#তবুও ভালোবাসি
#পর্ব_১১
#রেজওয়ানা_রমা
সকালে ঘুম থেকে উঠে রিয়ান পিটি করে মেস এ আসে। গোসল করে রেডি হয় অফিসের জন্য। বের হওয়ার পূর্বে সকালের নাস্তা করে মেহুল কে ফোন দেয়। মেহুল তখন রান্না ঘরে মায়ের হাতে হাতে কাজ করছে। ফোন টা রুমে তাও silent করা বিধায় সকালে আর কথা হলো না। রিয়ান নাস্তা করে অফিসে চলে যায়। আর এদিকে মেহুল সবাই কে নাস্তা করিয়ে নিজেও নাস্তা করে নেয়। নাস্তা করে নিজের রুমে আসে। বিছানায় বসে ফোন হাতে নিতেই দেখে কত গুলো মেসেজ আর মিসড কল। কল দিয়েছিলো রিয়ান। কিন্তু মেহুল আর কল ব্যাক করে নি। আর মেসেজ দিয়েছে ঈশান।লিখেছে
“Good morning Jan”
মেহুল রিপ্লাই দিলো,
Good morning
সাথে সাথে আবার মেসেজ এলো
ki korcho?
-kichu na
-nasta korecho
-hmm
-tumi?
-hmm
এভাবেই চলতে থাকল তাদের কথা বলা। হটাৎ ঘড়ির দিকে চোখ যেতেই মনে পড়ে কলেজে যাওয়ার কথা। বিয়ের চক্করে কিছু দিনের ছুটিতে ছিল। আজই যে জয়েন করতে হবে। তারাতারি উঠে ওয়াসরুমে চলে যায়। বের হয়ে রেডি হতে শুরু করে দেয়।
তারাতারি করে মেহুল রেডি হয়ে নিচে আসে আর মা মা করে ডাকতে থাকে।
-কিরে কোথায় যাচ্ছিস নাকি?
– হ্যাঁ মা। কলেজ যাচ্ছি। আজকে থেকে জয়েন। আমি যাচ্ছি মা।
-রিফা কে নিয়ে যা। রিফাও তো যাবে।
– ওও আমি একদম ভুলে গিয়েছি। কোথায় ও?
-এই তো আমি চলে এসেছি ভাবি( সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে নামতে রিফা বলে)
-আরে চলো তারাতারি 10 টাই আমার ক্লাস আছে। আজকে আবার আমার কলেজে ফাস্ট ক্লাস। একটু নার্ভাস আছি। চলো চলো
-হুম চলো ভাবি
দুইজনই গাড়ি তে উঠে বসে পড়ে। রিফা ড্রাইভার কে বলে,
– আব্বাস ভাই তারাতারি চলো
– জ্বী আফামনি
গাড়িতে মেহুল আর রিফা গল্প করতে থাকে। হঠাৎ মেহুলের ফোন বেজে উঠে।
আর এদিকে রিয়ানের কাজে মন নেই। সকাল থেকে তার প্রেয়সীর সাথে কথা হয় নি। প্রতি মূহুর্তে সে তাকে মিস করছে। রিয়ান আর কিছু না ভেবে বলে আবারও ফোন দেয় মেহুল কে। কিন্তু ওয়াটিং পাচ্ছে। রিয়ান ভাবে কার সাথে কথা বলছে মেহুল।
আমি যে সকালে কল দিয়েছি সেটা কি ও দেখে নি। তাও একবার কেন কল ব্যাক করল না? আমার জন্য কি কোনো অনুভূতি নেই ওর মনে,
মেহুল রিসিভ করে বলে,
-আসসালামু অলাইকুম
-ওলাইকুন আসসালাম
-ম্যাম আপনার পার্সেল টট
– ভাইয়া আমি বিকালে পার্সেল টা রিসিভ করতে চাচ্ছি।
– ওকে ম্যাম
– ওকে থ্যাংকস
বলেই ফোন কেটে দেয়। রিফা জিজ্ঞাসা করে,
-কিসের পার্সল ভাবি?
-জানি না গো। কে পাঠিয়েছে তাও জানি না। আচ্ছা রিফা তুমি বিকালে যাবে আমার সাথে?
কলেজ ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে পার্সেল টা নিয়ে আসব।
-আচ্ছা ভাবি
কিছুক্ষণের মধ্যে গাড়ি থাকে কলেজের সামনে। রিফা গাড়ি থেকে নেমে চলে যায় নিজের ক্লাসে আর ভাবি কে বিদায় জানিয়ে যায়। মেহুল ড্রাইভার কে বলে
– তুমি বাড়ি চলে যাও আমরা একাই চলে আসব।
-কিন্তু ম্যাডাম বড় স্যার আর বড় ম্যাডাম যদি জানতে পারেন খুব বকা বকি করবেন
– আমি সামলে নেবো বাবা মা কে।
-আর ছোট সাহেব?
– উনি কিভাবে জানবেন? তুমি আমি বা বাড়ির কেউ না বললে উনি জানবেন না।
-না ম্যাডাম। ছোট সাহেব কে হালকা করে নিবেন না। উনি এইবাড়ির সব খবর রাখেন। কেউ না বললেও উনি জেনে জান। কেউ কিছু লুকাতে পারে না।
-কিহ(ভ্রু কুচকিয়ে )
-জ্বী ম্যাডাম।
-ঠিক আছে। তুমি যাও আমি আছি তো।
-কিন্তু,
-যেতে বলেছি ( ধমক দিয়ে)
-জ্বী
মেহুল চলে যায় অফিস রুমে আর ড্রাইভার বাড়ি ফিরে যায়। মেহুল অফিসে সকল কার্যক্রম শেষ করে ক্লাসে যাবে। ইন্টার ফাস্ট ইয়ারের ক্লাস। ভাইস প্রিন্সিপাল স্যার মেহুল কে সাথে নিয়ে কলেজের সব ক্লাসে যায় এবং পরিচয় করিয়ে দেয়। এবাদ ইন্টার ফাস্ট ইয়ারের ক্লাসে যান। ক্লাসে সবার উদ্দেশ্যে বলেন,
– স্টুডেন্স ইনি মেহুল ইসলাম তোমাদের নিউ ইংলিশ টিচার। এখন থেকে ইংলিশ ক্লাস ইনিই নিবেন। আর ইনিই তোমাদের ক্লাস টিচার।
ঠিক আছে মেহুল আপনি ক্লাস নিন। আমি আসছি। বলেই ভাইস প্রিন্সিপাল স্যার বিদায় নেন।
আর মেহুল সবার সাথে পরিচিত হয়ে ক্লাস নেয়। ক্লাস শেষে অফিসে গিয়ে বসে। এখন মেহুলের অফ পিরিয়ড চলছে। এর পর সেকেন্ড ইয়ারের ক্লাস। মেহুল ক্লাসে চলে যায় যথাযথ সময়ে।এভাবেই সব ক্লাস শেষ করে কলেজ ছুটি হয় ৩ টায়।
রিফা দাড়িয়ে আছে মেহুলের জন্য। কিন্তু মেহুল অফিসে কিছু কাজে ব্যস্ত থাকে। তাই মেহুলের আসতে আসতে প্রায় চার টা বাজে। রিফা তো রেগে আগুন,
– তোমার এত সময় লাগে আসতে ( রেগে)
-সরি নন্দিনী একটা কাজে আটকে গিয়েছিলাম। তাও তো তারাতাই এসেছি😁
– এক ঘন্টা দাড়িয়ে রেখে বলছো তারাতারি এসেছো?
-হিহিহি চলো চলো
– হুম চলো
দুই জনই হাটতে থাকে কারন যে এড্রেস টা দেওয়া আছে সেটা কলেজ থেকে বেশি দূরে নয়। রিফা আর মেহুল আজকে সারাদিনের ক্লাসের গল্প করে আর হাটতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা পৌঁছে যায়। মেহুল পার্সেল টা রিসিভ করে। রিফা পার্সেল টা দেখে বলে,
– কি আছে এতে ভাবি
-আমি কি ভাবে জানবো🙄
-কে পাঠিয়েছে? ভাইয়া নাকি?
-জানি না। বাড়ি গিয়ে দেখলেই বুঝতে পারবো। চলো যাই,
– কিসে যাবো?
– রিকশায়
-ঠিক আছে চলো। কিন্তু গাড়ি নেই কেন? আব্বাস ভাই কে চলে যেতে বলেছো নাকি
-হুম।
-কেন
-এমনি। চলো।
একটা রিকশায় উঠে বাড়ির দিকে রওনা দেয় তারা। বাড়ি ফিরে দুইজনই ফ্রেস হয়ে নেয়। একজন সার্ভেন্ট এসে মেহুল কে খাবার দিয়ে যায় মেহুল অনেক ক্লান্ত এবং বেশ ক্ষুদার্থও। মেহুল খাবার খেয়ে একটু বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই মনে পড়ে পার্সেলের কথা। তারাতারি উঠে পার্সেল টা খুলে যা দেখে তার জন্য সে একদম প্রস্তুত ছিল না।
.
.
.
.
.
#চলবে,,,,