ভালেবাসার নতুন প্রনয়ণ পর্ব-০৩

0
696

গল্পের নামঃ- #ভালেবাসার_নতুন_প্রনয়ণ

লেখিকাঃ- #konika_islam (sanju)

part:03

সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে হূর ছাঁদে চলে আসে। তার ফুল গাছে পানি দিতে। এটা তার নিত্যদিনের কাজের মাধ্যে আরেকটা। আর গুনগুন করে গান গাইছে। সকালের আবহাওয়া টাই অন্যরক একটা।
তখনই পিছন থেকে এরিশ বলে

” মনে রঙ লেগেছে?? সকাল সকাল!! হূর ভ্রুকুচকে তাকায় এরিশের দিকে। এরিশ বলে

” এই একদম এইভাবে তাকাবা না। হূর বলে

” আপনার কি আমার সাথে না লাগলে ভালো লাগে না? এরিশ হূরের দিকে আগাতে আগাতে বলে

” কই লাগলাম তোমার সাথে আমিতো কত দূরে। মিথ্যা কথা বলো কেন? হূর বিরক্ত হয়ে ছাঁদ থেকে চলে যেতে চাইলে এরিশ হূরের হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে নিজের সাথে চেপে ধরে বলে

” নেক্সট টাইম যদি ছাঁদে এইভাবে আসতি দেখি তোকে জানে মেরে ফেলব। লোককে দেখানোর দরকার নেই যে তুই সুন্দরী।

হূর নিজের দিকে তাকিয়ে আতকে উঠে। রাতে যে একটা টিশার্ট আর টাউজার পরে ঘুমিয়ে ছিল সেটা পরেই ছাঁদে চলে এসেছে । এরিশ হূরকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। এরিশ যখন ছাঁদে আসে দেখে তার পাশের বাসার একটা ছেলে হূরের দিকে তাকিয়ে ছিল আর মেজাজ বিগরে যায় হূরকে এই অবস্থায় দেখে। হূরও নিজেকে বকতে বকতে চলে আসে রুমে।

____________

ক্যাম্পাসের পিছনে লেকের পারে বসে বসে বই পড়ছে হূর আর অহি ঝগড়া করছে অনিকের সাথে। অনিক গান গাইছে

” বুক চিন চিন করছে হায় মন তোমায় কাছে চায়। অহি বলে

” তোকে কাছে পাওয়ার থেকে কাশতে কাশতে বমি করে গলা থেকে রক্ত বের হয়ে মারা যাওয়াটা অনেক ভালো।

অনিক বিরক্ত হয়ে বলে

” তোরা কি হ্যা!? এই যে হূর একটা বই পড়তে পড়তে এ্যাবনরমাল হয়ে গেছে আর তুই তো বাঁচাল রানী।

হূর রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে আমি এ্যাবনরমাল?? তবে রে। অনিক বলে

” নিজে কে বাঁচাই পরে আবার বলবো। বলেই দৌড় সাথে হূরও। হূর বলছে

” এই দাড়া। অন্যদিকে এইসব ভিডিও করছে অহি। হঠাৎ করেই অনিক থেমে যায়। সামনে তাকিয়ে দেখে তিথি দাড়িয়ে। তিথিকে দেখে হূর গিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে

” কি করে কবে ফিরলি দেশে?? বললি না যে। তিথি বলে

” না এমনি, বাবাই হুট করেই দেশে বেক করে। বাবার কথা উপর আর কথা বলিনি। এইসব পরে হবে। চল একটু আড্ডা দেই। অনিক বলে

” আসছে যমুনা নদী। তিথি রাগী চোখে তাকিয়ে বলে

” তুই কি। তুইতো একটা হারামি। অনিক কিছু বলে না। হূর একটু আগতেই দেখে এরিশ, আকাশ, আবির এই দিকেই আসছে। অনিক বলে

” কি গরম। আর হূরের ওড়না দিয়ে নিজের ঘাম পরিষ্কার করে। এরিশ তা দেখেও কিছু বলে না। দেওয়াল টপকে তিনজনই ক্যাম্পাসের বাইরে চলে যায়। তিথি বলে

” দোস্ত আবিরকে আজ কি হেন্ডসাম লাগছে। অহি বলে

” ক্রাশ খেয়েছি।

অনিক বলে

” সাধে মুটি হচ্ছিস? এই যে চোখ দিয়ে ছেলেদের গিলে গিলে খাস। দিন নাই রাত নাই ক্রাশ খাস তার ফল। তিথি বলে

” তুই অনেক বেশি কথা বলিস। কিন্তু হূর ভাবছে এরিশের কথা। দেখেতো মনে হচ্ছিল কিছু একটা হয়েছে। আর ক্যাম্পাসের দেওয়াল কেন টপকালো?!

_______________

বাসায় ঢুকতেই ড্রয়িং রুমে দেখা মিলে এরিশের বাসার সবাই আজতো মৃধার কলেজের অনুষ্ঠানে গিয়েছে। এরিশকে ভাইয়া দেখে ধীর পায়ে উপরের দিকে উঠতে লাগি হঠাৎ করে এরিশ ভাইয়া আমার দিকে আগাতে আগাতে বলে

” ভার্সিটিতে পড়তে যাস নাকি জাস্ট ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা দিতে? কোনটা!! ছেলেদের সাথে এতো কিসে কথা?! হূর বলে

” অনিক আমার ফ্রেন্ড। খুবই ভালো ফ্রেন্ড। এরিশ বলে

” ভালো ফ্রেন্ড নাকি বয়ফ্রেন্ড!? হূর বলে

” যাই হোক। আপনাকে জবাব দিতে আমি বাধ্য না। বলেই যেই না রুমে চলে আসবে তখনই এরিশ হূরের হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে, চুলের মুঠি ধরে বলে

“এটা তোর নিজের বাড়ি না। এমন যদি কুকর্তি করতে ভার্সিটি যাস তাহলে তো ভার্সিটি যাওয়া আমার বন্ধ করতে দুই মিনিট লাগবে না। ফ্রেন্ড ফ্রেন্ডের মতো থাকবে নেক্সট যদি ঐ ছেলেকে তোর সাথে এমন চিপকে থাকতে দেখি, তোকে মেরে ফেলবো। কারণ তোর জন্য আমি আমার বংশের নাম খারাপ হতে দিতে পারি না। মাইন্ড ইট বলেই হূরকে ছেড়ে এরিশ চলে যায়।

হূরের চোখ বেয়ে পানি পরছে এটাই তার সম্বল।

_____________

রাতে সবাই বাসায় চলে এসেছে অনেক রাগে। রাত এখন তিনটা বজতে চললো। নিচে নামতে হয় পানির জন্য তখনই দেখি এরিশ ভাইয়া। টুলতে টুলতে বাসায় ঢুকছে। বড় বাবা দেখলে খবর আছে। আর হাত থেকে রক্ত পরছে। তা দেখে দৌড়ে গেলাম তার কাছে। আমাকে দেখে চারপাশ দিয়ে ঘুরে বলে

” হেউ হূর, আমি না তোমার টুইন দেখতে পারছি অনেকগুলো। কি কিউট। বলে আমার গাল ধরতে আসলে তার হাতটা আমার ওড়না দিয়ে চেপে ধরি নিচেও রক্ত পরে ফ্লোর মেখে আছে। তাকে কোনো রকম তার রুমে নিয়ে আসলাম। বেডে বসিয়ে ফাস্ট-এড বক্স খুজতে লাগলাম। আর একটু পর পেয়েও গেলাম৷

পিছনে ঘুরতেই এরিশ ভাইয়াকে দেখে অবাক হয়ে যাই। মানুষটা কি এক জায়গায় বসে থাকতে পারে না। এরিশ আমাকে বলে

” হূর তুমি কিছু খুঁজছ?হূর রেগে বলে

” হ্যা আপনার মাথা। এরিশ হূরের কথা শুনে হাত দিয়ে নিজের মাথায় ধরে বলে

” কই আমার মাথা তো আমার সাথেই। তুমি আসো তোমাকে কিছু দেখাবো।

বলেই টেনে নিয়ে যায় তার বেলকনিতে। বেলকনিটা বেশ সুন্দর সম্পূর্ণ কাচের। আকাশে উুকি দিয়ে আছে থালার মতো একটা বড় চাঁদ। হূরকে নিয়ে নিচে বসে পরে এরিশ। এরিশ বকবক করেই যাচ্ছে। কিসব বলছে বুঝাও যাচ্ছে না। হূর ধীরে ধীরে এরিশের হাতে বেন্ডেজ করে দিয়ে। যেনই না হূর উঠতে যাবে উমনি এরিশ হূরের উড়না ধরে বলে

” এখানে বসো। হূর বলে

” না অনেক রাত হয়েছে আমার যেতে হবে। এরিশ দাড়িয়ে হূরের ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে বলে

” শুসসসসসস,। হূরের কেমন যেন লাগছে।এরিশকে রেখে দৌড়ে নিচে চলে আসে৷ রক্ত পরিষ্কার করে পা বাড়ায় নিজের রুমের দিকে।

__________________

আজ ভার্সিটি নেই তাই বিকালে হূর একটু একা বের হয়েছে পার্কে। পার্কে তেমন কেউ নেই বললেও চলবে। বেস ভালোই লাগছে। দেখতে দেখতে কখন যে সন্ধ্যা নেমে আসে সেই দিকে হূরের খেয়াল নেই গাড়িও নিয়ে আসেনি। ভয় করছে এখন। একটু আগাতেই হূর দেখে আদিব সহ আর বেশ কয়েকটা ছেলে সিগারেট টানছে আর কথা বলছে। আদিব এখানে?! আদিব হূরকে দেখে বলে

” আরে হূর নাকি? এখানে কি কর? তা একা কেন বেইবি??
হূর কিছু না বলে আদিবকে পাশ কাটিয়ে চলে আসে আদিব পিছন থেকে বলে

” একা যেতে পারবে?? নাকি আমি আসবো। হূর কিছু না বলে একরম দৌড়ে চলে যায় সেখান থেকে। আদিব তা দেখে বাঁকা হাসি দেয়, আর আবার আড্ডায় মন দেয়। একটা রিক্সাও নেই। হঠাৎ করে বাইকের আওয়াজে হূর পিছনে তাকায় দেখে একটা ছেলে, ডার্ক ব্লাক কালারের একটা বাইক নিয়ে দাড়িয়ে। হূরকে ধমকের সুরে বলে

” হূর তুমি এই সময় এখানে একা একা কি কর?? হূর কন্ঠ শুনে বুঝতে পারে এটা নীলআদ্র। হূর বলে

” একটু পার্কে এসেছিলাম। নীলআদ্র বলে

” তা একা কেন? রাত হতে চললো, আচ্ছা চলো তোমাকে বাসায় দিয়ে আসি। হূরও কথা বাড়ায় না। কিছু সময়ের মধ্যেই হূর বাসায় পৌঁছে যায়। বাইক থেকে নামে আর তখনই বাইক নিয়ে বাসায় প্রবেশ করে এরিশ। হূরের দিকে একপল তাকিয়ে বাসায় চলে যায়। সারাদিনে আজ একবারও দেখা হয়নি তাদরে। হূর ভয়ে ঢুক গিলে নীল আদ্রকে ধন্যবাদ দিয়ে বাসায় চলে আসে,, যেই না নিজের রুমে ঢুকতে যাবে

চলবে?