গ্যাংস্টার লাভ পর্ব-৩৫+৩৬

0
779

#গ্যাংস্টার_লাভ
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
#পার্ট_৩৫

রেহান ঠিকানা অনুযায়ী যায় । বাড়ির ভিতরে গিয়ে দেখে আফজাল সাহেব আর একটা লোক বসে আছে ।

আফজাল : আর রেহান ভিতরে আসো
রেহান : আসসালামুয়ালাইকুম
আফজাল : ওয়ালাকুমসালাম রিহা কে নিতে আসছ?
রেহান : না মানে আসলে
আফজাল : মেয়েটা আমাকে ছাড়া থাকতে কষ্ট হয় তাই খবর পাওয়া সাথে সাথেই তোমাদের না জানিয়ে চলে আসছে উপরের ডানদিকে রুমে আছে

রেহান নিশ্চিত হলো যে রিহা ওদের কিছু বলেনি।

রেহান : আচ্ছা ঠিক আছে আমি আসছি

রেহান তাড়াতাড়ি উপরে যায় গিয়ে দেখে রিহা উবুর হয়ে শুয়ে আছে । রেহান একটা নিশ্বাস নিয়ে রিহাকে ডাকে

রেহান : রিহা

রিহা পিছনে তাকাতেই দেখে রেহান । লাফ মেরে উঠে বসে

রিহা : আপনি এখানে কেনো আপনাকে এখানের অ্যাড্রেস কে দিছে

রেহান কিছু বলছে না শুধু রিহার দিকে তাকিয়ে আছে ।

রিহা : কিহলো ওভাবে কি দেখছেন আপনি চলে যান আমি আব্বুর সাথে থাকবো
রেহান : খুব সাহস বেড়েছে তোমার তাই না আমাকে রেখে কোথাও যেতে পারবে না এতদিন কিছু বলিনি বলে অনেক সাহস বেড়েছে তোমার তাই না
রিহা : আমার সাহস বরাবরই বেশি আপনি জানেন না আর আপনাকে ও এতদিন কিছু বলিনি বলে অনেক অধিকার দেখাচ্ছেন কি ভেবেছেন কি জোর করে বিয়ে করবেন জোর করে সংসার করাবেন আর আমি চুপ করে থাকবো না কখনই না এই সম্পর্কের কোনো মানে নেই তাই এটার ইতি টানতে চাই (অন্য দিকে ফিরে)

রেহান কিছু না বলে ওই ভাবেই দাড়িয়ে আছে

রিহা : কিহলো আমি কিছু বলছি
রেহান : শুনছি তো (কলার ঝাড়া দিয়ে)
রিহা : শুনছি মানে
রেহান : তোমার কি বলা শেষ তাহলে এখন বাড়ি যেতে পারি

রিহা তো তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো

রিহা : হা হা বাড়ি তো যাবেন আপনার প্রাণের অন্তরা আছে তো যান যান
রেহান : ড্রামা কি শেষ তাহলে এখন চলো
রিহা : কোথাও যাবো না আমি
রেহান : বিয়ের দিনের কথা তোমার মনে আছে ওটা কি আবার রিপিট করতে হবে
রিহা : আমার উপর কেনো এত অধিকার যান তো ওর কাছে
রেহান : যাবো তো তুমি তো আমায় ভালোবাসো না কিন্ত অন্তরা আমাকে কত ভালবাসে (রিহাকে খেপাতে )
রিহা : সেটাই তো
রেহান : এখন ঘরে না পেলে তো বাইরে যেতেই হবে । তুমি তো আর আমাকে ভালোবাসো না তো কি করার

রিহা কিছু বলে না শুধু মাথা নিচু করে দাড়িয়ে থাকে । রেহান রিহার দিকে তাকিয়ে থাকে রেহান পিছনে ফিরতেই রিহা বলা শুরু করে

রিহা : আমি খুব সেলফিশ । সারাদিন লাফিয়ে বেড়াই অনেক দুষ্ট বড়দের সম্মান করতে পারিনা মুখে যা আসে তাই বলি অন্তরার আপুর মতো ভালো ভালো রান্না করতে পারি না কিন্ত খাওয়া যায় তেমন রান্না করতে পারি অন্তরা আপুর মতো শান্ত না অন্তরা আপুর মতো ওতো ভালো না আমি তাও কি আমাকে মেনে নেওয়া যায় না আপনার যেমন মামনি ছাড়া কেউ নেই তেমনি আমার ও আব্বু আর আপনি আর মামনি ছাড়া কেউ নেই । জানিনা এই কই দিন কি হইছে তবে আপনার কথা ভাবতে আমার ভালো লাগে কাউকে সহ্য করতে পারি না আপনার পাশে ,কি করে পারবো যেখানে আমার চকলেট কাউকে দিতে চাইনা না সেখানে আপনাকে কি করে দেবো পারবো না কিছুতেই না মরে যাবো তাও না

রেহান রিহাকে ভালো করে দেখে চোখে পানি টলমল করছে নাক এর গুঁড়া লাল হয়ে আছে । ঠোঁট ও লাল । রিহাকে এভাবে দেখতে রেহান এর বুক ফেটে যাচ্ছে । রিহা আবার বলতে শুরু করলো

রিহা : যখন আপনি অন্তরা আপুর পছন্দের শার্ট পড়েছেন তখন আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছিল মনে হচ্ছিল এই দুনিয়ায় আমি সব থেকে ও সুখী আমার মত অভাগা কেউ নেই । যদি বলেন এই অনুভুতির নাম ভালোবাসা তাহলে তাই হা ভালোবাসি আপনাকে i love you রেহান

রেহান এর দিকে তাকিয়ে । রেহান তো স্তব্ধ হয়ে গেছে ওর ছোট্ট পরী আজ ওকে ভালোবাসার কথা বলছে রেহান এর কাছে সময় টা থেমে গেলে ভালো হতো। রিহা রেহান এর দিকে তাকিয়ে আছে উত্তর এর আশায় ।

রেহান এর কোনো রেসপন্স না পেয়ে রিহা পিছনে ঘুরতেই রেহান রিহাকে জড়িয়ে ধরে।

রেহান : i love u too little princess তুমি ছাড়া আমি আর কাউকে কখনো ভালোবাসতে পারিনা তুমি আসার আগে ও আমি তোমাকে ভালবাসতাম আর এখন ও বাসি। আমার শান্ত মেয়ে চাইনা না আমার তোমাকে ভালো লাগে । যে sad স্টোরি পড়ে কেঁদে দেয়। যার কথায় তেজ থাকে আর যে সবসময় বাড়িটা মাতিয়ে রাখবে খুব ভালোবাসি তোমায় খুব । এই মুহূর্ত আমার জীবনের সব থেকে বড় মুহূর্ত সেই কবে থেকে অপেক্ষা করেছি তোমার মুখে এই কথা শুনার জন্য । তোমাকে ছাড়া এক মুহুর্ত অনেক কষ্টকর

রিহা ও রেহান কে জড়িয়ে ধরে ।

রিহা : আমাকে কখনো ছেড়ে যাবেন না তো
রেহান : আমার শরীরে এক ফুটা রক্ত থাকা অবস্থায় তোমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবতে পারি না । পাগলী একটা এই অনুভূতি বুঝতে এত সময় লাগে
রিহা : হা লাগে আমি যেমন তেমন থাকবো আর সেই ভাবে আপনাকে মেনে নিতে হবে
রেহান : না নিলে কি করবে ভালোবাসা না দেওয়ার কেস করবে
রিহা : হা তাই করবো
রেহান : একটু আগে না কত কি বললে এখন আবার হুমকি
রিহা : ওটা তো ফিল্ম থেকে শিখেছি

রেহান হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না । কপালে হাত দিয়ে বলে

রেহান : হায় কপাল আমার বউ যে পুরাই ফিল্ম খর
রিহা : হু এখন চলুন বাসায় যাবেন না
রেহান : আর একটু আজ প্রথম তুমি নিজে থেকে ভালোবাসার কথা বললে
রিহা : কেনো অন্তরা আপু বুঝি বলে না
রেহান : ধুর
রিহা : এখন চলুন

রিহা রেহানকে টানতে টানতে নিচে নিয়ে আসে।

আফজাল সাহেব : কি রে মা এখন কি বের হবি তোরা
রেহান : হা আব্বু এখন যেতে হবে

রিহা আফজাল সাহেব এর কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে।

রিহা : i miss u so much
আফজাল : i miss u too সাবধানে থাকবে কেমন আর মাইসার সাথে সাথে থাকবে
রিহা : হুম তুমি কবে আসবে আমরা সবাই এক সাথে থাকবো
আফজাল সাহেব : আসবো খুব তাড়াতাড়ি

আফজাল সাহেব মেয়ের কপালে ভালোবাসা দিয়ে রেহান এর কাছে যায়

আফজাল : আমি জানি রিহার কোনো ক্ষতি তুমি হতে দিবে না নিজের থেকে ও বেশি বিশ্বাস করি তোমায়
রেহান : সেই বিশ্বাস রাখার দায়িত্ব আমার
আফজাল : জানি তো পারবে দোয়া করি যেই কাজে নেমেছে সেই কাজে যেনো সফল হতে পারো

রেহান আফজাল সাহেব কে সালাম করে । বিদায় নিল।

গাড়িতে রিহা চুপচাপ বসে আছে। হটাৎ রিহার মাথায় কি আসল কে জানে

রিহা : রেহান অন্তরা আপু ভালো না আমি বেশি ভালো ?
রেহান : তুমি আবার শুরু করলে
রিহা : কি করলাম বলুন না
রেহান : আমার রিহার সাথে কারোর তুলনা হয় না আর যে আমার কলিজা কে মারতে চাইছে তাকে তো শেষ করে দিতে চাই
রিহা : মানে
রেহান : বাসায় চলে আসছি

রিহা সামনে তাকিয়ে দেখে তাই । রেহান কে রেখেই রিহা ভিতরে যায় । মাইশা চৌধুরী কে জড়িয়ে ধরে

রিহা : i miss u
মাইশা চৌধুরী : বাবা তাহলে মনে পড়লো আমি ভাবছি বাবকে পেয়েছে এই বুড়ির কথা কি মনে থাকে
রিহা : আর ধুর মনে থাকবে না কেনো তাই তো চলে আসলাম
মাইশা চৌধুরী : হুম টা ভাইজান কবে আসবে
রিহা : বললো তো তাড়াতাড়ি আসবে । এখন খেতে দাও খুদা লাগছে
মাইশা চৌধুরী : ফ্রেশ হয়ে আয় আমি দিচ্ছি
রিহা : ওকে

রিহা ফ্রেশ হতে যায় তখন গিয়ে দেখে অন্তরা ওর রুমে এটা সেটা দেখছে ।

রিহা : তুমি এখানে কি করছ আপু

অন্তরা তো লাফিয়ে উঠে

রিহা : কিহলো ভয় পেলে নাকি আমার রুমে কি করছ
অন্তরা : না মানে দেখছিলাম আর তুমি এত তাড়াতাড়ি আসলে কেনো

রেহান : রিহা কি থেকে গেলে তোমার ভালো হতো (দরজায় দাড়িয়ে)

অন্তরা আমতা আমতা করে বলে
অন্তরা : না মানে আমি সেটা বলিনি আমি আসছি পরে কথা হবে

কাউকে কিছু বলতে না দিয়ে অন্তরা চলে যায় ।

রিহা : এড়িয়ে গেলো
রেহান : বাদ দাও তো যাও ফ্রেশ হয়ে আসো
রিহা : ওকে

রিহা ফ্রেশ হতেই রেহান ফ্রেশ হতে যায় ।

রিহা রেহানকে রেখেই নিচে গিয়ে টেবিলে বসে থাকে । রেহান ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে রিহা না

রেহান : এই মেয়ে একটু দাড়ালে কি হতো বাসায় এসে আমার কোনো পাত্তা নেই

রেহান নিচে গিয়ে রিহার পাশে বসে।

রেহান : ঐই আমার জন্য একটু wait করলে কি হতো
রিহা : আমার খুদা লাগছিল তো আর আপনি কি বাচ্চা যে কোলে করে নিয়ে আসতে পারে
রেহান : আজ দেখব কত খেতে পারো

রিহা ভেংচি কাটে

অন্তরা : এই তোমরা কি ফিসফিস করছো ?
রিহা : সব কথা সবাই কে শুনতে নেই

অন্তরা আর কিছু বলে না মাইশা চৌধুরী খাবার নিয়ে আসলে । রেহান অনেকগুলো খাবার রিহার পেলেতে দিতে থাকে । রিহা অবাক হয়ে দেখছে

রিহা : আপনি কি করছেন ?
রেহান : কেনো তোমরা না খুদা লাগছে আজ সব খাবে
রিহা : ওই আমাকে কি আপনার মত রাক্ষস পাইছেন এত আমি খেতে পারি
রেহান : আমি রাক্ষস আর তুমি কি পাটকাঠি ফু দিলে উড়ে যাবে

(এই ডায়লগ আমি বেশি শুনি 😑)

রিহা : ওলে বাবা হাত আইছে মামনি তোমাদের সব সম্পত্তি তো উনি খেয়ে শেষ করছে তাই না
রেহান : আমি তো খাবার খাই তুমি ত মানুষের মাথা খাও (হাসতে হাসতে)
রিহা : কি আমি মাথা খাই

বলে চিকেনের একটা লেগ পিচ রেহান এর মুখে ঢুকিয়ে দেয়

মাইশা চৌধুরী : এই তোরা থামবি
রিহা : মামনি তোমার ছেলে কে সরাও নাহলে কাউকে খেতে দেবে না রাক্ষস একটা
রেহান : আম্মু আজ মনে হয় ঝর উঠবে রিহাকে বেধে রাখো নাহলে উড়ে যেতে পারে

রেহান এর কথায় সবাই হেসে দেয়।

মাইশা চৌধুরী : রেহান চুপচাপ খাও

রিহা রেহান এর পায়ে একটা লাথি মারে ।

খাওয়া মাঝে হটাৎ রিহা বলে উঠে

রিহা : আচ্ছা অন্তরা আপু আপনার আর রেহান এর বয়স তো এক তাই না
অন্তরা : হুম
রিহা : তাহলে আপনি বিয়ে করছেন না কেনো ? মেয়েদের তো আগে আগে বিয়ে হয়
রাইসা খান : আমার মেয়ের বিয়ে নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না
রিহা : কেনো আপুর উনার কি শারীরিক প্রবলেম আছে

রিহার কথায় রুশ হ্ন হ্ন হ্ন করে হেসে দেয়। বাকিরা ও মুচকি হাসছে ।

রাইসা : এই মেয়ে তোমার কি মাথা গেছে কি বলছো আমার মেয়ের বিয়ে আমি দেখবো
রিহা : দেখেন কিন্ত পরে যেনো খুব দেরি না হয়

কথাটা বলে রিহা উঠে আসে। রিহার পাশাপাশি রেহান ও উঠে যায়।

ঘরে গিয়ে দেখে রিহা শুয়ে আছে ।

রেহান : শুয়ে পড়লে যে
রিহা : তো কি সবাই কে দাওয়াত দিয়ে শুয়ে শুয়ে থাকবো ঘুম আসছে
রেহান : আচ্ছা ঘুমাও

রিহার পাশে রেহান ও শুয়ে পড়ে। রিহা রেহান এর বুকে মাথা দিয়ে ঘুমের দেশে চলে যায়।

সকলে সূর্যের আলো চোখে পড়তেই রিহার ঘুম ভেংগে যায় । পাশে রেহানকে না দেখতে পেয়ে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে যায় ।

রেহান রিহাকে দেখে ডাক দেয় । রিহা তো রেগে ফায়ার । আজ রেহান এর মাথা ফাটিয়ে ছাড়বে ।

রিহা : দাড়ান দেখাচ্ছি

বলে রেহান এর পিছনে ছুটতে লাগলো। সারা বাড়ি দুইজন ছুটছে । সবাই ওদের দেখে হাসছে মাইশা চৌধুরী কে দেখে রেহান মাইশা চৌধুরী পিছনে যায় ।

রেহান : আম্মু দেখ তোমার পাগলী খেপছে
রিহা : মামনি দেখ আমাকে কি সব বলছে
মাইশা চৌধুরী : রেহান ওকে কি ব লছিস
রেহান : কিছু না তো

চলবে

#গ্যাংস্টার_লাভ
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
#পার্ট_৩৬

রিহা তো ক্ষেপে যায়।

রিহা : মামনি মিথ্যে কথা আমাকে ওই সব উল্টা পাল্টা নামে ডাকছে
রেহান : কি বলছি বলো ত
মাইশা চৌধুরী : হা রিহা বল ত কি বলছে
রিহা :মামনি আমাকে পাটকাঠি পাটকাঠি বলে ডাকছে ।

মাইশা চৌধুরী রেহান এর দিকে রাগী লুকে তাকায়।
রেহান : আচ্ছা আম্মু বলো ত যার যা নাম তাকে তো সেই নামে ডাকবো তাই না
রিহা : মামনি দেখ

মাইশা চৌধুরী রেহান এর কান মুলে দেয়।

মাইশা চৌধুরী : আর ডাকবি আমার মেয়েকে ওসব নামে
রেহান : আহহ আম্মু লাগছে
মাইশা চৌধুরী : লাগার জন্য তো ধরেছি
রিহা : মামনি এতে হবে না লাঠি নিয়ে আসছি মারো
রেহান : রিহার বাচ্চা
রিহা : আমার এখন ও বাচ্চা হয়নি হলে বলবান তখন তাকে রিহার বাচ্চা বলে ডেকো
মাইশা চৌধুরী : ওই কান ধর বল আর কখনো বলবি না
রেহান : তুমি কি আমার আম্মু
মাইশা চৌধুরী : না তোকে তো রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছিলাম আমি রিহার মা

রিহা মাইশা চৌধুরী কে জড়িয়ে ধরে ।
রিহা : হুম আমি তো নিয়ে আসছিলাম
রেহান : তুমি আমাকে না আমি তোমাকে নিয়ে আসছি
রিহা : হ্ন বললেই হলো
মাইশা চৌধুরী : ঐই তোকে না কান ধরতে বলছি
রেহান : আম্মু
মাইশা চৌধুরী : রিহা তুই একে দেখ আমি ওই দিকটায় আছি কিছু বললে আমায় বলবি
রিহা : ওকে

মাইশা চৌধুরী চলে যেতেই রিহা বলে

রিহা : কিহলো কান ধরবেন নাকি মামনি কে ডাকবো
রেহান : ডাকো আমি কি ভয় পাই (ভাব নিয়ে)
রিহা : ওকে মা

আর কিছু বলার আগেই রেহান মুখ চেপে ধরে।

রেহান: এত দুষ্ট কেনো তুমি আমি কি বলছি ধরবো না মজা করছিলাম জান
রিহা : ওসব বলে লাভ নেই কান ধরেন
রেহান : বলছি কি অন্য কিছু দিলে হবে না
রিহা : কি(ভ্রু কুচকে)
রেহান :😘
রিহা : দূরে সরেন আমাকে ওসব বলার আগেই মনে ছিল না
রেহান : ঠিক আছে তাহলে আমি অন্তরা

শেষ করার আগেই রিহা রেহান এর ঠোঁট দখল করে নেয়। রেহান ও রিহার কোমর জড়িয়ে ধরে।

বেশকিছুক্ষণ পর দুইজন দুইজনকে ছেড়ে দেয়। রিহা মাথা নিচু করে আছে

রেহান : ইসস কবে যে তোমার লজ্জা আমি ভাঙ্গতে পারবো

রিহা কিছু না বলে দৌড়ে যায়। রেহান বাকা হাসে। রিহা দৌড়াতে গিয়ে কারোর সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায়

অন্তরা : দেখে চলতে পারো না এই ভাবে ছুটে আসছিলে কেনো কোমর আমার শেষ
রিহা : আপনি যখন দেখলেন আমি ছুটে আসছি তখন তো সরে গেলে পারেন টা না সব সময় আমার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবেন
অন্তরা : বাধা আমি না তুমি
রিহা : বাড়িটা আমার স্বামীর মানে আমার তো কে বাধা বুঝা যাচ্ছে

কথাটা বলে রিহা উঠে চলে যায়। অন্তরা ওখানে বসে ফুসছে

অন্তরা : পিপীলিকার পাখা উড়ে মরিবার তরে তোমার সময় শেষ রিহা যত খুশি উড়ে নাও (ভিলেনি স্মাইল দিয়ে)

সারা সকাল রিহা আর ঘর থেকে বের হয়নি । দুপুরে রিহা গোসল করে এসে দেখে রেহান ল্যাপটপে কি করছে

রিহা কিছু না বলে আয়নায় বসে চুল ঠিক করছে । রেহান তো ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে আছে ।

রিহা চুল মুছে রেহান এর পাশে বসতেই দেখে ল্যাপটপে এই বাড়ির সব কিছু দেখা যাচ্ছে

রিহা : রেহান এসব কি ?(ভ্রু কুচকে)

রেহান এর তো কোনো হুস নেই সে গভীর মনোযোগ দিয়ে সব দেখছে । রিহা রেহান এর রেসপন্স না পেয়ে কাধে হাত দিতেই রেহান ওর দিকে তাকায়

রেহান : কিছু বললে
রিহা : এসব এর মানে কি আপনি এসব

রেহান রিহার গালে হাত দিয়ে বলে

রেহান : দেখ রিহা এমন অনেক কিছু আছে যা তুমি জানো না বা আমরা জানিনা না

চোখে দেখা অনেক সময় সত্য হয় না । লোখচক্ষুর আড়ালে এমন অনেক সত্য থাকে যেই সত্য আমাদের জীবনটা পুরাই পাল্টে দিতে পারে ।

রিহা : আপনি এসব কি বলছেন ?
রেহান : সময় হলে জানতে পারবে তবে তোমাকে খুব সাবধানে থাকতে হবে যাকে আপন ভাবছো সে কখন তোমার ক্ষতি করবে তুমি নিজের ও বুঝতে পারবে না
রিহা : রেহান কি আমার মত অন্তরা কে সন্দেহ করছে (মনে মনে)
রেহান : শুধু অন্তরা না আরো অনেকে আছে তোমাকে সাবধানে থাকতে হবে বুঝছো
রিহা : হুম

তখনই দরজায় টোকা পরে ।

রিহা : আপনি বসুন আমি দেখছি

রিহা দরজা খুলতেই দেখে রাইসা খান মিষ্টি মুখে দাড়িয়ে আছে

রিহা : এত মিষ্টি মুখে কেনো আবার কি ঝামেলা করবে (মনে মনে) আসুন ভিতরে আসুন

রাইসা খান কে দেখে রেহান ল্যাপটপ রেখে দেয়।

রেহান : খালা মনি কিছু বলবে

রাইসা : হা রে একটু দরকার ছিল

রেহান একটা ব্যাগ নিয়ে রিহা কে বলে

রেহান : রিহা এই ব্যাগ টা আলমারিতে রেখে দাও এখানে অনেক টাকা আছে
রিহা : অনেক ভারী তো এত টাকা বাসায় রাখা কি সেফ হবে

রাইসা খান : কেনো হবে না বাসায় তো সব নিজেদের লোক

রিহা :😒
রেহান : যাও রেখে দাও

রিহা আলমারিতে রেখে দেয়।

রেহান : খালামণি কি বলছিলে যেনো
রাইসা খান : খেতে আসবি না চল
রেহান : হা তুমি যাও আমরা আসছি

রাইসা খান যেতেই রেহান ডেভিল স্মাইল দেয়। রিহা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে

রেহান : মাথায় ওতো চাপ দিতে হবে না চাপ নেওয়ার জন্য আপনার এই বর আছে
রিহা : ওলে বাবা লে (গাল টেনে)
রেহান : তো যাওয়া যাক মিসেস পাটকাঠি
রিহা : আবার
রেহান : সরি (কান ধরে)

রিহা হেসে দেয়।

বিকালে রেহান সবার জন্য ফুসকা নিয়ে আসে । ছাদে বসে সবাই ফুসকা খাচ্ছে । রিহা আর রুশ তো পাল্লাপল্লি দিয়ে খাচ্ছে ।

রেহান আর অনির্বাণ এক সাইডে কি নিয়ে কথা বলছে । রিহা ওদের কাছে যেতেই দুইজন চুপ

রিহা : কি কথা হচ্ছিল
রেহান : কিছু না

রিহা কিছু না বলে রেহান এর মুখে ফুসকা ঢুকিয়ে দেয় । রেহান তো কথা ও বলতে পারছে না

রিহা : কিছু বলতে হবে না খান

রেহান অনেক কষ্ট খেয়ে বলে

রেহান : রিহা তুমি জানো আমার এসব ভালো লাগে না
রিহা : তাই কি আমার তো ভালো লাগে আর আপনাকে খেতেই হবে

(আমি বুঝি না ছেলদের ফুসকা তে এত কিসের সমস্যা )

রিহা আর একটু মুখে দিয়ে দৌড়।

সবাই বসে গল্প করছে রেহান ছাদের রেলিং ধরে রিহার দিকে তাকিয়ে আছে । রিহা ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করলে । রেহান কিছু না বলে ফ্লাইং কিস দেয়।রিহা মুচকি হাসে

ওদের এই সব খুনসুটি কেউ না দেখলে ও অন্তরা ঠিক দেখছে

অন্তরা : যত পারো হেসে নাও আর বেশি সময় নেই (মনে মনে)

রাত ১২তার কাছাকাছি

রেহান এর ফোনে হটাৎ বেজে উঠলো। রিহাকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিল হটাৎ ফোনে বজায় অনেক বিরক্তি নিয়ে ফোনে ধরে ।

ওপাশ থেকে কি একটা শুনে রেহান রিহাকে নিজের থেকে সরিয়ে নেয় । উঠে বারান্দায় যায়

একটু পর বারান্দা থেকে এসে তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করে নেয়। রিহার কপালে ভালোবাসা দিয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরে।

কিছুক্ষণ এর মধ্যে চলে আসে। এদিক সেদিক না তাকিয়ে ফাঁকা জায়গায় গিয়ে দেখে রেহান এর বডিগার্ড জন আর রেহান এর লোক দুইটা ছেলেকে ধরে আছে ।

রেহান : কিছু শিখার করছে ?
জন : বলেছে স্যার

রেহান হকিস্টিক নিয়ে মারতে লাগে আর বলছে

রেহান : আমার সব সুখ কেনো কেড়ে নিয়েছিস আমার আব্বুকে কেনো মারছিস বল

ইচ্ছা মত মেরে শেষে হাফিয়ে গান বের করে

রেহান : তোদের আর বাচিয়ে কোনো লাভ নেই

রেহান কে খুব হিংস্র লাগছে যে কেউ দেখে ভয় পেয়ে যাবে । রেহান আজ নিজের মধ্যে নেই ।

রেহান গান দিয়ে সুট করতে একটা চিৎকার ভেসে আসলো। রেহান সামনে তাকিয়ে ওর বুক ধুক করে উঠলো সামনে যে রেহান এর প্রাণ দাড়িয়ে আছে

রিহা চিৎকার দিয়ে তাকিয়ে আছে । রেহান গান ফেলে রিহার দিকে তাকিয়ে আছে রেহান এর মনে ভয় কাজ করছে রিহা কি ওকে ভুল বুঝবে না কি ওর পরিস্থিতি বুঝবে । রেহান আর কিছু ভাবতে পারছে না ওর পা অবশ হয়ে আসছে । যেই ভয় টা রেহান এর মনে ছিল সেটাই হচ্ছে কি হবে রেহান কি করবে । রিহাকে ছাড়া তো রেহান বাঁচতে পারবে না

রেহান : রিহা (অপুস্থুত সুরে)

চলবে