#ভালোবাসা_অবিরাম
#পর্বঃ২৪
#আইরাত_বিনতে_হিমি
শিকদার মহল হাতে পার্সেল নিয়ে বসে আছে আফজাল শিকদার আর আয়মান শিকদার। আয়মান শিকদার সামনে থাকা পার্সেলটা ঘুরিয়ে উপর-নিচ করে দেখছে। কোনো সমস্যা আছে কিনা। কিন্তু না কোনো সমস্যা খুজে পাওয়া যায়নি। তাই সে পার্সেলটি খুলতে শুরু করলো আর খুলেই যা দেখলো তা দেখে আয়মান এক চিৎকার দিলো
– আহ এইটা কি?
– কি হলো আয়মান চিৎকার দিলে কেনো কি আছে এতে।
– বাপি এতো কোনো মানুষের জিহ্বা তাও আবার রক্তেমাখানো। সাথে একটা চিরকুট আছে।
– খুলে দেখো কি লেখা
– জ্বি বাপি
আয়মান শিকদার চিলকুটি হাতে নিয়ে খুলে তা পড়তে শুরু করলো। চিলকুটের লেখা দেখা তার গা থরথর থরথর করে কাপতে শুরু করলো। চিলকুটে যা লিখা ছিলো
প্রিয়,
আয়মান শিকদার
কেমন আছো? আশা করি এই মুহূর্তে ভালো নেই। ভালো থাকার কথাও না। কেউ কি মানুষের রক্তমাখা জিহ্বা দেখে ভালো থাকতে পারে। নিশ্চয় না। ঠিক তুমিও না। আচ্ছা জানতে জানতে ইচ্ছে করছে না এই জিহ্বাটা কার। দাড়াও তোমার অপেক্ষা এবার শেষ করছি এই জিহ্বাটি হলো তোমার অতি আদরের বোন রিমি শিকদারের। সে এখন আমার হাতে বন্দি। আমার হাতে কেনো বলছি আমার খাচায় বন্দি। সে একটু বেশি বাড়াবাড়ি করছিলো তাই তার মুখের বাণীই কেরে নিয়েছি। কি ভালো করিনি। জানি তোমার কাছে মনে হবে ভালো করিনি। কিন্তু আমার যে বড্ড শান্তি লেগেছে। মি শিকদার যদি আপনি আপনার বোনের জীবন বাচাতে চান তবে আমার দেওয়া ঠিকানায় চলে আসবেন। ভুলেও পুলিশকে ইনফোর্ম করবেন না। কারণ আপনি খুব ভালো করেই জানেন পুলিশ আমার চুলও বেকা করতে পারবে না। সো নিজ দায়িত্বে আমার ঠিকানায় চলে আসবে ওকে। আজ এই পর্যন্তই। সামনাসামনি দেখা হচ্ছে।
ইতি তোমার
চিরশত্রু চৌধুরী
আয়মান চিলকুট পড়া শেষ করে শোফায় বসে পরে। তার এমন হাল দেখে আফজাল শিকদার বলে
কি হয়েছে আয়মান কোনো সমস্যা?
বাপি এই জিহ্বা এই জিহ্বা।
হুম বলো
আপির এই জিহ্বা
হোয়াট রিমির এই হাল করেছে কে?
আবার কে হতে পারে আপনি জানেন না। আসফি চৌধুরী।
কিহ ঐ আসফিকে খতম করে দিতে পারছিস না।
খতম তো করেই দিয়েছিলাম। শালার কই মাছের প্রাণ তাই বেচে গিয়েছে। তবে এইবার আর বাচবে না। ওর ডেরায় গিয়েই ওকে মারবো। আই প্রমিস ইউ বাপি। ওহ আমার বোনের গায়ে হাত দিয়েছে আমি ওকে ছারবো না। আই কিল ইউ।
তুমি একা নোও এবার আমিও যাবো তোমার সাথে। আমি দেখে নেবো ঐ পুচকে ছেলের কতো ক্ষমতা।
ওকে বাপি।
নিজের রুমে বসে বই পরছিলো মিষ্টি। মনে তার অনেক চিন্তা বড় আম্মুকি রাজি হলো নাকি বাড়ন করে দিছে। বাড়ন করে দিলে আমি কি করবো। আদিকে ছাড়া যে আমি থাকতে পারবো না। তাছাড়া ভাইয়াই বা কি করবে। নিশ্চয় ভাইয়া কিছু না কিছু করবে। তার ভাবনার মাঝে আসফির প্রবেশ ঘটে ঐ রুমে। আসফিকে দেখে মিষ্টি ভয় পেয়ে যায়। কারণ তার চোখদুটো লাল বর্ণ ধারন করে আছে। রাগে তার কপালের রগ ফুলে উঠেছে। তবুও ভয়ে ভয়ে জিঙ্গাসা করে
ভাইয়া কোনো সমস্যা
হুম তোর সাথে আমার কথা আছে।( গলার স্বর গম্ভীর করে)
বলো (ভয়ে ভয়ে)
বড় আম্মু বিয়েতে না করে দিয়েছে
কিহ। এখন কি করবে।
তুই কি চাস।
আমি জানিনা।
না জানলে তো চলবে না। একটা ডিসিশনে তো আসতে হবে।
ভাইয়া আমি কি বলব।
কি বলবি তুই জানিস না। তাহলে প্রেম কেন করছিস। কেন ভালোবাসছিস। ভালোবাসার আগে মনে ছিলো না ফ্যামিলি মানবে না। ( ধমকের সুরে )
সরি ভাইয়া।
সরি মাই ফুড। বল কি করবি। তোর ডিসিশন শুনে আমি বাকি কাজ করবো। এট এ্যানি কষ্ট এ্যানসার দে।
আমি রাজি ভাইয়া বিয়ে করতে।
ওকে ফাইন রেডি থাক একটু পর আমরা বাহির হবো
কোথায় যাবো
ভাইকে ভরশা করিস
হুম
তাহলে কোনো প্রশ্ন নয়
এই কথা বলে আসফি বাহির হয়ে যায়। আর বাহিরে গিয়ে দেখে আদি আর আরিয়ান চলে এসেছে। আর আদিকে রুমানা চৌধুরী কি যেনো বলছে যা দেখে আসফি বলে
রুমানা চৌধুরী আপনি আমার বন্ধুর কান ভাঙ্গাবেন না প্লিজ। নাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না বলে দিলাম।
আমি তোমার বন্ধুর কান ভাঙ্গাচ্ছি না। শুধু এতটুকুই বলছি যাতে এরপরে তার পা এই বাসায় না পরে।
পরবেও না। আপনি চিন্তা করবেন না। আদি আরিয়ান আমার রুমে আয়।
তারপর তিন বন্ধু মিলে নিজেদের রুমে চলে আসে। আদি আসফির হাত ধরে বলে উঠে
ভাই এত ঝামেলার বিয়েতো আমি চাইনি
আরিয়ান পাশ থেকে আদির পেটে খোচা মেরে বলে
তোর কোন বন্ধু ঝামেলা ছাড়া বিয়ে করেছে শুনি
তখন আদি হেসে দেয় আর বলে
আসফি তুই আমায় যা করতে বলবি আমি তাই করবো। শুধু রুশাকে আমার চায়।
পেয়ে যাবি
তাদের কথার মাঝে রুমে প্রবেশ করে দিশা চৌধুরী ( রিসাদের বউ ) তাকে দেখে সবাই চুপ হয়ে যায়। আর আসফি বলে
বড় ভাবি কিছু বলবে
হুম
বলো
আরিয়ান তুমি কি একটু আমার রুমে আসতে পারবে
অবশ্যই ভাবি
আসফি সন্দেহের দৃষ্টিতে দিশার দিকে তাকায় আর বলে
আরিয়ান দেখ ভাবী কি বলে
হুম দেখছি
তারপর দিশা আর আরিয়ান দিশার রুমে চলে আসে। আরিয়ান রিসাদের দিকে তাকিয়ে বলে
ভাবি ভাই কি হাত পা একটু নাড়াতে পারে।
নাহ আগে পারতো কিন্তু এখন তাও পারে না।
কি বলছেন। আসফি কি বলছে এই ব্যাপারে।
নিয়মিত মেডিসিন দিচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয় এই মেডিসিন ওকে আরও অসুস্থ করে তুলছে। তাই ভাই আমি তোমার কাছে আসছি। দোয়া করে আমায় একটু বলবা আসফি ওরে কি মেডিসিন দেয় প্রতিদিন। এই দেখো আমি লুকিয়ে একটা মেডিসিন রেখে দিয়েছি।
লুকিয়ে রাখছেন মানে
হুম আসফি কোনো মেডিসিন আমার হাতে দেয় না।
আচ্ছা। দেখি তো কি মেডিসিন দেয় ভাইকে।
দিশা আরিয়ানকে মেডিসিনটা দেয়। আর আরিয়ান তা দেখে কিছুক্ষণ চুপ থাকে আর বলে
ভাবি সব ঠিকআছে কোনো সমস্যা নেয়। আপনি শুধু শুধু আসফিকে সন্দেহ করছেন। আমি আসি তাহলে।
সত্যি বলছো ভাই
হুম
আসো তাহলে
আরিয়ান দিশার রুমে থেকে বাহির হয়ে আসে। কিন্তু ঘার ঘুরিয়ে আবার রুমের দিকে তাকায় আর বলে
ভাবি আসফি কেনো এমন করছে আমি জানিনা। তবে এর পিছনে আসল সত্যি খুজে বের করে অবশ্যই আপনাকে সবটা বলবো ভাবি।
#চলবে