#ভুলবশত_প্রেম
#লেখনীতে:সারা মেহেক
৪১
ইমাদ ভাইয়া মাথায় হাত দিয়ে ধপ করে বিছানায় বসে পড়লেন। উনার দৃষ্টি হতবিহ্বল। মুখশ্রীতে তীব্র আতঙ্ক। ইমাদ ভাইয়া বিমর্ষ গলায় বললেন,
” আমার সব শেষ রে আদ্রিশ। সব শেষ। ”
আদ্রিশ ম্লান দৃষ্টিতে ইমাদ ভাইয়ার দিকে চাইলেন। স্বান্ত্বনা দেওয়ার প্রয়াস করে বললেন,
” চিন্তা করিস না ইমাদ। দেখিস সব ঠিক হয়ে যাবে। নাফিসা ভাবীর কিছু হবে না। ”
আদ্রিশের চাহনি ও কণ্ঠস্বর স্পষ্ট জানান দিচ্ছে উনি মন থেকে এসব বলতে পারেননি। ইমাদ ভাইয়াকে মিথ্যে স্বান্ত্বনা দিয়েছেন। কেননা কোথাও না কোথাও উনিও আপুকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। এদিকে আমি ভেতরে ভেতরে প্রচণ্ড দুশ্চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়ছি। বারংবার আপুর চেহারা আমার দৃষ্টির সম্মুখে ভাসমান হলো। আমি কিছুতেই রোহান ভাইয়ার কণ্ঠে বলা শেষ কথাগুলো ভুলতে পারছি না। উনি যদি আপুর সাথে কিছু করে বসেন তখন কি হবে? সবচেয়ে বড় কথা আপু এখন কি অবস্থায় আছে তার কিছুই জানি না আমরা। আপুকে কিভাবে রেখেছে, কি করছে আপুর সাথে কিছুই জানা নেই আমাদের। শুধু এটুকু জানি, রোহান ভাইয়া মানুষটা প্রচণ্ড খারাপ, প্রচণ্ড স্বার্থপর, প্রচণ্ড ভয়ংকর। উনি যদি আপুর সাথে কিছু করে বসে তখন আমাদের কিছুই করার থাকবে না৷ কিছুই না। আচ্ছা? আপুর ভিডিও পাওয়ার ব্যাপারটা আব্বু আম্মুর কান অব্দি পৌঁছালে কি হবে? আব্বু আম্মু সইতে পারবে তো তাদের মেয়ের এ অবস্থা? সবচেয়ে বড় কথা, আপুর শ্বশুর শাশুড়ী এ নিয়ে জানলে কি হবে! আপুকে তারা মেনে নিবে তো? এসব আমার ভাবনায় আসতেই আমার সম্পূর্ণ শরীর শিউরে উঠলো। আতঙ্কে দু হাত ঠাণ্ডা হওয়ার উপক্রম হয়ে এলো।
আমি ইমাদ ভাইয়া ও আদ্রিশের দিকে অসহায় চাহনিতে চাইলাম। নিস্তরঙ্গ গলায় ইমাদ ভাইয়াকে বললাম,
” ইমাদ ভাইয়া? আপুর এ ভিডিওর ব্যাপারটা শুধু আমাদের তিনজনের মাঝে রাখা যায় না?”
ইমাদ ভাইয়া চোখ তুলে চাইলেন আমার দিকে। মুহূর্তেই উনার দু চোখ দেখে চমকে উঠলাম আমি। উনার দু চোখ প্রায় রক্তলালের ন্যায় রঙ ধারণ করেছে। উনি স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে শান্ত কণ্ঠে বললেন,
” এ নিয়ে বাইরে টু শব্দটুকুও হবে না। ”
ইমাদ ভাইয়ার জবাবে আমি ক্ষীণ স্বরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লাম৷ যদিও জানি, ইমাদ ভাইয়া কখনোই এ ব্যাপারে অন্য কারোর সাথে আলোচনা করতেন না।
ক্ষণিক সময় বাদে আদ্রিশ উঠে দাঁড়ালেন। ব্যালকনির কাছে দাঁড়িয়ে উদ্বিগ্ন কণ্ঠে বললেন,
” এখন নাফিসা ভাবীকে কিভাবে বাঁচাবো তাই ভাবতে হবে। ইমাদ? তোর মাথায় কিছু আসছে?”
ইমাদ ভাইয়া তৎক্ষনাৎ কোনো জবাব দিলেন না। বরং উঠে দাঁড়িয়ে আদ্রিশের নিকটে গেলেন। উনার সম্মুখে দাঁড়িয়ে শান্ত কণ্ঠে বললেন,
” হ্যাঁ এসেছে। ”
আদ্রিশ ও আমার চক্ষুজোড়া মুহূর্তেই আশার আলোয় সপ্রতিভ হলো। আমি তৎক্ষনাৎ উৎসুক কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলাম,
” কি? জলদি বলুন ইমাদ ভাইয়া। ”
ইমাদ ভাইয়া স্থির চাহনিতে আদ্রিশের দিকে চেয়ে বললেন,
” ঐ ফর্মূলা। ঐটাই নাফিসাকে ছাড়ানোর একমাত্র উপায়। ”
উনার এরূপ জবাবে অবিলম্বে আদ্রিশ তেঁতে উঠলেন। বললেন,
” পাগল হয়ে গিয়েছিস না কি? তোকে ওসব সম্পর্কে সবটা বলার পরও তুই এমন সল্যুউশন দিস কি করে?”
ইমাদ ভাইয়াও আদ্রিশের কথার পিঠে তেঁতে উঠে বললেন,
” তো আমি কি করবো আদ্রিশ? আর কোনো উপায় আছে তোর কাছে? ”
এই বলে উনি জবাবের অপেক্ষায় আদ্রিশের দিকে চাইলেন। স্বভাবতই আদ্রিশ জবাব দিতে ব্যর্থ হলেন। ইমাদ ভাইয়া পূর্ণ উদ্যমে রাগত স্বরে বললেন,
” জানতাম তোর কাছে কোনো উপায় থাকবে না। কারণ এসবের জন্য তুই দায়ী। তোর কারণেই নাফিসার আজ এ অবস্থা। ”
আদ্রিশ হতবাক হয়ে বললেন,
” আমি এসবে দায়ী হলাম কি করে? শুধু শুধু আমাকে দায়ী করিস না ইমাদ।”
” শুধু শুধু না। অবশ্যই কারণেই তুই দায়ী। তোর ঐ ফর্মূলার কারণেই আজ এতো কিছু। ”
” তুই এভাবে আমাকে দোষ দিতে পারিস না ইমাদ। ”
” অবশ্যই দোষ দিবো। তোর কারণে নাফিসার আজ এ অবস্থা। তুই ফর্মূলাটা ওকে দিয়ে দিলেই পারিস। তাহলেই ও নাফিসাকে ছেড়ে দিবে। ”
” তুই পাগল হয়ে গিয়েছিস না কি ইমাদ? রোহানকে এসব দিলে ও কি করতে পারে তা তুই আইডিয়াও করতে পারবি না৷ আমি মরে গেলেও ঐ ফর্মূলা দিবো না। ”
আচমকা ইমাদ ভাইয়া আদ্রিশের শার্টের কলার চেপে ধরে রাগত স্বরে বললেন,
” তোকে দিতেই হবে। তোর জন্যই আজ নাফিসা ওর কবলে। তুই ঐ ফর্মূলা দিবি মানে দিবি। আমি আর কিছু জানি না। ”
এ পর্যায়ে আদ্রিশও প্রচণ্ড ক্রোধে ইমাদ ভাইয়ার টিশার্টের কলার চেপে ধরে বললেন,
” আমি কখনোই রোহানকে ঐ ফর্মূলা দিবো না। এটা জেনে রাখ তুই। ”
ইমাদ ভাইয়া ও আদ্রিশের এহেন কাণ্ড দেখে আমি হতচকিত হয়ে গেলাম। তৎক্ষণাৎ উনাদের কাছে গিয়ে একে অপরের থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু উনাদের শক্তির কাছে ব্যর্থ হলাম। আদ্রিশ ও ইমাদ ভাইয়া ঠাণ্ডা চাহনিতে একে অপরের দিকে চেয়ে আছেন। আমি পুনরায় উনাদের ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে করতে বললাম,
” আপনাদের দুজনের মাথা ঠিক আছে তো? শুধু শুধু অকারণে নিজেদের মধ্যে লড়ছেন কেনো? ছাড়ুন প্লিজ। আপনাদের এ চিৎকার চেঁচামেচি নিচ অব্দি গেলে অনেক সমস্যা হয়ে যাবে। ”
সাথে সাথে আদ্রিশ ও ইমাদ ভাইয়া একে অপরের কলার ছেড়ে দাঁড়ালেন। ইমাদ ভাইয়া ক্লান্তশ্বাস ছেড়ে চেয়ার টেনে বিছানার কাছে বসলেন। আর আদ্রিশ আমার সামনে দাঁড়িয়ে রইলেন। ইমাদ ভাইয়ার দিকে নিমিষের জন্য চেয়ে আমার দিকে চাইলেন। নিরাধার কণ্ঠে আমায় জিজ্ঞেস করলেন,
” তোমারও এমনটা মনে হয় মিশমিশ যে এসবের জন্য আমি দায়ী?”
আমি আদ্রিশের গালে এক হাত রেখে কোমল কণ্ঠে বললাম,
” উঁহু। আপনি কোনোদিক দিয়েই এসবের জন্য দায়ী নন। ইমাদ ভাইয়া রেগে আছেন এ মুহূর্তে। আপনার উচিত উনাকে সামলানো। কিন্তু আপনিও যদি রেগে যান তাহলে পরিস্থিতি সামলানোর খুব কঠিন হয়ে যাবে। বুঝতে পারছেন আমার কথা?”
আদ্রিশ মন্থর গতিতে মাথা দুলালেন। ম্লান হেসে আমার পানে চাইতেই আমি উনাকে ছেড়ে দিয়ে কিঞ্চিৎ দূরে গিয়ে দাঁড়ালাম। উনি গিয়ে দাঁড়ালেন ইমাদ ভাইয়ার নিকটে। ইমাদ ভাইয়ার সম্মুখে বিছানায় বসে বললেন,
” ঠাণ্ডা মাথায় সবটা ভাবতে হবে ইমাদ। এভাবে রাগারাগি করলে কখনোই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব না। আমরা যেহেতু পুলিশের সাহায্য নিতে পারছি না সেক্ষেত্রে আমাদের মধ্যেই কিছু না কিছু প্ল্যানিং করতে হবে। ”
ইমাদ ভাইয়া হতাশাব্যাঞ্জক কণ্ঠে বললেন,
” কিন্তু কি করবো আমরা? আমার মাথা পুরোপুরি ব্ল্যাঙ্ক হয়ে আসছে। কিচ্ছুই মাথায় আসছে না। ”
আদ্রিশ ক্ষণিক সময় নিয়ে কিছু ভাবলেন। অতঃপর বিছানার উপর হতে ফোন নিয়ে ব্যস্ত ভঙ্গিতে কন্ট্যাক্ট লিস্ট হতে কারোর নাম্বার নিয়ে কল দিলেন। আমি এ দেখে কৌতূহলী হয়ে উনার পাশে গিয়ে বসলাম।
খানিক সময় নিয়ে ওপাশের ব্যক্তিটি কল রিসিভ করলেন। তৎক্ষণাৎ আদ্রিশ স্বাভাবিক কণ্ঠে সাধারণ হালচাল জিজ্ঞেস করলেন। অতঃপর বললেন,
” দিদার? আমাকে একটা হেল্প করতে পারবি?”
“……”
” আমি একটা নাম্বারের লোকেশন জানতে চাইছিলাম। আমাকে লোকেশনটা ট্রেস করে জানাতে পারবি? খুব আর্জেন্টলি দরকার।”
“…..”
” প্লিজ দিদার। হেল্পটা খুব দরকার। আর্জেন্ট না হলে বলতাম না। ”
“…..”
” আচ্ছা। একটু দ্রুত দেখে আমাকে জানা। রাখছি। ”
এই বলে আদ্রিশ ফোন রেখে রোহান ভাইয়ার নাম্বার ঐ ব্যক্তিটিকে দিয়ে বললেন,
” একটু সময় লাগবে। ওয়েট করি।”
দীর্ঘ সময়ের জন্য আমরা তিনজনে চুপচাপ বসে রইলাম। আচমকা আদ্রিশের ফোন বেজে উঠতেই আমি চমকে উঠলাম। আদ্রিশ ও ইমাদ ভাইয়াও কিঞ্চিৎ চমকে উঠলেন।
আদ্রিশ কল রিসিভ করেই লাউডস্পিকারে দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
” হ্যাঁ দিদার, বল। ”
” তুই আমাকে যে নাম্বার দিলি তার লোকেশন দুইবার দু জায়গায় এসেছে। প্রথমবার যখন কল করেছিলো তখন ওর লোকেশন ছিলো ‘গ্রিন ভিউ’ রেস্টুরেন্টে। পরেরবার যখন কল করলো তখন লোকেশন ছিলো হাইওয়েতে। এখন ওর লোকেশন ভূইয়া রোডের একটা বাড়িতে।”
” আমাকে কল করার আগে ওর লোকেশন কোথায় ছিলো? ”
” সরি দোস্ত। ওটা বের করা যায়নি। কারণ গত দুদিন পর আজই এ নাম্বারটা ওপেন করা হয়। ”
লোকটির তথ্যগুলো শোনার পর আমরা একে অপরের দিকে নিমিষের জন্য তাকালাম। আদ্রিশ লোকটিকে ধন্যবাদ বলে কল কেটে দিলেন। অতঃপর কিঞ্চিৎ উদ্বিগ্ন কণ্ঠে বললেন,
” দ্যাট মিনস ও এখন বাসায়।
রোহান কম চালাক নয়। ও হয়তো আইডিয়া করেছে আমরা ওর লোকেশন ট্রেস করবো। এজন্য নাফিসা ভাবীকে যে জায়গায় কিডন্যাপ করে রেখেছে সেখান থেকে আমাকে কল করেনি। হয়তো ঐ জায়গা থেকে বেরিয়ে আসার পর ফোন অন করে আমাদের কল করে। ”
আমি ও ইমাদ ভাইয়া আদ্রিশের সাথে সায় দিলাম। ইমাদ ভাইয়া জিজ্ঞেস করলেন,
” তাহলে ও কোথায় নাফিসাকে লুকিয়ে রাখতে পারে?”
আদ্রিশ বললেন,
” অবশ্যই ওর চেনাপরিচিত কোনো জায়গায়। কিন্তু সমস্যা হলো, ওর সেই চেনাপরিচিত জায়গা আমরা কিভাবে খুঁজে পাবো?”
” আচ্ছা? এমন পরিস্থিতিতে রোহান নাফিসাকে কোথায় লুকিয়ে রাখতে পারে বলে তোর মনে হয়?”
” যতদূর মনে হয় ও এমন কোনো জায়গায় নাফিসা ভাবীকে লুকিয়ে রেখেছে যেখানে পৌঁছানো হয়তো সহজ। কিন্তু আমাদের চিন্তাভাবনা সেখানে পৌঁছাবে না। ”
এই বলে আদ্রিশ ভাবুক চাহনিতে ইমাদ ভাইয়ার দিকে চাইলেন। ইমাদ ভাইয়া ক্ষণিক বাদে চট করে বললেন,
” ওদের বাড়িতে? কারণ কেউ নিশ্চয়ই ভাববে না যে নরমালি কিডন্যাপ করলে কেউ তার বাড়িতে লুকিয়ে রাখবে।”
আমি তৎক্ষনাৎ বিরোধিতা করে বললাম,
” নাহ। রোহান ভাইয়া কখনোই উনার বাড়িতে আপুকে লুকিয়ে রাখবেন না। কারণ উনাদের বাড়ির প্রায় সব জায়গায় উনার বোন ও মা প্রায়ই যায়। এমনকি উনাদের বাড়ির পিছনের সাইডে গোডাউন মতো যে জায়গা আছে সেখানেও রিতু মাঝে মাঝেই যাওয়া আসা করে। আগে আমি যখন রিতুদের বাসায় যেতাম তখন রিতু প্রায়ই আমাকে সেখানে নিয়ে যেতো। এজন্য, আমার মনে হয় না রোহান ভাইয়া বাড়িতে আপুকে লুকিয়ে রেখেছে।”
আদ্রিশ ও ইমাদ ভাইয়া পুনরায় ভাবতে লাগলেন। খানিক বাদে আদ্রিশ অনুসন্ধানী কণ্ঠে বললেন,
” তাহলে নাফিসা ভাবীকে কোথায় লুকিয়ে রাখতে পারে ও?”
আদ্রিশের প্রশ্নের জবাবে আমি ক্ষণিকের জন্য এ নিয়ে ভাবলাম। ভাবনার মাঝে একটা জায়গার ব্যাপারে মাথায় আসতেই আমি চট করে বললাম,
” আমার মনে হয় আমি জানি, রোহান ভাইয়া আপুকে কোথায় রেখেছে।”
আদ্রিশ ও ইমাদ ভাইয়া প্রজ্জ্বলিত চাহনিতে আমার দিকে চাইলেন। ইমাদ ভাইয়া ব্যাকুল হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
” কোথায়? কোথায় রেখেছে ওকে?”
” আমার মনে হয়……..”
®সারা মেহেক
#চলবে
#ভুলবশত_প্রেম
#লেখনীতে:সারা মেহেক
৪২
” আমার মনে রোহান ভাইয়া আপুকে উনাদের ফার্ম হাউজে রেখেছেন।”
আদ্রিশ ঈষৎ বিস্মিত কণ্ঠে বললেন,
” ওদের ফার্ম হাউজও আছে!”
” হ্যাঁ। মেইন শহরের বাইরে। ”
” কোথায়? ঠিকানা বলো। ”
এবার আমি কিছুটা সংকুচিত হলাম। মিনমিনে কণ্ঠে বললাম,
” আমার না এ ব্যাপারে কিছুই মনে নেই। শুধু জানি, রোহান ভাইয়াদের শহরের বাইরে ফার্ম হাউজ আছে। কিন্তু কোথায়, কত দূরে তা জানি না। ”
আদ্রিশ ও ইমাদ ভাইয়া আমার কথায় হতাশার নিঃশ্বাস ছাড়লেন। ইমাদ ভাইয়া নিরাশ কণ্ঠে বললেন,
” শেষ আশাটুকুও আর রইলো না। এখন নাফিসাকে….”
ইমাদ ভাইয়কে সম্পূর্ণ কথা শেষ করতে না দিয়েই বললাম,
” আশা হারাচ্ছেন কেনো ইমাদ ভাইয়া। আমি রিতুকে জিজ্ঞেস করবো এ ব্যাপারে। ও নিশ্চয়ই বলে দিবে। ”
আদ্রিশ আমার দিকে সন্দিহান চাহনিতে চাইলেন। উনার এরূপ চাহনি দেখেই আমি উনার মনে চলমান প্রশ্নটি চট করে ধরে ফেললাম। ফলে ঈষৎ হাসার চেষ্টা করে বললাম,
” রিতু ওমন না। ও রোহান ভাইয়ার থেকে একদম আলাদা। বরং ও তো রোহান ভাইয়াকে ভয় পায়। আর এ ব্যাপারে ওর কাছে নিশ্চয়ই সরাসরি জিজ্ঞেস করবো না আমি। কথা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করতে হবে। আর এ কাজটা করতে হবে সরাসরি, আগামীকাল সকালে। কারণ এখন প্রায় রাত হয়ে গিয়েছে। আর এ সময়ে রিতুর কাছে ফার্ম হাউজের ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করলে ওর মনে অনেক প্রশ্ন ঘুরতে পারে। ”
আদ্রিশ কিছুক্ষণ আমার দিকে চেয়ে কিছু ভাবলেন। অতঃপর চট করে দাঁড়িয়ে প্রলম্বিত নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন,
” চল ইমাদ। কিছু খেয়েনে৷ দুপুরে কিছু খাসনি৷ এখন একটু খেয়েদেয়ে রেস্ট নে। আগামীকাল সকাল থেকে আমাদের কাজ শুরু করবো। ”
ইমাদ ভাইয়া নিস্তরঙ্গ কণ্ঠে বললেন,
” ক্ষিধে নেই রে। ওদিকে নাফিসা ঐ হা** কব্জায় আর এখানে আমি খেয়েদেয়ে ঘুমাবো! অসম্ভব কথাবার্তা বলিস কেনো। আজ রাতটা আমার নির্ঘুম কাটবে। তোরা খেয়েদেয়ে রেস্ট নে। ”
এই বলে ইমাদ ভাইয়া উঠে দাঁড়ালেন। দূর্বল পদগতিতে হেঁটে আমাদের রুম হতে বেরিয়ে গেলেন।
উনি বেরিয়ে যেতেই আমি আদ্রিশের দিকে চাইলাম। আদ্রিশ ক্লান্ত ভঙ্গিতে আমার পাশে বসে পড়লেন। ঈষৎ নিরাশযুক্ত কণ্ঠে বললেন,
” নাফিসা ভাবীকে পাবো তো আমরা? যদি নাফিসা ভাবীর কোনো ক্ষতি হয় তাহলে আমি কোনোদিনও নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না মিশমিশ। এখন আমারও মনে হচ্ছে এ ঘটনার সম্পূর্ণ দায়ভার আমার একারই। ”
উনার কথার প্রতিক্রিয়া স্বরূপ আমি তৎক্ষনাৎ উনার হাত দুটো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বললাম,
” আপুর কিচ্ছু হবে না। ভরসা রাখুন আল্লাহর উপর৷ আর এসবের জন্য নিজেকে দায়ী করা বন্ধ করুন আদ্রিশ। আপনার জন্য আপুকে কিডন্যাপ করেনি। আপনার কাছ থেকে ড্রাগ ফর্মুলাটা পাওয়ার জন্য আপুকে শুধু একটা মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছে। ব্যস। আর আপনি এভাবে ভেঙে পড়ছেন কেনো? আপনি ভেঙে পড়লে আমাকে কে সামলাবে শুনি?”
আদ্রিশ দূর্বলভাবে হেসে বললেন,
” আমার সামলানোর কোনো প্রয়োজন নেই মিশমিশ৷ উল্টো তুমিই আমাকে সামলাচ্ছো। জানতাম না, তুমি এতোটা শক্ত থাকতে পারবে এ পরিস্থিতিতে। তোমার জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়তো এখন অনেক কান্নাকাটি করতো। কিন্তু তুমি স্ট্রং দেখাচ্ছো নিজেকে। ”
আদ্রিশের কথায় আমি ক্ষীণ শব্দে হেসে উঠে বললাম,
” আমি কিন্তু এতোটা স্ট্রং নই যতোটা এখন দেখাচ্ছি নিজেকে। আজ আমার কি হয়েছে জানি না৷ কিন্তু আমি শক্ত থাকতে চেষ্টা করছি এবং পারছিও। আমি জানি, আমি শক্ত থাকতে না পারলে আম্মুকে সামলানো কষ্ট হয়ে যাবে। কারণ আভা যথেষ্ট স্ট্রং থাকতে পারবে। কিন্তু আমি চিন্তা করছি আম্মুকে নিয়ে। অবশ্য আম্মুকে অনেকক্ষণ দেখিনি৷ ঘুমিয়ে পড়েছে না কি আল্লাহ জানে। দেখে আসি গিয়ে।”
এই বলে আমি উঠে পড়লাম। দরজার দিকে পা বাড়াতেই আদ্রিশ পিছন থেকে আমার হাত ধরলেন। আমি খানিক চমকে উঠলাম। জিজ্ঞাসু চাহনিতে পিছনে ফিরে তাকাতেই উনি পেলব গলায় বললেন,
” একটু জড়িয়ে ধরি তোমায়?”
অকস্মাৎ উনার এ অনুরোধে খানিক ভড়কে গেলাম আমি। উনার চোখে এ মুহূর্তে বিরাজ করছে প্রবল ক্লান্তির ছাপ। চেহারা যেনো ক্লান্তিতে নুয়ে পড়েছে। উনার সুন্দর চেহারাখানাও এ মুহূর্তে
মলিন দেখাচ্ছে। আদ্রিশের এহেন পরিস্থিতি দেখে উনার এ অনুরোধ নাকচ করতে পারলাম না আমি। ধীর লয়ে মাথা দুলিয়ে সায় দিতেই উনি উঠে দাঁড়ালেন। আমার হাত ধরে কাছে টেনে নিয়ে দৃঢ়ভাবে জড়িয়ে ধরলেন আমায়। যেনো উনার সকল ক্লান্তি এখানে গড়িয়ে দিচ্ছেন উনি৷
ক্ষণিক বাদে আদ্রিশ হতাশ গলায় বললেন,
” এখনও মনে খুঁট খুঁট করছে। ভালো লাগছে না কিছু। সবকিছু কেমন ওলোটপালোট হয়ে গেলো। আমি সবসময় স্বাভাবিক থাকতে চাই মিশমিশ। কিন্তু পরিস্থিতি কি করে যেনো আমার সামনে কিছু বিপদ, কিছু অশান্তি এনে দেয়। এরপর আমি আর সুস্থ স্বাভাবিক থাকতে পারি না। আর প্লিজ, এখন এ নিয়ে কিছু বলো না। আমার বুকে কিছুক্ষণ থাকো। আরাম লাগছে খুব। ”
আদ্রিশের শেষোক্ত কথার পিঠে আমি আর কথা বাড়ালাম না। উনায় জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম। অতঃপর আরো কিছুক্ষণ পর উনি আমায় ছেড়ে দিলেন। বললেন,
” যাও আম্মুকে দেখে আসো। কিছু খাইয়েও দিয়ে এসো। ”
এই বলে উনি ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালেন। আমিও খানিক বাদে রুম থেকে বেরিয়ে এলাম।
.
আম্মু এখনও কাঁদছে। কাঁদতে কাঁদতে আম্মুর গাল দুটো চিটচিটে হয়ে এসেছে। কিন্তু আম্মুর কান্না থামানো যাচ্ছে না। শেষমেশ আব্বু আম্মুর সামনে পুলিশের মাধ্যমে আপুর খবর পাওয়ার মিথ্যা অভিনয় করলো। এতে কাজ হলো বটে। আম্মু একটু হলেও শান্ত হলো। অতঃপর আম্মু ধীরেধীরে কান্না থামাতেই আমি আম্মুকে খাইয়ে দিলাম। খাবার খাওয়ার কিছুক্ষণ পর আম্মু ঘুমিয়ে গেলো।
আমি ও আভা রুম থেকে বেরিয়ে ড্রইংরুমে এলাম। ড্রইংরুমে কামাল আংকেল, আব্বু, আদ্রিশের আব্বু, ইমাদ ভাইয়া, আদ্রিশ, জেবা ভাবী ও ইমতিয়াজ ভাইয়া বসে আছেন। আমি ও আভা গিয়ে খালি সোফায় বসলাম।
উপস্থিত সকলের চোখেমুখে উদ্বিগ্নতা বিরাজ করছে। কথায় কথায় কামাল আংকেল ইমাদ ভাইয়াকে বললেন,
” ইমাদ? শাহেদের নাম্বার বন্ধ পাচ্ছি কেনো? তোর কি কথা হয়েছে শাহেদের সাথে? নাফিসার খোঁজ খবর জানিয়েছে? ”
ইমাদ ভাইয়া বললেন,
” আমারও ওর সাথে আর কথা হয়নি। ওর ফোনে হয়তো চার্জ শেষ তাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তুমি আর ফোন দিও না আব্বু৷ আমি আবারো রাতে ওকে ফোন দিয়ে ওর সাথে কথা বলবো। ”
কামাল আংকেল ঈষৎ উদ্বিগ্ন কণ্ঠে বললেন,
” আচ্ছা, আমাকে জানাস কিন্তু। ”
কামাল আংকেলের সাথে আব্বুও বললো,
” একটু তাড়াতাড়ি ফোন দিও ইমাদ। বুঝতেই পারছো তো..”
ইমাদ ভাইয়া দূর্বল হাসলেন। বললেন,
” আপনি চিন্তা করবেন না আব্বু। নাফিসার কিছু হবে না। আর ওর ব্যাপারে কিছু জানলে তো আপনাকে জানাবোই। আপনি আর আব্বু বরং এখন ঘুমিয়ে পড়ুন। আপনাদের একটু বিশ্রাম দরকার। ”
আব্বু ইমাদ ভাইয়ার প্রস্তাবে প্রথমে রাজি না হলেও পরে কামাল আংকেলের জোরাজোরিতে নিচের একটা রুমে চলে যান। অতঃপর জেবা ভাবী ও ইমতিয়াজ ভাইয়াও তাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লেন।
সকলে চলে যাওয়ার পর আমি আভাকে আমাদের রুমে পাঠিয়ে দিলাম। প্রথমে সে যেতে রাজি না হলেও পরে আমার ধমকে সে চলে যায়। আভা রুমে চলে যেতেই আমি ইমাদ ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলাম,
” শাহেদ কে ইমাদ ভাইয়া?”
” আমার বন্ধু। নাফিসার ব্যাপারে ওকেই জানিয়েছি আমি। যেহেতু রোহান পুলিশের সাথে যোগাযোগ বন্ধ রাখতে বলেছে সেহেতু আপাতদৃষ্টিতে ওর সাথে যোগাযোগ বন্ধ আছে আমার। কিন্তু ওকে আমি সবটা জানিয়ে রেখেছি। আগামীকাল রোহানদের ফার্ম হাউজের ঠিকানা জানার পরপরই আমরা বেরিয়ে পড়বো। পুলিশের ড্রেসআপে যেনো সমস্যা না হয় তাই শাহেদ বলে দিয়েছি ও যেনো ক্যাজুয়াল ড্রেসআপে আসে। ”
” আপনারা সবাই একসাথেই যাবেন?”
আদ্রিশ এবার বললেন,
” না। আমি আর ইমাদ যাবো প্রথমে। এরপর আমাদের ফলো করতে করতে ইন্সপেক্টর শাহেদ ও তার টিমও চলে আসবে।
আর শোনো তোমার কাজ হবে, সকালে রিতুর সাথে দেখা করে ফার্ম হাউজের লোকেশন নিয়ে আমাদের লোকেশন সেন্ট করা। এরপর আমাদের লোকেশন দিয়ে চুপচাপ বাসায় চলে আসা। কারণ বাকি কাজ আমরা সামলে নিতে পারবো।”
” সেই ফর্মুলার কি হবে? ”
” ফেক কিছু কাগজপত্র নিয়ে যাবো আমার সাথে। প্রথম দেখায় রোহান তা ধরতে পারবে না। এ ব্যাপারে ওর বুঝে উঠতে উঠতেই আমরা আমাদের কাজ করে ফেলবো। ”
আদ্রিশ ও ইমাদ ভাইয়ার এ প্ল্যানিং শুনে বেশ স্বস্তি অনুভব করলাম। তারপরেও খুঁতখুঁতে মন নিয়ে কিঞ্চিৎ সন্দিহান হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
” যা প্ল্যানিং করেছেন তা সাকসেসফুল হবে তো?”
আদ্রিশ অসংশয়ে হাসলেন। ইমাদ ভাইয়ার দিকে বললেন,
” সাকসেসফুল না হয়ে যাবে কোথায়। ব্যস তুমি তোমার কাজটুকু ঠিকঠাক করো। বাকিটা আমাদের উপর ছেড়ে দাও। ”
অতঃপর আদ্রিশ আমার দিকে চেয়ে বললেন,
” এখন রুমে যাও। আভাকে সাথে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো। ”
এখানে বসে থাকার ইচ্ছা থাকলেও শরীর দূর্বল অনুভব করায় আদ্রিশের আদেশ মানতে বাধ্য হলাম। কোনোরূপ কথাবার্তা ছাড়াই সিঁড়ি বেয়ে রুমে চলে এলাম।
.
পুরো রাত আধো আধো ঘুমে কাটিয়ে দিলাম। ঘুম আসলেও আপুর চিন্তায় কিছুক্ষণ পর পর ঘুম ভাঙছিলো আমার। অপেক্ষায় ছিলাম কখন সকাল হবে আর আমি কখন রিতুর কাছে গিয়ে সবটা শুনবো।
অবশেষে সে সময় এলো। প্রথমে আটটার দিকে যাওয়ার কথা হলেও খুব বেশি সকাল হয়ে যায় বলে সে সময় পিছিয়ে সকাল দশটা করা হলো। আমি রিতুর সাথে ফোনে যোগাযোগ করে একটা রেস্টুরেন্টে আসতে বললাম ওকে। আমাকে সেখানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আদ্রিশ গেলেন আমার সাথে। আমরা দুজনে রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে আসার আগে বাসার সবাইকে মিথ্যে অজুহাত দেখিয়ে বের হলাম৷ কারণ এ প্ল্যানিং যত কম মানুষ জানবে ততই তা সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
আদ্রিশ আমাকে রেস্টুরেন্টে নামিয়ে দিয়ে হাইওয়ের দিকে চলে গেলেন। আমিই বলেছিলাম কাজটা এগিয়ে রাখার জন্য পূর্ব হতেই হাইওয়েতে চলে যেতে। যেনো এদিকে আমি উনাকে ঠিকানা বলার মুহূর্তমধ্যেই উনি ফার্ম হাউজে চলে যেতে পারেন।
আমি আর রিতু চেয়ারে বসে টুকটাক গল্প করতে লাগলাম। রিতু যেনো আমায় কোনোরূপ সন্দেহ করে না বসে এজন্য তার সাথে নানা রকম কথাবার্তা বললাম। যে কথা এখন একদমই বলে সময় নষ্ট করা উচিত নয়, সে কথাও বললাম ওর সাথে। এরপর ধীরেধীরে কথার মাঝে তাদের ফার্ম হাউজের কথা আনলাম। রিতুকে জিজ্ঞেস করলাম,
” রিতু? তোদের ফার্ম হাউজের কি খবর রে? আদ্রিশরা ওদিকে জায়গা কিনবে তো তাই জানতে চাইছিলাম। ”
রিতু আমাদের ওর্ডার করা খাবার খেতে খেতে বললো,
” অনেকদিন সেখানে যাওয়া হয় না আমাদের। আব্বু হয়তো গত মাসে গিয়েছিলো। ”
” তাহলে এখন কি ওটা বন্ধ থাকে? মানে কেউ যায় না ওখানে?”
” নাহ। আব্বুর পর আর কেউ যায়নি। ”
” আচ্ছা? জায়গাটা কেমন হবে বল তো? মানে আশেপাশে মানুষজন আছে না কি সুনসান পরিবেশ? ”
” আর বলিস না মিম। একেবারে সুনসান একটা জায়গা। আমার ওখানে যেতেই ভয় করে। কে বলেছে আব্বুকে ওখানে ফার্ম হাউজ বানাতে যেখানে আমরা সবসময় যেতেই পারি না!”
” তা ঠিক বলেছিস। জায়গাটা কি হাইওয়ে থেকে অনেক দূরে?”
” আরে না। মাত্র দেড় কিলোমিটারের রাস্তা। খুব বেশিদূর না। কিন্তু তবুও আমার কাছে দূর……”
রিতুর কথা সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার পূর্বেই ওর ফোনে কল এলো। টেবিলের উপর তার ফোন থাকায় স্ক্রিনে স্পষ্ট দেখতে পেলাম ‘ভাইয়া’ লেখা ভেসে উঠেছে। অর্থাৎ রোহান ভাইয়া কল করেছে। রিতুর ফোনে এ মুহূর্তে রোহান ভাইয়ার কল দেখেই আমার হাত পা প্রায় অসার হয়ে এলো। হৃদপিণ্ড প্রচণ্ড তেজে ধুকপুক শব্দ তোলার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়লো। মস্তিষ্কে ভয়ংকর কিছু সম্ভাবনার প্রশ্ন ঘুরপাক খেলো,
” এখন যদি রিতু রোহান ভাইয়াকে আমাদের দেখা হওয়ার সম্পর্কে বলে দেয় তবে? আমাদের সব প্ল্যানিং কি তাহলে ভেস্তে যাবে? আপুর শেষ রক্ষা করতে পারবো তো?”
®সারা মেহেক(পাঠকদের জন্য একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ খোলা হয়েছে। যারা এড হতে চান বা হননি তারা আমার আইডিতে ম্যাসেজ রিকুয়েষ্ট দিয়ে রাখবেন। এতে আপনাদের এড করতে সুবিধা হবে)
#চলবে