মুগ্ধতার ভিরে পর্ব-১৭+১৮

0
4175

#মুগ্ধতার__ভিরে🥀

#পর্ব__১৭+১৮

#লেখিকাঃ ফাতেমা জোহরা নাভিলা

__ অফফ ভাবি তুমি আমিতো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।

__হুম ভাবি আমি। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এখন জলদি করে রেডি হয়ে নিচে আসো ননদিনী তোমাকে দেখার জন্য অনেকেই বাসায় এসেছে।
অহনা রুমে এসে তড়িগড়ি করে বলল,,,

__ কে এসেছ গো ভাবি!
ভয়ে ভয়ে বিপরীতে জিগ্যেস করলাম,,,

“অহনা নাভিলাকে চিন্তিতো মুখ দেখে হেসে দিলো , বিপরীতে সাহস দিয়ে বলে উঠল,,,”

_ রিলাক্স,,, আমি তো আছিই তোমার পাশে তাহলে এত কিসের ভয় । আর তেমন কেউ আসে নি। বড় বাবা, বড় মা, এনি , ভাইয়া আর সাথে পাড়ার কিছু নিকট আত্বীয়-স্বজন এসেছে নতুন বউকে দেখতে।এখন তুমি চট জলদি করে রেডি হয়ে নিচে আসো তো ননদিনী ।
গাল টেনে বলল আহনা,,,

__আচ্ছা
কিছুটা মৃদু সুরে বলল,

__এই রে,,

_কি হলো?

__ দেখছো আমি যে চুলার মধ্যে চা বসিয়ে দিয়ে এসেছি তা ভুলেই গিয়েছি। আর আসার আগে চুলার জ্বাল ও কমিয়ে দিয়ে আসি নি ইসসস ।তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও আমি আসছি।
অহনা তাড়া দিয়ে বলে উঠল,,

“এই বলে অহনা রুম থেকে হনহন করে চলে গেলো ”

দরজায় লাগিয়ে আমি দরজার সাথে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে জায়ানের এর দিকে অসহায়তা নিয়ে একবার তাকালাম।কি সুন্দর এই বেটা ঘুমাচ্ছে অন্যের সুখের রাজ্যে ঘুম হারাম করে।চোখ ফিরিয়ে আর কিছু না ভেবে নিঃশব্দে দ্রুত ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে চলে গেলাম। এমনেই আমি এই বাসার নতুন বউ তার মধ্যে অনেক বেলা অব্দি করে আজ ঘুম থেকে উঠেছি। মানুষ শুনলে কি বলবে আমাকে!নিশ্চয় এর জন্য নিচে যারা বসে আছে তারা খারাপই ভাবছেন। বেলায় করে উঠাতো আর সবার চোখে এটা ভাল নজরে ঠেকাই না।ফ্রেশ হয়ে এসে মুখ মুছতে মুছতে ডেসিং টেবিল এর সামনে থেকে নিজের ল্যাকেজটা টেনে হিচরে খাটের উপর উঠালাম। ল্যাকেজ খুলে আমি পরলাম এখন মহা বিপদে। শাড়ি পরবো না সেলোয়ার !কি পরলে এখন এই সময় ভাল হবে! এই ভেবে ভেবেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দাঁত দ্বারা ডান হাতের নক খেতে খেতে ইতস্তত করতে লাগলাম। ঘাড় কাত করে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাড়ে নয়টা বাজছে অরে আল্লাহ্‌ এখন আমি কি করবো ! সময় তো খুব দ্রুত চলে যাচ্ছে। শাড়ি তো আমি ঠিক করে আম্মু ছাড়া পরতে ও পারি না।আর নতুন বউ প্রথম দিনে সেলোয়ার পরলে যদি কেউ কিছু বলে!ভাবি ও তো আর আসছে না আমাকে ডাকতে যে আমি তাকে জিগ্যেস করবো।ওফফফফ ওওও! কি এক ঝামেলা। আর সাত পাঁচ না ভেবে লাল ক্লারের একটা কাজিম চট করে ল্যাকেজ থেকে হাতে তুলে নিয়ে ওয়াশরুমে দ্রুত পায়ে অগ্রসর হলাম।যে যাই ভাবুক তাতে আমার কিছু করার নেই । পরের টা পরে দেখা যাবে আপাতত এটা পরে নিচে যেতে পারলেই চলে।

.

.
সেলোয়ার পরে ডেসিং টেবিল এর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। চুলগুলো আছড়ে মোটামুটি সেট করে নিলাম, ঠোঁটের জোড়াতে টকটক লাল ক্লারের লিপিস্টিক দিয়ে মাথায় লম্বা এক ঘোমটা টেনে দিলাম। ব্যাস আমি রেডি এখন আপাতত নিচে যাওয়া যাক। রুম থেকে বের হওয়ার আগে কি জানি ভেবে একবার পিছে গুরে তাকালাম ঘুমান্ত জায়ানের দিকে।এই মা তাকিয়ে দেখি নিহান্ত বেটা চিটপাটাং হয়ে হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে উব্দ হয়ে শুয়ে আছে। তার শুয়ার স্টাইল দেখে আমি ফিক করে হেসে দিলাম।কাল এই ছেলে আমাকে সিনেমা আর বাস্তব নিয়ে এত ভাষন দিচ্ছিলো আর আজ সে বাচ্চাদের মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে শুয়ে আছে।এই সময়ই কে কাজে লাগিয়ে একটা ছবি তুলে রাখলে ব্যাপারটা মন্ধ হয়না। আমাকে বেশী কিছু বললেই এই ছবি দেখিয়ে সেইদিনে একশো বার মত তাকে ব্লাকমেইল করবো।হুহ।ফোনের ক্যামেরা অন করে সাবধানে সামনে গিয়ে একটা ছবি তুলে ও নিলাম।
.

.
রুম থেকে বের হতেই অহনা ভাবির সাথে সিঁড়িপথ দেখা হয়ে গেলো।

__অফফফ ভাবি কোথায় ছিলে তুমি! আমি কত টেনশনে ছিলাম তুমি জানো। এখন বলতো আমি সেলোয়ারে ঠিক আছি কি না?এই লুকে চলবে!

অহনা গম্ভির হয়ে বলল,
__ হ্যাঁ ঠিক আছ কিন্তু কানে গলায় এইভাবে খালি কেন! কিছু পরনি কেনো! আচ্ছা আগে আমার সাথে চলো তোমাকে একজনের সাথে দেখা করিয়ে আনি তার পর আমি নাহয় এসে গহনা পরিয়ে দিচ্ছি তোমাকে।

এই বলে একটা কোথায় নিতে লাগলো। সিঁড়ি থেকে নেমে দেখি এই মা নিচে আন্টি টাইপ অনেকেই বসে আছে এটাও আমাকে দেখতে!তাদের দেখে আমার গলার সুর শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো।

__ননদিনী আমার ও কিন্তু তিন বছর আগে বিয়ে হয়েছে তাই আমি জানি হঠাৎ নতুন নতুন কারোর বাড়িতে বউ হয়ে গেলে ঠিক কেমন ফিল হয়। কেমন পরিস্থিতিতে পরতে হয়।সেই সময় আমার পাশে কেউ ছিলো না এই সবে সাহস দেওয়ার জন্য। কিন্ত আই প্রমিস আমি তোমার পাশে সব সময় আছি তাই আপাতত তোমার কোনো ভয়ে নেই।
অহনা নাভিলার হাত শক্ত করে ধরে মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে উঠল,,

বিপরীতে নাভিলা অহনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে উঠল,,,

__থ্যাঙ্ক ইউ ভাবি। তুমি না থাকলে আসলেই আমি কিভাবে যে এসব একা হ্যান্ডেল করতাম। আমি নিজেও জানি না।এখন বুঝতে পারছি তোমার ঠিক সেই সময় কতটা ন্যার্ভাস নেস আর একা বোধ ফিল হচ্ছিলো।

“অহনা নাভিলা বিপরীতে হেসে বলে উঠলো,,,

__এভার চল তোমাকে একজনের সাথে দেখা করাই তার সাথে কথা বললে ভয় আরো কমে যাবে তোমার।তার পর উনাদের সাথে ও তো দেখা করতে হবে।ওইতো চলে এসেছি।ননদিনী ইনি হলেন আমার একমাত্ররো সুন্দরী দাদি (একটা রুমে ডুকে)

____আসসালামু আলাইকুম।

____ওয়ালাইকুম আসসালাম।এদিকে আয় বোন অইখানে তোরা দাঁড়িয়ে আছিস কেন।
হাসিমুখে হাতের ইশারায় কাছে আসতে বললেন,

ভাবি আর আমি হাসিমুখে ওনার কাছে গেলাম।

__বাহ তুই তো ভারি মিষ্টি দেখতে হয়েছিস।পুরো সাদাফ এর ছায়া

__তাই? কিন্তু সবায় তো বলে আমি দাদির মত হয়েছি।
দাদির পাশে বসে তাকে বললাম,

___কি জানি আমার কাছে তো তা মনে হয় না।আমার কাছে তো বরং সাদাফই লাগছে। সেই চোখ সেই চাওয়া।হয়তো আমি তোর দাদিকে দেখিনি তাই।

__আমার ও তাই মনে হয় দাদি আমি আব্বুর মতোই হয়েছি😁(আমি)

“অনেকক্ষণ নাভিলার দিকে নিখুঁতভাবে দাদি তাকিয়ে অহনা উদ্দেশ্য বলে উঠলেন,,,,, ”

___আমার গম্ভির নাতিতার সাথে ভালো মানিয়েছে তাইনা রে অহনা?

___ঠিক বলেছো দাদি দেখতে হবে না কার ননদিনী আর ভাই। তাই তো দুইজনকে এক সাথে বেশ মানিয়েছে।

___তো ওর সাথে সংসার করতে পারবি তো?? আমি জানি হঠাৎ করে এইসব মেনে নেওয়াটা তোর পক্ষে এখন অনেকটা অসস্তিকর বোধ হবে। তা হওয়ারই কথা বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো নয়ণের সাথে আর হয়েছে জায়ানের সাথে।মেনে না নেওয়াটাই কি অসাভাবিক না!

আমি দাদির বিপরীতে এখন কি বলবো বুঝে উঠতে পাচ্ছি না তাই চুপ করে মাথা নিচু করে ফেললাম।আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে দাদি আমার হাতের উপর নিজের হাত রেখে আবার ও বলে উঠলেন,,,

__ভয় হচ্ছে তাইনা,,,আসলে ভয় হওয়ারই কথা জায়ানটা যা রাগি বদমেজাজি যে কেওই অকে ভয় পায়।কিন্তু আসল কথা কি জানিস অর মনটা অনেক ভালো অনেক ফ্রেশ। যাকে একবার মন থেকে ভালবেসে ফেলে তার খুশির জন্য সব কিছুই করতে পারে। নারিকেল যেমন বাহির থেকে কঠোর কিন্তু ভিতরে থেকে কামলতা নরম। জায়ান ও ঠিক সেই রকম। অহ কিছুটা চাপা স্বভাবের সহজে নিজের কথা কিছুতেই প্রকাশ করতে চায় না। নিজের কথা নিজের মধ্যেই সীমা বদ্ধ রাখে বাহিরে প্রকাশ করে না।তাই অকে তোর কাছে হয়তো শক্ত মনের মানুষ মনে হবে।কিন্তু ও এমন না।আমি জানি তুই অকে একদিন ঠিক বুঝে উঠতে পারবি। কিহ্
পারবি তো?

আমি দাদির কাথায় লাজুকতায় হাল্কা হেসে বলে উঠলাম,,

___হুম

___ বউ মা যখন বেঁচে ছিলো তখন সংসারটায় এক চঞ্চলতা প্রান ছিলো। যে প্রানে সব কিছু আনন্দময়ী ভাবে গুছানে ছিলো। মেয়েটা চলে যাওয়ার পর সংসারে আর আগের মত সেই প্রান উল্লাস নেই। থাকবে কি করে নিজের সাথে করে যে সেই প্রান নিয়ে গেছে।কিন্তু এখন এই সংসার টা তোর তোকে এই সংসারে থেকে সংসার করতে হবে।সবার খেয়াল রাখতে হবে।আমার রগচটা দাদুভাইয়ের সকল দায়িত্ব নিতে হবে।সব সময় তার বিপদআপদে ছায়া হয়ে পাশে থাকতে হবে । এই অগুছালো সংসার টা সব সময় অনেক সুন্দর ভাবে গুছিয়ে রেখেতে হবে। এই বুড়িটার সাথে প্রতিদিন এসে গল্প করতে হবে। একা হাতে সবায়কে সামলাতে হবে পারবি তো?আগেই বলে নিলাম মেয়ে দায়িত্ব কিন্তু তোমার অনেক! পারবে তো তা করতে।

___ইনশআল্লাহ পারবো।

দাদির সঙ্গে এমন আরো টুকটাক কথা হলো।কিন্তু বেশির ভাগ কথাই ছিলো জায়ানকে ঘিরে।জায়ান ছোট বেলায় কেমন ছিলো এখন কেমন এমন নানান কথা।দাদির সাথে কথা বলে এখন মনটা অনেক হাল্কা হয়ে আসলো।দাদিটা আসলেই অনেক ভালো তার মধ্যে এখনো কিশোরীকালের সেই চঞ্চলতা চমক কিছুটা আছে। তাইতো জায়ানকে কিভাবে টাইট দিয়ে রাখবো তাও আমাকে শিখাচ্ছে। এমন দাদিশাশুড়ি পাওয়া আসলেই মহা মুশকিল। কিন্ত আমি ভাগ্য করে একটা পেয়ে গেছি। প্রথম দিনেই আমি তার সাথে অনেকটা ফ্রি হয়ে গিয়েছে।যাক কাউকে তো পাওয়া গেলো নিজের মত এখন আমাকে ভার্সিটিতে কিছু বললেই ডাইরেক্ট দাদির কাছে বিচার দিবো।এখন আর নো ছাড়াছাড়ি। কিছুক্ষন আগের সেই ভয় আর করছে না। দাদির সাথে কথা বলা কালিন রুমে কিছু আন্টি টাইপ আত্বীয়-স্বজন এর সাথে দেখা হয়ে গেলো। দাদির রুমেই আমার দেখাদেখি পর্ব শেষ হল।

মৃদু হাল্কা বাতাসে জানালার কলা পাতা রঙের পর্দাটা থেমে থেমে উড়ছে । বাতাসের সাথে তাল মিলিয়ে সে জেনো আজ মনে আনন্দে উল্লাসে উড়ছে।তার সাথে পর্দার ফাঁকে ফাঁকে এক চিলতে কড়া মিষ্টি রোদ রুমে প্রবেশ কিরে জানান দিচ্ছে। বেলায় অনেক হয়ে গিয়েছে। এখন আর সকাল নেই।সকাল ঘনিয়ে তো দুপুর হতে চললো। খাটের উপর রোদের তাপ চোখে মুখে আছড়ে পরতেই কপাল কুঁচকে আড়মোড়া মোড়ি করতে করতে বিরক্তি নিয়ে জায়ান চোখ জোড়া খুললো। ডিপ ডিপ ভাবে তাকিয়ে এক হাত বাড়িয়ে বালিশের নিচ থেকে অলস ভঙিতে ফোন বের করে সময় দেখে নিলো। আপাতত সাড়ে বারোটা বাজে। ফোন অফ করে বালিশের নিচে আবার ও রেখে দিলো। সাইড থেকে কাথা টেনে পূনরায় মাথা ঢেকে চোখ বুঝতে নিতেই কি জানি ভেবে মাথা থেকে কাথাটা চট করে নামিয়ে ফেললো। শুয়া থেকে উঠে বসে রুমের আশেপাশে চোখ বুলাতে লাগলো। কিন্তু অশান্ত চোখ আপাতত আশেপাশে কাউর উপস্থিত টের পেল না। কিন্তু খাটের উপর নজর পরলো একটা ল্যাকেজের দিকে। কিছুক্ষন সেই দিকে তাকিয়ে খাট থেকে নেমে ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে।

.

.
রান্নাঘরে অসহায় ভাবে এক কোণায় দাঁড়িয়ে আছে নাভিলা। এই বাসায় নিয়ম নাকি নতুন বউকে প্রথম দিন সবার জন্য দুপুরের রান্না করতে হয়।তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে অহনা আর বড় মা। নাভিলাকে কিছুটা ইতস্তত করতে দেখে বড় মা বলে উঠলেন,,,

___তুমি পারবে তো! না পারলে আমাদের বলতে পারো সমস্যা নেই।আমি আর অহনা মিলে না নাহয় আজকে রান্নাটা সব করে নিচ্ছি। (বড় মা)

__আমি পারবো সমস্যা নেই।
হাসিমুখে বিপরীতে বলে উঠল নাভিলা,,

__কাউর কিন্তু হেল্প নেওয়া যাবে না।বুঝে বলছো তো? একা হাতে পারবে গোটা পনেরো থেকে বিশজন এর খাবার রান্না করতে?

__সমস্যা নেই বড় মা আমি পারবো।ভাবি আর আপনি নিচিন্তে থাকতে পারেন।
বলে তো ফেললো এখন নিজেই চিন্তায় আছে সে কি আসলে পারবে তো! রান্না সে মোটামুটি জানে কিন্ত কখনো এতগুলো মানুষের রান্না এক সাথে করেনি তাই কিছুটা ভয় হচ্ছে।

__ঠিক আছে তাহলে আমি আর অহনা আপাতত বাহিরের দিকটা সামলাচ্ছি তুমি এই দিকটা সামলিয়ে নিও। কোনো সমস্যা হলে আমাদের ডাক দিও।
দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বিপরীতে বললেন,,,

_আচ্ছা
.

.

সিঁড়ি দিয়ে নেমে আশেপাশে চোখ বুলাতে বুলাতে ডয়িং টেবিল এর সামনে আসলো জায়ান।

_কি ভাইয়া এতোক্ষণ এ তুমি উঠলা(এনি জায়ানের কাজিন)
পাশে থেকে এনি অভিযোগে সুরে বলে উঠল

___ওই একটু দেরি হয়ে গেলো আরকি। মাথাটা প্রচণ্ড ধরেছে রে রাত্ররে ভালো করে ঘুম হয়নি।

__বসো তোমাকে আমি নাস্তা দিই। নাস্তার পর নাহয় তোমার জন্য গরম গরম কফি বানিয়ে নিয়ে আসছি।

নাস্তার টেবিলে বসতে বসতে

__ আপু কই রে এনি দেখছি না যে।

__ দাদির রুমে হয়তো গেস্টদের সাথে কথা বলছে।

__অহ,,সবাই খেয়েছে??

__হুম তুমি বাদে আপাতত সবাই খেয়েছে।

___ওহ,,,তা তোদের নতুন ভাবিকে দেখছি না যে।
ইতস্তত করে বলে উঠল জায়ান,,,

____কেনো,,,খুব চোখে হারাচ্ছিস বুঝি?
পিঠে মধ্যে দুম করে এক কিল বসিয়ে দিয়ে বলে উঠল আবরার

___মারলি কেন!
ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলল,,

__আমাকে রেখে এইভাবে চুপ চাপ বিয়ে করলি কেন! বড় ভাই যে এখনো বিয়ে করেনি সেই খেয়াল কি আসে তোর? আমার কথা ভেবে ও তো একটু ওয়েট করতে পারতি শালা খবিশ ।
পাশে চেয়ার টেনে বসে বলল,,

__তাহলে কি তোকে কোলে করে নিয়ে করবো শালা। আমার যে নিজের বিয়ে ছিলো আমি নিজে অই তো জানতাম না তোরে আর কি আগে থেকে কমু।

__ভাগিস তুই কিছু জানতিস না। তাই তো ঘুম থেকে উঠেই বউকে একদিন পার না হতে হতেই ভারি চোখ হারাচ্ছিস।
চোখ টিপ দিয়ে বলে উঠল,,,

__হোয়াট রাবিশ,আমি,,! এই জায়ান কিনা কে না কে কালকের বাইরের সেই মেয়েকে চোখে হারাচ্ছি!হাও ফানি, জোকস টা ভালই ছিলো (খেতে খেতে)

__বুঝিস এনি ছোটবেলায় আম্মু খাওয়াছে সুজি আমরা এখন সবই বুঝি ।

_তাইতো।
জায়ান আবরার এর দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,,,

__বাইরের মেয়ে কি ভাইয়া ভুলে যেও না ও তোমার বউ আর আমাদের একমাত্ররো ভাবি তাই বুঝে শুনে কথা বল আমাদের সামনে বলে দিলাম। (এনি)

__হুম সবই বুঝলাম,,,তা উনি কই?? যার জন্য এত কিছু

__রান্নাঘরে।

__ এই সময় রান্নাঘরে ও কি করে
এনির বিপরীতে জায়ান খাওয়া বন্ধ করে ভ্রু খাদ করে বলে উঠল,,

চলবে,,,

#মুগ্ধতার__ভিরে🥀

#পর্ব__১৮

#লেখিকাঃফাতেমা জোহরা নাভিলা

হঠাৎ বাইরে শো শো করে তুমুল বাতাস বয়ছে। আকাশে ভার হয়ে ঘুরুম ঘুরুম আওয়াজ তুলছে। সেই আওয়াজে পাখিগুলো উড়ে উড়ে নিজ বাসার উদ্দেশে গন্তব্যপথ ছুটছে।শুভ্র মেঘ গুলো ছুটাছুটি করে গম্ভির হয়ে ধীরে ধীরে কালো রুপে পরিনতি হচ্ছে।রান্নাঘরের জানালা গুলো বাতাসের ধাক্কায় একে উপরের সাথে লেগে শব্দ করে নড়ে চড়ে বন্ধ হয়ে আসছে । আবার নিজ গতিতে হাল্কা খুলছে।বাতাসে চারপাশে জানান দিয়ে দিচ্ছে কিছুক্ষন সময়ের ব্যবধানে হয়ত তুমুল বৃষ্টি আসবে।গাছপালা গুলো কিছুক্ষন পর পর উল্লাসে ছন্দ সেজে নড়েচড়ে নেচে উঠছে। গম্ভির গুমোট পরিবেশ এখন বেশ রোমাঞ্চকর মনোমুগ্ধকর হয়ে ফুটে উঠেছে।সকাল থেকেই আজ বেশ অসহনীয় তিব্বো গরম পরেছিলো। বৃষ্টি আসার আহ্বানের মিছিলে চার পাশ মূহুর্তে তা ঠান্ডা শিতল হয়ে আছে। পরম আরামদায়ক শান্তি সৃষ্টি হয়ে গেছে।ঠান্ডা বাতাস থেকে একটা মিষ্টি ঘ্রান নাকে ভেষে ও আসছে। এই অসময়ের মুষলধারে বৃষ্টি মানেই তরুণ তরুণীদের মনে মূহুর্তে মন মস্তিষ্ক এক চিলতে সুখ এনে দেওয়া।ব্যালকনি বা ছাদে সেই ধোয়া উঠা চায়ের,কফির কাপের চুমুক এর সাথে এই সময়কে চোখ বুঝে উপভোগ করে উঠা।


কিন্তু আজকে এই বৃষ্টিতে নাভিলার মনে সুখের সেই ‘স’ এর ছিটেফোঁটা এনে দিতে সক্ষম হয়নি।তাই তো সেই বাহিরের দিকে কোনো ভ্রুহ্মেপ না করে কমোড়ে ও বুকের মধ্যে ঘায়ের লাল জর্জেট এর উড়নাটা পেঁচিয়ে বেধে রেখেছে।কমোড়ে দুই হাত গুঁজে রান্নাঘরের বেসিন ও তাকের উপর অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে।কি রেখে কি দিয়ে এখন আগে কি শুরু করবে! সেটাই আপাতত ভেবেই বুঝে উঠতে পারছে না।মাথা শুধু ঘুরপাক খাচ্ছে। বেসিনের উপর লাল বড় ডিসে মধ্যে আস্ত একটা বড় সাইজের রুই মাছ পানিতে ভিজিয়ে রাখা আছে।যাহ্ এখনো কাটা হয়নি। সাথে আস্ত ভাবে তিন চারটে মুরগি সেই একই ভাবে রাখা আছে।এখন এগুলো রান্না করতে হলে সর্বপ্রথম তাকেই কাটতে হবে। তার পর ধুয়ে গুছিয়ে চুলায় রান্নার আয়োজন বসাতে হবে।কিন্তু সেই তো এগুলা কিভাবে কাটে তাই ঠিক করে জানে না।রান্না আর কি করবে!আর জানবেই বা কি করে সেই এগুলো আগে কখনো করেইনি।সাদা চকচক তাকের টাইলসে উপর পলি ব্যাগে কিছু সবজি উক্কি দিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অগুছালো ভাবে রাখা আছে। কিছুক্ষন আগে মুন্না নামে এক ছেলে বাজার থেকে টাটকা সবজি এনে তাকে রান্নাঘরে দিয়ে গেছে।আজকে রান্নার জন্য।নাভিলার এখন প্রচণ্ড কান্না আসছে। সাথে নিজের উপর বিষণ রাগ ও উঠছে। তার আম্মু তাকে কত করেই না আগে বলতো মাছ, মুরগি কিভাবে কাটতে হয় তা শিখে নিতে। যদি বিয়ের পরের দিনেই তাকে প্রথম মাছ কাটতে দেয় তখন সে কি করবে! তখন সে নাকছিটকে বড় গলায় আম্মুর বিপরীতে প্রতিবাদের সুর জানিয়ে বলতো, মাছ কাটতে হলে আমার জামাইকে দিয়ে বাজার থেকেই কাটিয়ে আনবো।এই নিয়ে আম্মু তুমি আর বেশী চিন্তা করো না।আর যদি কেটে না আনে তাহলেই সিম্পল খাবই না। আর খেতে বেশী মন চাইলে তুমি আছ না রান্না করে পাঠিয়ে দিবে।
আর নাহলে বরং আমিই তোমার কাছে এসেই খেয়ে যাব। সেই সময় যদি আম্মুকে এত বড় বড় কথা না বলে তার থেকে কাটা টাই একটু ভালো করে শিখে নিতাম। তাহলে আজকে এইভাবে অসহায়ভাবে তাকে কান্না করতে আর হতো না।
.
এই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে তো তার আর চলবে না। যেহেতু সে কথা দিয়েই ফেলেছে যে আজকে সে রান্না করবে। সময় ও তো হাতে আর বেশী নেই। বারোটা পঁয়তাল্লিশ বাজে আড়াইটা বাজতে আর কতোক্ষন। দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে এগিয়ে গিয়ে টাইলস থেকে এক এক করে পলি ব্যাগ খুলে সবজি বের করতে লাগলো। যেহেতু সেই মাছ আর মুরগি কাটা ছাড়া কিছু করতেই পারবে না। এখন এগুলাই তার শেষ আসা। বলতে গেলে আপাতত এই মুসিবত থেকে বাঁচার উপায় । সিম, মিষ্টিকুমড়া, টমেটো, বেগুন, কাঁচামরিচ, এক এক করে ব্যাগ থেকে নামিয়ে সাদা বোলে নামিয়ে গুছিয়ে রাখতে লাগলো। আর ভাবতে লাগলো এগুলো দিয়ে আসলে কি রান্না করা যায়! যা খেয়ে সবায় তার প্রশংসা করবে!হঠাৎ ভাবনার ছেদ পরলো রান্নাঘরে জানালায় দামাকা হাওয়ার বাতাসে ভারির আওয়াজে। বুকে থু থু দিয়ে ভয়ার্ত হয়ে সেই দিকে তাকাতেই মূহুর্তে বিষণ্ণতা দূর হয়ে মুখে তার এক চিলতে জয়ের হাসি রেখা ফুটে উঠল।

.
হাতে পত্রিকা নিয়ে খুব মনোযোগ সহকারে হোলুরুমের সোফায় বসে পড়ছে জায়ান। এর আগে তার এইভাবে অসময়ে কখনো পত্রিকা পড়া হয়ে উঠেনি। আজই প্রথম এত আগ্রহ নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে এই নিয়ে তিনবারের মত একই পত্রিকা পূনরায় চোখ ভুলাচ্ছে। কিন্ত পড়ছে কম আপাতত বিরক্তি নিয়ে পেইজগুলো উল্টপাল্ট করছে বেশী। এইখানে বসে থাকার আর একটা কারন ও আছে বটে। মূলত এইখান থেকে বসে রান্নাঘরের দিকটা দেখা যায়।পুরো টা ঠিক দেখা যায় না শুধু ফ্রিজের ও বেসিনের দিকটাই স্পষ্ট দেখা যায়। অইখানে দাঁড়িয়ে কেউ কাজ করলে এইখান থেকে বসে অনায়াসে সব দেখা যাবে।মুখ থেকে কিছুক্ষন পর পর পত্রিকা ফাঁকে ভ্রু কুঁচকে রান্নাঘরে সেই দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকাচ্ছে। কিন্ত এতে ফলা ফল সরুপ তাকে পেতে হচ্ছে প্রতিবারের মত শূন্য। কিছুই দেখে বুঝে উঠতে আর পারছে না। আসলে হচ্ছে টা কি!তার এভার বিষণ বিরক্তি লাগছে।কিন্তু এই বিরক্তিটা লাগছে আসলে কার উপরে! নিজের উপরে! না অন্য কাউর উপরে!এটা ও তার জানা নেই।

.
কিরে এখানে বসে কি করছিস! জুম্মার নামাজ পরতে যাবি না।
পাশ থেকে আবরার ফোন চাপতে চাপতে তাড়া দিয়ে বলে উঠল,
.
হুম যাবো।
.
তাহলে! কয়টা বাজে দেখেছিস! শাওয়ার নিয়েছিস!
.
আমার কথা এত চিন্তা না করে নিজের কথা ভাব। তুই নিয়েছিস! তোর তো আবার মেয়েদের মত এক ঘন্টা সময় লাগে।
.
অই খচ্চোর কোন দিন আমার এক ঘন্টা সময় লাগসে! তোর মাথা কি ঠিক আসে ভাই!কারে কি বলছিস! দেখে বলছিস তো!আর এত অগ্নিময় হয়ে কথা বলছিস কেন !এই ব্যাপার কি?বলত।
.
ব্যাপার তোর মাথা গবেট। কাউকে কিছু বলছি না তোকেই বলছি। মূতি মতো সং সেজে এই ভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেন।দশ মিনিট এর মত সময় দিলাম তোকে যাহ্ রেডি হয়ে আয়।দশ মিনিট থেকে একটু এইদিক সেইদিক হলেই খবর আছে তোর।
হাত থেকে এভার পত্রিকা নামিয়ে রাগে হনহন করে নিজের রুমে অগ্রসর করলো।
.
আবরার তার কথা শুনে পুরো ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো সে তো রেডি হয়ে দাঁড়িয়েই আছে ভাই! তাহলে আবার কি রেডি হবে!

.
এক ঘন্টার মধ্যে আমার অ্যামাজন এর অভিযান অ্যাই মিন মিশন রান্নাবান্না শেষ ও হয়ে গেলো। চুলা বন্ধ করে সব খাবার ভালো করে ঢেকে রেখে।তার পর রান্নাঘর গুছিয়ে রাখলাম। বুক ফুলিয়ে এভার রান্নাঘর থেকে রুমে আসলাম হাতে আরো আধা ঘন্টার মত আপাতত আমার সময় এখনো বাকি আছে।বাসার সব ছেলেরা এখনো মসজিদ থেকে আসেনি। আর ভাবি, বড় মা এনি দাদির সাথে হয়ত তার রুমে কথা বলছে।এই সুযোগে কাজে লাগিয়ে রুমে এসে শাওয়ার সেরে নামাজ আদায় করে নিলাম।

নামাজ শেষে রুম থেকে বের হতে নিতেই এনির ওর হাতে ধোয়া উঠা গরম গরম চায়ের কাপ এক আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে টেনে রুমের দিকে আবার ও নিয়ে আসলো।কোনো মতে এক হাতে শাড়ির কুচি ধরে অর পিছে ছুটলাম।আমাকে বেডে বসিয়ে দিয়ে বলে উঠল,,
.
আসো আমরা গল্প করি,তোমার সাথে তো আলাদাভাবেই এখনো আমার ঠিক করে কথা হয়ে উঠেনি।
.
আমি মৃদু হেসে বলে উঠলাম,
ধন্যবাদ আপু এই সময় আসলেই আমার এক কাপ চায়ের দরকার ছিলো।
.
হাই আমি এনি তোমার ননদিনী। আমাকে তোমার মনে আছে তো ভাবি!
.
হ্যাঁ আছে তিন বছর আগে তোমাকে ভাবির বিয়েতে দেখেছিলাম। জুতা আর গেইট ধরা নিয়ে তুমি কি কান্ডই না করেছিলে।
.
এনি লজ্জা পাওয়ার ভঙিতে বলে উঠল,,,
তোমার এখনো সব মনে আছে।
.
কিছুটা,,
.
আমার কিন্তু এখনো সব মনে আছে তুমি আগে থেকে বেশ কিউট আর গুলুমুলু হয়েছ।
কিসে পড়ো তুমি আপু অহ সরি এখন তো আর আপি না ভাবি হবে।
.
অনার্স প্রথম বর্ষ।তুমি
.
ও,,আমি অনার্স থার্ড ইয়ারে এভার ফাইনাল এক্সাম দিবো, তাহলে তো তুমি জায়ান ভাইয়া ,ভাইয়া আর আমার জুনিয়র ।
.

জায়ান ভাইয়া কিসে..
.
আরে জায়ান ভাইয়া তো মাস্টার্স পড়তেছে,কেন জানো না তুমি?
.
নাভিলার মনে পড়লো রিয়া ও লাইব্রেরিতে সেইদিন তাকে এমন একটা কিছু বলেছিলো,তার মানে লোকটা এত বড়! সেই তো মনে করেছে অনার্স ফাইনাল ইয়ার হয়ত হবে। gratuitous না কম্পিলিট করেই বিয়ে করে নিলো! আর তার বাবা দিয়ে ও দিলো। সে জায়গায় তার আদরের নিজের একমাত্ররো গুনোধর ভাই তিন বছর ধরে পড়াশুনার পার্ট কম্পিলিট করে এখনো বসে আছে।তার সত্যকারের সেই ভালবাসার মানুষকে হারিকেন দিয়ে খুঁজার সন্ধানে।
.
কি ভাবো?আমার ভাইয়া কিন্তু মাস্টার্স করার পাশাপাশি এখন ব্যবসার দিক ও সামলাচ্ছে, টেনশন নেই বস বেকার নই আমার ভাই তবে,,,
.
আল্লাহ্‌ লোকটা তাহলে চিল্লানো ছাড়া কাজের কাজ ও করে!ভাবা যায়! দেখে তো বুঝাই যায় না সেই যে এত কামের।তাহলে আমার কোনো অকামের ছেলের সাথে বাবা বিয়ে দেই নি।যাক বাবা বাঁচা গেলো।
.
এনি ফিক করে হেসে বলে উঠল,
তুমি তো ভারি মজার মানুষ দেখছি তাহলে তো তোমাদের বেশ জমবে ভালো করেই।
.
এই কুমড়োপটাশ সাথে জমবে কিনা জানি না কিন্তু কেউ আমার হাত থেকে নিস্তার আর ইহাকালে সহজে পাবে না।তার গ্যারান্টি আপাতত তোমাকে দিচ্ছি আপু
বেশ ভাব নিয়ে বলে উঠল নাভিলা,

.
চা কেমন হলো সেটা বলো আগে। ভালো লেগেছে!
.
নাভিলা খাট থেকে উঠতে উঠতে বলল,
অনেক ভালো হয়েছে তোমার চায় খেয়ে শরীরে যে এতোক্ষন ম্যাচম্যাচ করছিলো তা নিমিষেই দূর হয়ে গিয়েছে।
.
ম্যাচম্যাচ??
এনি দুষ্টু হাসি দিয়ে বলল,নাভিলা চোখ পাকিয়ে বিপরীতে তাকাতেই সে তাড়া দিয়ে বলে উঠল,
চলো নিচে যাওয়া যাক ভাইয়ারা মনে হয় এসে পরেছে।

নাভিলা চায়ের কাপ ডসিং টেবিলের উপর রেখে এগিয়ে এসে বলে উঠল,
তার আগে আমাকে একটু হেল্প করো আপু।
.
কি হেল্প!
.
আমি একদমই শাড়ি পরতে পারি না কোনো ভাবে পেঁচিয়ে এই আমি তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আছি ।যে মূহুর্তেই ঠুস ঠাস করে হোঁচট খেয়ে চিটপাটাং হয়ে পরে যেতে পারি। ভাই তার আগেই একটু ঠিক করে দাও।
ইনোসেন্ট ফেশ করে ঠোটঁ উল্টিয়ে বলল,
.
এনি হেসে দিয়ে বল, আচ্ছা এই দিকে আসো,,

♠️

সিঁড়ি দিয়ে নামতে নিতেই সামনের মানুষকে দেখে থমকে দাঁড়ালাম সেই ও আমাকে দেখে একই ভাবে দাঁড়িয়ে আছে।আমি অবাক হয়ে তার দিকে এগিয়ে বলে উঠলাম।

.
আরে আপনি ভাইয়া এখানে!
.
হ্যাঁ, তুমি এইখানে কি করো।
.
আমিত,,,,
.
এই এক মিনিট দাঁড়ায় দাঁড়ায় তোরা কি একে উপরকে চিনিস!
পিছ থেকে এনি বলে উঠল,
.
আবরার আর নাভিলা এক সাথে মাথা দুলালো যার অর্থ তারা চিনে।
.
কেমন আছ!
আবরার নাভিলার উদ্দেশ্য বলে উঠল,
.
আলহামদুলিল্লাহ, আপনি কেমন আছেন ভাইয়া।
.
ভালো তা এখানে কি করছো না মানে এটা তোমার কোনো রিলেটিভ এর বাসা।
.
আরে রিলেটিভ এর বাসা কি করছিস রে এত নাভিলা জায়ান ভাইয়ার বউ আমাদের একমাত্ররো ভাবি।
.
কিইইইইইইইইইইইইই
.
হ্যাঁ, এই ভাবে চিল্লাচ্ছিস কেন!
এনি কানে দুই হাত দিয়ে বলে উঠল,
.
এনি রে দুনিয়াটা আসলেই গোল।
অবিশ্বাস সুরে বলে উঠল,
.
মানেহ্!
.
তাই না তো কি যার কাছে থেকে চড় আদানপ্রদান করলো ঘুরেফিরে আজ সেই তার বউ হয়ে গেলো।
.
মানে!কি বলতে চাস।
.
বুঝছিস এনি এখন চড়ে চড়ে সব হয় আমাকে ও এই ফর্মুলা দ্রুত ইউস করতে হবে।আগে কেন করলাম না ভাই!চড় যে এত হেল্পফুল হবে আমিত জানতামই না,,,

চলবে,,