আমার আসক্তি যে তুমি Part-54

0
3586

#আমার_আসক্তি_যে_তুমি
#Part_54
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat
.
?
হাত দুটো মাথায় চেপে বসে আছে রিয়ান। চোখ দুটো ভীষণ লাল। সাথেই সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে ওর। রাগ, জিদ, ক্ষোভ, কষ্টগুলো যেন একত্রিত হয়ে এক বাজে অনুভূতি সৃষ্টি করছে ওর মনের ভিতরে। রিয়ানের দম বন্ধ হয়ে আছে। তার মনে হচ্ছে যেন সে এখনই দম বন্ধ হয়ে মারা যাবে। তার এখন একটু শান্তি চাই কিন্তু তাও যে রয়েছে তার রিয়ুপাখির কাছে।
রিয়ানের এইবার নিজের চুল নিজেই ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে। সহ্য হচ্ছে না যে তার এই পিরা। রিয়ান নিজেকে শান্ত করতে বার বার দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলছে। কিন্তু কোন মতেইই যেন সে নিজেকে শান্ত করতে পারছে না। কিন্তু বার বারই তার মস্তিষ্ক এই কথাটি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে, “তার রিয়ুপাখি তার থেকে দূরে চলে যেতে চায়। সে আর চায় না তাকে। ঘৃণা করে ”
এই কথাটি মনে করার সাথে সাথে ওর মাথায় আগুন ধরে যায়। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা দায়ভার হয়ে উঠে। রিয়ান এইবার নিজের মাথা আরও শক্ত করে চেঁপে ধরে।
তখনই ওর সামনে কেউ এক গ্লাস লেবু পানি এগিয়ে দেয় আর শান্ত গলায় বলে,
.
— ধর খেয়ে নে এইটা।
.
কাউরো আওয়াজ কানে আসতেই রিয়ান মাথা তুলে উপরে তাকায়। দেখে সিয়াম শান্ত দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। চেহারায় তেমন কোন প্রতিক্রিয়া নেই। রিয়ান এইবার লেবু পানির গ্লাসটা হাতে নিয়ে এক চুমুক দেয় সেই গ্লাসে। সিয়াম এইবার রিয়ানের পাশে বসে বলে,
.
— বল এইবার কি হয়েছে?
.
রিয়ান একবার সিয়ামের দিকে তাকিয়ে দম নেয় তারপর কালকে থেকে শুরু করে আজকে হয়ে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে সব কিছু বলে। সিয়ান সব শুনে এক দীর্ঘ শ্বাস নেয় তারপর শান্ত ভঙ্গিতেই বলে,
.
— এমনটাই হওয়ার কথা ছিল না? তুই ভালো করেই জানিস যে, রিয়ানা একটি আবেগপূর্ণ মেয়ে। ওর মধ্যে ইমোশনগুলা বেশি কাজ করে। যার ফলে ও না বুঝে শুনে বেশি রিয়েক্ট করে। দেখ আমাকে তোকে ব্যখ্যা করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করছি না। তুই আমার থেকে বেশি জানিস রিয়ানাকে। এমন কি হয়তো রিয়ানার থেকেও বেশি তুই ওকে জানিস।
তাহলে তোর তো ধারণা থাকার কথা যে রিয়ানা সত্যিটা জানলে এমনটাই করবে।
.
রিয়ান এইবার সিয়ামের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকায়। তারপর বলে,
.
— হ্যাঁ জানতাম কিন্তু এখন আমি বা কি করবো বল? নিজের রাগ যে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। রিয়ুপাখি বার বার আমার হিংস্রতা জাগিয়ে তুলে। নিজেকে শান্ত রাখার যত চেষ্টা করি ততোই আমাকে অশান্ত করে তুলে।
.
সিয়াম এইবার সন্দেহ দৃষ্টিতে রিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,
— তুই আজকে রিয়ানাকে সব বলেছিস তাই না?
.
— হু!
.
— নিজের রোগের কথা বলেছি?
.
রিয়ান এইবার মুখ ঘুরিয়ে বলে,
— না।
.
— কেন রিয়ান? কেন বলিস নি ওকে। তুই যে Ntermittent Explosive Disorder (NED) এ ভুগছিস তা কেন বলিস নি? তাহলেই তো ওর বুঝতে সুবিধা হতো যে তুই যা করেছিস তা তোকে তোর ভিতরে থাকা হিংস্রতা করিয়েছে।
.
— কি জানাবো ওকে বল! ও শুধু একেক পর এক আমাকে প্রতিনিয়ত ভুল বুঝেই যায়। আমি যতক্ষণ না তা ক্লিয়ার করছি ততোক্ষণ ও কিছুই বুঝতে রাজি না।
আচ্ছা ও কি একবার নিজ থেকে কাছে এসে আমায় জানার চেষ্টা করতে পারে না? আমি কেন সবসময় সব ক্লিয়ার করবো বল।
.
— আচ্ছা মাথা গরম করিস না। মাথা ঠান্ডা কর। বাই দ্যা ওয়ে আজকে সকালে ঔষধ নিয়েছিলি তুই? চিন্তিত হয়ে।
.
— না! সময় কখন পেলাম। ঘুম থেকে উঠেই তো এইসব হয়ে গেল।
.
— নিজের ক্ষতি তো ভালোই করতে পারিস দেখছি। ওয়েট আমার বাসায় মনে হয় কয়েকটা ঔষধ আছে। এর আগের বার যখন এসেছিলি তখন রেখে গিয়েছিল। দ্বারা খুঁজে দেখছি।
.
অতঃপর সিয়াম গিয়ে খুঁজে সেই ঔষধ গুলো নিয়ে আসে। সাথে এক গ্লাস পানিও নিয়ে আসে। রিয়ানকে ঔষধটি খাইয়ে ওর পাশে বসে তারপর ওকে বলে,
.
— দেখ রিয়ান রিয়ানা তোর সম্পর্কে বলতে গেলে কিছুই জানে না। ও তোকে ভালবেসেছে ঠিকই কিন্তু তুই কখনো ওকে তোকে জানতে দেওয়ার সুযোগটা দিস নি। তুই ওকে যতটুকু বুঝিয়েছিস ও অতো টুকুই বুঝেছে। তাহলে বল ওর দোষ কোথায়?
.
এতটুকু বলে সিয়াম থামে। তারপর এক দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে আবার বলতে শুরু করে,
.
— তোকে আমি প্রায় ১৩-১৪ বছর ধরে চিনি। লন্ডনে যাওয়ার পর পরই তোর সাথে আমার পরিচয়। তুই যে কোন পরিস্থিতিতে ছিলি আমি জানি। ডিপ্রেশন, একাকিত্ব সবই তোর উপর ভর করে ছিল।
আর তোর বড় ফুপু সে তো সবসময় আরিয়ানকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। তোকে দেখার তেমন সময়ও তার ছিল না। আর আবিরের জন্য তো তুই সকলের সাথে কথা বলাটা ছেড়েই দিয়েছিলি। সাথে তোর মধ্যে ছিল বাবা মাকে হারানোর কষ্ট। যার জন্য সব মিলিয়ে তোর মধ্যে ধীরে ধীরে রাগ, ক্ষোভ, রুক্ষতা, জিদ চলে আসে। আর তুই দিন দিন হিংস্র হয়ে উঠিস। তোর রাগ যেন সকল সীমানা অতিক্রম করে ফেলে।
তাই তো তখন আমি কিছুটা আঁচ করতে পেরে তোকে দ্রুত ডক্টরের কাছে নিয়ে গিয়ে ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করি। পরে জানতে পারি যে তুই Ntermittent Explosive Disorder (NED) আক্রান্ত। জানতে বেশ কিছুটা দেরি হয়ে গিয়েছিল ঠিকই কিন্তু তাও তুই হাত ছাড়া হোস নি। তোর মধ্যে যে ঠিক কতটা রাগ ক্ষোভ আছে তা শুধু আমি জানি।
তোর রাগ যে কাউরো জান নিতে দ্বিমত প্রকাশ করে না তা আমি জানি। কিন্তু তুই কখনো তোর এই রাগ নির্দোষ মানুষের উপর ঝারোস নি বা নির্দোষ কাউকে ক্ষতি করোস নি। যার যেটা প্রাপ্য তুই সেটাই দিয়েছিস যার জন্যই আমি তোর সকল কাজে অংশীদার ছিলাম। আর সবসময় থাকবো৷
কিন্তু রিয়ানা তো আর এইসব জানে না। ওকে তোকেই জানাতে হবে বুঝাতে হবে। তুই যে রিয়ানাকে ঠিক কতটা ভালবাসিস তা আমি জানি। তাই বলছি ওকে বুঝা। তুই যদি ওকে না বুঝাস তাহলে ও বুঝবে কিভাবে বল? তুই কেন এত হিংস্র তা বল ওকে। দেখবি ও ঠিকই বুঝবে তোকে।
.
রিয়ান এইবার নিজের মনোবল ঠিক করে এবং সিদ্ধান্ত নেয় রিয়ানাকে আজ ও সব বলবে সব। রিয়ান এইবার সিয়ামের দিকে কৃতজ্ঞতার চোখে তাকিয়ে বলে,
— তুই না থাকলে হয়তো এইসব আমাকে কেউ এতো সুন্দর করে বুঝাতে পারতো না। থেংক্স রে।
.
— ধুর শালা! এখন এতো পাম দিতে আসবি না তো। বাই দ্যা ওয়ে একটা কথা জানাতে ভুলে গিয়েছিলাম আমি।
.
— কি? কৌতূহলপূর্ণ কণ্ঠে।
.
— সূর্য ইজ ডেড।
.
— হোয়াট! মানে কিভাবে?
.
— ঠিক জানি না। সূর্য থেকে কোন আপডেট না পেয়ে তুই যখন আবিরের খোঁজ নিতে আমায় নিউইয়র্ক পাঠালি তখন সেখানে গিয়ে জানতে পারি দুইজনই নিখোঁজ। অনেক খোঁজাখুঁজি পরও যখন ফল শূন্য তখন ফিরে আসতে নিলাম। কিন্তু ভিসাতে কিছু প্রবলেম হওয়ায় আসতে পারি নি। আর কোন এক কারণে তোর সাথে যোগাযোগও সম্ভব হচ্ছিল না।
অতঃপর সেখানে থেকে জানতে পারি হসপিটালে থাকাকালীন আবিরের সাথে রোজ কেউ দেখা করতে আসতো। কিন্তু কে তা জানতে পারি নি। এর কিছুদিন পরই সূর্যের বডি পায় ওখানকার পুলিশরা। কিন্তু ওর সাথে কোন ফোন বা ওয়েলেট ছিল না যার জন্য পুলিশ ওর ইনফরমেশন ঠিক মত নিতে পারে নি আর জানাতে পারে নি। এরপরে জানতে পারি যে আবির তোর বিয়ের ৫ দিন আগেই বিডিতে এসে পড়েছিল।
আমি তো আসলামই পরশু রাতে তাই তোকে জানাতে দেরি হয়ে গেল।
.
— তার মানে আমার সন্দেহটা ঠিকই ছিল। বিয়ের দিন যা হয়েছিল সবকিছুর পিছে আবিরই ছিল। ওকে যে আমি এইবার কি করবো নিজেও জানি না। রাগে ফুসতে ফুসতে।
.
— কুল ডাউন। যা করতে হবে ধীরে সুস্থেই করতে হবে। আপাতত তুই রিয়ানার কাছে যা। সি নিড ইউ।
.
— হু! এই বলে রিয়ান দরজার দিকে পা বাড়ায়।
তখন পিছন থেকে সিয়াম বলে উঠে,
.
— রিয়ান শুন!
.
রিয়ান দাড়িয়ে পিছে ঘুরে বলে,
— কি?
.
— পারলে এইবার ঠিক মত ট্রিটমেন্টটা করিয়ে নিস। ইউ নিড ইট।
.
রিয়ান এইবার মুচকি হেসে বলে,
— দেখা যাক।
.
এই বলে রিয়ান চলে যায় আর সিয়াম ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে এক দীর্ঘ নিশ্বাস নেয়। তারপর ফোন হাতে তার প্রিয়তমার ফোনে ফোন দেয়।
.
.
রিয়ান পার্কিং এরিয়াতে এসে গাড়িতে বসতে যাবে তখনই কেউ ওর মাথায় খুব জোরে আঘাত করে। রিয়ান আঘাতটি নিতে না মেরে মাথা চেঁপে ধরে। চোখের সামনে অন্ধকার ছেঁয়ে যায় সাথে মাথাটা ভো ভো করে ঘুরতে থাকে। রিয়ান এইবার লুটিয়ে পড়ে মাটিতে।
.
.
.
.
.
??
.
.
?
” সেইদিনের পর আমার সাথে আর সেই মেয়েটির দেখা হয় নি। কেন না পরের দিনই আমি এক কাজে ঢাকার বাইরে চলে যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমি এক অন্য রিয়ানকে অনুভব করতে শুরু করি। যার সাথে আমি পরিচিত না। আমি উঠতে, বসতে, শুতে, ঘুমাতে সব জায়গায় চোখের সামনে সেই মেয়েটির কান্না মিশ্রিত মুখটি ভেসে উঠতে শুরু করি। বার বার তাকে নিজের চারপাশে দেখতে শুরু করি। কোথাও কোন শান্তি পাচ্ছিলাম না। কেন যেন বার বার মনে হচ্ছিল আমার শান্তি সব যেন সেই মেয়েটির মাঝেই। সেই মেয়েটির কথা মনে পড়লেই মনের ভিতরে কেমন এক অনুভূতি জাগ্রত হয়ে উঠে। অবাক করার মত বিষয় হলো আমি এই রকম অনুভূতি হতে একদম অপরিচিত। ঠিক কি হচ্ছিল আমার সাথে আমি জানি না।
শেষ পর্যন্ত মনের সাথে না পেরে আবার ঢাকায় ফিরে আসি। আর সেই মেয়েটিকে তন্নতন্ন করে খুঁজতে থাকি। তার দেখা না মিললে যে আমি শান্তি পাব না। কিন্তু আফসোস সে গতকালই চলে গিয়েছিল। কিন্তু মন যে মানতে নারাজ। মন যে তাকে দুই নয়ন ভরে আবার দেখতে চায়। তখনই আমার সেই পূরণকৃত ফরমের কথা মনে পড়ে। আর তাই আমি ছুটে চলি আমার কেবিনের দিকে। কেবিনে গিয়ে ঠিক ফরমটা পেয়েও যাই। সেখান থেকে পেয়ে যাই তার ঠিকানাটি। তখন কেন যেন ঠোঁটের কোনেটা প্রসারিত হয়ে যায়। মনের মধ্যে ধপ করে জ্বলে উঠে এক অফুরন্ত আশা। ”
?
.
এতটুকু পড়ে দম নেই আমি। তারপর পরের পৃষ্ঠাই অগ্রসর হই।
.
?
” আজ তাকে দ্বিতীয়বারের মতো একদম কাছ থেকে দেখতে পেলাম। সেইদিনের থেকে আজ সে সম্পূর্ণ ভিন্ন। আজ সে প্রানবন্ত। তার মুখে ঝুলে আছে এক মিষ্টি হাসি। চোখ গুলোও যেন আজ হাসছে তার। তার গায়ে পড়া হাল্কা আকাশী রঙের কামিজটি আজ একদম ফুটে উঠেছে। বেশ স্নিগ্ধ লাগছিল তাকে। এই মনে হচ্ছিল সে যেন এখনই ডানা মেলে পাখির মত ছুঁ মেরে উড়াল দিবে। মন চাচ্ছিল ছুঁয়ে দেই তাকে। হঠাৎ এমন এক ইচ্ছায় জাগ্রত হওয়ায় আমি বিষ্ময়ের শেষ পর্যায়ে চলে যাই। হুট করে আমার এমন অদ্ভুত ইচ্ছের কারণ খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু প্রতি বার এর মতই ব্যর্থ হই আমি।
আমি তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখি। আপনা-আপনি মুখে ফুটে উঠে এক প্রশান্তির হাসি।
মনের মধ্যে বয়ে চলে এক অজানা অনুভূতি। তখন আবারও মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে, “রিয়ুপাখি” নামটি। এইবার যেন এই নামটি আমার হৃদয়ে গভীরভাবে দাগ কেটে যায়। আর চিরস্থায়ী হয়ে যায় বুকের পাশে।
?
.
লিখা শেষ হতেই আমি এইবার দ্রুত অন্য পৃষ্ঠাতে অগ্রসর হই।
.
.
?
এরপর আমি না চাওয়া বার বার আমি তার বাসার দিকেই ছুটে যেতাম। দূর থেকেই এক নজর দেখবো বলে। এরই মধ্যে তাকে প্রত্যেক দিন দেখাটা আমার অভ্যাস হয়ে উঠে। সে যদি একদিনও চোখের আড়াল হতো তখনই মনে হতো কেউ যেন আমার খুব প্রিয় একটি জিনিস কেড়ে নিয়ে গিয়েছে। যাকে ছাড়া আমি নিঃস্ব। অর্থহীন! প্রাণহীন এক নিকৃষ্ট জীব। যার অন্তত শ্বাস নেওয়ার জন্যেও এই মেয়েটিকে প্রয়োজন।
?
.
আমি এর পরের পাতা গুলো পড়তে থাকি৷ তখনই নজর পরে একটি পাতায়। তাতে লিখা,
.
?
আমি এতটাও অবুঝ নয় যে এইসব পাগলামির মানে গুলো বুঝবো না। বুঝছিলাম ঠিকই তার প্রতি আমার মনে কোন গভীর অনুভূতি জাগ্রত হচ্ছে কিন্তু এই অনুভূতির সঠিক শব্দটা কি তা খুঁজে পাচ্ছিলাম।
অতঃপর আস্তে আস্তে বুঝতে পারলাম যে আমি এই “রিয়ুপাখি” নামক মানবটির প্রেমের পরে গিয়েছি। যাকে বলে সাংঘাতিক প্রেম। এই প্রেম যে কখন ভালবাসায় পরিনত হয়ে গিয়েছে বুঝতেই পারলাম।
যতই দিন যেতে থাকে আমি তার প্রতি আসক্ত হতে থাকি। সে যেন আমার বাঁচার কারণ হয়ে উঠে। অতঃপর একসময় বুঝতে পারলাম আমার আসক্তি যে সে হয়ে গিয়েছে। যার জন্য এখন আমি জান নিতেও পারি আবার দিতেও পারি। ওকে যেন সকল কুনজর থেকে সুরক্ষিত করায় আমার প্রধান কাজ হয়ে উঠেছে।
ভাবতেই অবাক লাগে যে সাদাত খান, একটা মেয়ের দিকে চোখ তুলে পর্যন্ত তাকাতাম না। যতই সুন্দরী মেয়ে হোক না কেন তাকে পাত্তা দিতাম না আজ সেই সাদাত খান এক মেয়ের কান্নামিশ্রিত চেহেরা দেখে তার ভালবাসার অতুল সমুদ্রে ডুবে যাচ্ছে। যে আমি ভালবাসা নামক পিঞ্জারা হতে শত দূর দৌড়াতাম আজ সে অন্যকে এই পিঞ্জারাতে বন্ধি করতে এতো কাঠখড় পুড়াচ্ছে।
হাইরে ভালবাসা, কি বানিয়ে দিলি আমাকে।
?
.
এর পরের সকল পৃষ্ঠায় সকালে বলা রিয়ানের কথা গুলোই লিখা যে, কিভাবে সে আমাকে জেনেছে, আমার পাশে থেকেছে, আমার মনে জায়গা তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে, আমাকে কিভাবে আগলে রেখেছে। আমি একেক পর এক পৃষ্ঠা খুব মনোযোগসহ কারে পড়ে চলেছি। একেক পাতায় রিয়ানের সব অনুভূতি গুলো প্রকাশ পেয়েছে। রিয়ানের লিখা প্রত্যেকটা কথা যেন তীরের মত বিধছিল আমার বুকে।
অবশেষে একটি পৃষ্ঠায় এসে আমি থমকে যাই। গলা ধরে আসে। চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে। আমি বার বার লিখাটি পড়তে থাকিম
.
?
মাঝে মাঝে নিজেকে প্রশ্ন করি, “আচ্ছা রিয়ুপাখি কি আমায় মেনে নিবে? মেনে নিবে কি আমার হিংস্রতা গুলো? বুঝবে কি আমার ভালবাসা? বুঝবে কি আমায়?”
হয়তো না। যে যতই ভালবাসুক না কেন ভালবাসা সবসময় কষ্টই দেয়। যেমন এখন আমি পাচ্ছি। রিয়ুপাখিকে খুব কাছে পেয়ে তাকে না পাওয়ার যন্ত্রণায় ভুগছি আমি। ওকে পাবো এই আশায় প্রতিদিন নিজেকে বাঁচিয়ে রাখছি। কিন্তু সে কি আর এই সব জানে? না জানে না। আমি নামক কোন ব্যক্তি যে আছে সে হয়তো এইটাই জানে না। তাহলে আমার ভালবাসার কথা কিভাবে জানবে?
আচ্ছা রিয়ুপাখিকে ভালবাসি বলেই ওইসব নরপশুদের আমি মৃত্যু দান করেছি। ওরা যে আমার রিয়ুপাখিকে অপবিত্র করতে চেয়েছিল তারই শাস্তি দিয়েছি আমি ওদের। কিন্তু এইটা কি সে বুঝবে? না বুঝবে না।
যতটুকু ওকে বুঝেছি, জেনেছি সে প্রচন্ড কোমল হৃদয়ের একটি মেয়ে। ও কখনোই এত হিংস্রতা সহ্য করতে পারবে না। সে কখনোই আমার হিংস্রতাকে আপন করবে না। সম্ভবত এইসব জানার মত আমাকে এক হিংস্র প্রাণীর উপাধি দিবে বা এর চেয়ে বেশি হয়তো বা জা*** পদবিটি দিবে। হয়তো ঘৃণা করবে প্রচুর।
হয়তো আমার সাথে ওর মত নিষ্পাপ মেয়েকে মানায় না। কিন্তু আমিই বা কি করি? আমি যে বাধ্য। খুব করে চাই যে ওকে। ওকে ছাড়া এক মূহুর্ত আমার কাটানো সম্ভব না। তাই তো ওকে খুব জলদি নিজের সাথে জড়িয়ে নিতে চলেছি। এর জন্য যদি আমাকে আমার এই হিংস্র রুপ লুকাতে হয় তাহলে তাই হলো। ওর সামনে নিজের এই রুপ কখনো আসতে দিব না আমি। ভালবাসি তাকে। খুব বেশি ভালবাসি। তাই তো এখন আমার আসক্তি যে সে।
?
.
একটা মানুষ কিভাবে এতটা ভালবাসতে পারে তা আমার জানা নেই। নিজের সর্বস্ব দিয়েও মনে হয় কেউ এমন ভালবাসতে পারবে কিনা জানি না। আর আমি এমন ভালবাসা পেয়েও দূরে সরিয়ে দিয়েছি। আচ্ছা শুধু মাত্র এই হিংস্রতার জন্যই কি এতটা ভালবাসাকে অবহেলিত করা যায়? না একদম না।
এই অসীম ভালবাসার সামনে যে এই হিংস্রতা অতি নগ্ন। কথাই আছে, “Everything is fair is love and war.”
তাহলে অবশ্যই রিয়ানের হিংস্রতা এরই এক অংশ। যা করেছে নিজের ভালবাসার জন্য। অন্যের জন্য তো নয়।
.
আমি যখন এইসব আকাশ পাতাল ভাবছি তখন নজর যায় চিকন সেই ডাইরিটির দিকে। উৎসুক চোখে সেই ডাইরিটির দিকে তাকাই। এর মধ্যে কি হতে পারে তা জানার কৌতূহল যেন ঝেঁকে বসলো আমায়। আমি এইবার ওইটা নিয়ে পড়তে শুরু করি।
প্রথম পৃষ্ঠাতেই একজনের ছবি দেওয়া। আমি পাতা উল্টিয়ে দেখি সকল পৃষ্ঠাতেই একেকজনের একটা করে ছবি দেওয়া। আর নিচে কিছু লিখা। আমি এইবার একের পর এক লিখাগুলো পড়তে থাকি।
.
?
এই জা***টা রাস্তায় আমার রিয়ুপাখিকে বাজে ইঙ্গিত করেছে। বাজে দৃষ্টিতে তাকিয়েছে। এর জন্য সে তার ফল পেয়েছে।
.
?
এই কুকুরটা আমার জানের ওরনা ধরে টান দিয়েছে। ওকে হেরাস করেছে। ওকে ওর প্রাপ্য শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
.
?
এই নরপশুটি বাসে আমার রিয়ুপাখির গায়ে বাজে ভাবে স্পর্শ করার চেষ্টা করেছে। ওকে অপবিত্র করতে চেয়েছে। যার জন্য ও মৃত্যু পেয়েছে।
.
?
এই নিকৃষ্ট জীবটা রাস্তায় আমার রিয়ুপাখিকে বিরক্ত করেছে। ওকে বাজে প্রস্তাব দিয়েছে। এর জন্য ওকে মৃত্যু দেওয়া হয়েছে।
.
?
ও আমার রিয়ুপাখির দিকে কামনা দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল এবং ওকে চোখ দিয়েই গিলে খাচ্ছিল। যার জন্য ওর চোখ উবড়ে ফেলেছি আমি।
.
?
এই জা***টা ভরা ক্যাম্পাসে আমার রিয়ুপাখির হাত ধরেছে এবং কুপ্রস্তাব দিয়েছিল। যার জন্য একে সবচেয়ে নিকৃষ্ট শাস্তি দিয়েছি আমি। [ ইহা রকি ]
.
এমন আরও কতগুলো ঘটনা গুলো তুলে ধরা হয়েছে যেগুলো আমার সাথে হয়েছে। একে একে সব আমার মনে পড়তে থাকে আর আমার গা রি রি করে উঠে।
মনে পড়ে সেই সময়ের কথাগুলো। তখন আমি এইসবের প্রতিবাদ করতে পারে নি। যতবারই প্রতিবাদ করতে গিয়েছি ততোবারই লাঞ্চিত হয়েছি। আমার উপরই আঙুল উঠেছিল সবাই। আমার চরিত্র নিয়েই প্রশ্ন উঠিয়েছিল এই সমাজ। আমাকে বাধ্য করেছিল চুপ হয়ে থাকতে আর সহ্য করতে এমন হেরাসমেন্ট। তখন নীরবে আমার ফেলতে হয়েছিল চোখের জল। এর বাদে কিছু করার ছিল না আমার।
.
.
[[ ঠিক এমনটাই হচ্ছে আমাদের সমাজের মেয়েদের সাথে। সে যেই রুপেই থাকুক না কেন পর্দাশীলভাবে বা বেপর্দাহীনভাবে তাকে এই হেরাসমেন্টের শিকার হতেই হয়। সে পর্দা করুক আর নাই করুক তাকে কথা শুনতেই হয়। কৈফিয়ত দিতেই হয়। কেন না সে একজন মেয়ে।
আমাদের সমাজও এই হেরাসমেন্টের দোষ মেয়েদেরই দেয়। মানে কথাটা এখন এমন দাড়িয়েছে যে ভিক্টিম মেয়েরাই আবার কাল্প্রিটও মেয়েরাই। ছেলেদের এইখানে কোন দোষ নেই। এইটাই আমাদের সমাজের ভাবনা এবং সংস্কৃতি।
আমি বলবো না সবার পয়েন্ট অফ ভিউ এক। অনেকের চিন্তা ভাবনা খুবই শালীন এবং তারা সবসময় মেয়েদের পক্ষে। তারা মেয়েদের সম্মান দিতে জানে। কিন্তু তাতেও কি? যতক্ষণ না আপনারা প্রতিবাদ করবেন ততক্ষণ এইসব বদলাবে না।
আমি একটা কথা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি যদি সবাই একটু সাহস জুগিয়ে সামনে আসেন আর প্রতিবাদ করেন তাহলে দেখবেন সব কিছু সম্ভব। তখন এই সমাজও তাদের দৃষ্টিকোণ বদলাতে বাধ্য হবে।
যদি ভুল কিছু বলে থাকি বা আমার কথায় কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে দুঃখিত। ]]
.
.
পৃষ্ঠা উল্টাতে উল্টাতে চোখে পড়ে আরিয়ানের ছবিটির দিকে। সাথে সাথে আমার সেই দিনের কথা গুলো মনে পড়ে যায় যখন আরিয়ান আমার সাথে বাজে কিছু করার চেষ্টা করেছিল। খুব কষ্টে নিজের ইজ্জত বাঁচিয়েছিলাম আমি। সেই সময়ে আমেনা আন্টিও ছিল না পাশে। সে কিছু কাজে নিজের গ্রামের বাড়ি গিয়েছিল। তখন আরিশা আর রিংকি এই আমাকে সামলিয়েছিল। যদি ওরা না থাকতো হয়তো আমি তখনই নিজের গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝুলে পড়তাম।
এই ভেবেই রিয়ানার চোখ দিয়ে অনাবরত অশ্রু গড়িয়ে পড়তে থাকে।
তখনই নজর যায় আবিরের ছবিটির দিকে। সাথে সাথে আমি থমকে যাই। খুব জানতে ইচ্ছে করছিল আবির আমার সাথে কি করেছিল।অতঃপর সেই জায়গার লিখাটা পড়তে শুরু করি।
.
?
তুই আমার নিজের রক্তের ভাই হয়েও এতটা নিচে কিভাবে নামলিরে? আমার ভালবাসাকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে এতটা নিচে নামলি তুই?
প্রথমত ওকে মিথ্যা ভালবাসার দাবি করে ওকে আমার থেকে দূরে সরিয়ে নিতে চাইলি। ওর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলি তুই। তখনো তোকে কিছু বলে নি আমি। ভাই বলে তাই।
কিন্তু এর পরে কি করলি? আমার রিয়ুপাখিকে পানিতে ফেলে দিয়ে মারতে চাইলে তুই? না মারতে চাস নি বরং আমার থেকে কেড়ে নিতে চেয়েছিলি তাই তো। রিয়ানাকে বাঁচানোর মিথ্যে অভিনয় করে তার ভালবাসা পেতে চেয়েছিলি তুই। ওর হাটার রাস্তায় গর্ত করে দিয়ে ওর পা মচকিয়েছিলি তুই।
তুই কি মনে করেছিলি আমি তোর প্লেন সম্পর্কে কিছু জানতাম না? সবই জানতাম। এইটাও জানতাম আমি রিয়ানাকে ভালবাসি বলে তুই ওকে নিজের করতে চেয়েছিলি। কেড়ে নিতে চেয়েছিলি ওকে আমার কাছ থেকে। তারপর ওকে কষ্ট দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিতে চেয়েছিলি আমাকে কষ্ট দিতে।
একটা কথা জানিস কি সবই মানতে পারি কিন্তু রিয়ুপাখির কষ্ট গুলো মানতে পারি না রে। একদম পারি না। তাই তোকে না চাওয়া সত্তেও শাস্তি দিয়েছিলাম তোকে।
যখন কেউ তোর প্রিয় জিনিস নিয়ে নিবে তখনই তুই বুঝতি অন্যের প্রিয়ু জিনিস কেড়ে নেওয়ার কষ্টটা। তাই তোকে এই শাস্তিটাই দিয়েছিলাম।
কিন্তু সেই শাস্তি যে সাময়িক। তোর কণ্ঠ আমি নিয়েছিলাম ঠিকই কিন্তু তা কিছু সময়ের জন্য। তোকে ঠিকই একটা সময়ে আমি তোর কন্ঠ ফিরিয়ে দিব। কিন্তু আগে তোকে তোর ভুল বুঝতে হবে তো।
এমন ভাবিস তোকে কষ্ট দিয়ে আমি ভালো আছি। তোকে কষ্ট দিয়েছি ঠিকই আমি কিন্তু এর চেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছি আমি। তোকে ছোট থেকেই আগলে রাখার চেষ্টা করেছিলাম আমি কিন্তু তোর ঘৃণা এতোই প্রবল ছিল যে আমাকে তোর থেকে দূরে সরে থাকতে বাধ্য করেছিল।
কিন্তু তাও তোকে আগলে রাখা ছাড়ি নি আমি।তোর আড়াল থেকেই আমি ছোট বাবার নাম ব্যবহার করে তোর সকল চাহিদা পূরণ করেছিলাম আমি। মনে আছে তুই যখন গিটারের জন্য আবদার করেছিলি কিন্তু ছোট বাবা তোকে দেয় নি। তখন আমি নিজের টিফিনের টাকা জমিয়েই তোর জন্য একটা গিটার কিনেছিলাম। কিন্তু নাম দিয়েছিলাম ছোট বাবার। আমার দেওয়া জিনিস তো আর তুই নিবি না তাই না?
তুই যতই অস্বীকার করোস না কেন তুই আমার ভাই না। কিন্তু সত্যি বলতে গেলে তোর মধ্যে যে আমার বসবাস। আমার অংশ যে তোর মাঝেই বিরাজমান। ছোট বেলায় তোর একটা কিডনি নষ্ট হয়ে যায় তখন আমিই আমার এক কিডনি দিয়ে তোকে বাঁচিয়েছিলাম। আর সেই থেকে তোর মাঝে আমি বিরাজমান করা শুরু করে ফিয়েছিলাম। কিন্তু এই কথা তুই জানিস না। কেন না আমি মানা করেছিলাম সবাইকে এই কথাটি বলতে। হয়তো এই কথাটি জানতে তুই নিজের জীবনই রাখবি না।
জানিস তোর গায়ক হওয়ার স্বপ্ন বলে আমি আগে থেকেই তোর জন্য সব ব্যবস্থা করে রেখেছিলাম। যাতে পরবর্তীতে তোর কোন সমস্যা না হয়।
তুই যতই কষ্ট দে আমায়। আমি তো তোর বড় ভাই তাই না? কিভাবে তোর প্রতি অভিমান রাখি বল? তোর প্রতি না আছে কোন অভিমান না আছে কোন অভিযোগ। সবই এখন দীর্ঘ শ্বাস। তোকে আগলে রাখা আমার কর্তব্য কিন্তু তা গোপনে। মুখোমুখিতে আমরা চিরতর শত্রু বুঝলি। আর এইটাই সত্য।
হয়তো এইসব কথা তোকে কখনো বলা হবে না তাই আজ ডাইরির এই পাতায় কথাগুলো বন্ধি করে ফেললাম। যাতে এই কথাগুলো কোথাও পালাতে না পারে আর তোর কাছে পৌঁছাতে না পারে। আজ তোকে এমনেও আমাকে ঘৃণা করার আরেকটি কারণ দিয়ে দিলাম তাই এখন থেকে আমায় সীমাহীন ঘৃণা করিস কেমন।
?
.
.
এতটুকু পড়েই আমার চোখ ভিজে আসে। একজন ঠিক কতটা ভালবাসতে জানতে পারে তা আমি জানি না। কিন্তু রিয়ান যে মন উদার করে ভালবাসতে পারে তা ঠিকই বুঝেছি। রিয়ানের ভালবাসা সত্যি সকলের হতে ভিন্ন। ওর মত করে হয়তো কেউ না আজ পর্যন্ত ভালবাসতে পেরেছে আর না ভালবাসতে পারবে।
চোখ মুছে আমি এইবার ডাইরিটা রাখতে যাব তখনই আমার সামনে একটি কাগজ পড়ে যায়। আমি তা উঠিয়ে খুলে দেখি একটি মেডিক্যাল ট্রিটমেন্টের রিপোর্ট। আমি এইবার রিপোর্টটা পড়তে শুরু করি। রিপোর্টটা রিয়ানের। আর এইটাতে লিখা রিয়ানের Ntermittent Explosive Disorder (NED) রোগে আক্রান্ত। আমি এই রোগ সম্পর্কে পড়েছিলাম বলে আমি এই সম্পর্কে জানি।
এইবার আমার কাছে সব পরিষ্কার হয়ে যায় যে রিয়ানেত এত হিংস্রতার কারণ কি। আমি এইবার দ্রুত চোখ মুছে উঠে দাড়াই আর রিয়ানার কাছে যাওয়ার জন্য অগ্রসর হই। গেট খুলে বাইরে পা রাখতেই যাব তখনই দরজার সামনে থাকা আগুন্তকে থেকে থমকে যাই। আর অস্পষ্ট সুরে তার নাম বলে উঠি,
.
— আআবির!
.
.
#চলবে