তুমিময় আসক্তি পর্ব-৪১

0
1068

#তুমিময়_আসক্তি
#কলমে_আলো_ইসলাম

“৪১”

— ভাবি এবার খেতে দাও জলদি। পেটের মধ্যে ইয়া বড় দেখে একটা ইঁদুর ছোটাছুটি করছে। এখানে লাঞ্চ করবো বলে না খেয়ে এসেছি হাসতে হাসতে বলে রাজ। সবার সাথে আলাপ আড্ডা শেষ করে রাজ কথাগুলো বলে।

— দোলা সবাইকে খাবার সার্ভ করে দিতে শুরু করে।
— বাবা এত এত খাবার। আমার তো দেখেই জিভে পানি চলে আসছে৷ নিশ্চয় দোলা ভাবি রান্না করেছে সব? কৌতুহলী চোখে তাকিয়ে বলে রাজ? রাজের কথায় দোলা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে ভাইয়া আমাকে ভাবি বলবেন না প্লিজ। আমি তো আপনার ছোট বোনের মতো। আমাকে নাম ধরে ডাকলে খুশি হবো মুচকি হেসে বলে। দোলার কথায় রুদ্র ক্ষীণ দৃষ্টিতে তাকায়। রাজ মুখের হাসিটা বজায় রেখে বলে! উহু আমি তো ভাবি বলেই ডাকবো তোমাকে দোলা। হ্যাঁ তুমি নিশ্চয় আমার বোনের মতো। মতো কি কথা তুমি আমার বোনই। কিন্তু তার আগে আমার একমাত্র প্রাণ প্রিয় বন্ধুর স্ত্রী। তাই আমি ভাবি বলে ডাকবো তোমাকে৷ আমাকে এটা বারণ করতে পারবে না দোলা।

–; রাজের কথার বিপরীতে আর কি বলা যায় দোলা বুঝে উঠে না৷ তাই একবার রুদ্রর দিকে তাকিয়ে কাজে মনোযোগ দেয়৷ সবাইকে খাবার দিয়ে দোলা নিজেও বসে যায় রত্না চৌধুরীর কথায়।

— কি রে এইদিকটার কি খবর? রুদ্রর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে রাজ। রাজের কথায় রুদ্র করুণ একটা লুক নিয়ে তাকায় রাজের দিকে। এতে রাজ যা বোঝার বুঝে যায়৷ তাই সে একটা তপ্ত দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে! আমি যে প্ল্যানটা দিয়েছিলাম সেটা কতদুর এগুলো? রাজের কথায় রুদ্র মলিন কন্ঠে বলে! যে ঝড়ঝাপটা গেলো। বলার সুযোগ পেলাম কোথায়? তবে আজ বলব। সবাই উপস্থিত আছে। আর সবাই খুশি ও হবে জানি। রুদ্রর কথায় রাজ চওড়া হাসি মুখে ধরে বলে তাহলে আর দেরি করছিস কেনো? জলদি বলে ফেল।

–‘ সবাই খাওয়া শুরু করে দিয়েছে। রুদ্র নিজের গলাটা পরিষ্কার করে নিয়ে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে ” আমি একটা কথা বলতে চাই তোমাদের। কথাটা অনেক আগেই বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মাঝখানে যে পরিস্থিতি হয়েছিলো তাতে কথাটা বলা হয়ে উঠেনি আর। রুদ্রর কথায় সবাই খাওয়া বন্ধ করে কৌতুহলী হয়ে তাকায়। রাজের মুখে মৃদু হাসি। বাকি সবাই জানার জন্য উৎসুক দৃষ্টি রেখেছে রুদ্রর দিকে।

— বল কি বলতে চাস? আগ্রহ নিয়ে বলে জাহির চৌধুরী। তার কথায় রুদ্র দোলার দিকে দৃষ্টি রেখে বলে আমাদের বিয়েতে তো তেমন ভাবে জানানো হয়নি কাউকে। আর না কোনো রিসিপশন পার্টি হয়েছে। যদিও সেটা আমার জন্যই হয়নি। কিন্তু আমি এখন চাই আমাদের বিয়ের একটা রিসিপশন পার্টি করতে। সবার সামনে দোলাকে পরিচয় দিতে। রুদ্রর কথায় সবাই অনেক খুশি যে হয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সব থেকে বেশি খুশি হয়েছে তানিয়া আর রাজ। কিন্তু রুদ্রর কথায় শক পেয়েছে দোলা। অবাক হয়ে তাকায় রুদ্রর দিকে। রুদ্র এখনো তার দৃষ্টি’টা দোলাতে আবদ্ধ রেখেছে দোলার রিয়াকশনটা দেখার জন্য।

–” এটা তো অনেক ভালো কথা রুদ্র৷ আমিও চাইছিলাম একটা রিসিপশন পার্টি করতে। শুধু তোর অনুমতি ছিলো না বলে বলতে পারিনি। সব যখন ঠিকই হয়ে গেছে এটা বাদ থাকবে কেনো? খুশিতে আটখানা হয়ে বলে জাহির চৌধুরী।
– তার মানে বাড়িতে একটা অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে। অনেক আনন্দ হবে? আমি তো অনেক মজা করবো ব্রো তোমাদের দ্বিতীয় বিয়ে.. কথাটা বলা তানিয়া জিভ কেটে বলে সরি ওইটা বউভাত হবে। এরপর দাঁত কেলিয়ে হাসে তানিয়া৷ ওর হাসি দেখে সবাই হেসে উঠে। কিন্তু দোলা উঠে খাওয়া ছেড়ে দাঁড়ায়। ওকে দাঁড়াতে দেখে সবাই কৌতুহল চোখে তাকায়।

— একি দোলা। উঠে গেলি যে? কোনো সমস্যা? রত্না চৌধুরী জিজ্ঞেস করলে দোলা হাসার চেষ্টা করে বলে আমার শরীরটা কেমন করছে৷ আমি আর খাবো না এখন.। তোমরা খাও আমি আসছি কথাটা বলে রুদ্রর দিকে একটা রাগী লুক দিয়ে দ্রুত পায়ে চলে আসে দোলা। দোলার কাজে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে৷ কি হলো হঠাৎ কেউ বুঝতে পারে না৷ রুদ্র ব্যথিত চোখে তাকিয়ে থাকে দোলার যাওয়ার দিকে।

— দোলার কি হলো বলতো রুদ্র? হঠাৎ শরীর খারাপ হলো কেনো বুঝলাম না। আচ্ছা দোলা কি খুশি হয়নি? সন্দিহান হয়ে প্রশ্ন করে তানভীর আহমেদ।

– আরে বাবা এত চিন্তা করছো কেনো। এই সময় শরীর খারাপ কি বলে কয়ে আসে নাকি। তাছাড়া বউমনির অখুশি হওয়ার কি আছে এখানে। তানিয়া বলে কথাগুলো।
– রুদ্র রাজের দিকে করুণ চোখে তাকায়। রাজ রুদ্রর কাধে হাত রেখে ভরসা দেয়।
— রুদ্র দেখনা বাবা মেয়েটার কি হলো। এইভাবে চলে গেলো কেনো? আমার কিন্তু ব্যাপারটা ভালো ঠেকছে না? চিন্তিত হয়ে বলে রত্না চৌধুরী।
– মনিমা আমি দেখছি তুমি চিন্তা করো না বলে সজল উঠতে গেলে রুদ্র থামিয়ে দেয় তাকে।
– তুমি বসো, আমি দেখছি বলে রুদ্র উঠে যায়।

–” দোলা এসে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে মুখটা মলিন করে। রুদ্রর হঠাৎ এমন ডিসিশনের মানে বুঝতে পারছে না। রুদ্রর সাথে তো তার একটা চুক্তি হয়ে আছে। তাদের ডিভোর্স হবে রুদ্র বলেছে। তাহলে এখন কেনো সবার সামনে এইসব বলছে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এইগুলো ভাবে দোলা।

— রুদ্র ঘরে এসে দোলাকে না পেয়ে বারান্দার দিকে আসে৷ দোলাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে একটা টানা শ্বাস নিয়ে দোলা পাশে এসে দাঁড়ায়।
— চলে আসলে যে? রুদ্রর বলা নরম স্বরের কথায় দোলা যেনো আরো খেপে যায়। রুদ্রকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে গরম চোখে তাকিয়ে বলে! এই গুলো কি হচ্ছে?

— কোন গুলো? রুদ্র যেনো দোলার কথা বুঝতেই পারিনি। রুদ্রর কথায় আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করে দোলার কাছে।
– কোন গুলো বুঝতে পারছেন না এখন। রসিকতা করছেন আমার সাথে আপনি? রিসিপশন হবে মানে কি? আমাদের ডিভোর্স হওয়ার কথা আছে। আর আপনিই সেটা আমাকে বলেছেন৷ এখন এইভাবে লোক হাসানোর মানে কি? আমাকে কি সত্যি খেলার পুতুল মনে আপনার। মানে যখন যেমন খুশি হলো সাঁজাইলাম, নাচাইলাম। আমি কি মানুষ না? আমার কি চাহিদা নেই। নাকি নিজের জীবন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ারও অধিকার নেই৷ আমি মেয়ে বলে কি আমার কথার মূল্য নেই আপনার কাছে? অবশ্য রুদ্রনীল চৌধুরী মেয়েদের মানুষ বলে গণ্য করে কখন। আমিও না সত্যি পাগল। তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে দোলা। আমি ভুলে যায় যে আমি একটা মেয়ে। আর মেয়ে মানে তো রুদ্রনীল চৌধুরীর কাছে খেলার পুতুলই একটা।

– স্টপ দোলা! অনেক বেশি বেশি বলছো তুমি। রাগী কন্ঠে বলে রুদ্র।
– উহু। একটু বেশি বলছি না৷ বরং আরো কিছু বলা উচিত আমার৷ কিন্তু আমি পারছি না বলতে৷ যাই হোক আমি ডিভোর্স চাই। আমার যা দায়িত্ব ছিলো। কাজ ছিলো আমি করে দিয়েছি। এখন আমি মুক্তি চাই৷ আপনি ভালো থাকুন আপনার পরিবার নিয়ে আমাকে আমার মতো ভালো থাকতে দিন প্লিজ হাত জোড় করে বলে দোলা। রুদ্র কাতর দৃষ্টিতে তাকায় দোলার দিকে।

– কেনো এমন করছো দোলা। সব কিছু ঠিক হওয়ার পর তুমি কেনো আবার সবটা এলোমেলো করে দিতে চাইছো৷ আচ্ছা আমার কথা বাদ দিলাম৷ তুমি কি এই পরিবার ছাড়া থাকতে পারবে? এই পরিবারের মানুষ গুলো কি তোমাকে ছাড়বে? প্রতিটি মানুষের সাথে তুমি আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে গেছো। প্লিজ আমার উপর রাগ করে এমন ডিসিশন নিও না৷ আমি বারবার ক্ষমা চেয়েছি এখনো চাচ্ছি৷ তাও তুমি ডিভোর্সের কথা বলো না দোলা অনুনয় করে বলে রুদ্র।

– ডিভোর্সের কথা আমি নয় আপনি আগে বলেছেন মিস্টার রুদ্রনীল চৌধুরী। তাছাড়া আপনি আমাকে এই বাড়িতে নিয়ে এসেছে ডিভোর্স দিবেন বলে।। তাহলে এখন কেনো কথা চেঞ্জ করছেন? আমি কিছু শুনতে চাইনা৷ আমি চাইনা আপনার সাথে থাকতে। আমি ভীষণ ক্লান্ত আর কতবার বলব এই কথাটা৷ আমি মুক্তি চাই চিৎকার করে বলে দোলা কথাটা। রুদ্র নিজেকে সামলাতে পারে না দোলার কথা শুনে। হাতের কাছে থাকা ফুলদানিটা তুলে ছুড়ে মারে। ভেঙে চুরমার হয়ে যায় সেটা। দোলা কেঁপে উঠে তাতে৷ ভয়ার্ত চোখে রুদ্রর টা দিকে তাকায়। রুদ্র রুমের মধ্যে এসে একে একে সব জিনিস ছুড়ে ফেলতে থাকে। সমস্ত রাগ যেনো জিনিসপত্রের উপর তুলছে সে।
— ভেতর থেকে ভাংচুরের শব্দে সবাই চমকে উঠে। রাজ আর সহজ আগে উঠে আসে। তানিয়া তানভীর আহমেদ তাদের পেছনে। জাহির চৌধুরী রত্না চৌধুরী দুজন দুজনের দিকে ভয়ার্ত চোখে তাকায়। এরপর তারাও আসে রুদ্রর রুমের দিকে।

— দোলা দুইহাত কানে দিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে৷ চোখ দিয়ে পানি পড়ছে তার। রুদ্র সব জিনিস ছুড়ে ফেলার পর দোলার কাছে এসে দোলার হাত ধরে টেনে রুমের মধ্যে নিয়ে যায়। হঠাৎ হাত ধরে টানায় দোলা চমকে উঠে। রুদ্রর চোখ মুখ লাল হয়ে আছে রাগে। রুদ্রকে দেখতে ভয়ংকর লাগছে এখন।

–” ডিভোর্স চাই না তোমার। মুক্তি চাই আমার থেকে? তাহলে কেনো এসেছিলে জীবনে? কেনো আমাকে বদলে দিলে? ভুল করেছি আমি বলেছি না অনেকবার। আরে মানুষ ভুল করার পর মন থেকে ক্ষমা চাইলে আল্লাহও ক্ষমা করে দেয়৷ আর তুমি একটিবারের জন্য পারছো না আমাকে ক্ষমা করে দিতে। শুনেছি স্বামী হাজার অপরাধ করার পরও যদি স্ত্রীর কাছে একটিবার ক্ষমা চাই৷ সে স্ত্রী আর থাকতে পারে না মাফ না করে। আর তুমি আমাকে অপরাধের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রেখে চলে যেতে চাও জীবন থেকে। যদি চলে যাবে তাহলে কেনো নতুন করে সব কিছু শুরু করলে। কেনো ভালোবাসতে শিখালে আমাকে? তুমি কি বুঝো না আমি তোমাতে আসক্ত হয়ে গেছি। #তুমিময়_আসক্তি আমাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রেখেছে। তুমি কি বুঝো না আমি তোমাকে ভা…কথাটা বলতে গিয়ে থেমে যায় রুদ্র। দোলা কান্নারত চোখে কৌতুহলী হয়ে তাকিয়ে থাকে রুদ্রর দিকে। রুদ্র দোলার দুইবাহু চেপে ধরে আছে।

— ঘরের বাইরে সবাই দাঁড়িয়ে আছে। তানিয়া আসতে গেলে রাজ বাধা দেয়। রত্না চৌধুরী আর জাহির চৌধুরী অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। পুরো ঘরে এলোমেলো হয়ে।

– আপনি আমাকে কি? বলুন কি? আগ্রহী হয়ে অনেকটা কৌতুহল জমিয়ে বলে দোলা। রুদ্র দোলার বাহু ছেড়ে দিয়ে দূরে সরে দাঁড়ায়। দোলা এখনো উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

– কি হলো বলুন? দোলা মৃদু চিৎকার করে বলে। রুদ্র দোলার দিকে একবার তাকিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। রাজ রুদ্রকে আটকানোর চেষ্টা করে কিন্তু সফল হয়না। রুদ্র যেতেই দোলা ফুঁপিয়ে কান্না করে উঠে। তানিয়া ছুটে এসে দোলাকে জড়িয়ে ধরে। সবাই একে একে রুমের সামনে থেকে চলে যায়। আপাতত কিছু জিজ্ঞেস করতে চাইনা দোলাকে। দোলা তানিয়াকে ধরে শব্দ করে কেঁদে দেয় এবার।

– তানিয়া দোলাকে ধরে খাটের উপর বসিয়ে দোলার মাথাটা তার কাধে রাখে।
– চুপ করো বউমনি। এইভাবে কান্না করলে তোমার শরীর খারাপ করবে তো। আমাদের পুচুটার কথা ভাবো একবার অন্তত। তানিয়ার কথায় দোলা নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে কিন্তু পারে না৷ রুদ্রর কথা গুলো মনে আসলেই কান্না পাচ্ছে অনেক তার।

– আপনি আজো বলতে পারলেন না ভালবাসার কথাটা। কেনো পারলেন না ছোট সাহেব? কিসের বাধা আপনার? আপনি কি সত্যি আমাকে বুঝেন না। আমি কি চাই কেনো করি সত্যি বুঝতে পারেন না? ক্ষমা তো অনেক আগেই করে দিয়েছি আপনাকে। কিন্তু মন থেকে মানতে পারছি না তারপরও সব কিছু। আপনার মুখে ভালবাসি কথাটা শোনার জন্য ছটফট করি প্রতি মুহূর্তে। কেনো বুঝেন না আপনি এগুলো। আপন মনে ভাবে কথা গুলো দোলা। আর কান্না করে।

— জানি না তোমার আর ব্রোর মাঝে কি হয়েছে। তবে এইটুকু বলব ভুল কিছু করো না বউমনি। ভাইয়া তোমাকে অনেক ভালবাসে। তোমাকে ছাড়া থাকা সম্ভব না তার পক্ষে। যাই হোক না কেনো মিটিয়ে নিও। অন্তত বেবিটার কথা ভেবে সব ঠিক করে নিও। দোলার ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে শান্ত ভঙ্গিতে বলে তানিয়া।

– বাইরে সবাই মন খারাপ করে বসে আছে। হঠাৎ করে এমন একটা সিচুয়েশন ক্রিয়েট হবে কেউ ভাবেনি৷
–” রাজ রুদ্রটা কোথায় গেলো একটু দেখনা বাবা। মলিন কন্ঠে বলেন জাহির চৌধুরী। জ্বি আঙ্কেল আমি দেখছি বলে বেরিয়ে যায় রাজ।

— আমি আসি এখন। কোনো সমস্যা হলে আমাকে জানাবেন। যদিও আমি আপনাদের পরিবারের কেউ না৷ এটা আপনাদের পারিবারিক ব্যাপার এটাও জানি। আসলে আমার তো কেউ নেই। মনিমা ছিলো এখন সেও আর.. এইটুকু বলে থেমে যায় সজল।
— কে বলেছে তুমি এই পরিবারের কেউ না। রত্না তোমাকে ছেলে বলে না? তুমি যদি রত্নার ছেলে হও তাহলে তো আমারও ছেলে তুমি। এটা তোমারও বাড়ি। যখন ইচ্ছে আসবে যাবে। আর যেনো কখনো এমন কথা না শুনি বুঝেছো? শাসনের সুরে বলে জাহির চৌধুরী। সজল মুগ্ধ হয়ে তাকায় জাহির চৌধুরীর দিকে।

– একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাইজান। তুমি তো এখন থেকে এই বাড়িরই ছেলে সজল। তাছাড়া জামাইও হতে চলেছো ভবিষ্যতে হাস্যমুখে বলে তানভীর আহমেদ। এই মুহুর্তে কারো হাসি না আসলেও তানভীর আহমেদের কথা মৃদু হাসি আসে সবার মুখে। সজল লজ্জা পায় তার কথায়। মাথা চুলকিয়ে বলে আমি আসছি এখন। এরপর বেরিয়ে যায়।

–” ভাইজান ভাবি আপনারা ঘরে জান রেস্ট করুন। সব ঠিক হয়ে যাবে চিন্তা করবেন না। আমাদের দোলা অনেক বুদ্ধিমতী মেয়ে৷ ও ঠিক সবটা সামলে নেবে৷ যদিও জানি না সমস্যা টা কি? তবুও দোলার প্রতি ভরসা আছে। তানভীর আহমেদের কথায় তারা আর কিছু বলে না৷ শুধু একটা করে দীর্ঘশ্বাসই ছাড়ে হতাশার। এরপর জাহির চৌধুরী, রত্না চৌধুরীকে নিয়ে ঘরে যায়৷

“” চলবে…..