তুমিময় আসক্তি পর্ব-১৫

0
1204

#তুমিময়_আসক্তি
#কলমে_আলো_ইসলাম

“১৫”

–” চৌধুরী বাড়িতে প্রেস মিডিয়ার সমাগম। জাহির চৌধুরী বুঝতে পারেন না হঠাৎ ইনারা এখানে কেনো? দোলা আর তানিয়া সোফায় বসে। দোলার চোখ মুখে আনন্দের জোয়ার। কিন্তু তানিয়া চিন্তিত হয়ে বসে আছে দোলার পাশে। জেসমিন চৌধুরী কৌতুহল ভরা চাহনি নিয়ে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে।

–” জাহির চৌধুরী নিজের কৌতুহল দমিয়ে রেখে বলে আপনারা হঠাৎ আমার বাড়িতে কি মনে করে?
– প্রেসের লোকের মধ্যে থেকে একজন বলে স্যার আমরা খবর পেয়েছি রুদ্রনীল চৌধুরী বিয়ে করেছেন রিসেন্টলি, কিন্তু এটা এখনো কেউ জানে না। কোনো ভাবে সেটা প্রকাশ করাও হয়নি। তাহলে কি এটা মিথ্যা নাকি সত্য?

— লোকটার কথায় জাহির চৌধুরী চমকে উঠে। ঘাবড়ানো ফেসে তাকায় দোলার দিকে। দোলা একটা অসহায় ভাব জমিয়ে রেখেছে মুখে। এমন ভাব যেনো সে কিছুই জানে না।

–” আচ্ছা আপনাদের এই খবরটা কে দিয়েছে বলুন তো? জাহির চৌধুরীর কথায় আরেকজন বলে যেই বলে থাকুক না কেনো, সে যে মিথ্যা বলেনি এখন সেটা বুঝতে পারছি। আচ্ছা মিস্টার চৌধুরী ওই মেয়েটা আপনার কে হয়? তানিয়াকে দেখিয়ে বলে।

– জাহির চৌধুরী থমথমে গলায় বলে ওইটা আমার ভাগ্নি। আমার বোনের মেয়ে।
– আর পাশেরটা। পরোক্ষণে আবার দোলাকে দেখিয়ে বলে লোকটা।
— জাহির চৌধুরী এবার চিন্তায় পড়ে যায়। জেসমিন চৌধুরী এতখন চুপ থাকলেও এখন আর চুপ থাকতে পারে না।

– ওইটা আমার মেয়ের ফ্রেন্ড। আমার মেয়ে বাইরে থাকে তো। অনেক দিন পর দেশে এসেছে। তাই দেখা করতে এসেছে বলে একটা ফোকলা হাসি ছুড়ে জেসমিন চৌধুরী। কিন্তু প্রেসের লোকদের কথাটা ঠিক হজম হয়নি৷ তাই সন্ধিহান চোখে তাকায় দোলার দিকে।
— শাশুমা.. হুট করে বলে উঠে দোলা জেসমিন চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে। দোলার কথায় জেসমিন চৌধুরী চমকে উঠে ঢোক গিলে একটা।
— আপনার রসিকতার অভ্যাসটা এখনো গেলো না মুখে মুচকি হাসি নিয়ে এসে বলে দোলা। দোলার কথায় প্রেসের লোক আগ্রহ নিয়ে বলে উনাকে কি বললেন আপনি?

– দোলা এবার সুন্দর একটা হাসি উপহার দিয়ে বলে আসলে, আপনারা যে নিউজ শুনে এখানে এসেছেন একদম ঠিক শুনেছেন৷ আমি রুদ্রনীল চৌধুরীর ওয়াইফ আরশিয়া দোলা চৌধুরী। আমাদের কিছুদিন আগে বিয়ে হয়েছে। আর উনি আমার ফুপি শাশুড়ী। কিন্তু বেশ রসিক মানুষ। দেখুন না আপনাদের সাথেও কেমন রসিকতা করলো।

— দোলার কথায় জেসমিন চৌধুরীর প্রচন্ড রাগ আসে। দোলার পাশে এসে দাঁতে দাঁত চেপে বলে বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে না। রুদ্র যদি জানতে পারে এইগুলা কি হবে বুঝতে পারছো বলেই মিডিয়ার সামনে একটা হাসি দেয়।

— আচ্ছা আপনারা কি আমার সাথে কথা বলতে এসেছেন নাকি আমার হাসবেন্ডের সাথেও কথা বলবেন?

– দোলার প্রশ্নে একজন বলে অবশ্যই আপনাদের দুজনের সাথে কথা বলব। মিস্টার চৌধুরী কোথায় উনাকে দেখছি না কেনো। ডাকুন উনাকে।

– আসলে উনি অফিস থেকে এখনো আসেনি। তবে চলে আসবে এখনই। বলতে না বলতে রুদ্র প্রবেশ করে বাড়ির মধ্যে। কিন্তু প্রেসের মানুষ দেখে ভীষণ অবাক হয় সাথে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থাকে তাদের দিকে কিছুখন।

– জাহির চৌধুরী রুদ্র কে দেখা মাত্র রুদ্রর কাছে যায়।আর দোলা একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে ওইতো আমার স্বামী চলে এসেছেন। এবার যা বলার উনাকেই বলুন আপনারা।

– ড্যাড এরা এখানে কি করছে। কে ডেকেছে এদের? গম্ভীর কন্ঠে বলে রুদ্র জাহির চৌধুরীকে।
— আস্তে রুদ্র। এরা কোনো ভাবে তোর আর দোলার বিয়ের কথাটা জেনে গিয়েছে। তাই এখানে এসেছে সেটা যাচাই করার জন্য। মনে হচ্ছে বেশ খেপে আছে ওরা না জানিয়ে বিয়ে করার জন্য। তুই কিন্তু একদম মাথা গরম করবি না। ঠান্ডা মাথায় সামাল দিস।

—”’রুদ্র বাবার কথার উত্তর না দিয়ে দোলার পাশে এসে দোলার এক হাতের বাহু ধরে টেনে এক সাইডে নিয়ে যায়। রুদ্রর চোখ মুখে রাগের আভাস। কিন্তু দোলার ঠোঁট থেকে যেনো হাসি সরছে না।

—“”এরা এখানে কি করছে? কে খবর দিয়েছে ওদের। নিশ্চয় তুমি দিয়েছো? কড়া মেজাজে বলে রুদ্র কথা গুলো।

– — কি করছেন ছোট সাহেব আস্তে বলুন৷ সবাই শুনছে কিন্তু। রুদ্রনীল চৌধুরী তার বউয়ের সাথে এমন আচরণ করে একবার যদি মিডিয়ার লোক জানতে পারে তাহলে কিন্তু কাল খবরের কাগজে বড় বড় করে হেডলাইন বের হবো, রুদ্রনীল চৌধুরী তার সদ্য বিয়ে করা বউকে নির্যাতন করছেন জনসম্মুখে। ভালো লাগবে তখন এই গুলা দেখতে।

– দোলার কথায় রুদ্র রেগে বলে শাট আপ। কেনো করেছো এই সব তাই বলো। নিজেকে খুব চালাক ভাবো তাই না। ভেবেছো প্রেস মিডিয়া জানলে আমি কিছু করতে পারব না?

– একদম না৷ আমি মোটেও এইসব ভাবিনা কখনো৷ আর কেনো ভাবব। সত্যি তো আপনি কিছুই করতে পারবেন না আমাকে। শুধু ভালোবাসতে পারবেন। এর বেশি কিছু
উহু পারবেন না ভাবান্তর হয়ে বলে দোলা।

– রুদ্র এবার কিছু বলতে যাবে দোলাকে তখনই একজন বলে মিস্টার চৌধুরী প্লিজ এদিকে আসবেন আপনার ওয়াইফকে নিয়ে। আমাদের কিছু প্রশ্ন ছিলো আপনাদের কাছে। যদি উত্তর গুলো দিতেন অনেক খুশি হতাম। রুদ্র মুখে জোরপূর্বক হাসি নিয়ে আসার চেষ্টা করে বলে শিওর।

; এরপর রুদ্র চলে যায় তাদের কাছে। সোফায় বসে গলার টাই’টা ঢিলে করে দেয়। রুদ্র ভীষণ ঘামছে।বাড়িতে এসে এমন একটা পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে কল্পনাও করেনি।

– দোলাও এসে রুদ্রর পাশে বসে। প্রেসের লোক ক্যামেরা অন করে ঠিকঠাক করে তাদের কাজ শুরু করে।

– হঠাৎ বিয়ে। তাও কাউকে না জানিয়ে। এর কারণ কি মিস্টার চৌধুরী?
– রুদ্র আসলে কি বলবে বুঝতে পারছে না। রুদ্রর মেজাজটা ভীষণ খিটখিটে হয়ে আছে। তার উপর এইসব প্রশ্ন। রুদ্র যথেষ্ট চেষ্টা করছে নিজেকে সামলে রাখতে।

— আসলে বিয়েটা হঠাৎ করে হয়ে যাবে আমরা কেউ ভাবেনি। তেমন কোনো প্ল্যানিং ছিলো না আমাদের এখন বিয়ে করার। কিন্তু আমার শ্বশুর মশাই মানে জাহির চৌধুরী, উনি চেয়েছিলেন বিয়েটা তাড়াতাড়ি হোক। তাই আর কি হুট করে ডিসিশন নেওয়া হুট হয়ে যায় সব। তাই কাউকে জানানোর সময় পাইনি তবে আমরা জানাইতাম। আমার স্বামী নিজেই আপনাদের ডেকে পাঠাতেন। কি গো বলো, আমি ঠিক বলছি না? মুখে মুচকি হাসি নিয়ে বলে দোলা কথা গুলো।

– রুদ্র দাঁতে দাঁত চেপে মুখে হাসি নিয়ে বলে হ্যাঁ হ্যাঁ একদম তাই। আমার ওয়াইফ একদম ঠিক বলেছে। আমি ক’দিন পরেই আপনাদের ডেকে পাঠাতাম। কিন্তু দেখুন তার আগেই চলে আসলেন আপনারা।

– জাহির চৌধুরী একজন সার্ভেন্টকে ডেকে বলে সবার জন্য নাস্তার ব্যবস্থা করতে। জাহির চৌধুরীর কথা মতো সার্ভেন্ট নাস্তা রেডি করতে যায়।

– আচ্ছা আপনাদের বিয়েটা কি এরেঞ্জ ম্যারেজ নাকি লাভ ম্যারেজ? একজন মেয়ে প্রশ্নটা করে।

– মেয়েটার কথায় রুদ্রর হাত মুঠো হয়ে আসে। আর দোলা মুখে লাজুক ভাব এনে বলে দুটোই বলতে পারেন৷ প্রথমে একটু দেখা সাক্ষাৎ প্রেম৷ এরপর বিয়ে ঘরোয়া ভাবে।

– দোলার কথা প্রেসের লোক একদম গিলে খাচ্ছে এমন ভাব। এইদিকে তানিয়া জেসমিন চৌধুরী, জাহির চৌধুরী একের পর এক অবাক হয়ে দেখছে সব কান্ড।

– বউমনি তোমার জন্য যে কি অপেক্ষা করছে আজ তুমি নিজেও যাননা। একে তো প্রেসের মানুষ তার উপর তোমার রোমান্টিক কথপোকথন। আজ তুমি শেষ ব্রোর হাতে নিশ্চিত আমি।

– কি ধরিবাজ মেয়েরে বাবা৷ একের পর এক মিথ্যা বলে যাচ্ছে। তবে মেয়েটার বুদ্ধি আছে বলতে হবে। কিন্তু এইভাবে চলতে দিলে তো হবে না। আস্তে আস্তে নিজের স্থানটা বেশ পাকাপোক্ত করে নিচ্ছে মেয়েটা৷ আমাকে তো কিছু একটা করতেই হবে এবার,, মনে মনে বলে জেসমিন চৌধুরী।

– আচ্ছা সব প্রশ্নের উত্তর আপনি কেনো দিচ্ছেন? আপনার হাসবেন্ডের কিছু বলার নেই এই ব্যাপারে। নাকি উনি রাজী নয় বিয়েতে?

– প্রেসের কথায় দোলা চমকে উঠে তাকায়। জাহির চৌধুরী ঘাবড়ানো চোখে তাকায় দোলার দিকে। তানিয়া চোখ দুটো স্থীর করে তাকিয়ে আছে। জেসমিন চৌধুরী মুখে মৃদু হাসি ঝুলিয়ে।

— দোলা একদম চুপচাপ আছে। কারণ তার এখানে কিছুই বলার নেই।

রুদ্র কিছুখন চুপ থেকে বলে কেনো রাজি থাকব না। যদি রাজি না থাকতাম তাহলে বিয়েটা হলো কেমন করে। আসলে আমি অনেক টায়ার্ড। আই নিড সাম রেস্ট। তাই আমার হয়ে আমার ওয়াইফ সব বলে দিচ্ছে। ওর বলা মানে আমার বলা।

– রুদ্রর কথায় সবাই হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। দোলা একটা প্রশান্তির নিশ্বাস ত্যাগ করে। রুদ্রর কথা গুলো দোলার বেশ ভালো লাগে। যদিও রুদ্র মন থেকে বলেনি দোলা জানে৷ কিন্তু সবার সামনে তাকে ওয়াইফ বলেছে এটাই যেনো দোলার কাছে দৃঢ় শান্তি।

–” তো মিস্টার চৌধুরী রিসিপশন পার্টি দিচ্ছেন কবে? প্রেসের কথায় রুদ্র এবার ঘাবড়ে যায়। চমকানো চোখে তাকিয়ে বলে আসলে রিসিপশন আপাতত করার ইচ্ছে নেই৷ তবে যদি কখনো সিদ্ধান্ত নিই এই ব্যাপারে অবশ্যই আপনাদের জানাবো। আজ আমি উঠি। আমার প্রচন্ড মাথা ধরেছে। অন্য একদিন বসব আমরা এই নিয়ে আবার বলে রুদ্র উঠে দাঁড়ায়। তারপর গটগটে পায়ে উপরে চলে যায়। দোলা তো এখন ভেতর ভেতর অনেক ভয় পাচ্ছে। এতখন নিজেকে যথেষ্ট সাহসী দেখিয়েছে। কিন্তু এখন বাঘের সামনে থেকে কে রক্ষা করবে তাকে।

— প্রেসের লোক জাহির চৌধুরীকে কিছু প্রশ্ন করে চলে যায়।
–” বউমনি তোমার জন্য আমার অনেক চিন্তা হচ্ছে গো। না জানি কি কি অপেক্ষা করছে তোমার জন্য। ব্রো যা রেগে আছে দেখলাম। তোমার আজ রক্ষে নেই।

– “” দোলা অসহায় চোখে তাকিয়ে বলে একে তো ভয়ে আছি। তুমি আবার উল্টো ভয় দেখাচ্ছো। কোথায় একটু সাহায্য করবে তা নয়। মুখটা মলিন করে বলে দোলা।

– তোমাকে আজ কেউ বাঁচাতে পারবে না। আর আমি তো একদম নেই এর মধ্যে।
— দোলা মা.. জাহির চৌধুরীর ডাকে দোলা তার কাছে যায়।

– জ্বি বাবা বলুন?
– আচ্ছা সত্যি করে বলো তো মা। এই প্রেসের লোক’কে কে খবর দিয়েছে?
– দোলা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। জাহির চৌধুরী বুঝে যান যে এই সব দোলায় করেছে। তারপরও দোলার মুখ থেকে শুনতে চাই সে।

— কি হলো বল?
– আসলে বাবা আমি জানিয়েছি এদের। আইম সরি বাবা। আমার এটা ছাড়া উপায় ছিলো না।

— আরে সরি বলছিস কেনো। আমি তো খুশি হয়েছি এটা করাতে। জাহির চৌধুরীর কথায় দোলার তার মুখের দিকে তাকায়।

– হ্যাঁ রে। আসলে আমিও চাইছিলাম তোদের বিয়েটা পাবলিশড হোক। তাহলে রুদ্র একটু ছাড় দিয়ে চলবে তোকে। তুই আমার কাজটা সহজ করে দিলি। তোর উপর আমার পুর্ণ বিশ্বাস আছে। এখন সেটা আরো মজবুত করে দিলি। এইভাবে এগিয়ে যা। আমি আছি তোর সাথে।

– দোলা মুখে হাসি নিয়ে এসে বলে ধন্যবাদ বাবা। আপনি সাথে থাকলে সত্যি আমি অনেকটা ভরসা পাবো।
–” আচ্ছা এবার ওইদিকটা যা। দেখ কি অবস্থা। দেখে তো মনে হলো অনেক রেগে আছে। না জানি কি কান্ড বাধিয় বসে। তুই কিন্তু একদম ভয় পাবি না ওর সামনে। জাহির চৌধুরীর কথায় দোলা একটা ঢোক গিলে বলে আল্লাহ জানে কি হবে এরপর।

–“” রুদ্র ঘরে এসে হাতের ব্যাগটা ছুড়ে মারে। টাই’টাও খুলে ফ্লোরে ফেলে। চুলগুলো এলোমেলো হয়ে। ঘামে শার্ট অর্ধেক ভিজে গেছে প্রায়। ঘরময় পায়চারি করছে সে। দোলার আসার অপেক্ষা আপাতত।

–“” রুদ্র ফোন বেজে ওঠে এর মধ্যে। স্ক্রিনে রাজের নাম্বার দেখে সাথে সাথে রিসিভ করে।

– দোস্ত টিভিতে এইসব কি দেখি। তোর আর দোলার বিয়ের খবর পাবলিশ কেমন করে?

– সব কিছু ওই মেয়েটা করেছে আমার বিশ্বাস। তোকে বলেছিলাম না মেয়েটা স্বার্থ ছাড়া কিছু বুঝে না। খুব তো ভালো ভালো বলে গুণগান করতি ওর নামে৷ দেখ কেমন খেল দেখালো।

– দোস্ত আমি তো উকিলের সাথে কথা বলেছি তোদের ডিভোর্সের ব্যাপারে। সেটার কি করব এখন?
– ওইটা আপাতত বন্ধ থাক রাজ। আগে এদিকটা সামলে নিই। তারপর আবার ভাবব। রাখ এখন ভালো লাগছে না কিছু বলে রুদ্র ফোন কেটে দেয়। আর রাজ একটা প্রাপ্তির হাসি দেয়। কিন্তু রুদ্রর এখন পুরো সন্দেহ দোলার উপর। এতখন সে রাজকেও সন্দেহের কাতারে রেখেছিলো। রাজ হয়তো করেছে সব। কিন্তু রাজের ফোন পেয়ে রুদ্র নিশ্চিত হয়, রাজ এই ব্যাপারে কিছু জানে না। রুদ্রর এখন দোলার উপর আরো বেশি রাগ হয়।

— সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। এখনো দোলা রুমে আসেনি। রুদ্র একই ভাবে দোলার অপেক্ষা করছে। এখনো ফ্রেস হয়নি সে। আসলে কোনো ভাবেই তার রাগটা কন্ট্রল করতে পারছে না।

– বউমনি আর কতখন থাকবে এইভাবে। যখনই হোক ঘরে তো তোমায় যাওয়াই লাগবে। আমি বলি কি তুমি এখন যাও। তাহলে হয়তো ভাইয়ার রাগটা কম হবে। নাহলে কিন্তু যত সময় যাবে তত খারাপ হবে পরিস্থিতি।
– দোলা তানিয়ার হাত চেপে ধরে বলে আমি ওই ঘরে যাবো না তানিয়া। ওই রাক্ষসটা আমাকে ঠিক মে/রে ফেলবে আজ। তোমার ভাইয়ার চোখ গুলো দেখেছো আজ। কেমন আগুন ছুটছিলো যেনো চোখের মধ্যে। যেকোনো সময় পুড়িয়ে ছাই করে দেবে কাউকে। না বাবা আমি পারব না উনার সামনে যেতে।

– –“” এটা কেমন কথা বউমনি। তুমি কত সাহস নিয়ে কাজটা শেষ করলে। আর এখন এসে কিনা ভয় পাচ্ছো। দিস ইস নট ডান বউমনি। তুমি তো আমার সাহসী বউমনি। কিছু হবে না। ওই একটু বকবে বড়জোর। সে তো রোজই বকে এ আর নতুন কি। কিন্তু বেশি রেগে গেলো হীতে বিপরীত হয়ে যাবে বোঝার চেষ্টা করো।

– তাহলে যেতেই হবে?
– তানিয়া ইশারা করে বলে হুম। তানিয়ার কথায় দোলা একটা ঢোক গিলে বলে ওকে যায় তাহলে। দোয়া করো আমার জন্য কেমন। এরপর দোলা তানিয়ার ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।

— চলবে…