Secret Lover Part-14

0
867

Secret Lover
Tafsirah Islam
Part – 14

সব শুনে যেন রুহানের মাথায় আগুন ধরে গেল ?
তোমাক আমি ছাড়বো না ?
আমার তিথির গায়ে একটা আঁচড়ও যদি লাগে ??
..
..
জ্ঞান ফিরতেই চোখ খুলে তিথি নিজেকে একটা অন্ধকার ঘরে আবিষ্কার করে..
একটা চেয়ার এর সাথে বেধে রাখা হয়েছে.. মুখটাও বাধা..
বাইরের হাল্কা আলোতে ঘরের ভিতরটা তেমন বোঝা যাচ্ছে না..
মাথাটাও যন্ত্রণা করছে..
নড়াচড়ার শক্তি টুকুও যেন নেই..
..
দরজা খুলে কেউ ঘরে ঢুকছে.. আবছা আলোয় যেন তিথির চিনতে ভুল হলো না..মানুষটি কে..
..
সেই মানুষটা আর কেউ না তিশা..

এসে তিথির মুখটা খুলে দিয়ে..

তিশা : কেমন লাগছে তিথি বেবি ??
তিথি : কেন এমন করছো..কি ক্ষতি করেছি আমি তোমার

তিশা : হাহাহা…আমার সামনে ড্রামা করে কোনো লাভ নেই তিথি..
কেন জেনেও না জানার ভান করছ..
শোন আমার সামনে এইসব ড্রামা কোনো কাজে লাগবে না..এইসব করে তুই রুহানকে ফাঁসাতে পারিস কিন্তু আমাকে না..তোদের মতো মেয়েদের না আমি ভালো করেই চিনি.. টাকার জন্যই তো এইসব করেছিস না..তোর জন্য শুধু মাত্র তোর জন্য রুহান আমাকে রিজেক্ট করেছে.. তোদের তো….

তিথি : প্লিজ.. স্টপ ইট..
মাইন্ড ইওর ল্যাংগুয়েজ তিশা..
কি ভেবেছ আমাকে আটকে রেখেছ বলে তুমি যা বলবে তা শুনবো..
তোমার ওই মিথ্যা অপবাদ মাথায় নেবো..
কখনোই না..
তুমি কি বলছো আমি এর কিছুই জানি না..
আর হ্যাঁ কি বললে রুহান স্যার তোমাকে আমার জন্য রিজেক্ট করেছে..
ওটা স্যারের ব্যক্তিগত ব্যাপার.. আমি এর কিছুই জানি না..

তিশা : ওহো..তুমি জানো না..
তোমার রুহান তোমাকে কিছু বলেনি..
ওহোওও…
গতকাল কি হয়েছে তুই কিছু জানিস না.. ?

তিথি : নাহ..আমি কিচ্ছু জানি না..

তিশা : দেখ আমার সামনে এসব ড্রামা করিস না..
তুই আমার পথের কাটা..তোর ভালোবাসায় রুহান অন্ধ হয়ে আছে..
ওহ সরি সরি ভালোবাসা না তোর জালে রুহান ফেসে গেছে..
তুই সরে গেলে রুহান আবার আমার কাছে ফিরে আসবে..
তোকে তো মরতে হবে সুইটি…

তিথি : তার মানে স্যার সত্যিই আমাকে ভালোবাসে ( মনে মনে)
হা হা হা… হাসালে তিশা..
স্যার তোমার কাছে ফিরে আসবে, হা হা হা..
স্যার কি আদৌও কোনদিন তোমার ছিল হুম, যখন ছিলোই না তো ফিরে আসার তো প্রশ্নই আসে না..
আর যদি স্যার কোনদিন তোমাকে ভালবেসে থাকে তাহলে তোমাকে ছেড়ে আমাকে কেন ভালোবাসতে এলেন..
কি হলো বলো..

তিশা : জাস্ট শাট আপ..তুই যে রুহানকে তোর জালে ফাঁসিয়ে রেখেছিস তা কি আমি জানি না.. অনেক হয়েছে এবার তোকে মরতে হবে..
বলেই তিথির মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে..
গুড বাই সুইটি..

তিথি : প্লিজ..
নাআআআ…….

গুলির আওয়াজে পরিবেশটা যেন আরো থমথমে হয়ে গেল..

তিশা : আআআ…হ……
তিথি : স্যার ?
রুহান : তিথি তুমি ঠিক আছো তো ( দৌড়ে তিথির কাছে গিয়ে)

তিথির কিছু হয়নি তিশা গুলি করার আগেই রুহান তিশার হাতে গুলি করে..

তিশা : রুহান…তুমি এমনটা করতে পার না..এখনো সময় আছে রুহান.. ওই মেয়ে শুধু তোমার টাকাকে ভালোবাসে তোমাকে না..

রুহান : ঠাসসসসসস…(তিশার গালে চড় মেরে)
তোকে আমি নিজের ভালো বন্ধু মনে করতাম..
আমি তোকে সেদিনই বলে দিয়েছিলাম তুই আমার জাস্ট ফ্রেন্ড আর তিথি আমার ভালোবাসা..
আমি তিথিকে ভালোবাসি আর সারা জীবন ভালোবাসবো..
..
ইন্সপেক্টর ওকে অ্যারেস্ট করুন
( রুহান আসার সময় পুলিশ ও নিয়ে এসেছিল)
..
তিথি রুহানের দিকে অপলক তাকিয়ে আছে..
..
রুহান : ( তিথির দু গালে হাত দিয়ে) ঠিক আছো? আ’ম স্যরি ?..আমি খুব খারাপ, আমি তোমার খেয়াল রাখতে পারিনি.. প্লিজ ফরগিভ মি..
বলেই তিথিকে জড়িয়ে ধরলো..

তিথি : স্যার…
রুহান : হুম
তিথি : একটু পরে আমি ভর্তা হয়ে যাবো..একটু আস্তে ধরুন
রুহান : ওহ স্যরি স্যরি..
রুহানের ফেস দেখে তিথি হেসে ফেলে..
রুহান : হাসছো কেন
তিথি : স্যার আমিতো মজা করছিলাম ?
রুহান : তুমি…
তিথি : ????

হঠাৎই রুহান তিথিকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়ির দিকে হাটা শুরু করে
তিথি : আরে স্যার কি করছেন
রুহান : হুশশশশ…

তিথিও লক্ষ্মী মেয়ের মতো চুপ করে রইল..
..
তিথি : স্যার..
রুহান : হুম
তিথি : কতটা ভালবাসেন ?

তিথিকে নামিয়ে দিয়ে কাছে টেনে নিয়ে..
তিথির কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে.
..
রুহান : নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি তোমায়..
তোমাকে যখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না
তখন আমার কি অবস্থা কেমন হয়েছিল জানো..
পাগলের মতো খুজেছি..?

তিথি : এতটা ভালোবাসেন আমায়

রুহান : অনেক অনেক বেশি ভালোবাসি..
বলে কপালে আলতো করে চুমু একে দিল
সারাজীবন ভালোবাসার সুযোগ দিবে আমায়..প্লিজ
তিথি : উহু..আমি আপনাকে মোটেও ভালোবাসি না
রুহান : বাসতে হবে না.. আমি আদায় করে নিব ?
বলে আবার কোলে তুলে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিল..
রুহান গাড়িতে উঠে বসতেই..

তিথি : আমরা কোথায় যাচ্ছি
রুহান : আমার বাসায়
তিথি : কেন
রুহান : ভাবছি কতদিন আর শুধু মিস. তিথি থাকবে তাই আজই কাজটা সেরে ফেলি..কি বলো মিসেস. তিথি চৌধুরী ?
তিথি : ইশশশ..আপনি খুব খারাপ ?

রুহান : আচ্ছা তিথি সকালে তোমার আর তিশার মাঝে কি হয়েছিল? আর তুমি তিশার গাড়িতে কেন গেলে

তিথি : আপনি জানলেন কীভাবে?
রুহান : যা জিজ্ঞেস করেছি তার উত্তর দাও
তিথি : আচ্ছা ?

সকালে আমি রেডি হয়ে নিচে নামতেই দেখি তিশা আমার দিকে এগিয়ে আসছে.. তারপর
তিশা : তিথি আসলে আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি..
কালকে তোমাকে যা বলেছি তার জন্য স্যরি..
তিথি : ইট’স ওকে..
আমি চলে যেতে নিলেই
তিশা : তিথি দাঁড়াও
তিথি : কি
তিশা : চলো তোমাকে ড্রপ করে দেই
তিথি : লাগবে না
তিশা : তিথি প্লিজ না করো না..তুমি না করলে আমি মনে করবো তুমি আমাকে ক্ষমা করোনি..
তিথি : আচ্ছা ঠিক আছে চলো..
ওর সাথে গাড়িতে উঠার পর আর কিছু মনে নেই.. যখন চোখ খুলে তাকাই তখন নিজেকে ওই ঘরটায় আবিষ্কার করি..

রুহান : হুম বুঝলাম..
তিথি তুমি এতো সরল কেন হুম..
ও বলল আর তুমি ওর সাথে চলে গেলে..
তিথি : ? আমি কি জানতাম নাকি ??
রুহান : আচ্ছা আচ্ছা আর রাগ করতে হবে না… জানো তুমি যখন রাগ কর তখন তোমাকে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে ?

তিথি : খারাপ লোক একটা ?
আচ্ছা স্যার আপনি কিভাবে জানলেন আমি এখানে?
রুহান : রুহানের জন্য এটা কোন ব্যাপার না ম্যাডাম ?
তিথি : ?
আচ্ছা স্যার কাল আপনার আর তিশার মাঝে কি হয়েছিল?
রুহান : জানতে চাও?
তিথি : হুম
রুহান : তিশা তোমার সাথে ঝগড়া করার পর আমার কাছে এসে..
..
তিশা : রুহান তুমি জানো তিথি আমার সাথে কি করেছে..
ও আমাকে ইচ্ছে করে ফেলে দিয়ে আবার সবার সামনে অপমান করেছে..
তুমি ওকে আজই বের করে দাও

রুহান : এটা হয় না.. এটা আমার অফিস.. এখানে তোমার কথা চলবে না..

তিশা : কিন্তু বেবি ও আমাকে সবার সামনে অপমান করেছে.. তুমি যদি আমাকে ভালোবেসে থাকো তাহলে আজই ওই থার্ডক্লাশ মেয়েটাকে বের করে দাও..

রুহান : জাস্ট শাট আপ তিশা..তোমার সাহস কতো তুমি আমার সামনে তিথিকে নিয়ে এসব বলছো…
কি বললে যদি ভালোবেসে থাকি..
আমি কি কোনদিন তোমাকে বলেছি আমি তোমায় ভালোবাসি..
তুমি শুধু আমার ফ্রেন্ড আর কিছু না..
আর তিথি..
তিথি আমার জীবন.. ভালোবাসি আমি তিথিকে,আর এই কথাটা মাথায় ভালো করে ঢুকিয়ে নাও..
এখন তুমি যেতে পারো..
নয়তো..

তিশা : নয়তো কি রুহান.. বলো কি করবে..ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবে আমায়
রুহান : প্রয়োজন হলে তাই করবো

তিশা : ফাইন..একদিন তুমি নিজে আমার কাছে ফিরে আসবে..
যখন ওই থার্ডক্লাশ মেয়ে তোমাকে ছেড়ে চলে যাবে তখন বুঝবে..

রুহান : গেট আউট.. আর কোনো দিন তুমি আমার সামনে আসবে না..
..
এই তারপর ও চলে যায়..
..
তিথি : গাড়ি থামালেন কেন ?
রুহান : আমার ভালোবাসায় তুমি নিজের বাড়ির ঠিকানাও দেখি ভুলে গেছ..?
তিথি বাইরে তাকিয়ে দেখে ওর বাসায়এসে গেছে
খানিকটা লজ্জা পেয়ে..
আপনিও চলুন না..
রুহান : নাহ..আজ না..

তিথি চলে যেতে নিলেই রুহান তিথির হাত ধরে..
তিথি : কি ?
রুহান : i love you
তিথি : ?
রুহান : গুড নাইট..
..
সকালে…
তিথি কালো রঙের একটা শাড়ি পরে অফিসের জন্য রেডি হয়ে নেয়..

তখনই একটা ম্যাসেজ আসে..

** এই এই শাড়ি পরে মোটেও বের হবে না..চেঞ্জ করো **
..
তিথি : ? শখ কতো.. আজ স্যারকে বলে এর একটা ব্যবস্থা করতে হবে
..
অফিসে…
তিথি অফিসে আসতেই সবাই তিথির দিকে তাকিয়ে আছে..
আর শিহাব তো চোখ সরাচ্ছেই না..
..
রুহান : এই শিহাবকে আমি আজই বের করে দিব ?
আমার তিথির দিকে নজর দেয়া..?
আর এই তিথি টাও কে বলেছে শাড়ি পরে আসতে..
আজ তোমারও খবর আছে তিথি বেবি.. ?

তিথি এসেই আগে রুহানের কেভিনে যায়..
রুহানকে না দেখে একটু ভিতরে যেতেই তিথির মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরলো..
।।
।।
চলবে…