#গল্পঃ_ ভিলেন
লেখিকাঃ আদিবা ইসলাম আঁখি
পর্বঃ ১৮
———————-★★———————-
আংকেল: তুষার তোমার এতো সাহস আমার মেয়েকে প্রপোজ করো,,,,
তুষার: আংকেল আমি আদিবা কে ভালোবাসি বিয়ে করতে চাই,,,,
আংকেল: তোমার মতো ছেলের সাথে কোন বাবা তার মেয়েকে বিয়ে দিবে না। তোমার নামে কয়টা মামলা আছে কে জানে…! তোমাকে এই এলাকার লোকজন ঘৃনা করে শুধু তোমার ভয়ে বলতে পারে না কিন্তুু আমি তো আর কোন নোংরা বাঁজে ছেলের হাতে আমার মেয়েকে দিবো,,,
তুষার: আংকেল আমি আদিবাকে ভালোবাসি আর ওরে নিজের করে ছাড়বো যে কোন মূল্যে
আংকেল: ঠাসসসসস…! আর কোন দিন যদি তোমারে আমার মেয়ের সামনে না দেখি…!
তুষার: কি করবি হ্যাঁ…
সেইদিন প্রচন্ড রাগ হয়েছিলো বাপ মেয়ের উপর…!
আংকেল: তুষার কি অসব্ভের মতো ব্যবহার করছো ,,,
তুষার: অসব্ভ তাই না…
আংকেলের দিকে এগিয়ে যেতেই ঠিক তখনি সিনহা হাজির,,,,
সিনহা: তুষার ভাইয়া এসব কি অসভ্বতা করছো উনি তোমার গুরুজন
তুষার: এই চেমড়ি মাঝ খানে এসে ঝামেলা করবি না
সিনহা: ছিঃ কি ভাষা,,,,কাকু চলো এসো এরকম নোংরা মানুষের সাথে কথা বলে লাভ নেই,,,
তুষার: কই যাসস বুইড়া শোনে রাখ তোর মেয়েকে যদি আমি নিজের না করতে পারি তো আমার নাম তুষার নয়….
আংকেল: কি বললি…!
আংকেল আমার কাছে এগিয়ে আসতেই মাথা ঠিক ছিলো না পাশে থাকা ব্যাট টা দিয়ে সোঁজা বারি দিলাম তখনি সিনহা সামনে আসলো,,,,
আংকেল: সিনহা,,,,
অনিক: এটা কি করলি তুই,,,,,
তুষার: এটা কি করলাম,,,( আনমনে)
অনিক: মেয়ে মানুষের উপর হাত তুলে দিলি
তুষার : আরে ইচ্ছে করে দেইনি তো হঠাৎ ওই তো সামনে চলে আসলো,,,,
অনিক: পড়ে ভাবা যাবে এখান থেকে চল,,
সিনহার মাথা ফেঁটে সেন্স লেন্স হয়ে মাটিতে পড়ে গেলো বাধ্য হয়ে ওখান থেকে চলে আসলাম,,,,,
কিন্তুুু সন্ধার দিকে হঠাৎ বাসায় পুলিশ হাজির সেইদিন অনেক বার ক্ষমা চেয়েছিলাম কিন্তুু সিনহা আর আংকেল ক্ষমা করেনি….
প্রায় এক সাপ্তাহ পড় এসে শুনি আদিবারা ওখান থেকে বাসা চেন্স করে চলে গেছে…. অনেক খুঁজেছিলাম পাই নি !!!!… তারপর হঠাৎ একদিন ড্রিংক করে গাড়ি করে বাসায় ফিরছি হঠাৎ এক্সিডেন্ট হয়ে গেলো …..
তারপর কিছুদিন পর তুই দেশে আসলি অনিক আর রুমেল তোরে আমার কথাতেই মিথ্যা বলেছিলো আমি জানতাম তুই আমার জন্য সব করতে পারিস…….!
___ তুষারের কথা শুনে সবাই হা করে তাকিয়ে আছে,,,,, আমি পিছন দিকে ঢোলে পড়লাম। তখনি তুষার এসে হাত ধরে বলতে লাগলো..
তুষার: আদিবা বিশ্বাস করো তোমাকে পাওয়ার নেশা এত তৃব্র ছিলো যে রাগের বসে ওরকম কাজ করেছিলাম। শুভ প্লিজজ ক্ষমা করে দাও,,,,,
শুভ: ওর হাত ছাড় তুষার তোর ওই নোংরা হাতে ওরে স্পর্শ ও করবি না
তুষার: দোস্ত প্লিজজ প্লিজ ক্ষমা করে দে খুব ভালোবাসি আদিবাকে,,,
শুভ: ভালোবাসার তুই কি বুঝিস হ্যাঁ,,,, ভালোবাসা মানে তো সেক্রিফাইচ যেটা আমি শুধু তোর জন্য সেই কলেজ লাইফ থেকে করে এসেছি আর এখন করেইছি কিন্তুু তুই সেটার সুযোগ নিয়ে ছিঃ,,,,,
তুষার: মানে কি বলতে যাচ্ছেন,,,,
শুভ: যেদিন তুই আমি কলেজে ফাস্ট আদিবাকে দেখেছিলাম সেইদিন ভালোবেসে ফেলে ছিলাম কিন্তুু শুধু তোর জন্য আমার ভালোবাসাকে বিসার্জন দিয়ে বিদেশ চলে গেছিলাম আবার যখন এসে এসব শুনি শুধু তোর জন্য দিনের পর দিন ওই মেয়েটাকে কষ্ট দিয়েই গেছে বাজে ব্যবহার করেছি যাতে ও শুধু তোকে ভালোবাসে আর আমি পেরেছি ওই মেয়েটা আমায় ঘৃনা করে শুরু করেছে কিন্তুু অফসোস তুই না পারলি কারো ভালোবাসার দাম না পারলো বন্ধুত্বের দাম…..
তুষার: কিহহ বলছিস,,,,,
শুভ: একদম ঠিক বলছি,,,,, কি না করেছি তোর জন্য তুলি কে কাজে লাগিয়ে সোহমের সাথে আদুবার ভেঙ্গেছি তারপর বিয়ে করে কত অত্যাচার করেছি ভাবতেই নিজের প্রতি ঘৃনা হচ্ছে…!
সিনহা: আরে তুষার ভাইয়া তোমার লজ্জা হওয়া দরকার ছিঃ এতটা লজ্জাহীন যে আবার আদিবার জীবনে আসছো যখন ওর একটা সংসার আছে….!
আব্বু: এর আবার লজ্জা বরাবরি তো লজ্জাহীন ছিলো…..
তুষার: হ্যাঁ লজ্জাহীন আদিবার জন্য আমি সব করতে পারি সব সব….( চিল্লিয়ে) ।
আদিবা চলো আমরা বিয়ে করে ফেলি বিশ্বাস করো তোমায় খুব হ্যাপি রাখবো ট্রাস মি…
শুভ: ঠাসসসসস…! নেক্সট টাইম ওর নাম মুখে নিবি ও এখনো আমার বউ ভুলে
তুষার: বউ হাউ ফানি তোদের তো ডিবোর্স হয়ে গেছে,,,,
শুভ: এখন ডিবোর্স পেপারে আমি সাইন করিনি,,,,, সেইদিন আংকেল অসুস্থ হয়ে পড়লো দুদিন পর আংকেল সুস্থ হয়ে সব বললো তারপর তোর এই মুখটা আমার সামনে খোসে পড়লো,,,,
তুষার: দেখ ভাই আবারও বলছি ওটা যাস্ট এক্সিডেন্ট…! আমি আদিবাকে ভালোবাসি আর আদিবাও আমাকে ভালোবাসে,,,,
আব্বু: আমার মেয়ে তোর এই রুপ জানার পড়ও তোকে ভালোবাসবে তুই ভাবলি কেমনে,,,,
তুষার: ও ভালোবাসে আমায়,,,,আদিবা বলো আমায় ভালোবাসো না,,,,
___ তুষার আমার হাত ধরে ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে বার বার জিগাসা করতে লাগলো আমি যেনো এক পাথর হয়ে গেছি….
শুভ: আদিবার থেকে দুরে থাক না হলে তোকে আমি পুলিশে দিবো আমার বউকে হেরাজ করার জন্য,,,
তুষার: তুই আমাকে হুমকি দিচ্ছি শুভ তুই ভালো করে জানস আমি কতটা ডেঞ্জারাস তাই ভালো করে বলছি আমাদের মাঝে আসার চেস্টা করবি না,,,,
আব্বু: এতো কথা নয় পুলিশকে ইনফম করো। মিথ্যা বলে আমার মেয়ের সংসার ভাঙ্গার অপরাধের শাস্তি তো পাবেই,,,,
তুষার: শাস্তি ( হেসে) এই জন্মে আমি আদিবাকে নিজের করে ছাড়বো
শুভ: তোর স্বপ্ন স্বপ্ন রয়ে যাবে,,,,ও এখনো আমার বউ আর বাকিটা দিন গুলোতেও থাকবে….
তুষার: আমি না পেলে কাউকে হতে দিবো না কাউকে না,,,
হঠাৎ তুষার পাগলের মতো হাসতে হাসতে পাশের টেবিল থেকে কাচের বোতল ভেঙ্গে আমার সামনে দাড়াতেই চমকে উঠলাম….
তুষার: তুমি আমার না হলে আর কারো হতে দিবো না,,,,
শুভ: তুষার কি করছিস বোতল ফেলে দে বলছি
আব্বু: তুষার আমার মেয়ের কোন ক্ষতি করবি না ,,,
মা: বউমা…! তুষার বাবা প্লিজ আমার কথা শোন
তুষার: আন্টি তোমার ছেলে আমার সাথে বেঈমানি করছে…
মা: তুষার আমার কথা শোন আদিবা রে ছেড়ে দে,,,,,
সিনহা: তুষার ভাইয়া এমনিতে তোমার অপরাধের সিমা নেই আবার এই ভুলটা করো না ,,,,,,
তুষার: আজ সব প্রবলেম শেষ হবে অনেক হয়েছে,,,,জানেমান আমরা উপরে গিয়ে না হয় এক হবো কেমন ,,,
আমি: আহহহ আব্ব ( এক পা করে পিছন দিকে সরে আসতে লাগলাম)
শুভ: তুষার ভাই আমার কথা শোন ওর কোন ক্ষতি করিস যা করার আমাকে কর প্লিজ ওর কিছু করিস না,,,,,
তুষার: সব মূল তো এই মেয়ে টাই না তাই ওরেই…! না থাকবে বাঁশ না থাকবে বাঁশি। আমি বেঁচে থাকতে আদিবারে অন্য কারো সাথে সংসার করতে দিবো না কখন না।
তুষার আমার দিকে ক্রমগত এগিয়ে আসতে লাগলো ঠিক তখনি পুলিশ বাসায় ডুকলো…..
তুষার: বাহহ বাহহ শুভ আমাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য না দেখি সব রেডি
শুভ: দেখ তোকে কেউ কোন শাস্তি দিবে না আমি কথা দিচ্ছি তুই আদিবারে ছাড়
আম্মু: দোয়া করো আমার মেয়েটারে ছেড়ে দাও ও তো তোমার কোন ক্ষতি করেনি,,,,
তুষার: ক্ষতি হাহা,,,,,
হঠাৎ তুষার আমার চুলের মুঠি ধরলো,,,
আমি: আহহহ
তুষার: সব ক্ষতি ও করেছে…!
পুলিশ: দেখো তুষার আদিবাকে ছাড়
আংকেল: তুষার ওই মেয়েরে ছাড় না হলে আমিও তোকে বাঁচাতে পারবো না
তুষার: আমি বাঁচতে চাই না পাপা মরে তো সেই কবে ফেলেছে এই মেয়ে,,,
আমি: আহহ লাগছে,,,,
তুষার : লাগুক….
শুভ: তুষার ওরে ছাড় বলছি,,,
পুলিশ: ওরে ছাড় না হলো তোমারে গুলি করতে বাধ্য হবো,,,
তুষার: ওমা গো ভয় পেয়ে পেলাম,,,
___ তুষার খিল খিল করে হাসতে লাগলো আমি তুষার হাতে কামড় দিয়ে তুষারকে ধাক্কা দিয়ে দৌড় দিতেই…..!
হঠাৎ গুলির আওয়াজ হলো,,,,
আমি: আহহহহ……
শুভ: আদিবববা
তুষার: আদিববা…..
সবাই হা করে তাকিয়ে রয়লো.. নিচে হাত দিয়ে দেখি ফ্লোরে রক্তের বন্য বয়ে যাচ্ছে চারপাশটা ঝাঁপসা ঝাঁপসা হয়ে আসতে লাগলো সাথে সাথে ফ্লোরে পড়ে গেলাম…..!
শুভ দৌড়ে এসে আমার মাথাটা তুলে বুকে নিলো,,,,,
শুভ: এই পাগলি কথা বলো,,,,আম্মু ( কাঁদো কাঁদো)
আব্বু: আদিবা মা কথা বল কিছু হবে না তো…..
সিনহা: এখন ওরে নিয়ে হসপিটালে যেতে হবে,,, ফাস্ট,,,,
আব্বু: হুমমমম শুভ ধরো,,,,
শুভ: হ্যাঁ,,,,,কিছু হবে না তোমার….
___তাড়াতাড়ি করে হসপিটালে নিয়ে আসলো…..!
সিনহা: কাকু একটা ছিলো
আব্বু: হ্যাঁ বলো,,,,
সিনহা: এই অবস্থা কি করে বলবো বুঝতে ছি না ,,,,
শুভ: কি হয়ছে কোন সমস্যা,,,,,
সিনহা: হ্যাঁ,,,,আসলে আদিবার…!
( চলবে)