#নীল_সীমানার_শেষপ্রান্তে
#Writer_Mahfuza_Akter
||পর্ব_৩৮+৩৯||
||ধামাকা পার্ট||
মালিশা ফোন কেটে দিবে এমন সময় মিরাজ বলে উঠলো,
—তুই যদি ফোন কাটিস, তাহলে বুঝে নিবি আমি আর তোর সাথে কখনো কোনো কথা বলবো না। আর তুই ভালো ভাবেই জানিস, আমি যেটা বলি সেটাই করি।
—এই তুই অলওয়েজ আমায় ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করিস কেন, বল তো? তুই এটা করলে, আমি কথা বলবো না, বাসায় আর আসবো না, বিয়ে করবো না, অফিসে যাবো না ; এসব কী?
—তুই যেমন, আমাকেও তেমন হতে হয়। ভালো কথা তো তুই শুনিস না!
—মানে কী বলতে চাস তুই?
—এটাই যে তুই একটা ঘাড়ত্যাড়া। আচ্ছা বাদ দে তো! তোকে আমি যেটা বলছিলাম, সেটা শোন। তুই একটু খবর নে, অন্তত আসল সত্যিটার ব্যাপারে শিয়র হতে পারবি। তোর হাতে তো আর চ্যানেলের অভাব নেই।
মালিশা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
—আজ তুই এই কথাটা বলছিস ঠিক, কিন্তু এটা যে আমি আগে ভাবিনি, তা নয়। তবে আসল ব্যাপারটা কী জানিস? আমি যখন বাংলাদেশ ছাড়ি, এর পেছনে দুটো কারণ ছিল। কী কী সেটা তো তোর জানার কথা।
মিরাজ ভাবতে ভাবতে বললো,
—একটা কারণ তো তোর আর জ্যোতির ভবিষ্যৎ। কিন্তু আরেকটা কী?
—আমি জানতাম, তুই এটাই বলবি। তবে এটা সেকেন্ড কারণ। ফার্স্ট কারণটা হলো, ঐ ব্যক্তিটার সুখ। ওনার এক্স গার্লফ্রেন্ডের সাথেই ওনি ভালো থাকবেন। আমি না হয় আমার মেয়েকে নিয়ে সমাজে বাঁচতে পারবো, কিন্তু ঐ মেয়েটার কী হবে? ওর তো সত্যিসত্যিই মৃত্যু ছাড়া আর কোনো ওয়ে থাকবে না। তাই আমার মনে হয়, যে যেমন আছে, ভালোই আছে। কী দরকার অতীতে নিয়ে ঘাটাঘাটি করার? যেমন চলছে, চলতে থাকুক। এই তো বেশ আছি!
মিরাজ হতাশ হয়ে বললো,
—আমার আর কিছু বলার নেই। তোর কথায় যুক্তি আছে। তোর পরিস্থিতি সেই প্রথম থেকেই বুঝতে পেরেছি আমি, আর সবসময় তোর পাশে ছিলাম। এখনো আছি।
—আমি জানি। তুই অনেক বড় হয়ে গেছিস। এখন ফোন রাখ, এমনি প্রচুর ব্যস্ত আমি।
_____________
সন্ধ্যা হতে আর বেশি দেরি নেই। সূর্যের স্তিমিত আলো চারদিকে লালচে আভা ছড়িয়ে দিচ্ছে। এমন সময়ই বেলকনিতে দাঁড়িয়ে গরম ধোঁয়া ওঠা কফির কাপে চুমুক দিচ্ছে কথা। হঠাৎ নিচের দিকে রাস্তাটা চোখ যেতেই তার হাত দুটো স্থির হয়ে যায়। ওপর থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, একটা মহিলা তার ছোট বাচ্চাকে নিয়ে রিকশায় চড়ে যাচ্ছে, বাচ্চাটা তার মাকে এটা-সেটা জিজ্ঞেস করছে আর মহিলাটা বাচ্চাটার মুখের ওপর জমে থাকা বিন্দু বিন্দু ঘাম হাসিমুখে সযত্নে মুছে দিচ্ছে। এই উইন্টার সিজনেও বাচ্চাটা ঘামছিলো, হয়তো এক্সাইটমেন্টের জন্য। এমনিতেও বাচ্চারা অনেক এক্সাইটেড হয়।
রিকশাটাকে যতোক্ষণ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছিলো, কথাও ঠিক ততোক্ষণ পর্যন্তই তাকিয়ে ছিল। আজ তারও এমন একটা লাইফ থাকার কথা ছিল। কিন্তু সবার জীবন মনে হয়, সবদিক থেকে পরিপূর্ণ হয় না। তার জীবনটাও এজন্যই পূর্ণতা পেল না।
রুম থেকে শব্দ ভেসে আসছে। আহিল অনবরত ডেকে চলেছে, হয়তো নিজের ডিউটি থেকে ফিরেছে। নাহ, এখানে আর দাঁড়িয়ে থাকাটা ঠিক হবে না। কথা ভেতরে ঢুকতেই দেখলো, আহিল আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজের ঘড়ি খুলছে। কথাকে বেলকনি থেকে বেরিয়ে আসতে দেখে আহিল মুচকি হেসে বললো,
—তাহলে মহারাণী বারান্দায় ছিলেন, আর আমি পুরো বাড়ি মাথায় তুলে তোকে ডাকছি!
কথা কোনো কিছু বললো না। চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো। আহিল ভ্রু কুঁচকে কতক্ষণ তাকিয়ে থেকে কথার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। গম্ভীর গলায় বললো,
—আমার দিকে তাঁকা।
কথা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
আহিল ধমকে বললো,
—আই সেইড, লুক এট মি।
কথা হালকা কেঁপে ওঠে আহিলের দিকে চোখ তুলে তাকালো। আহিল বিরক্ত হয়ে বললো,
—অ্যাগেইন, তুই আবার ওসব চিন্তা করে কাঁদছিলি। তোকে না বলেছি, এসব ফালতু ব্যাপারে চোখের পানি না ফেলতে?
কথা ছলছল চোখে তাকিয়ে বললো,
—আমার কিছু ভালো লাগে না, আহিল। আমিও সবটা ভুলে থাকতে চাই, কিন্তু পরিস্থিতি আমায় আমার ব্যর্থতাকে ভুলতে দেয়না। আমি কি আজীবন কষ্টই পেয়ে যাবো? আমার কপালে কি সুখ লেখা নেই?
আহিল কথাকে বাহুডোরে আবদ্ধ করে বললো,
—কে বলেছে সুখ নেই? আমার তোর কাছ থেকে কিছু চাওয়ার নেই, শুধু সারাজীবন আমায় এত্তোগুলো ভালোবাসা দিবি। আমার বেবি চাই না। তোকে তো আগেও বলেছি, আমার বেবি পছন্দ না।
—আমি জানি, তুমি এগুলো আমায় সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য বলো। সব পুরুষ মানুষই চায় বাবা হতে। কিন্তু আমি তোমায় কোনোদিন পিতৃত্বের সুখ দিতে পারবো না। মানতে কষ্ট হলেও এটা সত্যি যে, আমি স্টেরাইল।
আহিল রেগে কথাকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে বললো,
—কী যা তা বলছিস? আমি কিন্তু অনেক কষ্টে নিজেকে কন্ট্রোলে রেখেছি। লাস্ট টাইম ওয়ার্ন করে দিচ্ছি, আমায় রাগাস না।
কথা নিজের চোখ মুছে বললো,
—আচ্ছা, আমার একটা রিকোয়েস্ট রাখবে?
আহিল জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,
—কী?
—তুমি আরেকটা বিয়ে করে নাও। আমি কোনোদিন তোমাদের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়াবো না। শুধু আমায় এ বাড়িতে থাকতে দিলে আর তোমাদের বেবিকে একটু আদর করতে দিলেই হবে। তাহলেই সবাই,,,,,
কথা শেষ হওয়ার আগেই কথার গালে একটা চড় পড়লো। কথা অবাক হয়ে সামনে তাকাতেই আঁতকে উঠল। আহিল তার দিকে অগ্নি সারথি তাকিয়ে আছে। রাগের কারণে চোখ, নাক, গাল পুরো লাল হয়ে গেছে।
আহিল একটাও কথা না বলে ঘর থেকে গটগট করে হেঁটে চলে গেল।
______________
জয় নিজের কেবিনে নাক মুখ কুঁচকে বসে আছে। এ মুহূর্তে প্রচন্ড বিরক্ত লাগছে তার।
—কী রে! মুখটাকে এমন পেঁচার মতো করে রেখেছিস কেন?
জায়েদের দিকে তাকিয়ে রাগীস্বরে দাঁত কিড়মিড় করতে করতে বললো,
—তো কী করবো? কী একটা নতুন প্রজেক্টের দায়িত্ব দিয়েছো আমায়? যেহেতু এটা সরকারি প্রজেক্ট আর দুটো কোম্পানি যৌথভাবে কাজ করবে, তাহলে উভয়েরই দায়-দায়িত্ব সেইম হওয়ার কথা,তাই না?
—হ্যাঁ, কিন্তু হয়েছেটা কী সেটা তো বল!
—আজ বিকেলে আমায় ঐ বিদেশি কোম্পানিতে যেতে হবে। আমি কেন যাবো? ওনারাও তো আসতে পারতেন! কিন্তু ওই কোম্পানির চেয়ারম্যান, কী চৌধুরী যেন, ওনি আসতে পারবেন না। ইভেন, মিটিংয়েও ছিলেননা, তাও ওনার কোম্পানিই কাজ পেল। এজন্যই জয়েন্ট ভেঞ্চার আমার একটুও পছন্দ না।
জায়েদ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
—কী আর করার? যেহেতু যেতেই হবে, এছাড়া আর কোনো উপায়ও নেই। আগে হলে প্রজেক্ট ক্যান্সেল করে দিতাম। কিন্তু আমরা অনেক টাকা ইনভেস্ট করে ফেলেছি। তাই লসটা আমাদেরই হবে।
জয় দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
—শুধু মাত্র তোমার জন্য আমি যাচ্ছি, নয় তো এই ডিমান্ডিং কোম্পানিগুলোতে আমি কখনো যেতাম না।
বলেই নিজের স্যুটটা গায়ে দিয়ে বেরিয়ে গেল।
_____________
—থ্যাংকিউ, মিস্টার ম্যানেজার। ফাইনালি এই প্রজেক্টটা আমরা পেয়েছি। আর এর পেছনে কৃতিত্বটা অবশ্যই আপনাদের সকলের।
মালিশা হালকা হেসে ম্যানেজারকে কথাগুলো বললো। ম্যানেজার প্রাপ্তির হাসি দিয়ে বললো,
—ম্যাম এটা আমার দায়িত্ব ছিল। আর হ্যাঁ, এটা প্রজেক্টের কাজের কমপ্লিট ফাইল। আর যে কোম্পানি আমাদের সাথে কাজ করবে, তার সিইও একটু পর আসবে। তাই ওনাকে রিসিভ করার জন্য আমায় এখন যেতে হবে।
মালিশা ফাইলটা হাতে নিয়ে বললো,
—ওকে, যান।
মালিশা ফাইল খুলতেই দেখলো, তার কোম্পানির নামের নিচে জে. এম. গ্রুপ অফ কাম্পানিজ লেখা। মালিশা একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,
—যা আমরা সবসময় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি, প্রকৃতি আমাদের তার সামনে নিয়েই দাড় করায়। আমি জানতাম, কোনো না কোনোভাবে আমাদের আবার দেখা হবে। কিন্তু সেটা এতো তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে, ভাবিনি। টেনশন নেই, এটা মালিশা চৌধুরী, যে সব পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে প্রস্তুত।
কিছুক্ষণ পর,,,,,,,
মালিশা চেয়ার ছেড়ে ওঠে জানালার সামনে দাড়িয়ে ফোনে কথা বলছে।
এমনসময়ই ম্যানেজার ডোরে নক করে বললো,
—ম্যাম, ম্যায় আই কাম ইন।
মালিশা কানে ফোন গুঁজেই বললো,
—ইয়েস, কাম ইন।
কথাটা শুনে জয়ের বুকটা ধ্বক করে উঠলো। এটা মুনের গলা ছিলো না? নাকি আমি হ্যালুসিনেট করছি? কিন্তু এখানে মুন কোত্থেকে আসবে? হয়তো এটা আমার হ্যালুসিনেশনই ছিলো। ভেবেই ম্যানেজারের পেছন পেছন কেবিনে ঢুকলো জয়।
কিন্তু ভেতরে ঢুকে আরো অবাক হয়ে গেল। কারণ মালিশা ফোনে কথা বলেছিল, আর ওর গলার স্বর পুরোই মুনের মতো। জয় চেয়ারে বসে মালিশার কথা শুনছে আর ভাবছে, এই মেয়ের কন্ঠটা আমার কাছে শুধু মুনের মতো মনে হচ্ছে কেন? দুজন মানুষের কন্ঠে এতো মিল হয়? মেয়েটার চেহারাও তো দেখা যাচ্ছে না। উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে। আজব তো।
মালিশা রেগে চিৎকার দিয়ে বললো,
—আমার নামে মার্ডার কেস হয়েছে, মানে? এটা কীভাবে সম্ভব? আমার বন্দুকটা লাইসেন্স করা ছিল।
জয় ভ্রু উঁচু করে ভাবছে,
—কী ডেঞ্জারাস রে, বাবা? এ মেয়ে তো দেখছি খুন-খারাবি ও করে!
মালিশা আবার বলে উঠলো,
—লিসেন, যে পুলিশ ইন্সপেক্টর কেসটা নিয়েছে, তাকে আগে আটকাবে। দ্যান, যে কেস করেছে, তাকে ধরবে। আমি দেশে ফিরে ওদের কী হাল করি, দেখো!
বলেই ফোন কেটে পেছন ঘুরে দাঁড়ালো।
জয় শকড হয়ে তাকিয়ে আছে। এটা কীভাবে সম্ভব? এটা তো মুন! কিন্তু এটা কি সত্যিই মুন! মেয়েটার পোশাক-আশাকের ধরন দেখে তো মনে হয় না! সাদা রঙের টি-শার্ট, তার ওপর ব্ল্যাক কালারের জ্যাকেট, নেভি-ব্লু জিন্স আর কালো কেডস। এগুলো কী পরেছে ও?
মালিশা ফোন টিপতে টিপতে বললো,
—মিস্টার ম্যানেজার, কী দরকারে যেন এসেছেন?
—ম্যাম, এইযে ওনিই জে. এম. কোম্পানির সিইও।
মালিশা মুখ তুলে তাকালো জয়ের দিকে। তার চোখে মুখে স্বাভাবিকতা ছাড়া অন্য কিছু দেখা না গেলেও জয় এখনো মুর্তির মতো তাকিয়ে আছে। নড়ছেও না, কথাও বলছে না।
মালিশা এগিয়ে গিয়ে নিজের চেয়ারে বসে জয়কে জিজ্ঞেস করল,
—সো, আপনিই সিইও। আপনার নাম?
জয় অস্ফুটস্বরে বললো,
—তুমি মুন, তাই না?
মালিশা ভ্রু কুঁচকে বললো,
—মুন মানে? এই দিনে-দুপুরে চাঁদ খুঁজছেন?
জয় অবাক হয়ে বললো,
—আপনার নাম,,,,
—আমার নাম মালিশা চৌধুরী। দ্য গ্রেট বিজনেসম্যান মিহাদ চৌধুরীর মেয়ে আমি।
মাঝখান থেকে ম্যানেজার বললো,
—আপনারা তাহলে কথা বলুন, আমি আসি। আমার অনেক কাজ আছে।
বলেই চলে গেল।
জয় দৃঢ়ভাবে বললো,
—তুমি মিথ্যে বলছো। আমি ভালো ভাবেই জানি, তুমিই মুন।
মালিশা অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে বললো,
—শুনেন, আপনার এই মুন মুন করা শেষ হলে কাজের কথায় আসুন। আপনার সাথে এসব আজগুবি কথা বলার সময় বা ইচ্ছা কোনোটাই আমার নেই।
জয় কিছু বলতে নিবে, ঠিক এমন সময়ে কেবিনে প্রবেশ করে মিরাজ। মিরাজ ছুটে গিয়ে মালিশার গলা দিয়ে ধরে। মালিশা হেসে দিয়ে বলে
—আরে আরে, আজ এতো খুশি কেন? আর আমার অফিসে আপনার পদধূলি পড়েছে, আই কান্ট বিলিভ দিস!
মিরাজ মালিশার দিকে মুখ করে টেবিলে পা ঝুলিয়ে বসে বললো,
—সবসময় খালি আমায় ইনসাল্ট করা, না? আমার অনেক বড় একটা অ্যাচিভমেন্ট হয়েছে, তাই একটু বেশি এক্সাইটেড হয়ে জড়িয়ে ধরেছিলাম।
—ওহহ, এজন্যই তুমি নিজের আসল পরিচয় স্বীকার করতে চাইছো না! এখন বুঝলাম আসল কাহিনী। বাহ! বাহ!
জয়ের এমন কথায় মালিশা অবাক হয়ে বললো,
—আসল কাহিনী মানে?
মিরাজ কিছু বুঝতে না পেরে বললো,
—আপনি কে? আর ওর সাথে এভাবে কথা বলছেন কেন?
জয় হেসে বললো,
—আমি কে? জানতে চান আমার পরিচয়? তাহলে শুনুন আমি আপনার বর্তমান স্ত্রীর প্রাক্তন স্বামী।
মিরাজ হ্যাবলার মতো কতক্ষণ তাকিয়ে থেকে জিজ্ঞেস করল,
—আমার বর্তমান স্ত্রী মানে? আমার বউ কোত্থেকে এলো?
মালিশা হাসবে না কাদবে বুঝতে পারছে না। সবকিছু মিরাজের মাথার ওপর দিয়ে গেলেও মালিশা ঠিকই বুঝতে পেরেছে যে, জয় ওকে আর মিরাজকে স্বামী স্ত্রী ভাবছে।
জয় মিরাজের প্রশ্ন শুনে বললো,
—কেন? আপনার পাশে যিনি বসে আছেন, তিনি আপনার বউ না?
মিরাজ এবার রেগেমেগে বললো,
—আপনি কী পাগল নাকি? ও আমার থেকে বয়সে চার বছরের বড়, আমার বড় বোন ও।
জয় অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। এদেরকে দেখে কে বলবে এদের মধ্যে চার বছরের এজ ডিফ্রেন্স? এসব কী হচ্ছে? মুন একটু আগে বললো মিহাদ চৌধুরী ওর বাবা, আবার ওর ভাইও চলে এলো! ও নতুন ফ্যামিলি পেলো কীভাবে?
সবকিছুর পেছনে অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে। তবে একবার যখন পেয়েছি, আর ছাড়ছি না।
হঠাৎ কিছু মনে হতেই জয় ব্যস্ত হয়ে মালিশাকে জিজ্ঞেস করল,
—তোমার কোনো বেবি আছে? তোমার বেবি কোথায়?
মালিশা আমতাআমতা করে বললো,
—আমার কোনো বেবি নেই। আমার বেবি কোত্থেকে আসবে?
জয় রহস্যময় হাসি দিয়ে বললো
—ভালো। আমার যা বোঝার, বুঝে গেছি।
বলেই চলে গেল।
মিরাজ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে সবটা বোঝার চেষ্টা করছে। কিন্তু ওর মাথায় কিছুই ঢুকছে না।
#Chapter_02
-চলবে…….
(ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)