#ভালোবাসি তাই
#পর্বঃ৩৬
#Tanisha Sultana
রাস্তার পাশের ফাঁকা জায়গায় বসে বসে কাঁদছে তানহা। সুন্দর সাজগোজের বারোটা বেজে গেছে। চোখে কাজল লেপ্টে গেছে, লিপস্টিক মাখিয়ে গেছে। চুলগুলো এলোমেলো হয়ে গেছে। মানুষ সাধারণত বেশি সাজলে নিজের সাজ খুব সহজে নষ্ট হতে দিতে চায় না। তানহাও সেইরকমই। ও ভেবেছিলো এতেগুলো ছবি তুলবে। ফেসবুকের প্রোফাইল কভার চেঞ্জ করবে। অভির সাথে কাপল পিক তুলে ফেসবুকে আপলোড দেবে। কিন্তু সেসবের কিছুই হলো না।
সেই দুঃখে আরও বেশি কাঁদছে তানহা।এতোখন ফুঁপিয়ে কাঁদলেও এখন শব্দ করে কাঁদছে। চোখ কুচকে যাচ্ছে ঠোঁট কেঁপে কেঁপে ওঠছে। থুতনির ঠিক মাঝখানে একটা তিল আছে তানহার। চোখের পানি গুলো চুয়িয়ে চুয়িয়ে তিলের ওপর জমা হচ্ছে। আবার টুপটুপ করে পড়ছে। মাঝেমধ্যে তানহা হাত দিয়ে থুতনি থেকে পানি মুছছে।
অনমনে হাসছে অভি। মানুষ কাঁদলে এতো কিউট লাগে?
তানহা হঠাৎ অভির দিকে খেয়াল হয়। অভি মিটমিট করে হাসছে দেখে আপনাআপনি কান্না বন্ধ হয়ে যায়। রাগে চোখ মুখ খিঁচে ফেলে।
“আমাকে কাঁদিয়ে এখন খুব মজা হচ্ছে?
হেঁচকি তুলে বলে তানহা।
অভির ঘোর কাটে। মুখটা থমথমে হয়ে যায়। এদিক সেদিক তাকিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে একটা শ্বাস নেয়।
” আমি তো তোমাকে কাঁদতে বলি নি। দায় সারা ভাবে বলে অভি।
“তুমি ওই ছেলের সাথে ঢলাঢলি না করলে আমি তোমাকে চর মারতাম না।
” থাপ্পড়ের কথা মনে আসতে আবারও কেঁদে ওঠে তানহা।
“আমার গালটা ভেঙে গেছে।
ঠোঁট উল্টে বলে কাঁদতে থাকে।
অভি তানহা অভির মুখের ওপর বলেছিলো
” আপনাকে ওই মেয়েটা জড়িয়ে ধরতে পারলে আমি কেনো পারবোনা?
“আমি তো বললাম ওই মেয়েটা আমার জাস্ট ফ্রেন্ড।
“আমি কি বলছি না কি ওই ছেলেটা আমার প্রেমিক
কথাটা শেষ হতে দেরি কিন্তু তানহার গালে চর পড়তে দেরি নেই। গালে হাত দিয়ে হতবাক হয়ে অভির দিকে তাকায় তানহা। অভি কি করলো বুঝতে পেরে তানহাকে সরি বলতে যায়। তানহার কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে বেরিয়ে যায় পায়েলদের বাড়ি থেকে।
” অনেক তো কাঁদলে এবার চলো।
ঘাড় বাঁকা করে বলে অভি।
তানহা আর একটু ঘুরে বসে অন্য দিকে।
“কি মুশকিল
সরি আর হবে না এমন
ইনোসেন্ট ফেস করে বলে অভি।
তবুও তানহা কিছু বলে।
” তুমি কেনো বোঝো না তেমাকে অন্য কারো সাথে দেখলে আমার কষ্ট হয়। এখানে (বুকের বা পাশে) জ্বালাপোড়া করে।গোটা দুনিয়া উল্টে দিতে ইচ্ছে করে।
তানহা কান্না থামিয়ে তাকায় অভির দিকে।
“আপনি আমায় কবে থেকে ভালোবাসেন?
তানহা ফট করে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় অভির দিকে।
অভি ভরকে যায়।
” কতোদিন আর
বিয়ের পরে এতোদিন এক সাথে থাকলাম এরই মধ্যে
থেমে থেমে বলে অভি।
“এটা সত্যি না। আপনার চোখ বলে দিচ্ছে।
অভির চোখের দিকে তাকিয়ে বলে তানহা।
অভি বুঝে যায় তানহার থেকে আর লুকোনো যাবে না।
” ১৫-৬-২০১৫ সাল থেকে। যেদিন আবির তোমায় প্রপোজ করেছিলো। তোমার বার্থডে ছিলো। তুমি খুশি হয়ে আবিরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছিলে। সেদিন থেকেই। তোমাকে প্রপোজ করার সব এরেন্জমেন্ট আমিই করেছিলাম। তোমার প্রতি আমার দুর্বলতা ছিলো ২০০৭ থেকেই। সেই দুর্বলতা ভালোবাসাতে প্রকাশ পায় ২০১৫ সালে। জানো সেদিন ভীষণ কষ্ট হয়েছিলো আমার। সেদিনের পরে তোমাদের বাড়ি যেতাম না। আবিরের সাথেও কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু মনের মধ্যে ভরসা ছিলো আমি তোমাকে পাবোই।
অভি থামে। তানহা অভির হাতের ওপর হাত রাখে।
“নতুন কাউকে খুঁজে নিলেই পারতেন। আমাকে মনে করে কেনো কষ্ট পেতেন?
” ভালোবাসি তাই।
শোনো তানহা ভালো না একজনকেই বাসা যায়। আর প্রেম জীবনে একবারই আসে। যারা বলে দ্বিতীয় বার প্রেমে পড়া যায় তারা ভুল বলে। হ্যাঁ প্রথম জনের থেকে ধোঁকা খেয়ে বা হারিয়ে পরে দ্বিতীয় কাউকে এক্সেপ্ট করা যায়। কিন্তু সেটা প্রেম বা ভালোবাসা না। সেটা মায়া বা মোহ। দিন শেষে তোমার প্রথম জনের কথাই মনে পড়বে, চোখ বন্ধ করলে তার হাসি মুখটাই ভেসে উঠবে। বাইরে প্রকাশ না করলেও ভেতরটা তার কাছেই ছুঁটে যাওয়ার জন্য অকুল হয়ে থাকবে। এটাই ভালোবাসা। অন্তত আমার মনে হয়।
তানহা মন দিয়ে অভির কথা গুলো শুনছে।
“জানো তোমার বিয়ের কথা শুনে আমি পাগল হয়ে গেছিলাম। কি করবো না করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। ছুঁটে চলে গেছিলাম তোমার কাছে। মনে মনে প্ল্যান করেছিলাম তোমার রুমে খালি গায়ে থাকবো তারপরকিছু একটা করে তোমার নামে বদনাম দেবো আর তোমায় বিয়ে করে নেবো। কিন্তু তার আগেই তোমার বাবা সম্পর্কে কিছু কথা শুনতে পায়। দেন বিয়ে টা আটকে যায়। আমার কিছুই করতে হলো না।
” কি শুনেছিলেন বাবা সম্পর্কে?
“বাচ্চা মেয়ে। তোমার জানতে হবে না।
তানহার নাক টেনে দিয়ে বলে অভি।
তানহা অভির কাঁধে মাথা রাখে। অভি তানহার গালে হাত দেয়।
” এক সপ্তাহের কিন্তু একদিন চলে গেছে।
“হুমমম। কালকেই তোমার বাবা তোমাকে জানিয়ে দেবে যে সামনে শুক্রবার তোমার আর অভির বিয়ে।
” এটা কি করে পসিবল
“ভরসা রাখো আমার ওপর। কুকুরের লেজ কি করে সোজা করতে হয় সে আমার জানা আছে।
তানহা মুচকি হাসে।
দুজনই চুপ। রাত এগারোটা বাজে। দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। গাড়ি চলাচল নেই বললেই চলে। মাঝেমধ্যে কুকুরে ডাক শোনা যাচ্ছে। ঝিঝি পোকারা ঝি ঝি করছে। তানহা অভি নিজেদের নিশ্বাসের শব্দ নিজেরাই শুনতে পাচ্ছে।
” একটা কথা বলি?
তানহা বলে ওঠে।
“হুমম বলো
চোখ বন্ধ করেই বলে অভি।
” আমি না আপনাকে খুব ভালোবাসি।
অভি ফট করে মাথা তুলে তানহার দিকে তাকায়। তানহা লজ্জায় মাথা নুয়িয়ে ফেলে।
“আরেকবার বলো
অভি হাসফাস করে বলে। তানহা অভির বুকে মুখ লুকায়। ভালোবাসি বলাতে এতো লজ্জা জানলে বলতোই না।
” বলো না প্লিজ
তানহার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে অভি।
“প্লিজ আর পারবো না। লজ্জা মাখা হাসি দিয়ে বলে তানহা। অভি বিজয়ের হাসি হাসে। চোদ্দ বছরের ইচ্ছেটা আজ পূরণ হলো। আর কি চাই?
” আমিও ভীষণ ভালোবাসি।
অভি তানহার মাথায় চুমু খায়। তানহা হকচকিয়ে সরে আসে।
“কি হলো? অভি ভ্রু কুচকে বলে।
” বাড়ি যাবো। থেমে থেমে বলে তানহা।
“হুমম
তানহার দুইগালে হাত দিয়ে বলে অভি।
” ছাছাড়ুন প্লিজ
এদিক সেদিক তাকিয়ে বলে তানহা।
“আমি আর তুমি ছাড়া কেউ নেই। মাতাল করা কন্ঠে বলে অভি। তানহা নিজের শাড়ি খামচে ধরে আছে। অভি তানহার দিকে তাকিয়ে এগিয়ে আসছে।
চোখ মুখ খিঁচে ফেলে তানহা। জোরে শ্বাস নিচ্ছে। মনে হচ্ছে হার্ট বেরিয়ে আসবে।
অভি ছেড়ে দেয় তানহাকে। হতাশার নিশ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়ায়।
” চলো
বলেই হাঁটতে থাকে।
“আমি কি আবারও ওকে হার্ট করে ফেললাম? চোখে পানি চলে আসে তানহা।
অভি আবার হাঁটু মুরে বসে তানহার সামনে। থুতনি ধরে মুখটা উঁচু করে।
” একদম তুমি আমায় হার্ট করো নি।
মুচকি হেসে বলে অভি।
“আমি বুঝলেন কি করে
অভি তানহার ঠোঁটে আঙুল দেয়।
” আমি সব বুঝতে পারি।
কথা শেষ করেই ফট করে তানহার থুতনিতে চুমু খায়। তানহা এটার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না। আবার লজ্জা পেয়ে যায়। অভি তানহার হাত ধরে টেনে তুলে হাঁটতে থাকে।
“বুক চিনচিন করে হায়
মন তোমায় কাছে চায়
এতে আমার কোনো দোষ নাই মনের দোষ
অভি গান গায়। তানহা এখনো লজ্জা পেয়ে আছে
অভি দাঁড়িয়ে যায়।
” ওহহহ বেবি
Have a Relax, see you not for Mind
চলবে
#ভালোবাসি তাই
#পর্বঃ৩৭
#Tanisha Sultana
আজ পুরো রাস্তাটা পায়ে হেঁটেই বাসায় এসেছে অভি তানহা। আর পাঁচ মিনিট হাঁটলেই তানহাদের বাসা। তানহা অভির এক হাত জড়িয়ে ধরে হাঁটছে।
“আপনি থাকবেন তো আজ?
অভির দিকে এক পলক তাকিয়ে বলে তানহা।
অভি হাতে থাকা ইটের টুকরো ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বলে
” নাহহহ। ছয়দিন তোমাকে একা একাই থাকতে হবে। দেখাও করবো না তোমার সাথে।
ফট করে তানহা দাঁড়িয়ে যায়। অভির হাত ছেড়ে দেয়।
“কি হলো?
ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে অভি।
” আপনি আজ আমার সাথে থাকবেন। আর কিছুই শুনতে চায় না।
জেদ ধরে বলে তানহা।
“তানহা বোঝার চেষ্টা করো
তানহা শক্ত করে অভিকে জড়িয়ে ধরে।
” প্লিজ
আপনাকে ছাড়া না আমার চারপাশটা ফাঁকা ফাঁকা লাগে৷ দম বন্ধ হয়ে আসে। আপনি জানেন না আমি ঠিক কতোটা কষ্টে এই দুইবছর থেকেছি। বারবার মনে হতো কেনো আটকে রাখলাম না আপনাকে। আবার মনে হতো কথাই বলবো না আপনার সাথে। সেদিন আটকাতে পারি নি। কিন্তু আজ আটকাচ্ছি প্লিজ থেকে যান।
অভি তানহার মাথায় হাত রাখে।
“তোমাদের বাড়িতে আবির মায়া তাতান ফুপি ফুপা সবাই এসেছে। এখন আমি গেলে একটা বাজে সিনক্রিয়েট হবে।
” তানহা অভির বুক থেকে মাথা তুলে উঁচু হয়ে অভির দিকে তাকিয়ে বলে
“আপনি জানলেন কি করে?
” খোজ খবর রাখতে হয়।
“কেনো?
” আমি এটাকে আমার দায়িত্ব মনে করি।
তানহার আবার বুকে মাথা রাখে।
“আমি কিচ্ছু শুনতে চায় না। আপনি থাকবেন থাকবেন থাকবেন
অভি মুচকি হাসে।
” যাবো না আমি
“তাহলে আমরা এই রাস্তাতেই থেকে যাই
” পাগলামো করো না
তানহা গাল ফুলিয়ে উল্টো দিকে হাঁটা শুরু করে।
“কি মুশকিল কোথায় যাচ্ছো?
অভিও পেছন পেছন ছুটে।
” এই রাস্তায় হেঁটে হেঁটেই ভোর করে ফেলবো।
এদিক ওদিক তাকিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বলে তানহা।
“আচ্ছা বাবা তোমাদের বাড়িতেই থাকবো আমি
বিরক্ত হয়ে বলে তানহা।
তানহা দাঁড়িয়ে যায়। এক গাল হেসে অভির সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
” একটু নিচু হন
“কেনো?
” হন না
অভি একটু ঝুঁকে
তানহা অভির গাল টেনে দিয়ে বলে
“আমার টুনুমুনু জামাইটা
” আমার তোতাপাখি বউটা
তনহার গাল টেনে বলে।
তারপর দুজন একসাথে হেসে ফেলে।
অভি বেলকনি দিয়ে তানহার রুমে যাবে। তানহা মেইন দরজার কাছে গিয়ে কলিং বেল চাপে। জোরে শ্বাস নিচ্ছে। বাই এনি চান্স যদি বাবার সামনে পড়ে যায় তো অভির নামে বস্তা বস্তা অভিযোগ শোনা যাবে।
কয়েকবার কলিং বেল বাজানোর পরেও নো রেসপন্স। বিরক্ত লাগছে। আবার কলিং বেলে হাত রাখতেই ফট করে দরজা খুলে যায়।
তানহা একটু চমকে যায়।
সামনে দিকে তাকিয়ে তানহার বুকের ভেতর ধক করে ওঠে। আবির হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে। অনেকটা বদলে গেছে আবির। আগের মতো রোগা পাতলা নেই। একদম ফিটফাট হয়ে গেছে। আগে দাঁড়ি ছিলো না এখন চাপ দাঁড়ি। আগের শ্যামলা ছিলো এখন ধবধবে ফর্সা হয়ে গেছে।
“কেমন আছো তানহা?
তানহার ঘোর কাটে। আবিরের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়।
আবিরকে পাশ কাটিয়ে ভেতরে ঢুকে। কেমন আছো প্রশ্নটার উওর নেই তানহার কাছে।
” অভি আসলো না?
দরজা বন্ধ করে দিয়ে বলে আবির। তানহার বুকের ভেতর আবারও ধক করে ওঠে।
“নাহহ
বলে কোনোরকমে যেতে নেয়
” এখনও মনে পড়ে আমার কথা?
আবির প্রশ্ন করে বলে। তানহা ফ্লোরে এদিক সেদিক চেখ ফেরায়।
“আমার কিন্তু মনে পড়ে কিন্তু তোমায় মিস করি না। এখন আর তোমার কথা মনে পড়লে বুক কেঁপে ওঠে না। পাগল পাগল ফিল হয় না। তাতান ব্যাথা পেলে এমন ফিল হয়। পাগল পাগল লাগে। আচ্ছা তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা কি তাতান ভাগ বসালো?
কতো দিন পর তোমায় দেখলাম। বিশ্বাস করো খুব ভালো লাগলো।
জানো কপাল করে বউ পেয়েছি। খুব ভালো বাসে আমায়। আগে যখন তোমার কথা মনে পড়তো পাগলের মতো করতাম তখন ও তোমার ছবি দেখাতো আমাকে। আমার সাথে মায়াও কাঁদতো।
তানহা দুহাতে শাড়ি খামচে ধরে চোখ বন্ধ করে আছে। এমনিতেই তানহা খুব ইমোশনাল। পুরোনো স্মৃতি এভাবে আঘাত করাটা ও মেনে নিতে পারছে না।
” কংগ্রাচুলেশনস মামা সব মেনে নিয়ে তোমাদের আবার বিয়ে দিচ্ছেন। আমরা কিছু পুরো এক সপ্তাহ থাকবো এখানে।
“তাতান ঘুমিয়েছে?
তানহা থেমে থেমে প্রশ্নটা করে বসে।
আবির হেসে ফেলে। বুঝতে পারে তানহা এসব শুনতে চাইছে না।
” হ্যাঁ ঘুমিয়েছে।
তানহা আর এক পা দাঁড়ায় না। দৌড়ে রুমে চলে যায়। দরজা বন্ধ করে দেয়। অভি খাটে বসে আছে। অনেক কষ্টে চোখের পানি আড়াল করে ফেলে তানহা।
“এটা কি করে হলো বলুন তো?
কোমরে হাত দিয়ে অভির সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলে তানহা।
” বললাম না সব সম্ভব।
আরাম করে বিছানায় শুয়ে বলে অভি।
“তোমার বাবা আমাকে জীবনেও মানবে না। কাঠখড় পুরিয়ে বিয়ে জন্য রাজি করিয়েছি।
” কেনো মানবে না
“সময় হলে জানবে। এখন শোনো আমাকে যেতে হবে।
” আপনি বলছেন থাকবেন এখানে।
“আরে বাবা কাজ আছে।
” রাতে কি কাজ থাকতে পারে।
“তুমি বুঝবা না।
” আমি বাচ্চা না। বলুন
“বিশ্ব ত্যাড়া তুমি।
” আপনি আজ এখানেই থাকবেন।
বলেই কাবাড থেকে জামাকাপড় বের করে তানহা।
“থাকলে কিন্তু যা চাইবে তাই দিতে হবে। রাজী?
” হুমম রাজি।
বলেই ওয়াশরুমে ঢুকে যায়।
অভি মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকে। আজ যেতে দেবেই না এটা কনফার্ম।
“ধুরর ভাল্লাগে না
গুনে গুনে বিশ মিনিট পরে তানহা বের হয়৷ গেছল করেছে। অভি বিশ মিনিট যাবৎ ওয়াশরুমের দরজার দিকে তাকিয়ে ছিলো।
ভেজা চুল গুলো তোয়ালে দিয়ে মুছতে মুছতে বের হয় তানহা। গোলাপি রংয়ের টিশার্ট আর কালো প্লাজু পড়েছে। অপূর্ব দেখাচ্ছে।
” এই মেয়ে তুমি কি আমাকে পাগল করার ফন্দি আটছে না কি?
শক্ত গলায় বলে অভি। তানহা ভরকে যায়। চুল থেকে হাত নামিয়ে নেয়
“মানে? আমি তো কিছু করি নি
” কিছুই করে নি?
“না তো। আপনিই বলেন কি করছি।
” বোঝাচ্ছি
অভি বিছানা থেকে নেমে আস্তে আস্তে তানহার কাছে আসে। তানহার হাত থেকে তোয়ালে নিয়ে ফেলে দেয়। তানহা মাথা নিচু করে আছে।
“এই জনই থাকতে চায় নি আমি। এবার কিছু হলে সেটার দায় আমার না
ঘোর লাগা কন্ঠে বলে অভি।
তানহা সরে যেতে নেয়।
” উহুুু
তুমি বলেছো যা চাইবো তাই দেবে
তানহা বড় বড় চোখ করে অভির দিকে তাকায়।
“আআআম
অভি তানহার ঠোঁটে আঙুল রাখে।
হিসসসসসসসসস একদম চুপপ
একহাত তানহার কোমরে আরেক হাত ঠোঁটে৷ তানহার হার্ট লাফাচ্ছে। কেনো যে ওনাকে থেকে যেতে বললাম।
মনে মনে বলে তানহা।
” তানহা প্লিজ আজকে লাফালাফি করো না।
অভি মাতাল করা কন্ঠে বলে।
তানহার শ্বাস আটকে আসছে।
চলবে