স্বপ্নময় ভালোবাসা
রোকসানা আক্তার
সমাপ্তি পর্ব
চড়াই উতরাই মানুষের জীবন।এই জীবনে কত সুখদুঃখের খেলা।জীবনে কিছু মুহূর্ত আসে মানুষকে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে ফেলতে আবার কিছু মুহূর্ত আসে ওই মুহূর্তগুলোয় থেকে মানুষকে অসীম শক্তিমান করতে। যখন সে খুব শক্তিমান হয়ে যায় তখন তার জীবনের সফলতার মুখগুলো একের পর এক দরজায় কড়া নাড়তে থাকে।দুঃখের মুহূর্ত গুলোর মুহূর্তে মুছে যে সুখের ছাঁয়ায় মুড়িয়ে যায়।পৃথিবীটা আজ খুব শান্ত সেই সুখানুভূতিতে !সে অধীর ব্যাকুলতায় বসে আছে নতুন শিশুর আগমনী বার্তায় ।চারদিক এক চাঞ্চল্যকর চাঞ্চল্যকর অনুভূতি। ভ্যাপসা কড়া গরমের সূর্যটাও আজ স্নিগ্ধ,মৃদু রোদ ছড়িয়ে পূবকাশে বসে আছে।গাছ,পাতা,ফুল,পাখি সব এক জায়গায় স্থবির ।
সবার অপেক্ষা,আকাঙ্খার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পৃথিবীকে অবাক করে দিয়ে জন্ম হলো এক নবজাতকের!নবজাতকের কান্নার শব্দে দরজা ঠেলে আকাশ দৌড়ে ভেতরে আসে।তারপর এক এক করে মা আফিয়া,
আসাফও আসে। আমি নিঃশক্তি শরীরে অসাড়ভাবে কেবিনে শুয়ে আছি।আকাশ নবজাতককে হাতে নিয়ে মার কোলে তুলে দেয়।মা আনন্দে আত্মহারা হয়ে বলতে থাকেন,
“আলহামদুলিল্লাহ, আমার দাদুভাই হয়েছে।আকাশ এই আকাশ,আমার দাদুভাই ত মনে হয় একেবারেই তার না নানুর অবিকলে হয়েছে!”
শাশুড়ী মা আমার মাকে কখনো সরাসরি দেখে নি।উনাকে আমার মার ফটো একবার মোবাইলে দেখিয়েছিলাম।তাই সেই ছবিটা স্মরণ করে নবজাতকের চেহারার মিলাচ্ছেন!আজ যদি আমার মা উনার নাতনীকে দেখতে পেত কত্ত যে খুশি হত!উনার নাতনী উনার মতে হয়েছে শুনলে ত আরো আরো খুশি!কিন্তু আফসোস আজ আমার মা নেই!আমার বাচ্চা তার নানুকে দেখতে পেল না!
ভাবনার মাঝেই চোখের দু’কোল বেয়ে দুই ফোঁটা অশ্রু বেরিয়ে আসে।চোখের পানি সবাই দেখে ফেলবে ভেবে তড়হড় হাত উঠাই চোখের পানি মুছতে। কিন্তু অসাড় শরীরটা হাত উঠানোর একবিন্দুও শক্তি পায়নি।অসাড়ভাবে হাত বিছানাই পড়ে রইল।জানি না আকাশ কীভাবে বুঝলো!সে টপ করে তার হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে আমার চোখের পানি মুছে দেয়।ভাগ্য ভালো কেউ রুমে ছিল না।মা বাবুকে কোলে তুলে কান্না থামাতে তখনই বাইরে চলে যায়।আমি বিস্ময় চোখে ওর দিকে তাকিয়ে থাকি।ও হেসে ফেলে।বললো,
“মার কথা খুব মনে পড়েছে,তাই না?”
আমি এবার মুখ খুলতে ঠোঁট নাড়বো তার আগেই আকাশ আবার বললো,
“তুই মুখে না বললেও আমি তোর চোখের ভাষা বুঝি সানা!”
আমি এবার চোখের চাহনি ছলছলে করে ফেলি!খুশিতে যেন এক্ষুনি কেঁদে ফেলবো।আকাশ চুপিসারে সেই চোখে এসে আলতো চুমু লাগায়।আমি শিউরে উঠি।তারপর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।বললো,
“খুব উয়িক লাগছে?”
আমি আলতো মাথা নাড়ি।
আকাশ কিছুক্ষণ চুপ থেক দৃঢ় একটা শ্বাস ছাড়ে!মিইয়ে গলায় বললো,
“একটা বাবা ডাক শুনানোর জন্যে কত্ত কষ্ট করেছিস,তার প্রতিদান আমার সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়েও শোধ হবে না!আর শোন?তুই আজ আমাকে জীবনের সবথেকে সেরা উপহার দিলি আমিও তোকে আজ সারপ্রাইজড করবো!”
ফের উৎসুক চোখে আকাশের দিকে তাকাই।আকাশ একটা ডেভিল হাসি দিয়ে বললো,
“বলবো ত বাবা!একটু ধৈর্য্য ধর না!”
আমি ঠোঁট ছড়িয়ে হেসে দিই।আকাশ তার পকেট থেকে একটা সাদা শপিং ব্যাগ বের করে তা আমার সামনে তুলে ধরলো।বললো,
“দ্যাখ ত ব্যাগ টা চিনতে পারছিস কি না?”
আমি ভ্রু কুঁচকে ব্যাগটির দিকে তাকাই।এটা ত সেই ব্যাগ যেটা একদিন আকাশ আমি, রিনতি এবং টোয়া শ্যামলী শপিং মল থেকে আসার সময় আমার হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল!এটার কথা ত এতদিন আমার খেয়ালই ছিল না!ইসস্ কোথায় রাখলাম তাও মনে ছিল না!আকাশ আবার এটা কই থেকে টুকিয়ে নিল!এবার আমি না চাইতেও শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে মুখে ফসরা তুলি।
“আকাশ এটা কোথায় পেয়েছিস?”
“ও কথার এন্সার পরে করছি!আগে আমায় এটা বল সেদিন তোকে এই ব্যাগটা দেওয়ার পর খুলে দেখলি না কেন?ইভেন পরেও আর দেখস নি!এতই উপেক্ষিত ছিল আমার ভালোবাসা?!বুঝলাম!আসলে তুই আমায় মন থেকে ভালোই বাসতে পারস নি!”
“আরেহ নাহ, আকাশ কি বলছিস?আমি তোকে ভালোবাসি!খুব ভালোবাসি!আসলে কতটা ট্রমার মধ্যে ছিলাম সত্যি ব্যাপারটা মাথায়ই আসে নি!”
“যাক যাই হলো অন্তত ভালোবাসি কথাটা ত মুখ দিয়ে শুনতে পেলাম।এটাই বসি।”
বলেই আকাশ মুখে দুষ্ট হাসি টানে।আমি লজ্জা পেয়ে যাই।আকাশ বললো,
“আমি তোর বাসায় যখন পড়াতে গিয়েছি তখন তোর টেবিলের ড্রয়ারে এটা পেয়েছি !তুই যে এটা খুলে দেখিস নি আমি খুব কষ্ট পাই।তারপর এটা নিজের কাছে রেখে দিই।ভাবলাম কোনো একসময় এটা নিয়ে তোর কাছে প্রশ্ন তুলবো আজ তুললাম!”
আমি অপরাধ ভঙ্গিতে,
“আই’ম স্যরি আকাশ।”
“স্যরি বলা লাগবে না বোকা!আমি বুঝতে পেরেছি।”
আমরা হাসপাতালের সিট কেঁটে বাসায় আসার পর দারোয়ান থেকে জানতে পারি টোয়া এখানে এসেছে আমার খোঁজ করতে!কিন্তু আমি হাসপাতালে থাকার কারণে টোয়া আমাদের আর পায়নি ।টোয়া দারোয়ানের থেকে আমার নাম্বার চায় কিন্তু দারোয়ান টোয়াকে অপরিচিত জাস্টিফাই করে আর আমাদলর নাম্বার দেয় নি!এখন প্রচন্ড রাগ হচ্ছে এই দারোয়ানের উপর!এটা কী কাজ করলেন উনি?টোয়া আবার আসবে?টোয়াকে যদি আর না পাই!!দেড়/দুটো বছর পর খোঁজ পেলাম আর এই দারোয়ান!ইচ্ছে হয় এখনই উনার নাকটা ফাঁটিয়ে দিই।।
“সানা এত্ত অস্থির হচ্ছিস কেন?”
আকাশের কথায় ওর দিকে ফিরি!আকাশ বললো,
“ও যেহেতু আমাদের নাম্বার চাইছে হয়তো আমাদের নাম্বার ওর থেকে হারিয়ে গেছে!এখন এটা করা যায় ওর আগের নাম্বারটা আমাদের কাছে যেহেতু আছে ওই নাম্বারে ট্রাই করে দেখতে পারি। যদি ওপেন থাকে!?”
আমি আকাশের কথার পিঠে আর কিছু বললাম না।চুপ করে রইলাম।আকাশ মোবাইল হাতে নেয় টোয়াকে কল লরতে।আমি কৌতূহল দৃষ্টিতে আকাশের ফোনের দিকে তাঁকিয়ে।আকাশ ফোনটা কানের কাছে নেয়।মুহূর্তেই আকাশ বলে উঠলো,
“কল ঢুকতেছে সানা!”
“আলহামদুলিল্লাহ! আমার কাছে দে মোবাইলটা!”
আমি আকাশের থেকে মোবাইলটা হাতে নিই।টোয়া কল রিসিভ করেছে।বললাম,
“হ্যালো,টোয়া?কোথায় তুই?কোথায় রে দোস?প্লিজ তাড়াতাড়ি আমাদের বাসায় আয়!”
ওপাশ থেকে টোয়ার কন্ঠস্বরটা খুব ভারী শুনালো। বললো,
“আজকেই আসবো।”
সন্ধের দিকে টোয়া বাসায় আসে।সাথে তার বোন।টোয়ার দিকে আমি কিছুক্ষণ তাকিয়ে দুই মিনিটের জন্যে থম ধরে দাড়িয়ে থাকি।দুটা বছরে এর এ কেমন পরিবর্তন?চেহারাটা শুকনা।চোখের মণিতে বিরতহীন ক্লান্তির ভাব।চুলগুলো উসকোখুসকো।প্রাণোচ্ছল মুখটা এখন মলীনতায় ভরা!আগের টোয়া আর এই টোয়া খুব যেন তফাৎ!ঠাহরে আসছে না।এগিয়ে টোয়ার গাল দুটো আমার হাতের মুঠোয় কোষ করে ধরি।আবেগ এবং অস্থির জড়ানো গলায় বললাম,
“টোয়া,হঠাৎ কোথায় উধাও হয়ে গেলি?তোর ফোন বন্ধ ছিল কেন?তোকে এমন দেখাচ্ছে কেন?কি হয়েছে তোর?”
টোয়া আলতো আমার হাতজোড়া সরিয়ে নিয়ে সাবলীল গলায় বললো,
“সানা আমার বাবা মারা গেছেন!”
“আঙ্কেল মারা গেছেন!ইন্নাল ইলাহী ওয়া ইন্না ইলাহী রাজেউন।কবে?”
“সেই দুই বছর আগে!”
“দুই বছর আগে!আমি জানলাম না!”
“তোকে বললাম না?চট্রগ্রাম আমার এক মামার বাড়ি আছে?সেই মামার বাড়ি যাওয়ার পর বাবা ওখানেই মারা যান।আর চট্রগ্রাম যাওয়ার পথেই সেই দিন আমার ফোনটা চুরি হয়ে যায়। সবার নাম্বার হারিয়ে যায়।”
“মানলাম চট্রগ্রাম যেতে ফোন চুরি হয়েছে!তা কুমিল্লায় এসে আবার আমাদের খোঁজ নিস নি কেন?”
একথার পিঠে টোয়ার ভাবভঙ্গিটা কেমন হতাশ হতাশ দেখাচ্ছে।দ্বিধান্বিত গলায় বললো,
“আসলে বাবার মৃত্যুর পর মামার বাসা থেকে মামা আর কোথাও যেতে দেননি।তাই আর কোথাও যাই নি।মামীর সাথে থেকেছি সময় কেটেছে তাই আর কি ভালোই ছিলাম।”
বলেই টোয়া হাসার চেষ্টা করে!টোয়ার কথা বলার ভঙ্গিতে একটুখানি লীনও নেই।খুবই নর্মাল।কিন্তু তার চোখজোড়ার আড়লে লেগে আছে কত অপ্রকাশিত কথা,যা সে আমাকে চক্ষুলজ্জায় বলছে না বা বলতে পারছে না।আমি যতটুকু জানি ওর মামী ভালো না!জঙ্গল টাইপ মহিলা!ঠোঁট পাতলা!না জানি এই দুটা বছরে এই বাবা মরা মেয়ে দুটোকে কতই না কষ্ট দিয়েছে ।নাহলে চেহারা,বেশভূশে এমন কুশ্রী দেখা যেত না!
তবে কষ্ট,ওর বিপদে আমি ওর পাশে থাকতে পারলাম না।আর যেখানে ও আমার খারাপ মুহূর্ত গুলোতে আমাকে আঁকড়ে ধরেছে!
ভেবেই কষ্টমাখা একটা নিঃশ্বাস ছাড়ি।টোয়া হেসে উঠে আমার বাম পাশে শোয়া বাবুর দিকে তাকিয়ে। এগিয়ে যেয়ে বাবুকে মুহূর্তে কোলে তুলে নেয়।বললো,
“মাশাল্লাহ বাবু ত খুব সুন্দর রে!একদম তোর মতো,নাহ নাহ আন্টির মতো!আকাশের চেহারা ত একদমই পায়নি!উম্মা,বাব্বা!উহু বাব্বা কান্না করতেছে!নাম কি রেখেছিস?”
“নাম ঠিক করিনি!”
“তাড়াতাড়ি ঠিক করিস।তোর এবং আকাশের সাথে মিলিয়ে রাখিস।”
আমি টোয়ার কথায় আর মনোযোগ দিই নি।আমার মনোযোগ শীর্ণ দেহের পাংসুটে মুখের স্নেহার(টোয়ার ছোট্টবোন) দিকে।শুষ্ক চোখে উড়ন্ত চুলে ড্রেসিং টেবিলের কার্ণিশ ধরে দাড়িয়ে আছে।তাকে দু’হাতে জড়িয়ে এনে আমার বুকের সাথে লাগিয়ে নিই।স্নেহার হার্টবির্ট দ্রুতগতিতে উঠানামা করছে।খুব ক্লান্তি বোধহয়!আলতো মাথাটা তার মুখের দিকে নামিয়ে মৃদু গলায় বললাম,
“কিছু খেয়েছিস স্নেহা?”
স্নেহা দু’পাশে মাথা নাড়ে।
“আজ থেকে আমার এখানে থাকবি।ঠিক আছে?”
স্নেহা উপরে-নিচে মাথা ঝাঁকায়!এবার আমার দু’চোখ দিঘীর মতো ভরে যায়!অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে টোয়ার দিকে ফের তাকাই।বললাম,
“টোয়া?আমি তোরজন্যে ভালো একটা চাকরি খুঁজবো,ঠিক আছে?”
টোয়া মুহূর্তে খুশিতে টগবগিয়ে উঠে।বললো,
“তুই ত এখন বিসিএস ক্যাডার!চাকরি পেতে এখন আমার আর কোনো টেনশন নেই!”
আমি হেসে উঠি।আর মনে মনে ভাবি,যে মেয়ের মুখ থেকে কথা ফসকাতে এক সেকেন্ডও দেরী হত না আজ সেই মেয়েটা এতটা গম্ভীর কেন,হ্যাঁ?বিশ্বাস করা যায়?একদমই না!তবে,হ্যাঁ,মানতে নারাজ থাকলেও অবিশ্বাসের কিছু নয়-কোনো খারাপ পরিস্থিতিও একসময় স্বাভাবিক মানুষটাকে নিমিষে অস্বাভাবিক করে দিতে পারে!!
ভাবনার মাঝেই আকাশ রুমে প্রবেশ করে।টোয়াকে দেখে প্রথমে কিছুটা অবাক হলেও পরে মুখে হাসি ছড়িয়ে দিয়ে বললো,
“আরে টোয়া যে,কেমন আছিস তুই?অনেক দিন পর দেখলাম!”
“আমি ভালো।তুই?”
“ভালো।তবে আজ একটু বেশিই ভালো!”
“কেন?”
“এখন তোর কোলে যে বেবীটা তারজন্যে!”
টোয়া নৈঃশব্দ্যে হাসে।যে হাসিতে কোনে আওয়াজ নেই।একদম শীতল!আকাশ বললো,
“ওহ সানা,শোন?”
“হু?”
“তুরাবের জাবিন হয়েছে!”
“যতটুকু কর্তব্য তা করেছি এবং করবোও।তবে, ক্ষমা শব্দটি মন থেকে কখনোই উদিত হবে না!”
একথার তোড়ে টোয়া আমার ডানহাতটা শক্ত করে চেপে ধরে!অর্থাৎ,নিষ্ঠুর আপন মানুষগুলো কখনোই ক্ষমার যোগ্য নয়!তাহলে টোয়াও তার মামীর দ্বারা খুব কষ্ট পেয়েছে!?হয়তো হ্যাঁ!!!তবে আমি আছি টোয়া!সবসময় তোর পাশে!!!
সমাপ্তি!!!
(এগোরা মানে বাংলাদেশের একটা কোম্পানির নাম।এগোরা মানে এগারো জন বিজনেস ম্যানদের মধ্যে একজন নয়!এটা একটু ঠিক করে নিবেন যারা ভুল ভেবেছেন!
আর গল্পটা একটু অন্যরকমই ছিল!গল্পটিতে হয়তো অনেকে কষ্ট পেয়েছেন তুরাবের সাথে মিল না হওয়াতে!তারজন্যে আমি দুঃখিত!গল্পটা আমি একটু ভিন্নভাবেই সাজিয়েছিলাম!আর বাস্তবিক এমন অহরহই ঘটে থাকে আমাদের সমাজে!মূলত গল্পটায় ফুটিয়ে তুলেছি স্বার্থন্ধেষী কিছু অতি প্রিয় স্বজনদের নিয়ে যারা টাকার গৌরবে নিজের গরীব স্বজনদের ভুলে যেতে দ্বিধা করে না!)