#তুমি_আমার
#পর্ব_১৬
#লেখনীতে_নাজিফা_সিরাত
আবেশের সামনাসামনি বসে আছে সিরাত।আবেশ এক ধ্যানে ল্যাপটপের স্কিনে তাকিয়ে কি যেন করছে।পাঁচ মিনিট হলো সিরাত বসে আছে এবার বিরক্তি লাগছে বেশ।সামনে বসা রমনী তাঁর কাজেকর্মে চরম বিরক্ত সে সম্পর্কে অবগত সে।তবুও কাজ করে চলেছে একনাগাড়ে।মূলত তাঁর ওই বিরক্তিমাখা মুখ দেখে মজা পাচ্ছে।কাজ শেষ করে বাক্য ব্যয় না করে হাত ধুয়ে খেতে বসলো আবেশ।সিরাত বসে বসে শুধু দেখে যাচ্ছে তাঁর কান্ডগুলো।আবেশ খাচ্ছে আর আড়চোখে সিরাতকে দেখছে।সিরাত রাগে ফুসফুস করছে।ক্যান্টিনে খেয়ে এসে এখানে চেটেপুটে খাওয়া হচ্ছে।আর ওদিকে ও অভুক্ত আছে এখনও।সিরাত দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
-‘আমাকে নিশ্চয় এখানে আপনার খাওয়া দেখানোর জন্য ডেকে পাঠান নি।কেন ডেকেছেন তাড়াতাড়ি বলবেন প্লিজ’।
-‘উফফ!সিরাত খাওয়ার সময় বিরক্ত করো না তো।খাওয়া শেষ হোক তারপর বলবো’।মুখ কুঁচকে বিরক্তি নিয়ে বললো আবেশ।
-‘তাহলে এত আগে ডেকে পাঠানোর মানে কি!খেয়ে দেয়ে ডাকলেই তো পারতেন’?দাঁত চিবিয়ে বললো কথাটি।
-‘কেন?তোমার সমস্যা হচ্ছে।খেতে ইচ্ছে করছে।দেখো আবার আমার খাবারে নজর দিও না।আমার আবার কারো নজর সহ্য হয় না তাড়াতাড়ি ইফেক্ট পরে আমি অসুস্থ হয়ে যাই’।চোখ বড় বড় করে তাকালো সিরাত।কি বলে এই ছেলে।রাগ দেখিয়ে ক্রোধ নিয়ে বলে,
-‘খবরদার আবোল তাবোল কথা বলবেন না।আপনি খেতে থাকুন আমি আসছি’।উঠতে উদ্যত হলেই ধমক দিয়ে কর্কশ কন্ঠে বললো,
-‘এক পাও নড়বে না।এখানে চুপচাপ বসে থাকো নইলে’।ভয়ে চুপসে গেলো সিরাত।মেজাজ দেখিয়ে বললো,
-‘আমি এখানে অন্ততকাল বসে থাকার জন্য এসেছি নাকি।প্রয়োজন থাকলে ফটাফট বলবেন নইলে যেতে দিন’।
-‘কুল সিরাত হাইপার হচ্ছ কেন?পাঁচ মিনিট বসো’।শান্ত কোমল কণ্ঠস্বর শুনে ইচ্ছা না থাকা স্বও্বেও বসে পরলো সিরাত।এখন গিয়েও লাভ নেই আবার আসতে হবে।আর পাঁচ মিনিটই তো।সিরাত বসে বসে আড়চোখে আবেশকে দেখে চলেছে।এ্যাশ কালারের শার্ট গায়ে দারুন মানিয়েছে তাঁকে।দেখলেই কেমন প্রেম প্রেম অনুভূতি জন্ম নেয়।হঠাৎ এক লোকমা ভাত সিরাতের মুখের সামনে ধরলো আবেশ।সিরাত হতভম্ব আবেশ তাঁকে খাইয়ে দিচ্ছে।আবেশের মুখে মৃদু হাসি।সিরাতকে অবাক হতে দেখে বললো,
-‘আজ মা খাবার পাঠিয়েছে।তখন দেখলাম সবাই খাচ্ছে তুমি কিছু খাও নি।টো টো করে ঘুরে বেড়াচ্ছ। তাই ভাবলাম শেয়ার করি’।
সিরাত এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আবেশের দিকে।এটা আদৌ সম্ভব।তাঁর কল্পনা নাকি সত্যি।মুখের সামনে কিছু শব্দ পেয়ে হুশ ফিরলো সিরাতের।রিনরিনে বললো,
-‘আমি খাবো না।আমার ক্ষিধে নেই আপনি খান’।
-‘তুমি কোনোদিনও এগুতে পারবে না সিরাত।তলানিতে পরে থাকবে।আমারই বুঝার ভুল।আবারও বলছি খেয়ে নাও।মায়ের হাতের রান্না নষ্ট করতে ইচ্ছুক নই আমি’।সিরাত আবেশের চোখের দিকে তাকিয়ে আর কিছু বলার সাহস পেলো না।এতক্ষণের খুশিতে চিকচিক করা চোখগুলো যেন এবার রাগ মিশে একাকার হয়ে গেলো।আবেশের হাত থেকে খেয়ে নিলো সিরাত।এ যেন অন্যরকম ভালো লাগা।আবেশ খাইয়ে দিচ্ছে আর মুচকি মুচকি হাসছে।সিরাত অনুভূতির সাগরে ডুবে যাচ্ছে।হৃদস্পন্দন বাড়ছে মনের ভিতর উথাল পাতাল শুরু হয়ে গেছে এও সম্ভব।সিরাতের কাছে ক্যামেরা থাকলে এই সুন্দর মূহুর্ত টাকে ক্যামেরা বন্দি করে রাখতো সে।কিন্তু সেটা সম্ভব নয়।তাই মনের মণিকোঠায় রং তুলি ছাড়া ছবি এঁকে নিলো সে।
🍁🍁🍁
আরুর মুখোমুখি বসে আছে রাদিফ।রাস্তায় দেখা হয়েছিলো তাঁদের।এখন ক্যাফেতে কফি খেতে এসেছে তাঁরা।আরু মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে রাদিফের পানে।যতই দেখে ততই মুগ্ধতা বাড়তে থাকে তাঁর।দিনকে দিন তাঁকে মোহনীয় আকর্ষণীয় লাগে তাঁর কাছে।রাদিফ আরুর তাকানো দেখে মৃদু হাসলো।আরু সেটা বুঝতে পেরে নিজের করা কর্মকান্ডে লজ্জিত হয়ে মাথা নুইয়ে ফেললো।রাদিফ গলা ঝেড়ে বললো,
“এক্সাম শেষ”?আরু মাথা নাড়িয়ে না জানালো।তারপর কিছুক্ষণ নীরবতায় কাটলো দুজনার।রাদিফ কিছু বলার জন্য উশখুশ করছিলো সেটা বোধগম্য হতেই আরু বললো,”আপনি কিছু বলতে চাইছেন”?থতমত খেয়ে গেলো রাদিফ।বোকা বোকা চাহনী নিক্ষেপ ফিচেল হেসে বললো,
“না তেমন কিছু না।আচ্ছা আপনার ফ্রেন্ড সিরাতের সমস্যা কি?উনি এত টেন্স থাকেন কেন?”দীর্ঘশ্বাস ফেললো আরু।সিরাতের ব্যাপারে সবটাই অবগত সে।কিন্তু এই মূহুর্তে তাঁকে বলাটা কতটা মানান সই সেটা অজানা তাঁর।তাই জোরপূর্বক হেসে বললো,
“কই না তো তেমন কিছু নয়”।সন্দিহান চোখে তাকালো রাদিফ।কপালে ভাঁজ পরলো তাঁর।আরু সত্য বলছে না সেটা জানে সে।তাই বললো,”না বলতে চাইলে থাক।আচ্ছা আমার মনে হচ্ছে প্রেম ঘটিত কিছু”।
“সময়মত সবটা জানতে পারবেন।আর মাএ কদিনের অপেক্ষা মাএ।আচ্ছা আসছি”।নিজের কাজে নিজেই বিরক্ত রাদিফ।কি বলতে চাইলো আর বললো কি।এখন পর্যন্ত সঠিক বাক্যটি সঠিক ব্যাক্তিটির নিকট ব্যক্ত করতে ব্যর্থ সে।
____________
সিরাতকে পৌঁছে দিতে কলেজে এসেছে সিয়াম।আজ ওদের ফার্স্ট এক্সাম।তবে আজকে আসার কারণটা শুধু সিরাত নয়।আজ নিজের তাগিদে এসেছে সে।এ কদিনে বুঝে গেছে সেদিনের সেই বাচ্চা মেয়েটার প্রতি দুর্বল সে।অন্যরকম কিছু ফিলিংস হয় তাঁর।প্রথমে এসব ভাবনায় পাওা না দিলেও সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে আজ অনুভূতিরা বাধাহীন।সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ সে।সকল বাধা বিধির গন্ডি পেড়িয়ে সেই পিচ্চি মেয়েটাকে নিয়ে মনের কোণে ভালোবাসা নামক অনুভূতি জন্ম নিয়েছে।আজ তাঁর সাথে দেখা করতেই হবে তাঁকে।এতদিন না দেখে থাকতে কষ্ট হয়েছে খুব। মনের সাথে যুদ্ধ করে থেকেছে কিন্তু আজ নিরুপায় সে।সিরাতকে নামিয়ে দিয়ে কলেজ গেইটে দাঁড়িয়ে রইলো।সিরাতের কাছ থেকে জেনে নিয়েছে রিয়া এখনও কলেজে ঢুকে নি।তাই অপেক্ষায় আছে রিয়ার।রিয়ার অপেক্ষারত অবস্থায় আছে তখন কলেজে ঢুকে আবেশ আর আরু।সিয়ামের সাথে কথা বলে ভিতরে চলে যায় আরু।আবেশ আর সিয়াম দাঁড়িয়ে আছে।আবেশ বললো,
“তুই এখানে”?
“প্রেমে পরেছি বস।তাই তোর কলেজে এসে পিয়নের অপেক্ষা করছি”।অবাক হয়ে ভ্রু কুঁচকে বলে,
“সত্যি”।
“হুম”
“সোভাগ্যবান মেয়েটি কে?মেয়েটিকে না বলে পিয়ন লাগিয়েছিস কেন”?আনন্দে বললো আবেশ।
“কে বললো তাঁকে বলব না।পিয়নের থেকে তাঁর নাম্বার নিয়ে মেয়েটাকে সামনাসামনি প্রপোজ করবো।একটু ওয়েট কর সব বলছি”।আবেশ যেন ওর কথায় আকাশ থেকে পরলো।সিয়ামের সাহস যেখানে আকাশচুম্বী সেখানে ওর সাহস হাঁটুর নিচে।এখন ওর নিজেকে সিয়ামের বন্ধু মানতেও কষ্ট হচ্ছে।রিয়াকে দেখে ইশারায় ডাকলো সিয়াম।আবেশ চোখ কুঁচকে তাকালো।রিয়াকে সিয়াম ডাকছে দেখে মনে মনে খুশি হলো।তাহলে কি সিয়াম তাঁর মতই তাঁকে নিয়ে ফিল করতে শুরু করে দিয়েছে।নইলে গেইটে দাড়িয়ে সিয়াম তাঁকে ডাকবে কেন।ধীর পায়ে সামনে গিয়ে সামনে আবেশকে দেখে আনইজিও লাগছে তার।সে দাঁড়াতেই সিয়াম ভালো মন্দের খোঁজখবর নিয়ে সোজাসাপ্টা বললো,
“তোমার সাথে ওই দিন যে মেয়েটা ছিলো তাঁর নাম কি?আর ওর ফোন নাম্বার কি পাওয়া যাবে”?রিয়ার মাথায় বাজ পরলো এবার।তাহলে কি ওর ভাবনাই সত্যি।কিন্তু মিনার আর তিহানা তো দুজন দুজনকে ভালোবাসে।
“ওর নাম তিহানা কিন্তু কেন কি প্রয়োজন বলুন তো”?
“একচুয়েলি আমি তিহানাকে ভালোবেসে ফেলেছি।এবার ওকে আমার মনের কথাটা জানাতে চাই।তুমি আবার আমাকে খারাপ মনে করো না প্লিজ”।রিয়া ফুস করে একটি শ্বাস ছাড়লো।নিজের পছন্দের মানুষটা তার পছন্দের মানুষের সাথে ভাব জমানোর জন্য তাঁকেই খুঁজে পেলো।এখন সত্যিটা বলা কি ঠিক হবে।কারণ সত্যিটা শুনলে উনি তো কষ্ট পাবেন কিন্তু না জানালেও তো হয় না।ওকে চুপ থাকতে দেখে আবেশ বললো,
“কি হলো রিয়া চুপ করে আছো কেন?বলো।
রিনরিনিয়ে বললো,
“কথাটা কীভাবে বলবো বুঝতে পারছিনা। ও তো অন্য একজন মানে মিনার আর তিহানা দুজন দুজনকে ভালোবাসে”।
হলে এসে পুরো দাঁড়িয়ে গল্ল করছে আয়ান,মিনার,আয়েশা আরু আর সিরাত।রিয়া এখনও ভিতরে আসে নি।আজ সিট বের করতে হিমশিম খেয়েছে তারা।আরু সিরাতের মধ্যখানের বেঞ্চে আছে এলিনা।ক্লাস টেস্টের রেজাল্টের পর মাটিতে যেন পাই ফেলছে না সে।এমন ভাব যেন এবার ফুল মার্কস থাকবে তাঁর।এসব দেখে আরু ভেংচি কেটে দিলো।যথারীতি সবাই সবার জায়গায় বসে পরলো।এক্সাম শুরু দু তিন মিনিট পূর্বে হলে ঢুকলো রিয়া।তবে মুখে হাসি নেই।মুখভার তাঁর।ও বসতেই হলে ঢুকলেন স্যার।স্যার খুব কড়া নজর রাখেন সবার উপরে।কারোর সাহস নেই টুকলি করার সবাই চুপ।সিরাত লেখায় এতটা মনযোগী যে তাঁর সামনে পিছনে কি ঘটছে সে সম্পর্কে অবগত নয় সে।হঠাৎ কানের কাছে ফিসফিস আওয়াজ শুনে চমকে তাকালো।আবেশ খানিকটা ঝুকে আছে তার দিকে মুখে মৃদু হাসি।
“অল দ্যা বেস্ট মিসেস সিরাত”।এই কথাটাই ওর হৃদস্পন্দন বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট।কানে এসে বারবার বারি খাচ্ছে কথাটি।মিসেস তাও আবেশের মুখে শুনেই সুখের সাগরে ভাসতে লাগলো সে।অদ্ভুত লজ্জা এসে ঘিরে ধরলো তাঁকে।কেন এত লজ্জা পাচ্ছে সে।সে সম্পর্কে কিছুই জানে না।কলম থেমে লিখতে ভুলে গেলো সে।আবেশ সরে দাঁড়ালো।তবুও মনযোগী হতে পারছে না।হাত যেন চলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে।কর্তব্যরত টিচার ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য দশ মিনিটের জন্য আবেশকে এখানে রেখে ওয়াশরুমে গিয়েছে আবেশ।এখানে এসে সিরাতকে এতটা মনযোগী দেখে খুশী হয় সে।আরুর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলে,
“এইবার তুই ডাব্বা মারবি এটা তোর ভাইয়ের অভিশাপ”।আরু হাসলো তৃপ্তির হাসি। কারণ এই কথাটাই এত বছর ধরে এই ভাই নামক প্রাণীটি বলে এসেছে তাঁকে।আরুর ধারণা এই কথাটি বললে ওর এক্সাম ভালো হয়।আবেশ ফোনে বারবার সিয়ামকে কল দিচ্ছে কিন্তু পাচ্ছে না।তখন ওই কথাটি শোনার পর কোনো বাক্য ব্যয় না চুপচাপ ওখান থেকে চলে গেছে সে।আবেশ স্পষ্ট ওর চোখে পানির আভাস পেয়েছে কিন্তু কিছু করতে পারে নি।কলেজ রেখে যাওয়া অসম্ভব ছিলো।পিছু ডেকেছে অনেক কিন্তু লাভ হয় নি।বাইক স্টার্ট দিয়ে কয়েক সেকেন্ডে উধাও সে।কিছুক্ষণ পর আবেশের ফোনে ম্যাসেজ আসলো,
“আই এম ওকে!ডোন্ট ওয়্যারি মিটিংয়ে আছি আর এসব যেন সিরাত ঘুণাক্ষরেও না জানে।রিয়াও যেন ওকে না জানায় বারন করিস।পরে কথা হবে”।
❤️❤️❤️
আজ আবেশদের বাসায় এসেছে সিরাত।এক্সাম শেষ হয়েছে গতকাল।এই কদিন মন দিয়ে এক্সাম দিয়েছে সিরাত।আবেশের সাথে খুব একটা দেখা হয়নি তাঁর।মিঃ খান কল করে আসতে বলেছেন সিরাতকে।কিন্তু কেন আসতে বলেছেন সেটাই অজানা তাঁর।তবে তিন্নি ভাবী খুবই উৎফুল্ল।আজকে তাঁর ভাই বোন আসছে সে কারণে।ড্রয়িংরুমে এসে উনার সাথে কথা বলে বুঝা গেলো তেমন কোনো কারণ নেই।তার কথা এমনই ছিল
“আমার পূএবধু আমার বাড়িতে আসবে তাঁর কারণ লাগবে কেন?আমার তোমাকে দেখতে ইচ্ছে হয়েছে তাই আসতে বলেছি”।
“মেয়ের ত বাবা মায়ের কথা মনে পরে না কিন্তু এই বুড়ো বাবা মায়ের তাঁর কথা খুব মনে পড়ে সেজন্য এভাবে ডেকে আনা”।অভিমানী কন্ঠে বললেন মিসেস খান।বাবা মা শব্দটি শুনে লজ্জায় নুইয়ে গেলো সিরাত।আমতা আমতা করে বললো,”আসলে এই ক’দিন এক্সাম ছিল তো তাই আসা হয় নি”।তিন্নি ভাবি বললেন,
“আর তো কিছুদিন তাঁরপর দেখবো কীভাবে পালাও তুমি।আমার জা হওয়ার পর বাহানাগুলো কোথায় থাকে”।এই পরিবারের মানুষগুলো আজ লজ্জায় সাগরে ডুবিয়ে মারতে উদ্যত হয়েছে সেটা বুঝতে পেরে লজ্জা রাঙা মুখ নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে মিনমিনিয়ে বললো,
“আরু কোথায়”?
“ও নিজের ঘরেই আছে।তা বর কোথায় জিজ্ঞেস করলে না তো”?সোজাসাপ্টা প্রশ্ন আবিদের।এবার আরুর মরে যেতে ইচ্ছে করছে।ইচ্ছে করে সবাই এমন করছে।লজ্জায় মাথা নুইয়ে সামনে পা বাড়াতেই তিন্নি হাস্যজ্জ্বল মুখে সামনে এসে দাঁড়িয়ে এক কাপ কফি হাতে ধরিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো,”তোমার বর ঘরেই আছে।এই ভর সন্ধ্যায় বউয়ের হাতের কফি ইসস জমে ক্ষীর”।কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে মূহুর্তেই উধাও হয়ে গেলেন তিঁনি।সিরাত এখন মহাবিপদে আছে।এনগেইজমেন্টের পর থেকে আবেশ কেমন পাল্টে যেতে শুরু করেছে।আগের মতো গম্ভীর ভাবটা চলে যাচ্ছে আস্তে ধীরে।সিরাতের প্রতি ওর ব্যবহার অন্যকিছুর আভাস দিচ্ছে।জানান দিচ্ছে নতুন প্রণয়ের।
#চলবে