#গল্পের_নাম_ভালোবাসাময়_প্রহর
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্ব:১৯
রাজ রির্সোটের বাহিরে নিজ ব্যাগ নিয়ে দাড়িয়ে আছে পকেট থেকে ফোন বের করে রক্তিমের নাম্বারে ডায়াল করলো কিছুক্ষণ পর রক্তিম ফোন রিসিভ করলো।রাত রক্তিমকে বললো,
~ভাইয়া,আমি বাসায় চলে যাচ্ছি তন্নির অবস্থা ভালো হলে তোমরা বাসায় চলে এসো।
রক্তিম রাতের অবস্থা বুঝতে পেরে বললো,
~ঠিক আছে সাবধানে যাবি আর বাসায় কিছু বলার প্রয়োজন নেই।
রাত বললো,
~তন্নির খেয়াল রেখো আর তাকে বলো যে আমাকে ক্ষমা করে দিতে আমি আর কখনো তার সামনে আসবো না।
বলেই সে ফোন রেখে দিলো আর ফোন সুইচ অফ করে দিলো রক্তিম আরো কিছু বলবে তার আগেই টুট টুট আওয়াজ পেয়ে কান থেকে মোবাইল নামিয়ে দেখলো রাত ফোন রেখে দিয়েছে।রক্তিম আবার চেষ্টা করতেই সুইচ অফ বলা হলো রক্তিমের এখন নিজ ভাইয়ের জন্য চিন্তা হচ্ছে। তখনই অধরা এসে রক্তিমের কাঁধে হাত রেখে বললো,
~রাত চলে গেছে তাই না?
রক্তিম বললো,
~হুম আমার অনেক চিন্তা হচ্ছে অধরা।
অধরা বললো,
~আমরা এখনই বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেই।
রক্তিম বললো,
~কাল সকালে দিবো তন্নি এখন কেমন আছে?
অধরা বললো,
~সুপ আর বকা খেয়ে ঘুমিয়েছে।
রক্তিম বললো,
~ওকে বুঝিয়ে বলো যে এমন বাচ্চামি আর যেন কখনো না করে।
অধরা বললো,
~চলুন এখন খেয়ে নেই আমি আজ তন্নির কাছে ঘুমাবো।
রক্তিম হুম বলে অধরাকে নিয়ে খেতে বসলো খাওয়া শেষে অধরা তন্নির রুমে চলে গেলো।সেখানে গিয়ে দেখলো তন্নি আকাশ পাণে তাকিয়ে কী যেন ভাবছে?অধরা বললো,
~রাত চলে গেছে তার ব্যাপারে আর ভেবে লাভ নেই।
অধরার কথা শুনে তন্নি চমকে উঠলো বোনের দিকে তাকিয়ে বললো,
~আপু,আমি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি কেন জানি মাথা ঘুরছে।
অধরা বললো,
~শুয়ে পর কাল সকালে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিবো আমরা।
তন্নি বোনের পাশে গিয়ে শুয়ে পরলো তন্নির চোখে ঘুম নেই সে একধ্যানে রাতের কথা চিন্তা করছে।রাতের এভাবে চলে আসাটা বরাবরই রক্তিমের মাকে অবাক করেছে যেই ছেলে ঘুরতে গেলে ১সপ্তাহর আগে বাসায় আসে না সে আজ একদিনেই ফিরে এসেছে তাও এতো রাতে।খাবার বেড়ে ছেলের সামনে রেখে দিলেন তিনি আর চেয়ার টেনে বসে পরলেন।রাত খাবার খেতে শুরু করলো রক্তিমের মা বললেন,
~তোর কী হয়েছে বাবা?
মায়ের মুখে আদুরে ডাক শুনে রাতের অনেক ভালো লাগছে মনটা হালকা লাগছে।রাত হাসার চেষ্টা করে বললো,
~আমার কিছুই হয়নি মা তুমি চিন্তা করো না।
রক্তিমের মা ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
~মায়ের কাছে কিছু লুকাতে নেই বল কী হয়েছে?
রাত মাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
~কিছু হয়নি মা।
রক্তিমের মা আর কিছুই জিজ্ঞেস করলেন না সে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন রক্তিম থেকে সে সব জেনে নিবেন।রাত খাওয়া শেষ করে রুমে চলে গেলো বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই তার সব ঘটনা মনে পরতে লাগলো সে চোখ বন্ধ করতেই চোখের কার্ণিশ বেয়ে পানি পরতে লাগলো।রাত বিড়বিড় করে বললো,
~অনেক দূরে চলে যাবো অনেক দূরে।
সকালে বি/ষ/ন্ন মন নিয়ে তিনজন রওনা হলো বাসা উদ্দেশ্যে তন্নি অধরার কাঁধে মাথা রেখে শুয়ে আছে।রক্তিম ড্রাইভ করছে তারও মনটা ভালো নেই তন্নির কেন জানি রাতের কথা ভীষণ মনে পরছে তার মন চাইছে রাতের পাশে বসে দুদন্ড কথা বলতে।সেই আগের মতো হাসি তা/মা/শা করতে তা কি এখন আদৌ সম্ভব তার মনটা যে ভীষন পু/ড়/ছে।দুপুরের নাগাদ তারা বাসায় পৌছালো অধরা তন্নিকে বাসায় দিয়ে এসে তার মাকে সব বুঝিয়ে বলে আসলো শুধু রাতের কথাটা বলেনি অধরার মা সব শুনে তন্নিকে বকলো তন্নিও সব চু/প/চা/প শুনে নিলো।দূর থেকে তন্নিকে সুস্থ দেখে রাতও খুশি হলো।অধরা শশুড় বাড়ি চলে আসলো সবার সাথে দেখা করে ফ্রেশ হয়ে আসলো খাবার টেবিলে সেখানে সবাই উপস্থিত আছে।সবাই একসাথে খাবার খেয়ে নিলো আর কথাবার্তা বললো খাওয়া শেষে রাত বললো,
~আমি আমাদের সিলেটের অফিসটা হ্যান্ডেল করতে চাই যদি বাবা আর ভাইয়ার আ/প/ত্তি না থাকে তাহলে।
সিলেট যাওয়ার কথা শুনে রক্তিমের মা-বাবা এতে অবাক হলেও রক্তিম আর অধরা বুঝতে পারলো কেন রাত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।রক্তিম বললো,
~তুই আমাদের ছেড়ে সেখানে গিয়ে থাকতে পারবি?
রাত মুচকি হেসে বললো,
~ভাইয়া,আমার অনেক বন্ধুরা তো দেশ ছেড়ে চলে গেছে ক্যারিয়ারের জন্য আমি তো এক শহর ছেড়ে অন্য শহরে যাচ্ছি।
রক্তিমের মা বললেন,
~তুই কোথাও যাবি না এটাই আমার শে/ষ কথা।
রক্তিমের বাবা গম্ভীর কন্ঠে বললেন,
~রক্তিমের মা,ছেলে যখন নিজের ব্যাপারে ভাবতে চাইছে কাজ করতে চাইছে তুমি তাকে বাঁ/ধা দিও না।
রক্তিমের মা শাড়ির আঁচল মুখে গুজে বললেন,
~আপনি একটা পা/ষা/ণ লোক আমার সাথে কথা বলবেন না।
বলেই সে নিজ রুমে চলে গেলো রক্তিমের বাবা বললেন,
~তোর মায়ের রা/গ আগের মতোই আছে চিন্তা করিস না আমি রাজি করাবো।
রক্তিমের বাবাও উঠে পরলো অধরা রাতের পাশে বসে বললো,
~তুই এমন করিস না তন্নির জন্য কেন তুই আমাদের থেকে দূরে
যাবি?
রাত বললো,
~আমি তন্নির জন্য যাচ্ছিনা নিজের জন্য যাচ্ছি।
বলেই সে চেয়ার ছেড়ে উঠে পরলো নিজ রুমের দিকে হাঁটা ধরলো।অধরা রক্তিমের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো সবকিছু গুছিয়ে তারা দুজনও নিজ রুমে আসলো। রক্তিম বিছানায় শুয়ে পরলো অধরা রক্তিমের বুকে মাথা রেখে বললো,
~সবকিছু কীভাবে ঠিক হবে?
রক্তিম অধরার চুলে হাত ডু/বি/য়ে বললো,
~জানিনা কিন্তু এতটুকু বুঝতে পেরেছি রাত তন্নিকে অনেক ভালোবাসে।
অধরা বুক থেকে মাথা উঠিয়ে রক্তিমের কপালে, গালে ঠোঁট ছুইয়ে বললো,
~আমার তো মনে হয় তন্নিও ভালোবাসে সে এখন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে।
রক্তিম অধরাকে শক্ত করে নিজ বাহুডরে আগলে নিয়ে চোখ বন্ধ করে বললো,
~তাহলে তো ভালোই হয়।
তন্নির মনটা আনচান করছে রক্তিমের মা তাদের বাসায় এসেছিলো রাতের যাওয়ার কথাও বলে গেছে কাঁদতে কাঁদতে। তন্নি তাকে কোনো কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলো অধরার মা রক্তিমের মাকে সামলিয়ে নিয়েছেন।তন্নির মনে হচ্ছে এসব তার জন্য হচ্ছে রাতের সাথে দেখা করা উচিত কিন্তু সে কী বলবে আর কী বুঝাবে?ঠিক ৫দিন পর রাত চলে যাবে রক্তিম সব ব্যবস্থা করে ফেলেছে রাত মায়ের কাছে গিয়ে তাকে সব বুঝিয়ে বলেছে রক্তিমের মা রাতের থেকে ওয়াদা নিয়েছেন সপ্তাহে ২দিন সে ঢাকা আসবে।রাত তাতে রাজি হয়েছে যদি কোনো সময় কাজে ব্যস্ত হয়ে যায় তাহলে রাত মাকে নিজের সাথে নিয়ে যাবে।রক্তিমের মা রাতের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন অধরার মনটাও খা/রা/প তন্নি যদি একবার নিজের মনের কথাটা বুঝতে পারতো।
৫দিন কে/টে গেলো চোখের পলকে তন্নি অনেকবার চেষ্টা করেছে রাতের সাথে দেখা করতে কিন্তু রাত এড়িয়ে চলেছে।রাত ব্যাগ গুছিয়ে নিয়েছে সবার থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে বসে পরেছে। ড্রাইভার গাড়ি চালাতে শুরু করলো রাতের মন
খা/রা/প তন্নি তাকে বিদায় জানাতে আসেনি।তখনই রাতের নজর গাড়ির গ্লাসে পরলো সে দেখতে পেলো তার প্রিয়তমা হাতে একগুচ্ছ ফুল নিয়ে দৌড়ে আসছে তার দিকে।রাত ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে বললো গাড়ি থামতেই রাত বের হয়ে আসলো তন্নি হাঁপাতে হাঁপাতে তার সামনে এসে দাড়িয়ে বললো
চলবে