ভালোবাসা অবিরাম পর্ব-১৪

0
684

#ভালোবাসা_অবিরাম
#পর্বঃ১৪
#আইরাত_বিনতে_হিমি

হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে দাড়িয়ে আছে রিমি আর আফজাল শিকদার দুজনেই বারংবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে আর সামনের দিকে তাকাচ্ছে যেনো তারা অধীর আগ্রহে কারো অপেক্ষায় দাড়িয়ে আছে কিয়ৎক্ষণ পর বিমানবন্দরে গেট দিয়ে বাহির হলো একজন সুদর্শন পুরুষ দেখতে লম্বা ফর্সা মুখে খোচা খোচা দাড়ি গায়ে ব্লু ব্লেজার হাতে ব্রেন্ডের ওয়াচ যেনো এক দেখাতেই কেউ ক্রাশ খাবে সুদর্শন যুবকটিকে দেখে রিমি আর আফজাল শিকদার এগিয়ে গেলো আর তাকে জড়িয়ে ধরলো রিমি জড়িয়ে ধরে এক প্রকার কেদেঁই দিলো ছেলেটি তার কান্না দেখে বললো

আরে আপি তুই কাদছিস কেন বোকা এই দেখ তোর ভাই চলে এসেছে এখন তোর আর কেউ কিছু করতে পারবে না আমি সব ঠিক করে দিবো

পাশ থেকে আফজাল শিকদার বললো

হে হে বোঝাও বোনকে সেই যেদিন থেকে জানছে তার hospital certificate বাতিল সেইদিন থেকেচুপ হয়ে গেছে ভালো করে খাইনা পর্যন্ত আমি কতো বুঝাইছি একটু ধৈর্য্য ধরো সব ঠিক হয়ে যাবে এখনো তোমার ভাই আর তোমার বাবা বেচে আছে

আপি don’t cry plz তুই কাদলে আমার কষ্ট হয় যে

এইবার রিমি মাথা তুলে দাড়ালো চোখের পানি মুঝে সোজা হয়ে দাড়িয়ে ভাইয়ের হাত ধরে বললো

আমি আর কাদবো না ভাই তুই এসে গেছিস এখন আর আমার কোনো চিন্তা এখন আমরা দুজনে মিলে ঐ চৌধুরীদের ঘুম হারাম করবো যে আমার ঘুম আমার ভালোবাসা আমার কেরিয়ার কেরে নিছে আমি তাদের কাউকে ছাড়বো না

right আপি দেখই না ভাই আগে আগে কি করে

আফজাল শিকদার তাদের ভাই বোনের কথার মাজে বলে উঠে

আচ্ছা এইসব কথা এখন বাদ দেও আগে বাড়ি চলো তারপর ঠান্ডা মাথায় সব প্লান করা যাবে

ওকে বাপি চলো চল ভাই বাড়ি চল

হুম

তারপর তারা গাড়িতে বসে বাসায় চলে আসে। আসলে আফজাল শিকদারের এক ছেলে এক মেয়ে আর এই ছেলেই হলো তার ছেলে আয়মান শিকদার এতোদিন ব‍্যবসার কাজে আমেরিকায় ছিলো বোনের এত বড় ক্ষতির কথা শুনে তাইতো দেশে চলে আসছে

কলেজ গেইটের সামনে দাড়িয়ে আছে নিলু প্রায় ১ ঘন্টা হতে চললো সে বাহিরে দাড়িয়ে আছে কিন্তু আসফি আসফির এখনো আসার নাম নেই তাই সে একা দাঁড়িয়ে তার জন‍্য অপেক্ষা করছে আর বিরক্ত হচ্ছে এমন সময় তার সামনে একটা গাড়ি এসে জোরে ব্রেক কসলো নিলুর মেজাজ তুঙ্গে উঠলো তাই সে চেচিয়ে বললো

what rubbish nonsense চোখে দেখেন না নাকি এইভাবে কেউ গায়ের উপরে গাড়ি আনে এখনিই তো একটা এক্সিডেন্ট হয়ে যেতো

এইবার গাড়ির দরজা খুলে একটা ছেলে বাহির হয়ে আসলো আর বললো

সরি মিস আমি ফলো করিনি আসলো আমাকে আরো একটু কেয়ারফুলি গাড়ি চালানো উচিত ছিলো সরি

Its okk next time গাড়ি দেখে চালাবেন

অবশ্যই তা মিস আপনার কোথাও লাগে নিতো

নাহ আমি ঠিক আছি

ওহহ আচ্ছা তা আপনার নাম

বলতে intrest নয়

কেনো আপনার নাম কি ভুত পেতের নাকি

আজব তো আমি আপনার সাথে কথা বলতে চায়ছি না

ওকে ফাইন বাট আমি আমার পরিচয় দিয়ে যায় যদি in future কাজে লাগে কে বলতে পারে আমাদের নাকি আবার দেখাই হয়ে গেলো

অসহ‍্য

ওকে ওকে আর অসহ্য হতে হবে না আমি আয়মান আজই বিদেশ থেকে বাসায় আসছি বাই ভালো থাকবেন

এই কথা বলে আয়মান গাড়িতে উঠে বসলো আর দরজা লাগিয়ে দিলো আর মনে মনে বললো

মিসেস নিলিমা চৌধুরী তোমার অনেক দেমাক তায় না তোমার জন‍্য আমার বোন প্রতিদিন কাদে তোমার দিন শেষ নিলিমা তোমার দিন শেষ আসফি চৌধুরীর প্রাণ ভুমরা তুমি তোমাকেই যদি শেষ করে দেয় তাহলে আর আসফি চৌধুরী উঠে দাড়াতে পারবে না।আয়মান সান গ্লাসটা ঠিক করে গাড়ি নিয়ে চলে গেলো আয়মানের গাড়ি যেতে যেতেই আসফির গাড়ি চলে আসলো দুইটা গাড়ি ক্রোজ করলো আসফি নিলুর সামনে গাড়ি থামিয়ে গাড়ি থেকে নেমে জিঙ্গাসা করলো কে ছিলো ঐ লোকটা

চিনি না

কি কলছিলো এইখানে

তারপর নিলু সব কথা আসফিকে বললো

আসফির যেনো বুকের বা পাশটা চিনচিন করে উঠলো তাও ছেলেটার নাম জানতে চায়লো নিলু বললো

নাম বললো আয়মান

এবার যেনো আসফির ভয়ে শিরদারা জেগে উঠলো আজ জেনো ভয়ংকর কিছু ঘটতে যেয়েও ঘটে নি আসফি নিলুকে টান দিয়ে বুকের মধ‍্যে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো যেনো ছেড়ে দিলে কেউ কেরে নিয়ে যাবে আসফির এমন আচরণে নিলু থতমত খেয়ে গেলো তাও সে চুপ করে আসফিকে বোঝার চেষ্টা করলো নিলু যেনো আসফির হৃদস্পন্দ শুনতে পাচ্ছে তার হৃদস্পন্দ অনেক দ্রুত হচ্ছে আর নিলু মার কাছে শুনেছে কেউ ভীষন ভয় পেলে এমন হয় তাহলে মি আসফি ভয় পেয়েছে কিন্তু কেনো

আসফি এইবার নিলুকে ছেড়ে দিলো আর বললো যাও গাড়িতে বসো আর কখনো আমার লেট হবে না আর লেট হলে গার্ড পাঠিয়ে দিবো

নিলু মাথা নাড়ালো

তারপর দুজন গাড়িতে বসলো গাড়ি চলছে তার আপন গতিতে গাড়িতে দুজন মানব মানবি একদম নিশ্চুপ এই নির্জনতার মাঝে নিলু চিল্লিয়ে উঠলো

মি আসফি গাড়ি থামান গাড়ি থামান বলছি

আসফি জোরে গাড়িতে ব্রেক কষে আর বলে

কি হয়েছে নিলু any problem আমায় বলো

হুম ঐ দেখেন ফুচকা আমি ফুচকা খাব

আসফি নিজের বুকের মধ‍্যে হাত দিয়ে জোরে একটা নিঃশ্বাস ছাড়লো যেনো তার নিঃশ্বাসটা এখনি বন্ধ হয়ে যাচ্ছির নিলুর কথায় তা ফিরে আসলো তবে কপালে তার সুখ‍্য ভাজ করলো সে জেনো চটে গেছে রাগি গলায় সে বলে উঠলো

what nonsense এই সামান্য ব‍্যাপারে কেউ গাড়ি এইভাবে থামাতে বলে জানো আমার কি অবস্তা হয়েছিল আর যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো

আপনার কাছে সামান‍্য ব‍্যাপার হতে পারে কিন্তু আমার কাছে নয় আমার কাছে ফুচকা মানে অসামান্য ব‍্যাপার চলুন না ফুচকা খাবো

না

প্লিজ চলুন না ফুচকা খাবো প্লিজ

নিলু আসফির হাত ধরে জোড়া জোড়ি করছে আর আসফি এক ধ‍্যানে নিলুকে দেখছে এইভাবে কখনো মেয়েটাকে দেখা হয়নি নিলুর গায়ের রং হয়তো অতো ফর্সা নয় একটু চাপা চোখ দুটো টানা টানা কাজল না দিলেও মনে হবে কাজল দেওয়া ঠোট দুটো গোলাপের পাপড়ির মতো হাসলে গালে টোল পরে চুল বেশ লম্বা তবে হতো ঘন নয় হাইট ততোটাও নয় কিন্তু সব মিলিয়ে দেখতে মাশাল্লাহ্ আসফির এমন চাহনি দেখে নিলু আসফির হাত ছেড়ে দিলো আর বললো

এইভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো

এমনি চলো তোমায় ফুচকা খাওয়ায় তবে এইখানে না এইখানের পরিবেশ ভালো না অন‍্য কোথাও

না না আমি এইখানে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে খাবো

নিলু একদম অবাধ‍্যতা করবে না বলছি নাহলে কিন্তু ভালো হবে না

নিলু গাল ফুলিয়ে বসে রইলো তা দেখে আসফি মুচকি হাসলো আর নিজের সানগ্লাসটা পরে গাড়ি start দিলো

#চলবে