Secret Lover
Tafsirah Islam
Part – 13
তিথি মনোযোগ দিয়ে কাজ করছে আর রুহান তিথিকে দেখছে
রুহান : ?? পাগল হয়ে যাব আমি ( মনে মনে)
তখনই কেউ রুহানের কেভিনে আসে..
তাকে দেখা মাত্রই তিথির চোখ কপালে..
একটা মেয়ে কেভিনে এসেই রুহানকে জড়িয়ে ধরে
তিশা : রুহান কেমন আছ বেবি?
রুহান : হুম ভাল, তুমি?
তিথি : ? কি লুচ্চা রে বাবা কয়টা গার্লফ্রেন্ড নিয়া ঘুরে কে জানে,মাত্র তো 2 টা, না জানি আরো কয়টা আছে ?। মন তো চাইতাছে এই বেহায়া নির্লজ্জ টারে একটা আছার মারি?, স্যার রে ধরছে তো ধরছে আর ছাড়ার নাম নাই ? ( মনে মনে)
তিশা : অনেক মিস করেছি বেবি ?
তিথি : হুহ কি ঢং ?, বেবি ?,এত্তো বড় বুড়ারে বেবি মনে হয় ?,( মনে মনে)
রুহান : তিথির দিকে তাকাতেই দেখি রাগে পুরো লাল টমেটো ?।
তিথি বেবি এবার মজা দেখ ? ( মনে মনে)
মিসড ইউ টু তিশু…
তিথি : হ..তিশু না টিস্যু ?…ঢং যত্তসব ( মনে মনে)
তিশা : দেশে ফিরে এসে তো কোন খোজই নাও নি.. ( অভিমানী সুরে)
তিথি : এমন ভাব মনে হয় যেন ওনার বিয়ে করা জামাই ? ( মনে মনে)
রুহান : সরি তিশু,আসলে দেশে ফিরেই একটু ব্যাস্ত হয়ে পরেছিলাম
তিথি : হ এতো এতো গার্লফ্রেন্ড ব্যাস্ত তো হবেই? ( মনে মনে)
তিশা : ইটস ওকে বেবি.. বাট আজ কিন্তু আমরা একসাথে ডিনার করতে যাবো হুম
তিথি : হুহ বেবি তো কোলে তুলে নে না ? জাস্ট অসহ্য ? ( মনে মনে)
তিশা : এইযে হ্যালো ম্যাডাম ( তিথিকে)
তিথি : জি বলুন ?
তিশা : কে তুমি আর কখন থেকে দেখছি এখানে বসে আছ..রুহান বেবি কে ও?
রুহান : ওহ ও হচ্ছে তিথি আমার পিএ..
তিশা : বেবি তুমি কেমন পিএ রেখেছ কোনো কমন সেন্স নেই.. আমাদের পারসোনাল কথা শুনছে বসে বসে..
রুহান : তিশা আমিই ওকে বলেছি থাকতে, আর তিশা তুমি এখন যাও আমার একটা কাজ আছে
তিশা : উহু আমি তোমার সাথেই যাবো বেবি, তোমার কাজ শেষ হতে হতে আমি নাহয় অফিসটা ঘুরে ঘুরে দেখি
রুহান : ওকে
তিশা : থ্যাংক ইউ বেবি… উমমমমাহ ?
( গালে কিস করে)
তিথি : ?? ( ঠাডা পরবো ?)
রুহান তিথির দিকে তাকিয়েই দেখে তিথি রাগে আগুন, পারলে রুহানকে কাঁচা চিবিয়ে খেয়ে ফেলে
রুহান : মিস. তিথি ও হচ্ছে..
তিথি : আপনার আরেকটা গার্লফ্রেন্ড এইতো
রুহান : ??…মিস. তিথি কোথাও মনে হয় কিছু একটা পুড়ছে, আপনি কি স্মেল পাচ্ছেন
তিথি : ? আমি কোনো স্মেল টেল পাচ্ছি না,আর কোথাও কিছু পুড়ছেও না, আপনার নাকে সমস্যা
রুহান : ?? ওহ তাই নাকি ( চেয়ার ছেড়ে উঠতে উঠতে)
তিথি : ? স্যার আপনি শান্তিতে বসে কথা বলতে পারেন না, কথায় কথায় চেয়ার ছেড়ে দাড়ান লাগে (বলেই এক দৌড়ে কেভিনের বাইরে)
রুহান : ?..কতদিন পালাবে তিথি.. তোমাক তো ধরা দিতেই হবে ?
তিথি কেভিনের থেকে বের হতেই দেখে তিশা এদিকেই আসছে..
তিশা সেলফি তুলতে তুলতে আসছে, তিথিও সুযোগ বুঝে না দেখার ভান করে তিশার সাথে ধাক্কা খায়.. আর তিশা বেচারি টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যায়
তিথি : ?? এবার বুঝ ঠেলা টিস্যু কি বাচ্চি? ( মনে মনে)
তিশা : ইইউ.. ? দেখে চলতে পার না নাকি.. চোখ কোথায় থাকে..
তিথি : এক্সকিউজ মি..দোষ টা আপনার..
তিশা : হোয়াট ? তোমার সাহস কতো, কোথায় আমাকে সরি বলবে তা না উল্টো বলছো আমার দোষ, তুমি জানো আমি কে ? আমি কি করতে পারি তুমি হয়তো জানো না
তিথি : ? হয়েছে আপনার.. আপনি আমার কিছুই করতে পারবেন না.. সো এতো বকবক করে টাইম ওয়েস্ট করার কোন মানেই হয় না
তিশা : তুমি মোটেও ঠিক করছো না তিথি, দেখো আজ যেন আবার তোমার অফিসের শেষ দিন না হয়
তিথি : ? ওকে দেখা যাবে
তিশা সাথে সাথেই রুহানের কেভিনে যায়…
..
..
কিছুক্ষণ পরেই রাগে গজগজ করতে করতে বেরিয়ে আসে
তিথি : তা মিস. টিস্যু আ..ম সরি সরি মিস. তিশা তো কাল থেকে কি অফিস ছুটি ?
তিশা : ইইউ ?…আজ তুমি যা করলে তার প্রতিশোধ তো আমি নিবই..তোমার এমন হাল করবো তুমি কল্পনাও করতে পারবে না.. জাস্ট ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ ?
রুহান : মিস. তিথি আমার কেভিনে আসুন এক্ষুনি
তিথি : এইরে না যানি এই টিস্যু টা স্যার রে কি বলছে.. তিথি তুই তো শেষ
তিথি : may i come in sir?
রুহান : ইয়েস মিস. তিথি
কেভিনে ঢুকে দেখে রুহান নেই..
তিথি : কই গেল.. স্যার আপনি…
হঠাৎই দরজা লক করার শব্দ পেয়ে পিছনে ফিরে তাকায়
তিথি : স..স.স্যার আপনি দরজা লক করছেন কেন ? ( ভয়ে ঢোক গিলে)
রুহান : আছে কিছু কথা ?
তিথির সামনে গিয়ে দাড়িয়ে..
রুহান : কাজটা কিন্তু ঠিক হয়নি মিস.তিথি
তিথি : ক.কিসের কাজ ?
রুহান : তিশাকে শুধু শুধু ফেলে দিলেন যে ?
তিথি : স্যার আমি ইচ্ছে করে করিনি ?
তিথি চলে যেতে নিলেই একটানে নিজের কাছে নিয়ে এসে তিথির কোমর জড়িয়ে ধরে
রুহান : মিস. তিথি আমি কিন্তু সবই দেখেছি..
তিথি : ? ( হুহ খালি টিস্যুর চিন্তা আর এই টিস্যুটা আমাকে কতো কিছু বলছে তার খবর নেই ?)
রুহান : চুপ করে আছেন কেন.. বলুন কেন ওর সাথে এমন করলেন..
একটু আগে তো খুব বকবক করছিলেন..
আপনি জানেন ওর রাগ কমাতে আমার কতকিছু করতে হয়েছে.. তিথি : ?
রুহান : কি হলো বলুন
এবার তিথির খুব রাগ হচ্ছে..
তিথি : হ্যাঁ আমি ইচ্ছে করে করেছি ?? কারণ আমি….
রুহান : (তিথির সামনে আসা চুল গুলো কানে গুজে দিয়ে…)
হুম .. বলুন আপনি কি
তিথি : ?
রুহান : ম্যাডাম এতো সহজে মুখ খুলবেন না,( মনে মনে)
কি হলো বলুন (তিথির কানের কাছে মুখ নিয়ে)
তিথি : কিছুনা ?
বলেই রুহানকে এক ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে কেভিন থেকে বেরিয়ে যায়..
রুহান : আরে মিস.তিথি ???
তিথি : ইশ..আরেকটু হলেই তো ??
তখনই তিথির ফোনে ম্যাসেজ আসে…
** ওগো আমার লজ্জাবতী এতো লজ্জা পেয়ো না..তোমার ওই লজ্জা মাখা রূপ দেখলে যে নতুন করে তোমার প্রেমে পড়ে যাই..ইচ্ছে করে খেয়ে ফেলি তোমায় ? **
তিথি : এই বদের হাড্ডি টা সবসময় আমার মুডটা নষ্ট করে ?
আবারও ম্যাসেজ আসলো..
** উফফ..তোমার ওই রাগী লুকটা তো আমার জন্য জাস্ট কিল্লার ওয়ালা লুক ?**
i love you i love you ??
উফফ তোমাকে সামনে পেলে তো আমি খেয়েই ফেলবো ??**
তিথি : শালা রাক্ষস..সামনে আয় তারপর বুঝবি তিথি কি ?
সন্ধ্যায়…
রুহান তিথিকে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে ড্রাইভারকে সব বুঝিয়ে যেতে নিলেই
তিথি : স্যার আপনি..
রুহান : ☺ ডোন্ট ওয়ারি মিস. তিথি আমি ড্রাইভার কে বলে দিয়েছি.. আপনাকে দিয়ে আসবে.. আমি আজ যেতে পারবো না, আসলে তিশার সাথে ডিনার আর লং ড্রাইভে যাবো ?
তিথি : ?
রুহান : কিছু বলবেন মিস. তিথি
তিথি : আমার দেরি হচ্ছে.. আম্মু চিন্তা করবে
রুহান : নট ব্যাড..ভাঙবে তবুও মচকাবে না ? ( মনে মনে) ওকে বাই
বাসায়…
তিথি : পাইছে কি উনি ?..একশ একটা গার্লফ্রেন্ড নিয়া ঘুরবেন আর আমি সব সহ্য করবো..কখনোই না..?
সকালে…
তিথি : আজ কলেজে আরও বেশি সেজে যাবো ?
হুম সাজ কমপ্লিট.. একদম পারফেক্ট ?
তখনই আবার ম্যাসেজ..
** এতো সাজগোজ করে কোথায় যাওয়া হচ্ছে গো সুন্দরী..তোমাকে না বলেছি রাস্তায় বের হলে এতো সাজগোজ করবে না.. হুম, লক্ষ্মী মেয়ের মতো এগুলো ধুয়ে ফেলো হুম **
তিথি : ধুর… আজ একটু আগেই যাই ?
..
..
ক্লাসে..
রুহান : কি হলো তিথি আসেনি কেন.. সকালে তো দেখলাম রেডি হলো আর এখনো আসলো না..ও ঠিক আছে তো…
বাসায় চেক করে দেখা দরকার..
রুহান তিথির পুরো বাসা চেক করেও কোথাও পেলো না..
রুহান : আমার তিথি ঠিক আছে তো ?
সাথে সাথেই ক্লাস থেকে বেরিয়ে..
কাউকে ফোন দিয়ে..
ওপাশ থেকে : হ্যালো জি স্যার
রুহান : কি হ্যালো হুম ? তোমাদের আমি কি কাজে রেখেছি হুম.. কেন রেখেছি .. তিথি কই.. বাসায় নেই কলেজেও আসে নি..কোথায় ও..আজ যদি তিথির কিছু হয় ভাবতেও পারবে না আমি কি করবো.. ১০ মিনিট সময় দিলাম ওর ইনফরমেশন চাই এর মধ্যে..
বলেই ফোন কেটে দিল
রুহান : তিথি ??
হঠাৎ রুহানের ফোন বেজে ওঠে
রুহান : হ্যালো
ওপাশ থেকে : স্যার ম্যাডামের একটা ইনফরমেশন পেয়েছি
রুহান : কি তারাতাড়ি বলো
সব শুনে যেন রুহানের মাথায় আগুন ধরে গেল ?
তোমাক আমি ছাড়বো না ?
আমার তিথির গায়ে একটা আঁচড়ও যদি লাগে ??
চলবে..