তুমি আসবে বলে পর্ব-৪১ এবং শেষ পর্ব

0
524

#তুমি_আসবে_বলে

#নুসাইবা_ইভানা

পর্ব – ৪১ (অন্তিমপাতা)

চৌধুরী বাড়িতে আজ চাঁদের হাট বসেছে ভাঙাচোরা বাড়িটায় সুন্দর করে ডেকোরেশন করা হয়েছে। কে বলবে কিছু ঘন্টা পূর্বেও এটা ভুতের বাড়ির মতো দেখতে ছিলো।

আরহা বাসন্তী কালারের লেহেঙ্গা পরছে, সাথে মেচিং জুয়েলারি। হালকা মেকাপ,স্টাইলিশ হেয়ার।
আরহার সাথে মেচিং করে মেঘ বসন্তী রঙের পাঞ্জাবি পরেছে, সাথে সাদা পাজামা।

নীলু পরেছে সবুজ রংঙের শাড়ি, সাথে আর্টিফিশিয়াল জুয়েলারি, ইমতিহান পরেছে সবুজ পাঞ্জাবি, সাদা পাজামা।
বাকি সব মেয়েরা পরেছে অলিভ কালারে শাড়ি, আর ছেলেরা অলিভ কালারের পাঞ্জাবি।

চরজন কপোত-কপোতীর একসাথে গায়ে হলুদ সম্পন্ন হলো। নাচে গানে জমজমাট এক গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হলো।

আরহা গোসল সেরে আয়নায় নিজেকে দেখছে, বিশ্বাস হচ্ছে না। মেঘ সত্যি সত্যি এখন শুধু তার। এরমধ্যেই আরহার ফোনটা বেজে উঠলো, আরহা ফোনটা ধরার আগেই, সামিরা ফোনটা রিসিভ করলো, মেঘ সামিরাকে এই মূহুর্তে আশা করেনি সামিরা বললো, এতো উতলা কেন হচ্ছিস। আর তো কিছু ঘন্টা তারপর তোর বউ তোর। একটু অপেক্ষা কর। মেঘ দাঁতে দাঁত পিশে বলে, আরহার কাছে দে,সামিরা মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে মেঘের গায়ে এখন হলুদ লেগে আছে। চোখের কোনে জল জমা হতেই সামিরা আরহার হাতে ফোনটা দিয়ে চলে গেলো। আরহা ফোন ধরে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে
শাওয়ার নিয়ে আরহা একটা সাদা রঙের থ্রিপিস পরেছে যদিও এই মূহুর্তে আরহার শরীরে ওড়না নেই ভেজা চুল থেকে টপ টপ করে পানি ঝড়ছে। মেঘ মোহিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আরহার দিকে। মেঘ নেশালো কন্ঠে বললো, এই লাজুকলতা এদিকে তাকাও। আরহা চোখ তুলছেই না। মেঘ বললো এক কাজ করো বিবিজান চোখ বন্ধ করে মুখটা উপরের দিকে তুলো। আরহা তবুও তুলছে না। রুমে কেউ নেই আরহা মাথা নিচু করে মোবাইলের সামনে থেকে সরতেই কারো সাথে ধাক্কা খেলো সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটিকে দেখে আরহা যেই চিৎকার করতে যাবে তার আগেই মেঘ আরহার মুখে হাত দিয়ে চেপে রেখে বলে,ঘরের শত্রু বিবিজান, কোথায় জামাইকে সেফ করবে তা-না উল্টো ফাঁসাচ্ছ।
– এই ছাড়ুন আমাকে আমার ড্রেস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আপনচর পাঞ্জাবি থেকে হলুদ লেগে। মেঘ আরহাকে জড়িয়ে ধরে বলে এবার নাও পুরোপুরি আমার রঙে রঙিন হও।বলেই নিজের গাল ঘসতে লাগলো আরহার গালে। আরহার হৃৎস্পন্দন বেড়ে গেছে কয়েকগুন নিশ্বাস আটকে আসছে। আরহা ধীর কন্ঠে বললো,কি, কি করছেন ছাড়ুন। ইশ এভাবে কেউ বলে এখন তোমাকে টুপ করে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে।
আরহা গাল দু’টো লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। মেঘ আরহার কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে, তুমি যেমন লজ্জা পাচ্ছ, মনে হয় বাসর এখনি করে ফেলি।
আরহা মেঘের বুকে মুখ লুকালো। মেঘ ফিসফিস করে বলে,এটা ভালো আমি লজ্জা দেবে আর তুমি সেই লজ্জা থেকে রেহাই পেতে আমার বুকে মুখ লুকাবে।

আরো কিছু বলবে তার আগেই নুর এসে বলে ছি,ছিহহহ ভাইয়া শেষ পর্যন্ত তুমি! তোমার থেকে এটা আশা করিনি। মেঘ কোন কথার উত্তর না দিয়ে আরহার কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে চলে গেলো।
নূর বলে আমার ভাই যেমন বউ পাগল,তেমন আমার দুলাভাইও বউ পাগল।

আরহা কিছু না বলে ওয়াশ রুমে আয়নার সামনে দাঁড়ালো সাদা জামায় ছোঁপ ছোঁপ হলুদের দাঁগ। গালেও হলুদ লেগে আছে। নিজেই নিজের গাল স্পর্শ করে লজ্জায় নুয়ে পরছে।

নীলু আর ইমতিহান ছাদে ছিলো মাত্র আসলো রুমে এসেই শুয়ে পরলো।

পাখির কিচিরমিচির ধ্বনি সাথে মানুষের কোলাহল৷ ঘুম ভেঙে গেলো আরহার আড়মোড়া ভেঙে উঠতেই চোখ পরলো একটা লাল চিরকুট তার হাতে। চিরকুট খুলতেই মুখে ফুটে উঠলো অমায়িক হাসি। চিরকুটে লেখা ছিলো, গুড মর্নিং বিবিজান, আজকের পর থেকে প্রতিটি সকাল হবে আমার মুখ দেখে, আর প্রতিটি রাত শেষ হবে আমার বাহুতে। আরহা মুচকি হাসলো। চিরকুট রেখে দিয়ে বাকিদের ডেকে তুললো

ফ্রেশ হয়ে নাস্তা শেষ করতে করতেই পার্লারের মহিলারা চলে আসলো বউ সাজাতে। আরহা আর নীলু সেম লেহেঙ্গা পরছে পার্পল কালারের লেহেঙ্গা সাথে রেড আর ক্রিম কালারের কম্বিনেশনে ওড়না ভারি জুয়েলারিতে দু’জনকেই দারুন মানিয়েছে। এদিকে মেঘ আর ইমতিহান পরেছে ক্রিম কালারের শেরওয়ানি। আর অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই সমস্ত অপেক্ষার অবসান ঘটতে চলেছে। ইতিমধ্যে কাজী চলে এসেছে। সাথে হাজির হয়েছে মিডিয়ার লোকজন
জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী আদিয়াত নুজহাত আরহা বিয়ে বলে কথা। স্টেজে বসে আছে আরহা, মেঘ। ইমতিহান, নীলু কাজী বিয়ে পরানো শুরু করলো প্রথমে ইমতিহান আর নীলুর বিয়ে সম্পন্ন হলো, তারপর মেঘ আর আরহার। চারদিকে খুশির আমেজ।

তবে এতো আনন্দের মধ্যেও দু’জন মানুষের মনে রয়েছে চাপা কষ্ট। প্রান্ত খেয়াল করলো তার পাশের মেয়েটাও চোখ মুছছে। প্রান্ত বললো, আপনি কি ইমতিহান কে ভালোবাসতেন?
– না মেঘ কে। বেখেয়ালীতে বলে ফেললো সামিরা। পরক্ষণেই নিজেকে সামলে বলে, না মানে।

প্রান্ত স্মিত হেসে বলে, আমিও আপনার নায়ের মাঝি
বড্ড ভালোবাসি আরহাকে। আমাদের দু’জনের কষ্ট একি।

– সামিরা মেকি হেসে বললো, কিছু জিনিস খুব করে চাইলেও পাওয়া যায় না।
– হুম ভাগ্য তো উপর থেকে ঠিক করা তাই আফসোস করে লাভ নেই। তবে চাইলে আমরা একে অপরের মলম হতে পারি।
সামিরা বললো এটা জানার পরেও আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি!
– আপনিও তো জানেন আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি। ঘা যেহেতু এক তাই বললাম আরকি।
– সামিরা হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে, ভেবে দেখছি অফারটা খারাপ না।
প্রান্ত হাত মিলিয়ে বলে তবে তাই হোক নতুন পথচলা শুরু হোক।

সুন্দর করে সাজানো বাসর ঘরে বসে আছে নীলু বড় ঘোমটা দেয়ার পরিবর্তে লেহেঙা খুলে ছিপছিপে পাতলা শাড়ি পরেছে। কিছুক্ষণ পর ইমতিহান রুমে এসে নীলুকে দেখে বোকার মতো তাকিয়ে আছে। নীলু সামনে এসে ইমতিহানের কপালে চুমু দিয়ে বলে, কিহলো তুমি এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?ইমতিহান কিছু না বলে নীলুকে কোলে নিয়ে বলে, আমার বউতো হেব্বি রোমান্টিক। নীলু ইমতিহানের গলা জড়িয়ে বলে,আমার জামাইটা যে একটু বেশি কিউট তাই।

ফুলেফুলে সজ্জিত বেডে জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে আরহা। হৃদয়ে তার কখন থেকে হাতুড়ি পেটা করছে। ধুক,ধুক শব্দ শোনা যাচ্ছে। হাত পা ঘেমে যাচ্ছে। মেঘ রুমে প্রবেশ করেই দরজা বন্ধ করে আরহার পাশে এসে বসলো,দীর্ঘ সময় আরহাকে পর্যবেক্ষণ করে আরহা ঘোমটা তুলে দিয়ে আরহার ধুতনি ধরে উপরে তুলে বলে,প্রতিদিন চাঁদ আকাশে থাকে আজ দেখছি চাঁদ আমার ঘরে। আরহা চোখ বন্ধ। বন্ধ চোখে ফু দিয়ে বলে আর কত অপেক্ষা করাবে বিবিজান। বলেই আরহার কোলে মাথা রেখে বলে এবার নিজের কথা রাখো আমাকে গান শোনাও
আর বেশখানিক সময় পর মেঘের মাথায় হাত বুলিয়ে বুলিয়ে দিতে দিতে গান ধরলো

ঘুমাও তুমি ঘুমাও গো জান
ঘুমাও আমার কোলে

ভালোবাসার নাও ভাসাবো
ভালোবাসি বলে…..

তোমার মাথায় হাত বুলাবো পূর্ণ চাঁদের তলে
কৃষ্ণচুড়া মুখে তোমার জোছনা পড়ুক তোলে….

আজকে তোমার মনকে জড়ায়
ধরবে আমার মন…..

গাছগাছালি গাইবে জোনাক গাইবে আমার মন
এতো ভালোবাসা গো জান.. এতোটুকু বলার পর মেঘ আরহা শুয়ে দিয়ে নিজেই গেয়ে ওঠে, এতো ভালোবাসা গো জান রাখিও আচঁলে….
দোলাও তুমি দুলি আমি
জগত বাড়ি দোলে।
ঘুমাও তুমি ঘুমাও গো জান ঘুমাও আমার কোলে
ভালোবাসার নাও ভাসাবো ভালোবাসি বলে।

এভাবেই দুটি হৃদয়ের ভালোবাসা আজ পূর্নতা পেলো।

সময়ের শ্রোতে কেটে গেলো পাঁচ বছর। আরহা কিচেনে বাচ্চাদের জন্য খাবার তৈরি করছে। মেঘ পিছন থেকে আরহাকে জড়িয়ে ধরে চুলে মুখ ডুবিয়ে দিয়ে বলে,বিবিজান আজকের দিনের কথা ভুলে গেলেন! আরহা চুলার আচ কমিয়ে দিয়ে সামনের দিকে ফিরে মেঘের গলায় হাত রেখে বলে, মাই ডিয়ার হাবি, আপনার কি মনে হয়!

– ডিয়ার বিবিজান তাহলে সকাল সকাল আমাকে আদর না দিয়ে কিচেনে কি করছেন!

– কি আর করবো বলুন,একজনের ভালোবাসার নিদর্শন সামলাতে সামলাতে, সুপার সিঙ্গার থেকে এখন সুপার মম হয়ে গেছি।

– মেঘ আরহার নাকের সাথে নাক ঘসে বলে,দিনগুলো কত তাড়াতাড়ি পেরিয়ে গেলো। তবে তোমার প্রতি ভালোবাসা বেড়েই যাচ্ছে দিনদিন। কই বয়স হচ্ছে একটু আনরোমান্টিক হবো তা-না রোমান্টিকতা বেড়েই চলছে। এতো বছর পরেও তোমাকে কত সুইট,আর কিউট লাগে।

– আমি তো এখনো ছোটই। আরহা বলে বয়স আমার সবে ২৪। আর তুমি তো ৩০ পার করে ফেলেছো।
– এই বলতে কি চাইছো হুম আমি নেহাৎ তাড়াতাড়ি বিয়ে করে নিয়েছি। নাহলে এখন আমার বিয়ের বয়স হয়েছে৷ দেখোনা এখনো কত ইয়াং, হ্যান্ডসাম। এখনো এক ইশারা করলে মেয়েদের লাইন লেগে যাবে।

বাস আগুনে ঘী ঢালার জন্য এই কথাই যথেষ্ট ছিলো। আরহা মেঘের গলা ছেড়ে দিয়ে বলে, যা -না যা সেই সব লাইনের মেয়েদের কাছেই যা এখানে কেনো এসেছিস। গ্যাস বন্ধ করতে করতে বলে, আজ থেকে তোর ছেলে মেয়ের খাবার তুই রান্না করবি। থাকবোই না এবাড়িতে।

মেঘ বোকার মতো তাকিয়ে আছে। আরহা সামনে পা বাড়াতেই, মেঘ আরহার হাত ধরে কিছু বলবে, এমন সময় মিষ্টি কন্ঠে কেই বলে, মম আমাকে খেতে দাও আমি খাবো। তাড়াতাড়ি দাও। ভাইয়ার আগে খেয়ে ভাইয়ার চেয়ে বড় হয়ে যাবো । আরহা মেঘের হাত ছেড়ে দিয়ে বলে, ওলে আমার মামুনিটার বুঝি খিদে পেয়েছে! জানো আনহা আজ না তোমার বাবাই তোমাকে খাইয়ে দেবে।

– আমি তোমার হাতে খাবো মাম্মাম।
মেঘ মেয়েকে কোলে নিয়ে বলে, আজকে আমি খাইয়ে দি মামুনি।

– না তোমার কাছে খাবো না। তুমি খাওয়াতে পারোনা। মাম্মামের কাছে খাবো। আরহা আনহা কে কোলে নিতে নিতে বলে ইয়াং ম্যান নিজের ছেলেমেয়েকে সামলাতে পারে না।
-আমি না পারলে কি আমার বউ তো পারে।

– এই বয়সে বউ কোথা থেকে আসলো, মিস্টার মেঘ চৌধুরী!

– দেখো এবার কিন্তু বাড়বাড়ি হয়ে যাচ্ছে।
– বাড়াবাড়ির দেখেছেনটা কি এবার দেখবেন আমি থাকবোনা এবাড়িতে চলে যাবো।
মাম্মাম তুমি কোথায় যাবে। আমি যাবো।

এরমধ্যেই মেহেরান এসে বলে তুই কেনো যাবি!মাম্মামের সাথে আমি যাবো! তুই বাবাইয়ের সাথে থাকবি।
– না আমি যাবো
– আমি যাবো
দুই ভাই বোনের ঝগড়া দেখে আরহা মেঘের দিকে তাকিয়ে বলে, আমার কেউ কোথাও যাচ্ছিনা সবাই একসাথে মিলেমিশে এখানেই থাকবে।

মেঘ আরহার কপালে চুমু দিয়ে বলে ঝগড়ুটে বিবিজান রেডি থাকবেন সন্ধ্যায় নিতে আসবো। আনহা বলে বাবাই আমাকেও আদর করে দাও। মেঘ ছেলে মেয়ে উভয়কে আদর করে দিলো।

আরহা সার্ভেন্টকে বলল, আনহা আর মেহরানকে খাবার খাইয়ে দিতে। আনহা আর মেহরান চলে যেতেই। আরহা বললো, কতবার বলেছি বাচ্চাদের সামনে এসব করবেন না।
– কি সব করলাম
– অসভ্য লোক, বুড়ো হয়ে যাচ্ছে তাও অসভ্যতা কমছে না।
– মেঘ আরহাকে কোলে তুলে নিয়ে বলে, আমাকে বুড়ো বলা তাইনা চলো দেখাচ্ছি কেমন বুড়ো আমি!
– এই ছাড়ো বলে দিচ্ছি আমি সকালেই গোসল করেছি এখন এসব একদম হবে না।

– হবেনা মানে হতেই হবে।আমাকে বুড়ো বলা।
– আরে জানু আমি তো মজা করেছি তুমি এখনো রনবীর কাপুড়ের চেয়ে হ্যান্ডসাম। বলেই মেঘের গালে চুমু খেয়ে বলে, এখন ছেড়ে দাও জান কত কাজ বাকি আছে বলো!

মেঘ আরহাকে রুমে নিয়ে এসে বলে ছেড়ে দিতে পারি তারজন্য আমি কি পাবো।
আরহা মেঘের গলা জড়িয়ে বলে পুরো আমাকেই পেয়ে গেছো আর কি চাই! মেঘ আরহার দিকে তাকিয়ে বলে, তুমি সেই মেয়ে যে বাসর রাতে বলেছিলে,আমার চোখ বেঁধে দাও আমি তোমার দিকে তাকাতে পারছিনা।
– আরহা মেঘের বুকে মুখ লুকিয়ে বলে, কোন সন্দেহ আছে!

– থোরা থোরা সেই লজ্জাবতী, যাকে ছুয়ে দেয়ার আগেই কেমন লজ্জায় নুয়ে পরতো। আর এখন কেমন সে আমার কাছে ধরা দেয়।

– চার বছরের দুটো বাচ্চার মা হয়েছি এখনো লজ্জা?
– হুম তাও ঠিক তবে এক সাথে আমাকে ছেলে মেয়ে উভয় দিয়ে দিয়েছো। বিনময়ে তোমার লজ্জা আমি নিয়ে নিয়েছি
– তা বিয়ের পাঁচ বছরে আপনি সেই লজ্জা রেখেছেন,আপনার সামনে এখন লজ্জা পেতে লজ্জা লাগে। পাঁচ বছরে আমার লজ্জাকে ধুয়ে মুছে গিলে খেয়েছেন। এবার আমাকে ছেড়ে কাজে যান তো।

মেঘ আরহাকে ছেড়ে দিয়ে বলে এখন ছেড়ে দিলাম রাতে কিন্তু কোন ছাড়াছাড়ি নেই।

এরমধ্যেই নীলুর কল আসলো আরহা ফোন কানে দিতেই নীলু বলে, আমি একটা বাচ্চা সামলাতে পারিনা তুই দুটো কি করে সামলাস?

সেসব গোপন সিক্রেট তোমাকে বলবো কেনো! আচ্ছা এটা বল ইলহাম কেমন আছে?
– সে তো ভালোই থাকে পুরো,বাপেররমতো হয়েছে।
– তুমিও কমনা আপুই! এটা বলতেই দুজনেই হেসে উঠলো, এরমধ্যেই আনহা মাম্মাম বলে চেঁচাতে লাগলো, আরহা বলল রাখো ফোন দেখি ওদিকে কি হলো।
নীলু হেসে ফোন কেটে দিলো।
ফোন কেটে দু’ প্রান্তে দুজনেই ভাবছে আমাদের জীবনে সত্যি এতো সুখ ছিলো। ভাবনার মাঝেই দু’জনের বাচ্চারা চেঁচামেচি করতে লাগলো।

এভাবে ভালো থাকুক আমাদের প্রিয় আরহা আর মেঘ।
ভালো দিনের জন্য অনেক গুলো খারাপ দিন পার করে আসতে হয়।

অবশেষে ভালো থাকুক ভালোবাসা।

সমাপ্তি