বৃষ্টিস্নাত তুমি পর্ব-১৬+১৭

0
395

#বৃষ্টিস্নাত_তুমি – (১৬)
হুযাইফা মাইশা

‘ আপনি দিন দিন অ’স’ভ্যতামির মাত্রা হারাচ্ছেন।’

পূর্ণতার মৃদু কাঁপা কণ্ঠ। চোখ বন্ধ ইয়াভকিনের। ঘুম ভেঙেছে আগেই। তবে আপাতত ঘুমানোর ভান করছে। সূর্যের আলোয় রুম ঝলমল করছে। ক’টা বাজে খেয়াল নেই। পূর্ণতা আবারও বলে উঠে,
‘ নাটক না করে ছাড়ুন। ঘুমন্ত মানুষের এতো শক্তি হয়?’

ধরা পড়েও তৎক্ষনাৎ ছাড়েনা ইয়াভকিন। আস্তে ধীরে চোখ খুলে হাই তুলে। একহাতে পেঁচিয়ে রাখা পূর্ণতাকে। সে বাঁধন ঢিলে হতেই পূর্ণতা উঠে বসে। হাঁফ ছেড়ে বলে,
‘ দম ব’ন্ধ করে ফেলছিলেন একটুর জন্য। আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন কেন? আমি শুধুমাত্র আপনার সাথে বিছানায় থাকতে রাজি হয়েছি, তার মানে এই না যে, যা ইচ্ছা তাই করবেন।’

‘ কিছু তো করলামই না। তুমি নিজেই গড়াগড়ি করে আমার কাছে এসেছো। মিথ্যে বলোনা।’

‘ ছিহ, আপনি এতো বড় মিথ্যুক!’

‘ বাই দ্যা ওয়ে পূর্ণতা, তুমি এতো নরম! তুলো গিলো নাকি?’

গাল দু’টোয় রক্তিম আভা ছড়িয়ে পড়ে। বিছানা ছাড়তে ছাড়তে জবাব দেয়,
‘ আর থাকবোনা আপনার সাথে। জোর করলে মা’কে বলে দিবো।’

_

ক্লান্ত ইয়াদ ফিরছিল মেডিকেল থেকে। হোস্টেলে থাকে সে। ভাইয়ের বিয়ের চক্করে ছুটি নিতে হয়েছে দুইবার। গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস যেহেতু মিস গিয়েছে, সেজন্য ক্লাস শেষ করে আরেকটু থাকল সে। পাশে বসা তার এক বন্ধু, আদিবের কাছ থেকে নোটস নিয়ে বের হল। দরজার পাশটায় যেতেই খিলখিলিয়ে হাসার শব্দ কানে এল। না চাইতেও কৌতুহলবশত চোখ গেল হাসির উৎসের দিকে। একজোট হয়ে আসা মেয়েদের দলের মধ্যে থাকা এক মেয়ের হাসি শব্দ কানে এসে ঝংকার তুলছে। মেয়েটা আপনমনেই হাসছে। গায়ের এপ্রোনটা হাতে। সাধারণ, সাজসজ্জাহীন মেয়েটাকে দেখে সে না চাইতেও মুগ্ধ হলো। সেই মুগ্ধতার রেশ কাটল আদিবের ডাকে। মাথা নাড়িয়ে সে জবাবে বলল,
‘ কি?’

‘ যাবিনা? চল, দেরি হয়ে যাবে তো।’

‘ দেরি হয়েই গেছে তো, আরেকটু দেরি করলে বেশি ক্ষতি হবেনা।’

‘ আশ্চর্য কথা বলছিস।’

‘ তুই যা, আমি আসছি।’

সন্দিহান চোখে তাকিয়ে আদিব পা চালাল। দেরি করবার ইচ্ছে তার নেই। ইয়াদকে চেনে সে, ইচ্ছে করে কোনোদিন দেরি করেনা। সময় নিয়ে সে খুব বেশিই সচেতন।

সামনে দাঁড়ানো যুবক তার দিকে এক নজরে চেয়ে আছে, সেটা তার বন্ধবী তুলি বলতেই হাসি থামাল ঊর্মি। ফ্যালফ্যালিয়ে তাকানো যুবকটাকে একবার পরখ করে নিল। গায়ে এপ্রোন জড়িয়ে, যুবকটা তার সিনিয়র। লাস্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট। সেদিন চোখের দেখা দেখেছে একবার। ঊর্মি নজর সরিয়ে দ্রুত পা চালাল। আশ্চর্য, সে নিজেও বে’হা’য়ার মতো তাকিয়ে ছিল ছেলেটার দিকে।

একাই চলাচল করে ঊর্মি। বাসা থেকে মেডিকেলের দূরত্ব বেশিও না, কমও না। রিকশা ইচ্ছে করেই নেয়নি আজ। ভাড়া আনতে মনে নেই। ব্যাগে যা টাকা ছিলো সেটা দিয়েও একটু আগে ঝালমুড়ি খেয়ে ফেলেছে। মাথায় ছিলোনা রিকশা ভাড়ার কথা। ফলস্বরূপ হেঁটে যেতে হচ্ছে। খানিক দূর যেতেই মনে হলো কেউ তার পিছু নিচ্ছে। একবার ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতে যেয়েও তাকালোনা।

গাছপালা ঘেরা রাস্তাটায় পৌঁছাতেই সে তড়াক করে পিছু ফিরলো। সেই ছেলেটা! চমকে উঠল ঊর্মি। ছেলেটা ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে। ভ্রু কুঁচকে। সকল ধ্যান যেন তাতে। সে বুঝতে পারছেনা, ছেলেটা তার পিছু নিচ্ছে নাকি তারও গন্তব্য এদিকটায়ই? জিজ্ঞেস না করেই চলা শুরু করল। একপর্যায়ে না পারতেই দাঁড়িয়ে গেল। পিছনের দিক দিয়ে হেঁটে এল। ধপাধপ পায়ের শব্দে মুখ তুলে তাকাল ইয়াদ। তাজ্জব বনে গেল। ঊর্মিকে সে লক্ষ্য করেনি। ফোনে মজে ছিল। হোস্টেলে না গিয়ে একটা জায়গায় যাওয়ার কথা তার। আদিবকে ম্যাসেজ দিচ্ছিল সেই বিষয়েই। ঊর্মি গম্ভীর মুখো হয়ে প্রশ্ন করল,
‘ আপনি কি আমার পিছু নিচ্ছেন, ভাইয়া?’

‘ কে ভাইয়া? আমি?’

‘ জ্বি, আপনিই। আর প্রশ্নটাও আপনাকে করেছি।’

‘ আমি কেনো আপনার পিছু নেবো?’

থতমত খেয়ে গেল ঊর্মি। তার চেহারায়ই সেটা ফুটে উঠল। ফোন পকেটে গুজে, শান্ত কণ্ঠে ইয়াদ বলল,
‘ আমার গন্তব্যও এদিকেই।’

বলে সে পা চালাল। পিছু ধরল ঊর্মিও। লম্বা লম্বা পা ফেলে ইয়াদের আগে যেতে চাইল না। গতি কমিয়ে একটু দূরত্ব বজায় রাখল।
কৌতুহল থেকেই না পারতে ইয়াদ হুট করে প্রশ্ন করল,
‘ কোন ইয়ারে?’

‘ ফার্স্ট।’

ব্যস! বলেই বাসার গলির মুখটায় ঢুকে পড়ে ঊর্মি। ইয়াদ সেদিকে পলকহীন তাকিয়ে নিজের রাস্তা মাপে।

_

আজ ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হলো ইয়াভকিনের। মাগরিবের আজান পড়েছে একটু আগে। পূর্ণতা পুরো বিকেল ঘুমোয়নি। এই বুঝি ইয়াভকিন আসবে, এই চিন্তায়। ইয়াভকিন কলিং বেল চাপতেই পূর্ণতা এসে খুলে দিল। ক্লান্ত ইয়াভকিন একবার পূর্ণতার দিকে তাকিয়ে রুমের দিকে গেল। পূর্ণতা ছুটল রান্নাঘরে। লোকটা বক্সে করে খাবার নিয়ে যায়না। নিশ্চয়ই খায়নি আজ! বাইরের খাবার তো খুব একটা খায়না বললোনা। সেই চিন্তায় সে দুপুরে খেতেও পারেনি। আজ ভার্সিটিতে তন্ময়কেও নজরে আসেনি ও। ইয়াভকিন ওর সাথে কি করেছে সেটা ওর বন্ধুবান্ধবদের আচরণে কিঞ্চিৎ প্রকাশ পেয়েছে। আজ ওরা পূর্ণতার থেকে বেশ দূরে দূরেই থেকেছে।
ভাত বেড়ে যখন টেবিলের পাশটায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল তখনই গায়ে টিশার্ট জড়াতে জড়াতে ইয়াভকিন আসে। ক্লান্ত স্বরে বলে,
‘ আমি খেয়ে নিয়েছি দুপুরে। মিটিং ছিলো তো। তাই দেরীও হয়েছে। খাবার বাড়লে কেন?’

‘খাবার বাড়লে কেন?’— প্রশ্নটা করে যেন গুরু’তর অপ’রাধ করল ইয়াভকিন। কিন্তু সে সেটা বিশেষ খেয়াল করলনা। পূর্ণতা অযথাই একটা প্লেট হাতে নিয়ে তরকারির বাটিটার উপর ঢেকে দিল। বেশ শব্দ করেই। খেয়ে এসেছে সেটা আগে বলবেনা? খাবার বেড়ে রাখার পর বলছে ‘খাবার বাড়লে কেন?’ প্রচন্ড রাগ আর অভিমানে সে ধুপধাপ পা ফেলে রুমে চলে গেল। দুপুরে সে কিজন্য ঠিকঠাক মতো খেলোনা! এই লোকটার জন্য! হাহ!

ইয়াভকিন তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখল। মেয়েটা কি রাগ করেছে? কি কারণে? সে ধরতে পারছেনা।

রাত হলেও পড়া থেকে মনোযোগ সরালোনা পূর্ণতা। ড্রয়িং রুম থেকে টিভির শব্দ কানে আসছে। না পারতে উঠে সে ধরাম শব্দে দরজা লাগিয়ে রাখল। লক করলনা।

রাত তখন সাড়ে এগারোটা। ইয়াভকিনের চোখে ঘুমরাজ ভর করেছে ইতিমধ্যে। জোর করে চোখ খোলা রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে। খানিক্ষণ বাদে টিভি অফ করে সে উঠে পড়ল। পা বাড়াল পূর্ণতার কাছে যাওয়ার জন্য। দরজা ভিড়িয়ে রাখা, হালকা ঠ্যা’লা দিতেই সেটা খুলে গেল।
বইয়ে মুখ গুজে পূর্ণতা। মাত্রই ঘুমের দেশে তলিয়ে গেছে।
ইয়াভকিন ধীরে ধীরে হাত বাড়িয়ে মাথা উঠায়। মেয়েটার নাক-মুখ লাল হয়ে গেছে। বইয়ে পাতা খানিকটা ভেজা। উৎকন্ঠা হয়ে উঠে ইয়াভকিন। দু’হাতে গাল ধরে মুখ উঁচিয়ে ধরে। পূর্ণতার ঘুম ভাঙ্গিয়ে প্রশ্ন রাখে,
‘ এই মেয়ে, কাঁদছ কেন? রাগ করেছ?’

চলবে।

#বৃষ্টিস্নাত_তুমি – (১৭)
হুযাইফা মাইশা

পিটপিট করে তাকায় পূর্ণতা। পরপরই হুশ আসতে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়, ঝা’ড়া দিয়ে হাত সরিয়ে দেয় ইয়াভকিনের। দু’হাত মাথায় রেখে ভর দেয় টেবিলটায়। নিজেকে ধাতস্থ করে চোখ মুখে পানি দেয়ার জন্য উদ্যত হয়। ইয়াভকিন আটকায়। হাত ধরে টেনে আনে নিজের কাছে। গম্ভীর কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে,
‘ কি হয়েছে তোমার?’

‘ কিছু হয়নি, সব সময় আপনার টানাটানি ভালো লাগেনা। সরুন।’

বাঁধন ঢিলে হয়। উৎকণ্ঠা ইয়াভকিন শান্ত হয়। পূর্ণতা বাথরুমে যেতেই সে বেরিয়ে যায়।

মধ্যরাত।
বারান্দা থেকে ধুপধাপ পা ফেলে ইয়াভকিন এল রুমের সামনে। ভিড়িয়ে রাখা দরজা। ড্রয়িং রুমের আলো, দরজা গলিয়ে ভেতরটা খানিকটা উজ্জ্বল করছে। হালকা ধা’ক্কা দিতেই দরজা খুলে গেল। অন্ধকার রুম এক মূহুর্তের জন্য আলোকিত হলো। ফিরে এসে ড্রয়িংরুমের লাইট অফ করে অন্ধকার হা’ত’ড়ে ভেতরে ঢুকল।
পূর্ণতার অগোছালো ভাবে শোয়ার অভ্যাস। বিছানার মাঝ বরাবর সে শুয়ে। সর্বপ্রথম মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বা’লাল ইয়াভকিন। পূর্ণতাকে ঠে’লে সরিয়ে চট করে লাইট অফ করে শুয়ে পড়ল। পূর্ণতার কাচা ঘুম তখন ভেঙে গেছে। অন্ধকারে হঠাৎ ছোঁয়া পেতে আঁতকে উঠলেও পরমুহূর্তে শান্ত হয়। কার হাত, সে জানে। স্পর্শগুলো চেনা। ততক্ষণে তাকে টেনে নিয়ে গেছে ইয়াভকিন নিজের বাহুতে। পূর্ণতা ছাড়ানোর চেষ্টা করতেই সে চেঁচিয়ে উঠল,
‘ ঘুমাতে দাও এখন। রাগ-টাগ কাল দেখিও। তোমার এই বা’জে অভ্যাস বাদ দিতে হবে।’

শান্ত হলোনা পূর্ণতা। সে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে ব্যস্ত। ইয়াভকিনের চেয়ে দ্বিগুণ চেঁচিয়ে বলল,
‘ শান্তিতে থাকা যাবেনা এখানে? চলে যাব আগের বাসায়?’

‘ তোমার শান্তি আমার মাঝেই। তুমি তো সেটা বুঝোনা। স্বামীর মধ্যেই তো তো শান্তি পাবে তাইনা?’

‘ আপনি বড্ড বাড়াবাড়ি করছেন।’

‘ তোমার থেকে কমই। শান্ত হও দেখি। আমার ঘুম পাচ্ছে। নিজে তো এতক্ষণ আরামে ঘুমোচ্ছিলে, আমার ঘুম কে’ড়ে নিয়ে।’

‘ আপনি ভীষণ বা’জে লোক।’
বলতে বলতে ফুঁপিয়ে উঠল পূর্ণতা। ইয়াভকিন তার গলায় মুখ গু’জে বলল,
‘ থাক, কাঁদেনা। স্বামীর ব্যাপারে এসব বলতে নেই।’
_

তন্ময় ভার্সিটিতে এসেছে আজ। কপালে কা’টা দাগ। অতি সূক্ষ্ণ। গভীর ভাবে খেয়াল করলে বুঝা যায়। এমনিতে সে ভার্সিটিতে এসে পূর্ণতার খোঁজ করে। কিন্তু আজ সে সেটা করেনি। বর্ষা অবাক হয়ে পূর্ণতার হাত চেপে ধরে। ক্যান্টিনে দুজনে বসা। অন্যদিকের কর্ণারের টেবিলে তন্ময় আর ওর কয়েক বন্ধুবান্ধব বসা। তার এমন পরিবর্তনের কারণ জানেনা বর্ষা। পূর্ণতাকে চেপে ধরায় সে ভীষণ বিরক্ত হলো। জিজ্ঞেস করল,
‘ কি?’

‘ তন্ময় কি তোর পিছু ছেড়ে দিয়েছে?’

‘ হু।’

‘ কিইই?’

‘ সত্যিই।’

‘ কি করে ছাড়ালি?’

‘ ইয়াভকিন বোধহয় ওর সাথে মা’রামা’রি করেছেন। বোধহয় কি, করেছেনই। সেদিন বৃষ্টিতে ভিজে এসেছেন, হাতে আবার ব্যান্ডেজ।’

‘ হ্যাঁ, তারপর?’

ইতস্তত করতে করতে পূর্ণতা জবাব দিল,
‘ কিছুনা।’

‘ এতে কি করে বুঝলি তন্ময়কে উনি মে’রেছেন।’

‘ বলেছেন উনি। চুপ থাক এবার।’

‘ আর কিছু জিজ্ঞেস করিসনি?’

‘ না করিনি। বেশ হয়েছে, সেদিন কি বি’শ্রী ভাবে ছোঁয়েছে ছেলেটা।’

শেষ কথাটা বিড়বিড় করে বলল পূর্ণতা। রক্তিম চোখে কর্ণারের টেবিলে বসা তন্ময়কে দেখে নিয়ে চোখ ফেরায়। বর্ষা হেসে বলে,
‘ জেলাসি আছে উনার, ভালো টালো বেসে ফেলেছে সিওর।’

‘ ওসব কিছুনা। সব দায়িত্ব থেকেই। উনি উনার দায়িত্বের হেরফর করেননা, আগেই বলেছেন।’
বলে খানিকটা হাসল পূর্ণতা। বর্ষার হাসি হাসি মুখটা থমথমে হলো। চাপা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসলো। কিছু বলার নেই তার।

ক্লাস শেষে গেটের পাশে আসতেই গাড়ি নজরে এল। ড্রাইভিং সিটে বসা ইয়াভকিনকে গ্লাস গলিয়ে দেখা যাচ্ছে। পূর্ণতা ভ্রু কুঁচকে এগিয়ে যায়। বর্ষা খেয়াল করেনি ইয়াভকিনকে। গাড়ির কাছাকাছি যেতেই নেমে এল ইয়াভকিন। হাতে পানির বোতল। পূর্ণতার ঘর্মাক্ত মুখশ্রীতে নজর বুলিয়ে সে বোতলটা এগিয়ে দিল। এক ঢোক পানি গিলে সে বোতল ফিরিয়ে দিল। বর্ষা ইয়াভকিনকে দেখে অবাক হয়ে বলল,
‘ ভাইয়া, আপনি?’

‘ হ্যাঁ, আপনার বান্ধবীকে নিতে আসলাম।’
হেসে বলল ইয়াভকিন। টুকটাক সৌজন্যমূলক কথা সেড়ে বিদায় নিল বর্ষা। যাওয়ার আগে পূর্ণতার কাছে এসে,কানে কানে বলে গেল,
‘ এসব দায়িত্ব না রে, বোকা। উনি সত্যিই তোকে ভালোবাসে। জিজ্ঞেস করে দেখিস, হুহ!’

পূর্ণতা কটমট চোখে তাকাতেই হাসে বর্ষা। চলে যেতেই ইয়াভকিন গাড়িতে উঠে। পূর্ণতা উঠতেই গাড়ি স্টার্ট দেয়। এসি ছাড়তেই হাঁফ ছাড়ে পূর্ণতা। বৃষ্টি দিলে খুব ভালো হতো। এই গরমে টিকা বড় দায়। তাকে একবার পরখ করে ড্রাইভিং এ মনোযোগ দেয়ার চেষ্টা করে ইয়াভকিন। আচমকা বলে উঠে,
‘ তুমি এমন করে আমার সামনে এসোনা তো, হুটহাট প্রাণ ভরে দেখতে মন চায়, গভীর ভাবে ছুঁয়ে দিতে মন চায়।’

চলবে।