
শরৎ এর আকাশ জুড়ে হাজার মেঘের ছড়াছড়ি ৷ আমাদের বাসার পেছনেই বিরাট নদী তার কিনারা ঘেঁষে শুভ্র স্বচ্ছ হাজার খানেক কাঁশ ফুলের মেলা ৷ উতলা বাতাসে দোল খাচ্ছে সব ফুল৷ মাথা নুইয়ে পরছে নদীর বাঁকে ৷ আবার উঠে দাঁড়াতেই ভিজে চুপচুপে মাথা গুলো রোদের ঝিলিকে তাদের শুভ্রতা জানান দিচ্ছে ৷ পূর্ব দিকের বড় রুমটার জানালা দিয়ে আমি উচ্ছ্বাস মুখে তাকিয়ে দেখে চলেছি সব ৷ সারা ঘরময় জুড়ে ছোট ছোট বাচ্চাদের ছবি সেই সাথে হাজারো ছবি আমাদের ৷
ভারী পেট নিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়াতেই মা মা আবেশে ভরে উঠলো চারপাশ ৷ পেট উঁচু হয়ে আছে৷ মুখ ফুলে গেছে সেই সাথে হাঁত-পাঁ ৷ আমি গমগমে স্বরে বললাম,
–‘ একদম পঁচা দেখায় আমাকে ৷ এই জন্য’ই তো কেউ আগের মতো ভালোবাসে না৷ ‘
ওইপাশ থেকে জবাব এলো না ৷ আমি টুল টেনে বসে নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে চলেছি৷ ভ্রু্র উপর জোড়া তিল জোড়া কালো কুচকুচে হয়ে উঠেছে আরো ৷ হঠাৎ করেই হাজার টন মন খারাপ এসে ভর করলো৷ আমি পেটে হাত দিয়ে উঠে দাঁড়াতেই বাবাই লাথি মেরে বসে ৷ হালকা ব্যথায় কুঁকড়ে উঠে মৃদু চিৎকার করে উঠলেও মুখে ফুঁটে উঠে অমায়িক হাসি ৷ তৃপ্তির হাসি ৷ ভুবন ভুলানো অনুভূতি হয়,স্বামী নামক মানুষটার প্রথম পবিত্র স্পর্শে আর দ্বিতীয় অনুভূতি হয়,তার চিহ্ন নিজের সাথে বড় করার মাঝে ৷
–‘ তুমি ঠিক আছো? কোথায় পেইন হচ্ছে? কি হয়েছে? ঠিক আছো তো তুমি!’ উনি হন্তদন্ত পায়ে কোনোমতে তোয়ালে প্যাচিয়ে ওয়াশরুম থেকে ছুটে আমাকে দুইহাতে ধরে বললেন ৷ মাথা থেকে টুপটুপ করে পানি গড়িয়ে পরছে৷ রেশম লোমশ বুকে পানির ছিটে পরে আছে সেই প্রথম রাতের মতো৷ আমি উনার ভেজা বুকে মাথা রেখে আলতো কামড় দিতেই ব্যথাতুর শব্দ করে উঠেন৷ আমি একটা কামড় দিয়েই ক্ষান্ত হলাম না আবারো কামড় বসাতে গেলে উনি শান্ত স্বরে বলে উঠলেন,
–‘ মহারাণী আবার রেগে গেছে কেন? ‘
–‘ লুক! আমি আগের চেয়ে অসুন্দর হয়ে গেছি৷ এইজন্যই আপনি আগের মতো ভালোবাসেন না আমায় ৷ ‘
স্নিগ্ধ আমার মাথায় চুমু খেয়ে হেসে বললেন,
–‘ তাই বুঝি? ‘
–‘ হ্যাঁ,একদম তাই৷ আগের মতো জড়িয়ে ধরে ঘুমান না৷ আগের মতো আদর করেন না ৷ ‘
উনি সশব্দে হেসে উঠলেন ৷ বেডে বসিয়ে দিয়ে বললেন,
–‘ মুড আপ ডাউন কেন আমার বাবুর আম্মুটার? ‘
আমি নীরস কন্ঠে বললাম,
–‘ আপনি আজ সারাদিন আমার কাছে বসে থাকবেন৷ আমি আপনার কোলে মাথা রেখে ঘুমাবো ৷ ‘
–‘ চেঞ্জ করে আসি? আর পরশু দিন এক্সাম তোমার৷ একটু প্রিপারেশন তো নিতেই হবে মাই লেডি৷ ‘
আমি চোখ-মুখ কুঁচকে তাকালাম ৷ হঠাৎ করেই গা গুলিয়ে বমি আসতেই উনার উপরে করে দিতেই উনি সরে না গিয়ে মাথায় হাত দিয়ে আরেক হাত পিঠে হায় বুলিয়ে দিতে দিতে বললেন,
–‘ কাম ডাউন! জোরে জোরে নিঃশ্বাস নেউ ৷ ‘
আমি উনার উপর হেলে পরতেই আমাকে বিছানায় হেলান দিয়ে বসিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে আম্মুকে হাক ছেড়ে ডেকে উঠেন ৷ আম্মু আর ফুঁপ্পি আসতেই উনি চিন্তিত স্বরে বললেন,
–‘ বারবার এমন হচ্ছে যার জন্য ক্লান্ত হয়ে পরছে৷ ‘
–‘ এই সময় এমন হয় ৷ আর তোমার বউ কিছু খেতে চায় না ৷ এই অনিয়মের জন্য বাচ্চার ক্ষতি হচ্ছে ওরে বুঝাও তুমি৷ আমার কথা তো আগেও শুনতো না এখন তো শুনেই না ৷ ‘ আম্মু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলতেই আমি বিরস মুখে বললাম,
–‘ উঠতে বসতে খাচ্ছি আম্মু ৷ দেখো কতো মোটু হয়ে গেছি ৷ ‘
আমি হাত উঠিয়ে দেখাতেই ফুঁপ্পি পাশে বসে হেসে বললেন,
–‘ শরীর পানি আসছে এই জন্য এমন দেখায় ৷ অথিতিকে আসতে দেও দেখবা রুপ ঝকমক করছে৷ ‘
আমি লজ্জা পেলাম৷ উনি আহত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন৷ আমি চোখ দিয়ে ইশারা করলাম, ‘ আ’ম ফাইন! উনি মৃদু হেসে বাইরে বেরিয়ে গেলেন৷ আমি তাকিয়ে আছি উনার যাওয়ার পানে ৷ ধ্যান ভাঙে আম্মু আর ফুঁপ্পির বিভিন্ন উপদেশে৷ তারা দুইজনেই আজ চলে যাবে ৷ উনাকে বলা হয়েছিলো আমাদের বাসায় থাকতে কিন্তু উনি নাকচ করে বলেছিলেন,
–‘ ঢাকার পরিবেশে দূষণ অনেক ৷ স্বচ্ছ নির্মল পরিবেশে থাকলে বাবু আর বাবুর আম্মু ভালো থাকবে ৷ আর আমি চাই,আমি প্রত্যেক টা মূহুর্ত নিজে উপভোগ করতে৷ ‘
উনার স্ট্রেইট কথায় সবাই খুব হেসেছিলো ৷ আমি লজ্জা পেলেও অজানা অনুভূতিতে মুড়িয়ে যাই৷ কতোটা ভালোবাসলে এতোটা নজর রাখা যায় আমার জানা নেই ৷ তবে তার সাথে থাকা প্রত্যেক টা মূহুর্ত শুভ্র রঙে রঙীন হয়ে শুভ্র প্রেম বিতরণ করে….
.
.
–‘ সাবধানে হৃদি! বাচ্চাদের মতো লাফালাফি করার মানে আছে বলো? প্রিন্সেস কে সামলাবো কি! এখন মনে হচ্ছে,প্রিন্সেস আর আমি মিলে তোমাকেই সামলাবো ৷ ‘
–‘ শাড়ি পরতে বিরক্ত লাগে বুঝেন না কেন,আপনি? ‘
উনি কুঁচি ভাজ করতে করতে কপাল কুঁচকে বললেন,
–‘ আগে তো সব সময় পরে থাকতে ৷ ‘
–‘ মনে লাড্ডু ফুটতো তাই পরতাম৷ এখন তো ফুটেও লাভ নেই দিনশেষে একজনকেই ক্রাশ হিসেবে মানতে হবে৷ ‘
–‘ তোমার বোকা বোকা কথার জ্বালে নিজেই ফেঁসে যাও ৷ সেদিন রাতে ঘুমের ঘোরে…
আমি উনার মুখ চেঁপে ধরে বললাম,
–‘ আপনি তো বড্ড বেশরম ৷ বাবাই শুনঁছে কিন্তু সব৷ ‘
উনি আমার কথা শুনে সিরিয়াস ভাবে ‘ ওহ,তাইতো! ‘ বলেই হাটু গেড়ে বসে পরলেন আমার সামনে ৷ আমি ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই উনি শাড়ি সরিয়ে মাথা পেটের উপর ঠেকিয়ে ফিসফিস করে বললেন,
–‘ বাবার প্রিন্সেস আর মাম্মীর বাবাই তুমি শুনো একদম বাবা-মায়ের পারসোনাল কথাবার্তা শুনবে না ৷ চোখ-কান বন্ধ করে থাকবে৷ এখন ঘুমিয়ে পরো তো প্রিন্সেস ৷ বাবাই তোমার মাম্মীকে আদর করবে৷ ‘
উনার কথা শুনতেই জোরে কিক করে উঠে আবারো৷ উনি উঠে দাঁড়িয়ে আমার আঁচল ঠিক করে দিয়ে কঁপালে চুমু খেয়ে বললেন,
–‘ এইবার ঠিক আছে তো? ‘
আমি দাঁতে দাঁত চেপে বললাম,
–‘ বাপ-ছেলে দুইজনেই এক ধাঁচের৷ একজন উপর থেকে জ্বালাচ্ছে আর একজন বাপের কথা শুনে লাথি মেরে জানান দিচ্ছে ৷ ‘
উনি হাসলেন ৷ আমাকে কোলে তুলে বাইরে নিয়ে যেতে যেতে বললেন,
–‘ সবে তো শুরু বাবুর আম্মু! সামনের দিন গুলোর প্রস্তুতি নিয়ে রাখো৷ ‘
আমি জবাব দিলাম না ৷ উনি পূর্ব দিকের নদীটার তীরে এনে দাঁড় করিয়ে দিলেন৷ উজান থেকে ভেসে আসছে বাতাস ৷ শরীর মন রোমাঞ্চিত করে তুললো মূহুর্তেই ৷ সামনের ঘাটে নৌকা বাধা৷ আমার হাত ধরে বললেন,
–‘ এনজিও তে যাওয়ার পর আমার ব্যাক্তিগত মানুষটা প্রতিদিন সুন্দর সুন্দর চিঠি লেখতো সেটা তো আমার প্রিন্সেস না বললে জানতেই পারতাম না৷ ‘
আমি অবাক হয়ে বললাম,
–‘ চিঠি গুলো তো কেবিনেটের ড্রয়ারে রাখা ছিলো আপনি জানলেন কি করে?’
উনি আমার নাক টেনে দিয়ে বললেন,
–‘ তোমার প্রত্যেকটা শ্বাস উপলব্ধি করতে পারি আর সেখানে এতো বড় বড় চিঠি আমার অগোচরে থাকবে সেটা তো হতে দেওয়া যায় না ৷ ‘
আমি চুপ মেরে উনার কাঁধে মাথা রাখলাম৷ উনি নীরসতা ঠেলে উচ্ছ্বসিত ভাবে পকেট থেকে ভাজ করা চিঠি গুলো বের করে শুভ্র রঙের চিঠিটার ভাজ খুলে জোরে জোরে পড়তে আরম্ভ করলেন,
‘ শুনছেন,
বাবাইয়ে বাবাই! আপনি সত্যি আমাকে ভালোবাসেন না ৷ আমার বড্ড ইচ্ছা করে সব মূহুর্ত আপনার সাথে ভাগ করে নিতে৷ আমি আবার একদিন লাল শাড়ি পরবো আর আপনি পরবেন কালো পাঞ্জাবি ৷ আমার উঁচু হয়ে যাওয়া পেটে ভিষণ সুন্দর লাগবে তাই না বলুন?
পূর্ব দিকের নদীর পাড়ে যাবো বুঝলেন? ঘাটে সাজানো একটা নৌকা বাধা থাকবে৷ সেই নৌকার মাঝি হবেন আপনি৷ আমার শুধুমাত্র আমার মাঝি ৷ উজান থেকে বয়ে আসা হাওয়ার আমার আঁচল যখন উড়ে এই মাঝিটার কাছে যাবে সে তখন যত্ন করে গুটিয়ে দিবে আঁচল ৷ আমি যখন অবাধ্য হয়ে পানিতে হাত চোবাব ৷ আপনি তখন শাসন করবেন আর আমি খিলখিল করে হেসে উঠে পানি ছিটিয়ে ভিজিয়ে দিবো আপনাকে ৷
বলেন তো কবে আসবে সেদিন? কবে কমবে আপনার ব্যস্ততা? ‘
–‘ এতো গুলো প্রশ্নে জর্জরিত করে রেখেছিলে আমায় ৷ প্রিয় আমি দুঃখিত! আমার সব সময় সব কিছু শুধু তোমার আর আমার প্রিন্সেসের জন্য বরাদ্দ ৷ ‘
আমি খুব করে কেঁদে উঠলাম ৷ সন্ধ্যার রক্তিম আলোতে সে আমাকে আঁকড়ে রেখে নৌকায় উঠিয়ে ছোট ইচ্ছাটা পূরণ করেছিলেন ৷
আজও মনে পরে ৷ আর সেই সাথেই একরাশ পানিতে চোখ ভিজে উঠে….
চলবে…