তিক্ততার সম্পর্ক পর্ব-১১

0
2228

#তিক্ততার_সম্পর্ক
লেখিকাঃ তাহমিনা তমা
পর্বঃ ১১

আরমান মায়ের গলা শুনে শান্ত গলায় বললো, এমনটা কেনো করলে মা ?

এই কথা টুকুই ছাহেরা বেগমের প্রেসার বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিলো।

আমতা আমতা করে বললো, ছেলে পক্ষের তাড়া ছিলো তাই তোর আসার অপেক্ষা করতে পারিনি।

আরমান এবার নিজের মায়ের দিকে তাকালো। ছাহেরা বেগম নিজের ছেলের সাথে চোখ মেলাতে পারছে না তাই এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। আরমান মায়ের দিকে তাকিয়ে তার গতিবিধি লক্ষ্য করছে।

আরমান থমথমে গলায় বললো, আমার সামনে থেকে এখন যাও মা।

ছাহেরা বেগম ছেলে দিকে তাকিয়ে বললো, তুই ফ্রেশও হসনি খাবার খাবি না ?

আরমান কঠিন গলায় বললো, মা আমাকে একা থাকতে দাও।

আরমানের এমন গলা শুনে ছাহেরা একটু চমকে উঠলো আর বের হয়ে গেলো রুম থেকে। আরমান আবার আগের ন্যায় চোখ বন্ধ করে নিলো। আরমানের এখন কী করা উচিত সে নিজেই বুঝতে পারছে না। কী করলে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে সেটাও বুঝতে পারছে না।

১৬.
ফজরের আযান কানে যেতেই ঘুম ভেঙে গেলো ইমার। ধীরে ধীরে চোখ খোলে বুঝার চেষ্টা করলো সে এখন কোথায় আছে। গতকালের কথা মনে পড়তেই ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলো। বুঝতে পারলো অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছিলো। তাড়াতাড়ি সারারুমে চোখ বুলিয়ে দেখে নিলো। নাহ্, সে ছাড়া রুমে আর কারো অস্তিত্ব নেই। সেটা বুঝতে পারলেই চোখ থেকে টপ করে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে গেলো। ইমার বুঝতে বাকি রইলো না ইয়াদ তাকে নিজের ইচ্ছেতে বিয়ে করেনি। সেটা হলে নিশ্চয়ই বাসর রাতে বউকে একা রেখে অন্য কোথাও থাকতে পারতো না। বাসর রাত নিয়ে প্রত্যেকটা মেয়ের সাজানো অনেক স্বপ্ন থাকে। ইমারও ছিলো অনেক স্বপ্ন। বিয়ের আগে আরমান ছাড়া অন্যকোনো ছেলের সাথে কথা পর্যন্ত বলতো না আর আরমানের সাথে কথা বলতো বাধ্য হয়ে নিজের মনের সব ভালোবাসা জমিয়ে রেখেছিলো স্বামীর জন্য কিন্তু স্বামী নামক মানুষটার কাছে হয়তো ইমার কোনো মূল্যই নেই। ইমা চোখের পানি মুছে বেড থেকে নেমে ওয়াশরুমে চলে গেলো ওযু করতে। এই রুমে জায়নামাজ আছে কিনা ইমার জানা নেই তাই নিজের পরিষ্কার একটা ওড়না বিছিয়ে নামজটা পড়ে নিলো। নতুন জীবনে যেনো কোনো তিক্ততার ছায়া না থাকে আল্লাহর কাছে চোখের পানি ফেলে সেটাই চাইলো। নামাজ শেষ করে কিছু সূরাহ তিলাওয়াত করলো কারণ ইমা কোরআন শরিফ আনেনি, সব শেষে উঠে দাঁড়ালো ঐ বাড়িতে প্রতিদিন নামাজ পড়ে কোরআন তিলাওয়াত করে কাজে লেগে পড়তো কিন্তু এখানে কী করবে ভেবে পাচ্ছে না। এখন আর তার ঘুম হবে না তাই রুমটা গোছানোর সিদ্ধান্ত নিলো। একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে রুমের সব ফুল ছিঁড়ে ফেলতে লাগলো তখন চোখ গেলো বেডের ওপর দেয়ালে ইয়াদের বড় একটা ছবির দিকে। ছবির মাঝেও মুখে গম্ভীরতা আর অ্যাটিটিউডের ছাপ স্পষ্ট। ইমা একবার ছবিটা ছুঁয়ে দিলো। দেখে মনে হচ্ছে কম্পিউটারে প্রিন্ট করা নয় বরং হাতে আঁকা ছবি কিন্তু বুঝার উপায় নেই একদম পারফেক্ট এঁকেছে।

ইমার ছবিটা দেখে হঠাৎ একটা বুখারী শরীফের বর্ণনা মনে পড়ে গেলো,

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য প্রাণীর ছবিযুক্ত একটি বালিশ তৈরি করেছিলাম। যেন তা একটি ছোট গদী। এরপর তিনি আমার ঘরে এসে দুই দরজার মাঝখানে দাঁড়ালেন এবং তাঁর চেহারা মলিন হয়ে গেল। তখন আমি বললাম- ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার কি অপরাধ হয়েছে? তিনি বললেন, এ বালিশটি কেন? আমি বললাম, আপনি এর উপর ঠেস দিয়ে বসতে পারেন এ বালিশটি সে জন্য আমি তৈরি করেছি।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘হে আয়িশা! তুমি কি জান না? যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে (রহমতের) ফেরেশতা প্রবেশ করেন না! আর যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি আঁকে তাকে কেয়ামতের দিন শাস্তি দেয়া হবে! তাকে (আল্লাহ্) বলবেন, ‘তুমি যে প্রাণীর ছবি বানিয়েছ, এখন তাতে প্রাণ দান কর।’ (বুখারি)

হাদিসের উল্লেখিত বর্ণনা থেকে এ কথা সুস্পষ্ট যে, প্রাণ আছে এমন জীব-জন্তুর ছবি আঁকা কিংবা ঘরে লাগানো যাবে না। যদি কেউ ছবি আঁকে কিংবা ঘরে টানিয়ে রাখে তবে, ওই ব্যক্তির জন্য রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি। আর ঘরে ছবি থাকলে সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না।

ইমা অনেক ভেবে চিন্তে ইয়াদের ছবিটা খোলে ফেললো আর মনে মনে ঠিক করে নিলো এটা কে এঁকেছে জিজ্ঞেস করে তাকে আর মানা করে দিবে কোনো প্রাণীর ছবি আঁকতে। ছোট ছোট ভুলের জন্য আমরা অনেক সব অনেক বড় পাপ করে ফেলি। ইমা পুরো রুমটা পরিষ্কার করে ফেললো। এমনিতেই রুমটা গুছানো শুধু ফুলগুলো সরালো ইমা। নিজের লাগেজ থেকে জামাকাপড় বের করে কাবার্ডে রাখতে গিয়ে দেখে ইয়াদের কাপড় দিয়ে ভর্তি। ইয়াদের গুলো একপাশে রেখে নিজের গুলো একপাশে রাখলো ইমা। ইমার কাপড় খুব একটা বেশি নয় তাই অল্প জায়গাতেই হয়ে গেলো। সব করা হয়ে গেলে বেডে বসে পড়লো আর কী করা যায় ভাবতে লাগলো কিন্তু কিছু পেলো না করার মতো। বেলকনির দরজায় চোখ পড়তেই সেদিকে পা বাড়ালো। দরজা খোলে বের হয়ে দেখলো এটা বেলকনি না একটা মিনি ছাঁদ আর সেখানে ইয়াদের এক্সারসাইজের সব জিনিসপত্র রাখা। ইমা চারদিকে চোখ বুলিয়ে নিলো এতো সুন্দর একটা ছাঁদ তবে গাছ নেই তেমন। দু কর্নারে বেশ বড় বড় দুটো এরিকা পাম গাছ আর মাঝে কয়েকটা ক্যাকটাস গাছ লাগনো। এতো সুন্দর একটা জায়গা পেলে ইমা গাছে গাছে ভরিয়ে তুলতো। ইমা ঠিক করলো কয়েকটা দিন গেলে অনেক গাছের চারা লাগাবে এখানে। রেলিং ধরে নিচের দিকে তাকাতেই ইমার চোখ কপালে উঠার মতো অবস্থা। বাড়ির এরিয়া অনেক বড় আর নিচে কালো পোশাক পরা গার্ড হাতে গান নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

ইমা বিড়বিড় করে বললো, এতো গার্ড কেনো এখানে এরা মাফিয়া টাফিয়া নয় তো ?

কথাটা মনে হলেই ইমা ভয়ে একটা ঢোক গিললো। পরক্ষণে ইয়াদের চেহারা মনে হতেই ভাবলো এতো সুন্দর আর হ্যান্ডসাম মানুষ মাফিয়া হতে পারে না।

১৭.
আবার সেই একই স্বপ্ন দেখে ইয়াদের ঘুম ভাঙতেই খেয়াল করলো ফার্ম হাউসে নিজের বেডে শুয়ে আছে সে। এতো মানুষের আনাগোনা একদমই সয্য হয় না ইয়াদের আর কাল রাতেই মেয়েটার সাথে কোনো খারাপ আচরণ করার ইচ্ছে ছিলো না তাই এখানে চলে এসেছিলো। ইয়াদ উঠে ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে। ওযু করে নামাজ পড়ে বাইরে চলে গেলো এক্সারসাইজ করতে। বাড়িতে সবসময় ট্রেডমিলে দৌড়ায় ইয়াদ সেটা মিনি ছাদেই আছে। কখনো ইচ্ছে হলে গার্ডেনে যায়। কিন্তু ফার্মহাউসে এলে সবসময় বাইরে দৌড়ায় আজও তাই করলো। হার্মহাউসটা সবুজে ঘেরা। ইয়াদ দৌড়াচ্ছে হঠাৎ তার মনে পড়লো তার বিয়ে করা বউয়ের কথা।

একটু ভেবে নামটা মনে করলো বিয়ের সময় কাজি বলেছিলো। ইয়াদের ব্রেন খুব শার্প তাই সহজেই সব মনে থাকে, ইসমাত আবিয়াত ইমা উর্ফে মিসেস আবরার হামিদ ইয়াদ। টাকার বিনিময়ে আমাকে বিয়ে করে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করেছো তুমি আর তার মাশুল তো তোমাকে দিতেই হবে। মিসেস রুবিনা কবির তোমাদেরকে যত টাকা দিয়েছে এন্ড দেবে বলেছে তার থেকে হাজার গুন কষ্ট আমি তোমাকে দিবো মনে রেখো। আর মিসেস রুবিনা কবির আপনার চালা গুটি দিয়ে এবার আপনাকেই মাত দেবো আমি।

কথাগুলো নিজের মনে আওড়ে আবার দৌড়াতে লাগলো ইয়াদ।

ইমা বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিলো রুমের দরজায় কেউ নক করলে রুমে এসে দরজা খোলে দেয়।

ইয়ানা হাসি মুখে বললো, গুড মর্নিং ভাবি।

ইমাও মুচকি হেঁসে বললো, গুড মর্নিং।

ইয়ানা বললো, ভাইয়া কোথায় ভাবি ? আমার প্রচুর ঘুম পাচ্ছিলো তাই ওয়েট না করে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, ভাইয়া কখন এসেছে রাতে ?

ইমা কী উত্তর দিবে ভেবে পাচ্ছে না। কী করে বলবে বাসর রাতে তার স্বামী ঘরেই ফেরেনি।

ইমাকে মাথা নিচু করে থাকতে দেখে ইয়ানা আন্দাজ করে বললো, ভাইয়া রাতে ফেরেনি ?

ইমা ইয়ানার প্রশ্ন শুনে টলমলে চোখে তার দিকে তাকালো। ইমার দৃষ্টি ইয়ানার মনে গিয়ে আঘাত করলো। নিজের ভাইয়ের কাজে তার নিজেরই লজ্জা করছে। ইয়ানা কী বলবে ভেবে পাচ্ছে না।

আমতা আমতা করে বললো, হয়তো ভাইয়ার জুরুরি কাজ পরে গিয়েছিলো। আগেও এমন অনেকবার করেছে তুমি মন খারাপ করো না।

ইমা মনে মনে বললো, অন্যদিন আর গতকাল কী এক হলো ? কী এমন কাজ পড়লো নিজের সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীকে বাসর ঘরে একা রেখে সে বাইরে থেকে গেলো।

ইয়ানা ব্যাপারটা সামলে নিতে বললো, তুমি নিচে চলো সবাই ওয়েট করছে ব্রেকফাস্ট করবে।

ইমা ইয়ানার সাথে নিচে চলে গেলো। ইয়ানা সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো। কিছু গেস্টও ছিলো ইয়ানার নানু বাড়ির। সবাই ইমাকে জিজ্ঞেস করে ইয়াদ কোথায় তাতে ইমা কিছু না বলে মাথা নিচু করে থাকে। ইয়ানা পরিস্থিতি সামলাতে বলে ইয়াদের জরুরি কাজ পরে গেছে তাই অনেক ভোরে বের হয়ে গেছে বাসা থেকে আর তাড়াতাড়ি চলে আসবে। এদিকে ইমার চোখের কোণে পানি জমে গেছে। বাসর রাতে তার স্বামী ঘরেই ফেরেনি একটা মেয়ের জন্য এটা কতটা অপমানের সেটা কী ইয়াদ বুঝতে পারছে। আজকে রিসেপশন পার্টি আছে তার আয়োজন শুরু হয়ে গেছে। খাওয়া শেষে ইমা আবার রুমে চলে এলো।

ইয়ানা নিজের রুমে গিয়ে ইয়াদকে কল দিলো দুবার রিং হওয়ার পর ইয়াদ রিসিভ করলো।

ইয়াদ স্বাভাবিক গলায় বললো, হ্যালো।

ইয়ানা রেগে বললো, ভাইয়া তুমি কোথায় আর সারারাত কোথায় ছিলে ?

ইয়াদ ভাবলেশহীন ভাবে বললো, এখন অফিসে যাচ্ছি আর রাতে ফার্মহাউসে ছিলাম।

ইয়ামা অবাক হয়ে বললো, ভাইয়া গতকাল তোমার বাসররাত ছিলো আর তুমি হার্মহাউসে ছিলে ? এদিকে সারারাত ভাবি তোমার জন্য অপেক্ষা করে বসে ছিলো।

ইয়াদ আগের ন্যায় বললো, আমি কাউকে বলেছি আমার জন্য ওয়েট করতে, বসে থাকতে ?

ইয়ানা হতাশ গলায় বললো, এটা কেমন কথা ভাইয়া ?

ইয়াদ শান্ত ভঙ্গিতে বললো, ইয়ানা আমি ড্রাইভ করছি পরে কথা বলবো।

ইয়ানা ব্যস্ত হয়ে বললো, আজ তোমার রিসেপশন আর তুমি কিনা অফিসে যাচ্ছো ?

এসব কোনো কারণেই ইয়াদের লাইফ স্টাইল চেঞ্জ হতে পারে না। আই ডোন্ট কেয়ার বাসায় কী হচ্ছে ?

ইয়াদ ফোন কেটে দিলো আর ইয়ানা মাথায় হাত দিয়ে বেডে বসে পড়লো। সকালে কোনোভাবে ম্যানেজ করে নিয়েছে কিন্তু এতোবড় পার্টি কীভাবে ম্যানেজ করবে বুঝতে পারছে না ইয়ানা। সবাই তো ইমাকেই কথা শুনাবে। ইয়ানার এখন মনে হচ্ছে ইয়াদের সাথে ইমার জীবন জড়িয়ে অনেক বড় ভুল করেছে সে। ইয়াদ যেমন ছিলো তাকে তেমনই থাকতে দেওয়া উচিত ছিলো।

ইমার কিছু ভালো লাগছে না নিজের ফোনটা বের করে রিকুকে কল দিলো। দিনটা এভাবে কেটে গেলো সন্ধ্যায় পার্লারের লোক এসে ইমাকে সুন্দর করে সাজিয়ে দিলো কিন্তু ইমার মনে আঁধার নেমে এসেছে। বিয়ের পর পুরো একটা দিন পেড়িয়ে গেলো ইয়াদের দেখা নেই চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে ইমার।

ইয়ানা ইমাকে দেখে বললো, মাশাআল্লাহ আমার ভাবিকে একদম পরীর মতো লাগছে।

ইমা কিছু বললো না জোরপূর্বক একটা হাসি দিলো ইয়ানাও বুঝতে পারছে ইমার অবস্থা কিন্তু সে কী করবে ? ইয়াদ তো এখন ফোনও রিসিভ করছে না। ইয়ানা ইমাকে নিচে নিয়ে গেলো। কথা আর তার বাবা মাও এসেছে কিন্তু আরমান আসেনি। সবার এক প্রশ্ন ইয়াদ কোথায় উত্তরে ইমা নিশ্চুপ আর ইয়ানা নানা কথা বলে সবাইকে সামলাচ্ছে তবু অনেকে কানাঘুষা করছে। যার জন্য পার্টি সেই তো নেই মানুষ সুযোগ পেলে কথা না শুনিয়ে ছাড়বে নাকী ? আর এমনিতেই সবাই জানে ইয়াদ মেয়েদের সয্য করতে পারে না তাই আরও বেশি কানাঘুঁষা হচ্ছে ইমাকে নিয়ে।

কথা পানি খাচ্ছিলো হঠাৎ কোথায় থেকে ইশান উপস্থিত হয়ে বললো, আমরা তো এখন বেয়াই বেয়াইন হয়ে গেলাম তাই না ?

ইশানের হঠাৎ কথা বলায়, কথার কাশি উঠে যায় আর ইশান ব্যস্ত হয়ে বলে, আরে আস্তে আস্তে খান। আবার দুষ্টুমি করে বলে, কেউ নিয়ে চলে যাচ্ছে না তো।

ইশানের কথায় কথা তার দিকে কড়া দৃষ্টি নিক্ষেপ করে সেখান থেকে চলে যায়। আর পুরোটা সময় ইশানকে এড়িয়ে চলে। বিষয়টা ইশানের একদমই ভালো লাগছে না। পার্টিতে আসা সব মেয়ে তার সাথে একটু কথা বলার সুযোগ খোঁজে যাচ্ছে আর ইশান যার সাথে কথা বলতে চাইছে সে তাকে এড়িয়ে চলছে। রাত এগারোটার দিকে পার্টি শেষ করে সবাই চলে যায়। ইমাকে ঐ বাড়িতে নিতে চেয়েছিলো ইমা যায়নি। রুমে এসে চুপচাপ বসে রইলো সোফায়, চেঞ্জও করছে না। সে তো খুব সাদামাটা একটা জীবন চেয়েছিলো যেখানে টাকার অভাব হলেও ভালোবাসার অভাব কখনো হবে না কিন্তু এসব কী হচ্ছে ইমা মেনে নিতে পারছে না।

রাত প্রায় বারোটা বাজে তখন গাড়ি নিয়ে গেইট পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলো ইয়াদ। পার্টি শেষে সব গুছানো হচ্ছে তখন। ইয়াদ কোনো দিকে না তাকিয়ে সোজা নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালো। ইয়াদ বাইরে গেলে নিজের রুম লক করে যায় তাই সবসময় চাবি তার কাছেই থাকে। দরজা খোলে ভেতরে প্রবেশ করলো ইয়াদ।

চলবে,,,,