ভালোবাসা অবিরাম পর্ব-১৭+১৮

0
616

#ভালোবাসা_অবিরাম
#পর্বঃ১৭
#আইরাত_বিনতে_হিমি

বিকেল ৪ টাহ হোটেল রুমে ঘুমাচ্ছে নিলু আর আসফি। কিছুক্ষণ পর আসফি ঘুম থেকে উঠে নিলুকে জাগিয়ে তুলে তারপর তারা রেডি হয়ে ঘুরতে বাহির হয় দুজনেই কালো কালারের ড্রেস পরেছে নিলু কালো শাড়ি আর আসফি কালো শার্ট তারা হোটেল থেকে হেটে একটা বাস স্টপে আসে এবং সেখান থেকে তারা জাফলং যায় সেখানকার পরিবেশ দেখে নিলু খুশিতে আত্মহারা হয়ে উঠে নিলুর খুশির সেই কিছু মুহূর্ত আসফি ক‍্যামেরা বন্ধি করে ফেলে নিলু আসফির কাছে এসে বলে নৌকায় উঠবে আসফিও কিছু না বলে তাকে নৌকায় নিয়ে যায় তারপর তারা নৌকায় কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করে এক পর্যায় তারা ঘুরতে ঘুরতে ঝর্নার কাছে চলে আসে সেখানে এসে নিলু ঝর্নার পানিতে হাত রাখে আর খুশিতে চিল্লিয়ে উঠে একটু পর আসফি নিলুর হাত ধরে একটি পাহাড়ে নিয়ে যায় আর তাকে সামনে দাড় করিয়ে পেছন থেকে তাকে জড়িয়ে ধরে তার মুখ নিলুর কন্ঠদেশে রাখে আর বলে নিলু আমি তোমার ভালোবাসি

নিলু যেনো আসফির কথা শুনে বরফ হয়ে যায় আসফি আরও বলে

তুমি কি আমায় ভালোবাসো হবে কি আমার রাজ‍্যের রাণী হবে কি আমার ভালোবাসার একান্ত মানুষ নিলু তুমি আমার চন্দ‍্রকান্তা যার রূপের বর্ণনা শেষ করা যাবে না

নিলু মুগ্ধ হয়ে আসফির কথা শুনচ্ছে তার হাত পা কাপচ্ছে আবেগে চোখে পানি চলে এসেছে এতদিন পর সে অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দ শুনতে পেয়েছে

নিলু এইবার পিছন ফিরে তাকালো আসফির দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে বললো

ঐ বুকে একটু ঠায় দিবেন

আসফি তড়িৎ গতিতে তাকে নিজের বুকে জড়িয়ে নিলো অসংখ্য চুমুতে তাকে ভরিয়ে দিলো

প্রকৃতিও যেনো আজ তাদের ভালোবাসা দেখে হাসছে বাহবা দিচ্ছে

কিন্তু দূর থেকে দুই জোড়া আখি তাদের দেখছে আর জ্বলছে তাদের মধ‍্যে থেকে একজন বলে উঠলো

ভাই কিছু কর নাহলে কিন্তু এইবার আমিই কিছু করে বসবো ঠিক তখনই আয়মান তার আশে পাশের লোকজনকে ইশারা করলো তখন তারা আসফি আর নিলুকে চারদিক দিয়ে ঘিরে ধরলো সন্ধ্যার সময় তাই আশে পাশে কেউ নেই কিন্তু এতজনকে একসাথে দেখে নিলু ঘাবরে যায় আর বলে মি চৌধুরী এরা কারা আসফি নিলুকে এক হাত দিয়ে নিজের বুকের মধ‍্যে আগলে রাখে আর ওদের কে বলে

কারা তোমরা

সবাই হেসে উঠে ঠিক তখনই পেছন থেকে আয়মান আর রিমি আসে আর হাসি মুখে আয়মান বলে

ওয়েলকাম মি চৌধুরীর ওয়েলকাম

আসফি চমকিত নয়নে তাকিয়ে বলে আয়মান শিকদার

হ‍্যা আমি তুমি কি ভাবছিলে আমার বোনকে কষ্ট দিয়ে সিলেটে এসে বউয়ের সাথে প্রেম করবে আর আমি তা চেয়ে চেয়ে দেখবো নো মি চৌধুরী এতো সহজ নয় সবকিছু

আয়মান কথা শেষ করে একটা মহিলা গার্ডকে বলে নিলুকে নিয়ে আসতে

মহিলা নিলুকে নিতে গেলে আসফি সবার সাথে ফাইট করে কেউ নিলুর গায়ে হাত পযর্ন্ত দিতে পারে না আসফি একাই সবার সাথে ফাইট করে কিন্তু আসফি এতটাই ওদের মারতে ব‍্যস্ত ছিলো যে সে খেয়ালই করেনি তার পেছনে কেউ আছে ঠিক পেছন থেকেই তার মাথার মধ‍্যে রড দিয়ে আঘাত করে একজন আসফি আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাটিতে পরে যায় নিলু চিৎকার দিয়ে ওঠে মি চৌধুরী
আসফি নিভু নিভু চোখে সামনে তাকায় আর দেখতে পায় তার অতি কাছের মানুষই তাকে আঘাত করেছে তাই সে নিচু স্বরে বলে

রিসাদ ভাই তুমি

হ‍্যা আমি আসফি আমি তুই আমার জীবনটাকে অতিষ্ট করে দিয়েছিস বাড়িতে সব জায়গায় তোর নাম তাই তোকে শেষ করতে আমি শিকদারদের সাথে হাত মিলিয়েছি

এই কথা বলে রিসাদ আয়মানের সাথে হাত মিলায় আর সবাইকে আসফিকে মারতে বলে

সবাই আসফিকে মারছে আসফির সারা শরীর রক্তে জূবুথুব পাশে নিলুকে বেধে রিমি মারছে নিজের শরীরের জালা মিটাচ্ছে তখনই নিলু কান্না মিশ্রিত কন্ঠে বলে উঠে

মি শিকদার আপনি আমার যা ইচ্ছা তাই করুন কিন্তু আসফিকে ছেড়ে দিন প্লিজ দোয়া করুন
আসফি পাশ থেকে বলে উঠে নিলু শয়তানের কাছে দয়া চাইতে নেয়

তবুও নিলু আকুতি মিনতি করে যাচ্ছে ঠিক তখনই আয়মান বলে উঠে ওকে ফাইন একটা সুযোগ দেওয়া যায় চলো এক কাজ করো তুমি এই পাহাড় থেকে লাফ দাও i promise আমি আসফিকে ছেড়ে দেবো প্রাণে বেচে যাবে আসফি

আসফি নিভু নিভু কন্ঠে বলে উঠলো না নিলু এমন কোনো কিছুই তুমি করবে না আমার যাই হয়ে যাক না কেন

কিন্তু নিলু আসফির কথা শুনে নি সে তার বাধন খুলে দিতে বলে আর আস্তে আস্তে পাহাড়ের কিনারায় চলে যায় আর আসফিকে বলে

আসফি আমি চলে যাচ্ছি অনেক দূর হয়তো আর কোনো দিন দেখা হবে না হয়তো আর কখনো বলতে পারবো না ভালোবাসি হয়তো আর কখনো ঐ বুকে মাথা রাখতে পারবো না কিন্তু আপনি ঠিক মতোন থাকবেন একদম ভেঙ্গে পরবেন না আমি আপনার সাথেই থাকবো যখন খুব বেশি মন খারাপ হবে তখন ঐ আকাশে তাকাবেন ঐ চাদের মাঝে আমায় খুজে পাবেন ভালো থাকবেন

এই কথা বলে নিলু পিছনে পা দেয় সে হারিয়ে যায় সে এখন শুন্নে ভাসছে

#চলবে

#ভালোবাসা_অবিরাম
#পর্বঃ১৮
#আইরাত_বিনতে_হিমি

সিলেট হাসপাতালে বেডে সুয়ে আছে আসফি কিছুক্ষণ আগেই তার ওটি শেষ হয়েছে প্রচন্ড ব্লেডিং হওয়ার কারণে সেন্স ফিরতে একটু সময় লাগবে তারই পাশে মাথা হাতের উপর ভর দিয়ে বসে আছে আদি তার মাথা কাজ করছে না কি থেকে কি হয়ে গেলো কি জন‍্য তাদের সিলেট পাঠালো আর কি হলো কেবিনের বাহিরে পাগলের মতো কান্না করছে রেখা রেবা চৌধুরী তাদের সান্তনা দিচ্ছি রুমানা চৌধুরী আসলে রুমানা চৌধুরী একজন বিচক্ষণ মানুষ তাই বিপদে ভেঙ্গে পরেন না আশরাফ চৌধুরী আদনান চৌধুরী পুলিশের সাথে কথা বলছে শিকদারদের কোনো খোজ পাওয়া গেলো কিনা নিলুর কোনো হদিস পাওয়া গেলো কিনা তা জানতে চাইছে কিন্তু পুলিশ সঠিকভাবে কোনো Answer ই দিতে পারছে না তাই পাশে থেকে শাকিল চৌধুরী রেগে গিয়ে পুলিশের কলার চেপে ধরে আর বলে

আপনাদের সরকার রাখছে কেনো বলেন তো কোনো কাজই তো আপনারা আসেন না আমার ভাই আর ভাইয়ের এই অবস্থা কে করলো কেন করলো তাই তো ভালো করে বলতে পারছেন না

শাকিলকে থামানোর জন‍্য পিছন থেকে রিয়া তাকে সরিয়ে নিয়ে আসলো আর কাদতে কাদতে বললো

ঠাণ্ডা হয় তুমি এমন কেনো করছো কেন সব ঠিক হয়ে যাবে

আমি মাথা ঠিক রাখতে পারছি না রিয়া এরা কোনো কাজেরই না অসহ‍্য

এমন সময় কেবিন থেকে আদি বাহির হয়ে আসলো আর বললো সবাই তাড়াতাড়ি আসো আসফির সেন্স ফিরেছে তাড়াতাড়ি আসো আদির কথা শুনে সবাই তাড়াতাড়ি আসফির কেবিনে যায় ডাক্তারও যায় আসফি শোয়া থেকে উঠে বসে আর ঘটে যাওয়া সব ঘটনা মনে করতে থাকে যখন মনে পড়ে নিলু ঐ খাদে লাফ দিয়েছে তখন আসফি নিলু বলে চিৎকার দিয়ে উঠে তাকে থামানোর জন‍্য ডাক্তার বলে

ডাক্তার আসফি প্লিজ উত্তেজিত হবেন না আপনার জন‍্য এইটা এখন ঠিক না আপনি তো একজন ডাক্তার আমার কথা নিশ্চয় বুঝতে পারবেন

আসফি কারো কোনো কথা শুনে না হাতের কেনলা খুলে কেবিনের বাহিরে চলে আসে তাকে বাহির হতে দেখে সামনে থেকে রুমানা চৌধুরী আটকে দেয় আর বললো

আসফি তুমি আমার শান্ত মস্তিষ্কের শান্ত ছেলে আশা করি সব কাজ শান্ত মেজাজেই করবে আসফি রুমানা চৌধুরীর সামনে হাটু গেরে বসে পড়ে নিজের হাত দিয়ে মুখ ঢেকে বলে

বড় আম্মু আমার সামনে আমার নিলু এ খাদে ঝাপ দিলো আমি কিছুই করতে পারলাম না ওরা সব প্ল‍্যান মাফিক করেছে কেনো যে সবটা আগে থেকে আন্দাজ করতে পারলাম না এক মিনিটে আমার সম্পূর্ণ দুনিয়া ঘুরে গেছে বড় আম্মু ঐ শিকদাররা সব শেষ করে দিলো

আসফি শান্ত হও তুমি সব ঠিক হয়ে যাবে

আসফির ঘারের রগ ফুলে উঠছে হাত মুষ্ঠি বোদ্ধ হয়ে আসছে রাগি কন্ঠে আসফি বলে উঠলো

আমার নিলুকে যারা আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে তাদের কাউকে আমি ছাড়বো না I promise কাউকে ছাড়বো না আজ থেকে আসফি চৌধুরী তার পুরোনো ফর্মে ফিরে যাবে সব ধ্বংস করে দিবে

আসফির কথা শুনে সবার কলিজা কেপে উঠে কারণ আসফির অতীত খুবই ভয়ংকর সে আগে কোনো পেশাদার ডাক্তার ছিলো না সে কোনো মানব সেবায় ব্রত ছিলো সে ছিলো বিখ্যাত বিজনেস ম‍্যান এবং world king Mafia পরবর্তীতে ডাক্তার পাশ করার পর এইসব ছেড়ে দেয় কিন্তু নিলুকে হারিয়ে সে তার পুরোনো জগতে ফিরে যেতে চায়

আসফি হাসপাতাল থেকে বাহির হয়ে রাশেদ কে কল করে

হ‍্যালো রাশেদ

স‍্যার আপনি ঠিক আছেন তো স‍্যার আপনার পারমিশন ছাড়াই আমরা শিকদারদের খোজা শুরু করেছি

good job রাশেদ আমি আবার মাফিয়া জগতে ফিরতে চায়

কি বলছেন কি স‍্যার

হ‍্যা তুমি সব ব‍্যবস্থা করো আমি গোডাউনে আসছি ঐ শিখদারের দোলের একটাকেও ছাড়বে না আয়মান শিকদার খুব চালাক ভাবছে নিজেকে কিন্তু সে জানে না সে কোথায় থাবা দিছে দেখো এইবার আগে আগে কি হয়

ওকে স‍্যার আমি কৈলাসকে বলে দিচ্ছি ওহ আপনার জন‍্য সব ব‍্যবস্থা করে রাখবে

পিকনিক করতে ঘুরতে গিয়েছে আখি অনেক বছর পর সে দেশে এসেছে তাই ভাবজে কোথাও পিকনিকে যাবে তাই নদীর তীরে সব কাজিনরা মিলে পিকনিকে গিয়েছে হাটতে হাটতে আখি একটু দূরে চলে আসে আর দেখতে পায় নদীর পারে কেউ উপর হয়ে পরে আছে তাই সে দেড়ি না করে দ্রুত ঐখানে যায় আর দেখতে পায় একটা মেয়ে পরে আছে সে তাড়াতাড়ি মেয়েটার পালস চেক করে দেখে এখনো বেচে আছে তাই তাদের কাজিনদের ডাকে

guys এইদিকে আসো তাড়াতাড়ি এখানে একটা মেয়ে পরে আছে

সবাই তাড়াতাড়ি সেখানে যায় আর দেখে সত‍্যিই একটা মেয়ে পরে আছে তাদের মধ‍্যে থেকে একজন বলে উঠে

আখি মেয়েটা কে

জানিনা তবে বেচে আছে emergency hospital নিতে হবে

তাই তারা আর দেরি না করে তাকে hospital নিয়ে যায়

#চলবে