#ভালোবাসি_বুঝে_নাও🍁🍁
#পর্ব_২৬
#সুমাইয়া_সুলতানা _সুমী(writer)
.
,,,রাতে,,,,
তা কালকে তো গায়ে হলুদ কোনো কমিউনিটি সেন্টার বুক করেছেন নাকি ভাবি?? (মাহির ছোট মামি)
না,, মাহির আব্বু আর মেহরাব বলল যে বাড়িতেই অনুষ্ঠান টা করতে,, আর সবাই তো কমিউনিটি সেন্টার এ অনুষ্ঠান করেই তাই ওরা নাকি বাড়িতেই সব কিছু করবে,, (মাহির মা)
হ্যাঁ মামি, আর কি বলতো,, মেহরাব ভাই ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে আসবে আর আমি পালকিতে (খুশি হয়ে বলল মাহি)
এই তুই এতো বেশি কথা বলিস কেনো হুম?? জানিস না বিয়ের কণেদের বেশি কথা বলতে হয় না,, তাদের লজ্জা পেয়ে চুপচাপ বসে থাকতে হয় (ইশিতা)
লজ্জা?? হা মাহি লজ্জা পাই না বুঝেছো??, আর এতো কিছুই না বিয়ের দিন কি করি সেটা দেখো (ফিসফিস করে বলল মাহি)
কিরে সর্বনাশী মেয়ে আবার কি করবি তুই??
হা হা আগে আগে দেখো হোতা হে কেয়া।
এই ভুলভাল কিছু করিস না আবার,, তাহলে কিন্তু হিতে বিপরীত হয়ে যাবে।
আরে আপু তুমি চিন্তা করো না, আমি ওমন কিছুই করবো না দেখো।
হুম না করলেই ভালো, তবুও তোকে নিয়ে আমার একটুও বিশ্বাস নেই, না জানি আবার কি সব করে বসিস।
করবো তো বটেই আর যা করবো না তোমরা সবাই দেখে একেবারে হা করে থাকবে (মনে মনে বলল মাহি)
তারপর আরো কিছুক্ষণ নানু মামী আর রকি রাকিব ইশিতা আপুদের সাথে আড্ডা দিয়ে আমি আর ইশিতা আপু রুমে গিয়ে অনেকক্ষণ গল্প করে যে যার মতো করে ঘুমায় গেলাম,।
,,,,ওদিকে,,,
উফফ এই মেঘদের জন্য আমার লাভ লাইফ টা কাথা বালিশ হয়ে যাচ্ছে,,, নয়ত কি আর এখন এতো রাতে এই পাঁচিল টপকে নিজের আপন হাফ বউকে চুপিচুপি দেখতে যাওয়া লাগে??(নিজেদের বাড়ির পাঁচিল টপকাতে টপকাতে বলল মেহরাব)
উফ এতো উঁচু করে পাঁচিল দিতে বলেছিলো কে এখন এটা পার করতেই তো আমার জান যায় যায় অবস্থা,,, গেট দিয়েও তো যেতে পারবো না ওখানে আবার দারোয়ান কাকা আছে,, আর ওনি যদি একবার ঠিক পেয়ে যায় তবে বাড়ির সবাইকে ডেকে তুলবে আর আমার ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যাবে।
তারপর অনেক কষ্টে পাঁচিল টা টপকে রাস্তায় নামলাম এখন রাত প্রায় সাড়ে ১২ টা বাজে এতোক্ষণে নিশ্চয়ই সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে, রাস্তায় তেমন কোনো মানুষ নেই মাঝে মাঝে দু একজন যাচ্ছে ,, হাঁটতে হাঁটতে অবশেষে নিজের হাফ শশুর বাড়ির সামনে আসলাম।
কিন্তু কথাটা হলো ভিতরে যাবো কামনে,, তারপর বহু কষ্টে বারান্দা দিয়ে মাহির রুমে গেলাম, কিন্তু একি মেয়ে তো দিব্যি নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে।
কি পাজি মেয়ে আমার ঘুম হারাম করে নিজে ঘুমানো হচ্ছে না?? দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা।
তারপর পকেট থেকে রুমালটা বার করে আস্তে করে ওর চোখটা বেধে দিলাম আর পাশ থেকে উড়না টা নিয়ে ওর মুখটাও বেধে দিলাম বলা তো যায় না যদি চিৎকার করে উঠে তাহলে তো আবার সম্যসা,
এরপর আস্তে আস্তে ওকে ইশিতার পাশ থেকে তুলে কোলে নিয়ে ছাদের দিকে গেলাম।
বেশ আরাম করেই ঘুমাচ্ছিলাম, কিন্তু হঠাৎ করেই মনে হলো আমি যেনো হাওয়ায় ভাসছি, কিন্তু কীভাবে?? এটাও কি সম্ভব?? তাহলে কি আমাকে জ্বীনে ধরলো?? জ্বীনের কথা মনে হতেই আমি তড়িঘড়ি করে চোখ খুললাম কিন্তু একি আমি তো কিছু দেখতেই পাচ্ছি না চারিদিকে অন্ধকার, চিৎকার করার জন্য মুখ খুলতে গেলেও মুখ খুলতে পারলাম না, হায় হায় এখন আমার কি হবে।
আবার কালকে তো আমার বিয়ে তাহলে কি মেহরাব ভাই এর সাথে৷ আমার বিয়েটা হবে না?? তখনি অনুভব করলাম আমার দুহাত খোলা তাই ভাবলাম হাত পা ছড়া ছড়ি করবো তাহলে যদি জ্বীন আমায় ছেড়ে দেয়,
যেই ভাবা সেই কাজ হাত টা এদিক ওদিক করতেই কারো পিঠে আমার হাত লাগলো ভালো করে হাতরে দেখলাম, ওমা এতো জ্বীন না এতো দেখি একটা মানুষ, তাহলে কি কেউ আমায় কিডন্যাপ করছে??
না এটা তো হতে পারে না,, দাড়াও বেটা দেখাচ্ছি মজা এই বলে আমি হাতরে হাতরে লোকটার চুলটা ধরে জোরে টান দিলাম৷
কেবলি ছাঁদে আসলাাম যখনি মাহিকে কোল থেকে নামাবো তখনি বজ্জাত মেয়ে আমার চুলটা ধরে দিলো টান।
আউচ (মাহিকে কোল থেকে নামিয়ে মাথায় হাত দিয়ে বললাম)
এই বেটা বদ তুই কেরে এতো বড় সাহস আমায় কিডন্যাপ করতে এসেছিস (মুখের বাঁধন খুলে বলল মাহি)
এটা কি করলে পাজি মেয়ে আমার সব গুলো চুল তুলে ফেলছো মনে হয়।
এই কিরে তোর কন্ঠটা আমার মেহরাব ভাই এর মতো লাগছে কেনো??(চোখের বাঁধন খোলার চেষ্টা করে)
আরে গাধা আমি মেহরাবই (রেগে বলল মেহরাব)
কিহ??? আপনি??? এতো রাতে এখানে কি করছেন??
হা ডু ডু খেলছি(দাঁতে দাঁত চেপে বলল)
আরে রেগে যাচ্ছেন কেনো?? আর এভাবে আমার মুখ আর চোখ বেধেছেন কেনো?? কীভাবে বেধেছেন খুলতেই পারছি না।
মুখ বেধেছি যাতে তুই চিৎকার না করতে পারিস এই জন্য আর চোখে বেধেছি যাতে তুই আমায় দেখতে না পাস এই জন্য,, তুই তো বলছিলি যে বিয়ে আগে নো দেখা দেখি।
আরে আমি বলছিলাম বলে কি আপনি আর দেখা দেবেন না,, আবার যোগাযোগ ও অফ করে দেবেন?? আপনি কত নিষ্ঠুর মেহরাব ভাই,, (চোখের বাঁধন খুলে বলল)
কি আমি নিষ্ঠুর?? আর আমি যোগাযোগ করবো কীভাবে আপনার প্রাণের মেঘ ভাইয়া আমার ফোন নিয়ে নিছে তাই জন্যই তো যোগাযোগ করতে পারিনি (মাহিকে দেওয়ালের সাথে ঠেসে ধরে বলল)
আচ্ছা বুঝলাম যে এই কারণের জন্য কথা বলতে পারেন নাই তাহলে দেখা করেন নাই কেনো??(মুখ ফুলিয়ে বলল মাহি)
আরে বোকা মেয়ে তাহলে আমি এখন এতো রাতে পাঁচিল টপকে কেনো এখানে এসেছি??
কেনো হা ডু ডু খেলতে।
ওহ খোদা আমি এ কার সাথে কথা বলছি,, (নিজের মাথা চেপে ধরে বলল মেহরাব)
কি হয়েছে মেহরাব ভাই মাথা বেথ্যা করছে??
চুপ একদম চুপ এখানে চুপচাপ দাড়িয়ে থাক আমি আমার তৃষ্ণা মেটাবো এখন,,, গোটা তিনদিন দেখিনি তোকে, আমি এখন তোকে মন ভরে দেখবো আর তুই চুপচাপ দাড়িয়ে থাক।
তাহলে তো আমার পা বেথ্যা করবে।
এটা বলার সাথে সাথে মেহরাব মাহিকে কোলে তুলে নিলো আর ছাঁদে রাখা দোলনায় গিয়ে বসল। তারপর মাহিকে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে বলল।
এখানে চুপচাপ বসে আমার সাথে চন্দ্র বিলাস কর।
মাহিও বাধ্য মেয়ের মতো বসে থাকলো কোনো কথা না বলে।
অন্যদিকে,,,,,
মেঘ উঠুন না আমার খুব পানি পিপাসা পেয়েছে পানি খাবো আমি উঠুন উঠুন (শোয়া থেকে উঠে বসে মেঘকে ধাক্কা দিয়ে বলল মেঘলা)
কি,,কি, ও তুমি পানি খাবে?? আচ্ছা তুমি বসো আমি পানি আনছি (ধরফরিয়ে উঠে বসে বলল মেঘ,,, আজকাল খুবি ভয়ে থাকে মেঘলাকে নিয়ে,, না জানি কখন কি হয়ে যায়)
তারপর মেঘ বিছানা থেকে নেমে টেবিলের উপর থেকে পানির জগটা নিয়ে দাখে ওতে পানি নেই।
যাহ এতে তো পানি নেই, আচ্ছা তুমি বসো আমি নিচে থেকে পানি আনছি।
এই বলে মেঘ নিচে নেমে ডাইনিং টেবিল থেকে পানি নিয়ে রুমে যাওয়ার সময় দেখলো যে মেহরাব এর ঘরের দরজা খোলা।
কি বেপার এতো রাতে মেহরাব দরজা খুলে রেখে কি করছে দেখি তো।
তারপর মেঘ মেহরাব এর রুমে গিয়ে দাখে যে রুমের কোথাও মেহরাব নেই,,, বাথরুম ব্যালকণি কোথাও নেয়,, তারপর মেঘ কিছু একটা ভেবে মুচকি হেসে ওখান থেকে নিজের রুমে চলে যাই।
আমাদের মজনু তো তার রুমে নেই আমার মনে হয় লাইলীর কাছে গেছে (বিছানায় বসতে বসতে বলল মেঘ)
মানে??
মানে হলো তোমার ভাই তার রুমে নেই,।
কিহ সত্যি?? তাহলে নিশ্চয়ই মাহির কাছে গেছে এই ইশিতাকে ফোন করো দাখো মাহি কোথায়,, আজকে ওদের কে হাতে নাতে ধরতে হবে।
নাহ থাক তিনিদিন ওদের অনেক জালিয়েছি বেচারারা আজকে একটু প্রেম করুক।
বাবা এতো দেখি পুরো প্রেমিক পুরুষ হয়ে গেছে।
হবোই তো তোমার মতো নিষ্ঠুর নাকি??
,,,,,সকালে,,,,
,,,চলবে,,,
#ভালোবাসি_বুঝে_নাও🍁🍁
#পর্ব_২৭
#সুমাইয়া_সুলতানা _সুমী(writer)
.
সেই কখন থেকে ইশিতা মাহিকে ডেকেই চলেছে কিন্তু মাহির উঠার কোনো নাম গন্ধ ও নেই,,, এদিকে বাড়িতে মানুষ জন আসতে শুরু করেছে,, কোন মেয়ে আছে যে কিনা তার গায়ে হলুদ এর দিন বেলা নয়টা দশটা পযন্ত ঘুমাই,, লোকে কি বলবে।
এই মাহি উঠ দাখ কয়টা বেজে গেছে মানুষ কি বলবে,, আর তোর শশুর বাড়ির লোকজন রাও বা কি ভাববে?? ভাববে যে দাখো আমারা যাকে বাড়ির বউ করবো সে তো দেখছি লাট সাহেব এর বেটি, বেলা নয়টা দশটা অবধি ঘুমায়,, আর তোর বর ই বা কি মনে করবে (মাহিকে ঝাকাতে ঝাকাতে বলল ইশিতা)
আমার বর কি ভাববে এটাই ভাবছো তো তুমি??(ঘুম ঘুম কন্ঠে বলল মাহি)
হুম হুম।
খবর নিয়ে দাখো আমার বর ও এখন আমার মতো ঘুমাচ্ছে,, তাই আমায় না ডেকে যাও তো নিজের কাজে যাও (এই বলে আবার ও ঘুমাই গেলো)
একি মেয়েরে বাবা, বলে কি না ওর বর ও এখন ঘুমাচ্ছে,, কিন্তু ও জানলো কি করে,?? আর মেহরাব ভাই ওর মতো এতো অলস নয় ওনি নিশ্চয়ই সেই কাক ডাকা ভোরে উঠে পরেছে,, যতই হোক ভালোবাসার মানুষের সাথে বিয়ে হচ্ছে বলে কথা, ওনার তো খুশি ধরেই না,, (একা একাই বলল ইশিতা)
,, ওদিকে,,,
কি উঠাতে পারলে তোমার ভাইকে??(ফোন টিপতে টিপতে বলল মেঘ)
আর বলবেন না এতো করে ডাকলাম তাও উঠলো না, আবার বলে কি না যে,, আমার বউ যেখানে এখনো ঘুমাচ্ছে সেখানে আমি এতো সকালে উঠে কি করবো,, আজব ও জানলো কীভাবে যে মাহি এখনো ঘুমাচ্ছে,,,?? (বিছানায় বসতে বসতে বলল মেঘলা)
আরে আমি তোমায় রাতে বললাম না?? যে তোমার ভাই তার জানের কাছে গিছিলো, এসেছে তো আযানের একটু আগে, তাও আবার পাঁচিল টপকে ভাবা যায়।
আপনি জানলেন কি করে??
আমি দেখেছি বলেই তো বলছি,, আচ্ছা বাদ দাও ওকে ঘুমাতে দাও একটু পরে ডেকে দিও।
ওরা কথা বলছিলো তখনি মেঘলার ফোন বেজে উঠল।
এখন আবার ইশিতা ফোন করল কেনো,, ওদিকে আবার কোনো সম্যসা হলো নাকি??(ফোন হাতে নিয়ে বলল মেঘলা)
আমাকে জিগাস না করে ফোনটা ধরে ইশিতা কেই জিগাস করো তাহলেই তো হয়।
আচ্ছা তাই বরং করি।
হ্যাঁ ইশিতা হ্যাঁ বল ওদিকে কোনো সম্যসা হয়নি তো???
আরে না এদিকে কিছু হয়নি,, তুমি আগে বলো মেহরাব ভাই কি করে এখন??
কেনো বল তো??
আহা আগে বলোই না।
আর বলিস না, ও তো এখনো পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে কত করে ডাকলাম তাও উঠলো না।
কি বলো সত্যি মেহরাব ভাই ঘুমাচ্ছে?? (অবাক হয়ে বলল ইশিতা)
হা তো,, কেনো কি হয়েছে??
আরে এদিকে তো মাহিও পড়ে পড়ে ঘুমায় ডাকতে গেলে বলে যে যেখানে আমার বরও ঘুমাচ্ছে সেখানে আমি এতো তারাতারি উঠে কি করবো।
কিহ?? মাহিও এখনো ঘুমাচ্ছে?? (অবাক হয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে বলল মেঘলা)
মেঘ মেঘলার কাছ থেকে ফোন নিয়ে ইশিতাকে বলল।
শালি সাহেবা ঘুমাতেও দাও ওদের কি বলোতো ওদের এখন এই ঘুমটা দরকার।
কিন্তু কেনো??
কেননা ওদের প্রেমরোগে ধরেছে বুঝলে।
হম হু কিছুই বুঝি নাই।
বুঝবা সময় হলেই বুঝবা,,
——————————————————-
মেহরাব এর বাড়ি থেকে হলুদ নিয়ে চলে এসেছে,, মেহরাব এর গায়ে ছোয়ানো হলুদ নিয়ে,, মেয়েরা সবাই হলুদ শাড়ি পড়েছে, কেউ কেউ আবার লাল পেড়ে সাদা শাড়িও পরেছে,,, মেঘ মেঘলাকে আসতে নিষেধ করেছে কিন্তু তবুও মেঘলা জোর করেই আসছে,,,।
মাহিকে স্টেজ এ বসানো হয়েছে,, এরা করে হলুদ শাড়ি পড়ানো হয়েছে আর ফুলের গহনা দিয়ে সাজানো হয়েছে। মাথায় টিকলি, নাকে নথ,, হাতে পায়ে গলায় ফুলের গহনা,, একেবারে ফুল কুমারি।
বাবা আজকে তো আমাদের মাহি কে একেবারে ফুল রাজ্যের রাজ কন্যার মতো লাগছে(মাহির পাশে বসতে বসতে বলল মেঘলা)
সত্যি বলছো আপু?? সুন্দর লাগছে তো?? তাহলে চলো কয়েকটা সেলফি তুলে ফেলি (খুশি হয়ে বলল মাহি)
মাহির কথা শুনে মেঘলা তো থ অবাক হয়ে গেলো আর মাহিকে বলল।
এই মেয়ে আস্তে কথা বল আর এমন ছটফট করছিস কেনো?? চুপচাপ থাক লোকে কি বলবে যে বিয়ের কণে নিজের বিয়েতেই কেমন লাফালাফি করছে।
ওকে ভালো করে বোঝাও মেঘলা আপু আমি কাল থেকেই বুঝাচ্ছি,, যে বিয়ের কণেকে এমন করতে হয় না, কিন্তু কে শোনে কার কথা(ইশিতা)
আরে তোমরা জানো না আমি বেশিক্ষণ চুপ থাকতে পারি না,, আর তাছাড়া আমি আমার বিয়ে নিয়ে ভীষন এক্সাইটেড তাই আমাকে বিয়েটা এনজয় করতে দাও তো। আর এ তো কিছুই না দেখো কালকে কি করি (মাহি)
এই কাল আবার কি করবি?? (মেঘলা)
কি জানি কি করবে আমাকেও তো বলছে যে দেখো বিয়ের দিন কি করি,, কি যে করবে আল্লাহ জানে (ইশিতা)
হ্যাঁ আপু আমার তো কালকের দিন টা নিয়ে অনেক প্লানিং করেছি (মাহি)
কি করবি তুই??
উমমম বলা যাবে না,, শুধু দেখবে আমি কি করি (মাহি)…
তারপর ভালোভাবেই মাহির গায়ে হলুদ সম্পন্ন হলো।
,,,,,রাতে,,,,
উফফ বিয়ে করতে কত্ত ঝামেলা জীবন বার হয়ে গেলো,, আগে জানলে এতো ঝামেলা কে করতো, মেহরাব ভাই কে নিয়ে সোজা পালিয়ে যেতাম,,, সত্যি বিয়ে দেখতে ভালোই লাগে কিন্তু করতে ভীষণ কষ্ট (গা থেকে সব কিছু খুলতে খুলতে বলল মাহি)
এই খুলিস না আগেই খুলিস না (পিছন থেকে বলল মেহরাব)
মাহি চমকে পিছনে তাকিয়ে দাখে মেহরাব বারান্দা দিয়ে রুমে আসতে আসতে কথাগুলো বলছে।
একি আপনি এখানে??
হুম আমি৷ সারাদিন তোকে এতো ফোন দিলাম ধরিসনি কেনো??
ওই যা আমি তো মেঘলা আপুর কাছ থেকে ফোন নিতে ভুলেই গেছি (মাথায় হাত দিয়ে বলল মাহি)
হুম আমি জানি তো তুই একটা গবেট।
এই আমাকে একদম গবেট বলবেন না,,, তাহলে কিন্তু বিয়ে ক্যান্সেল করে দেবো।
ওকে আমার নানি আমি আর বলছি না,, আপনি দয়া করে বিয়েটা ক্যান্সেল করবেন না৷ তাহলে যে এই অধম বনবাসে চলে যাবে।
আচ্ছা অনেক হয়েছে,, এখন বলেন তো আপনি এতো রাতে এখানে কি করছেন?? আর কেউ দেখে ফেললে কি মনে করবে।
আমি তো লুকিয়ে লুকিয়ে এসেছি নয়ত ওই ফাযিল গুলোর দল আমার ইজ্জতের ফালুদা বানিয়ে দিতো,,, আর আমি এখানে এসেছি আমার বউকে হলুদ লাগাতে। (মাহির একদম কাছে গিয়ে বলল মেহরাব)
কিন্তু এখানে তো হলুদ নেই আর আমার গায়ে তো সবাই হলুদ লাগিয়েই দিয়েছে আর এখন আমি গোসল করবো।
হলুদ নাই কে বলল এই তো হলুদ (মাহির গায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,, কেননা মাহির কপালে দুগালে থুতনিতে আর গলায় হলুদ লেগে আছে)
কিন্তু এখান থেকে আপনি হলুদ নিবেন কীভাবে??
এই যে এভাবে। এই বলে মেহরাব নিজের মুখ মাহির দিকে এগিয়ে আনলো আর মাহি চোখ দুটো বন্ধ করে নিলো।
মেহরাব আস্তে আস্তে নিজের মুখ মাহির মুখের সাথে হালকা করে ঘষে দিলো আর মাহির মুখ থেকে হলুদ মেহরাব এর মুখে লেগে গেলো, সাথে মেহরাব এর মুখের ছোট ছোট খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি তে মাহির মুখে বেথ্যা লাগল।
আউচ,, কি করেন বেথ্যা পাই তো (অস্পষ্ট সরে বলল মাহি)
মাহির কথা শুনে মেহরাব মাহির মুখে একটা চুমো দিয়ে দিলো তারপর নিজের মুখটা মাহির গলার কাছে নিয়ে গেলো আর গলায় লেগে থাকা হলুদে নিজের গালটা হালকা করে ঘষে দিলো। মাহি তো চোখ খিঁচে বন্ধ করে রেখেছে আর দুহাত দিয়ে নিজের শাড়ি খামচে ধরে রেখেছে।
মেহরাব নিজের মুখটা মাহির গলাতে রেখেই বলল৷
এই তো হলুদ নেওয়া দেওয়া হয়ে গেলো,, ব্যাস আজকে এইটুকুই বাকিটা কাল রাতে (নেশা ভরা গলায় বলল)
মাহি তো মেহরাব এর কথায় লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়ে নিজের চোখ দু’টো অফ করেই রেখেছে।
মেহরাব মাহির গলায় মুখ গুজে বলল।
,,,,ভালোবাসি,,,,,
চলবে,,,,,??