ভালোবাসা অবিরাম পর্ব-২৭

0
564

#ভালোবাসা_অবিরাম
#পর্বঃ২৭
#আইরাত_বিনতে_হিমি

একটি পুরা বাড়িতে পায়ের উপর পা তুলে আয়েশি ভঙ্গিতে বসে আছে আয়মান শিকদার তার পাশে বসে আছে আফজাল শিকদার। দুজনেই অট্ট হাসিতে ফেটে পরছে। কারণ তাদের লোক নিলুকে হসপিটাল থেকে উঠিয়ে এনেছে আর তার শরীরে টাইম বম লাগিয়ে দিয়েছে এক ঘন্টার মধ‍্যে বম টা ব্লাস্ট হবে। অথচ নিলু এখনো বেহুস তার কোনো জ্ঞান নেয়।

হাসপাতালের কেবিনে নিলুকে না পেয়ে আসফি সবাইকে ডাকে। সবাই তার ডাকে কেবিনে এসে অবাক। আসফি নিজের মাথা চেপে ধরে এক চিৎকার দিয়ে উঠে। তার হঙ্কারে সবাই ভয় পেয়ে যায়। আসফি ডাক্তার সৌরভের দিকে আঙ্গুল তুলে বলে

– আমার ওয়াইফের যদি কিছু হয়েছে তো আমি আপনার লাইফ শেষ করে দিবো কথাটা মনে রাখবেন ডাক্তার সৌরভ।

এই কথা বলে আসফি বাহির হয়ে যায়। তার পিছন পিছন আদি আর আরিয়ানও আশে। তারা সবাই হন্নে হয়ে নিলুকে খুচ্ছে। কিন্তু নিলু এই শহরের কোথাও নেয়। আসফি রাশেদকে কল করে

– রাশেদ এ‍্যাকশন শুরু করো। আর গাড়ি রেডি করো আমি বাহির হবো।

– ওকে স‍্যার। কিন্তু ভাবিকে খুজবেন না স‍্যার।

– আমি ভুল না করলে নিলুকে ওরা ঐখানেই নিয়ে গিয়েছে। আর ওরাও চাইছে আমি ওখানে আসি।

– তাহলে তো স‍্যার আপনার জন‍্য রিক্স এইটা।

– রিক্স হলেও কাজটা করতে হবে। তাড়াতাড়ি করো কৈলেশকেও কল দাও।

– ওকে স‍্যার

পাশ থেকে সব কথা শুনছিলো আরিয়ান তাই সে বলে উঠলো

– কোথায় যাবি তুই

– কাজ আছে।

– আমাদের নিয়ে চল

– লাইভ রিক্স আছে। তোরা ঐখানে গেলে সমস্যা হবে।

– কিছু হবে না দোশ প্লিজ আমাদের নিয়ে চল।

– এই জগত অনেক খারাপ আমি চাই না আমার কোনো ফ্রেন্ড ফ‍্যামিলি মেম্বার এইসবে Involve হোক।

– তবুও

– কেনো যেত করছিস আরিয়ান

– আমি তোর সাথে যাচ্ছি ব‍্যাস

– ওকে ফাইন চল তাহলে।

পরপর ১৫ টাহ গাড়ি গ্রামের পথ ধরে পোড়া বাড়ির দিকে যাচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই নিলুকে উদ্ধার করা। পোড়া বাড়ির অনেকটা কাছে আসতেই এক লোক দূর থেকে দূরবীণ দিয়ে তা দেখতে পেলো। দেখতে পেয়েই বলে উঠলো

– স‍্যার আসফি চৌধুরী আসছে। সাথে অনেক লোক।

– আসতে দাও তারাই তো অপেক্ষায় আছি। ( আয়মান )

আসফির গাড়ি বাড়ির সামনে এসে থামলে কিছু লোক তার গাড়ির দরজা খুলে দেয়। আসফি গাড়ি থেকে নামতেই উপর থেকে এক এক করে গুলি বর্ষণ হতে থাকে। তা দেখে সবাই ঝোপের আড়াল হয়। আবার অনেকের প্রাণ যায়। আসফি সবার দিকে তাকিয়ে বলে

– বি কেয়ারফুল এখানে প্রত‍্যেকটা জায়গায় ফাদ পাতা সো সাবধানে।

– ওকে বস

আসফি সবাইকে পিছনে রেখে আস্তে আস্তে সামনে আগাতে থাকে। হঠাৎ তার মনে হয় এই মাটির নিচে কিছু আছে তাই সে সেখান থেকে সাথে সাথে সরে যায় আর একটু পরই সেখানে ব্লাস্ট হয়। আসফি আবার ঝোপের আরালে যায় আর খুব নিখুতভাবে বাড়িটা দেখতে থাকে। তারপরও তার বোঝা হয়ে যায় দূর থেকে কেউ তাদের মনিটরিং করছে তাই সে হাতে কয়েকটা ছোট ইট নেয় এবং একের পর এক ইট বাড়ির জানালায় মারে। জানালা ভেঙ্গে যায়। আসফি আর তাদের দলের লোক গাড়িতে উঠে সেখান থেকে চলে যায়। যা দেখে আয়মান শিকদার ভাবে তারা চলে গিয়েছে তাই হাসতে হাসতে বলে

আসফি চৌধুরী ভয় পেয়েছে। বিড়ালের মতো লেজ গুটিয়ে নিয়েছে। ভীতু একটা।

তার কথার মাঝেই বাড়ির পেছন দিক দিয়ে গুলির আওয়াজ শুনতে পায় আর তখনই সে বুঝে আসফি চৌধুরী তার প্ল‍্যান বুঝে ফেলেছে তাই পিছন দিয়ে এ‍্যাটাক করেছে। তাই সেও আসফির অপেক্ষায় থাকে।

এইদিকে আসফি একাই একের পর এক মানুষকে ছুরিকাঘাত করে মেরে ফেলছে। খুবই সাবধানতার সাথে সে এই অস্ত্রটি চালাচ্ছে। আসলে এই অস্ত্র একবার তার হাতে উঠলে তার থেকে ভালো কেউ এই অস্ত্র চালাতে জানে না। আসফি এক পর্যায় আরিয়ান আর আদিকে নিয়ে দুতলায় চলে আসে আর তখনই তাদের উপর জাল ফেলা হয়। সাথে সাথে তারা তিনজন জালে বন্ধি হয়ে যায়। তাদের বন্দি অবস্থায় দেখে পাশের রুম থেকে আয়মান আর আফজাল শিকদার বের হয়ে আসে। আর হাসতে হাসতে বলে

– কেমন লাগছে চৌধুরী জালের মধ‍্যে বন্দি হয়ে। আরে ডাক্তার আরিয়ান আর ডাক্তার আদিও যে এসেছে।

– আয়মান শিকদার এতো আওয়াজ ভালো না। ( আদি )

– আরে থামো মশায় সময়ই তো এখন আমাদের।

– সময় ঘুরতে সময় লাগে না আয়মান। ( আরিয়ান )

– আসফি চৌধুরী চুপ যে কি ভাবছো হেরে গেলে। ( আফজাল শিকদার )

এইবার আসফি তাদের দিকে তাকালো আর বললো

– কোনো জালই আসফি চৌধুরীকে এখানে আটকে রাখতে পারবে না। নিলু কোথায় বল নিলু কোথায়।

– কাম ডাওন মি চৌধুরী এত জেদ ভালো না। দেখতে চাও তোমার নিলু কোথায়। তাহলে দেখো। এই নিলুকে নিয়ে আয়।

– একটা মেয়ে নিলুকে ধরে আসফির কাছে নিয়ে আসে। আসফি নিলুকে দেখে বলে

– নিলু এই নিলু শুনতে পাচ্ছো। এই তোরা নিলুর গায়ে কি ফিট করেছিস। এইটা সরা ওর শরীর থেকে।

– সরি এত মায়া আমাদের মধ‍্যে নাই। আর আমি তার permission ছাড়া কিছুই করতে পারবো না। আজকের যতো প্ল‍্যান যত কিছু দেখছো সব সেই করেছে দেখতে চাও তাকে কে সে।

আসফি নিলুকে জালের মধ‍্যে জড়িয়ে ধরে বলে হুম দেখতে চায়।

তখনই সেই আগ্নুতুক ব‍্যক্তি বের হয়ে আসে যে কিনা রিমিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসছিলো কিন্তু বাচাতে পারেনি। আগ্নুতুক ব‍্যক্তিকে চোখের সামনে দেখে আদি আর আরিয়ানের যেনো চোখের পলক পরছে না। তারা যেনো এক একটা পাথরের মূর্তি হয়ে গিয়েছে। আসফি নিলুকে শক্ত করে বুকে নিয়ে বললো

বড় আম্মুহ

হুম আমি আসফি অবাক হচ্ছো নাকি। অবশ‍্য অবাক হওয়ারই কথা তায় না।

এই দিকে নিলু আসফিদের জালের দড়ি খুলে দেয়। আর সেও মুক্তি পেয়ে যায়। আসফি নিলুকে বুক থেকে সরিয়ে সোজা হয়ে দাড়িয়ে পরে। আর সাথে সাথে পিছন থেকে আসফির লোক রুমানা চৌধুরী, আয়মান শিকদার এবং আফজাল শিকদারকে বন্দী করে ফেলে। এইদিকে নিলুও উঠে দাড়ায় আর নিজের শরীরের বোমা খুলে ফেলে যা দেখে রুমানা চৌধুরী বলে

তোমার জ্ঞান কখন ফিরলো।

আপনি খুব বোকা রুমানা চৌধুরী খুব বোকা। ( আসফি )

#চলবে