#রহস্যময়ী_লেডি_কিলার
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#অন্তিম_পর্ব_
“আকাশকে মারতে আসা লোক গুলো আকাশের কিছুটা কাছাকাছি এসে অদ্ভুত ভাবে তারা আবার পিছাতে শুরু করে। আকাশ তাঁদের এইরূপ আচরণে কারোর উপস্থিতি উপলব্ধি করে সজোড়ে হাসতে আরম্ভ করে। তারপর হাসতে হাসতে তাঁদের বলে,
–কিরে হনুমানের দল তোরা আমাকে মারা বাদ দিয়ে রেখে পিছিয়ে যাচ্ছিস কেন? তোরা তো বলে মানুষদেরকে পায়ের নিচে কুচলে মারিস। তাহলে এখন আমাকে দেখে পিছিয়ে যাচ্ছিস কেন? আয় মার।
.
আকাশের কথায় তারা আরো দ্রুত পিছিয়ে যেতে থাকে। আকাশ ও তাঁদেরকে ছাড়ার মতন মানুষ নয়। তাই সেও জোর কদমে তাঁদের দিকে এগিয়ে গিয়ে গুলি ছুঁড়তে আরম্ভ করে। আকাশের গুলিতে অদৃশ্য থেকে এগজিস্ট করা লোকজন থেকে দু’জন মারা যায়। যেটা দেখে বাকিরা আবার অদৃশ্য হয়ে যাওয়ায় পায়তারা করে। তারা অদৃশ্য হয়ে গিয়ে একটা গোপন সিকিউরিটি সিস্টেম রুমের মাঝে ঢুকে যায়। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয় না। কারন আকাশ তাঁদেরকে দেখতে পাচ্ছে। আকাশের বাকি সঙ্গী সাথীরা কেউ তাঁদেরকে দেখতে পাচ্ছে না। কিন্তু আকাশের চোখের জ্যোতি কেন জানি হুট করে বেড়ে গেছে। তার সাথে সাথে আবার আকাশ অদ্ভুত রকমের একটা শক্তি অনুভব করছে নিজের শরীরে। তাই আকাশ কোনো ধরনের চিন্তা-ভাবনা ছাড়া সেই সিকিউরিটি সিস্টেম ওয়ালা রুমটার মধ্যে একাই ঢুকে পরে। তারপর সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলে। তাঁদেরকে মারা শেষ করে আকাশ রুমটা থেকে বেরিয়ে এসে ভাবতে থাকে,
–আচ্ছা লোক গুলা আমায় দেখে এতো ভয় পেলো কেন? তার উপরে আমি তাঁদেরকে মেরে ফেললাম, কিন্তু তারা আমাকে মারার বিন্দু পরিমাণ ইচ্ছাও পোষণ করলো না। তারা তো চাইলে আমার সাথে লড়াই করতে পারতো। কিন্তু তারা সেটা না করে চুপচাপ রুমটার মাঝে দাঁড়িয়ে ছিলো। তার মানে কি আমার তখনের সেই অনুভূতিটা সত্যি ছিলো? তার মানে কি অবনী এখনো মরে নি? কিন্তু আমি তো নিজেই অবনীর লাশ দেখে এসেছি। এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে ভাবতে নিজের লোকেদের কাছে ফিরে আসলাম। তখনি রাজ আমার ভাবুক চেহারা দেখে বলে উঠলো,
–ভাই ঐ যে দেখা যাচ্ছে রুমটার দিকে আপনি রাগান্বিত ভঙ্গিমায় এগিয়ে গেলেন। তারপর রুমের ভিতরে ঢুকে কি করলেন কে জানে। কিন্তু রুম থেকে বেরিয়ে এলেন ভাবুক হয়ে। কাহিনী টা কি ভাই?
–রাজ কাহিনীটা কি আমি নিজেও জানি না। তবে একটা জিনিস আমি বেশ ভালো করে উপলব্ধি করতে পারছি।
–কি জিনিস ভাই?
–আমার শরীরে হুট করেই আগের চাইতে আরো দ্বিগুণ শক্তি অনুভব করছি আমি। আর সেটা এখানে আসার পরেই হয়েছে।
–ভাই আমার মনে হয় অবনী ভাবীর কোনো হাত আছে এর পিছনে।
–রাজের কথা শুনে তৎক্ষনাৎ আমার রক্ষাকবচের কথা মনে পড়লো। অবনীর সেই রক্ষাকবচ আমাকে অনেক কিছু থেকে বাঁচিয়েছে। কিন্তু বর্তমানে আমি যেই শক্তিটা অনুভব করছি, সেটার কোনো রহস্য খুঁজে পাচ্ছি না। ধুর ছাতার-মাথা এখন আর এসব নিয়ে একদম ভাববো না। এখন কাজ হচ্ছে বাকি সবাইকে খুঁজে বের করা। বিশেষ করে সেই ড্রয়িডের আসল ক্রিমিনাল টাকে। এই তোরা সবাই আমার সাথে চল। ড্রয়িডের আসল ক্রিমিনাল টাকে খুঁজে বের করতে হবে।
.
তারপর আকাশ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সামনের দিকে এগোতে থাকে। সাইন্সল্যাবটা বিশাল বড়। তারা সামনের দিকে কিছুটা পথ এগিয়ে যেতেই তাঁদের পথে আবার বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় অদৃশ্য একটা দেয়াল। আকাশের সঙ্গী সাথী সবাই সেই দেয়াল টাকে ভেদ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে তার দিকে আন্ধাধুন গুলি ছুঁড়তে আরম্ভ করে। কিন্তু তাতে সেই দেয়ালের কিছুই হয় না। বরং তাঁদের গুলির বুলেট গুলোই খামোখা ওয়েস্ট হয়। তাই আকাশ সবাইকে গুলি ছুঁড়তে না করে। সে সবাইকে গুলি ছুঁড়তে না করে সেই দেয়ালের একদম কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়ায়। পরবর্তীতে দেয়ালের কাছে দাঁড়িয়ে কিছুটা সময় চিন্তা-ভাবনা করে, যে কি করে এই দেয়াল ভেদ করে সামনে যাওয়া যায়। কিন্তু সে দেয়াল ভেদ করে সামনে যাওয়ার কোনো রাস্তাই খুঁজে পায় না। যার কারনে সে ব্যর্থতা শিকার করে সেই দেয়ালের মাঝে সজোড়ে একটা ঘুষি মারে। ঘুষি মারার পরক্ষণেই দেয়ালটা ভেঙ্গে কাঁচের টুকরোর মতন চুরমার হয়ে যায়। যেটা দেখে আকাশ এবং বাকি সবাই খুশি হয়ে যায়। রাজ তো খুশি ধরে রাখতে না পেরে আকাশকে বলে বসে,
–ভাই আপনি সত্যিই একটা জিনিস। আপনার সাথে সম্পর্ক না হলে কখনো আপনার সম্পর্কে জানতেই পারতাম না।
–রাজ এখন নিজেকে কন্ট্রোল করে সামনে চল। কারন সামনে আমাদের জন্য কোন মুসিবত অপেক্ষা করছে আল্লাহ ভালো জানে।
–হুম ভাই চলেন।
.
আকাশের কথায় সবাই সেই অদৃশ্য দেয়ালের গন্ডি পেরিয়ে সামনে যাওয়ার জন্য অগ্রসর হয়। তারা অদৃশ্য দেয়ালের গন্ডি পেরিয়ে দুই-এক কদম সামমে যেতেই দেখতে পায় তারা প্রথমের সেই কাঁচের ডাইমেনশনে চলে এসেছে। যেই ডাইমেনশন তারা অতিক্রম করে এই সাইন্সল্যাবে এসেছে। তবে এবার কাঁচের মধ্যে সূর্যের কোনো রিফলেকশন নেই। আর তাঁদের সামনে কয়েকশো মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। যাদের শরীরের ঘঠন আর অঙ্গভঙ্গি দেখে আকাশ এবং বাকি সবার বুঝতে বাকি নাই, যে এরা সবাই ড্রয়িডের সৈন্যসেনা । যেটা দেখে সবাই ভয় পেয়ে যায়। কিন্তু আকাশ সবাইকে শান্ত থাকতে বলে বড় দুইটা অস্ত্র হাতে নিয়ে তাঁদের দিকে একাই এগিয়ে যায়। আকাশের এগিয়ে যাওয়া দেখে ড্রয়িডের লোকজন সবাই একত্রে মিলে আকাশের দিকে এগিয়ে আসে। আর ঠিক তখনি আকাশের চারপাশে একটা অদ্ভুত শিলড হয়ে যায়। যেটা দেখে ড্রয়িডের লোকজন কেউ আর সামনে এগোবার মতন দুঃসাহস করে না। কিন্তু আকাশ সামনে এগোনো বন্ধ করে না। সে ড্রয়িডের লোকজনের একদম নিকটবর্তী হয়ে সবার দিকে গুলি ছুঁড়তে আরম্ভ করে। যার ফলে ড্রয়িডের লোকজন থেকে অনেক কয়জন মুহূর্তের মাঝেই নিজের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে। কিন্তু গুলি ছুঁড়ার এক পর্যায়ে আকাশের গুলির বুলেট খতম হয়ে হয়ে যায়। যার ফলে সে রাজকে বলে আরো দু’টো গুলি তাকে দিয়ে যেতে। রাজ আকাশের কথা মতন আরো দু’টো গুলি নিয়ে আকাশের হাতে দেয়। আকাশ গুলি দু’টো হাতে নিয়ে আবারো গুলি করতে যাবে, তখনি সেই কক্ষের চারপাশের কাঁচ থেকে ভয়ানক সূর্যের রিফলেকশন শুরু হয়। যার কারনে আকাশ এবং বাকি সবাই সাময়িকের জন্য ব্লাইন্ড হয়ে যায়। তারা যখন স্বাভাবিক হয়, তখন তারা দেখতে পায় সূর্যের রিফলেকশন বন্ধ হয়ে গেছে। আর তাঁদের সামনে নক্ষত্রের ন্যায় তীব্র রশ্মির সেই লোকটা দাঁড়িয়ে আছে। যার শরীরের চারপাশে গোলাকার বৃত্তের ন্যায় উজ্জ্বল রশ্মির কিছু একটা ঘুরপাক খাচ্ছে। সবাই ভেবাচেকা খেয়ে যায় সেই লোকটাকে দেখে! কিন্তু আকাশ সেই লোক এবং বৃত্তের ন্যায় গোলাকার উজ্জ্বল রশ্মিটাকে দেখে মুহূর্তের মাঝেই বুঝে ফেলে এই লোকটা কে। কিন্তু সে তাকে কিছুই বলে না। তখনি সেই লোকটা আকাশকে বলে উঠে,
–কি অনেক পালোয়ান হয়ে গেছিস মনে হয় তুই?
খামোখা আমার লোকদেরকে ধরে ধরে মারছিস। তার উপরে ড্রয়িডেও চলে এসেছিস ড্রয়িড এবং আমাকে ধ্বংস করবি বলে?
–সাহসের তো এখনো কিছুই দেখিস নি। আমি সাহস দেখানো শুরু করলে তুই স্বচ্ছল ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবি না। তুই যতো বড় শক্তিশালী হোস না কেন, তোর সেই শক্তি আমার শক্তির সামনে ফিকে পড়বে।
–বাহ তোর তো দেখছি বুকেরপাটা অনেক বড়। সাথে গলার জোর ও বেশি। আচ্ছা একটু ওয়েট কর। তোকে একটা মজার জিনিস দেখাচ্ছি আমি।
কাল চলে আয়….
.
লোকটা কাল বলে ডাক দিতেই একজন লোক
অদৃশ্য থেকে অবনীকে নিয়ে প্রকট হয়। লোকটা অবনীর চুলের মুঠি চেপে ধরে অবনীকে নিয়ে এসে সেই লোকটার হাতে শপে দেয়, যে কিনা তাকে ডেকে আনিয়েছে। মানে হলো ড্রয়িডের রাজা। যার নাম কিনা ডেভিল রিপার। সেও অবনীর চুলের মুঠি চেপে ধরে। “অপরদিকে আকাশ অবনীকে দেখে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। কিন্তু পরক্ষণেই তার মন খারাপ হয়ে যায় অবনীর শরীরের অবস্থা দেখে। কারন অবনীর শরীরের অনেক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। তার উপরে অবনীর নাক-মুখ থেকে চুইয়ে চুইয়ে রক্ত পড়ছে। যেটা দেখে আকাশের বুঝতে বাকি নাই, যে অবনীর উপরে তারা টর্চার করেছে। তাই আকাশ ডেভিল রিপারের দিকে তেড়ে যায় তাকে মারার জন্য। কিন্তু ডেভিল রিপার কোমর থেকে একটা ছুরি বের করে অবনীর গলায় চেপে ধরে আকাশকে বলে,
–আর এক কদম সামনে আগালে তোর প্রিয়তমা চিরতরে শেষ হয়ে যাবে। তাই তুই যেখানে আছিস সেখানেই দাঁড়িয়ে পর।
.
আকাশ ডেভিল রিপারের কথায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে পড়ে। কারন সে অবনীর কোনো ক্ষতি হতে দিবে না। তখনি অবনী হাসতে আরম্ভ করে। যেটা দেখে ডেভিল রিপার তার অন্য একটা হাত দিয়ে অবনীর পিঠের মধ্যে ধ্রাম করে একটা ঘুষি মারে। যার ফলে ব্যথার চোটে অবনীর চোখ দিয়ে পানি পড়তে আরম্ভ করে। কিন্তু তার পরেও সে হাসি থামায় না। সে হাসতে হাসতে ডেভিল রিপারকে বলে উঠে,
–তোর জম তোর সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি আজরাইলের সাথে ডিল করে তোদের প্রাণ ভোমরা তার হাতে তুলে দিবে।
.
অবনীর মুখে এমন কথাবার্তা শুনে ডেভিল রিপার অবনীর গলায় চেপে ধরা ছুরিটা হালকা ভাবে চাপ দেয়। যার ফলে অবনীর গলার উপরের কিছুটা চামড়া কেটে গিয়ে রক্ত বের হতে আরম্ভ করে। পাশ থেকে দাঁড়িয়ে আকাশ এই দৃশ্য দেখতে পেয়ে উন্মাদ হয়ে যায়। তাই সে আবারো এগোতে থাকে ডেভিল রিপারের দিকে। কিন্তু ড্রয়িডের রাজা কথার মাধ্যমে আবারো আকাশকে থামিয়ে দেয়।
–এই পালোয়ান সামনে এগোবার চেষ্টা করিস না। না হয় আমার হাতের ছুরিটা তোর প্রিয়তমার গলায় পুরোপুরি ঢুকিয়ে দিব।
.
ডেভিল রিপারের মুখে এমন কথাবার্তা শুনে আকাশ তাকে বলে,
–এই তুই অবনীকে ছেড়ে দে। তোর যদি কোনো ধরনের প্রতিশোধ নিতে হয় তাহলে তুই আমার উপরে নে। কিন্তু তুই ওকে ছেড়ে দে।
.
আকাশের মুখে এমন কথাবার্তা শুনে ডেভিল রিপার অট্টহাসি দিয়ে হাসতে হাসতে আকাশকে বলে,
–জানিস এখন আমার কি খুশি লাগলে? তবে একটা সময় আমি অনেক ভয়ে ছিলাম। কারন এই বেকুব মেয়েটার উপরে আমি সর্বপ্রথম এক্সপেরিমেন্ট করেছিলাম। তখন আমি এক্সপেরিমেন্ট সম্পর্কে ভালো করে জানতাম না। যার দরুন এই মেয়ের শরীরে অনেক কয় ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করি। যার ফলে এই মেয়ে ঐশ্বর্যের শক্তির অধিকারী হয়ে যায়। যার শক্তির কোনো শেষ নেই। আর আমি সেই এক্সপেরিমেন্টের ফর্মুলাটাও হারিয়ে ফেলি। যার কারনে তার মতন দ্বিতীয় আর কাউকে বানাতে পারিনি। কিন্তু এই মেয়ে আমার সাথে বেঈমানী করেছে। সে আমার সাথে বেঈমানী করে তোর সঙ্গ দিয়েছে। এবং সাথে তার শরীরের রক্ষাকবচ টা তোর শরীররে পরিধান করিয়ে দিয়েছে। যার ফলে তার ৮০ শতাংশ শক্তির অধিকারী তুই হয়ে গেছিস। এবং এই রক্ষাকবচের কারনেই আমার বাকি লোকজন তোর উপরে আক্রমণ করতে পারছে না। আমি সেই কারনেই এই মেয়েকে সেদিন উঠিয়ে এনেছি। তবে তাকে উঠিয়ে আনতে পারতাম না। আমি সেদিন এই মেয়েকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তার ক্লোনকে নিজের কন্ট্রোলে করার চেষ্টা করি। এতে করে তার ক্লোন কিছুটা আমার কন্ট্রোলে চলেও আসে। কিন্তু এই কাবিল মেয়েটা তার ক্লোনকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য টেলিপোর্ট হয়ে ক্লোনকে সাথে করে নিয়ে অন্য কোথাও যায়। আর আমি তখনি এই মেয়েকে লোকজন পাঠিয়ে উঠিয়ে আনি। আর তার জায়গায় তারই একটা ক্লোনকে নিজের কন্ট্রোলে করে তোর কাছে পাঠিয়ে দেই। যেটাকে কিনা তোরা সুরঙ্গের ভিতরে মরে পড়ে থাকতে দেখেছিস। আর সেই ক্লোন টাকেও আমি মেরোছি। তাই এখন আমার রাস্তা ক্লিয়ার৷ তবে তোর মাঝে তার শক্তি রেয়েছে। তুই চাইলে আমাদের সবাইকে শেষ করতে পারিস। কিন্তু আমি জানি তুই সেটা করবি না। কারন তোর প্রিয়তমার গলায় আমি ছুরি ধরে রেখেছি।
–আমিও জানি তুই আমার কিছু করতে পারবি না। তাই নিজের ভালো চাস তো অবনীকে ছেড়ে দে। আমি কথা দিলাম আমি তোর কোনো ক্ষতি করবো না।
–না…না আমি এই ভুল করছি না। তুই তোর অবনীকে জীবিত চাস তো নিজেকে গুলি করে মেরে ফেল। তাহলেই তোর প্রিয়তমা মুক্তি পাবে।
.
আকাশ ডেভিল রিপারের কথা শুনে বুঝতে বাকি নাই, যে সে তাকে শেষ করে অবনীকেও মেরে ফেলবে। তাই সে হাত দিয়ে ডেভিল রিপারের দিকে ইশারা করে। এতে করে ডেভিল রিপার হাওয়ার ভাসমান হয়ে যায়। কিন্তু ড্রয়িডের রাজাও ক্রিমিনাল কম না। সে হাওয়ার ভাসমান হওয়ার আগে অবনীর গলা শক্ত করে চেপে ধরে। যার ফলে তার সাথে সাথে অবনীও হাওয়ায় ভাসতে আরম্ভ করে। যেটা দেখে আকাশ ডেভিল রিপারের দিকে অন্য হাত দিয়ে গুলি তাক করে বলে,
–তুই নিজের জীবন বাঁচাতে চাস তো অবনীকে ছেড়ে দে। না হয়তো তুই মারা পড়বি আমার হাতে।
–আমি অবনীকে ছাড়ছি না। কারন আমি নিজেকে ছাড়া কাউকেই বিশ্বাস করি না। সেখানে তুই তো আমার শত্রু পক্ষ। তোকে বিশ্বাস করার তো কোনো প্রশ্নই আসে না।
.
এমনিতেই আকাশের রাগ চোটে আছে অবনীর শরীরের কন্ডিশন দেখে। তার উপরে ডেভিল রিপারের কথা শুনে তার রাগের মাত্রা নিজের সীমা অতিক্রম করে ফেলে। যার কারনে সে কোনো চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই ডেলির রিপারের উপরে গুলি করে বসে। “অন্যদিকে ডেভিল রিপার আকাশের গুলি ছুঁড়া দেখে সে অবনীর গলায় ছুরি চলািয়ে দেয়। যার পর দু’জনেই মাটির মধ্যে ছিটকে পড়ে। ডেভিল রিপার আকাশের গুলি খেয়ে জায়গার মধ্যে নিজের প্রাণ হারিয়েছে। ডেভিল রিপার মরার পরক্ষণেই সেই বৃত্তাকার রশ্মিটা এসে আকাশের চারপাশে ঘুরতে আরম্ভ করে। আর অন্যদিকে অবনীও মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। কারন তার গলার রগ ডেভিল রিপার কেটে দিয়েছে। অবনীর গলার থেকে চিরচির করে রক্ত পড়ছে। দূর থেকে দাঁড়িয়ে আকাশ অবনীর এই রূপ অবস্থা দেখে দৌড়ে অবনীর কাছে যায়। কিন্তু তার কাছে যেয়ে পৌঁছানোর আগেই অবনীর দেহ থেকে প্রাণ ভোমরা আকাশে উড়ে যায়। যেটা দেখে আকাশ অবনীর মাথাকে নিজের কোলের মধ্যে তুলে নিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে আরম্ভ করে। আকাশের সাথে সাথে রাজ-মুজাহিদ এবং সবাই চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে নীরবে কান্না করতে আরম্ভ করেছে। আকাশ পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে অবনীর মৃতদেহ দেখে। তার যেনো বিশ্বাস এই হচ্ছে না অবনী মরে গেছে! সে পাগলের মতন করতে আরম্ভ করেছে। কিছুক্ষণ অবনীর কপালে চুমু খাচ্ছে। কিছুক্ষণ অবনীকে শরীর নাড়িয়ে তাকে ডাকছে। কিন্তু অবনী কোনো সাড়া দিচ্ছে না। আর দিবেই বা কি করে, মরা লাশ কি কখনো মানুষের ডাকে সাড়া দেয় নাকি। অবনীর কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে আকাশ আরো মাতলামি করতে আরম্ভ করে, তখনি অদৃশ্য থেকে অবনী বলে উঠে,
–প্রিয় আপনাকে এখন ভেঙ্গে পড়লে চলবে না। কারন আপনি এখন ড্রয়িডের রাজা। আপনার লোকজনের সাথে সাথে ড্রয়িডের সমস্ত সৈন্য এখন আপনার প্রজা। তাই আপনি নিজেকে শক্ত করে নিন। আর আমার জন্য একদম কাঁদবেন না প্রিয়। কারন আমার সমাপ্তি ঘটে গেছে। আমি চাইলেও আর ফিরে আসতে পারবো না। তাই আমার জন্য চোখের পানি না ফেলে নিজেকে শক্ত করে নিন। আমি সর্বদা আপনার সাথে আছি। চললাম প্রিয়….
.
উপরোক্ত কথা গুলো বলার পরেই অদৃশ্য থেকে অবনী কথা বলা বন্ধ করে দেয়। “অন্যদিকে আকাশ অবনীর কথা শুনে নিজেকে সামলে নেওয়ার চেষ্টা করলেও সে নিজেকে সামলে নিতে পারে না। বরং সে আরো ভেঙ্গে পড়ে। আর সে এতোটাই ভেঙ্গে পড়ে, যার ফলে সেও মরা লাশের মতন মাটিতে শুয়ে পড়ে। যেটা দেখে আকাশের লোকজন সবাই মিলে দৌড়ে এসে আকাশকে ডাকাডাকি করতে থাকে। কিন্তু তারা আকাশকে হাজার ডাকাডাকি করার পরেও আকাশ কোনো রেসপন্স করে না। হয়তো সেও পাড়ি জমিয়েছে অবনীর সাথে সাথে পরপারে…
সমাপ্তি।
কিছু ভালোবাসা জীবদ্দশায় কখনো পূর্ণতা পায় না। আর এই গল্পে ঠিক তেমনি আকাশ আর অবনীর ভালোবাসা জীবদ্দশায় পূর্ণতা পায়নি।
তবে জানিনা পরবর্তীতে কি হয়। আগামীতে সম্ভব হলে এই গল্পের সীজন টু আনবো। না হয় একটা সারপ্রাইজ পোস্ট করবো সবার জন্য।
গল্পের সমস্ত ভুল ত্রুটি গুলোকে ক্ষমার নজরে দেখবেন। আর সবাই গল্পটা সম্পর্কে বড় করে নিজের মতামত জানিয়ে যাবেন। এছাড়া ধন্যবাদ জানাচ্ছি সকলকেই, যারা যারা গল্পের শুরু থেকে শেষ অব্দি গল্পের সাথেই ছিলেন। ইনশাআল্লাহ আগামী গল্পে আবারো সকলের সঙ্গতা কামনা করছি। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। খোদা হাফেজ। দেখা হচ্ছে নতুন কোনো গল্পের সাথে।