ভোরের_কুয়াশা
#পর্বঃ১৯
#Misty_Meye(মরিয়ম)
আমার ভোরকে দেখে ভিষন হাসি পাচ্ছে।ভোরকে এখন একদম লাল টমেটোর মতো দেখাচ্ছে।আমার খুব ইচ্ছা করছে ভোরের এই মুহূর্তের একটা ছবি তোলার।কিন্তু ইচ্ছাটা মনে রেখেই আমি যে আসছে তার সাথে হেসে হেসে কথা বলছি।অত:পর সবার সাথে আলাপ করিয়ে দিচ্ছি আমার কাজিন হিসেবে।এবার ভোরের কাছে এসে,,,,,
___ভোর ও আমার,,,,,
কিছু বলার আগেই ও চোখ গরম করে অন্যদিকে সরে যায়।আর আমি মুচকি হেসে মনে মনে বলি,,,,,কাজ হচ্ছে।ভোর জ্বলছে।হিহিহি।
___ভাবি ও কে?(বিন্দু)
___ও আমার কাজিন শিশির।বিদেশ থেকে সোজা এখানেই চলে আসছে।
___ওহ,,,,
এরপর আমি, বিন্দু, শিশির কথা বলছি।আমার শাড়ির কুচি খুলে যাচ্ছে তাই আমি ওদের কথা বলতে বলে উপরে আমার ঘরে এসে শাড়ি ঠিক করছি।তখনই দরজা বন্ধ করার শব্দে আমি পিছনে ফিরে দেখি ভোর দরজা বন্ধ করে আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
___কি ব্যাপার আপপপনি,,,,এখানে কেনোওও,,আমি শাড়ি ঠিক করছিতো?(আমি)
___ওই ছেলেটা কে?(ভোর)
___কোওওওন ছেলেটা,,,,,(তুতলিয়ে)
___যার সাথে এতোক্ষন হেসে হেসে কথা বলছিলে সে,,,,,,,
___ওওও,,,,,,আপনি ওর কথা বলছিলেন?ও তো আমার কাজিন।
___শুধুই কাজিন নাকি অন্যকিছু।
___হ্যা,,,,অন্যকিছুও তো।
___অন্যকিছু মানে,,,,(অবাক হয়ে)
___অন্যকিছু মানে অন্যকিছু।
___কি বোঝাতে চাইছো তুমি সোজাসুজি বলো।
___হুম,,,বলছি।আসলে আপনি একা থাকতে পারবেন না।তাই আপনি রিমিকে বিয়ে করছেন।তাইতো,,,,তাহলে আমি কেনো শুধু শুধু একা থাকবো।আর তাছাড়া শিশির দেখতে খুব হ্যান্ডসাম।আমারতো অনেক অনেক ভালো লাগে।তাই এতো ভালো ছেলেকে শুধু শুধু কেনো ছাড়বো।তাই ভাবছি ওকেই আমি বিয়ে করবো।এছাড়াও ও কিন্তু রাজি আছে।
___রাজি আছে মানে,,,,,,(ভ্রু কুঁচকিয়ে)
___রাজি আছে মানে রাজিই আছে।আপনার এতো প্রবলেম হচ্ছে কেনো বলেনতো।আপনার আর রিমির না আজকে এংগেজমেন্ট।
___হুমতো,,,,,
___তো মানে,,,,নিচে যান।সবাই আপনার জন্য ওয়েট করছে।আর আমি ও যাই শিশিরও তো আমার জন্য ওয়েট করছে নিচে।আর ওর খেয়ালতো আমাকেই রাখতে হবে তাই না।,,,,,
বলে ভোরের পাশ কাটিয়ে নিচে চলে যাই।ভোর ও জোরে জোরে হেটে নিচে আসে।এখন ভোরকে যেই দেখবে সেই বলবে ভোর এখন একদম ঠিক নেই।ওর মধ্যে কিছু একটা হচ্ছে।আর তা সকলে খেয়াল না করলেও আমি ঠিক খেয়াল করছি।
এরপর আংটি পরানোর সময় ভোর আর রিমি দুইজনকেই পাশাপাশি দাড় করিয়েছে।ভোর রিমিকে আংটি পরাচ্ছেনা দেখে আমার মনে খুশিতে লাড্ডু ফুটছে।হয়তো ভোর এখন বলবে ও বিয়ে করবে না।তারপর অনেক সময় পর ভোর রিমিকে আংটি পড়িয়ে দেয়। আর আমার মন আবার খারাপ হয়ে যায়।মনের কোথাও একটা খুব কষ্ট হচ্ছে।তবুও নিজেকে অনেক কষ্টে সামলিয়ে নিলাম।
ওদের আংটি বদল শেষ হলে সবাই নাচ-গান করছে।আমি ভোর কে দেখানোর জন্য ইচ্ছে করেই আমি আর শিশির ও নাচছি। শিশির আর আমি খুব কাছাকাছি হয়ে নাচছি। ভোরকে দেখানোর জন্য আমরা বিভিন্ন এংগেলে নাচচ্ছি।
ভোর ও তা দেখে রেগে রিমিকে নিয়ে নাচতে লাগলো। আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি নাচের ফাকে ফাকে ভোর আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে।কিন্তু আমি তা একদম পাত্তা দিচ্ছিনা।আমি নাচছি আর শিশিরের সাথে হাসছি।ভোর তা দেখে আরো রেগে উপরে চলে যায়।
অনুষ্ঠান শেষ করে আমি শিশিরকে তার ঘরে নিয়ে গেলাম।
তারপর আজকের সবকিছু বললাম।
___কুয়াশা,,,,এটা কি ঠিক হচ্ছে।
___কোনটা?
___এইযে তুই ভোরকে বললি তুই আমাকে বিয়ে করবি।
___উফঃ চুপ করতো তুই।ওই ভোর কি করছে আমার সাথে।সেটা একবার ভাব তুই।জানি আমি ঠিক করছিনা।কিন্তু ওই ভোরও একদম ঠিক করেনি আমার সাথে।তুইতো জানিস,,,,,ওরে শিক্ষা দিতেই আমার এই প্লেন।আমি ওর মতো করেই ওরে শিক্ষা দিবো।
___কিন্তু এতে কাজ হবেতো?
___একশো পার্সেন্ট কাজ হবে।আমি আজকে ভোরকে রাগতে দেখছি।আর তাছাড়া ওকে দেখে আমার মনে হচ্ছে ওর জেলাস হচ্ছে।যা আমি চাই।
___এংগেজমেন্ট কিন্তু হয়ে গেছে।
___হুম।বিয়েতো হয়নি।
___জানি না।পড়ে যদি সত্যি সত্যি বিয়ে করে নেয়।
___তুই বেশি কথা বলিস।আচ্ছা শোন তুই কিন্তু ভালো করে অভিনয় করবি।ধরা পরলে চলবে না।
___তুই টেনশন নিস না।আমরা ধরা পরবো না।
___হুম,,,,আচ্ছা তুই এতোদিন বিদেশ ছিলি কোন মেয়ের সাথে রিলেশন করিসনি।
___তোর কি মনে হয়?
___আমি বুঝতে পারছিনা।
___না,,,আমার কোন রিলেশন নাই।
___বাহঃ বেশ ভালো।
___হুম।
তারপর আরো অনেক গল্প করে আমার রুমে গিয়ে দেখি ভোর খাটে বসে আছে।
___একি,,, আপনি এখনো ঘুমাননি,,,,
___এতোক্ষন কোথায় ছিলে তুমি?(ভোর)
___কেনো আমার হবু জামাইয়ের ঘরে।
___কুয়াশা,,, আমি তোমার জামাই।ওই ছেলেটা না।
___হুম,,,,তো কি হইছে।কিছুদিন পরতো আপনি আমাকে ডিভোর্স দিবেন তখন।
___দিবো।এখনোতো দেই নাই।তাহলে এতো কথা বলছো কেন?
___তাড়াতাড়ি দিয়ে দিন।তাহলে আমি শিশিরকে ও তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে পারবো।
___কিইইইই,,,,,
___আপনি যখন রিমির কাছে যেতেন অনেক ক্ষন থাকতেন তখন কি আমি আপনাকে কিছু বলতাম।তাহলে এখন আপনি কেনো আমার সাথে এগুলা বলছেন।সরুন,,,, আমি ঘুমাবো।
বলে আমি শুয়ে পড়ি।আর ভোর ও শুয়ে পড়ে।
সকালে,,,,,
সকলের নাশতা দিয়ে আমি শিশিরের নাশতাটা নিয়ে ওর ঘরে চলে যাই।ভোর আমার পিছন পিছন আসছে আমি ঠিক বুঝতে পারছি।তাই ওকে রাগানোর জন্য শিশিরের সাথে আমি আরও বেশি করে মিশছি।
___শিশির উঠো,,,,,,অনেক সকাল হয়ে গেছে।আমি তোমার জন্য নাশতা নিয়ে আসছি জান।(আমি শিশিরকে মজা করে জান আর শিশির আমাকে জানু বলে।আর আমাদের মধ্যে তুইই চলে।কিন্তু ভোরকে শোনানোর জন্য তুমি বলছি।)
___কি ব্যাপার জানু,,,,,এভাবে আজকে সকালে ডাকছো কেনো।(শিশির)
___(শিশিরকে একটা চিমটি কাটি),,,,
___আউচ,,,,,কি……..
আমি দরজায় ইশারা করতেই ও বুঝে যায়।
___তোমার জন্য খাবার এনেছি,,,,,(আমি)
___ও তাই নাকি,জানু,,,,
___হ্যা,,,,,যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো।আমরা একসাথেই খাবো কেমন?
___ওকে জানু,,,,,,,
বলে ওয়াশরুমে চলে যায়।আর ভোরতো লুকিয়ে লুকিয়ে ,,,,,,,,,,,,,,,,
চলবে…………………