গ্যাংস্টার লাভ পর্ব-২৩+২৪

0
927

#গ্যাংস্টার_লাভ
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
#পার্ট_২৩

রিহা অস্থির হয়ে পড়ে। রুশ আর অন্তরা একটু দূরে পরিবেশ দেখছে । রিহা ফোন দেয় কিন্ত রেহান কেটে দেয়

রেহান ফোন রেখে হকিস্টিক দিয়ে ছেলেগুলো মারতে লাগে।

অনি : রেহান ছেরে দে আমরা দেখছি
রেহান : মুখে টেপ দে যাতে চিৎকার করতে না পারে রিহার সাথে কথা বলার সময় ওদের চিৎকার রিহা শুনতে পায় এখন হাজার প্রশ্ন করবে
অনি : ওই কিছু একটা বল নাহলে বেচারি টেনশন করবে

রেহান ওদের থেকে একটু দূরে অন্য একটা রুমে গিয়ে রিহাকে ফোন দেয়। ফোন দেবার সাথে সাথে রিহা ধরে

রিহা : হেলো আপনি সেই সময় ফোন কেনো কেটে দিলেন আর ওটা কার চিৎকার ছিল আপনি ঠিক আছে তো আপনার কিছু হইনি তো (চিন্তিত হয়ে)
রেহান ….
রিহা : কিহলো বলেন
রেহান .
রিহা : হেলো আপনি ঠিক আছে তো

রিহা কথা বলেই যাচ্ছে রেহান স্তব্ধ হয়ে আছে রিহার এতো চিন্তা দেখে নিজেকে সামলে রেহান বলে

রেহান : আমি ঠিক আছি আর…
রিহা : তাহলে কথা বলছিলেন না কেনো ?
রেহান : তুমি যেই ভাবে প্রশ্ন করছো আমি কি করে বলবো
রিহা : হুম
রেহান : আসলে আমি রাস্তায় দাড়িয়ে কথা বলছিলাম তখনই একটা অ্যাকসিডেন্ট হয় তার চিৎকার ছিল।
রিহা : কি বলেন আপনি ঠিক তো?
রেহান : আপনার দোয়ায় ঠিক আছি
রিহা : অনেক কেটেছে নাকি ?
রেহান : না তেমন বড়ো কিছু না তুমি বলো তোমার কি খবর ? কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো
রিহা : না (মন খারাপ করে)
রেহান : কিহলো ?
রিহা : কিছু না
রেহান : আমায় মিস করছো আসবো ?
রিহা : সত্যি (খুশিতে)
রেহান : বাবাহ ম্যাডাম কি খুশি আমি যদি আসি তাহলে কিন্ত তোমায় অনেক জ্বালা সহ্য করতে হবে ভেবে দেখো
রিহা : ধুর আমি রাখছি
রেহান : হা হা হা আচ্ছা
রিহা : এই একদম হাসবেন না দাত পরে যাবে
রেহান: আমার দাত ওতো দূর্বল না
রিহা : হ্ন (ভেংচি কেটে)

কিছুক্ষণ দুইজনের মাঝে নিরবতা । নিরবতা ভেঙ্গে রেহান বলে।

রেহান : যাওয়ার জন্য তো খুব নাচানাচি করছিলে তাহলে এখন ভালো কেনো লাগছে না হুম ?
রিহা : কে বলেছে ভালো লাগছে না খুব ভালো লাগছে এত সুন্দর জায়গা ভালো না লেগে পারে
রেহান : তাহলে মন খারাপ কেনো ?
রিহা: তেমন কিছু না সবাই এতো ইঞ্জয় করছি আপনি নেই তাই একটু খারাপ লাগছে
রেহান : ওহ বুঝলাম
রিহা : কচু বুঝছেন । আচ্ছা আপনি কিসের এত কাজে বেস্ত?
রেহান : কেনো তুমি জানো না
রিহা : জানি তো তবে কোনটা সেটা বুঝতে পারছি না অফিসের কাজ নাকি @গ্যাংস্টার গিরি
রেহান : যেদিন আমাকে বুঝতে পারবে সেদিন এই সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে
রিহা : লাগবে না আমার উত্তর বেশি বুঝা ভালো না
রেহান : ওকে ম্যাডাম আমি কাজ শেষ করে তারপর আসবো কেমন
রিহা: হুম
রেহান : টাটা
রিহা : টাটা

রিহা কল কেটে অন্তরা দের কাছে যায়
অন্তরা : এখন বাসায় যাওয়া দরকার রাত হতে গেলো
রিহা : হুম চলো

অন্তরা রিহা আর রুশ বাসায় গেলে মাইশা চৌধুরী দাড়িয়ে আছেন রিহাকে টেনে রুমে নিয়ে যায়।

মাইসা চৌধুরী : কোথায় ছিলে তুমি জানো আমার কত টেনশন হচ্ছিল রেহান বার বার বলে দিয়েছে তোকে দেখে রাখতে আমায় রেখে কেনো গিয়েছিলে আর একটু বলে গেলে কি সমস্যা হতো এতো টেনশনে তো থাকতে হতো না এই বয়সে এসে এতো টেনশন ভালো লাগে না (খাটে বসে)

রিহা আর রুশ অবাক । একটু বলে যায়নি তাই এত রাগ । রিহা ও কম যায়না ধির পায়ে মাইশা চৌধুরীর কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে

মাইশা চৌধুরী : ছার যেখানে ছিলি সেখানে যা রিহা: না আমার মামনি তো এখানে আমি অন্য কোথাও কেনো যাবো (মিষ্টি হেসে)
মাইশা চৌধুরী : হইছে আর ঢং করতে হবে না আমি এখন বুড়ো হয়ে গেছি আমার কথার দাম তো কারোর কাছে নেই
রিহা : কে বলছে তুমি বুড়ি তুমি তো আমার থেকে সুন্দর এখন যদি তোমায় সাজিয়ে বসায় ছেলেরা তো পাগল হয়ে যাবে ।(দুষ্টুমি করে)
মাইশা চৌধুরী : চুপ কর আমি তোর শাশুড়ি সেটা কি ভুলে গেছিস
রিহা : কেনো যাবো তোমাকে যা হট দেখতে জানিনা ইয়াং বয়সে কেমনে পাগল করছো
মাইশা চৌধুরী : মার লাগাবো কিন্ত (হেসে)
রিহা : হি হি হি

রুশ পাশে বসে বলে।
রুশ : রাজি নাকি ?
মাইশা চৌধুরী : কিসে?
রুশ : বিয়ে করতে (চোখ মেরে)
মাইশা চৌধুরী : তোরা দুটো মার খাবি আজকে
রিহা : না মামনি ত শুধু আমার পাপাই এর বউ তাই না মামনি

পাপাই শুনে মাইসা চৌধুরী অবাক
মাইশা চৌধুরী : পাপাই?
রিহা : কে পাপাই ? কোথাও পাপাই উফফ মাথা ব্যাথা করছে কেনো (মাথা চেপে ধরে)

মাইশা চৌধুরী বুঝতে পেরে বলে কেউ না চল খাবি চল
রুশ : হা রিহা চল পেটে হাত লাফালাফি করছে

রুশ এর কথা শুনে রিহা হেসে দেয়।

সবাই মিলে খাওয়া শেষ করে এক sathe শুয়ে পড়ে।

সবাই মিলে শুয়ে শুয়ে গল্প করছে কিন্ত সব কিছুর মাঝে রিহা রেহান কে মিস করছে ওর তো ঘুম আসছে না শুধু এপাশ ওপাশ করছে মাইশা চৌধুরী বুঝতে পারে রিহার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। অন্তরা রুশ আর রিহা এক সাথে ঘুমিয়েছে মাইশা আর রাইসা নিচে শুয়ে আছে। পুরনো জামানার ঘর বলে বেশি বড়ো খাট না তবে যতেষ্ট বড়ো তিনজনের বেশি হবে না তাও চিকন দেখে । মাইশা চৌধুরী আর রাইসা খান গল্প করছে অনেক দিন পর দেখা হলে যায় হয়

এদিকে
রেহান বারান্দায় দাড়িয়ে আছে ওর তো কিছুতেই ঘুম আসছে না এই কইদিন রিহা নেশা হয়ে গেছে রিহাকে ছাড়া রেহান এর চলা খুব কষ্টের । অনি রেহান এর গাধে হাত দেয়।

রেহান : ঘুমালি নি ?
অনি: তুইও তো
রেহান : ঘুম আসছে না
অনি : রিহা কে মিস করছিস ?
রেহান : নেশা ধরে গেছে যে নেশা কোনো কিছু দিয়ে ছাড়াবে না
অনি : রিহা সুস্থ হয়ে উঠবে না
রেহান : রিহাকে যদি পুরানো কোনো কথা মনে করানোর চেষ্টা করা হয় তাহলে রিহার ক্ষতি হতে পারে (দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে )
অনি : সময় মানুষকে কি বানিয়ে দেয়
রেহান : খুব কষ্ট হয় যখন রিহার আগের কথা ভাবি জানিস সারাদিন বাড়ি ছুটে বেরাত কেউ সামলাতে পারতো না আর ওর সব আবদার আমায় ঘিরে আমার আব্বুকে ও পাপাই বলে ডাকতো । মাঝে মাঝে যখন আমি রেগে বকা দিতাম কাদত না কিন্ত ঠোঁট ফুলিয়ে চোখ লাল করতো তাই দেখে আমার মন গলে যেতে আর ওর চকোলেট যদি কেউ ধরেছে বাড়ি মাথায় করতো (হেসে)

অনি চুপ করে রেহান এর কথা শুনছে । রেহান হেসে আবার বলা শুরু করলো

রেহান : ছোটো থেকে খুব জেদী ছিল আর যা চাবে দিতেই হবে আমাদের পরিবারের মনি ছিল ও । বাড়ির সবাই খুব ভালোবাসতো ।
অনি : তোরা এক বাড়িতে থাকটি ?
রেহান: হুম ওর আব্বু আম্মু আমার আব্বু আম্মু আর আমার দাদু । আমাদের যখন আকদ করায় তখন আমায় বলেছিলো ও কবুল বলবে কিন্ত ওকে অনেক চকোলেট দিতে হবে আর বকা যাবে না আমি হেসে ওর ছোটো ছোট চুল টেনে দিয়েছিলাম । সব ভালো ছিল কিন্ত একটা ঝড় এসে সব শেষ করে দিল আমার সব খুশি কেরে নিল আমার রিহার ছেলে বেলা কেরে নিল ওই দিনটার কথা ভাবলেই বুক কেপে উঠে জানিস ভাগ্য ক্রমে আমার রিহার কিছু হইনি । আমার স্কুলে বিত্তি পরীক্ষা দেবার জন্য জেলার বাইরে যেতে হইছিলো রিহার আব্বু আর আমার আম্মু সাথে করে নিয়ে গিয়েছিল । রিহাকে ছাড়া যেতে খুব কষ্ট হচ্ছিল কখনো ওকে ছাড়া থাকিনি কিন্ত আমাকে যেতেই হলো আর এটাই আমার সব থেকে বড় ভুল ছিল (চোখের পানি মুছে)

অনি রেহান এর কাধে হাত দিয়ে সান্তনা দিচ্ছে রেহান নিজেকে সামলে আবার বলা শুরু করলো

রেহান : আমাদের দুইদিন থাকার কথা ছিল । একবারে রেজাল্ট নিয়ে ফিরবো বলে। বাসায় শুধু রিহার আম্মু আর আমার আব্বু আর দাদু ছিল সেই সুযোগ নিল জানোয়ার গুলো

কথাটা বলতে গিয়ে রেহান এর চোখ লাল হয়ে গেছে

চলবে

#গ্যাংস্টার_লাভ
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
#পার্ট_২৪(রহস্য উন্মোচন)

রেহান নিজেকে ঠিক করে বলতে শুরু করলো

রেহান : আব্বু তাড়াতাড়ি বাসায় আসে। রিহার সাথে খেলছিল আব্বু আর রিহার আম্মু । আর দাদু নিজের ঘরে ছিল তখনই হটাৎ কেউ জোড়ে জোড়ে দরজা ধাক্কা দেয়। রিহার আম্মু খুলতে গেলে কিছু লোক রিহার আম্মুর মাথায় গান ঠেকায় রিহার আম্মু চিৎকার করতে গেলে মুখ চেপে ধরে ভিতরে যায় । রিহার ঘর ছিল কাচের ভিতর থেকে সব দেকা যাবে কিন্ত বাইরে থেকে কিছু দেখা যাবে না । আমার আম্মু লোকগুলোকে দেখে তাড়াতাড়ি রিহা কে রেখে দরজা আটকিয়ে বাইরে লোকগুলোর কাছে যায় ।

রেহান এর আব্বু : এই তোমরা কারা আর ভাবীকে ওভাবে ধরে রাখছ কেনো ছার আমি পুলিশে ফোন করছি

কথাটা বলতে দেরি কিন্ত ওদের সুট করতে দেরি না রিহা ভিতর থেকে সব দেখছিল । বাড়িটা ফাঁকা জায়গায় ছিল বলে আশেপাশে তেমন বাসা ছিল না।

লোকগুলো আমাদের বাড়ির সব টাকা গহনা নিয়ে যায় আমার দাদুর ঘরে ও গিয়ে দাদুকে খুন করে । রিহার আম্মু ছটপট করছিলো তাই রিহার আম্মু কে মেরে ফেলে । সব কিছু নিয়ে যাওয়ার সময় সব ঘর ভালো করে দেখিলো কেউ আছে কি না রিহার ঘরের দরজা বাইরে থেকে দেওয়া ছিল বলে ওরা যেতে গিয়ে ও যাইনি কারণ পুলিশের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল আমার আব্বু রুম থেকে বের হবার আগে ফোন করে সেই জন্য ওরা চলে আসে কিন্ত শেষ রক্ষা করতে পারেনি । অমানুষ গুলো আমার পরিবার কে মেরে ও শান্তি হইনি রিহার আম্মুর দিকে ওদের নজর যায় আর রিহার আম্মুর সাথে

কথাটা বলতে গিয়ে রেহান কেদে উঠে অনি ওর কাঁধে হাত দেয়। রেহান আবার বলতে শুরু করে

রেহান : জানিস যখন পুলিশ যায় তখন সব শেষ কিন্ত আমার আব্বুর সেন্স ছিল পুলিশ আমার আব্বুর বন্ধু ছিল । আমার আব্বু পুলিশকে ডেকে রিহার কথা বলতে বলতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে

আমার ছোট্ট রিহা ঘর থেকে সব দেখেছে ওই টুকু বয়সে ও নিতে পারেনি । ছোটো থেকে ও ভয় পেলে খাটের নিচে চলে যায় সেদিন ও দরজা আটকিয়ে খাটের নিচে চলে যায় সবাই অনেক চেষ্টা করছে কিন্ত ওকে আনতে পারেনি রিহার একটা কথা আমাকে মেরো না আমাকে মেরো না

পরেরদিন সকালে যখন আমি আম্মু আর রিহার আব্বু যাই গিয়ে দেখি সব শেষ । নিজের দাদু আব্বুর নিথর দেহ পরে থাকতে দেখছি চিৎকার করে ও কাদতে পারিনি কেননা আমি ছেলে আম্মু প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিল রিহার আব্বু ও নিজের চোখ কে বিশ্বাস করতে পারছিল না তখন পুলিশ রিহার কথা জানলে রিহার আব্বু ছুটে যায় অনেক চেষ্টা করে ও ওকে বের করতে পারেনি শেষে আমি যাই আমাকে ও ছোটোবেলা থেকে অনেক ভালোবাসে আমার সব কথা শুনত আমি বলার পর ও বেরিয়ে আসে। সেদিন ও আমাকে বলেছিল

রিহা : ওরা খুব দুষ্টু সবাই যে মেরে দিচ্ছে তুমি ওদের শাস্তি দিবে নাহলে আমি বাঁচবো না

কথাটা বলতে বলতে রিহা সেন্স হারায়। সেদিন ওকে ছুয়ে বলেছিলাম আমি সবাইকে শাস্তি দেবো কাউকে ছাড়বো না। আমার পরিবারে উপর দিয়ে এতো সব ঝড় গেলো সব যেনো স্বপ্নের মত লাগছিল কিছুই বুঝতে পারছিলাম না তখন আমি বেশি বড়ো না ১২বছর বয়স ।

নিজের হাতে আব্বু দাদু আমার মামনির সব কাজ শেষ করে বাসায় এসে চুপ করে থাকি আম্মুর অবস্থা তেমন ভালো ছিল না আর রিহা সে তো সেন্স হচ্ছে বার বার একবার সেন্স ফিরলে শুধু বলছে আমাকে মেরো না আমাকে মেরো না ।নিজের আম্মু এই অবস্থায় আমি কি করবো কিছু বুঝতে পারছিলাম না

রিহার ওমন ব্যাবহারে রিহাকে হসপিটালে ভর্তি করে রিহা আস্তে আস্তে অসুস্থ় হতে থাকে। ডক্টর অনেক চেষ্টা করে কিন্ত কিছু করতে পারেনি কারণ ওই টুকু বাচ্চা ওতো সব নিতে পারেনি যখন আমার আম্মু নিজেকে ঠিক রাখতে পারেনি তখন রিহা কি করে পারবে । রিহার আব্বু ওকে অন্য জায়গায় নিয়ে যায় । আমরা ও ওই বাসা ছেড়ে দি আস্তে আস্তে আমি বড় হই রিহা ও সুস্থ হয়ে উঠে কিন্ত ওর আগের কথা কিছু মনে নেই । আর ওর মাথার উপর চাপ পরলে ও হইতো কোমায় চলে যেতে পারে।

রেহান এবার জোরে কেদে উঠে । অনি কে জড়িয়ে ধরে

রেহান : আমি রিহাকে হারাতে চাই না কিছুতেই না আমার ছোট্ট রিহা কত কষ্ট সহ্য করছে আমি চাইলে ও যেতে পারতাম না এতো বছর রিহার থেকে দূরে থেকেছি শুধু নিজেকে গড়ে তুলবো বলে কিন্ত দিন শেষে ওকে দেখার জন্য মন ছটপট করতো রিহার আব্বুর কাছে আমি রিহার খোজ নিতাম । একদিন রিহার আব্বু ফোন করে বলে রিহা আবার আগের মত হয়ে যাচ্ছে কারণ রিহার সৎ মা মানে যাকে রিহা সৎ মা হিসেবে জানতো তাকে রিহা মেনে নিতে পারছে না তাই আমি রিহাকে বিয়ে করি

অনি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো
অনি : ওসব দিন গুলি মনে করে কোনো লাভ নেই শুধু কষ্ট হবে
রেহান : সব কিছুর পর ও আমি সেই লোকগুলোকে পেলাম না কিন্ত আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো
অনি :আমি তোর পাশে সব সময় আছি এখন তুই এসব কান্না বন্ধ কর তেমন যেনো রিহা রিহা মনে হচ্ছে

রেহান হেসে দেয়
রেহান: আমার রিহা কিন্ত কাদে না
অনি : ঠোঁট তো উল্টিয়ে তো থাকে
রেহান : সেটা তো ওর স্বভাব

রেহান কিছু একটা ভেবে অনিকে জড়িয়ে ধরে
রেহান : ধন্যবাদ তোরা না থাকলে আমি এতো দূর আসতে পেতাম না
অনি : সালা আমি তোর বন্ধু তুই তো আপন ভাবিস না
রেহান : না ভাবলে এই বছর এর কান্না আজ বেরিয়ে আসে

তখনই রেহান এর ফোন বেজে উঠে
অনি : এই ফোন কে চুপ করা সেই থেকে বেজে যাচ্ছে
রেহান : এতো রাতে কে ফোন করলো ?

রেহান ফোন হাতে নিয়ে দেখে রিহা ফোন করছে

রেহান : এতো রাতে রিহা ফোন করছে কেনো ?

রেহান ফোন ধরে বলে।

রেহান : হা রিহা
রুশ : ভাইয়া আমি রিহা না
রেহান : ওহ তুমি কি অবস্থা কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো
রুশ : না ভাইয়া আসলে অনিকে ফোন দিচ্ছি কিন্ত ধরছে না তাই রিহার ফোন দিয়ে দিলাম
রেহান : আচ্ছা ঠিক আছে আমি দিচ্ছি

রেহান অনির আছে গিয়ে ফোন দেয়
অনি : কে ?
রেহান : দেখ

অনি ফোন ধরতেই ঝাড়ি

অনি তো মনে মনে রেহান কে গালি দিচ্ছে । রেহান বেচারা কি করতে এসে শুয়ে পরলো আজ ওর মন খুব খারাপ আর এই সময় ওর রিহাকে চাই ।

রেহান কপালে হাত দিয়ে শুয়ে থাকতে থাকতে কখন ঘুমিয়ে পরে নিজেও জানে না । অনির ডাকে চোখ মেলে তাকায়

রেহান : কিহলো ?
অনি : তোর ফোন সালা এতক্ষণ ঝাড়ি খেতে হলো ।
রেহান : কি বলছে?
অনি : কখন আসবো তাই
রেহান : চল এখন বেরিয়ে পরি এটাই ঠিক হবে
অনি : কি তুই পাগল হলি
রেহান : দেখ ওদের দেখে মনে হচ্ছে না এতো সহজে মুখ খুলবে তাই ফাউ এখানে থেকে কি হবে আর অফিসের কাজ বাসায় করবো আর এখন লকডাউন দেরি করা ঠিক হবে না রিহার জন্য মন কেমন করছে ।
অনি : ওরে রিহার মজনু এখন ৪টা বাজে
রেহান: so what এখন বের হলে পৌঁছাতে দুপুর হয়ে যাবে তুই পেকিং করে নে

রেহান এর জোরাজুরিতে অনিকে যেতেই হলো রেডী হয়ে ওরা বেরিয়ে পড়লো ।

সকালে
রিহা ঘুম থেকে উঠে দেখে পাশে কেউ নেই রিহা উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে যায়। দেখে সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছে

রিহা : ওই আমাকে ডাকলি না কেনো ?
রুশ : তুই ঘুমাচ্ছিলি তাই
রাইসা : রিহা মা আসো খাবার খাবে চলো
মাইসা চৌধুরী : তুই থাক আমি যাচ্ছি
রাইসা খান: সারাজীবন তো তুই খাওয়াবি আজ আমি না হয় খাওয়াই রিহা আমার সাথে আসো

রিহা ওর মামনির দিকে একবার তাকিয়ে খেতে গেলো। আজ রিহা দেরি করে উঠছে তাই সবাই খেয়ে নিচ্ছে

রিহা খাচ্ছে আর রাইসা খান খাবার দিচ্ছে

রিহা : আন্টি আমি আর খেতে পারবো না
রাইসা : কোনো কথা না খেতে বলছি

অনেক জোরাজুরিতে রিহা খাচ্ছে
রাইসা খান : রিহা রেহান কি তোমাকে নিজে থেকে বিয়ে করছে নাকি ওর আম্মু বলেছে তাই
রিহা : নিজে থেকে
রাইসা : এটা কি করে হয় (অবাক হয়ে)
রিহা : কেনো কোনো সমস্যা ?
রাইসা : না আসলে তেমন কিছু না
রিহা : বলতে পারেন (খেতে খেতে)

রাইসা খান এর কথা শুনে রিহার মন খুব খারাপ হয়ে গেলো।

চলবে