#কারণে_অকারণে_সে
#পর্ব:২৭
#লেখক:রিয়ান আহমেদ(ছদ্মনাম)
;
সকালটা আজ আরশি আর সাভাশের জন্য সম্পূর্ণ অন্যরকম।আরশি সাভাশকে জড়িয়ে ধরে গাঁয়ে চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমাচ্ছে আর সাভাশ ওর মাথায় হাত বুলিয়ে পাশে শুয়ে আছে।আরশি সাভাশের উন্মুক্ত বুকে নাক ঘসে বলে,
“কয়টা বাজে?”
“সকাল আটটা।”
আরশি চমকে চাদরটা বুকে জড়িয়ে উঠে বসে।আজ তার ফজরের নামাজ আদায় করা হলো না।আরশি সাভাশের দিকে তাকিয়ে বলে,
“আমাকে ডাক দেন নি কেন?”
“আমি নিজেই জেগেছি কিছুক্ষণ আগে। সারারাত তো আর ঘুমাতে পারি নি আমরা।”
সাভাশ কথাটা বলে দুষ্টু হাসে । আরশি কথার মানে বুঝতে পেরে সাভাশের থেকে চোখ সরিয়ে নেয়। নিজের জামাকাপড় খুঁজতে থাকে বিছানায় আর দেখে সব ফ্লোরে পড়ে আছে।হাতের কাছে শুধু সাভাশের শার্ট আছে।তাই সেটাই গায়ে জড়িয়ে নিয়ে চাদরটা পেঁচিয়ে উঠে দাঁড়াতে চায় কিন্তু পারে না।সাভাশ ওকে টেনে নিজের কোলে বসিয়ে দেয়।আরশি চোখ গরম করে তাকায় কিন্তু এতে যে সাভাশের কোনো যায় আসে না তা ওর ভাবভঙ্গি দেখেই বোঝা যাচ্ছে।সাভাশ বলে,
“আরেকটু থাকো না আমার কাছে এমন করো কেন?”
আরশি ঘড়ির দিকে আঙ্গুল উঁচিয়ে বলে,
“দেখেছেন কয়টা বাজে?মা বাবা আরো কতো মানুষ এসেছে আম্মু আর চাচী একা এতজনের রান্না করতে পারবে না আমার সাহায্য করতে হবে তাদের।”
সাভাশ দুই দিকে মাথা নাড়িয়ে বলল,
“এটা ঠিক না তুমি নিজের কথার খেলাপ করছো।”
“কোন কথার?”
“তুমি বলেছিলে তুমি আমার থেকেও বেশি রোমান্টিক হবে।কিন্তু তুমি এখনো সেই আগের মতোই আচরণ করছো।”
আরশি কিছুটা ভেবে বলল,
“ওকে তাহলে আজ থেকে আপনি আমার সঙ্গে যেমন আচরণ করেন আমিও আপনার সঙ্গে তেমনই আচরণ করবো।”
সাভাশ খুশিতে পারলে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করবে এমন অবস্থা। সে খুশি ধরে রাখতে না পেরে আরশির গালে ফটাফট দুটো চুমু দিয়ে বসে।আরশি সাভাশের গাল টিপে দিয়ে হেসে বলে,
“মাই কিউটি!সারাদিন ভিলো মতো থেকো।”
সাভাশ কথাটা শুনে বোকা বনে চলে যায়।তার মানে এখন থেকে আরশি তাকে এসব নামেই ডাকবে। কিন্তু সে তো শক্ত পোক্ত গড়নের একজন সুদর্শন পুরুষ তার ক্ষেত্রে কি আদৌ এমন সব না শোভা পায়? উঁহু আরশির উচিত তাকে ‘মাই হ্যান্ডসাম’ ‘মাই হাব্বি’ এসব বলে ডাকা। আরশি সাভাশকে বলে,
“শোনো তুমি না অনেক বেশি কিউট।একটা মানুষ কি করে এতো কিউট হতে পারে!”
সাভাশ বলে,
“এগুলো রোমান্টিক কথাবার্তা?”
“হুম তা নয় তো কি?”
“এগুলো রোমান্টিক কথাবার্তা কোনোক্রমেই হতে পারে না।তোমার কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে তুমি কোনো বাচ্চার সাথে কথা বলছো।”
“তোমার এমন মনে হয় কেন?তুমি বাচ্চা হতে যাবেন কোন দুঃখে?কদিন পর তো আমাদের বাচ্চা হবে তোমার মুখে এসব কথা মানায় না এখন একটু ছাড়ো আমাকে।”
সাভাশ আরশির ঘাড়ে লাল দাগ খেয়াল করে শার্টটা ঘাড় থেকে কিছুটা সরিয়ে হেসে বলল,
“দেখো তোমার গায়ে সাভাশের সিলমোহর বসে গেছে।”
আরশি দাগটা দেখে বাঁকা হেসে বলে,
“তুমি পিঠে এতোগুলো নখের আঁচড় বসেছে যে গোসল করতে গেলে বুঝবে।আর বুকেরটা না হয় তুমি নিজেই দেখে নেও।”
সাভাশ দেখে আসলেই তার বুকের জায়গায় জায়গায় লাল হয়ে গেছে।মেয়েটা তাকে বিড়ালের মতো বেশ কয়েকটা আঁচড় দিয়েছে যা বেশ কিছুক্ষণ যাবত অল্প অল্প জ্বলছে।
সাভাশ আরশির গলায় হাত দিয়ে নিজের কাছে এনে কানের লতিতে কামড় দিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,
“সময় আর সুযোগ আমার কাছে আরো আছে।”
আরশি কাঁপছে।এতো ভালোবাসা সে আসলেই নিতে পারছে না।আরশির ভেতরের ঝড়টা কি সাভাশ উপলব্ধি করতে পারছে?পারলে সেটাকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে কেন?সাভাশ ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়।কিছুক্ষণ সাভাশ ছেড়ে দিতে চাইলেও পারে না আরশি পেছন থেকে চুল আকড়ে ধরে আছে।আরশি ভ্রু নাচিয়ে তাকিয়ে আছে। যেন বলছে,
“এখন থেকে আমি আপনার চেয়ে বেশি রোমান্টিক।”
;
;
;
রাফিউল আহসান আর শবনম বেগম মাহমুদ বাড়িতে এসেছেন তীব্রর জন্য পরীর হাত চাইতে।
“প্রিয়া আমার ছেলের তোর মেয়ের হাত চাইছি আমি।”শবনম বেগম হাসিমুখে কথাটা বলে বান্ধবী প্রিয়া বেগমের দিকে তাকান।প্রিয়া বেগম অবাক না হয়ে পারলেন না।উনি অবাক হয়ে বলেন,
“কি বলিস এসব!আমার মেয়ে এখনো অনেক ছোট মাত্র ভার্সিটিতে উঠেছে এখনই ওকে বিয়ে দেবো না আমরা।”
রাফিউল আহসান কথায় ফোঁড়ন কেটে বলেন,
“আপা আপনি এই বিষয় নিয়ে একদম চিন্তা করবেন না।আমরা পরীকে বিয়ের পরেও পড়াশুনা করাবো।আপনার বান্ধবীকেও যে আমি বিয়ের পড়িয়েছে এটা অবশ্যই আপনি জানেন।আর কথা হলো আমরাও চাই নি এতো ছোট মেয়েকে বিয়ে করাতে কিন্তু সবটাই আল্লাহর ইচ্ছা।আমার ছেলে আপনার মেয়েকে বিয়ে করবে বলেই ঠিক করেছে। পরী কতো ভালো মেয়ে তা আমরা জানি তাই আমরাও আপত্তি করছি না।”
প্রিয়া বেগম দ্বিধায় পড়ে যান বান্ধবীকে মুখের উপর তিনি না করতে পারছেন না তাছাড়া স্বামীর সঙ্গেও কথা বলাটা জরুরি।তাই তিনি বললেন,
“আমি মাহমুদের সাথে কথা বলে আপনাদের জানাবো। তীব্র যে কতো ভালো ছেলে তা আমি জানি আমি ওসব বাইরের মানুষের কথায় বিশ্বাস করি না। তবে ও আমাদের ছোট মেয়ে তাই যা করবো তা তো ভাবনাচিন্তা করেই করতে হবে।”
শবনম বেগম মাথা নাড়িয়ে বলেন,
“কোনো সমস্যা নেই।তোর মেয়ে তুই ভাবনা চিন্তা করেই আমাদের জবাব দিস আর তাছাড়া পরী নিজেরও একটা মতামত আছে না ওর নিজেরও একটা পছন্দ অপছন্দ আছে।আমার ছেলেকে ওর নাও পছন্দ হতে পারে।”
আহসান দম্পতির যথাসম্ভব আপ্যায়ন করে বিদায় জানালেন প্রিয়া বেগম।
মাহমুদ সাহেব রাতে বাসায় আসতেই তিনি ব্যাপারটা খুলে বলেন।মাহমুদ সাহেব নিজেও তীব্রকে বেশ কয়েকবার দেখেছেন।তিনি বললেন,
“দেখো তীব্র ব্যাপারে সবটাই ভালো কিন্তু আমার মেয়ে রাজি হবে কি না তাও তো জরুরি।”
“পরী আমার থেকে বেশি তোমার সাথে ফ্রি তুমি নাহয় ওকে জিজ্ঞেস করে নেও।”
মাহমুদ সাহেব পরীকে ডেকে পাঠালেন।পরী এসে জিজ্ঞেস করলো,
“কি হয়েছে বাবা?”
“দেখো মা আমি জানি ব্যাপারটা একটু জলদি ঘটছে কিন্তু সবকিছুই তো আল্লাহর ইচ্ছা তাই না।”
“বাবা কি হয়েছে সোজাসুজি বলো।”
“তোমার মায়ের বান্ধবী শবনম আন্টিকে চেনো তো?”
“হুম চিনি।তার ছেলেকেই তো দুইদিন আগে হাসপাতালে এডমিট করে এলাম।”
মাহমুদ সাহেব অবাক হয়ে বললেন,
“কি বলিস?তীব্রকে তুই হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিস?!কিন্তু কেন?”
“আরে বাবা রাস্তা দিয়ে আমি হেঁটে যাচ্ছিলাম তখনই ফুটপাতে একটা লোককে জিনিসপত্র বিক্রি করতে দেখি।আমার চোখে হঠাৎই একটা ব্রেসলেট আটকে যায় কেন যেন সেটা নিতে অনেক ইচ্ছা করে।তখনই তার সাথে দেখা।আমি ব্রেসলেট নিয়ে চলে আসছিলাম কিন্তু ঐ ভাইয়াটা আমাকে পেছন থেকে ডাকছিল,’এই মেয়ে ,মিস।’ এরপর আমি পেছন ঘুরতেই ভাইয়া অজ্ঞান হয়ে যায়।এখন ওনাকে তো আর রাস্তায় ফেলে আসতে পারি না তাই লোকজনের সাহায্য নিয়ে তাকে সিএনজিতে তুলে হসপিটালে নিয়ে যাই।এরপর ফোন করি তার পরিবারের লোকজনকে তারা আসার পর জানতে পারি উনি শবনম আন্টির ছেলে।”
“ওও তুই তীব্রর এংগেজমেন্টে আমাদের সঙ্গে গেলে ওকে দেখতি।,,অবশ্য সেই এংগেজমেন্ট ভেঙ্গে গেছে।”
“ও আমি তার জন্য দুঃখিত।”
“আচ্ছা তোমার কি মনে হয় সে কেমন মানুষ?”
“আজব! একবার দেখে মানুষকে বিচার করা যা না কি?আর তার সাথে তো আমার কথাও হয় নি।তাছাড়া সে কেমন মানুষ এটা জেনে তুমি কি করবে?”
“দেখো তোমার বড় আপুর বিয়ে হয়েছে সে ঘর সংসার নিয়ে ভালোই আছে এখন তোমার বিয়ে দিতে পারলেই আমি আর তোমার আম্মু নিশ্চিন্তে কবরে যেতে পারবো।”
পরী চোখ বড় বড় করে বলে,
“কি বলো বাবা?বিয়ে আমি করবো না আমি বিয়ে করে চলে গেলে তোমাদের কে দেখবে।আপু শশুড়বাড়ি যাওয়ার আগে বলে গেছে এখন থেকে আমাকেই তোমাদের খেয়াল রাখতে হবে।”
মাহমুদ হাসেন মেয়ের কথায় আর বলেন,
“তোমার আম্মুর খেয়াল রাখার জন্য আমি আছি আর আমার খেয়াল রাখার জন্য তোমার আছে।,,,সব মেয়েকেই বিয়ে করতে হয় সেটা আজ হোক বা আগামী কোনো দিন।তীব্র অনেক ভালো একটা ছেলে আমার আর তোমার মায়ের তাকে পছন্দ হয়েছে এখন তোমার মতামতের পালা।তোমার যদি কাউকে পছন্দ থেকে থাকে তাহলে বলো।”
“না নেই।কিন্তু আমি এভাবে একজন অপরিচিত লোককে নিজের জীবনে জায়গা দিতে পারবো না।যেখানে আমি তার নাম ছাড়া আর কিছুই জানি না।”
“ঠিকাছে।আমি আগামীকাল তীব্রর পরিবারকে দাওয়াত দেবো আমাদের বাসায়।তুমি আর তীব্র একে অপরের সঙ্গে কথা বলো।এরপর তোমার যা ইচ্ছা তাই হবে।”
পরী নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায়।তীব্র নামের লোকটার চেহারা সে একদম স্পষ্ট মনে করতে পারছে।কিন্তু এই কথোপকথনের পূর্বেও তীব্রর কথা সে প্রায় ভুলেই গিয়েছিল। তীব্র যখন অজ্ঞান হয়ে যায় তখন ওর উজ্জ্বল শ্যামলা চেহারাটা বেশ লাল হয়েছিল আর ঘামে ভিজা চুলগুলো কপালে লেপ্টে ছিল।
;
;
;
আয়েশা বেগম বললেন,
“দেখো আমাদের ছেলে আরহামের জন্য আমার একটা মেয়েকে ভীষণ পছন্দ হয়েছে আশা করি তোমারও পছন্দ হবে।”
রিজা আহসান জায়নামাজ জায়গা মতো রাখতে রাখতে বললেন,
“কোন মেয়ের কথা বলছো?”
“আরিয়ানা আছে না?ঐ যে সাভাশের ফুফাতো বোন ডাক্তার।”
“হুম ভালো মেয়ে।”
“ওর মা অনেক ভালো একজন মহিলা। আরিয়ানার বয়স যখন বারো তখন ওনার স্বামী মারা যায়।তখন থেকে মেয়েকে সামলিয়ে রেখেছেন স্বামীর ব্যবসাটাও দেখেছেন। আরিয়ানার কথা আর কি বলবো বড় লক্ষ্মী মেয়ে।দেখো পড়াশুনা করে ডাক্তার হয়েছে কিন্তু কথায় অহংকার একদম নেই আমাকে দেখলে কতো আদর করে। ”
“মেয়ের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার আগে আরহামের সাথে কথা বলে নেও।ওর কি মতামত।”
“আমি ওকে বলেছি নামাজ পড়ে আমার ঘরে আসতে এখনই হয়তো চলে আসবে।”
আরহাম আসতেই রিজা আহসান বলেন,
“ডিভানে বসো তোমার সাথে কথা আছে।”
আরহাম বসে বলে,
“কি হয়েছে বাবা?”
“তোমার বিয়ের জন্য আমরা একটা মেয়ে পছন্দ করেছি।”
আরহাম চমকে উঠে।কি বলছে তার বাবা এসব!সে তো আরিয়ানাকে ভালোবাসে।না না কোনো মেয়েকে বিয়ে করার কথা সে ভাবতেই পারে না।আরহাম দ্রুত বলে,
“বাবা আমারও তোমাকে কিছু বলার আছে।”
“আগে আমার কথাটা শেষ করতে দেও।”
আরহাম আজ নিজের কথা বলেই ছাড়বে তাই এক নিঃশ্বাসে বলে,
“বাবা আমি আরিয়ানাকে ভালোবাসি আমার পক্ষে তাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করা সম্ভব না সেও আমাকে ভালোবাসে।”
আয়েশা বেগম আর রিজা আহসান ছেলের কথা শুনে হা হয়ে যায়।আরহাম চুপচাপ মা বাবার দিকে উত্তরের আশায় তাকিয়ে থাকে।হঠাৎ করে দুজনেই হেসে দেন আরহামের মা বলেন,
“আমরা তোকে আরিয়ানার কথাই বলতে যাচ্ছিলাম।যাইহোক তুই নিজে থেকে বললি বলেই আমরা জানতে পারলাম আমাদের এই রাগী ছেলে প্রেমও করতে পারে।”
আরহাম নিজের বোকামির জন্য মাথা চুলকায়।আসলেই তার পুরো কথাটা শোনা দরকার ছিল।
;
;
;
সাভাশ এই মাত্র একটা কেসের কাজ শেষ করে আদালত থেকে অফিসে ফিরেছে।অফিসে এসে যে এমন একটা অদ্ভুত ঘটনার সাক্ষী সে হবে তা তার ভাবনাতীত ছিল।আরশি সাভাশের ‘ল’ অফিসের ডিরেক্টরসহ, অনেকের সঙ্গে বসে আছে আর ডিরেক্টরের সঙ্গে দাবা খেলছে।
সাভাশ হা হয়ে তাকিয়ে থাকে।আরশি জিতে যায় আর লাফিয়ে উঠে বলে,
“ইয়ে আমি জিতে গেছি।”
সবাই হাত তালি দিচ্ছে।ডিরেক্টর শুকনো মুখে বলল,
“এতোটুকু একটা মেয়ের থেকে শেষ পর্যন্ত আমাকে হারতে হলো।আমার বিশ বছরের অভিজ্ঞতা!”
সাভাশ আরশির সামনে গিয়ে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে বলে,
“কি ব্যাপার? কি হচ্ছে এখানে?”
সবাই থেমে যায় আর সাভাশের দিকে তাকায়।ডিরেক্টর নিজের মাথার টাকে হাত দিয়ে দুঃখি মুখ করে বলেন,
“কি আর হবে।আমাকে এই প্রথম একটা বাচ্চা মেয়ের কাছে আমার প্রিয় খেলায় হারিয়ে দিল।”
সাভাশ আরশিকে বলল,
“আরশি চলো আমার কেবিনে চলো।”
“আমার চায়ের কাপটা এখনো ফাঁকা হয় নি দুই মিনিট দাঁড়াও বেবি।”
আরশির মুখে বেবি শুনে সবাই সাভাশের দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসতে থাকে।সাভাশ আরশির হাত ধরে জোরপূর্বক হেসে বলল,
“তুমি আমার কেবিনে চলো।চা বিস্কুট সব কিছুর ব্যবস্থা আছে।আমার এক ক্লাইন্ট আমাকে চীনের ড্রাগন টি গিফ্ট করেছে সেটা খাবে কেমন।”
“ওকে।”
আরশি সাভাশের জন্য লাঞ্চ টেবিলে সাজিয়ে দিয়ে সাভাশের কোলের উপর বসে পড়ে।সাভাশ চোখ বড় বড় করে বলে,
“আরশি কি করছো কি?কেউ একজন এসে পড়লে কি ভাববে কোল থেকে নামো।”
আরশি সাভাশের গালে হাত বুলিয়ে হেসে বলে,
“এমন করো কেন তুমি? আমি তো তোমার বউ তাই না।আজকে আমি তোমার কোলের উপরেই বসে থাকবো আমি তোমাকে খাওয়াবো তুমি আমাকে খাওয়াবে।”
সাভাশ ফাঁকা ঢোঁক গিলে।আরশিকে রোমান্টিক হতে বলে কতো বড় ভুল যে সে করেছে তা এখন হারে হারে টের পাচ্ছে সে।মেয়েটা যদি এমন করে তাহলে সাভাশ নিজেকে সামলাবে কি করে?সাভাশ নরম গলায় বলে,
“আরু তুমি আমাকে দরজাটা অন্তত লক করতে দেও কেউ চলে আসলে আমাদের ভীষণ লজ্জায় পড়তে হবে।”
আরশি সাভাশের কোল থেকে নেমে যায়।সাভাশ দরজা লক করে এসে নিজের চেয়ারে বসতেই আরশি আবারও কোলে উঠে বসে।
আরশি আর সাভাশ একে অপরকে খাইয়ে দেয়।আর এই সময়টা ছিল সাভাশের জন্য ধৈর্যের পরীক্ষা।আরশি কখনো হয় তার গালে কিস করছিল তো কখনো সুরসুরি দিচ্ছিল আবার কখনো সাভাশের বুকে মাথা রাখছিল।সাভাশ শুধু নিজেকে এই মুহুর্তে কন্ট্রোল করছে।সাভাশ মনে মনে বলে,
“একদিনে এতো ভালোবাসা! আরো কিছুদিন এই অবস্থা থাকলে তুই বোধহয় অতিরিক্ত ভালোবাসা নিতে না পেরে পটল তুলবি সাভাশ।ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য যেমন বেশি চিনি ক্ষতিকর তেমন তোর জন্য বউয়ের বেশি রোমান্টিকতা ক্ষতিকর।”
সাভাশ আরশির দিকে তাকিয়ে বলে,
“আরু তুমি বাসায় যাবে না?”
আরশি সাভাশের বুকে মাথা রেখে আঁকিবুকি করতে করতে বলে,
“না তোমাকে ছাড়া বাসায় ভালো লাগে না।”
;
#চলবে!